মানুষের জীবন বড়ই ছোট। এক জীবনে তেমন কিসুই ঘটে না। একেতো ট্যাকনিকেলি সম্ভব না, আমি সিরাত ভাই হৈতে পারবোনা, সিরাত ভাই ওমর হৈতে পারবেন না। তার উপর আবার একটা মানুষকে ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক, পারিবারিক, আর্থিক, নৈতিক, আঁতেলিক...অনেক রকম আইন কানুন মানতে হয়। এর ফলে অপশনও কমে যায়, বৈচিত্রও কমে যায়। বসে বসে ভাবতেসিলাম এই জীবনে কি কি করা হয় নাই, কিন্তু করার সম্ভাবনা একেবারে শুণ্য না। কিন্তু সিরিয়াসলি ভাবতে গেলে দেখলাম ব্রেন আউট অফ মেমরী হয়ে যায়। কত কিছু ঘটে নাই আমার জীবনে! বলতে গেলে কিসুই ঘটে নাই! গাড়ি কিনি নাই, বিয়ে করি নাই, চাকরি করি নাই...সিস্টেমেটিক্যালি দেখতে গেলে এই লিস্ট কখনো শেষ হবেনা। কিন্তু এই ধরণের বোরিং চিন্তা করতে তো বসি নাই। আসলে কি করতে বসছি? র্যান্ডম চিন্তা করতে বসছি। র্যান্ডম চিন্তায় ইন্টারেস্টিং সব জিনিস পাওয়া যায়। স্বপ্নে পাওয়া ওষুধ এক রকমের র্যান্ডম চিন্তা থেকে আসে। আবার ধরেন ছোটবেলায় আমার ক্লাসের একটা ছেলেকে বলসিলাম এমন একটা কিছু বল যেটা কেউ কখনো বলে নাই। সে কোন চিন্তা না করে জবাব দিসে, "চেঙ্গিস খানের xx"। আমার ধারণা ও ঠিকি বলসে। কারণ খান বেঁচে থাকতে এটা বলার মত এতবড় ওয়াক্স করা বুকের পাটা কয়জনের ছিল? আর মরে যাওয়ার পর তো নিশ্চয় খান তার সকল অংগ-প্রত্যংগ নিয়েই কবরে গেছেন, তাই এটা নিয়ে আর কারো মাথা ব্যথা থাকার কথা না।
তাই র্যান্ডম কয়েকটা সিন নিয়ে ভাবতেসিলাম। যেমন, জাফর ইকবালের বইতে মহাশূণ্যে একা ভেসে যেতে যেতে নায়ক বেচারি ঝলসানো তিতির পাখি, যবের রুটি আর আঙ্গুরের রসের কল্পনায় হাবুডুবু খায়। শুনতে ভালই, ওমর খৈয়াম-ওমর খৈয়াম লাগে। কিন্তু এই মুহূর্তে ঠিক খাওয়া দাওয়ার মুডে নাই। তার উপর তিতির পাখি খেতে যেমনি হোক, আগে ওটারে দইটই দিয়ে ম্যারিনেট করে নেওয়াও খুব দরকার। প্লেনে লবণ-মরিচ ছাড়া মুস্লিম মিল খেয়ে এমনিতেই বেদম চটে আছি। বুঝলাম জাফর ইকবালের ফ্যান্টাসি দিয়ে আমার পোষাবে না।
ছোটবেলায় রাদুগার অসাধারণ ছোটদের বইগুলা পড়ে কত উষ্টুম-ধুষ্টুম চিন্তা মাথায় আসত (হায় রাদুগা, হায়!)। মনে হত বড় হয়ে রাশায় যাবো, মিখাইল, আন্তন, পাভেল বা আরো কঠিন কঠিন নামের বন্ধু পাবো, যারা সবাই রাদুগার অনুবাদের ওই মিষ্টি ভাষাটায় কথা বলবে। কোথায় কি...
