জেনেটের সাথে আমার প্রথম পরিচয় স্থানীয় কমুনিটি কলেজে, যখন আমি SQL Server Admin-এর একটা রিফ্রেসার্স কোর্স করতে গেছি। আমাদের কম্পুউটার ওয়ার্ক স্টেশন পাশাপাশি থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই তার সাথে আমার পরিচয় এবং বন্ধুত্ব হয়ে গেল। জেনেটের যে জিনিসটা প্রথমে আমার বেশী চোখে পড়ল সেটা হছে খুবই বুদ্ধিমতী মেয়েটি। বয়সে আমার মেয়ের বয়েসী হবে। তবে আমেরিকান নিয়মে বয়েস নিয়ে খুব একটা কেউ মাথা ঘামায় না। সবাই সবাইকে সমানে নাম ধরে 'তুমি' সম্মোধনে ডেকে কথা বলে। অচেনা, অজানা লোক কে রাস্তায় দেখলে একই ভাবে সম্ভাসন জানায়।
জেনেটের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখলাম কম্পুউটারের ব্যাপারে, যে সব শর্ট-কাট গুলি আমার আগে জানা ছিল না। কিছুটা কৃতজ্ঞতার কারনে, আর কিছুটা তার সঙ্গ লাভের ইচ্ছায়, একদিন ক্লাশ শেষ হবার পর বললাম - চল, তোমাকে খাওয়াতে নিই। তার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে, কিছু একটা হিসাব করে, রাজী হলো সে। কাছেই একটা রেস্টুরেন্ট ছিল - সেখানে গেলাম। তার জীবনের কাহিনী জানলাম। বেশ কম বয়েসে বিয়ে করেছিল সে। মাত্র ১৭ বছর বয়েসে। তার স্কুলের বন্ধু ছিল ছেলেটি। ৩ বছর এক সাথে থাকার পর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। ছেলেটি আর্মিতে যোগ দিয়ে এখন ইরাকে যুদ্ধ করছে। অন্য দিকে জেনেট তীব্র যুদ্ধ বিরোধী এক জন 'এক্টিভিস্ট'। 'যুদ্ধ-যন্ত্র বন্ধ কর' নামের একটি ওয়েব-সাইট পরিচালনা করে জেনেট। পার্ট-টাইম চাকরী করে একটি দোকানে আর কমুনিটি কলেজে পড়াশুনা করে তার ডিগ্রী পাবার চেষ্টা করছে। যতই জানলাম জেনেট সম্পর্কে, ততই তার প্রতি আমার স্রদ্ধা বাড়লো। আরও অবাক হলাম যখন জিজ্ঞাসা করে জানলাম যে সে এক আমেরিকান ইহুদী পরিবারের মেয়ে। প্রশ্ন করলাম - আমি যে মুসলমান, তা কি তুমি জানতে?
- জানবো না কেন? তোমার নাম তো সে রকমই বলে।
- তা সত্বেও আমার সাথে যে খেতে এলে?
