• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

গুড়ের গন্ধে মাতোয়া সকাল

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি
লিখেছেন আব্দুল গাফফার রনি [অতিথি] (তারিখ: শনি, ১৭/০১/২০১৫ - ৬:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

DSC00273
মাঘ মাসে হাড়কাঁপানো শীতের ভয়ে এখন সকালে ঘর ছেড়ে বেরোতেই মন চায় না। অথচ শীতের সকালের সৌন্দর্যের তুলনাই হয় না। সাধারণত ডিসেম্বরের শুরুতেই বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত। পড়াশোনা আর স্কুলের ভূত ঘাড়ে চেপে বসা তো দূরে কথা, ত্রিসীমানায় ঘেঁষতে সাহস পেত না। তখন দিন গুণতাম, আশায় থাকতাম, কবে নানাবাড়ির পথ ধরব। কারণ শীতের তাতরস আর গরম গুড়ের লোভ। আমাদের গ্রামে অবশ্য রস-গুড়ের চল ছিল না বললেই চলে। কিন্তু আমার নানা বাড়িতে-- রস-গুড়ই তাদের প্রধান চাষাবাদ। তাই হেমন্তের মিষ্টি রোদ শরীরে আলতো ছোঁয়া দিতে শুরু করলেই দিন গুনতাম-- কবে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হবে আর কখন নানাবাড়িতে ছুট দেব। গরু কিংবা ঘোড়ার গাড়িতে করে নানাবড়িতে যাওয়াও ছিল অ্যাডভেঞ্চারের মতো। কত মাঠ কত গ্রাম পেছনে ফেলে ক্যাঁচর ম্যাচর শব্দ করতে করতে এগিয়ে চলত আমাদের ছৈঅলা গরুর গাড়ি। সন্ধ্যা ঘনাবার আগে পৌঁছে যেতাম নানাবাড়ি। ঘোর লাগার আগেই বেরিয়ে পড়তাম মামাদের সাথে সন্ধ্যার রস খেতে মাঠে। রাত পেরিয়ে সকাল হলেই ঘুম ভেঙে যেত। বিশাল খেজুর বাগান মামাদের। দুই গাছির পক্ষে অত রস আনা সম্ভব নয়। মামারাও যেতে ওদের সাহায্য করতে। আমরা পাহারা দিতাম কখন তাঁরা ফিরবেন।

DSC00071
খাওয়ার রস আলাদা করা থাকত। সাধরণত মানুষের মতো পাখিদেরও খেজুর রসের ওপর খুব লোভ। রসের ভাঁড়ে বসে তারা নলিতে মুখ লাগিয়ে রস খান, প্রাতকৃত সারেন রসের হাঁড়িতে। তাই খাওয়ার রস আলাদা করে রাখেন গাছিরা। ভাড়ের মুখে খেজুরপাতা ঢুকিয়ে রাখেন বেশ উঁচু করে। ওতে বসে আর রস খাওয়ার সুবিধা থাকে না পাখি মশায়দের। সাত সকালে ঘুম থেকে উঠেই শুরু হয়ে যেত অপেক্ষা। কখন গাছিরা মামারা মাঠ থেকে ফিরবেন। তারপর রস এলে ভাঁড়ের ওপর হামলে পড়তাম আমরা। গ্লাসে ঢালা রসে পাঠখড়ির নল ডুবিয়ে চুকচুক করে রসটানার সেই স্মৃতি ভুলবার নয়।

DSC00151
মাঝে মাঝে ছেলেবেলা খুঁজতে গ্রামে যাই। এই ডিসেম্বরেও গিয়েছিলাম। সরাসরি বাড়ি না গিয়ে নেমেছিলাম নানা বাড়িতে। সাড়ে তিনটা নাগাদ পৌঁছে গেলাম। চার বছর পর শীতে গ্রামের মুখ দেখছি। ছোট তিন মামাতো ভাইকে নিয়েই বেরিয়ে পড়লাম সন্ধ্যার রসের স্বাদ নিতে। শাকিল বাঁশের লগা দিয়ে পাড়ল রসের ভাঁড়। তারপর গ্লাসে ঢেলে ছেলেবেলায় ফিরে যাওয়া।

DSC00141
সন্ধ্যার রসের রংটাও যেমন, স্বাদটাও যেন অমৃত।

DSC00155
এখন আর মামাদের কোনও গাছি নেই। নেই খেজুরবাগানও। কিন্তু কিছু খাপছাড়া খেজুর গাছ আজও আছে। সেগুলো ভাগে দিয়ে দিয়েছেন গাছিদের কাছে। ওরা মৌসুম শেষে কিছু টাকা আর খেজুর গুড় দেয় মামাদের। খেজুর গুড় জ্বালানোর ফুটেজগুলো সেই গাছির বাড়ি থেকেই তোলা।

