বড্ড মরে যেতে ইচ্ছে করছে স্যার!

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি
লিখেছেন আব্দুল গাফফার রনি [অতিথি] (তারিখ: শনি, ১৪/০২/২০১৫ - ৪:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সব মিলিয়ে বিশ বছরেরও বেশি শিক্ষাজীবন। বিশ বছরে কত শিক্ষককে পেয়েছি, কত জনের কাছে পড়েছি, অনেকের নাম হয়তো মনে করতে পারব না। এতসব শিক্ষককের ভিড়ে সবাই প্রিয় হতে পারেননি। সবাইকে ভাল লাগেনি। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ থাকেন, তাদের ব্যক্তিত্বই তাঁদেরকে ভাল লাগাতে বাধ্য করে। আকাশে লক্ষ কোটি তারার ভিড়ে যেমন ধ্রুব তারাকে খুব সহজে আলাদা করে চেনা যায়। তেমনি বিশ বছরের শিক্ষজীবনের বহু শিক্ষক থেকে প্রিয় শিক্ষক বেছে নিতে কষ্ট করতে হয় না একটুও। তিনি শ্রী বিশ্বরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। আমাদের বিশু স্যার। প্রাথমিক জীবনের শিক্ষক। আমাদের আইডল।
স্কুলে ভর্তি হবার আগেই তাঁকে চিনি। সশরীরে নয়, ব্যক্তিত্বে। ভয় আর শ্রদ্ধার অপূর্ব মিশেলে মনের ভেতর তৈরি হয়েছিল অন্যরকম এক অনুভূতি। প্রথম দেখার আগেই তাঁর কত গল্প শুনেছি। তিনি নিষ্ঠুর, নাকি স্নেহপরায়ণ দেবতা, তা বুঝে উঠতে বেগ পেতে হয়েছিল। স্কুলে ভর্তি হবার পরও বিষয়টা পরিষ্কার হলো না। নার্সারি থেকে ২য় শ্রেণী পর্যন্ত-- প্রথম তিনবছর তাঁর কোন ক্লাস ছিল না আমাদের সাথে। তাই নিষ্ঠুর নাকি স্নেহপরায়ণের দোলচালটা থেকেই গিয়েছিল। ভয়টা কাজ করত খুব, না জানি থ্রি তে উঠে তাঁর মুখোমুখি হলে কী অবস্থা হবে!
কোথায় কী! প্রথমদিন ক্লাস করার পর ভয়ভীতি, আশঙ্কা, কাঁপুনি এক লহমায় উড়িয়ে ছোট্ট বুকের ভেতরে আসন করে নিলেন স্নেহপরায়ণ দেবতারূপে। সেই সাথে এও বুঝলাম, কেন তাকে নিয়ে এত গল্প চালু।
এরপর শুধু মুগ্ধতা। সবসময় যে মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকতাম তা কিন্তু নয়। কখনও কখনও মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে আবির্ভূত হতেন তিনি। হাতের বেতখানা যেন তলোয়ার হয়ে কচুকাটা করত দুরন্ত কৈশরকে। তবে তা খুব স্বল্প সময়ের জন্য। এ বিষয়ে তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘শাসন করা তারই সাজে। আদর করে যে!’ তখন বিশ্বাস হত না কথাটা, স্যার আবার আমাদের আদর করেন কখন। এখন বুঝি, পেছনে ফিরে তাকালেই দেখতে পাই আদরমাখা সেই ছবি।

