• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

শহীদলিপির ইতিহাস – বিলেতের দিনগুলি

সাইফ শহীদ এর ছবি
লিখেছেন সাইফ শহীদ (তারিখ: বুধ, ১৯/০৫/২০১০ - ১:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আগের পর্ব - শহীদলিপির ইতিহাস – যে ভাবে শুরু

১৯৮৪ সালে বেক্সিমকোর পক্ষে এক জয়েন্ট ভেনচার প্রজেক্টে ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে কাজ করার জন্যে লন্ডনে স্থানান্তরিত হলাম। ঠিক হল অন্তত এক বছর বিলাতে থাকবো আমি। এদিকে এই পেট্রোকেমিক্যাল প্রোজেক্টের কাজ শুরু হবার আগেই তেলের মূল্য হ্রাস হওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়লো এই প্রেজেক্টের ভবিষ্যত। ফলে এই সময়টা আমি কম্পুউটারে বাংলা স্থাপনের কাজে ব্যয় করতে মনস্ত করলাম । আমি সাথে করে আমার আগের করা কাজ – যেমন গ্রিডে প্লট করা বাংলা অক্ষরের কাগজগুলি, বেসিকে লেখা কিছু প্রোগ্রাম, বাংলা লেখা কিছু অক্ষরের স্যাম্পল প্রিন্ট আউট, ইত্যাদি নিয়ে এসেছিলাম। এবার দরকার নিজের একটা কম্পুউটার। লন্ডন অফিসের ইন-চার্জকে বললাম আমাকে কিছু টাকা দিতে একটা কম্পুউটার কেনার জন্যে।

১৯৮৪ সালের শেষের দিক তখন, সবে এ্যাপেল কম্পুউটার তার নতুন ম্যাকিনটশ কম্পুউটার বাজারে ছেড়েছে। সখ করে সেই ভদ্রলোক একটা ম্যাক কিনেছিলেন। তিনি আমাকে বললেন – নতুন কম্পুউটার না কিনে এই ম্যাকটা নিয়ে যেয়ে ব্যবহার করে দেখো তোমার কাজ হয় কিনা। বাসায় নিয়ে এলাম এই নতুন বাজারজাত ম্যাকিনটশ কম্পুউটার এবং এর উপরই শুরু করলাম আমার বাংলা লেখার পরীক্ষা নিরীক্ষা। এই কম্পুউটারের মেমরী ছিল মাত্র ৬৪ KB ROM এবং ১২৮ KB RAM, কোন হার্ড-ডিস্ক ছিল না, ৩.৫ ইন্চি মাইক্রো-ফ্লপি ডিস্ক (এর আগের কম্পুউটারগুলিতে ব্যবহৃত ৫.২৫ এবং ৮ ইন্চি ডিস্কগুলি সত্যি ফ্লপ ফ্লপ করে নড়তে পারতো)। ৯ ইন্চি স্ক্রিনে লেখা শুধু সাদা-কালোতে দেখা যেত।

স্থানীয় এ্যাপেল ইউজার গ্রুপের সদস্য হয়ে তাদের মিটিংয়ে নিয়মিত যাওয়া আসা শুরু করলাম। এই ইউজার গ্রুপের সদস্যরা ছিল অধিকাংশই ‘গীক’ জাতীয়। নিজেদের মধ্যে ম্যাকের জন্যে তৈরী বিভিন্ন টুলস ও তথ্য আদান প্রদান হতো। এমনি একটি মিনি-বেসিক টুলের সাহায্যে আগের তৈরী প্রোগ্রামের কিছুর সাহায্যে চেষ্টা করলাম ম্যাকে বাংলা লেখার প্রচেষ্টা।

