From Stop the war |
অফিসে বসে কাজ করছি, হঠাৎ করে এমারজেন্সী বেল বেজে উঠলো। একই সাথে বিভিন্ন পিএ সিস্টেমে ক্রমাগত বলে চললো "বিল্ডিং-এ আগুন দেখা গেছে, সবাই এখনি 'ইভাকুয়েশন প্রসিডুয়ের' শুরু করো"। অর্থাৎ সবাইকে সব কাজ ফেলে নির্দিষ্ট পথ ধরে বিল্ডিং ছাড়তে বলা হচ্ছে। আমি বুঝে গেলাম এমারজেন্সী ড্রিল শুরু হয়েছে। বছরে এক-দুই বার করা হয় এই ড্রিল - যাতে সবাই জানে সত্যিকার আগুন লাগলে কি করতে হবে। সবার সাথে আমিও সিড়ি বেয়ে নামতে থাকলাম ৪ তলা থেকে। ভাগ্যিস আমার অফিস ৮ তলাতে না - তাহলে আরও বেশী সিড়ি ভাঙ্গতে হতো। এই সময় এলিভেটর ব্যবহার না করার নির্দেশ আছে। নীচে নেমে সামনের চার্চের খোলা মাঠে আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম, কখন ফায়ার ড্রিল শেষ হবে তার অপেক্ষায়।
এখান থেকে এয়ারপোর্ট ৪/৫ মাইলের মধ্যে, আর তার পিছনেই মানজানো পাহাড়ের শুরু। ঢাকার সাম্প্রতিক কয়েকটা আগুনে পুড়ে মানুষ মারা যাবার ঘটনা মনে এলো। আমার দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশী ঢাকায় অবস্থানের সময় কখনো কোন 'ফায়ার ড্রিল' করতে হয়েছে বলে মনে পড়ল না। স্কুলে পড়ার সময় একটা 'সিভিল ডিফেন্স' ট্রেনিং-এ অংশ নিয়েছিলাম। অবশ্য ঢাকার গার্মেন্টস কর্মীরা ফায়ার ড্রিল শিখলেও সেটা যে কতটা কার্যকর হতো - তাও বলা মুশকিল। যে ভাবে ঘন বসতী হয়ে গেছে এখন ঢাকাতে - ফায়ার ব্রিগ্রেডের গাড়ী বা মই যে কি ভাবে সব জায়গাতে ব্যবহার করা যাবে, তা একমাত্র ভগবান বা আল্লাহ জানে।
চার্চের মাঠে দাঁড়িয়ে হঠাৎ 'মানজানো মাউন্টেন'-এর দিকে তাকিয়ে মনে হল পৃথিবীর সব চাইতে উন্নত ও শক্তিশালী দেশে থেকেও কি আমি খুব একটা নিরাপদ? আমি তো আরো বড় বিপদের সম্ভাবনার মধ্যে বাস করছি। বোমার সাথে বসবাস করছি আমি। না, ইরাক বা আফগানিস্থানের কথা বলছি না - বলছি আলবাকারকি শহরের কথা, যে শহরে এখন আমার আবাস। শান্ত এবং খুবই সুন্দর এই শহরটি। লোকসংখ্যা দশ লাখের কম। বলা হয় আমেরিকার প্রথম দশটি সব চাইতে বাস যোগ্য শহরের মধ্যে এই শহরটি অন্যতম। আমার বাড়ী থেকে এক মাইলের মধ্যে মানজানো পাহাড়ের শুরু। আমি মাঝে মাঝে হাটতে হাটতে পাহাড়ের পাদদেশ পর্যন্ত যাই। চারিদিকের দৃশ্যাবলী খুবই অপূর্ব সুন্দর। অথচ বলা হয় এই মানজানো পাহাড়ের কাছে মাটির নীচে লুকিয়ে রাখা আছে আমেরিকার সব চাইতে বড় আনবিক বোমার অস্ত্র ভান্ডার।
এয়ারপোর্টের সংলগ্ন হছে 'কার্টল্যান্ড এয়ারফোর্স বেইস' আর তার আর এক পাশে হচ্ছে 'স্যান্ডিয়া ন্যাশনাল ল্যাব'। এরা সবাই আনবিক অস্ত্রের ব্যাপারে বিভিন্ন ভাবে জড়িত। এ গুলি সবই 'হাই সিকিউরিটি এরিয়া' - সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। এখানেই রাখা আছে ২০০০-এর বেশী আনবিক বোমা।
এই রাজ্য (ষ্টেট) - নিউ মেক্সিকো - আমেরিকার অন্যতম দরিদ্র রাজ্য। অথচ প্রথম আনবিক বোমা এখানেই বানানো হয়েছিল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় এই রাজ্যেই স্থাপন করা হয়েছিল গোপন ল্যাব - সেই স্থানকে তখন বলা হত 'সাইট-ওয়াই'। এখন এটার পরিচিতি 'লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাব' নামে। আলবাকারকি থেকে প্রায় ১০০ মাইল উত্তরে পাহাড় ও উপত্যকার মাঝে এক অপূর্ব সুন্দর জায়গায় অবস্থিত এই স্থানটি।
লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাব |
শুধু এই ল্যাবেই কয়েক হাজারের বেশী পিএইচডি কাজ করে বলে শুনেছি। ১৯৪২ সালে শুরু হয় এটি এবং এর প্রথম পরিচালক ছিল বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী রবার্ট ওপেনহাইমার। ইতিহাস খ্যাত 'ম্যানহাটন প্রজেক্ট' এখানেই ছিল। প্রথম আনবিক বোমা 'ট্রিনিটি' নিউ মেক্সিকোর আলামোগোরদো নামক স্থানের খোলা ভুমিতে টেষ্ট করা হয় ১৯৪৫ সালের ১৬ই জুলাই। একই সাথে তৈরী অপর দু'টি আনবিক বোমা, যেগুলি ইতিহাসে 'লিটল বয়' ও ফ্যাট ম্যান' নামে পরিচিত - সেগুলি ফেলা হয় হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে আগষ্ট মাসের ৬ ও ৯ তারিখে। এগুলি সবই লস আলামসে তৈরী। যুদ্ধের পর এখানেই আবিস্কার হয় বর্তমানের 'হাইড্রোজেন' বোমা।