লক্ষকোটি বাঙালির মতো রবীন্দ্রনাথ আজ আমার রক্তের সাথে মিশে গেছে। সে তো এমনি এমনি নয়। আমাদের বিশু স্যারই দেখিয়েছিলেন, কীভাবে রবি ঠাকুরকে বুঝতে হয়। সেই পঞ্চম শ্রেীণতে ‘আষাঢ়’ কবিতা পড়াতে গিয়ে শুরু। রবিঠাকুরকে ঠিক সেভাবে আজও আত্মস্থ করার চেষ্টা করছি। আমরা ছড়া-কবিতা পড়তাম গড়গড় করে। বিশু স্যার বললেন তা হবে না।
আমরা পড়লাম--
‘নীল নবঘণে আষাঢ় গগণে তিল ঠাঁই আর নাহিরে
ও গো আজ তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে।’
আমরা বার বার একই ভুল করছিলাম। বিশু স্যার বললে ‘ও গো’ বলে থামতে হবে। ‘কমা’টা কি রবিঠাকুর এমনি এমনি বসিয়েছেন? তারপর প্রতিটি কবিতা যেভাবে পড়ালেন, আবিষ্কার করলাম কবিতার আসল সৌন্দর্য।
স্যারের নিজের একটা কবিতা ছিল। ঠিক কবিতা নয়, বিদ্রুপ। আমাদের ওপর যখন খুব বেশি বিরক্ত হয়ে যেতেন তখন বলতেন সেটা--
‘হাড়-হাভাতে ছন্ন ছাড়া
পোড়া-কপালে লক্ষ্মীছাড়া
সব প’ড়ে মরেছে আমার ঘাড়ে!’

স্যার কথা বলতেন পুরোপুরি শুদ্ধ ভাষায়। মাঝে মাঝে বেশি বিরক্ত হলে পূর্ববঙ্গের একটা ব্যাক্যই শুধু বলতেন, ‘হাই হাইরে, খাইছে আমারে।’
স্যার মারতেন খুব কম। আমার ক্ষেত্রে সেটা আর কম। আমি খুব শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিলাম। স্যারের সাথে কখনও মিথ্যে বলতে পারতাম না। একারণে স্যার আমাকে একটু বেশিই ভালবাসতেন। মেরেছেন আমাকে সবচেয়ে কম। তারপরও তিন দিনের মারের কথা ভুলতে পারব না। প্রথম মারটা দিলেন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াকালে। নিষ্ঠুর বানান ভুল করেছিলাম। স্যার আগের দিনই সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, ‘সাবধান! এই বানানটা ভুল হতে পারে। খুব ভালো করে মনে রাখবে।’ কিন্তু আমরা মনে রাখিনি। তখন আর সবার সাথে আমাকেও মার খেতে হলো।

আরেক দিনের মারাটা ভোলার নয় কখনও। সে মারে আঘাতের জোর যতটা না ছিল, অপমানের জ্বালা ছিল অনেক বেশি। গোটা স্কুলের ছেলে-মেয়ে হাঁ করে উপভোগ করেছিল সেই অপমানের দৃশ্য। মাঝে মাঝে উদ্ভটসব কাজ করে ফেলতাম আমি। স্যার এমনিতে প্রাইভেট পড়াতে চাইতেন না। কিন্তু ছাত্র আর অভিভাবকদের তাগাদায় বাধ্য হতেন। সকালে আর রাত্রে দুটো ব্যাচ ছিল স্যারের। সকালে পড়াতেন স্কুলে, রাতে বাড়িতে। তখন পরীক্ষা চলছিল। একদিন সন্ধ্যায় পড়তে যাওয়ার সময় কে যেন বলল, পরীক্ষার সময় আবার কীসের প্রাইভেট পড়িস? আমি ভাবলাম, ‘তাই তো? পরীক্ষার পড়া তো আগেই পড়া আছে, সেগুলো বাসায় বসেই তো পড়া যায়!’
অতএব দুদিন পড়তে গেলাম না। তৃতীয় দিন ধরলেন স্যার। পরীক্ষা দিতে ঢেকার সময় কদম তলায় স্যারের সামনে পড়ে গেলাম।
‘কী-রে পড়তে আসিসনি কেন দুদিন?’
কী জবাব দেব? চুপ করে রইলাম। স্যার, প্রথমে কানটা ধরলেন। পরে গালের চামড়া ধরে ঘুরিয়ে জোরসে লাগালেন সপাটে চড়। দুই-তিনটা। আমি তখন পৃথিবীতে নেই। কয়েকশো জোড়া চোখ তখন ড্যাব-ড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। কোনওমতে চোখের পানি সংবরণ করে লজ্জিত-অপমানিত পায়ে পরীক্ষার হলে ঢুকে পড়লাম।