এই গ্রুপের পিটার ট্রিন্ডার পরামর্শ দিল আমার কাজের ব্যপারে সরাসরি এ্যাপেলের সাথে যোগাযোগ করতে। যোগাযোগ করলাম এ্যাপেল ইউ, কে, অফিসের লরি ডিপল ও রিচার্ড ব্রাডলির সাথে। তাদের পরামর্শ অনুসারে এ্যাপেল আমেরিকার অফিসে চিঠি লিখলাম আমার কাজের কিছু নমুনা পাঠিয়ে। আমার চিঠির উত্তর এলো এরিক জারাকভ বলে এক ব্যাক্তির কাছ থেকে। আমার কাজে উৎসাহ জানাল এবং আরও জানালো যে ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জর্জ হার্ট বলে এক অধ্যাপক দক্ষিণ ভারতের কোন এক ভাষা ম্যাকে ব্যবহারের কাজ করছেন এবং আমার চিঠির অনুলিপি সেখানে পাঠানো হয়েছে।

এক সপ্তাহের মধ্যে জর্জ হার্টের কাছ থেকে চিঠি পেলাম। আমাকে অনেক উৎসাহ জানিয়েছেন চিঠিতে এবং এই সাথে ‘রিসোর্স এডিটর’ নামে একটি টুল পাঠিয়েছেন। ম্যাকের অপারেটিং সিসটেম ছিল দু’টি ফাইলে – একটির নাম ‘সিসটেম’ এবং অপরটি ছিল ‘ফাইন্ডার’। এই টুলের সাহায্যে আমি সিসটেম ফাইলের মধ্যে কি কি আছে তার কিছুটা দেখতে সক্ষম হলাম। এর মধ্যে ‘ফন্ট এডিট’ নামে আর একটা টুল ছিল যার সাহায্যে সিসটেমের সাথে যুক্ত ফন্ট গুলির আকার পরিবর্তন করা যাচ্ছিল। ম্যাকের মেনুর ফন্টগুলির নাম ছিল ‘শিকাগো’ – বেশ বড় বড় অক্ষর এগুলি। মেনুর উপরের লাইনের সর্ব বায়ে ছিল একটি ছোট অ্যাপেলের প্রতিক। অনেকটা খেলার ছলে এ্যাপেলের ছবিটির জায়গায় বাংলাদেশের ছোট একটি ম্যাপ বানালাম ফন্ট এডিটরের সাহায্যে। সিসটেম ফাইলটা সেইভ করলাম আগের ফাইলের স্থানে। তারপর যখন আবার কম্পুইটার চালু করলাম তখন দেখলাম – কি আর্শ্চয্য, এ্যাপেলের প্রতিকের জায়গায় জ্বলজ্বল করছে আমার প্রিয় বাংলাদেশের ছোট ম্যাপটি। বাংলাদেশের মানচিত্রটির দিয়ে তাকিয়ে থাকলাম অনেকক্ষণ ধরে। এই মানচিত্রটি পাবার জন্যে কতই না ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে একটি জাতিকে। অদ্ভুত এক ধরণের ভাল লাগায় আচ্ছন্ন হয়ে গেল মন।

পরের দিন থেকে ফন্টের আকার পরিবর্তনের কাজে উঠে পরে লেগে গেলাম। এর আগে যে অক্ষরের ব্যবহারের উপর ফ্রিকোয়েন্সি এনালাইসিস করেছিলাম, সেটাতে আবার নজর দিলাম। এবার একটা নতুন জিনিস খেয়াল করলাম। আগেই ঠিক করেছিলাম এই অক্ষর গুলিকে কী-বোর্ডের লোয়ার কেসে (কোন সিফট কী ব্যবহার না করে যেগুলি টাইপ করা যাবে) বসাবো। চেষ্টা করলাম যতটা সম্ভব বাংলা অক্ষরের অবস্থান ইংরেজী অক্ষরের সাথে মিলিয়ে রাখতে। এর ফলে যারা ইংরেজীতে টাইপ করতে অভ্যস্ত তারা খুব সহজেই বাংলাতে টাইপ করতে সক্ষম হবে। বাংলাতে সব চাইতে বেশী ব্যবহৃত প্রথম ২৪টি অক্ষর নিচের তালিকা মত বিভিন্ন ইংরেজী অক্ষরের ঘরে বসালাম :

