গত একটা বছর বিশ্বকাপ উন্মাদনায় ছিলো পুরো দেশ। চারিদিকে আলোকসজ্জা। হৈ হৈ রব। রাস্তায় রাস্তায় যেখানে সেখানে শুটিং। নাচের তালে তালে গান...
ক্রিকেট ক্রেজি নেশনস, হাউ এক্সাইটিং, স্টেডিয়াম ওয়েটিং, টেনশান টেনশান
ঢিং ঢিটাং ঢিং ঢিং ঢিং ঢিং ঢিং ঢিং...
চার ছক্কা হই হই বল গড়াইয়া গেল কই
গানের সুরে উন্মাতাল ক্রিকেট প্রেমীরা। আপনার উন্মাদনার কিছুই কি আমাকে ছুঁয়ে যায় নি ?! আমাদেরো কি ইচ্ছেটা থাকতে নেই চার ছক্কার চিৎকারে স্টেডিয়াম মাতাতে ?!!
সেই ২০১২ সাল থেকে দেখছি, একেকটা টুর্নামেন্ট আসবে, আর প্রতিবার স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছে টিকেট ক্রয়ের আবেদন করতে হবে আমাদের! সবাই ব্যাংক থেকে টিকেট কিনতে পারলে আমাদের হুইলচেয়ার সহায়ক গ্যালারীর টিকেট ক্রয়ের সুব্যবস্থা সেখানেই কি রাখা যায় না ?!!
এবারের টি-টোয়েন্টি ২০১৪ বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে গত বছর থেকেই টিকেট নামক সোনার হরিণের পিছে ছুটে বেড়াচ্ছিলাম আমরা ক’জন বোকাসোকা মানুষ। আর কর্তৃপক্ষ আমাদের আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছি করে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমরাও আনন্দের সাগরে ভাসছি, টি-টোয়েন্টি’১৪ এর প্রথম ম্যাচ দেখতে পাবো। এই করতে করতে এসে গেলো দিনটি কিন্তু আমরা টিকেট পেলাম না। আচমকা মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। ১৬ মার্চ প্রথম ম্যাচের দিন জানতে পারি, বিসিবি আমাদের টিকেটের আশ্বাস দিতে দিতে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের নর্থ ক্লাব হাউজের শহীদ জুয়েল স্ট্যান্ডের (U block) হুইলচেয়ার প্রবেশগম্য জায়গাটি পেপসিকে দিয়ে দিয়েছে। পেপসি সেখানে চমৎকার একটি ভিআইপি বক্স বসিয়েছে !!
৯ দিন পর......
২৫ মার্চ’১৪ এর পর থেকে মিরপুর স্টেডিয়ামের ১নং গেট দিয়ে যারাই ঢুকেছেন তারা নিশ্চয় লক্ষ্য করেছিলেন, সুউচ্চ সিঁড়ির ডানে রেলিং ঘেরা হুইলচেয়ার সহায়ক র্যাম্পটি দিয়ে তরতরিয়ে উঠে যাচ্ছে অনেকগুলো হুইলচেয়ার। সাথে সহযোগিতা দিতে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীগণ এবং বিসিবির পক্ষ থেকে কয়েকজন সিকিউরিটি কর্মকর্তা।
সবচে’ আনন্দের বিষয় হল, এই মানুষগুলো সকলেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)’র সহযোগিতায় বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতোন প্রতিবন্ধী কোটায় (Disabled Access Ticket) টিকেট ক্রয় করেছেন নির্দিষ্ট মূল্যেই। টিকেটের সাথেই নির্দিষ্ট করে লেখা যার একটি প্রতিবন্ধী মানুষের। অপরটি তার সহযোগির। আলাদা আলাদা দুটি টিকেট উপরের লিঙ্ক সংযুক্ত ছবিতেই দেখতে পাচ্ছেন। সাধুবাদ জানাই বিসিবিকে এদেশে প্রথমবারের এমন প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ নেবার জন্য!
মাত্র ৯ দিনেই কিন্তু এ অসম্ভব সম্ভব হয় নি!