- কেন আসবো না? খাবার সাথে নামের কি সম্পর্ক? - এবার অবাক হলো সে।
লজ্জ্বা পেলাম আমার এই হীনমন্যতাতে। তার সাথে কথা বলে বুঝলাম বয়েসে আমার থেকে ছোট হলে কি হয়, মানুষ হিসাবে আমার চাইতে উচ্চ স্তরে আছে সে।
কয়েক দিন পরে তার ওয়েব সাইটে দেখলাম সবাইকে আহবান করেছে সামনের মঙ্গলবারে স্থানীয় 'ন্যাচারাল হিস্টরি এন্ড সায়েন্স মিউজিয়াম'-এর সামনে সমাবেত হয়ে প্যালেস্টাইনের সাহসী জনসাধারণের সাথে একাত্বতা ঘোষনা করে শান্তি ও একাত্বতার জাতীয় কার্যক্রম দিবস পালন করার জন্যে।
আরও লেখা আছে - "আমেরিকার জনগণের এখন সময় এসেছে সমস্ত পৃথিবীকে জোড়ালো ভাবে জানিয়ে দিতে যে তারা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের পক্ষে। গাজাতে ইজরাইলী বোমা বর্ষনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এই শহর, দেশের অন্য শহরের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে। এই শহরে অবস্থিত 'লকহিড মার্টিন'-এর তৈরী অস্ত্রের আঘাতে যে গণহত্যা হচ্ছে গাজাতে - সেটা এখনি বন্ধ হোক। একাত্মতা প্রকাশের জন্যে সন্ধ্যায় ফেডারেল কোর্ট বিল্ডিং-এর সামনে মোমবাতি আলোর মিছিলে যোগ দিন।"
কৌতুহল হল এদেশের নিন্দা জ্ঞাপন ও মিছিল দেখার জন্যে। মনে পড়ে গেল উন-সত্তরের সেই আগুন ঝরা দিনগুলির কথা। আমি তখন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে আমরা সবাই খুব সক্রিয়। ছাত্র রাজনীতি তখন অন্য রকম ছিল। আদর্শ, নীতি - এ শব্দগুলি অনেক বড় ছিল আমাদের তখনকার ঐ নবীন বয়সে। আইয়ুব ক্ষমতা ছেড়ে দেবার পর পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে এয়ার মার্শাল নূর খান এলেন ছাত্রদের প্রতিনিধিদের সাথে খোলাখুলি আলাপ আলোচনা করতে। তখনকার প্রাদেশিক পার্লিয়ামেন্টের এক সভা কক্ষে আলোচনায় বসলাম আমরা। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের আমরা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসাবে তোফায়েল, মাহবুবুল্লাহ, সামসুদ্দোহা, নাজিম কামরান, ইত্যাদি ছিল সেই সভাতে। ১১ দফার আন্দোলনের সময় থেকে এক সাথে কাজ করতে যেয়ে আমরা সবাই যেন এক পরিবারের হয়ে গিয়েছিলাম। নূর খান আমাদেরকে স্পষ্ট জিজ্ঞাসা করলেন - "তোমরা কি চাও? তোমরা কি স্বাধীনতা চাও এই আন্দোলনের মাধ্যমে?" সত্যি বলতে কি, ঐ সময় আমাদের আন্দোলন ছিল শুধু স্বাধীকার লাভের, স্বাধীনতার জন্যে নয়। আমরা তখন আমাদের দিক তুলে ধরলাম আলোচনার সময়। তার পরের ঘটনা প্রবাহ আর ইতিহাস তো সবার জানা।
'ন্যাচারাল হিস্টরি এন্ড সায়েন্স মিউজিয়াম' আমার বর্তমান অফিসের কাছেই। দুপুরে লাঞ্চ ব্রেকের সময় গাড়ী চালিয়ে মিউজিয়ামের পাশ থেকে ঘুরে এলাম। দেখলাম ২০-২৫ জন লোক রাস্তার ধারে কিছু প্লাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে এক জনকে দেখলাম প্যালেস্টাইনের পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে আছে। হুইল চেয়ারে বসা এক বৃদ্ধা মহিলাকে দেখলাম এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক ঠেলে নিয়ে এসেছেন। এটা জনবহুল বাংলাদেশের ঢাকা শহর না - ফলে অফিসের দিন কাজ ফেলে ২০-২৫ জনের সমাবেশ এখানকার হিসাবে খুব একটা খারাপ না।
রাস্তা দিয়ে তাদেরকে অতিক্রম করার সময় আমি গাড়ী থেকে দুই বার হর্ন দিয়ে তাদের সাথে আমার একাত্মতা প্রকাশ করলাম। তারাও হাত নাড়িয়ে জানয়ে দিল তাদের স্বীকৃতি। আমার মন আবার ফিরে গেল ৭১-এর দিনে। পাকিস্তানী আর্মি যখন বাংলার বুকে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছিল - তখন কি এই শহরে কোন প্রতিবাদ হয়েছিল? এই শহরের কেউ কি আদতেই জানতো কি হচ্ছে সেখানে নিরীহ মানুষগুলোর উপরে?