Bangla-English table

স্বর চিহ্ন যথা – া ে ি ু এবং ্য-ফলা এই ৫টি অক্ষর বহুল ব্যবহৃত। এর মধ্যের প্রথম ৪ টি অক্ষরের জন্যে একটা ‘ডায়ামন্ড’ আকারের ছক মনে মনে একে নিলাম। এই ডায়ামন্ডের ঠিক উপরের অবস্থানে বসলাম ‘ ি (ইংরেজী y )আর নীচের অবস্থানে ু (ইংরেজী v ), বায়ে বসল ে (ইংরেজী f ) এবং ডান দিকে া (ইংরেজী h ) বসালাম। ঠিক এর ডান পাশে বসালাম ্য-ফলা (ইংরেজী j )। এই ৫টি ব্যাতিক্রম ছাড়া, যেহেতু ইংরেজী-q এর সম-উচ্চারণের কোন বাংলা অক্ষর নেই, আমি সেখানে বসালাম বাংলা ‘দ’-অক্ষর।

এছাড়া উপরের অক্ষর গুলির আবস্থান একে বারে স্বেচ্ছাচারের সাথে বেছে নেওয়া হয়নি। যেহেতু ‘প’ আক্ষরের সিফটে ‘ফ’ পেয়ে যাচ্ছি, সেই জন্যে ইংরেজী ‘f’ কী-টি খালি পাচ্ছি। তেমনি ভাবে ‘ব’ আক্ষরের সিফটে ‘ভ’ পেয়ে যাচ্ছি, সেই জন্যে ইংরেজী ‘v’ কী-টি খালি পাচ্ছি। আমি ইংরেজী ‘w’ এর স্থলে ‘য়’ বসিয়েছি, তাই ‘y’ কে খালি পেয়েছি।

শুধু এক মাত্র ‘হ’-এর ব্যাপারে খুব একটা মনপুত সমাধান বের করতে পারলাম না। সব চাইতে বেশি ব্যবহার হয় এই ‘h’ কী-টি। তাই সেখানে ‘া’-চিহ্ন রাখাটা খুবই যুক্তিযুক্ত। ব্যবহারের দিক থেকে প্রথম ২৬টি অক্ষরের মধ্যে ‘হ’-এর স্থান। একবার ভেবেছিলাম না হয় ‘h’-এর বদলে ‘j’-তে ‘া’-চিহ্ন বসাই। তাহলে ‘h’-এর স্থানে ‘হ’ বসাতে পারবো। কিন্তু তাহলে এই চারটি আক্ষরের মধ্যে ডায়ামন্ড আকারটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

তেমনি ইংরেজী-x এর সম-উচ্চারণের কোন বাংলা অক্ষর নেই, আমি সেখানে বসালাম ‘য’-অক্ষরটি। এমনকি এখানেও কিছুটা মিল ছিল – যেমন St. Xaviers বাংলাতে সেইন্ট জেভিয়াস বা যেভিয়াসও লেখা যেতে পারে যে হেতু এটি একটি বিদেশী শব্দ । আমরা ‘সলিমুল্লাহ” বা ‘ছলিমুল্লাহ’ দু’টি বানানই অনেকটা মেনে নিয়েছি। বাংলাতে ‘ট’ বহুল প্রচলিত একটি অক্ষর, তাই সেটাকে ইংরেজী- t এর স্থানে রেখে দিয়ে ইংরেজী-u এর জায়গায় ‘ত’ বসালাম। তার মানে হলো, এই ৮টি ব্যাতিক্রম শুধু মনে রাখতে হবে কী-বোর্ডের মোট প্রায় ৫০টি কী-র মধ্যে। আসলে সামান্য একটু চেষ্টা করলেই যে ব্যাক্তি ইংরেজীতে টাইপ করতে সক্ষম, সে ব্যাক্তি বাংলায়ও টাইপ করতে সক্ষম হবে।

এছাড়া বাংলা মহাপ্রান অক্ষরগুলি একই কীর সিফট অবস্থানে বসালাম। ফলে সিফট-ছাড়া ও সিফট-করা অক্ষরের মধ্যে একটা সম্পর্ক রাখতে চেষ্টা করলাম।

