প্রথম জিয়াউর রহমানের নাম শুনলাম ২৭ শে মার্চ, ১৯৭১। সেদিন বিকেলে রেডিওর নব ঘোরাতে ঘোরাতে হঠাৎ করে শুনলাম কোন এক মেজর জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করে নিজেকে অস্থায়ী সরকার প্রধান ঘোষনা করছে। তার ঘোষনা ছিল ইংরেজীতে এবং উচ্চারণ ছিলো অনেকটা অবাঙ্গালীদের মতো। ঘোষনা খুব পরিস্কার শুনতে পেলাম যেহেতু কালুরঘাটের রেডিও ষ্টেশন আমাদের বাসা থেকে মাত্র চার মাইল দুরত্ত্বের মধ্যে ছিল। সাধারন ঢাকা ও চট্টগ্রাম রেডিও ষ্টেশন তখন বন্ধ ছিল এবং আমি রেডিওর নব ঘুরিয়ে যে কোন ষ্টেশন ধরে খবর শোনার চেষ্টা করছিলাম – তখনই শুনলাম জিয়ার এই ঘোষনা। যতদূর মনে পরে প্রথম ঘোষনাটা ছিল এই রূপ - "I, Major Ziaur Rahman, do hereby declare independence of Bangladesh"
এর পরের ঘোষনা কিছুটা পরিবর্তিত হল। এবার শুনলাম - "I, Major Ziaur Rahman, on behalf of our great national leader, the supreme commander of Bangladesh, Sheikh Mujibur Rahman, do hereby proclain the independence of Bangladesh." ঘোষনা ইংরেজী এবং বাংলাতে প্রচার হল বেশ কয়েক বার করে।
আমি তখন চট্টগ্রামের কালুরঘাটে ইস্পাহানীদের 'চিটাগং জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানী লিমিটেড'-এ কাজ করছি। আমাদের ৩-তলার কোয়ার্টার থেকে পরিস্কার দেখা যেতো কর্ণফুলী নদীর উপরে কালুরঘাট ব্রিজ। শহর থেকে চট্টগ্রামের দক্ষিণ অংশের সাথে যোগাযোগের এক মাত্র রাস্তাটি ছিলো এই ব্রিজের উপর। সাধারণ সময়ে এই মিলটি দিবা-রাত্রি ৩ শিফটে ২৪ ঘন্টা একটানা চলতো। প্রায় ৮ হাজার কর্মচারীর অধিকাংশ তখন মিল ছেড়ে চলে গেছে। আমি নতুন প্রকৌশলী হিসাবে সবে এই মিলে চাকরী পেয়ে মিলের উইভিং সেকশানে যোগ দিয়েছি। সবে বিয়ে করেছি তখন মাত্র মাস খানেক আগে। এই সময়টা হবার কথা ছিল আমাদের জীবনের সেরা সময়। হয়েছিল - তবে খুবই ক্ষণস্থায়ী।
এর পর থেকে সব সময় রেডিও অন করে রাখতাম বিভিন্ন খবর শোনার জন্যে। ৩০ শে মার্চ বিকালে দেখলাম দুটি এয়ার ফোর্সের প্লেন ডাইভ মেরে আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। পরে দেখলাম বিমানের আক্রমনে কালুরঘাটের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র স্তব্ধ হয়ে গেল। [ঐ সময়ের কিছু ঘটনার বিবরন এই লিঙ্কে দেওয়া আছে - "ভিন্ন জালনা দিয়ে দেখা"