হিরোশিমাতে বোমা ফেলার পর সেই প্লেনের কো-পাইলট লুইস বলেছিল - "আমার মনে হয় না এমন দৃশ্য দেখার জন্যে কেউ প্রস্তুত ছিল। দুই মিনিট আগেও আমরা পরিস্কার যে শহর দেখতে পাচ্ছিলাম, আমরা আর সেটা দেখতে পেলাম না। তার বদলে শুধু দেখলাম পাহাড়ের পাশ থেকে ধোয়া আর আগুনের হলকা।"
অন্য এক ক্রু-সদস্য বলেছিল - "হায় খোদা, এ আমরা কি করেছি।"
প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান, যে বোমা ফেলার ব্যাপারে একক সীদ্ধান্ত নিয়েছিল, বলেছিল - "এই আনবিক বোমা হচ্ছে ইতিহাসে বিজ্ঞানের সব চাইতে বড় সাফল্য।"
পরে অবশ্য রবার্ট ওপেনহাইমার বলেছিল - "এটা ছিল আমাদের সব চাইতে বড় ভুল। আমাদের হাত এখন রক্তে রঞ্জিত।"
প্রায় ৮০,০০০ মানুষ বোমা বিষ্ফোরনের সাথে সাথে পুড়ে ঝলসে মারা যায়। আরও কয়েক হাজার মানুষ তেজস্ক্রিয়তার ফলে পরে ধুকে ধুকে মরে। ঐ বোমাগুলির ক্ষমতা ছিল ২০ কিলো টন টিএনটির কম। আর বর্তমানের বোমাগুলির ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ কিলো টন টিএনটির সমান। এদের ধংশ ক্ষমতা অনুমান করার ক্ষমতা আমার নেই।
বর্তমানে ব্যবহারের জন্যে ৭ ধরনের মধ্যে ৫ ধরনের 'ওয়ার-হেড' এই ল্যাবে ডিজাইন করা। সেগুলি হছে বি-৬১ গ্রাভিটি বোমা, ডব্লিউ-৭৬ ও ডব্লিউ-৭৮ ICBM-এর জন্যে, ডব্লিউ-৮০ সমুদ্র থেকে ছোড়া ক্রুজ মিসাইলে, এবং ডব্লিউ-৮৮ সাব-লঞ্চের জন্যে। আমেরিকার একমাত্র কার্যকর 'প্লুটোনিয়াম পিট ফ্যাক্টরী' এই ল্যাবের মধ্যে অবস্থিত। এই ল্যাব চালাতে প্রতি বছর বাজেটে রাখা আছে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশী। নিউ মেক্সিকোর সব চাইতে বড় প্রতিষ্ঠান এটি। প্রায় দশ হাজার লোক কাজ করে এখানে। খুব সম্প্রতি এখানে ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশী ব্যায়ে একটা প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে - যাকে CMRR [Chemistry and Metallurgy Research Replacement Nuclear Facility (CMRR-NF)] প্রোজেক্ট বলা হচ্ছে। যদিও এটি একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানে। সব চাইতে বড় 'প্লুটোনিয়াম পিট ফ্যাক্টরী' হবে সেটি। আনবিক বোমার ফাইনাল এসেম্বলিতে পিট ফ্যাক্টরীর দরকার হয়।
এখানকার কিছু সক্রিয় সংগঠন আছে যারা চেষ্টা করছে জন-সাধারণকে এই ব্যাপারে সচেতন করে এই প্রোজেক্টের বিরুদ্ধে জন মত গড়ে তুলতে। তাদের কয়েকটি বিল বোর্ডের ছবি এখানে দিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত এরা যে খুব একটা কার্যকর হবে তা মনে হয় না। এই গরীব ষ্টেটের টাকার দরকার এবং এত বড় একটা প্রজেক্ট তারা ছেড়ে দেবে বলে আমার মনে হয় না। আমেরিকানরা ছবিতে ছাড়া হিরোশিমা ও নাগাসাকির ধংশ লীলা চোখে দেখেনি - ফলে তাদের কাছে এই সম্ভাবনাটা খুব একটা বড় হয়ে দেখা দেয় না। এদের দোষ দিয়ে লাভ নেই - আমিও যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের হত্যা এবং ধংশযজ্ঞ নিজের চোখে না দেখতাম তবে আমার এই বর্তমান 'যুদ্ধ-বিরোধী' মনোভাব হয়তো এতটা গভীর হতো না।
From Stop the war |
From Stop the war |
From Stop the war |
From Stop the war |
তখনো ফায়ার ড্রিল শেষ হয়নি। আমি অনেকটা একাকী দাঁড়িয়ে পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে এই সব কথা ভাবছিলাম। আমাকে একাকী দেখে আমার এক সহকর্মী রোজারিও এগিয়ে এলো।
- কি ভাবছো এক দৃষ্টিতে পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে?