অফিসে ফিরে যখন আমি লাউঞ্জে এক কাপ কফি বানাচ্ছি তখন এক মহিলা সহকর্মী এসে যোগ দিল সেখানে। লাউঞ্জের টিভি চালু ছিল এবং দেখলাম মহিলা আগ্রহ ভরে সেদিকে নজর রাখছেন। তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তেমন কিছু খবর আছে কিনা টিভিতে।
- গাজাতে গোলমাল চলছে।
- সত্যি খুব দুঃখের কথা। আমি আজ রাস্তায় এক সমাবেশ দেখলাম এর প্রতিবাদে।
- কিন্তু তুমি ইজরাইলীদের দোষ দিতে পার না। তোমার বাড়ীর পিছনে যদি কেউ শেলের গোলা ফেলতে থাকে, কতক্ষন তুমি চুপ করে থাকতে পারবে?
- কিন্তু তার জন্যে অন্যকে হত্যা করতে হবে?
- তারা বিগত অনেক বছর খুব ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে।
- তারা কি আলোচনা করে এ সমস্যার সমাধান করতে পারতো না?
- তাদের সাথে কি করে আলোচনা করবে, যারা 'ইভিল' এবং ইজরাইলকে ধংস করে ম্যাপ থেকে মুছে দিতে চায়?
আমি জানতাম এই মহিলা তার মনভাব প্রকাশ করতে কখনো পিছুপা হয় না। সেটা অবশ্য এক দিক থেকে ভাল, মনে এক আর মুখে আর একের চাইতে। ওবামা জয় লাভ করায় বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছিল এই মহিলা।
- কারণ যায় হোক, আমি কিন্তু হিংস্রতা ও নিরস্ত্র মানুষের হত্যা কিছুতেই সমার্থন করতে পারিনা - আমি একটু নরম ভাবে প্রকাশ করলাম আমার মনভাব।
- তুমি কতক্ষণ তোমার ধৈর্য দেখাতে পারবে যদি কেউ তোমাকে ধংশ করার জন্যে সক্রিয় ভাবে কাজ করে চলে?
- হিটলারও কি একই কাজ করে নি? তার চাইতে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা কি ভাল না?
- পশ্চিমা দুনিয়া হিটলারের সাথে প্রথমে সেই ব্যবহারই করেছিল। ফলে তাকে বরং আরও বেশী শক্তিশালী করে দিয়েছিল।
- তবুও আমি কখনো হিংস্রতা সমার্থন করতে পারি না। হাজার হলেও গান্ধীর দেশের মানুষ আমি। - মহিলাকে ঠান্ডা করার জন্যে বললাম আমি।
আমরা আমাদের কফির কাপ হাতে করে বেরিয়ে এলাম লাউঞ্জ থেকে।
উপরের এই আলোচনার পর আমি ঠিক করলাম যে মোমবাতি আলোর মিছিলে আমার যোগ দেওয়া উচিত। আমার অংশ গ্রহনে যদি মিছিলে যোগদানকারীর সংখ্যা ২৫ থেকে বেড়ে ২৬ হয় - তাও বা কম কি। ৬০ বছর যে কোন জাতির জীবনে একটা লম্বা সময়। নিজের দেশে পরবাসী হবার মত দুঃখের আর কি আছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ৯ মাসও আমাদের অনেকের জন্যে দীর্ঘ সময় হয়ে গিয়েছিল। আমি সহজেই গাজার অধিবাসীদের কষ্ট অনুভব করতে পারলাম।
.