মিরপুরের হুইলচেয়ার সহায়ক এই জায়গাটির কথা প্রথম আমরা জানতে পারি ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজনের সময়। সে সময় মিরপুর স্টেডিয়ামের ১নং গেটে চোখে পড়ার মতোন বিশাল ডিজেবিলিটি লোগোটি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল পরিচিত একজনের। জানতে পেরে, আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশী সিস্টেমস চেঞ্জ এ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান) এর প্রতিনিধি দল স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যায়। হুইলচেয়ার সহায়ক ব্যবস্থা আছে বটে তবে সামান্য কিছু সমস্যা উল্লেখ করে সুব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয় বিসিবিকে। তারাও আন্তরিকতার সাথে সহায়ক টয়লেটসহ আরো বেশ কিছু ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন। দেশের মানুষকে ব্যবস্থাটি সম্পর্কে জানানোর জন্য ২০১২ থেকেই বি-স্ক্যান এর উদ্যোগে কয়েকবার খেলা দেখতে যাওয়া এবং যথা সম্ভব প্রচারের চেষ্টা চলেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তখন টুর্নামেন্টটি শেষ হবার পর ১নং গেটের ডিজেবিলিটি লোগোটি খুলে ফেলা হয় এবং প্রচারের অভাবে স্টেডিয়ামের প্রবেশগম্য এই জায়গাটি লোকচক্ষুর অন্তরালেই রয়ে যায়। বি-স্ক্যান এর মাধ্যমে স্বল্প সংখ্যাক যারাও বা জানতে পেরেছেন হুইলচেয়ার সহায়ক স্থানটির কথা, তারা সহজ টিকেট প্রাপ্তির সমস্যায় পড়ে মাঠে বসে ক্রিকেট ম্যাচ উপভোগের ইচ্ছা মনেই চেপে রেখে দীর্ঘশ্বাস ছেড়েছেন।
এরপর থেকেই মিরপুরসহ দেশের অন্যান্য আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়ামে প্রতিবন্ধী মানুষের ক্রিকেট উপভোগকে সহজ করতে বিসিবির সাথে আলোচনা চলছিলো আমাদের। তাদের আন্তরিকতা হৃদয় ছুঁয়েছে সত্যিই। এদিকে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে আমি নিজে গিয়েছি। ভেন্যু ম্যানেজার জনাব ফজলে বারী খান রুবেলের আন্তরিক সহযোগিতায় ওয়েস্টার্ন ব্লকের ১৫ নং গ্যালারীও হুইলচেয়ার প্রবেশগম্য হয়েছে টি-টোয়েন্টি’১৪ এর আগেই। যদিও হাঁটাচলার স্থানে হুইলচেয়ার নিয়ে বসার জায়গা দেয়াটা নিতান্ত অপমানজনক ছিলো। একি ব্যবস্থা নেয়ার ভাবনা চিন্তা শোনা যাচ্ছে সিলেট ও ফতুল্লা স্টেডিয়ামেও। সেখানে আমাদের প্রতিনিধিরা খোঁজ খবর করতে গেলে কর্তৃপক্ষ এভাবেই বলেন, মিরপুরের মত আলাদা সহায়ক গ্যালারী সম্ভব নয়। গ্যালারীর সামনের হাঁটাচলার ফাঁকা জায়গায় হুইলচেয়ার নিয়ে বসতে পারবে, আর নাহয় একটা র্যাম্প বানিয়ে দিলাম !!