আগেই বলেছি যে তখনকার দিনের প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারনে, কম্পুউটার দিয়ে যুক্তাক্ষর বানালে লেখার গতি অনেক স্লথ হয়ে যেত – তাই ঠিক যেভাবে আমরা হাতে লিখি অথবা লেটার প্রিন্টিং প্রেসে কম্পোজ হয় – তেমনি ভাবে একটার পর একটা অক্ষর টাইপ করে লেখার ব্যবস্থা করলাম। আমি শহীদলিপিতে চেষ্টা করেছি যতটা সম্ভব সব অক্ষর ও যুক্তাক্ষরের অবিকৃত আকার ধরে রাখতে।

কোন সিফট-কী ব্যবহার না করে টাইপ করলে নীচের ছবিতে দেখানো অবস্থান অনুসারে বিভিন্ন অক্ষর সেই কী-র সাথে সংশ্লিষ্ট হবে।

Keyboard-1

ঊপরের অক্ষরের মধ্যে ”ি’ তার পরবর্তী অক্ষরের উপর এবং ‘ু’ তার পূর্ববর্তী অক্ষরের উপর কিছুটা এলিয়ে পরে। এটাকে বলা হয় ‘kerning’ এবং এর ফলে লেখার মান অনেক উন্নত হয়।

Keyboard-2

প্রথম সিফট-কী চাপলে অক্ষরের অবস্থান উপরের মতো হবে। এখানে এলিয়ে পরা অক্ষর হচ্ছে – ‘ী’।

Keyboard-3

দ্বিতীয় সিফট-কী চাপলে আক্ষরের অবস্থান উপরের মতো হবে। এখানে বেশ কিছু অক্ষরাংশ এবং কিছু যুক্তাক্ষর রেখেছি।

Keyboard-4

একই সাথে দু’টি সিফট কী চেপে ধরে টাইপ করলে অক্ষরের অবস্থান উপরের মতো হবে। এখানে বাকী যুক্তাক্ষর রাখা হয়েছে।

একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে যে ঠিক উপরের দু’টি কেসের মধ্যে যেন কিছু কিছু অক্ষরের পুনরাবৃত্তি হয়েছে। আসলে একই রকম দেখতে হলেও এই অক্ষরাংশগুলি ভিন্ন। ‘ব’, ‘ন’, ‘গ’, ‘প’ – ইত্যাদি অক্ষরের সাথে যখন অন্য অক্ষরাংশগুলি যোগ হয়, তখন সেগুলি একেবারে ডান দিকের সাথে সমান্তরাল হয়। অন্য দিকে – ‘ত’, ‘ভ’, ‘ড’, ‘ক’, ‘ট’ – ইত্যাদি অক্ষরের সাথে যখন অন্য অক্ষরাংশগুলি যোগ হয়, তখন সেগুলি একেবারে ডান দিকের বদলে অক্ষরের মাঝামাঝি অবস্থানের সাথে সমান্তরাল হয়। এতটা কষ্ট করার একটাই কারন – আমি সব সময় চেয়েছি, যেন যন্ত্রের কারনে ভাষাকে বিকৃত করতে না হয়।

আমার প্রথমে ইচ্ছা ছিল যে ২১শে ফেব্রুয়ারীর আগেই শহীদলিপি চালু করবো। এমনিতে শীতের দিন। আমার বাংলাদেশী চামড়া তখনো অভ্যস্থ হয়ে ওঠেনি বিলাতের শীত সহ্য করতে। তাই বেশীর ভাগ সময় বাড়ীতে হিটিং চালিয়ে রাখতাম এবং বেশী বাইরে যেতাম না। দিনে ৮-১০ ঘন্টা করে কাজ করতাম। কিছুক্ষণ পর পর সেইভ করতাম কাজটি অন্য একটি ফ্লপি ডিস্কে। এক দিন কাজ করতে করতে হঠাৎ একটি ‘এরর ম্যাসেজ’ এলো। তাড়াতাড়ি করে অন্য ফ্লপিতে সেইভ করলাম কাজটি। হয়তো একটু অন্যমনষ্ক ছিলাম – ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করিনি। দেখলাম কোন ফ্লপিই আর এখন কাজ করছে না। এক মাস আগের ‘ব্যাক আপটি’ শুধু কাজ করল। তার মানে, আমার এক মাসের কাজ নষ্ট। মাথা গরম হয়ে গেল। ওই ঠান্ডার মধ্যে শুধু একটা জামা গায়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পরলাম। বাইরে তখন তুষারপাত হয়েছে কিছুক্ষণ আগে। অল্পক্ষণে মাথা ঠান্ডা হয়ে গেল। শীতে কাঁপতে কাঁপতে ঘরে ফিরলাম।