জিয়ার সাথে প্রথম চাক্ষুস দেখা হল যখন তিনি প্রেসিডেন্ট। দিনটি ছিল কোন এক উৎসবের দিন - খুব সম্ভবত বিজয় দিবস। বঙ্গভবনের অনুষ্ঠানে যোগ দেবার জন্যে একটা কার্ড পেলাম। আমার পরিচিত প্রেসিডেন্টের গার্ড রেজিমেন্টের এক অফিসার কার্ডটি যোগাড় করেছিল আমার জন্যে। বঙ্গভবনের ভিতরে কখন ঢুকিনি তাই আগ্রহ ছিল, তাছাড়া যখন জানলাম ভাল খাবারের ব্যবস্থা আছে তখন আগ্রহটা বাড়লো। আমি তখন প্লেটে কিছু খাবার তুলে নিচ্ছি ঐ সময় হল ঘরে ঢুকলেন জিয়া এবং সবার সাথে হাত মিলাতে লাগলেন। আমি তাড়াতাড়ি রুমাল দিয়ে আমার হাত পরিস্কার করে নিলাম। আমার সাথে আমার স্ত্রী মমতাজ গিয়েছিল। সে তখন কম বয়েসী এবং সুন্দরী। দেখলাম অনেকেই প্রেসিডেন্টের দিকে না তাকিয়ে আড়চোখে মমতাজকে দেখছে।
জিয়াকে কাছ থেকে দেখলাম। স্মার্ট চেহারা এবং তেমনি স্মার্ট জামা-কাপড় পরনে তার। লম্বায় জিয়া আমার থেকে বেশ ছোটই হবেন। যদিও বয়েসে আমার থেকে অন্তত দশ বছর বড় তিনি কিন্তু দেখে আমার থেকে ছোট মনে হয়। তার সাথে তেমন কোন কথা হয়নি সেদিন।
আমার ফৌজদারহাটের বন্ধু সৈয়দ আমিন (এক্স-সিএসপি) ছিল জিয়ার পি-এস। তার মুখে জিয়ার অনেক প্রশংসা শুনতাম। বিশেষ করে জিয়ার সারা দেশে খাল কাটা এবং রাস্তার দুই পাশের জমিতে গাছ লাগানো, ইত্যাদি এক নতুন উন্নতির ভাবধারা এনে দিয়েছিল দেশে। জিয়া নিজে ব্যক্তিগত ভাবে যে কোন দূর্নীতির বাইরে ছিলেন, তবে কিছু কিছু দূর্নীতি করা লোকদেরকে তাদের চরিত্র জেনেও কাছে রেখেছিলেন। এর পর যখন তিনি প্রথমে 'জাগদল' ও পরে 'বিএনপি' করলেন তখন তার পাশে এই ধরনের লোকের সংখ্যা বাড়তে থাকলো।
আমাদের এক বন্ধু তখন ক্যান্সারে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে পিজি হাসপাতালে অবস্থান করছে। দেশের কথা চিন্তা করে সে কয়েকটা পয়েন্ট লিখে আমিনের হাতে দিয়েছিল জিয়ার কাছে পৌছে দেবার জন্যে। আমিনের মুখে শোনা - হেলিকপ্টারে করে এমনি এক খাল কাটার অনুষ্ঠানে যাবার সময় জিয়ার হাতে তুলে দিয়েছিল ঐ লেখা পয়েন্টগুলি। জিয়া নাকি এক এক করে সে গুলি মনযোগ দিয়ে পড়েছিলেন, বিশেষ করে যখন জেনেছিলেন যে মৃত্যুপথযাত্রী এক মানুষের দেশচিন্তার প্রকাশ সেগুলি।
জিয়ার মৃত্যুর মাস ছ'য়েক আগে তাকে আরও কাছে থেকে দেখার ও কথা বলার সুযোগ হল। 'ওল্ড ফৌজিয়ান এসোসিয়েশন'-এর এক অনুষ্ঠানে আসতে রাজী হলেন তিনি। এর আগে ফৌজদারহাটের রি-ইউনিয়নে চেষ্টা করেও তাকে আনতে পারিনি তার সময়ের স্বল্পতার কারনে। জিয়ার বদলে তখন তার 'ডান হাত', 'শিশু ভাই' (মেজর জেনারেল নুরুল ইসলাম) এসেছিলেন। এবার জিয়া আসতে রাজী হওয়ায় আমরা যেমন অবাক হলাম তেমনি খুশীও হলাম। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশনে আয়োজন করলাম আমাদের এই সমাবেশের। অভ্যর্থনা করে তাকে নিয়ে সিড়ি দিয়ে যখন ডায়াসের দিকে যাচ্ছি তখন জিজ্ঞাসা করলেনঃ
-'আপনাদের এখন সমস্যা কি?'