- তুমি জানো ওখানে কি কি আছে?
- কিসের কথা বলছো?
- আমি 'নিউক্লিয়ার ওয়ারহেডের' কথা ভাবছিলাম।
- ওহ।
- ফায়ার ড্রিল না হয় আমাদেরকে শেখাচ্ছে এই বিল্ডিং-এ আগুল লাগলে কি করতে হবে। আনবিক বিষ্ফোরণ ঘটলে কি করতে হবে, সেটা কি শেখানো হয়?
- আমরা যখন স্কুলে পড়তাম, তখন শেখানো হতো।
- সত্যিই?
- হ্যাঁ। কি বলা হতো জানো?
- কি?
- বলা হতো ক্লাশের বেঞ্চের নীচে লুকাতে।
- যাহ, ঠাট্টা করছো?
- না, আসলেই তাই শেখানো হতো। কারণ এর চাইতে ভাল কিছু শেখাবার ছিল না। ৮০ সাল পর্যন্ত এই 'ডাক এন্ড কভার' প্রোগ্রাম প্রতি স্কুলে চালু ছিল।
- আর এখন?
- কি শেখাবে? আনবিক বিষ্ফোরণ ঘটলে কারও কি কিছু করার থাকবে?
- মানে সম্পূর্ণ ভ্যাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া?
- না, তাও না। এখানে কোন আনবিক বিষ্ফোরণ ঘটলে এই শহরের কোন চিহ্ন রইবে না।
রোজারিওর কথাগুলি হজম করতে সময় লাগলো। ধীর পায়ে হেটে ফিরে চললাম আমার অফিসের দিকে।
মন্তব্য
লেখনি ও তথ্যসম্ভার, দু'ই সমৃদ্ধ এবং বরাবরের মতো ভালো লাগানো। তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলোতেও যে পরিমান ইউএক্সও পড়ে আছে, তা'ও ভীতিকর। আমেরিকা আর রাশিয়ার অবদান।
রাতঃস্মরণীয়
রাতঃস্মরণীয়,
২০১২ সালে তো বিশ্ব ধংশ হবার কথা, তাই না? তাহলে আর কি - মাত্র দু'টো বছর একটু কষ্ট করে পার করে দিলেই তো মুক্তি।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
যদিও মোটামুটি জানা তথ্য, তারপরেও হজম করতে কষ্ট হচ্ছে! ভয়াবহ ধ্বংসের কী উন্মত্ত আয়োজন!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
ফাহিম,
আমি কিন্তু এখানে আসার আগে জানতাম না যে এখানেই সব চাইতে বড় অস্ত্রাগার।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
ভালো লাগলো বরাবরের মত। কিন্তু একটা খটকা রয়ে গেল। আণবিক বোমা না পারমাণবিক বোমা?
নিউক্লিয়ার বোমা শব্দটাই বৈজ্ঞানিকভাবে যুক্তিযুক্ত হবে বোধ হয়। লেখককে ধন্যবাদ তার জীবন থেকে নেওয়া একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে ভাগাভাগি করার জন্য। অলখ আমেরিকা সিরিজটা থেকে অনেক কিছুই শিখছি।
নিভৃত সহচর,
হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যে গুলি ফেলা হয়েছিল - সেগুলি ছিল আনবিক বোমা (Atomic Bomb) । এখনকার সবগুলি পারমাণবিক পর্যায়ের বোমা। আমেরিকাতে এ পর্যন্ত ৫৭,০০০-এর বেশী আনবিক ও পারমাণবিক বোমা তৈরী হয়েছে (গুগল তথ্য)। তবে কে যেন আমাকে বলেছিল পারমাণবিক বোমা ডেটোনেট করতে এক ধরনের ছোট আনবিক বোমা আগে বিষ্ফোরিত করতে হয়। এ সব ব্যাপারে আমার অবশ্য তেমন কোন জ্ঞান নেই - শুধু এটুকু বুঝি এগুলির কোনটাই স্বাস্থের জন্যে ভাল না।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
শহীদ ভাই,
পারমাণবিক বোমাকে Atomic Bomb বলে জানতাম। আপনি কি একটু ভেরিফাই করে নিবেন।
অশেষ ধন্যবাদ আপনার সাবলীল লিখার জন্য
সাইদ
ফিশান বোমা (পরমানুর নিউক্লিয়াস বিভাজনের ফলে নির্গত শক্তি) প্রধানত ইউরেনিয়াম অথবা প্লুটুনিয়াম ব্যাবহার হয় ।
ফিউশান বোমা ( একাধিক পরমানুর নিউক্লিয়াস একত্রিত করে বড় নিউক্লিয়াস তৈরির ফলে নির্গত শক্তি) প্রধানত হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম করা হয়।
প্লাসমা অবস্থাতে ফিউশান বিক্রিয়া শুরু করার জন্য যে উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োজন সেটা তৈরি করার জন্য ফিউশান (হাইড্রোজেন) বোমার কেন্দ্রে ফিশান ( ইউরেনিয়াম অথবা প্লুটুনিয়াম) বোমার বিস্ফোরন ঘটানো হয়।
সাইদ,
প্রথমে ইংরেজী টার্মগুলি দেখি। 'fission' আর 'fusion' এই দুই প্রকার ভাবে বোমাগুলিকে ভাগ করা যায় তাদের বিষ্ফোরন প্রনালী অনুসারে। প্রথম প্রকারকে সাধারণ ভাবে Atomic বা A-bomb বলা হয়। Atom-এর বাংলা অনু থেকে এসেছে আনবিক শব্দটা। হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা হয়েছিল আনবিক বোমা।
দ্বিতীয় ভাগ অর্থাৎ fusion-জাতীয় বোমাকে Thermonuclear bomb বা Hydrogen বোমা বা H-bomb বলা হয়ে এসেছে। অনুর ভিতরের পরমানু বা neutron থেকে আসা এই শক্তির কারনে একে পারমানবিক বোমা বলে আসা হতো।
নীচের লিঙ্কটাতে কিছুটা সোজা ভাষায় এই বিষয়গুলি বলার চেষ্টা করেছেঃ
পারমানবিক বোমা
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
প্রতিদিন নতুন নতুন ভয় যোগ হচ্ছে মনের খাতায়! পৃথিবী আসলে আগাচ্ছে, না পেছাচ্ছে?