শেষ পর্যন্ত বাংলা অক্ষরের ৩টি সাইজের ফন্ট তৈরী সম্পূর্ণ হলো। এদের নাম দিলাম – যশোর, ঢাকা ও চট্টগ্রাম। এই তিন স্থানেই আমি আমার শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করেছি।

এর পর ম্যাক অপারেটিং সিসটেমের ফাইলগুলি খুঁজে খুঁজে বিভিন্ন মেনু আইটেমের ইংরেজী নাম গুলি বদলিয়ে বাংলা নাম বসালাম। নিজের সীমাবদ্ধ জ্ঞানে যা বুঝলাম, সেই ভাবে ইংরেজীর বাংলা প্রতিশব্দ বানিয়ে চললাম। ফাইল, এডিট, ফাইন্ড, ফরম্যাট, ফন্ট, টাইপ -এর বদলে নথি, সম্পাদনা, অনুসন্ধান, কাঠামো, বর্ণমালা ও ধরন লিখলাম। কাট, কপি ও পেষ্ট -এর স্থলে কর্তন, প্রতিলিপি ও সংযোজন লিখলাম।

এর মধ্যে কিছু মজার মজার শব্দও চলে এসেছে। ইদুর, জাঁতা, বর্তনী তাদের মধ্যে অন্যতম। হুবহু ইংরেজী শব্দ বাংলায় লেখার বদলে ভাবলাম নতুন বাংলা শব্দ ব্যবহার করলে ক্ষতি কি? মাউসের বদলে ইদুর মনে হলো ঠিকই আছে. যেহেতু ‘ডিস্ক ড্রাইভ’ একটি নতুন শব্দ বাংলার জন্যে, তাই বেশ খুঁজে খুঁজে জাঁতা শব্দটি ঠিক করলাম এর জন্যে। আমার ছোট বেলায় প্রায় ঘরে ঘরে ব্যবহার হতে দেখতাম দু’টি পাথরের চাকতীর তৈরী এই আদি বাংলার ‘গ্রাইন্ডিং’ যন্ত্রটি। এখন শহরে কদাচিৎ জাঁতা দেখা যায় এবং শব্দটি প্রায় লুপ্ত হতে চলেছে। ভাবলাম দেখি না চেষ্টা করে নতুন ভাবে বাচানো যায় কিনা এই শব্দটিকে। ‘ডিস্ক’-এর বদলে প্রথমে ভাবছিলাম ‘চাকতি’ ব্যবহার করবো। পরে মনে পরলো ‘বরতন’ বলে একটি গ্রামীন শব্দ শুনেছিলাম যার মানে ছিল ‘বাসন’ বা ‘থালা’। তার থেকেই তৈরী করলাম ‘বর্তনী’।

শেষ পর্যন্ত শহীদ দিবসের প্রায় একমাস আগেই আমার প্রথম শব্দলিপি তৈরী হয়ে গেল। ঠিক করলাম মাকে প্রথমে একটা চিঠি লিখে আমার যাত্রা শুরু করবো। দিনটি ছিল ২৫শে ফেব্রুয়ারী, ১৯৮৫ – দিনটি মনে রাখার বিশেষ কারণ হচ্ছে, কাকতালীয় ভাবে ঐ দিনটি আমার জন্মদিনও ছিল। চিঠিটা ম্যাকের ডট-মেট্রিক্স প্রিন্টারে প্রিন্ট করে সেদিনই ডাকে পাঠালাম মাকে।

