আমার খুব পছন্দের ছিল চাকরীটা। কাজটা হচ্ছে 'বিজনেস এনালিষ্টের'। কোম্পানীর খরচে প্লেনে করে যেতাম আমেরিকার বিভিন্ন শহরে, এয়ারপোর্ট থেকে রেন্টে-এ-কার ভাড়া করে নিতাম কাজের জন্যে এবং মোটামুটি ভাল হোটেলে রাত্রীবাস ও খাওয়া-দাওয়া সবই কোম্পানীর খরচে। আমি চিরকাল নতুন নতুন স্থানে যেতে ও বেড়াতে পচ্ছন্দ করি। আমেরিকা ঘুরে দেখার এমন সূযোগ সহজে হয় না।
প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলের শহর পোর্টল্যান্ড। সেখানে দু'দিন কাটিয়ে কাজ শেষ করলাম। পরের কাজ পেলাম দক্ষিণের গালফ অব মেস্কিকোর কাছে লুজিয়ানা স্টেটের 'ব্যাটন রুজ' শহরে। প্লেন প্রথমে নিলো 'ক্যালিফোর্নিয়ার' 'সান ডিয়েগোতে', সেখান থেকে 'আরিজোনার' 'ফিনিস্ক' হয়ে যখন ''লুজিয়ানার' 'নিউ অর্লিয়ান্সে' পৌছিলাম তখন স্থানীয় সময় রাত ৩ টা। প্লেন ডিলেইড ছিল, তাছাড়া ৩ ঘন্টার টাইম জোনের ব্যবধান। প্রায় ৩ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়েছি পোর্টল্যান্ড থেকে নিউ অর্লিয়ান্স আসতে। আমেরিকা আসলে একটি বিরাট আয়তনের দেশ। প্রতিদিন এর আকাশে ৮০,০০০-এর বেশী বিমান ফ্লাইট চলাচল করে। দিনের যে কোন মূহুর্তে ৪,০০০-এর বেশী বিমান আকাশে থাকে। ভাবতে বেশ অবাকই লাগে।
ঐ ভোর রাতে শুধু ২-৩ ঘন্টার জন্যে হোটেল ভাড়া না নিয়ে ঠিক করলাম বাকী রাতটুকু এয়ারপোর্টে বসে কাটিয়ে দেবো। দেখলাম আমার মত আরও কিছু প্যাসেঞ্জার এয়ারপোর্টে বসে সময় কাটিয়ে দিতে মনস্ত করেছে। ভোর ৫ টায় রেন্ট-এ-কার অফিস থেকে একটা গাড়ী ভাড়া করে রওয়ানা হলাম 'ব্যাটন রুজের' পথে। এমনিতে শীতের সকালে ৭ টার আগে সূর্য ওঠে না, তার উপরে বাইরে ঘন কুয়াশা। এত ঘন কুয়াশা আমি কখনো দেখিনি। কিছু পথ চালাবার পর বুঝলাম ভুল করেছি রওয়ানা হয়ে। কিন্তু তখন ফেরার উপায় নাই। আমার ১০ হাত সামনের বেশী দেখা যাচ্ছে না। খুবই আস্তে আস্তে গাড়ী চালাতে হচ্ছে। এই ভোরে রাস্তায় অন্য তেমন কোন গাড়ী নেই - এটাই সৌভাগ্যের কথা। এর মধ্যে সামনে একটা বড় ট্রাক দেখলাম। তার সিগনালের লাল বাতি অনুসরণ করে এগোতে থাকলাম। ট্রাক ড্রাইভার যে কি দেখছে আর কি করে গাড়ী চালাচ্ছে কে জানে - আমি কিছুই দেখতে পারছিলাম না।
শেষ পর্যন্ত কোন অঘটন না ঘটিয়ে পৌছিলাম ব্যাটন রুজ শহরে। ৮০ মাইল পথ যেতে সাধারনত দেড় ঘন্টার মত লাগার কথা, আমার প্রায় আড়াই ঘন্টা লেগে গেল। ফেরার পথে দিনের আলোতে যখন দেখলাম লেক ও হাওর এলাকার উপরে যে রাস্তা দিয়ে ড্রাইভ করেছি, দূর্ঘটনাতে পরা অসম্ভব ছিল না। লুজিয়ানা স্টেটের রাজধানী হচ্ছে ব্যাটন রুজ। একটা রেস্টুরেন্টে যেয়ে ব্রেকফাস্টের অর্ডার দিয়ে তাদের রেস্ট রুমে যেয়ে তাড়াতাড়ি করে সেভ ও ব্রাশ করে নিলাম। খাবার পর একটু ভাল বোধ করলাম।