একটি র্যাম্প বানিয়ে দিলেই কি সমাধান হয়ে যায়?!! ব্যাংকের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে এই মানুষগুলো কিভাবে একটি নির্দিষ্ট জায়গার এতগুলো টিকেট ক্রয় করবেন, হুইলচেয়ার ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধী মানুষ আছেন তারা কৈ বসবেন ইত্যাকার ভাবনাও কারো চিন্তায় নেই! এদিকে টি-টোয়েন্টি’১৪ বিশ্বকাপ আসন্ন। ২০১৩ এর মাঝামাঝিতে সব কিছু নিয়ে আবারো বিসিবির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় সমস্যাগুলো সমাধানে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা ও সহজ টিকেট প্রাপ্তির অনুরোধসহ। ১৬ মার্চ’১৪ মিরপুর স্টেডিয়ামের হুইলচেয়ার সহায়ক স্থানটিতে টি-টোয়েন্টির প্রথম ম্যাচ উপভোগ করতে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীসহ স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে ৩০ জনের জন্য টিকেট ক্রয়ের আবেদন করা হয় নভেম্বরে।
টুর্নামেন্টের টিকেট প্রাপ্তিতে সমস্যা, অন্যান্য স্টেডিয়ামে সমস্যা, চারিদিকে এত সমস্যার মাঝে বিশাল ধাক্কা দেয় মিরপুরের হুইলচেয়ার সহায়ক স্থানে পেপসি ভিআইপি বক্স বসানোর খবর। যেখানে প্রতিনিয়ত প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য নতুন প্রবেশগম্যতা তৈরিতে কাজ করছি আমরা, সেখানে প্রবেশগম্য একটি জায়গাকেই অন্যায়ভাবে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য দিয়ে দেয়া চরম অপমানজনক। দুঃখজনকও বটে!
তীব্র প্রতিক্রিয়া...
পরবর্তী ঘটনাগুলো বেশ দ্রুত ঘটে যায়। হোস্ট টুর্নামেন্ট ডিরেক্টর, গ্রাউন্ড এ্যান্ড ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের ম্যানেজার এমনি বিভিন্নজনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করতে থাকি। কেউ সদুত্তর দিতে পারে না।
ওয়াটারএইড ও সাজেদা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পক্ষে ২১ মার্চ'১৪ সংবাদ সম্মেলনের উদ্যোগ নেয় বি-স্ক্যান। ২০ মার্চ'১৪ দৈনিক কালের কন্ঠে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরে টনক নড়ে বিসিবির।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব নিজাম উদ্দিন আহমেদ ফোন করেন আমাদের। দুঃখ প্রকাশ করেন এবং অনুরোধ জানান সংবাদ সম্মেলনটি স্থগিত করে সমস্যা সমাধানে আলোচনায় বসতে। আশ্বাস দেন দ্রুত সমাধানের মাধ্যমে ম্যাচ উপভোগের ব্যবস্থা নেবেন। সারাটা দিন ভেবেছি কেবল আমরা...আলোচনা চলেছে সবার সাথে। সমস্যা সমাধানে আলোচনাই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত এই ভেবে বিসিবির আমন্ত্রণ রক্ষার্থে সংবাদ সম্মেলনটি সেদিন রাতে স্থগিত করি আমরা।
২২ মার্চ’ ১৪ বি-স্ক্যান এর একটি প্রতিনিধি দল আলোচনা করতে বিসিবি অফিসে যায়।
বিসিবি পরিচালক জনাব মাহবুব আনাম দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ভিআইপি বক্সটি ছাদের উপর বানানোর কথা থাকলেও কিছু অব্যবস্থাপনার কারণে সেটি হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জায়গায় তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। প্রতিবন্ধী বান্ধব একটি জায়গাকে ভিআইপি বক্স বসিয়ে তা থেকে তাদের বঞ্চিত করায় তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে এই জায়গাটির অপব্যবহার হবে না এমনটি কথা দেন।
তবে টুর্নামেন্ট চলাকালীন ভিআইপি বক্স সরিয়ে নিয়ে হুইলচেয়ার সহায়ক স্থানটি পুনস্থাপনের অনুরোধ নিয়ে বি-স্ক্যান ও ওয়াটারএইড এর পক্ষ থেকে সব ধরনের কারিগরি সহযোগিতা দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু বিসিবির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে তারা কথা দিতে পারছেন না সেটি সরানোর। টুর্নামেন্ট শেষে অবশ্যি সেটি সরিয়ে নেয়া হবে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলো আগের জায়গার কাছাকাছি প্রবেশগম্য জায়গাতেই উপভোগের ব্যবস্থা নিয়েছেন এবং আমাদের অনুরোধে স্টেডিয়ামের ১নং গেটে আবারো ডিজেবিলিটি লোগো লাগানো হয়েছে।