বিবিসি রেডিও-র সাথে যোগাযোগ করলে তারা দেখতে চাইলেন এই বাংলা ওয়ার্ড-প্রোসেসর । কম্পুউটার অন করার পর যখন প্রথমেই শহীদ মিনারের ছবি এবং বাংলায় লেখা শহীদলিপিতে স্বাগতম দেখলেন, – বিবিসির বাংলা বিভাগের কর্মীরা খুব উৎসাহিত হয়ে উঠলেন। তার পর যখন দেখলেন যে কম্পুউটারের সমস্ত কিছু বাংলায়, তখন বাংলা বিভাগের কর্মীরা খুবই উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন এবং আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরলেন। শ্যামল লোদকে দিয়ে তখনি আমাকে ষ্টুডিওর ভেতরে নিয়ে যেয়ে একটি ইন্টারভিউ রেকর্ড করালেন। ভালই লাগলো তাদের এই স্বতোস্ফুর্ত উৎসাহ দেখে।

কয়েকদিন পর বিবিসি টিভি থেকে ফোন পেলাম। বিবিসি রেডিও থেকে জানতে পেরে তারা আমার ইন্টারভিউ নিয়ে টিভিতে প্রচার করতে চান। সম্মতি দিলাম আমি। ইন্টারভিউতে বিভিন্ন প্রশ্ন একে একে করে গেলেন। আমি তেমন কিছু চিন্তা না করে যখন যেমন মনে এলো উত্তর দিয়ে গেলাম। প্রশ্নকর্ত্রী জানতে চাইলেন বিলাতের ‘মাল্টিকালচারাল এডুকেশনের’ বাপারে আমার এই আবিস্কার কিভাবে কাজে আসতে পারে? বললাম – আমি যেমন বাংলা ভাষাতে কম্পুউটার ব্যাবহার করছি, তেমনি অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় কম্পুউটার ব্যবহার করতে পারলে এখানকার শিশুরা সেই সব ভাষা সহজে শিখতে পারবে।

টিভির এই প্রোগ্রাম দেখে লন্ডনের এক নাম করা গুজরাটি ব্যবসায়ী আমার সাথে দেখা করে অনুরোধ করলেন গুজরাটি ভাষায় কম্পুউটার বানাতে। টাকা দিতে চাইলেন তার বিনিময়ে। যেহেতু আমি হিন্দী দেব-নাগরি অক্ষর পড়তে পারতাম এবং হিন্দীর সাথে গুজরাটির মিল আছে (অক্ষরের চেহারা অবশ্য আলাদা) – চেষ্টা করলে হয়তো শহিদলিপির মতো গুজরাটি ভাষায় কম্পুউটার ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে পারতাম। কিন্তু তখন আমি লেজার প্রিন্টারের উপযোগী করে বাংলা ফন্ট বানাবার কাজে ব্যস্ত। তাই আর্থিক প্রলোভন আমাকে অন্য কাজে আকৃষ্ট করতে পারলো না।

বেক্সিমকোর মাধ্যমে UNDP-র আর্থিক সহযোগিতায় জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্র প্রথম সিসটেমটি কিনলো। এ্যাপেল কম্পুউটারকে অনুরোধ করাতে ডজন খানেক ব্লাঙ্ক কী-টপস পাঠিয়ে দিল। স্ক্রীন প্রিন্টিং করে তার উপরে বাংলা অক্ষর বসাবার ব্যবস্থা করলাম। এই প্রথম কোন কম্পুউটার কী-বোর্ড সম্পূর্ণ বাংলায় তৈরী করা হলো আমার জানা মতে। বেশ কিছু দিন খেটে সম্পূর্ণ বাংলায় লেখা একটি ম্যানুয়াল তৈরী করলাম। হয়তো এটাই প্রথম বাংলায় 'কম্পুউটার কম্পোজ' করা বই।


শহীদলিপির ম্যানুয়াল

[ চলবে ... ]


মন্তব্য

তাসনীম এর ছবি

অসাধারণ, মুগ্ধ হয়ে শুনছি শহীদলিপির ইতিহাস...

