মূল লেখা শুরু করার আগে কিছু আজাইরা প্যাঁচাল পেড়ে নেই । সেদিন মেইল চেক করতে গিয়ে দেখি আমার হাচল হবার বার্তা জানিয়ে মেইল করা হয়েছে । আমি ত ভীষণ অবাক । হাসব নাকি কাঁদব, খুশি হব নাকি ব্যাজার হব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না । সচলায়তনের মডুরা কোন দুঃখে আমাকে হাচলত্ব দিলেন ভেবে ভেবে কূল কিনারা করতে না পেরে - প্রথমে ভাবলাম, সত্যি দেখছি ত নাকি কোথাও কোন ভুল হচ্ছে ! মডুরা হয়তবা ভুল করে ভুল ঠিকানায় চিঠি পোস্ট করে ফেলেছে, বার কয়েক বার্তার ঠিকানা, নিজের নাম মিলিয়ে মিলিয়ে রীতিমত বানান করে করে পড়লাম, নাহ সবই ত ঠিক আছে !
তারপর ভাবলাম, হয়ত পরের কোন মেইলে জানানো হবে, 'দুঃখিত আপনাকে ভুল করে হাচল হবার সংবাদ জানিয়ে মেইল করা হয়ে গেছে' । যাই হোক সাত পাঁচ ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম, লগইন লিঙ্কে গিয়েই দেখি না কেন কি বিত্তান্ত...
হয়ত লগইন করতে গেলেই ওখানে ধরা খাব, দরজায় আটকে দেওয়া হবে – যাই হোক, মনকে বুঝ দিয়ে ক্লিক করে ফেললাম - যেখানে কোন আশা ভরসা ছিল না, সেখানে হারাবার ত কিছু নেই, বরং নতুন কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হলেও হতে পারে ...
ওমা ! সত্যি সত্যি লগইন করতে পারলাম, কেউ কোথাও আটকাল না
ত লগইন করে নিজের নাম বামপাশে দেখে, চোখ কচলে কিছুক্ষণ পিট পিট করে নিজের নামের দিকে তাকিয়ে তাকলাম । আহা কী সৌন্দর্য !
তারপর আর কী? আশে পাশে যখন বলার মত কেউ নাই, নিজেই দাঁত বের করে হাসলাম কতক্ষণ
তবে নিজের একটা কোন লেখা ছাড়াই হাচল হয়ে যাওয়াতে কেমন যেন একটু কুণ্ঠিত লাগছে নিজেকে । আবার দেখছি ফাঁকিবাজের তালিকায়ও নাম উঠছে ইদানীং !
ত কী আর করা, এবার কিছু মিছু একটা লেখা দরকার, কিন্তু কী লিখব ? মাথা চুলকাতে চুলকাতে কিছুই বের হতে চায় না সেই মাথা থেকে । খালি ভাবি... ভাবতে ভাবতে যায় বেলা...ভাবাভাবির ত সীমা আছে, কত আর ভাবা যায়? ভাবতে ভাবতে মাথা ব্যাথা হয়ে গেল আমার...
মূল সমস্যা হচ্ছে, সচলের বাঘা বাঘা পিলে চমকানো সব লেখক, এবং তাঁদের সেই রকম সব লেখা ! তাই এতদিন ভাবছিলাম আমার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হচ্ছে, পাঠক থেকে যাওয়া - মাঝে মধ্যে হু হা করে, ধরি মাছ না ছুঁই পানি গোছের, হালকার উপর ঝাপসা কিছু টুকটাক মন্তব্য করলাম, সে ঠিক আছে ...
কিন্তু আস্ত একখানি লেখা? ওরে বাপরে !
যাই হোক মেলা ধানাই পানাই হল, এবার লজ্জা লজ্জা ভাব করে নীচের এই লেখাটা পোস্ট করেই দিলাম । যা আছে কপালে ...
......................................................................................................
বিড়াল কাহিনী...
মাস দুয়েক আগের এক সকালের ঘটনা । ঘুম থেকে জেগে আমার প্রথম কাজ হচ্ছে নীচের তলায় নেমে, লিভিং রুমের সব কার্টিন এক টানে সরানো । যেন একটানে না সরালে, সকালের রূপটা দেখতে অনেক দেরী হয়ে যাবে –কিছু কিছু বিষয়ে আমার এই ধরণের অদ্ভুত কিছু অস্থিরতা আছে ...