প্রতি ম্যাচে ১০ জন প্রতিবন্ধী মানুষ ও তাদের সহযোগিসহ ২০ জনের বরাদ্দকৃত টিকেট দেয়া হয়েছে নির্দিষ্ট মূল্যে। কিছুদিনের মাঝেই বিসিবি ওয়েবসাইটে তাদের কার্যালয়ের নির্দিষ্ট ফোন নাম্বার দেয়া হবে। যেখানে ফোন করে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে এই টিকিট ক্রয় করতে পারবেন প্রতিবন্ধী মানুষেরা। তবে বিসিবির অনুরোধে শুধুমাত্র টি-টোয়েন্টি’১৪ টুর্নামেন্টের টিকেট ক্রয় করতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বি-স্ক্যান মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছিলো। ফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটা ম্যাচই বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধী মানুষের উপভোগের জন্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছি আমরা। তবে আশা করব বিসিবি তাদের দেয়া ওয়াদা পূরণ করবে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এখন থেকে ডিজেবল্ড এক্সেস টিকেট পাওয়া যাবে।
এছাড়াও তারা ভবিষ্যতের জন্য চেষ্টা করবেন, এই হুইলচেয়ার সহায়ক স্থানটি যেহেতু শুধুমাত্র হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী ব্যক্তিদের তাই পরবর্তী টুর্নামেন্টগুলোতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য (যারা সিটে বসতে সক্ষম) প্রতি গ্যালারীতে কিছু টিকিটের কোটা রাখতে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টেও প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য কোটা ব্যবস্থা রাখা হয়েছিলো। দেশের অন্যান্য আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়ামকেও একিভাবে প্রবেশগম্য করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাগুলো তারা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবেন আশ্বাস দিয়েছেন। বিসিবির এই অনন্য উদ্যোগটি আমরা ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এবং অনেকেই এর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আগামীতে এই স্টেডিয়ামটি অনেক দেশের জন্যেই যে রোল মডেল হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সেই ভেবে আমরা গর্বিত।
কিন্তু দেশের মানুষকে কিভাবে জানাই এত বড় সুখবর !!
টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময় থেকে প্রাণপণ চেষ্টা করেছি মিডিয়া কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। বিসিবিকেও অনুরোধ করা হয়েছিলো। সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেছিলেন টুর্নামেন্ট চলাকালীন কমেন্ট্রি বক্স থেকে এই জায়গাটির কথা দেশবাসীকে জানিয়ে দেয়া হবে। কথা রেখেছেন বলে শুনতে বা জানতে পারি নি।
দেশের মানুষ জানলে তবেই না প্রতিবন্ধী ক্রিকেট প্রেমী মানুষেরা খেলা দেখতে আসবেন। বিভিন্ন পত্রিকায় গত এক মাস লেখাটি প্রকাশের চেষ্টা করতে করতে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতাও হয়েছে। একজন সেলিব্রেটি লেখকের অনুরোধে নামকরা এক সাংবাদিককে নিউজটি প্রচারের অনুরোধের সুযোগ পাই। কিন্তু অদ্ভুদ বিষয় হল, কদিন পর আচমকা লক্ষ্য করি, নামকরা সাংবাদিক ভাইয়া তার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে আমাকে আনফ্রেন্ড করেছেন!
হাহ...আমার এখন এসবে হাসিই পায়। এর মাঝে এক সাংবাদিক ভাইয়ের কাছে জেনেছি, প্রেসের ভাষায় সুসংবাদ তাদের জন্য দুঃসংবাদ!
এ বিষয়ে আর কিছুই বলার নেই।
সর্বশেষ!
আমার মনে আছে, ২১ মার্চ কালের কন্ঠে প্রকাশিত, প্রতিবন্ধীদের জায়গাও বেদখল শীর্ষক প্রতিবেদনে বিসিবির ভারপ্রাপ্ত সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেছিলেন, “প্রতিবন্ধী মানুষেরা নিয়মিত আসেন না।”
আমার তিন’টি প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে।
১। তারা কিভাবে আসবেন ? যদি তাদের সহায়ক ব্যবস্থাগুলোর প্রচার না হয় ?!!