সময় মত উপস্থিত হলাম কাজের স্থানে। বেশ বড় একটা প্রতিষ্টান। এরা লুজিয়ানা স্টেটের মধ্যে কার্যরত বিভিন্ন রোড কনস্ট্রাকশন ভেহিকল মেরামতি ও সংরক্ষণ করে। বছরে কয়েক মিলিয়ন ডলার আয় হয় এদের। আগে আরও বেশী হত। বিগত কয়েক বছর ধরে আয় ক্রমেই কমে আসছে। আমার কাজ হলো এদের ব্যবসার বিভিন্ন বিশয়াদির খুটি-নাটি দেখে এদেরকে বলা কি করলে আয় আবার আগের মত বাড়বে। সাধারণত যেটা আমি করতাম তা হচ্ছে, প্রথমে খুজে বের করার চেষ্টা করতাম - কোথায় এদের দূর্বলতা। তার পর সেই দূর্বলতা তাদেরকে তথ্য, চার্ট, গ্রাফ, ইত্যাদি দিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে পরামর্শ দিতাম আমাদের কোম্পানী থেকে উপযুক্ত কন্সালটেন্ট নিয়োগ করে তাদের সাহাযে ঐ ত্রটি গুলি কাটিয়ে উঠতে।
এই প্রতিষ্টানের মালিক ও কর্ণধার হচ্ছে জোসেফ। বয়স ৭০-এর ঘরে হবে। তবে এখনো কর্মঠ। গোটা বিশেক কর্মচারী কাজ করছে এখানে। জোসেফের সাথে দেখা করার সাথে সাথে সে তার জেনারেল ম্যানেজারকে ডেকে আমাকে তার উপরে ন্যাস্ত করে দিল। জেনারেল ম্যানেজার কর্মঠ লোক। আমার সব প্রশ্নের ঠিক ঠিক উত্তর পেলাম তার কাছ থেকে। বিভিন্ন কর্মচারীর সাক্ষাতকার নিলাম। সবাই এখানে বহু দিন ধরে কাজ করছে এবং নিজ নিজ কাজে যথেষ্ঠ কার্যকর বলে মনে হলো। ঠিক বুঝতে পারলাম না অসুবিধাটা কোথায়।
যেহেতু ব্যাটন রুজ শহরে আমার এই প্রথম আগমন, বিকালে মিসিসিপি নদীর উপরে ব্রীজ অতিক্রম করে অপর পাড়ে গেলাম। লুজিয়ানা, মিসিসিপি, আলাবামা, জর্জিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা - এ সব স্টেটগুলি এক সময় ছিল কনফেডারেট স্টেট। ১৮৬৫ সালে এদের পরাজয়ের মধে দিয়ে দাসত্বের শখল থেকে মুক্ত হয় আমেরিকা। এই সব স্টেটে আগের দিনের প্লানটেশনের মালিকরা তাদের হাজার হাজার একর জমির মালিকানা থেকে লব্ধ টাকায় বিভিন্ন ব্যাবসা-বানিজ্য গড়ে তোলে। জোসেফ এসেছিল এমনি এক বড়লোক পরিবার থেকে। আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি - যাদের অনেক আছে - তারা যেন আরও বেশী চায়। কিন্তু জোসেফের মধ্যে কেন যেন এই আরও পাবার আগ্রহটা তেমন চোখে পড়ল না। অবশ্য এটা আমার বোঝার ভুলও হতে পারে।
পরের দিন জোসেফের স্ত্রী ডনার সাথে দেখা হল। ভদ্রমহিলা নামে কোম্পানীর একাউন্টিং বিভাগের প্রধান। তবে শুনলাম তিনি সাধারনত সপ্তাহে এক-দুই বারের বেশী আসেন না এবং কিছুক্ষণ সময় ব্যয় করে চলে যান। চীপ একাউন্টেন্ট বাকী সব কাজ করেন। তার সাথে কথা বলতে যেয়ে শুনলাম ডনা অসুস্থ। বেশী সময় তাই অফিসে থাকেন না। অবশ্য এতে কাজের খুব একটা ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে হল না। ডনার অফিসে টাংগানো ছবিতে দেখলাম তাদের বাড়ীর সামনে দুই ছেলের সাথে স্বামী-স্ত্রী দাড়িয়ে আছেন। এদের শুধু দুই ছেলে, কোন মেয়ে নেই - বুঝলাম। প্লান্টেশন টাইপের বিরাট তাদের বাড়ী। প্রাচুর্যের পরিচয় ছবিতেই পাওয়া যাচ্ছে। সত্যিকারের বড়লোক এবং সাকসেসফুল পরিবার সন্দেহ নেই।