পরীক্ষাটা খারাপ হলো না, কিন্তু অপমানের চূড়ান্ত হতে তখনও বাকি। স্কুল থেকে ফেরার পথে পড়লাম ছোট চাচার পাল্লায়। তার দোকানের সামনে দিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়। অবশ্য অন্য একটা পথও আছে। কিন্তু সে পথে গেলেও কী রেহাই মিলবে, বরং বাড়ি গিয়ে আরও বড় শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। ভাবলাম যাই, চাচার দোকানের সামনে দিয়েই। চাচার যা স্বভাব, শাস্তি দেবার থাকলে লোকজন মানবেন না। আর যদি এখান থেকে রেহায় পেয়ে যাই তবে বাড়ি গিয়ে হয়তো কিছু বলবেন না! কিন্তুে আমার আশাঙ্কাই সত্যি হলো। রাস্তা থেকে ডেকে ভরা বাজারে চাচা আমাকে জুতো পেটা করলেন। চাচার প্রশ্ন ছিল, স্যার কেন মারলেন?
জবাব দিতে পারিনি। দিলেই বা কী ছাড়তেন? আরও বেশি মার জুটত কপালে। স্যার কী জানতেন এ কথা? মনে হয় না। আজ বলতে দ্বিধা নেই, ‘স্যার, যে কদিন আপনি আমাকে মেরেছেন সেই কদিন ছোট চাচার হাতে পিটুনি খেতে হয়েছে। ‘কিন্তু স্যার, আপনার মারের ভেতর সতর্কতা থাকত। যেন বড় রকমের আঘাত না পাই। ছোট চাচার মারে তার ছিটেফোঁটাও থাকত না। নির্দয়ভাবে গরুপেটা করতেন।’
আমি জানতাম স্যার, এই লেখাটা যখন ম্যাগাজিনে ছাপা হবে, আপনার হাতে পড়বে, সেদিনি এই ঘটনা জেনে আপনি কষ্ট পাবেন। কিন্তু কী স্বার্থপর আপনি! এই কষ্টটার ভয়ে চলে গেলেন!
জানেন স্যার, আজ খুব কেঁদেছি। হাউমাউ করে কেঁদেছি। সেই নয় বছর আগে আমার ছোটবোনের বিয়ের আসরে ওকে বিদায় দিয়ে শেষবারের মতো কেঁদেছিলাম।

একদিনের ঘটনা খুব করে মনে পড়ে। মার বাঁচাতে কী দক্ষতাটাই না দেখিয়েছিলাম সেদিন। বিকেলে গেছি স্যারের বাড়িতে। খাটে বিছানা পেতে তার ওপর বসে আমরা। স্যার চেয়ারে বসা। কী এক কারণে স্যার অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলেন। এই ফাঁকে কোনো দুষ্টুমিতে হেসে ওঠে একজন। উচ্চ হাসি। সেই হাসি সংক্রমিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে সবার ভেতর। আমার লক্ষ স্যারের দিকে। জলন্ত দৃষ্টিতে পরখ করছেন স্যার। রক্তহীম করা সেই দৃষ্টিতেই যা বোঝার বুঝে গেলাম। প্রলয় নামবে এখনই।

ওদিকে হাসি আমাকেও আক্রান্ত করতে চাইছে। কিন্তু স্যারের অগ্নিদৃষ্টিকেই বা উপেক্ষা করি কীভাবে? কলমের ক্যাপাটা খুলে মুখে পুরালাম। দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরলাম ওটা। কোনও মতে হাসি চেপে রাখতে পারলাম। স্যার চালের বাতা থেকে বেতটা নামিয়ে পাইকারি হারে পিটুনিটা দিলেন। এত নির্দয় হতে স্যারকে দেখিনি কখনও। ভেবেছিলাম এতজন ছেলের মধ্যে কে হেসেছে আর কে হাসেনি এটা হয়তো স্যার খেয়াল করেননি। তাই মার আমিও হয়তো এড়াতে পারব না। কিন্তু ওই যে পাখির চোখ যাকে বলে। সবাইকে ঠ্যাঙালেও আমার গায়ে টোকাটিও দিলেন না স্যার। বন্ধুরা অবশ্য ব্যাপারটা বোঝেনি। পরে আমাকে ছেঁকে ধরে সবাই। কেন স্যার আমাকে মারেননি। আমি বললাম সেকথা। অনেকেই আফসোস করল, ইশ এই বুদ্ধিটা কেন আমার মাথায় আসেনি। কেউ কেউ বলল, এ বুদ্ধি মাথায় এলেও হাসি ঠেকিয়ে রাখতে পারতাম না। ধন্যি তোর প্রচেষ্টা!