কাজের শেষে যখন ফেডারেল কোর্ট বিল্ডিং-এর সামনে মোমবাতি আলোর মিছিলে যোগ দিতে গেলাম তখন দেখলাম এবার সেখানে ৫০-৬০ জন এসে জড় হয়েছে। নারী পুরুষরা সাড়িবদ্ধ ভাবে দাড়িয়েছে সেখানে। এক হাতে মোমবাতি এবং অন্য হাতে একটি করে অক্ষরের প্লাকার্ড। অক্ষরগুলি এক সাথে পড়লে দেখা যায় "STOP CARNAGE IN GAZA" এই লেখাটি। রাস্তা দিয়ে অতিক্রম করার সময় অনেক গাড়ী হর্ন বাজিয়ে তাদের সমার্থন জানিয়ে গেল। কবিরা তাদের স্বরচিত কবিতা পাঠ করতে লাগলো। এই সমাবেশে যোগদানকারীদের বয়স দেখলাম ৩০ থেকে ৭০ এর মধ্যে। সবাই প্রায় স্থানীয় সাদা আমেরিকান। কিছু স্প্যানীয় (হিস্পানিক অধিবাসীসহ) এবং কিছু নেটিভ ইন্ডিয়ান দেখলাম।
ওখানে সেদিন আমিই ছিলাম এক মাত্র এশিয়ান।
মন্তব্য
আপনার লেখা দেখতে পেলেই পড়ে ফেলি, আজ পড়ে প্রথম মন্তব্য করার লোভ সামলাতে পারলাম না।
আরেকটু বড়ো লেখা হলে আরো চমৎকার হয়।
অনেক ধন্যবাদ প্রথম মন্তব্য করার জন্যে।
শুনেছি - সাধারনত এক / দুই হাজারের বেশী শব্দ হলে নাকি অনেকের ধৈর্যচুতি ঘটে।
আর এটা তো ঠিক তেমন 'গল্প' না, একটা ছোট ঘটনা মাত্র। তবে বড় লেখার ব্যাপারে মন্তব্যটা মনে রাখবো।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
Your write-up touched me. You commented at one place in your writin - " Don't know if in '71, during indiscriminate henious act of killing which was being perpetrated in Bangladesh, was there such expression of protests staged in Washington DC"?
Yes - during that time I was here, going to school. The then Bengali students belonging to erstwhile East Pakistan staged protest demonstrations in front of Capital Hill, besides that, having experienced the sentiments of the people in general, "I noticed very strong sympathy for the plight of Bengalis, their sufferings and an outright support for their cause".
Kaiser Ahmed,
Thanks for the information and also for your appreciation.
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
এই সিরিজটার নিয়মিত পাঠক হিসেবে আছি।
সুযোগ পেয়ে জানিয়ে গেলাম।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
রাফি,
কথাটা জানতে পেরে ভাল হলো। আমি ভাবছিলাম সিরিজের দশটি লেখা হয়ে গেছে - এখন এখানেই ইতি টানবো কিনা। দেখি অন্যরা কি বলে।
অনেক ধন্যবাদ নিয়মিত পাঠক হবার জন্যে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
ইতি টানার কথা মোটেও ভাববেন না, আপনার এই সিরিজ দীর্ঘজীবন লাভ করুক। এর চরিত্রটা রবীন্দ্রনাথের ঐ গানটায় নিখুঁত ধরা পড়েছে: খেলে যায় রৌদ্রছায়া, বর্ষা আসে, বসন্ত, আমার এই পথ-চাওয়াতেই আনন্দ!
আর লেখার দৈর্ঘ্যের কথাটা আমি এনেছি কোনো নান্দনিকতার হিসেব থেকে নয়, বরং ভালো জিনিস আর একটু বেশি হলে আরো ভালো লাগে, এই ভাবনা থেকে।
অনেক ভালো থাকুন।
আমি দুই-তিন আগে দশ-বারো জন লোককে প্ল্যাকার্ড হাতে দাড়িয় থাকতে দেখে মুচকি হেসেছিলাম, মূলত নিজ দেশের সাথে তুলনা না করে পারছিলাম না। এখন মনে হচ্ছে, একটু ভাল করে তাদের দাবীগুলা দেখলে হত।
আপনার এই সিরিজটা বেশ ভালো লাগে, লেখা বড় হলে আরো ভালো।
সজল
সজল,
প্রথম প্রথম আমিও সে রকম ভাবতাম। আরও ভাবতাম - এরা কি বোকা, কেন বাংলাদেশের পলিটিসিয়ানদের কাছ থেকে শিখে নেয় না, কি করে টাকা খরচ করে বাস ভর্তি করে লোক নিয়ে আসা যায়। ক্লিনটন যখন 'ইম্পিচ' আর কেনেথ স্টারের ঠেলা সামলাতে হিমসিম - তখন ভাবতাম - আমাদের এরশাদের কাছ থেকে বুদ্ধি ধার নেয় না কেন।
বড়ই বিচিত্র এই দুনিয়া - তাই না?