- আমাদের কোন সমস্যা নেই স্যার। - বললাম।
দেশের প্রেসিডেন্টকে এতটা কাছে পেয়ে মন খুলে কথা বলার সুযোগটা হারাতে চাইলাম না। স্বাগত ভাষনে আমি প্রথমে তাকে আমাদের মাঝে পেয়ে খুব খুশী হয়েছি ইত্যাদি বললাম। পরে আরও বললাম - 'ক্যাডেট কলেজে আমাদের জীবনের সেরা ৬ বছর ব্যয় করে আমরা শিখি শৃংখলা এবং সৎ ভাবে থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তরে আমাদের সাধ্য অনুসারে নেতৃত্ব দিতে। কিন্তু বর্তমান সমাজের যে অবস্থা তাতে পরিবর্তন না আনতে পারলে আমরা অনেকটাই 'মিসফিট' হয়ে যাচ্ছি।'
এর চাইতে আর স্পষ্ট করে কি ভাবে বলি দেশের প্রেসিডেন্টকে দুর্নিতি আর অপচয় বন্ধ করার কথা? জিয়া সেদিন বেশ হালকা মেজাজে এবং খুশী খুশী ভাবে কথা বলছিলেন। প্রধান অতিথীর ভাষনে তিনি বললেন -"আমাকে সব জায়গায় ডাকা হয় বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্যে। আমি যখন প্রথম জিজ্ঞাসা করলাম আপনাদের সমস্যা কি, তখন বললেন কোন সমস্যা নেই। এখন বলছেন আপনারা এই সমাজে নিজেদেরকে 'মিসফিট' মনে করছেন। এর জন্যে সমাজকে বদলাবার বদলে নিজেদেরকে বদলে 'ফিট' হবার চেষ্টা করুন।"
বৃথা গেল আমার প্রচেষ্ঠা। তবে কি আমি ঠিক মতো গুছিয়ে বলতে পারিনি যা বলতে চেয়েছিলাম, নাকি তিনিই ঠিক বলেছিলেন যে আমদেরকেই বদলাতে হবে?
সেদিন আর একটা জিনিস দেখে করে বেশ অবাক হয়েছিলাম। দেখলাম তার ক্যাবিনেটের মন্ত্রীদের সাথে কি ভাবে ব্যবহার করেন তিনি। আমাদের ঐ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টের সাথে কয়েকজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী এসেছিলেন অতিথি হিসাবে। তার মধ্যে ধর্ম মন্ত্রীও ছিলেন (এখন নাম মনে পড়ছে না)। জিয়া সেদিন তার বতৃতাতে ইসলাম ধর্মে কি ভাবে নারীদের সাথে ব্যবহার করতে হবে তার উপর বেশ কিছু বললেন। তারপর সবার উদ্দেশ্যে বললেন - "এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে চান আপনারা?"
সামনের সাড়িতে বসা ধর্ম মন্ত্রী হাত উঁচু করলেন।
- আপনি বলতে চান? আসেন।
যখন মন্ত্রী স্টেজে উঠে আসছেন তখন জিয়া আমাকে বললেন - "বাঙ্গালীরা কথা বলার সূযোগ কেউ ছাড়তে চায় না।"
ছয় মাস পরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে তার নিজের সেনা বাহিনীর সদস্যদের হাতে মারা গেলেন তিনি। এভাবে মৃত্যু সব সময় খুব করুণ। যেমন করুণ ছিল জিয়ার শাষন কালে কর্নেল তাহের থেকে শুরু করে এক বড় সংখ্যক সেনা সদস্যদের কোর্ট-মার্শাল-এ বিচার করে মৃত্যুদন্ড দেওয়া।
মাত্র ৪৫ বছর বয়েসে মারা গেলেন জিয়া। বেঁচে থাকলে এখন তার বয়েস ৭৫ বছর হত। কি করতেন তিনি এখন? তিনি কি এই বয়েসেও গাছ লাগানো আর খাল কাটায় উৎসাহ দেখাতেন?