মুজতবা আলীর কর্ণেল পরে হের ওবের্স্টের মত হওয়ার ইচ্ছা জাগসিলো একসময়...বিলাতী কাপড় পড়া নর্দমা পাড়ের সন্ন্যাসী। জ্ঞানে, বুদ্ধিতে, ত্যাগে, সংযমে অনন্য প্রাশান অফিসার। কিন্তু কিসের কি? চেয়ারে হেলান না দিয়ে বসাটাই এখনো প্র্যাক্টিস হলোনা, আর কামিজ ছাড়া কুর্তা পড়ে মাইনাস টেম্পারেচারে ঘোরাফেরা করলে আমি দু'দিনেই স্বর্গত কর্ণেলের কাছে পৌঁছে যাব, কোন সন্দেহ নাই। আজকে কানের উপর থেকে মাফলার হটে যাওয়াতেই সাইনাসের ব্যথায় কাইত (আক্ষরিক অর্থেই) হয়ে গেসিলাম , ইশতিয়াক ভাই প্যারাসিটামল গিলিয়ে জীবন দান করসেন। আমাকে দিয়ে হবে না
আর্নেস্ট হেমিংওয়ের একটা গল্পের কথা মনে পড়ল। নিক এডামস একটা বুড়োর পাশে বসে আছে। সামনে বুড়োর বন্ধু অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। বুড়ো অজ্ঞান বন্ধুর লাইফ হিস্টরি বলতেসে। এই বন্ধু ছিল বক্সার (নাকি রেস্লার, ভুলে গেসি), তার বোন ছিল তার ম্যানেজার। পত্রিকায় লেখা হত ওরা ভাইবোন একজন আরেকজনকে কত ভালবাসে। তারপর একদিন ওরা বিয়ে করে ফেল্লো। ব্যস, সব খতম। কী চমৎকার গল্প। কিন্তু আমার কখনো নিক এডামসের মত আগুনের গরম খেতে খেতে এরকম গল্প শোনা হবে?
এতক্ষণ পড়ে বোধহয় ভাবতেসেন, পোলা আসলে কি বলতে ছায়। আমিও ভাবতেসি। ভাবতে থাকেন...
পুনশ্চঃ চবির কি একটা স্মরণিকায় একটা কপিতা পড়সিলাম অনক দিন আগে। ওটার পরথম লাইন ছিল, "জ্বাল দাও বন্ধু, জ্বাল দাও, আজ বল্কে বল্কে উপচে পড়ার দিন।" কবির ঝ্যাং আসে, কি বলেন?
মন্তব্য
আপনি তো আমি হইয়া গেলেন এই লেখায়। আমি আনন্দ পাইসি, কিন্তু মাইনষে কি কইবো?
হেমিংওয়ের বায়োগ্রাফিটা পইড়েন পারলে। রুটিন কিছু করতে ভাল্লাগবে না এক সপ্তাহ, মনে রাইখেন।
খাইসে, আমার আইপি চেক হবে নাতো!
ছেলে ভালো। এক ফোঁটা শিশির দিয়েছিলাম, সেটাও লিখে রেখেছে।
আমিও ভাবতে পুলাটা কি বলতে ছায়?
লিখতে থাকেন হাত খুইল্যা। চাইর দিলাম।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
দেখেন অবস্থা। সারা জীবন ছক্কা মারার জন্য শট খেইলা গেলাম, কিন্তু খালি চাইরই প্লাম
বেশ লাগল।
মধুবন্তী
দুই হাত দিয়ে সমানে টাইপ করতে থাকেন। লেখা ভালো হইসে!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
বিষয়ডা কী ভাইডি ??? !!!
_________________________________________
সেরিওজা
রান্ডম মিউজিং/স্ট্রিম অফ কনশাসনেস। মিয়া এইসব একটু বুঝতে শিখো না। খালি গুছানো লেখা গুছানো লেখা!
ব্যক্তিগতভাবে আমার কেন জানি এধরনের লেখা পড়তে ভালই লাগে। সব লেখাকে কেন একটা স্টেটমেন্ট দিতেই হবে?
কন কি সিরাত ভাই??? আমি তো মনে করসি এইগুলা স্ট্রিম অফ আনকনশাসনেস! চোখে ঘুম নিয়ে লিখতে বসছি, লিখতে লিখতে ল্যাপটপের উপ্রেই ঘুমায় পরসি...আপনি কি সব সময় এই মাত্রায় কনশাস থাকেন নাকি?
লেখাটা ভাল লাগল অনেক
লেখাটা বেশ লাগল। সামনে আরও ভাল লেখার প্রতীক্ষায় থাকলাম।
ওমর ভাইডি, লেখাডা ভালু পাইলাম। ছন্নছাড়া টাইপ লেখা আমার ভালুই লাগে!
---- মনজুর এলাহী ----
"হায় রাদুগা"
"Life happens while we are busy planning it"
"হায় রাদুগা"
লেখা ভাল লাগল ওমর...
নতুন মন্তব্য করুন