DSC00256

DSC00267
সকালে ঘুম থেকে উঠেই চললাম মাঠের দিকে। এখন এটা পিস রাস্তা। কিন্তু একসময় এটা ধূলিধূসরিত কাঁচা রাস্তা ছিল। গাছিরা যখন রস নিয়ে আসত কুয়াশায় ভেজা ধুলো তখন পথের বুকে ঘুমিয়ে থাকতে পারত না।গাছিদের পায়ের আঘাতে উৎক্ষিপ্ত হয়ে ভোরের কুয়াশার সাথে মিশে তৈরি করত অপার্থিব ধূম্রজাল।

DSC00210
পর পর বেশ কয়েকজন গাছিকে পেয়ে গেলাম। গাঁয়ে চাদর, এক হাতে বিড়ি। সবার পিঠে বাঁশের বাঁক। বাঁকের দুইপ্রান্তে ঝোলানো রসের ভাঁড়। রসের ভারে বেঁকে যায় বাঁক, বেঁকে যায় গাছির পেটানো শরীর। সেই ছোটবেলা-ই এই দৃশ্যটা আমাকে খুব নাড়া দিত।

DSC00214
পেয়ে গেলাম আমার কৈশরের খুব প্রিয় এক মানুষ মাকামামাকে। গাছিরা ছোটদের কাছে প্রিয়ই হন। রস-গুড়ের কারিগর যে তাঁরা! মাকামামা নিছক একজন গাছিই ছিলেন না। সরাবছর আমার নানাবাড়িতে কাজ করতেন। আমাদের মাঠে নিয়ে যেতেন। আখ খাওয়াতেন। আবার শীতকালে গরুর গাড়ি জুতে আমাদের থেকে নানা বাড়িতে নিয়ে আসার দায়িত্বটাও তিনিই সামলাতেন।

DSC00302
এই গাছির সাথে দেখা আগের দিন সন্ধ্যায়। আমি যখন মামার বাড়ির পথ ধরেছিলাম, তকন আমি যে রিক্সা-ভ্যানে উঠেছিলাম, তিনিও ছিলেন সেই ভ্যানে। তখনই তার আব্দার, তার ছবি নিতে হবে। সাত সকালে মেঠোপথটাতে তাঁকে পেয়ে গেলাম।

রস আনার কাজ শেষ। এবার গুড়ের পালা। ছুটলাম গাছিবাড়িতে। নানা আগেই তাদের বলে রেখেছেন। আমারো গেলে যেন আপ্যায়ন টাপ্যায়ন করা হয়।

DSC00333
গিয়ে দেখি হাড়িতে রস ঢালা সারা। খালি ভাঁড়গুলো পড়ে আছে। অবশ্য আমাদের জন্য রস রাখা হয়েছিল। কিন্তু সকালের রস খেতে মন চাইলৈ না। বিশেষ করে রাতে বাদুড়ে হানা দেওয়ার সম্ভবনা খুব বেশি। বাদুড় অন্যপাখিদের মতো নলি চাটে না। চাটে গাছের চোখ। গাছের যে স্থানে চাঁছা হয় আরকি। ঝাপ দিয়েও তাই বাদুড় ঠেকাবার উপায় থাকে না।

DSC00329
রস জ্বালানো চুলো, জ্বালা হাড়ি এখন বদলে গেছে। চুলোকে বলা হয় বাইন। আর হাঁড়িকে বলা হয় জ্বালা হাড়ি। এখনকার জ্বালা হাঁড়িগুলো টিনের। চৌকোনা। আগেকার হাঁড়িগুলো ছিল মাটির। এবং গোলাকার বিশাল বিশাল সব হাঁড়ি। বাইনগুলোও সেরকম। এখন বাইন তৈরি হয় মাটির ওপর। আগেকার বাইনগুলো তৈরি হতো মাটিতে গর্ত করে। গর্তের ওপর মাটি দিয়ে অনেগুলো সেতুমতন তৈরি করা হতো। তার মাঝখানে আট-দশটা গর্ত। প্রতিটা গর্তের ওপর বসানো হত একটা করে জ্বালা হাড়ি। তখনকার বাইনগুলো দেখতে ছিল ছোট আকারের ইটের ভাঁটার মতো। সেগুলোর স্থান বাড়ির বাইরে কোনও বাগানে। চলার চারপাশটা ঘিরে রাখা হতো। তবুও প্রায়ই গুড় জ্বালাবার পর সেই বাইনে ছাগল-মুরগি এমনকী শিশুরা পড়ে মারা যেত। তুলনায় এখনকার চুলা অনেক নিরাপদ। মাটির হাঁড়ি নিয়েও ছিল বিপদ। প্রায় জ্বালানোর মাঝপথে রস কিংবা গুড়সহ ভেঙে পড়ত জ্বালা হাঁড়ির তলা। এখনকার টিনের হাঁড়িতে সেই ভয় নেই। তবে মাটির হাঁড়িতে জ্বালানো গুড়-পাটালির স্বাদটাই ছিল অন্যরকম। সেটা শত খুঁজেও এখন পাওয়া যাবে না।