আমি তখনও কোন সঠিক কারন বের করতে পারছি না এদের ব্যবসা পরিচালনায় ঘাটতিটা কোথায়। ঠিক করলাম এবার জোসেফের সাথে সড়াসড়ি কথা বলে দেখি। অনুমতি নিয়ে তার ঘরে ঢুকে দেখলাম সে চেয়ারে বসে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। আমিও কোন কথা না বলে চুপচাপ তার সামনের চেয়ারে বসে থাকলাম। বেস একটা জিনিস খেয়াল করলাম তার টেবিল একেবারে ফাকা - কোন কাগজ পত্র নেই। আমি আগেও খেয়াল করেছিলাম তাকে কেউ ফোন করছেনা বা সেও কাউকে ফোন করে কোন নির্দেশ দিচ্ছেনা। আমি নিজেও এক সময় ৩ টি কোম্পানীর প্রধান নির্বাহী হিসাবে কাজ করেছি। আমার সেই অভিজ্ঞতার সাথে ঠিক মিলাতে পারছিলাম না। এবার চেয়ার থেকে উঠে জানলার সামনে যেয়ে দাড়াল জোসেফ। আমিও চেয়ার থেকে উঠে ঘরের আসবাব ও দেয়ালে টাংআনো ফটো দেখতে থাকলাম। তার দুই ছেলের ছবি দেখলাম নিজের নিজের স্পোর্টস কারের সামনে দাড়িয়ে তোলা।
- এটা কি তোমার বড় ছেলে? - প্রশ্ন করলাম আমি।
- হ্যা। - একটু সময় নিয়ে উত্তর দিল।
- কি করছে এখন? পড়ছে?
- ও বেঁচে নেই।
ধাক্কা খেলাম আমি। তার ব্যাক্তিগত দুঃখের স্থানে না জেনে আঘাত দিতে চাইনি।
- গাড়ী এক্সিডেন্টে দু'বছর আগে মারা গেছে সে। - নিজের থেকেই এটুকু বলে আবার চুপ করে গেল জোসেফ।
গতানুগতিক 'আমি দুঃখিত' বলে হয়তো তার দুঃখটা আরো খুঁচিয়ে দেয়া হবে, তাই কিছু না বলে আবার চুপ করে গেলাম। বদ্ধ ঘরের মধ্যে পরিবেশটা কেমন যেন গুমট হয়ে গেছে।
বড় ছেলে, যে হয়তো এই ব্যবসার ভার নিতো, তার অকাল মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই চরম আঘাত পাবার কথা বাবার। মায়ের অসুস্থতার মূল কারণ বুঝলাম এবার। কিছুটা অনুমান করতে পারলাম এখন ব্যবসার এই অবস্থা কেন। যে কোন ব্যবসাতে যদি ব্যবসার কর্ণধারের কাজে মন না থাকে - তবে সে ব্যবসা ক্রমেই পিছিয়ে পড়তে বাধ্য।
বেশ অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকার পর, ভাবলাম জোসেফকে সান্তনা দিই, বলি এক ছেলে মারা গেলেও তো তার আর এক ছেলে আছে। সেই ছেলের কথা ভেবে জোসেফের উচিত হবে ব্যবসাকে আবার আগের মত করে তোলা।
- তোমার ছোট ছেলের কি পড়াশোনা শেষ হয়েছে?
আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো আবার খানিক্ষণ। তারপর আস্তে করে বলল -
- ছয় মাস আগে আর একটা কার এক্সিডেন্টে সেও মারা গেছে।অঅলখ
মন্তব্য
সত্যিই সন্তান জীবিত না থাকলে কার জন্য এই বাঁচা?
সুন্দর লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শকড হলাম চমৎকার লেখার শেষটা পড়ে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
সচেষ্ট থাকার চেষ্টা করেও পরে দেখলাম কিছু বানান ভুল ও কিছু 'টাইপো' রয়ে গেছে লেখাতে। তোমরা মডারেটররা কেউ সেগুলি শুধরে দিলে ভাল হয়।
ঘটনাটা সত্যি। আমিও প্রচন্ড আঘাত পেয়েছিলাম বাবা-মায়ের এমন ভাবে দুই ছেলে হারাবার খবরে।
আসলে মানুষ কত অসহায়।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
ওফ্, না। কেন?