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
দুষ্ট বালিকা,
পৃথিবী দুই পা আগাচ্ছে, আর এক পা পেছাচ্ছে।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
এটা আমিও শুনেছিলাম ছোট থাকতে।
১৯৯৭ সালে আমি একবার ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান এয়ার স্পেস মিউজিয়ামে গিয়েছিয়াম।
যতটুকু মনে পড়ে ওখানে আনবিক বোমাবাহী বিমানটা রাখা ছিল, পাইলটদের সাক্ষাৎকারের ভিডিও দেখাচ্ছিল, তাদের কথা শুনে মনে হলো এটাকে তারা "মিশন ওয়েলডান" ভাবছে। অপরাধবোধের কোন চিহ্ন আমি দেখিনি।
স্যান্ডিয়া ন্যাশনাল ল্যাবের ইঞ্জিনিয়াররাও আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে (টেক্সাস টেক) একবার সেমিনার দিয়েছিলেন, নিউক্লিয়ার সেইফটি নিয়ে, ওনাদের মতে এরচেয়ে সেইফ প্রজেক্ট দুনিয়াতে আর নাই!!! আমার মন হচ্ছিল...তোমাদের জন্য হয়ত সেইফ কিন্তু যাদের মাথায় পড়বে...
তবে ফায়ার ড্রিল আসলেই কাজের, বহু বছর অফিসে ফায়ার ড্রিল হতো, গত বছর সত্যি সত্যি আগুন লেগেছিল (যদিও সিরিয়াস নয়), সবাই ড্রিলের মত সারিবদ্ধ হয়ে বাইরে বের হয়েছে।
লেখা যথারীতি ভালো লাগলো।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এই মন্তব্যটা করেছিল রবার্ট লুইস
এমিল,
আনবিক শক্তির ব্যাপারে ১০০% নিরাপদ বলে কিছু আছে বলে আমার জানা নেই। থ্রি-মাইল আইল্যান্ড, চেরনিয়ভিল এবং আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে অতীতে এবং ভবিষ্যতে যে ঘটবেনা তার গ্যারান্টি কে দেবে।
স্থানীয় পত্রিকাতে প্রকাশিত দুই সপ্তাহের আগের খবর দেখোঃ
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
ম্যানহ্যাটান প্রজেক্টকে কিন্তু ওদের অনেকেই আমেরিকার রাজনৈতিক উত্থানের ভিত্তি মনে করে। অনেকেই মনে করে এটা আমেরিকার একটা "প্রাইড"।
প্রজেক্টটা ছিল জার্মানির আগে আনবিক বোমা বানিয়ে আমেরিকাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য। পার্ল হারবার আক্রমন করসে বলেই নাকি আমেরিকা জাপানে বোমা ফেলসে। অনেকেই বলে আমরাতো বোমাগুলো টোকিয়োতে বা ওসাকাতেও ফেলতে পারতাম!!
যুদ্ধ জিনিসটাই খুব কুৎসিত।
লেখা বরাবরের মতই দারুন হইসে। ভাল থাকবেন।
তৌফিক হাসান,
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
আমাদেরকেও ফায়ারড্রিল করতে হয় বছরে একবার। কিন্তু পুরান ঢাকা এলাকায় যারা থাকে, তাদেরকে ফায়ারড্রিল করিয়েও লাভ নেই। আগুন লাগলে বেরিয়ে দাঁড়াবে কোথায়? ওখানে তো দাঁড়ানোর জায়গাটাও নেই।
শান্তস্নিগ্ধ মাটিতে আমরা নিজেদের রাখতে অপারগ, বোমা রেখে সেই অপারগতা ঢাকার অন্যায় করি।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গৌতম,
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
খুবই ইন্টারেস্টিং টপিক, এবং আপনি অনেক তথ্য দিলেন; ৫। আমার ম্যাড (Mutually Assured Destruction) নিয়ে লেখার ইচ্ছা আছে, দেখি।
সিরাত ,
খুব ভাল চিন্তা। যত এ ব্যাপারে লেখা লেখি হবে ততই মানুষের দৃষ্টি এদিকে আসার সম্ভাবনা। তবে দুনিয়াটা এখন অনেক 'ডাইলুইটেড' হয়ে গেছে। 'কোল্ড ওয়ার'-এর সময়ের 'ম্যাড' ধারনা এখন হয়তো ঠিক খাটবে না।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
লেখা চমৎকার হয়েছে।
আমাদের ডর্মে লোকে যখন-তখন রান্না করতে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলত আর জানুয়ারী মাসের মাঝরাত্তিরে ঘুম থেকে উঠেই ফতুয়া-পায়জামা-চটি অবস্থাতে কোনোরকমে গায়ে জ্যাকেটটা চাপিয়ে কাঁপতে কাঁপতে বাইরে বরফের মধ্যে এসে খাড়িয়ে থাকতে হত যতক্ষণ না সিকিউরিটি এসে অ্যালার্ম নেভায়। ফায়ার অ্যালার্মের গুষ্টি কিলাতাম তখন সবাই মনে মনে। কিন্তু হায়, এইরকম দাঁড়াতে গিয়েই একদিন থার্ড ফ্লোরের খেঁদি আর সেকেন্ড ফ্লোরের ঘেঁটুর পরিচয় হয়ে গেল... আর আমাদের ভাগ্যে শুধুই বরফ...