DSC00408

DSC00326
এখনকার বাইনের দুইদিকে দুটে ছিদ্র থাকে। একদিক থেকে জ্বালানি ঢোকানো হয়। অন্যদিক থেকে জ্বালানি পোড়া কয়লা বেরিয়ে বাইনের ভেতরের জায়গাটা পরিষ্কার রাখে।

DSC00416

DSC00414
বাইনের দুইপাশে তিনটা করে মোট ছয়টা জানালা থাকে। অক্সিজেনের সরবারহ ঠিক রাখা এবং ভেতর থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের করার সুবিধার্থে এই ব্যবস্থা।

DSC00419

DSC00400
রস জ্বালাতে দরকার হয় প্রচুর জ্বালানি। এ জ্বালানির বেশিরভাগটাই যোগান দেয় খেজুর গাছ। মৌসুমের শুরতেই গাছ কাটা উপযোগী করতে ছেঁটে ফেলতে প্রচুর খেুঁজুরপাতা। সেই পাতাগুলোই শুকিয়ে রস জ্বালাবার কাজে ব্যবহার করা হয়।

DSC00357

DSC00383
এছাড়া মাঠের ঝোপ-জঙ্গল কেটে শুকিয়েও রস জ্বাল দেওয়া হয়। অনে সময় বিচালিও ব্যবহার হয়।

DSC00374
জ্বালা হাঁড়িতে রস ঢালার আধঘণ্টা পর ফুটতে শুরু করে। জ্বালা হাঁড়ির ওপর তখন ঘন কুয়াশার মতো জলীয় বাষ্প।

DSC00375
রস জ্বালা হাঁড়িতে ঢালার পর আমরা ভিড় করতাম বাইনের আশেপাশে। শুধু গুড় হবার অপেক্ষায় নয়। তাঁত রসের লোভেও। কখনো কখনো সকালের নাস্তাটাও সারতাম বাইনের পাড়ে। খাওয়া-শীত তাড়নো-তাঁত রসের অপেক্ষা। তিনকর্ম একসাথে। ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এ যুগের শিশুরাও।

DSC00360
গুড় জ্বালানোটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। প্রায় তিন-চার ঘন্টা লেগে যায়। মাঝে মাঝে রসের ওপরে গাঁদ জমে। মানে সাদা ফেনা আরকি। রসের ভেতরে থাকা ময়লা একত্রিত হয়ে গাঁদ জমে। মাঝে মাঝে উড়কি মালা দিয়ে গাঁদ ফেলে দেয় গাছি।

DSC00447
ঘণ্টা দুয়েক পরে রস অনেকটা লাল হয়ে ওঠে। চারদিকে সুবাস ছড়ায়। সারা গ্রামের বাতাস তখন ভরে ওঠে তাঁত রসের মিষ্টি গন্ধে। ঢাকায় বসে এখনও সেই গন্ধ যেন প্রতিটা শীতের সকালে। উড়কিমালা দিয়ে তাঁতরস রস খানিকটা তুলে নিয়ে গ্লাসে ঢালতাম আমরা। তারপর ফু দিয়ে চায়ের মতো চুক চুক করে খাওয়া। আহঃ আজও সেই স্বাদ মুখে লেগে আছে।

DSC00465

DSC00468
ঘণ্টা তিনেক পরে আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণ। রস পুরোপুরি লাল হয়ে ওঠে। গুড় নামানোর যোগাড়-যন্ত্র করেন গাছি কিংবা গাছি বউ।

DSC00481

DSC00483
গুড় নামানো হয়। গন্ধটা তখন আরও মিষ্টি হয়েছে। উড়কি মালা দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়া হয় গরমগুড়।