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
প্যালেস্টাইনের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন অনেক ইহুদী লোক আমি দেখেছি এদেশে, খোদ ইসরাইলেও আছে এরকম মানুষ। সব সমাজেই কট্টর ও মধ্যপন্থী মানুষ আছে। ইসলামী বিশ্বে যদিও তুলনামূলকভাবে কট্টরপন্থী একটু বেশিই মনে হয় আমার।
আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন নিয়েও লিখুন। ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্সের স্বাদই আলাদা।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এমিল,
ঠিকই বলেছো। আমার মনে হয় মূল সমস্যা হছে অধিকাংশ আরব দেশে কোন গনতন্ত্র না থাকা থেকেই। বর্তমান পৃথিবীতে ইসলামের সব চাইতে বড় শত্রু হচ্ছে সৌদি রাজ পরিবার এবং তাদের দোসররা।
এই সত্যি কথা অনেকের কাছে অপ্রিয় হবে - আমি দুঃখিত যদি কেউ দুঃখ পান এতে। ইসলামের প্রথম দিকের গণতান্ত্রিক ভাবে খলিফা নির্বাচন থেকে কোথায় নিয়ে এসেছে আজকের এই দখলকারী 'রাজ বংশ'।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
কথাচ্ছলে বলে যাওয়ার এই ঢং টা যদি আমি 'ছলে- বলে- কলে- কিংবা কৌশলে' বগলদাবা করতে পারতাম সাঈদভাই!!! যথারীতি ভালো লাগলো লেখা।
শুধু একটা জায়গাতে এসে অভিমান হলো, যেহেতু আপনি অকপটে বলাটা পছন্দ করেন তাই বলছি , কেনো বলতে পারলেন না যে, আপনি শেখ মুজিবের দেশের লোক? কেউ চিনুক কিংবা নাই চিনুক বাংলাদেশেরই নেতা তিনি ঠিক না! দেশের কথা আসাতেই কথাটা বলা, অন্যভাবে নিবেন না প্লিজ॥ আপনি আমার ভীষণ প্রিয় একজন লেখক। পাঠকের স্বাধীনতার সীমাটা লঙ্ঘন করে থাকলে সবিনয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। অনেকদিন দেখিনি আপনাকে ঈদ কেমন কাটলো? ভালো থাকবেন।
অনেক শুভেচ্ছা।
আয়নামতি,
দুঃখিত যে তোমাকে দেওয়া উত্তরটা নীচে চলে গেছে। খুজে নিও।
ঈদ খুব একটা খারাপ কাটেনি। আশা করি তোমাদের দিনগুলিও ভাল কেটেছে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
আপনার সিরিজের নতুন লেখা পেলেই আগ্রহ নিয়ে পড়ি। অভিজ্ঞতা যা হয়েছে/হচ্ছে লিখতে থাকুন আর আমরা পড়তে থাকি। সিরিজের পর্ব ১০ কেন, ১০০ ছাড়ালেও ক্ষতি কি?
নিভৃত সহচর,
একটু কি বেশী প্রশংসা হয়ে গেল না?