নিউ মেক্সিকোতে বোমা বানানো ছাড়াও বোধহয় নিউক্লিয়ার ওয়েইস্টের একটা বড় অংশ ডাম্প করা হয়- আম্রিকার 'ভাগাড়'।
তানভীর,
এই ষ্টেটে প্রতি রাতে হাজার হাজার শিশু না খেয়ে ঘুমাতে যায়। আমেরিকাতে আসার আগে বা এখানে আসার আগে এ কথা কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। আমাদের চেনা আমেরিকা ছিল টিভিতে দেখা "Dallas" ও "Bold and beautiful" ইত্যাদিতে আচ্ছন্ন। আমি প্রথম আমেরিকাতে আসি প্রায় ৩০ বছর আগে - তখনো কেবল বড় শহরের ঝলক দেখে গেছি। এখন দেখার সুযোগ হচ্ছে সত্যিকার আমেরিকা। নীচে একটা লিঙ্ক দিলাম, সময় পেলে ঘুরে দেখতে পার।
আমেরিকাতে ক্ষুধা
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
লেখা যথারীতি ভাল লেগেছে। অনেক কিছু জানলাম নতুন করে।
সাইফ ভাই, আমেরিকাতে ক্ষুধা এই লিংকটা কাজ করছে না।
সত্যান্বেষী
সত্যান্বেষী,
জানিনা কেন লিঙ্কটা তোমার ওখানে কাজ করলো না। আর একবার দিলাম এবং ২০০ পাতার উপরের সম্পূর্ণ রিপোর্টের pdf ফাইলের লিঙ্কও দিলাম।
আমেরিকাতে ক্ষুধা
Complete Report on Hunger in America
by: Mathematica Policy Research
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
লেখা যথারীতি ভাল লেগেছে। অনেক কিছু জানলাম নতুন করে।
সাইফ ভাই, আমেরিকাতে ক্ষুধা এই লিংকটা কাজ করছে না।
সত্যান্বেষী
এক হিমশীতল জানুয়ারির রাতে আমার প্রথম ফায়ার ড্রিলের আপাত বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার কথা আমার কলেজ রুমমেটকে শোনানোর সময় এই তাক লাগানো গল্পটা তার মুখে শুনেছিলাম। ঝিনি তখন সাবস্টিটিউট টিচার দিল্লির একটি স্কুলে, আ্যানুয়াল টেস্ট চলছে, ও ক্লাস ওয়ান-এ গার্ড দিচ্ছে, হঠাৎ একজন দারোয়ান দৌড়ে এসে বলে গেল "ম্যাডামজি একটু সাবধানে থাকবেন, বোম্ব থ্রেট এসেছে, যে কোন সময়ে ছাত্রদের নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে।" আমার রুমমেট শুনে ভয়ে আকুল হয়ে বললো এখন-ই নয় কেন? এতগুলো শিশু এখানে? শুনে দারোয়ান জিভ বের করে বললে না না তাই কি হয়, আগে তো বোমা পাওয়া যাক। হেড-ম্যাডাম বলেছেন "সবসে পহলে টেস্ট, ফির সব কুছ"! ঝিনি বলেছিল অতো দীর্ঘ ১ ঘন্টা সে কখনো কাটায় নি আগে। আর ঘোর নাস্তিক হওয়া সত্বেও সেদিন সে এক আধবার "হেই বাবা নিজামুদ্দীন, হে সি আর পার্কের মা কালী রক্ষে কোরো মাগো" বলেছিল। শেষ অবধি অবশ্য সেদিন কোন বোমা পাওয়া যায় নি। কে যানে হয়তো নিজামুদ্দীন আর মা কালী-ই বাঁচিয়েছিলেন সেদিন!
ফিরে- এইমাত্র আমার এই লেখাটা দেখে ঝিনি জানিয়েছে, এখন আর সে দিন নেই। বোমার "ব" শুনলে সবাই এমন উর্ধশ্বাসে দৌড়োয় যে স্ট্যামপিড হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
হরফ,
অনেক ধন্যবাদ এই আকর্ষনীয় অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করার জন্যে। একটা প্রশ্ন - মুম্বাই ঘটনার পরই কি সাধারণের মনে বোমা আতক্ষ বেড়ে গেছে?
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
ঠিক-ই বলেছেন আপনি। ২৬/১১-র পর থেকেই ভারতে বোমাতঙ্ক বেড়ে গেছে অনেক গুণ। গত বছর কলকাতায় দেখেছি, শপিং মল, বইয়ের দোকান (কলেজ স্ট্রীট না, "আধুনিক" কেতাদুরস্ত দোকান), মিউজিক শপ, পূজো প্যান্ডেল, মাল্টিপ্লেক্স সিনেমাহল প্রায় সর্বত্র স্নিফার ডগ মজুদ এবং রীতিমত ভালো করে ব্যাগ-চেক করা হচ্ছে, জল বা অন্য তরলের বোতল বিসর্জন দেওয়া বাধ্যতামূলক। বেবিফুড, ডায়পার কিচ্ছু বাদ পড়ছে না চেকিঙের আওতায়।
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
রবিন,
অনেক ধন্যবাদ।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
বরাবরের মতই এক টানে পড়ে গেলাম।
মানব জাতির ধংশের জন্য কত আয়োজন! হয়ত প্রকৃতিকে দেখিয়ে দেয়া যে মানুষই শ্রেষ্ঠ জাতি নিজেকে সমুলে নির্মুলের জন্য।
অনন্ত
আচ্ছা এটা কি হতে পারে যে আপনার বাড়ির নিচ দিয়েই চলে গেছে আন্ডারগ্রাউন্ড ল্যাবের বড় বড় টানেল! তাহলে তো সর্বনাশ!