DSC00485
এরপর আসল কাজ। “বিচমারা”। খেজুর পাতার ডাঁটা দিয়ে “বিচমারা” হয়। বিচ মারার ওপরেই নির্ভর করে গুড়ের মান। “বিচমারা” যত ভালো হবে গুড়ও তত ঘন হবে। গুড় জমিয়ে পাটালি করতে হলে অনে বেশি সময় ধরে বিচ মরতে হয়।

DSC00503
“বিচমারা” হয় হাঁড়ির সাথে খেজুর ডাঁটা ঘষে ঘষে। সাদা ক্রিমের মতো একটা জিনিস তৈরি হয় হাঁড়ির গায়ে। এই ক্রিমই মূলত গুড় জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। মেঘলা দিনে শত চেষ্টা করেও এই ক্রিম তোলা সম্ভ নয়। তাই মেঘলা দিনের গুড় সম্পূর্ণ ঝোলা হয়।

DSC00496

DSC00507
গরম গুড়ের পাশে চলত আমাদের আনন্দভোজ। কাঁখাকজাঠি এক ধরণের চামচ তৈরি করা হয় বাঁশের চাটাই দিয়ে। আমরা ছেলেবেলায় কাখাকাঠিতে করে গুড় গরম গুড় তুলে মুখে পুরতাম। এ দৃশ্য আজও দেখা যায়।

DSC00513
কখনও কাঁখাকাঠি না মিললে শুকনো খেজুর পাতা ভাঁজ করে তা দিয়ে গুড় খেতাম।

DSC00506

DSC00505
বিচমারা শেষ হলে উড়কিমালা দিয়ে সাদা ক্রিম গুড়ের সাথে মিক্সড করা হয়।

DSC00515
সবশেষে গুড় ঢালা হয় মাটির ভাঁড়ে।

DSC00512
এরপর গুড় লেগে থাকা জ্বালাহাঁড়িতে হামলে পড়ে ছেলেমেয়ের দল।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : ছবির অভাবে পাটালি গুড় তৈরির প্রক্রিয়াটা দেখাতে পারলাম না। আগামী শীতে না হয় ওটা করা যাবে। মাটির জ্বালা হাঁড়ি আর পুরোনি দিনের বাইন যদি একটাও দেখাতে পারতাম তো এই লেখার ষোলকলা পুর্ণ হতো।

আগের পর্ব : ঐ যে গাছি গাছ কাটে
আগামী পর্বে থাকছে--রসখোর পাখিদের গল্প।


মন্তব্য

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

রসালো খেজুরের গুড় সম্পর্কে কিছু নীরস তথ্য-উপাত্ত-

ব্রিটিশ নথিপত্রে দেখা যায় খেজুর গুড় ছিল স্থানীয়দের কাছে সমাদৃত অভিজাত খাদ্যপণ্য। ব্রিটিশদের আগে প্রধানত যশোর এবং আংশিকভাবে ফরিদপুরে খেজুরের গুড় উৎপাদিত হত, সমাজের ধনিক শ্রেণীর মানুষেরাই শুধু এর স্বাদ লাভ করতে পারত। কিছু কিছু গুড় ঢাকা এবং মুর্শিদাবাদে এই শহর দুটির রমরমা সময়ে চালানও হতো। ১৭৯১ সালে যশোরে উৎপাদিত বিশ হাজার মন গুড় কলকাতায় চালান হয়েছিল। তখন কলকাতার মিস্টি উৎপাদকেরা মিষ্টি বানানোর জন্য এই গুড়ই ব্যবহার করতো। পরে ব্রিটেনেও চালান হতে থাকে এবং তখন থেকেই যশোর, ফরিদপুর, নদীয়া, ২৪ পরগনা ঢাকা, পাবনা সহ আরও অঞ্চলে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে খেজুর বাগান গড়ে উঠতে থাকে। বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদিত হতে থাকে বিপুল পরিমান চিনি ও গুড়, ততদিনে স্থানীয়ভাবেও সারা বাংলায় খেজুর গুড়ের চাহিদা তৈরি হয়। পূর্ব-বাংলা থেকে ১৮১৬ সালে ৬২৮২ টন এবং ১৯২৩ সালে ১৩৪৫২ টন চিনি ব্রিটেনে চালান হয়, অবশ্য এর মধ্যে আখজাত চিনিও ছিল। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় সনাতন পদ্ধতিতে গুড় থেকে চিনি উৎপাদন করা হতো, পরে সায়েবরা নিজেরাই চিনির রিফাইনারি বসাতে থাকে, যদিও সাহেবদের চিনিকলগুলো খুব একটা লাভের মুখ দেখে নি। ১৮৩০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চিনিকে অধিক পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার জন্য ভারতীয় চিনির উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হলে পূর্ব-বাংলা থেকে চিনি রপ্তানি একেবারে পরে যায়। ১৮৩৭ সালে এই অতিরিক্ত করের বোঝা অপসারণ করা হলে ১৮৪০-৪১ সাল নাগাদ কলকাতা থেকে ব্রিটেনে রফতানীর পরিমান দাঁড়ায় ৬৩০৮৪ টন। সরকারী তথ্য বিবরণী মতে ১৮৮০ সাল নাগাদ যশোরে খেজুরের রস থেকে দশ লক্ষ মন গুড় উৎপন্ন হতে পারত। সরকারী হিসেব মত সে সময় শুধু যশোর জেলাতেই ৫০ লক্ষাধীক খেজুর গাছ ছিল। ১৯৩২ সালে স্থানীয় বাজারে খেজুর গুড়ের মনপ্রতি দর ছিল এক টাকা দুই আনা, আর দেশীয় চিনি তিন টাকা দশ আনা।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই, অনেক নতুন কিছু জানলাম। ভবিষ্যতেেএই লেখা গন্থিত করতে গেলে তথ্যগুলো কাজে আসবে। ভাই এই বিষয়ে ভালেঅ কোনও বইয়ের হদিস থাকলে একটু জানাবেন, প্লিজ।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আপনার বক্সে একটা মেসেজ পাঠিয়েছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে প্রচন্ড হিংসা হয়! :D লেখায় (Y)