আগ্রহ নিয়ে পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
আয়নামতি,
আমার এই 'ঢং'-টা তোমার ভাল লাগার জন্যে ধন্যবাদ। সুন্দর ভাবে কথাটা বলেছো - তাই একটু ঠাট্টা করে রিপিট করলাম।
তোমার অভিমানের কারণ সম্ভবত এই লাইনগুলি -"তবুও আমি কখনো হিংস্রতা সমার্থন করতে পারি না। হাজার হলেও গান্ধীর দেশের মানুষ আমি। - মহিলাকে ঠান্ডা করার জন্যে বললাম আমি।"
এখানে একটা কথা জানিয়ে রাখি - আমি কিন্তু সত্যিই গান্ধীর দেশের মানুষ। ব্রিটিশ ভারত ছিল গান্ধীর দেশ। আমিও জন্মেছিলাম সেই দেশে, তখনকার ব্রিটিশ ভারতে। তাহলে, টেকনিকালি কিন্তু সত্যি কথাই বলেছি আমি।
আর একটা কথা ততটা খেয়াল করেছো কিনা জানি না - আমি লিখেছি যে আমি মহিলাকে 'ঠান্ডা' করতে এই কথা বলেছিলাম।
আমি আমার সময়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ডিবেট চ্যাম্পিয়ন' ছিলাম। কিন্তু আমার স্ত্রীর কাছ থেকে শেষ পর্যন্ত শিখতে হয়েছে - তর্কে জেতা এক জিনিস আর জয়লাভ করা অন্য আর এক জিনিস [বলা বাহুল্য - আমার প্রিয় স্ত্রীই সব সময় আমাদের বাড়ীতে শেষ পর্যন্ত সব তর্কে বিজয়ী হয়]। আশা করি বুঝতে পারছো কি বলতে চাচ্ছি।
আমার এখন শেখ মুজিবের জন্যে দুঃখ হচ্ছে - তার জীবনের শেষ দিনগুলির ঠিক আগে এবং ঠিক পরে যদি তোমাদের মত 'সত্যিকার ভালবাসা' নিয়ে তার পাশের লোকেরা থাকতো।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
ভাইয়া, সুন্দর করে বুঝিয়ে বলবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সেদিন আসল কথাটাই বলা হয়নি। সিরিজটি অবশ্যই চলবে....চলবে এবং চলতেই থাকবে। পোষ্ট লেখক এবং সাবলীল এই সিরিজের জন্য (গুড়) (গুড়)। ভালো থাকবেন।
আপনার এই সিরিজ আমি নিয়মিত পড়ি। সবসময় মন্তব্য করা হয়ে উঠে না। খুব সরলভাবে আপনি ঘটনাগুলো তুলে ধরেন। আশা করছি, এই সিরিজ বন্ধ করবেন না।
অনন্ত
অনেক ধন্যবাদ অনন্ত, মন্তবের জন্যে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
অনেক ধন্যবাদ অনন্ত, মন্তবের জন্যে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
আপনার এ সিরিজের দুই/তিনটা পড়েছিলাম। বেশ টানে। এ লেখাটি খুব ভালো লাগলো। চলুক
-----------------------------
হামিদা আখতার
-প্রতিটি দিন-ই হোক, একটি সুন্দর দিন
ধন্যবাদ হামিদা, আপনার মন্তবের জন্যে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
ভালো লাগলো...বেশী বেশী লিখুন
সময় সাপেক্ষে চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
একটা আবদার , আপনার সময়ের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির কিছু হকিকত শুনতে চাই।
আর সিরিজ বলবৎ থাকুক স্বমহিমায়।
--------------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
অদ্রোহ,
এখনো কি বলার সময় এসেছে? প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার আগে ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন) গ্রুপের সভাপতি ছিলেন সিরাজ শিকদার। কতটুকু লিখতে পারবো সেই সময়ের কথা?
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
এটা তো সিরিজ হওয়ার সাথে সাথে প্রত্যেকটা পর্বে আলাদা আলদা গল্প বলা হয়েছে ... চলুক ...
