বিমান বন্দরকে আমার কাছে সবচাইতে 'ডার্টি প্লেস' মনে হয়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে পরিপাটি হলেও সবারই চোখ ভিজিয়ে দেয় জায়গাটা। যারা উপরে খুব শক্ত, অ্যাকুয়াস হিউমার নির্গমনে যারা অক্ষম তাদের ভেতরটা ভিজে যায়, দুমড়ে-মুচড়ে একাকার হয়ে যায় বুকের ডান-বাম পাশ।
পারতঃপক্ষে তাই এড়িয়ে চলি জায়গাটা আমি। বিদায় শব্দটা খুব বেশি কষ্টকর ঠেকে আমার কাছে। নানা অজুহাতে এড়িয়ে যাই বিদায়ের ক্ষণ। মৃদু হ্যান্ডশেক, আলতো ঝাঁকি দিয়ে বুঝিয়ে দেয়া 'আই উইল মিস ইউ' কিংবা একটা 'যাদুকা ঝাপ্পি' দিয়ে 'টেক এ ভেরী গুড কেয়ার' পর্যন্তই আমার দৌঁড়। এর বেশি পারি না। পরবর্তী ক্ষণগুলো দহনে দহনে অঙ্গার করে যায় আমাকে। হাহাকার জন্মায় চামড়ার অনেক অনেক নিচে। শুন্যতা তৈরী হয় চারপাশে। আমি দিশা হারিয়ে ফেলি।
একে একে চলে যায় সবাই। আমাকে ছেড়ে, অথবা আমি ছেড়ে আসি। থাকতে পারিনা তাদের খুব কাছে যাদেরকে ডিজার্ভ করি। দশ মিনিটের খুব স্মার্ট একটা সাক্ষাৎ শেষে ঘরে ফেরার পথে যখন 'নাউ উইথ হুম ইউ উইল ফাইট ওভার গার্লস? লীভিং অল জার্মান বিউটিজ ফর ইউ। হ্যাভ অল দ্য ফান, এলোন!"- একটা হলুদ খাম আমার মোবাইলের স্ক্রীনে হামলে পড়ে, আমার পায়ের তলার মাটি সরে সরে যায়, ঠিক যেমন সমুদ্রের তীরে দাঁড়ানো আমার পায়ের নিচ থেকে ছোট একটা ঢেউ এসেও বালুগুলো সরিয়ে নিয়ে যায় সাথে করে। আমি খর্ব থেকে খর্বাকার হয়ে যাই।
ঘটঘট শব্দে স্মৃতির ক্যামেরা রিউইন্ড হতে থাকে। একটা একটা করে দৃশ্য ভেসে উঠেই আবার নিভে যায় দপ করে। আর খুঁজে পাইনা শত হাতড়েও। কতোগুলো সন্ধ্যা পাড় হয়েছে একত্রে। ঠাট্টায়, খুনসুটিতে। মাতিয়ে রেখেছি সময়গুলো, সবাই মিলে। রোন্টগেনস্ট্রাসে আইন উন্ড সোয়ানসিশ কিংবা হান্স বোকলার আলে দ্রাই। পেটপুরে খাবার পরে এক কাপ চা কিংবা আইসক্রিম হাতে নিয়ে কথার ফুলঝুড়ি। কোথাও বের হলে পুরো এক কাফেলা। এখন আর কেউ বাকি নেই। পুজো এলো আবার, শিভা বারও ঠিম তেমনিই আছে। ঠিক আছে টাকোস, চিলিস কিংবা অলিগলিগুলো। শুধু পরিচিত সেই মুখগুলো থাকেনা পাশে। একে একে চলে গেছে সবাই যার যার গন্তব্যে।
শুধু রয়ে গেছি আমি, সমস্ত স্মৃতি বুকে নিয়ে, ছোট ঐ রাস্তাটির বাঁকে!
http://www.esnips.com/doc/a0628898-db9d-432b-a679-cb41e3bda321/Romantic-Instruments
মন্তব্য
পড়লাম।
ধন্যবাদ
শুনলাম।
পড়লাম।
মন খারাপ হইলো।
লোকে বলে, খালি আমি দুঃখবাদী লেখা লিখি। এখন তো দেখি সবাই লেখে।
মিউজিকটা চীনা লোকসংগীত এর সুর মনে হইলো। জানা থাকলে জানাইয়েন।
মিউজিকটা খুব সম্ভবত ভালোবাসার সুর। সব বিরহের সুরই প্রেমের সুর। এই সুরটির মধ্যেও বিরহ আর প্রেমের অপূর্ব সংমিশ্রণ আছে বৈকি!
চৈনিক ধাচের মনে হয়েছে আমার কাছেও, বিশদ জানি না বলে দুঃখিত।
সবাই চলে যায়, তাদের যেতে দিতে হয়। থাকে শুধু স্মৃতি, ভালোলাগাটুকু। সেগুলো জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
মাঝে মধ্যে মনে হয় এই যে এত ভাল স্মৃতিগুলো আমাদের ভেতরে আছে সেগুলো ইস্নিপ্সের মত কোথাও রেখে যখন তখন রোমন্থন করতে পারলে ভাল হতো। ছাতার মনখারাপের সময় ভাল কোন স্মৃতি মনে পড়তে চায়না।
×××××××××××××××××××××××××××××××××××××××××××
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
রেজওয়ান ভাই, এই কাটা কাটাগুলা কয়েকটা ছাইটা দেন । বিশ্রী লাগে দেখতে । কমেন্ট বক্স থিকা বায়রায় যায় ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
দীর্ঘশ্বাসের একটা ইমোকটিন থাকলে লিখে মন্তব্য করার প্রয়োজন হতো না ।
এতো মন খারাপের কী হলো? চিয়ার আপ!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
এ তো দেখি পুরা জাতি উদাসী আর বিবাগী হয়ে পড়লো
আমি আর বাকি থাকি কেন?
সিলেটের শিল্পকলা একাডেমির সাবে সেক্রেটারি বাবর ভাই জীবনে একবার কীভাবে যেন কয়েকটা লাইন লিখে ফেলেছিলেন কবিতার মতো
লাইনগুলো আমার মুখস্থ (তার নিজের হয়তো মনে নেই)
সেই লাইনগুলো তুলে দিলাম
'কেউ কখনও পারে না যেতে
কেউ কখনও যায় না
যে যায় সেতো অন্য মানুষ
ফিরেও আসে অন্য কেউ'
রুমান সাহেব যে! অনেকদিন পর!
মন খারাপ কেনো? ঐ স্মৃতিগুলো আছে বলেই তো প্রবাসে বেঁচে থাকা যায়।
চিয়ার আপ ম্যান! পারলে আমার মহল্লায় আইসেন একবার। সরিষা ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা, আর গরুর দুধের সর ওঠা চা খাওয়া যাবে। খানিকটা গল্পও হবে। কি বলেন?
- সাব্বাস বাবার ব্যাটা। এক্কারে বেবাক ঝাইড়া দিছে।
হ, ফুন লম্বরটা দিলে আমরাও গফশফ করতাম। মন ভালা হৈয়া যাইবো নে।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহা কী একখান সুরের লিঙ্ক দিলেনরে ভাই।
অসাধারন!! খালি শুন্তেই আছি...
নতুন মন্তব্য করুন