২। তারা নিয়মিত সেখানে যান না যান, কয়েকটি ম্যাচ নাহয় জায়গাটি খালি পড়ে থাকলো, কিন্তু তাদের সহায়ক ছোট্ট জায়গাটি কেনো তাদের থাকবে না?!
৩। আমরা কেনো ভুলে যাই, এদেশ এখনো প্রতিবন্ধী মানুষের চাহিদা অনুযায়ী সহায়ক যাতায়াত ও সর্বত্র প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করতে পারে নি। বিশেষত সহায়ক যাতায়াত ব্যবস্থার অভাবে প্রবেশগম্য জায়গাগুলোতেও ব্যয়বহুল যাতায়াত খরচের কারণে সম্ভবপর হয়ে উঠে না নিত্য যাওয়া আসা !! আমরা কেনো ধৈর্য্য ধরতে পারি না ?!!
কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি যারা মাঠে বসে আমাদের ক্রিকেট উপভোগের অধিকার অক্ষুন্ন রাখতে সহযোদ্ধা হিসেবে পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের প্রতি... প্রত্যাশা, খুব শিগ্যিরই এমন একদিন আসবে যেদিন শের ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে আদর্শ ধরে বাংলাদেশের সকল স্টেডিয়ামেও প্রতিবন্ধীবান্ধব সুব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য
আপনারা মাঝে মাঝে মনে করিয়ে না দিলে আপনাদের কথা তো আমাদের মনেই থাকেনা। দিব্বি দুই পায়ে চলছি, দুই হাতে কাজ করছি, পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে পৃথিবীর রূপ-রস-গন্ধ উপভোগ করছি, এর মাঝে আপনারা আবার কেন আমাদের ছন্দে ব্যাঘাত ঘটান। আমাদের সক্ষমতার আনন্দে আমাদের মধ্যে যে মানসিক প্রতিবন্ধকতা তৈরী হয়ে যাচ্ছে, তা আপনারা বারবার মনে করিয়ে দেন। একারণেই আমরা আপনাদের ভুলে থাকতে চাই।
আপনাদের যুদ্ধ চালিয়ে যান সাবরিনা আপু, সঙ্গে থাকবো বলতে পারছি না। কারণ কালকেই আর মনে থাকবে না। আপনাদের অধিকার আপনাদেরকেই আদায় করে নিতে হবে। আমাদের সক্ষমতার প্রতিবন্ধকতা আমরা ডিঙাতে পারবো বলে মনে হয় না।
----ইমরান ওয়াহিদ
আপনার এমন আশাবাদ পূর্ণ হোক দ্রুত।
প্রয়োজনীয় লেখা।
বাংলাদেশে কেন জানি Accesibilty ব্যাপারটা নিয়ে তেমন চিন্তা ভাবনা করা হয় না। কোন একটা সঞ্চয়পত্র অফিস দেখেছিলাম, যেখানে প্রচুর অবসরপ্রাপ্ত (এবং বয়স্ক) লোকেরা তাদের রিটায়রমেন্টের টাকা রাখেন, অথচ অফিসটা ছিল চার তলার উপরে! আর, বাংলাদেশের রীতি মেনে সিঁড়ির ধাপগুলোও হয় মারাত্মক খাড়া!
শুভেচ্ছা
"প্রত্যাশা, খুব শিগ্যিরই এমন একদিন আসবে যেদিন শের ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে আদর্শ ধরে বাংলাদেশের সকল স্টেডিয়ামেও প্রতিবন্ধীবান্ধব সুব্যবস্থা নেয়া হবে।" - আসবেই আসবে। আপনাদের অপার অভিনন্দন এই কঠিন লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
পাহাড় ঠেলার আপনার এই উদ্যোম ধার দিন আমাকে কিছু প্লিজ!
আমি কোন কাজে লাগতে পারলে ভালো লাগতো।
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
উদ্যোগে সাধুবাদ।
"আমরা করবো জয় নিশ্চয় ---"
____________________________
নতুন মন্তব্য করুন