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
ঠিক কথা।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
সাইফ ভাই, মার্শাল নূরের সাথে ছাত্র প্রতিনিধিদের বৈঠকের কথা জানা ছিল না। ব্যাপারটা নিয়ে কৌতুহল হচ্ছে। একদিন কী একটু বড় করে এই ঘটনা নিয়ে লিখবেন
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
নিবিড়,
সুযোগ ও সময় পেলে চেষ্টা করবো তোমার কথা রাখতে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
লেখাটা খুব ভাল লেগেছে। এতো তাড়াতাড়ি সিরিজটার ইতি টানবেন না প্লীজ। আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলি নিশ্চয় অনেক বড়। সিরিজ চলুক যতক্ষণ না ঝুলি খালি হয়।
সত্যান্বেষী
সত্যান্বেষী,
এত দিন পর্যন্ত মোটামুটি কাউকে তেমন আঘাত না দিয়ে লিখতে পেরেছি। কিন্তু আপনার নামটাই তো আমাকে সতর্ক করে দিচ্ছে। সত্য কথা কাউকে না কাউকে তো আঘাত করবে।
তবু আপনার অনুরোধের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। সময় ও সুযোগ সাপেক্ষে চেষ্টা করবো আরও কিছু লিখতে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
হুম...সিরিজ পড়ছি।
ধন্যবাদ অনেক।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
প্রতি পর্বের মত এই পর্বও সেই রকম হয়েছে। আর আপনি আপনার মত লিখতে থাকুন, কত পর্ব হচ্ছে না হচ্ছে এই হিসেব রাখার কি দরকার। প্রতিটিই তো এক-একটা নতুন গল্প - এক খন্ডে সমাপ্য রোমাঞ্চোপন্যস টাইপ।
ভাল থাকবেন।
অনন্ত আত্মা
এই মন্তবের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
চমৎকার চমৎকার লেখা সাইফ ভাই। আরও লিখুন। একদিন প্ল্যান করে ব্লগের পাতা ছাড়িয়ে সেগুলোকে বইয়ের পাতায় প্রকাশ করবেন, আশা করি। আপনার সিরিজ সত্যিই মনোমুগ্ধকর!
অনেক ধন্যবাদ রায়হান এভাবে পছন্দ করার জন্যে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
চমৎকার লেখা। জেনেটের জন্য শুভেচ্ছা।
আপনার অলখ-আমেরিকা সিরিজটা আমার খুব ভাল লাগে।
কাকস্য পরিবেদনা
"জেনেটের জন্য শুভেচ্ছা।" - ঠিক আছে, আবার দেখা হলে জানিয়ে দেবো।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
নতুন বলে আপনার লেখা এই প্রথম পড়লাম। এখন পুরো সিরিজটাই পড়ব।
ইসরাইল সমস্যা নিয়ে আলোচনাতো প্রচুর হয়েছে। সহনশীলতা ছাড়া আরতো মাত্র একটা উপায়ই দেখি - জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন। কিন্ত এই ইস্যুতে নিরপেক্ষ কে?
অমিত্রাক্ষর
অমিত্রাক্ষর@জিমেইল ডট কম
অমিত্রাক্ষর,
"কিন্ত এই ইস্যুতে নিরপেক্ষ কে?" - কঠিন প্রশ্ন। এই সমস্যার সমাধান কি ভাবে হবে তাও আমার জানা নেই। আমি শুধু বিশ্বাস করি, মানুষ যতই একে অপরকে জানতে ও চিনতে পাবার সুযোগ পাবে ততই সহজ হয়ে আসবে সমস্যার সমাধান।
অনেক ধন্যবাদ মন্তবের জন্যে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
শ ছাড়িয়ে যাক...
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
শাহেনশাহ,
বিনা পয়সায় এতো কষ্ট করতে হবে? রাজ কোষাগার থেকে কিছু সাহায্য পাওয়া যাবে না?
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
দেশে আসলে 'বাবুর্চি' রইলো আপনার জন্যে
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
৬৯ থেকে শুরু করেন... যতদূর টানতে পারেন... সে সময়ে আপনার দেখা দেশটার কথা জানতে চাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল,
আগ্রহ দেখাবার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। তবে সময়ের কারনে কতটা যে তোমার অনুরোধ রাখতে পারবো - এই মুহূর্তে ঠিক বলতে পারছিনা।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
খুব ভালো লেখেন, ৬৯-৭২ সময় কার আরও কিছু জানতে চাই আপনার কাছে
সময় না পেলে পরে হলে এসেও পড়ি এই সিরিজটা। কিন্তু আপনার দেখা ঢাকা, আর বাংলাদেশের কথা নিয়েও লেখা পড়তে অনেক আগ্রহী, বলেছিলাম মনে হয় সেটা আগেও একবার।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
হাসান ও যাযাবর,
চেষ্টা করবো। অনেক ধন্যবাদ এই আগ্রহের জন্যে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
আপনার প্রতিটা লেখা আগ্রহ নিয়ে পড়ছি। ভাল লাগছে। লিখতে থাকুন।
নতুন মন্তব্য করুন