-
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পড়ে মন খারাপ হলো।
-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
শেষটা এমন ভাবিনি।
আপনার অলখ আমেরিকা সিরিজ খুব ভালো লাগছে। আশা করি এটা খুব দ্রুত শেষ হবে না।
দুঃখজনক
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
মন খারাপ করা লেখা
সিরিজটা চলুক
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
কই জানি শুনসিলাম, "দুনিয়ার সবচেয়ে ভারী জিনিস কি? বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ।" খারাপই লাগতেসে বেচারাদের জন্য।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
কথাটা হয়তো ঠিক। আজ থেকে ৩৫ বছর আগে নিজে হাতে আজিমপুরের কবরে শুইয়েছিলাম আমার ছোট্ট মেয়েকে। আজও সেটা ভুলতে পারিনা। এখনো চোখ থেকে পানি ঝরে তার কথা ভেবে...
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
সরি, এই কথাটা জানতাম না। সহানুভূতি থাকল।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
দূর্বলতাটা কী তাহলে চিফ এক্সিকিউটিভের মরাল লস - ফলস্বরূপ লো এনগেজমেন্ট? কোম্পানি অটোপাইলটে চলছে, এগ্রেসিভ হচ্ছে না?
অনেকটা তাই। বস মনমরা হয়ে পড়ে থাকলে, আন্যদের মধ্যে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
আপনার এই সিরিজটা দুর্দান্ত। কিন্তু অলখ শব্দটা এর আগে কোথাও শুনেছি বলে মনে পড়ে না। এটা কি বাংলা শব্দ? কী অর্থ এর?
অলখ মানে যে জিনিস চোখে পড়ে না...
হ্যাঁ, অলখ মানে তাই - যে জিনিস চোখে পড়ে না... অথবা সহজে দেখা যায় না
এটা বাংলা শব্দ - খুব একটা ব্যবহার হতে আমিও দেখিনি।
অলখ আমেরিকা লেখার উদ্দেশ্য - যে আমেরিকা আমরা সাধারনত জানি বা মনে ধারনা করে বসে আছি - তার বাইরেও যে আর একটা আমেরিকার রূপ আছে - যা আমি নিজের চোখে দেখেছি - সেটা তুলে ধরা।
আমি এ পর্যন্ত পৃথিবীর গোটা ২৫ দেশে গেছি এবং বিভিন্ন দেশে আমার অনেক বন্ধু আছে। যদি আমরা একে অপরকে আরও ভাল করে চিনতে ও জানতে পারি তাহলে পৃথিবীতে অনেক ভুল বোঝাবুঝি ও হানাহানি কমে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
ধন্যবাদ নিঃসঙ্গ গ্রহচারী।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
আমি রূপে তোমায় ভোলাব না , ভালোবাসায় ভোলাব
আমি হাত দিয়ে দ্বার খুলব না গো , গান দিয়ে দ্বার খোলাব...
ভরাব না ভূষণভারে, সাজাব না ফুলের হারে –
সোহাগ আমার মালা করে গলায় তোমার দোলাব...
জানবে না কেউ কোন্ তুফানে তরঙ্গদল নাচবে প্রাণে,
চাঁদের মতন অলখ টানে জোয়ারে ঢেউ তোলাব...
অপূর্ব!
কবিতাটার নামটা কি?
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অরূপরতন নাটকের একটা গান।
সিরিজটা ভাল লাগছে
ধন্যবাদ নাম না জানা অতিথি।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
ধন্যবাদ ভাল লাগার জন্যে।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
আপনার লেখা সাবলীল। কিন্তু কিছুদিন ধরে দেখছি, পড়ার শেষে মন খারাপ করা ছাড়া উপায় থাকেনা
সামনে আপনার লেখা পড়ার আগে দুইবার চিন্তা করব!