শীত, গ্রীষ্ম বর্ষা, টিপ টিপ বৃষ্টী, প্যাচপ্যচে বৃষ্টি, মোট কথা সকালটা যেমনি হোক - সারা বছর খুব সকাল উঠে ঘরের পর্দা আমাকে একটানে সরাতেই হবে - নাহলে কেমন যেন দম বন্ধ দম বন্ধ লাগে । সেদিনও পর্দা সরিয়ে প্রতিদিনকার মত আমার এক চিলতে বাগানের দিকে তাকিয়েছি – তাকিয়ে আমি ত মহা অবাক, বাগানের এক কোনায় রাখা সুইং বেঞ্চে অঘোরে ঘুমাচ্ছে একটা বিড়াল । ভঙ্গিটা এতই আরামের এবং নিশ্চিন্ত – আমার নিজেরই আরাম লাগতে থাকে ওদের আরাম দেখে ।
ভাল মত তাকিয়ে দেখি, তিনি একা নন, তার ঘুমন্ত শরীরের নীচ থেকে আরেকটি ঘুমন্ত মুন্ডু বের হয়ে আছে । কিছুক্ষণ ভ্যাবলার মত দাঁড়িয়ে থেকে নীচ থেকেই শুরু করলাম চিৎকার ! অর্থাৎ বাচ্চাদের ঘুম থেকে উঠানো । যদি ওরা দেখার আগেই এই দৃশ্য হারিয়ে যায় !
বাচ্চাকাচ্চারা আমার হাউকাউ এর জ্বালায় – শনিবারের সকালের ঘুম বিসর্জন দিয়ে নীচে নেমে আসে – ওরা আসার পর আবিষ্কার হল আসলে তিনারা দুই জন না, চারজন ! মা বিড়ালের শরীরের ওমের তলায় শুধু মাথাটা ফাঁকফোকর গলিয়ে বের করে পুরো পরিবার একসাথে মজা করে ঘুমাচ্ছেন ।
অসাধারণ একটা দৃশ্য ! আসলেই । কতক্ষণ দেখছিলাম জানি না, হঠাত মনে হল – এই দৃশ্য ছবি বন্ধি করে রাখতে হবে । হাতের কাছে মোবাইল নিয়ে দেখি যথারীতি চার্জ নেই ! শেষ পর্যন্ত দুএকটা ছবি কোন মতে উঠানো গেল ।
বাচ্চাদের আনন্দের প্রকাশ দেখে মনে হল যাক ওদের চিৎকার চেঁচামেচি করে ঢেকে উঠানো স্বার্থক হয়েছে ।
প্রাথমিক মুগ্ধতা কেটে যাবার পর আমরা সবাই মিলে ভাবতে বসলাম – এই বিড়াল পরিবারের মালিক আসলে কে,বা কাহারা? এখানে কী করে এলো? আর এই আগমনের হেতুই বা কী? তাও একজন না, সবাই মিলে একসাথে...
আরেকটা ভাববার বিষয় হল, আগের রাতে প্রচন্ড শীত এবং ঝড়ো হাওয়া ছিল । সকালেও বৃষ্টি এবং বাতাসের দাপাদাপির বিরাম ছিল না । দরজা খুলে যে কাছে যাবো তার ও উপায় ছিল না । (আমি অবশ্য কাছে যেতাম কিনা সন্দেহ) সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার ছিল ওরা এত কিছুর মধ্যেও গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে । অন্তত দেখে তাই মনে হচ্ছিল ।
আমি বিড়াল বিষয়ে একেবারেই অজ্ঞ - একবার শুধু বাচ্চাদের বলেছিলাম, ছোট বেলায় শীতের দিনে রাত বিরেতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে প্রায়ই নরম কিছু পায়ে ঠেক্লে বুঝে নিতাম লেপের নীচে বিড়াল ঢুকে, পায়ের সাথে লেপ্টে আছে -যেইনা টের পেতাম, চিৎকার করে দিতাম পা দিয়ে এক লাত্তি !
আমি আবার কুকুর বিড়ালের মত নীরিহ প্রাণী কেও ভয় পাই লাথি দেবার কথা শুনে আমার বাচ্চারা সেদিন আঁতকে উঠে নানা বিদ্রুপাত্বক মন্তব্য করে – আমার মানবিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে ! অতএব, বিড়াল বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতার ব্যাপারে আমি আর কথা বাড়াই না – এ কথাটাও গোপন রাখি যে, একেবারে বাচ্চাবেলায় একটা হুলো বিড়াল আমার পাত থেকে ইয়া মোটা সাইজের একখান ইলিশ মাছ ভাজা তুলে নিয়ে গিয়েছিল, আমার কাতর চোখের দৃষ্টি তোয়াক্কা না করে, (ওদের ত আর প্রিয় খাবারের তালিকায় ইলিশ মাছ নেই, এই দুঃখ ওরা কি বুঝবে! ) সেই থেকেই কি না, জানিনা এই প্রজাতির সাথে আমার বিশেষ একটা খাতির নেই ।
এখন আজকের মত এখানেই ইতি । হাতে ব্যাথা করছে এই টুকু লিখেই, উফ !
আশা করি লিখতে লিখতে আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে যাবে লিখার ।
আজকের মত বিদায়, পরে একদিন বাকিটুকু লিখে বিড়াল রহস্য শেষ করব সাথে দু'এক খান বিড়ালের ফটুক থাকলেও থাকতে পারে।
মন্তব্য
অভিনন্দন হাচল হবার জন্য। আমি ও মেইল পেয়েছিলাম আপনার মতই। কিন্তু একবার লগ ইন করে যেই লগ অফ করলাম, পরে আর কিছুতেই লগ ইন করতে পারিনি। মডু ভাইদের দু দুটো মেইল করে জবাব না পেয়ে ভাবছি আমারটা হয়ত ভুল ছিল। ফলে মনে বড় আশা ছিল লেখা দেবার। সেটা আর হল না।
এখন মনের দুঃখে বনে না গিয়ে দেশে যাচ্ছি।
লগ ইন করে নিজের নামটি যখন বা পাশে দেখলুম, কি যে আনন্দ হল!