প্রতিদিন সন্ধ্যার ঠিক আগে স্যারের বাড়ি যেতাম, হারিকেন জ্বালিয়ে। সন্ধ্যায় মসজিদে আজানের সুর, অন্যদিকে স্যারের ঘরে শাঁখ বাজত। কাকীমা-- মানে, স্যারের স্ত্রী উঠোনের কোণে যত্ন করে লাগানো তুলসি গাছটার সামনে দাঁড়িয়ে সান্ধ্য-আহ্নিক করতেন। দুই ধর্মের দু-রকম সাংস্কৃতির বিরল দৃশ্য উপভোগের সে এক গৌরবময় ইতিহাস। আমাদের পড়াতে-পড়াতে খবর শুনতেন স্যার। রেডিও বাংলাদেশ, আকাশবাণী ও বিবিসি। খবর শোনার অভ্যাসটা ওখান থেকেই তৈরি হলো। খবরের সময় কাকীমা ভেতর থেকে মুড়ি পাঠাতেন। মেশিনে ভাজা ইন্ডিয়ান মুড়ি, তাতে সরিষার তেল মাখানো। সেই তেল মেশানো মুড়ির অপূর্ব স্বাদ আজও খুঁজে ফিরি।


বিজয়ের মেয়ের সাথে বিশু স্যার।

স্যারের বাড়িতে পড়তে যাওয়ার কারণে তাঁদের পরিবারের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। স্যারের এক ছেলে দুই মেয়ে। বড় মেয়ে লিপি আমাদের পাঁচ বছরের বড়, তবু তাকে তুই সম্মোধন করতাম। ছোট মেয়ে টপি আর একমাত্র ছেলে বিজয় আমাদের দুই ক্লাস ওপরে পড়ত। তবুও তাঁদেরকে নাম ধরে ডাকতাম। একেবারে বন্ধুর মতো সম্পর্ক ছিল ওদের সাথে।


মায়ের শ্রাদ্ধক্রিয়ায় ব্যস্ত বিশু স্যার। পাশে লিপিদি।


স্যার আপনি কি জানতেন, ছমাস পরেই বিজয়কে এভাবে এই জায়গায় বসতে হবে?

আর ছিলেন ঠাকুরমা। মানে স্যারের মা। সত্তুরেরও বেশি বয়সী ওই বৃদ্ধা আমাকে খুব ভালোসাতেন। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ ছেলেমেয়ের পড়াশোনার হাতেখড়ি হতো তাঁর হাতেই। আমি অবশ্য তাঁর কাছে পড়িনি কখনও। তবে আমার ছোটচাচা তাঁর কাছে বর্ণমালা শিখেছেন। ঠাকুরমা আমাকে কখনও শুধু রনি নামে ডাকেননি। বলতেন ‘খোকনের ভাইপো রনি’। আমাদের বর্ণশিক্ষা হয়েছে আদর্শলিপি পড়ে, কিন্তু ঠাকুরমা পড়াতেন বিদ্যাসাগরের বর্ণ পরিচয়ের প্রথমভাগ-দ্বিতীয়ভাগ। তাঁর কাছে পড়া ছেলেমেয়েরা যুক্তবর্ণতে বেশ এক্সপার্ট হয়ে উঠত। ঠাকুরমা প্রায়ই বিপদে ফেলে দিতেন। কঠিন কঠিন সব বানান ধরে বসতেন। প্রায়ই তাচ্ছিল্যের সুরে বলতেন, ‘জানবি কী করে, পড়িস তো বিশুর কাছে, ও বানানের কী মুণ্ডুটা জানে?’
একথা শুনে স্যার মৃদু হাসতেন শুধু।