লেখায়
বাউলিয়ানা,
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
না কোনো তফাত হবেনা!
তবে এমন এটম বোমার কারখানার আশেপাশে বাড়িতে বাস করতে হলে রাতে শুধু আপনার দেয়া হিরোশিমার ছবি স্বপ্নে দেখব! সেটাই সমস্যা।
তুমুল তু্ষারপাত, হোটেলে ঘুমন্ত আমি আর ফায়ারএলার্ম এই তিনটির বন্ধুত্ব বেশ পুরাতন। মাঝরাতে পায়জামার ওপরে জ্যাকেট চাপিয়ে হোটেলের পার্কিং লটের হাটু-তুষারে দাঁড়িয়ে হিহি করে কাঁপছি - এরকম ঘটেছে চারবার। প্রতিবারই ছিল ফলস এলার্ম।
---
৬০-৭০ দশকের পাল্টাপাল্টি পারমানবিক পরীক্ষানিরীক্ষাকে তখনকার মানুষ দেখতো আসন্ন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি হিসাবে। ক্রমে আমরা জানতে পারছি তখন যেসব ঘটনাকে সুনিয়ন্ত্রিত সামরিক পরীক্ষানিরীক্ষা হিসাবে গণমাধ্যমে বলা হচ্ছিল, সেগুলোর কয়েকটি আসলে ছিল বেসামরিক দুর্ঘটনা মাত্র। (১৯৬১ আইডাহো ফলস, ১৯৮৫ হাইলব্রন, জার্মানী ইত্যাদি)। এসব ক্ষেত্রে কৌশলগত গুরুত্বের তকমা চাপিয়ে সরকার ও সামরিক বাহিনীর পেছনে লুকিয়ে পড়েছিল বেসামরিক কোম্পানি।
নিজেদের নিয়ে না হোক অন্যের পারমানবিক ক্ষমতাকে বাড়িয়ে বলার নজির আমেরিকার আছে। ঠান্ডা যুদ্ধের পরে দেখা গেল রাশিয়া আমেরিকা দুজনই রাশিয়ার পারমানবিক ক্ষমতাকে বাড়িয়ে বলেছে। এই বাড়িয়ে বলাতে একতরফাভাবে লাভবান হয়েছে আমেরিকার বেসরকারি অস্ত্র ও পারমানবিক শিল্প।
আবার 'লাখটাকার-কাউয়ার-ছাউ' কেনার অভ্যাসও তো আমেরিকার আছে। সামরিক খাতে ইউরোপের মিসাইল প্রকল্পের কথা বলা যায়, যেখানে আমেরিকান পাবলিকের (যদিও বলছে ন্যাটো'র) বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা খরচ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনো পোল্যান্ড এরমাটিতে কোন ইস্পাত এসে পড়েনি। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রনালয়টির কথা বলা যায়। জয়েন্ট স্ট্রইক যুদ্ধবিমানের কথা বলা যায়। স্টেলথ প্রযুক্তির কথা বলা যায়। রেগানের তারকাযুদ্ধের প্রস্তুতির কথা বলা যায়। কত বিলিয়ন টাকা খরচ হচ্ছে, আর বিভিন্ন সামরিক ও আন্তর্জাতিক কৌশল ফোরামের বাঁশে কতগুলো দাগ পড়ছে সেটা আমেরিকার পারমানবিক শক্তির পরিপূর্ন হিসাবনিকাশ নাও দিতে পারে।
এসব কারনে আমার ভাবতে ইচ্ছা করে যে হোয়াইট হাউজ ও আমেরিকা-কানাডীয় ইউরেনিয়াম শিল্পপতিদের সুতোয় টানা আন্তর্জাতি পারমানবিক সংস্থার হিসাবে আমেরিকার যে পরিমান পারমানবিক অস্ত্রশস্ত্রের হিসাবে আছে, সেগুলো খাতায় আছে কিন্তু গোয়ালে নেই। আমেরিকার অর্থনৈতিক ও সামরিক উত্তাপ ঠান্ডা হয়ে আসার পর একদিন যখন ভারতীয় মেরিন ও মেক্সিকান গেরিলারা নিউ মেক্সিকোর এসব উঁচু উঁচু কংক্রীট আর কাটাতারের বেড়ার টপকিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়বে, তখন দেখতে পাবে যে কাতারে কাতারে সাদা এপ্রোন পরা পি এইচ ডি কফি খেয়ে আর লুডু খেলে দুপুর বিকেল পার করে দিচ্ছে।
তবে আমার সব ভাবনাচিন্তা যে বাস্তব সেটা হলফ করে বলতে পারছিনা।
দুর্দান্ত,
সব সময় দেখি 'দুর্দান্ত' সব তোমার চিন্তা-ভাবনা - এটা আমার ভাল লাগে।
আমি কিন্তু একদিন স্যান্ডিয়া ল্যাবের ভিতরে ঢুকেছিলাম। তখন আমি 'কোয়ালিটি এসুরেন্স ম্যানেজার' হিসাবে যে কোম্পানীতে কাজ করতাম সেখানকার অনেকে কন্ট্রাক্টে কাজ করতো এই ল্যাবে। এক বার ঠিক হলো ঐ ল্যাবের অডিটরিয়ামে কোম্পানীর সব কর্মচারীকে নিয়ে একটা মিটিং হবে। অন্য ষ্টেট থেকে আমাদের এক কোম্পানী ডিরেক্টর এসেছিল। সে অফার দিল তার গাড়ীতে কেউ ঐ মিটিং-এ যাবার জন্যে রাইড (লিফট) চায় কিনা। আমি এবং আর একজন আমাদের গাড়ীর তেল বাঁচাবার জন্যে ডিরেক্টরের সাথে রাইড নিলাম। তার নিজের স্পেশাল সিকুউরিটি আইডি ছাড়াও গাড়ীতে স্পেশাল পাস লাগানো ছিল। ফলে গেটে থামাবার পর সেগুলি দেখে আমাদেরকে ভিতরে যাবার অনুমতি দিল।