_____
কাইয়ুম

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ভাইরে, এমনিতেই ধনে-মনে আমি গরিব, হিংসা করলে যেটুকু আছে সেটুকুও হারাবার ভয় আছে। :)

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

ইসরার কামাল এর ছবি

ছবিগুলো কোন এলাকার।বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে দেখতে যাবার ইচ্ছা রাখি।@রনি।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

‌ছবিগুলো চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কাঁটাপোল গ্রাম থেকে তোলা।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আমিও বহুদিন পর খেলাম পৌঢ়দা।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আহা, মনটা বড্ড আইঢাই করছেগো সন্ধ্যেরসের জন্যে। আর সেই কবেকার কথা, খেজুর পাতা ভাঁজ করে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বিচমারা গুড় খাওয়া। হ্যাঁ, আমারও সব স্মৃতি নানাবাড়িতেই। :)

মেঘলা মানুষ এর ছবি

সুন্দর আমাদের দেশ আর মানুষরা!

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

সবাই সুন্দর নয়, আমাদের দেশের মানুষই রাজাকার ছিল, আজও ওদের একটা অংশ রয়ে গেছে।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আয়নামতি এর ছবি

যাক অবশেষে পাওয়া গেলু গুড়ের দেখা! :)
গরম গুড়ের চামচ/কাঠিটা ছোট্ট বাচ্চাটা যে মুখে দিয়েছে মুখ পুড়ে যায় না তাতে?
তৈরি গুড় পাই আর গপাগপ খাই। এর পেছনের এতসব গল্প সেভাবে জানতাম না।
আপনাকের ধন্যবাদ হে! গুড় এবং তার তৈরির গপসপের জন্য।
রাজশাহীর দিকে পিড়া/পিড়ির মত গুড় হয় ওটা কিভাবে বানায় সে গপ্পো শোনার আগ্রহ আছে।
খুব ছোটবেলায় তালের গুড় খেয়েছিলাম। দেখতে সাদা ছিল সে গুড়। আসুক আরো গুড় পর্ব :D

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ফু দিয়ে ঠাণ্ডা করে নেওয়া হয়েছে

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

শাব্দিক এর ছবি

১। আপনার লেখার বিষয় নির্বাচন এবং লেখার ধরণ আমার কাছে অতুলনীয়। কিছু লেখকদের লেখা সবগুলি পড়তে চাই, সে লিস্টিতে আপনার লেখা ইনক্লুডেড।

২। বাইন চুলাগুলি বেশ ইন্টারেস্টিং। পুরা পদ্ধতিটা পড়ে মজা পেলাম।

৩। লেখায় (গুড়) তো না দিলেই নয়।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

১। কন কী রে ভাই, আমি তো আহ্লাদে গদগদ হয়ে গেলাম!
২। আগেরটা দেখাতে পারলে আরো মজা পেতেন। কিন্তু নেই যে :(
৩। আপনাকেও একটা (ধইন্যা) না দিলেই নয়।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

এক লহমা এর ছবি

ভাল লাগল।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

(ধইন্যা)

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

(গুড়)

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

(ধইন্যা)

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

নস্টালজিক হয়ে গেলাম............আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

:)

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।