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অমিত এর ছবি

(y)

রাব্বানী [অতিথি] এর ছবি

মাকে (বা যে কাউকে) সবার আগে কম্পিউটারে বাংলায় চিঠি লেখার গৌরব আপনার। ধন্য মায়ের ধন্য ছেলে!
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

সাইফ শহীদ এর ছবি

আমার মা ইংরেজী পড়তে পারতেন না, এবং আমার বাংলা হাতের লেখা এতই খারাপ ছিলো যে অন্যরা দূরে থাক, আমি নিজেও আমার লেখা অনেক সময় পড়তে পারতাম না। ফলে ২৫শে জানুয়ারী (আমার জন্মদিন), ১৯৮৫ তারিখে কম্পুউটারে বাংলায় লেখা চিঠিটা মা বহু যত্নে অনেকদিন তার সংগ্রহে রেখেছিলেন।

সাইফ শহিদ

http://www.saifshahid.com

সাইফ শহীদ

যুধিষ্ঠির এর ছবি

এক্সাইটিং লাগছে পড়তে। (Y)

শরতশিশির এর ছবি

আমি মাদুর পেতে শুনে যাচ্ছি, শহীদ আঙ্কেল, মন্ত্রমুগ্ধের মতো।

পরের পর্বের অপেক্ষায়! (Y)

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

সচল জাহিদ এর ছবি

মুগ্ধ হয়ে পড়ছি। আপনাকে স্যালুট।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

স্বাধীন এর ছবি

এই ইতিহাসটুকু লিপিবদ্ধ করার প্রয়োজন ছিল। দেরিতে হলেও, সচলে স্বাগতম জানাচ্ছি শহীদ ভাই। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন সব সময়।

অতিথি লেখক এর ছবি

অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাংলা কম্পিউটিং রেনেসাঁর জন্য আপনি চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবেন।

ইদুর! জাঁতা!! বর্তনী!!!

বেশ মজা পেলাম।

-------- সাদাচোখ
sad_1971এটymailডটcom

অতিথি লেখক এর ছবি

আঙ্কেল আপনি এই লিখাগুলো নিয়ে একটা বই প্রকাশ করুন, যা অনেকখানি আত্মজীবনিমুলকও হতে পারে। আমার মতে এখন নতুন-পুরানো সব বাংলা ভাষী কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের এই ইতিহাস জানা দরকার। আমি আপনার লিখাগুলো পড়তে পড়তে অনেক উত্তেজিত বোধ করছি, ঠিক যেমনটি বোধ করতাম কোন সায়েন্স-ফিকশন উপন্যস পড়তে যেয়ে।


ছেড়া পাতা
ishumia@gmail.com

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

ভাষা মুক্ত হবেই। শুনেছিলাম ড. জাফর ইকবাল ম্যাকে কিছু বাংলা ফন্ট তৈরি করেছিলেন ৯০-এর দশকের শুরুতে। তার সেই ফন্টে লেখা 'ট্রাইটন একটি গ্রহের নাম' পড়েছিলাম 'ধানশালিকের দেশ'-এ। এব্যাপারে আর কিছু জানেন কি?
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

দ্রোহী এর ছবি

বাংলা কম্পিউটিংয়ের অগ্রপথিক হিসাবে আপনাকে জানাই শ্রদ্ধা।

পড়ছি...

মামুন হক এর ছবি

বিনম্র শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জানাই আপনাকে

গৌতম এর ছবি

ছেড়া পাতার মন্তব্যের সাথে সহমত। আপনার এই লেখাগুলো দিয়ে একটা ই-বুক হতে পারে। বাংলায় কম্পিউটার ব্যবহারকারী সবার এই ইতিহাস জানা দরকার।

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

মেরুদণ্ড বেয়ে শিহরণ খেলে গেল এবারের পর্ব পড়তে গিয়ে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে লেখবার জন্যে। আর তার চেয়েও বেশি আপনার 'ভিশন' আর তার পেছনে অক্লান্ত সাধনার জন্যে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সংসপ্তক এর ছবি

এক নিঃশ্বাসে পড়ে গেলাম।
.........
আমাদের দূর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

হিমু এর ছবি

ইন্টারেস্টিং তথ্য, শহীদলিপি স্টার্ট করলে পর্দায় আসতো শহীদ মিনারের ছবি, অভ্র স্টার্ট করলে আসে ধানক্ষেতে একটি বালকের ছবি আর বিজয় স্টার্ট করলে আসে মোস্তফা জব্বারের ছবি। ডেভেলপারদের মানসিকতা সম্পর্কে এখানেই একটা আন্দাজ পাওয়া যায়।

লেখা চলুক!