রিসেপশন রুমে আমাদের নামের তালিকা আগেই পাঠানো হয়েছিল। সেখানকার একটা ফরমে সাক্ষর দিয়ে ভিতরে ঢোকার কথা। সাক্ষরের সময় দেখলাম সেখানে একটা ঘর রয়েছে যাতে শুধু একটা টিক দিতে হবে এই বলে যে আমি ইঊএস সিটিজেন। তখনো আমি সিটিজেন হইনি, তাই জানালাম - আমিতো এখনো 'এলিয়েন'। বাধ্য হয়ে ডিরেক্টরের কাছ থেকে গাড়ীর চাবি এনে আমাকে দিল অফিসে ফিরে যাবার জন্যে। ফেরার পথে স্পেশাল পাস লাগানো গাড়ীতে ভিতরে একটা চক্কর দিয়ে অন্য গেইট থেকে বেরিয়ে এলাম।
ওহ, তখন অবশ্য বাইরে থেকে কাউকে লুডু খেলতে দেখিনি।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
খাইছে, আমি তো জানতাম ম্যানহাটন প্রজেক্ট ছিলো ওক রিজ, টেনেসিতে। বেহুদা ভাব নিছি অ্যাদ্দিন। উইকিতে দেখলাম, ইউরেনিয়াম তৈরি করা হয়েছে ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবে, আর লস আলামোস ছিলো আসলে অস্ত্র কারখানা। অনেকেই টেনেসি নদীতে শখ করে মাছ ধরে কিন্তু খায় না তেজস্ক্রিয়তার ভয়ে
।
এইসব হাই সিকিউরিটি হইলো লোক দেখানো, বজ্র আটুনি ফস্কা গেরো। বাঙ্গালী সিদেল চোরের জন্য ২ মিনিটের মামলা।
ঘটনা সত্য! এই যে আমি কফি খেতে খেতে সচলায়তনে মন্তব্য করে টাইম পাস করতেছি। লুডু খেলার পার্টনার নাই। ল্যাবে সব্বাই সাদা এপ্রোন পরে ঘুরে এই ধারণাটা মনে টিভি ক্রাইম সিরিয়াল প্রসূত।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
লেখনীতে মুগ্ধ, লেখায় ভীত হলাম। এই সভ্যতা (যদিও নিজেদের সভ্য দাবী করার দুঃসাহস নেই) ধ্বংসের জন্য মানুষই দায়ী।
কামরুল হাসান রাঙা,
আসলেই ভীত হবার অনেক কারন আছে। নীচে সাম্প্রতিক খবরের দু'টি লিঙ্ক দিলাম আমার কোন মন্তব্য ছাড়াইঃ
৫০ টি আনবিক মিসাইলের সাথে এক ঘন্টার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
নিউক্লিয়ার কোড হারিয়ে ফেলেছিল প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টন
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
হুম আজকে লেখা পড়তে এসে মন খারাপ বেশি হইল, এগুলো নিয়ে ভাবতে কষ্ট লাগে, এখনো ভাবতে ভালো লাগে আমাদের পৃথিবীটা অনেক সুন্দর, আমরা মানুষের আসলেই অনেক বিচক্ষণ, বুদ্ধিমান জীব!
যাই হোক, বাংলাদেশ আসলেই অনেক আরামের জায়গা, খালি স্কুলে স্কুলে ফায়ার ড্রিল শুরু করানোটা জরুরি মনে হয়। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, আর পুরান ঢাকা নিয়ে নতুন করে আর কী বলব? আগেও বলেছি, বারবারই বলি ঢাকাকে বাঁচাতে ইমিডিয়েট ডিসেন্ট্রালাইজেশন শুরু করতে হবে! তবে আমি বললাম আর হয়ে গেল তা তো না। যাই হোক, স্কুলে ফায়ার ড্রিল করানো খুব দরকার। ভূমিকম্প হলে, আগুন লাগলে কী করতে হয় এগুলো শেখানো বাধ্যতামূলক করা উচিত। আমরা ছোটতে রেড ক্রিসেন্ট/ স্কাউট/ গার্ল গাইডসের ট্রেইনিং করতাম রেগুলার বেসিসে, কিন্তু সব ছেলেমেয়েতো এগুলোতে জড়িত থাকে না।
মনটা আসলেই আরো খারাপ হত, খালি কৌস্তুভদার খেঁদি আর ঘেঁটুর কথা পড়বার পরে মনে হল, নাহ্! দুনিয়াটা এখনো ভালোই, এখনো চান্স আছে আমাদের।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
চান্স? হায়, কতরাত্তির বরফের মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েও আমাদেরই কোনো চান্স হল না, আর আপনারা ফাঁকতালে দইটা মেরে দিবেন? কোলন কান্না
আমি ভেবেছিলুম, হয় আপনি সমব্যথী নয় কোনো শালি আছে কিনা এই প্রশ্নটা করার উপযুক্ত। কিন্তু আপনি যে আপু সেইটা দুষ্ট বালিকার পোস্টে পড়ে বড়ই মনোকষ্টে আছি... কোলন বিষাদ
আহা! হয় আপনি এখনো ঠিক খেঁদির দেখা পান নাই, নাইলে আপনার এখনো ঘেঁটু হয়ে ওঠা হয় নাই। চিন্তার কী আছে, ইশটিল টাইম হ্যাস!