আমি পড়তে বড্ড ভালবাসি, না হয় সারাজীবন পড়েই যাবো সচলে আমার প্রিয় লেখকদের লেখা।
দিদি আপনি কি পাসওয়ার্ড বদলিয়ে নিয়ে ছিলেন? শুরুতেই পাসওয়ার্ড বদলিয়ে নিতে বলে কিনা।
আমি ফাঁকিবাজের তালিকায় আপনার নাম দেখেছি। মডুরা নিশ্চয় দেখবেন বিষয়টা।
আমরাও আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
দেশ থেকে ভালোই ভালোই ঘুরে আসুন।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
আপা, নীচে সাফিনাজ যা বলেছেন সেই জিজ্ঞাসা আমার ও, পাসওয়ার্ড কি বদলেছিলেন?
মডুদের অনুরোধ করছি বিষয়টা একটু দেখবার জন্য ।
আমি ও দেশে যাচ্ছি, তবে ফেব্রুয়ারীতে
লগইন লিংকের নীচে পাসওয়ার্ড হারিয়েছে লিংকে ক্লিক করে পাসওয়ার্ড রিসেট করে নিন।
অভিনন্দন
অভিবাদন, সাবেকা, আপনাকে অভিবাদন ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
ধন্যবাদ, জোহরা
অভিনন্দন
আমিও মেইল পেয়েছি আপনার মতোই। হাচল হয়ে আজ আবার বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির ঘটনায় কলরবে কমেন্টও করে ফেললাম। আপনার ধানাই পানাই পার্টটা ভীষণ ছুঁয়ে গেছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে
বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির সংবাদ আর সচলায়তনে আমার প্রথম লেখা দেখার সৌভাগ্য একই সাথে হওয়াতে আনন্দে আমি এখন হাওয়ায় ভাসছি
হাচলাভিনন্দন আপনাকে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ধন্যবাদ, সাফিনাজ।
অনেক অনেক অভিনন্দন! অসমাপ্ত বিড়াল কাহিনীর সমাপ্তির প্রতিক্ষায় থাকলাম
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
,
এককালে আপনাকে নিয়মিত দেখতাম সচলে, এখন আর তেমন দেখি না - ভাল আছেন ত?
হাচল হবার পর আমি মাত্র দুইট কি তিনটা পোস্ট দিসিলাম। ফাঁকিবাজ হয়ে যায় সবাই।
অভিনন্দন
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
হাচল হয়েই ফাঁকিবাজ হয়ে গেলে ক্যেম্নে চলবে, সচল হতে হবে না
অভিনন্দন আপনাকে।
হাচলাভিনন্দন
হাচলাভিনন্দন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মিষ্টি মুখ করেন জলদি !! হাচলাভিনন্দন !!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
মিষ্টির তেমন ভক্ত নই, তবু বলছেন যখন একটু না হয় করলামই
অভিনন্দন!
ধন্যবাদ , রু ।
ইস কি ভালো লাগছিল পড়তে, কেন এত তাড়াতাড়ি শেষ করলেন বলেনতো। পরের বার নাহয় মুভ পাশে নিয়ে লিখতে বসবেন।। অভিনন্দন ফর হাচল হওয়া।
ভাল লাগছিল পড়তে ? সত্যি বলছেন?
তাহলে ত লিখতেই হয় ! কিন্তু 'মুভ' টা কি জিনিস বুঝতে পারলাম না ত
ধন্যবাদ আপনাকে, অদ্ভুত মেয়েটি !
হাচলাভিনন্দন!
হাচলাভিনন্দন!!
কি-বোর্ড চলুক জোরসে!!
ফারাসাত
অভিনন্দন ! লিখতে থাকুন।
অভিনন্দন!
এই অনুভুতি আসলেই অন্যরকম
'সাবেক' হয়ে যাবেন না আশা করি
আসলেই অন্যরকম, আগে ঠিক বুঝিনি
নাহ! 'সাবেক' হবার ইচ্ছা নাই
হাচল হওয়ার মিষ্টি অভিজ্ঞতার অপেক্ষায় আছি। তবে এক্ষেত্রে বুঝি আমার যুগাধিকাল লাগতে পারে। অলসতা আমাকে সদাই পশ্চাতে ধাবিত করে।
ঈয়াসীন
আপনার দূর্বলতার কারণ জেনে হাসি পাচ্ছে।এখন থেকে ভাগ দিয়ে খাবেন কেমন
শুভকামনা রইল।
তুহিন সরকার
অভিনন্দন। ফি-হপ্তায় একটা করে লেখা দিতে থাকেন, হাতের ব্যায়াম হবে
নতুন মন্তব্য করুন