বাউলিয়ানা,
আজই এ ব্যাপারটা ভাবছিলাম। কিন্তু জীবনটাই যে এমন। হয়তো নিজের অনুভুতিতে দুঃখগুলি বেশী নাড়া দেয়, সেজন্য তার প্রতিফলন বেশী হচ্ছে।
তোমার (নাকি আপনার বলবো?) মন হয়তো বেশী সংবেদনশীল, তাই সেখানে এতটা নাড়া দিচ্ছে।
ঠিক আছে, এর পরের অধ্যায়ে চেষ্টা করবো একটি 'মৃত্যুহীন গল্প' তুলে ধরার জন্যে।
অনেক ধন্যবাদ তোমার এই মন্তবের জন্যে।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
অবশ্যই "তুমি" বলবেন।
আচ্ছা ঠিকাছে, পরের পর্বে একটা মচমচে মজাদার লেখার আশা রইল।
ভালো লাগলো ।
ছেড়া পাতা
ishumia@gmail.com
ধন্যবাদ 'ছেড়া পাতা'।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
লেখাটা পড়ে মন খারাপ হলো।
আপনার এই সিরিজটা খুবই খুবই সুন্দর হচ্ছে।
বাঙ্গালীর মন আসলে খুব নরম।
ধন্যবাদ এই প্রশাংসার জন্যে।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
অসাধারণ হচ্ছে আপনার এই সিরিজটা। এই পর্বটা পড়ে মন একটু খারাপ হয়ে গেল।
অনন্ত
অনন্ত,
এত অল্পে মন খারাপ হলে চলবে? অচেনা দেশের অচেনা মানুষের মৃত্যুতে এত কাতর হলে - জীবন সংগ্রামে জয় লাভ হবে কি করে?
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
আপনার এই সিরিজটা খুব ভাল লাগছে। এই পর্বটা পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল খুব।
অনেক ধন্যবাদ ভাল লাগার জন্যে।
একই সাথে দুঃখিত মন খারাপ করাবার জন্যে।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
আহ... জীবনের কতনা সংকট, কতনা দুঃখবোধ....
লেখা ভাল লাগল... যদিও খানিকটা মন খারাপ করে দিয়েছেন...
রাজীব,
মজার কথা হচ্ছে - যখন আমরা ভাল থাকি, যখন সব কিছু ঠিক মত চলছে - তখন অনেক সময় মনে হয় জীবনটা কত গতানুগতিক - 'বোরিং'। শুধু যখন চোখ খুলে দেখতে শিখি - নিজের ও অন্যের দুঃখ-কষ্ট - তখন বুঝতে পারি কতটা ভাল ছিলাম।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
ব্যাটন রুজ
নামটার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। এত কাব্যময় নাম কী আর কোন শহরের আছে? আহারে কতো কতো স্মৃতি জড়িত এই শহরটার সাথে, নামটার সাথে। মিসিসিপি নদীর উপরে ব্রীজ অতিক্রম করে যখন প্রথমবার শহরে ঢুকেছিলাম তখন রাত দেড়টা। কী যে সুন্দর সে দৃশ্য! লিখে বোঝানো যাবেনা।
আপনার লেখাটা আমাকে সেই সব সুখের দিন গুলিতে নিয়ে গেলো।
'অলখ আমেরিকা' সবগুলি পর্বই পড়লাম। আমার কাছে আপনার এই সিরিজটা অন্য আবেদনে ধরা দিলো। পেছন ফিরে দেখার মতো।
--------------------------------------------------------------------------------
মেহবুবা,
ধন্যবাদ 'অলখ আমেরিকা' সবগুলি পর্ব পড়ার জন্যে। আমি মাত্র তিন দিন ছিলাম 'ব্যাটন রুজ' শহরে। এত কম সময়ে কোন স্থান কি দেখা যায়? তবু ঐ স্থানের অনেক দৃশ্য এখনো চোখে ভাসে।
এক সন্ধ্যায় কাছের 'হ্যামন্ড' শহরে আমার এক ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুর বাড়ীতে গিয়েছিলাম। ঘটনা চক্রে সেখানে 'লাফায়েত' থেকে আসা আর এক প্রফেসরের সাথে পরিচয় হলো। খুব ভাল লাগলো যখন জানলাম তার এক ছেলে, আমার বন্ধুর ছেলে এবং মেয়ে - এরা সবাই স্ট্যানফোর্ড, ইয়েল এবং প্রিন্সটনে পড়াশুনা করছে। এই উত্তরসুরীরাই আমাদের ভবিষ্যত।
আর এর বিকালে ব্যাটন রুজের ঠিক শহরের উপকন্ঠে এক সুন্দর একটি পার্কে গিয়েছিলাম - নামটা মনে নেই, শুধু পড়ন্ত বিকেলে গোধুলী আকাশের সৌন্দর্যের কথা মনে আছে।
শুভেচ্ছা রইল।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
সাইফ ভাই,
আপনার সব লেখাই কেমন যেন, শেষ করার পর ভালো লাগা বা খারাপ লাগা - দুটোর যে কোন একটা অনুভূতি খুব ভালোমত অনুভূত হয়।
পর্বগুলো খুব খুব খুব চমৎকার হচ্ছে।
- জিহাদ (সিসিবি)
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
ধন্যবাদ জিহাদ। আমি কিন্তু লেখক নই। জীবনে বেশ অনেক কিছু দেখেছি এবং অনেক কিছুই মনে দাগ রেখে গেছে - তাই অন্যদের সাথে শেয়ার করছি সেই অভিজ্ঞতা। তোমার ভাল লাগছে জেনে খুশী হলাম।
তোমার মা কেমন আছেন?