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

শামীম এর ছবি

অসাধারণ!

ঘটনা এবং এর ধারাবাহিক বর্ণনা মিলিয়ে যে কোনো উত্তেজনায় ভরপুর উপন্যাসের চেয়ে ভালো (শিহরিত) লাগলো পড়তে।

আপনি কি এখনও ঐ লেআউটে টাইপ করেন? (বোকার মত প্রশ্ন করে ফেললাম মনে হচ্ছে)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমি এই লেখাটা ছাপিয়ে লিংকটা ধরে গিয়ে শহীদলিপির ম্যানুয়ালটা পড়লাম। চমকপ্রদ! (চলুক)

তখন আজকের দিনের মতো সুযোগ থাকলে আপনি বাংলা কম্পিউটিংকে কোথায় নিয়ে যেতেন, সেইটা ভেবে অবাক হই! নতজানু শ্রদ্ধা জানবেন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

বিবেকহীন বিবেক এর ছবি

বাংলা কম্পিউটিং-এর বন থেকে আপনাদের মত বাঘগুলি হারিয়ে যাওয়াতে অনেক বিড়াল বাঘ সেজে বসেছে!!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এই ইতিহাসটাকে ই-বুক বা ছাপানো কাগজের বইতে ধরে রাখা দরকার। জব্বারীয় মিথ্যাচারের বিরূদ্ধে এটা হবে শক্ত জবাব। জাতির স্বঘোষিত ডিজিটাল পিতাটাকে চেয়ারচ্যুত করার সময় এসে গেছে।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

রানা মেহের এর ছবি

কী অসাধারণ একটা ইতিহাস পড়ছি!
আপানর লিখনিও খুব ভালো। অহেতুক ডামাডোল নেই।
অনেক ভালো থাকবেন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

তায়েফ আহমাদ [অতিথি] এর ছবি

নিজের জন্মের কাছাকাছি সময়ের কথা এই বয়সে এসে শুনতে গিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গেলাম।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

ইন্টারেস্টিং তথ্য, শহীদলিপি স্টার্ট করলে পর্দায় আসতো শহীদ মিনারের ছবি, অভ্র স্টার্ট করলে আসে ধানক্ষেতে একটি বালকের ছবি আর বিজয় স্টার্ট করলে আসে মোস্তফা জব্বারের ছবি। ডেভেলপারদের মানসিকতা সম্পর্কে এখানেই একটা আন্দাজ পাওয়া যায়।

ব্যাপক বলছেন হিমু ভাই................. :D

পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম শহীদ আংকল................ :)

নবীন পাঠক

shahriarsajib@gmail.com

রাহুল দাশ গুপ্ত এর ছবি

সচলায়তন না হলে এ ইতিহাস হয়তো জানাই হতো না। শহীদ লিপির ইতিহাস আমাকে শিহরিত করছে । ১৯৮৪ সন , বাংগালী তো বটেই এ বিশ্ব-এর ক'জন মানুষ-ই বা এই Computer যন্ত্রটির খবর রাখতেন ! অথ্চ ভাবতেও আশ্চর্য্য লাগছে , সেই সময়ে দাঁডিয়ে ,প্রযুক্তির সকল সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এক প্রবাসী বাংগালী আমাদের জন্য কি সাংঘাতিক কাণ্ড করে ব্সলেন,আমরা ক'জন আজও সে খবর রাখি ? নিজের ভাষা ও জাতির প্রতি গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বোধ না থাকলে এ সৃষ্টি সম্ভব হতো না ।আপনি আমাদের শিক্ষক । বাংগালী জাতির গর্ব । আপনাকে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।