মৃত্যুর আগে শেষ শয্যায় ঠাকুর্মা

শেষ দিকে এসে স্যারের বাড়িতে থাকা শুরু কররাম আমি আর এক বন্ধু। দিনের বেলা তিনবার গিয়ে বাড়ি থেকে খেয়ে আসতাম। স্যারের ছেলেমেয়েদের সাথে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ল। কিন্তু বিদায়ের রাগিনি বাজল খুব শিঘ্রি। পরীক্ষার শেষ হলো। প্রাইমারির পাঠ চুকল। স্যারের সাথে, তার পরিবারের সাথে বিচ্ছেদটা ঘটল দ্রুত। তবে স্যারকে ভুলিনি আমি। ভুলিনি তার পরিবারকেও। লিপিদি আর টপিদির বিয়ে হয়েছে বহুদিন হলো। তারা যখন বাপের বাড়ি বেড়াতে আসে মাঝে মাঝে দেখা হয়। গ্রামে গেলেই চেষ্টা করি স্যারের বাড়ি গিয়ে কাকিমাকে একবার দেখে আসার। আর ঠাকুর্মা? ১০৩ বছর বয়সে গত বছর তিনি না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন।
এই লেখাটা অনেক আগের। তুলে রেখেছিলাম। ভেবেছিলাম লেখাটা শিক্ষক দিবসে সচলে পোস্ট করব। তারপর কোনও এক ম্যাগাজিনে ছেপে স্যারের হাতে ধরিয়ে দেব লেখাটা।
আমার কল্পনায় একটা ছবি ভাসে একথা ভাবলে। স্যার লেখাটা পড়ে আমাকে জড়িয়ে ধরছেন। কিন্তু স্যার আপনি স্বপ্নেও ভাবিনি, আপনার বুকটা এভাবে সরিয়ে নেবেন!

--------------------------------------------
* প্রিয় সচল আজকের লেখায় টাইপো, ভুল ত্রুটি থাকলে প্লিজ ওগুলো কষ্ট করে বুঝে নিন। আমি পারছি না ওগুলো ঠিক করতে।
* লেখাটা ফেসবুকেও নোট আকারে প্রকাশ করলাম, সচলরা আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি সহ্য করতে পারছিলাম না।

ছবি: 
17/05/2012 - 12:40পূর্বাহ্ন

মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

শিক্ষকের প্রতি এই অদ্ভুদ ভালবাসা নাড়া দিয়ে গেল আমাকে। আমিও স্যারদের ভালবাসা ও করুনারস পেয়েছি যা হয়তো অনেকের ভাগ্যে জোটে না ।মনে রাখার মতো স্মৃতি আছে ঝুলিতে। স্যার তো স্যারই, তাই, আপনার বিশু স্যারের প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।

------
রাধাকান্ত

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই, আপনাদের ভালবাসায় আমার বুকের ভেতর স্যার বেঁচে থাকুন সারা জীবন।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

এমন সব স্যারের সান্নিধ্যে আপনি যে প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছেন- আপনার পোস্টগুলোই এর প্রমাণ।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

এমন মানুষ আর পাইনি, আমার বাবা যদি উনার মত হতেন, আমি আরও ভাগ্যবান হতাম।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

"আষাঢ়" কবিতাটা পড়ে পুরোনো দিনের ভাবনায় ডুবে গিয়েছিলাম। ছাত্রজীবনে এরকম একজন শিক্ষক পাওয়া সত্যিই দুষ্কর বর্তমানে। আপনি ভাগ্যবান।

রাসিক রেজা নাহিয়েন

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

নতুন প্রজন্ম জানলও না তার কী থেকে বঞ্চিত হলো।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

এক লহমা এর ছবি

শ্রদ্ধা

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- শ্রদ্ধা

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি অনেক ভাগ্যবান।
এমন একজন মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছেন, এতটা ভালবাসতে পেরেছেন ...
আপনার স্যারও কিন্তু সৌভাগ্যবান ছিলেন। কতজন এমন শিক্ষিত মা পায়? প্রয়াত ঠাকুমার জন্যে অনেক ভালবাসা।
-সো।
শ্রদ্ধা

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আসলেই আমি ভাগ্যবান। ঠাকুরমাও আমাকে খুব ভালোবাসতেন।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

তারেক অণু এর ছবি

আপনাকে দেখা আজ খুব খারাপ লাগছিল রনি ভাই, শিশুর মত কাঁদছিলেন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে। আর কাছের মানুষ অসময়ে চলে গেলে এমনটাই স্বাভাবিক। অত্যন্ত দুঃখিত ভাই, তবে স্যার আপনার আজকের অর্জন দেখলে অবশ্যই গর্ববোধ করতেন।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

কখন জানি, আপনাকেও খুব খুব ভালবেসে ফেলেছি। ৩০ বছরের জীবনের সব বন্ধুকে পেছনে ফেলে আপনিই হয়ে উঠেছেন সবার সেরা।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আয়নামতি এর ছবি

.....