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
মন খারাপ করে দেয়া লেখা। ভাল লাগল খুব।
[অফ টপিক]
অভ্র-বিজয় ডামাডোলের সময় আপনার লেখা প্রথম পড়ি, "যে ভুল আর শোধরাতে পারিনি" (নাম ঠিক বললাম তো!)। এক ঝটকায় নিজেকে আয়নার সামনে দাড় করিয়ে দিয়েছিল লেখাটা। কেন জানি কান্না পাচ্ছিল খুব। বয়স খুব বেশি হয়ে যায়নি, কিন্তু সেই এস.এস.সি পরীক্ষার পর থেকে বাইরে থেকে পড়াশোনা করছি, বছরে একমাস হয়তো বাড়িতে গিয়ে থাকা হত গত নয় বছরে ধরে। আবার সামনে পাঁচ বছরের জন্য বাইরে চলে যাচ্ছি। কখনো কি সেই অর্থে মায়ের কাছে আর ফেরা হবে! আমিও কি হারিয়ে ফেলছিনা ভুলগুলো শোধরানোর সুযোগ?
সজল
সজল,
এ প্রশ্ন যখন তোমার মনে এসেছে, তার মানে সূযোগ এখনো হারিয়ে যায়নি। আসলে বাবা-মা রা তেমন কিছু চান না। তোমার খুশীতে তারা খুশী, তোমার আনন্দে তারা আনন্দিত। আর আজকাল টেকনোলজির বদৌলতে দুনিয়া অনেক ছোট হয়ে গেছে। যেখানেই থাকো, মাঝে মাঝে ফোন করে কথা বলতে পারবে। হয়তো ভবিষ্যতে ওয়েব-ক্যামেরার সাহায্যে তোমার চেহারাও তাদেরকে দেখাতে পারবে। এতেই তারা অনেক খুশী হবেন।
আশা করবো তোমার জীবন সুখের হবে।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
আজই প্রথম আপনার লেখা পড়লাম। যত যাই বলি মানুষ তো আমরা। তাই হয়ত অচেনা-অজানা মানুষের দুঃখ আমাদের ব্যথিত করে। দুর্ঘটনায় হারিয়ে যাওয়া ছেলে দুটিসহ আপনার ছোট্ট মেয়েটির জন্য দোয়া করছি।
আপনি লেখক নন, অথচ কেমন সাবলীল আপনার লেখনী! দোয়া করবেন আমার জন্য এরকম সাবলীলভাবে যেন আমিও লেখতে পারি। শুভেচ্ছা জানবেন।
আয়নামতি,
তোমার মন্তবের জন্যে অনেক ধন্যবাদ (তুমি বলাতে আশা করি কিছু মনে করবে না)। এটা ঠিক - অন্যের দুঃখে ব্যথিত হওয়া এবং পারলে তার দুঃখ লাঘবের চেষ্টা করা - একটা বড় মানবিক গুন।
আমি লেখার আনন্দে লিখি, লেখক হবার জন্য নয় - সেজন্যেই হয়তো তোমার ভাল লাগছে। দোয়া করি তোমার মনস্কামনা পূর্ণ হোক।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
মনটা খারাপ হয়ে গেল।
কি মাঝি, ডরাইলা?
আপনার লেখনীর কারণেই মনে হয় অসম্ভব খারাপ লাগলো!
এই সিরিজটা চলতেই থাকুক। মনে হয় পড়ছিনা, দেখছি।
আবীর,
তোমার লেখাও মনে হয় মনের পর্দায় ছবি আঁকে। এ জন্যেই হয়তো এ ধরনের লেখা ভাল লাগে তোমার।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
দ্রোহী,
মন্তবের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
সাইফ শহিদ
http://www.saifshahid.com
সাইফ শহীদ
নতুন মন্তব্য করুন