আর আমি সমব্যথী নই তা কে বলেছে?
আমি অবশ্য এই খেঁদি-ঘেঁটু প্রকল্প যে আমার মনে বিশ্ব-অস্থিরতার মাঝেও অনেক শান্তির শুভাগমন বার্তা এখনো পাওয়া যায় এমন আশ্বস্ততার কথা মাথায় এসছে এমনটা মিন করেছিলাম, অনেস্ট!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
প্রকল্প? হ্যাঁ, দুনিয়ার একেলা ঘেঁটুদের জন্য খেঁদি আর খেঁদিদের জন্য ঘেঁটু খুঁজে বার করার প্রকল্প চালু করতে হবে অচিরেই... ফায়ার অ্যালার্মের সাকসেস রেট তো খুব বেশি না!
সমব্যথী? প্রমাণ দ্যান...
বাংলাদেশে ইদানিং অনেক প্রতিষ্ঠানই ফায়ার ড্রিল করে (তবে এটা জানি না গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রির মত একটা ভালনারেবল সেক্টরে আদৌ কেউ ফায়ার ড্রিল করে কিনা)। অনুরোধ করলে সরকারের ‘ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স’ ডিপার্টমেন্ট বেশ ভাল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। তবে সমস্যা হল গায়ে গায়ে লেগে থাকা সূউচ্চ অফিস ভাবনের সামনে যেখানে ফুটপাথই প্রায় অনুপস্থিত – সেখানে অ্যাসেম্বলি পয়েন্ট কোথায় হবে?
ইদানিং খুব নাম করা অনেক বড় একটা প্রতিষ্ঠানে ‘এই সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ে কিছু বলার জন্য’ গিয়ে একটা মজার জিনিস দেখলাম। চমৎকার অ্যালার্ম ব্যবস্থা, সুন্দর ভাবে এক্সিট রুট মার্ক করা আছে, অ্যাসেম্বলি পয়েন্টেরও পর্যাপ্ত জায়গা আছে, এমন কি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আগুন নেভানোর কিছু কর্মী এবং সরঞ্জ্যামও আছে। মাঝে মাঝে এলার্ম বাজানো হয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আগুন নেভানোর কর্মীর প্রশিক্ষণের জন্য। শুধু কর্মকর্তা/কর্মচারীরা জানে না এলার্ম বাজলে কী করতে হবে। (আমি প্রশ্ন করায় উত্তর ছিল, বুঝি আরকি ‘তাদের জন্য’ ড্রিলিং হচ্ছে। আমরা কী করব?)। এলার্ম বাজলে বাইরে বের হয়ে আসা এবং অ্যাসেম্বলি পয়েন্টে একত্রে হওয়ার বিষয়টা অনুপস্থিত এবং কেউ জানে না।
WMD প্রশ্নে দুর্দান্তের খাতায় এবং গোয়ালের ফারাকের ধারণার ব্যাপারটার সাথে আমিও একমত। এবং আরও একমত এইসবে WMD'র আশপাশে এবং ‘উন্নত’ বিশ্বে যারা আছেন, তাদের তো ভয়ের কিছু নাই। এগুলোর টার্গেট তো আমরা তিন নম্বর ওয়ার্ল্ডের লোকজন (স্টেটিস্টিক্সটা দেখেন – ২০০১ এর পর তথাকথিত টেরোরিজমে ইউএসএ তে কত এবং খোদ পাকিস্থানে কত লোক মারা গেছে)।
আমাদের দেশে অ্যাসেম্বেলি পয়েন্টগুলো আবার উল্টা আরও বাজে ট্র্যাপ হয়ে যায় কিনা সেটা চিন্তা করে ভয় হয়।
আগুন নির্বাপন কর্মচারী থাকা আর তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণটাও জরুরি। এই কথাটা মনে করিয়ে দেওয়ায় ধন্যবাদ। ছাত্র-ছাত্রীদের ফায়ার ড্রিলের পাশাপাশি, স্কুল-কলেজে কর্মচারিদেরকেও এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ঐখানে একটা বোমা ফাটাইতে পারলে কী হইবো?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এমন কি-ই আর হবে - সচলে আর আমার লেখা পড়তে হবে না।
সাইফ শহীদ
সাইফ শহীদ
আমরা তো জানি, অ্যাটম মানে পরমাণু এবং মলিকিউল মানে অণু। এটি তো অ্যাটম বোম, তাহলে এটি তো আনবিক না হয়ে পারমাণবিক বোমা হওয়ার কথা, আর এর নাম যদি মলিকিউলার বোম হতো, তাহলে আনবিক বোমা হওয়ার কথা ছিল । তাই নয় কি ? লেখকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নতুন মন্তব্য করুন