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- শ্রদ্ধা

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

বিশুস্যারের মতোন স্যররা ছিলো বলেই আমাদের শেখার সুযোগ হয়েছে অনেক। এখনকার মতো শিক্ষার ব্যবসায়-বানিজ্য তখন ছিলোনা এবং ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ছিলো পিতাপুত্রে ন্যায় মধুর।

আর এখন ছাত্র শিক্ষককে যেমন পেটায় তেমনই শিক্ষক ছাত্রীদের সুযোগ পেলেই যৌননির্যাতনও করে। নৈতিকতা এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়ে আমরা অমানুষ হয়ে যাচ্ছি---

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধর্মীয় মূল্যবোধ কি শিশু যৌননির্যাতন ঠেকাতে পারে? স্যরি ভাই, আপনি নামটা লেখেন নি। মধ্যপ্রাচ্যের মতো যৌন নির্যাতন কোথাও হয় বলে আমার জানা নেই। মূল্যবোধটাই আসল, মুক্তবুদ্ধির মূল্যবোধ।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

শ্রদ্ধা

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

আবার মনে করিয়ে দিলেন চকস্লেটের জীবন। ঘন শব্দের অর্থ যে মেঘ সেটাতো ভুলেই গিয়েছিলাম। বেশ গুছানো লেখা। লেখার আবেগ ছুঁয়ে গেছে। বিশু স্যারের চলে যাওয়াটা কবে সেটা বুঝা গেলো না।

আমার প্রায়ই মনে হয় 'ভেঙ্গেচুরে চুরমার' হয়ে যাওয়ার সময় হয়তো লিখতে নেই। রবীন্দ্রনাথ যেমন বলেছিলেন "যেদিন তাজমহল তৈরী শেষ হল সেদিন মমতাজের মৃত্যুর জন্যে শাজাহান খুশি হয়েছিলেন? তাঁর স্বপ্নকে অমর করবার জন্যে এই মৃত্যুর দরকার ছিল। এই মৃত্যুই মমতাজের সব চেয়ে বড় প্রেমের দান। তাজমহলে শাজাহানের শোক প্রকাশ পায় নি, তাঁর আনন্দ রূপ ধরেছে।" সেরকম লেখাটা ভালো হয়ে গেলে শেষে কেমন একটা তৃপ্তি হয়। সেই ভয়ে আমার সাময়িক দুর্ঘটনা কিংবা শোক নিয়ে লিখতে ভয় করে। সে যাক, স্মৃতিচারণ ভালো লাগলো। সোনার ধানে ভরে থাক পৃথিবী। এইতো থেকে যাওয়া।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

স্যারের মৃত্যুর ৪ ঘন্টা পরে লেখাটা পোস্ট করেছি। অর্থাৎ শুনবার স্যার চলে গেছেন।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

স্যারের জন্য শ্রদ্ধা রইল।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনাদের মতো মানুষের প্রেরণা, ভালবাসা, সমবেনার কারণেই এথ অঘটনের পরেও বেঁচে আছি

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ছাত্রজীবনে একজন আদর্শ, প্রিয় শিক্ষক পাওয়াও ভাগ্য বইকি! যেমন জীবনে একজন সত্যিকারের বন্ধু (সত্যিকারের বন্ধু= এই যেমন খাঁটি গরুর দুধ) পাওয়া!
আমি, আমার ছাত্র জীবনে ১১টা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়েছি। বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠানেই ১-২ বছরের সময়কাল।

বিশু স্যারের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং আপনার প্রতি সমবেদনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখাটি বেশ ভাল লাগল। আপনার স্যারের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা
খালেদুর রহমান শাকিল

guest_writter এর ছবি

আবেগ প্রবন করে দেওয়ার মত লিখা। মনে করিয়ে দিল অনেক কিছু। ভাল লাগল পড়ে।
শিমু সিরাজী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।