জিয়াউর রহমান সম্পর্কিত প্রসঙ্গে না যাই।
আমার সাথে আমার স্ত্রী মমতাজ গিয়েছিল। সে তখন কম বয়েসী এবং সুন্দরী। দেখলাম অনেকেই প্রেসিডেন্টের দিকে না তাকিয়ে আড়চোখে মমতাজকে দেখছে।
আপনার লেখাটায় এই লাইনগুলো কেন এসেছে একটু বলবেন? আমার কাছে এই লাইনগুলো নোংরা লেগেছে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমার কাছে এই লাইনগুলো নোংরা লেগেছে।
আমার কাছেও কুৎসিৎ আর অরুচিকর লেগেছিল; কিন্তু মন্তব্যে লিখতে পারিনি এই আশংকায় যে, লেখকের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মন্তব্য সচলায়তন এলাউ নাও করতে পারে। তবে আপনার মন্তব্যের সুযোগে আমার খারাপ লাগাও জানিয়ে গেলাম।
সহমত।
----------------------------------------------------------------------------------------------
একজন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীকে সৎ বলা হয় কিভাবে? তাঁর সততা যদি কিছু থেকে থাকে সেটা পাকিদের জন্য ছিল। বাংলাদেশকে এই লোকটা নখ থেকে চুল পর্যন্ত অসৎ বানিয়ে দিয়ে গেছে।
জিয়াউর রহমানকে প্রশংসা করতে পারেন কেবল পাকিপন্থীরাই।
২। জিয়াউর রহমানের কাল নিয়ে গল্পকার উপন্যাসিক এবং চলচ্চিত্রকার আনোয়ার শাহাদাত ক্যানভাসারের গল্প নামে একটি গল্প লিখেছেন এবং সাঁজোয়া তলে মুরগা উপন্যাসে সার্কাস্টিকভাবে বর্ণনা করেছেন সেনাশাসন নিয়ে।
গল্পটি পড়ুন লিংক
৩। সাঁজোয়া তলে উপন্যাস থেকে পড়ুন--(পুরো উপন্যাসটি পড়ার লিংক)
প্র তিবারই সেই পাকিস্তান আমল থেকে যতবার মিলিটারি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে ততবারই অসংখ্য নাগরিকের প্রাণ দিতে হয়েছে, তা সেই প্রাণ কখনো সাধারণ মানুষের,কখনো রাজনৈতিক সচেতন মানুষের।
মতিঝিলের রাস্তার দুধারের মানু ষগুলোর চেহারায় ও প্র কাশ ভঙ্গীতে এক আতঙ্ক ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে, তবে কি সব নাগরিকই এখন অবিশ্বাসীর দ্বন্দ্বে ভুগছে? কিন্তুএমরান আলমগীর এই আতঙ্কিত মানু ষগুলোকেও বিশ্বাস করতে পারছে না। মনে হয় তারা এ মুহূর্তে কেবল প্রাণ ভীত আতঙ্ক ও অবিশ্বাস বহন করছে কিন্তু কাল তাদের বিশ্বাস আবার তারা প্র তিস্থাপন করবে হয়তো কোনো জেনারেলের প্রতি যখন কিনা সবগুলো মিলিটারি পতাকা এবং কঁাধে বুকে রকমারি ব্যাজ কি তারকা সমেত দাবিদার ‘উদ্ধার কর্তা তার যাবতীয় কর্ম দফা পাঠ শেষ করবেন টিভি রেডিওতে। যার বক্তৃ তা কিনা এখন লিখছেন জনা দু য়েক, যার একজন ভগ্ন তর ‘প্রতিক্রিয়াশিল বাম রাজনীতিবিদ’ অপরজনও ওই একই রাজনৈতিক পরিচয়ের দাবিদার সাংবাদিক, লিখছেন হয়ে
তা জেনারেলের বক্তৃ তা। তারা বক্তৃ তার শুরুতে বিসমিল্লা বলেই শুরু করাতে চান, হোক তারা সাম্যবাদে বিশ্বাস করে, হোক তারা কার্ল মার্ক্সে র দাড়ির প্র তি শ্র দ্ধাশীল, কিন্তুতারা যখন দেখেন যে মিলিটারি জেনারেলরা ক্ষমতায় আসছে তখন তারা এই ভূখণ্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানু ষের ধর্মীয় সেন্টিমেন্টকে প্রাধান্য দিতে ভালবাসেন। অতএব তারা দু’জন বাম তাত্ত্বি ক যারা জেনারেলের বক্তৃ তা হয়তো লিখছেন, তারা শুরুতেই বিসমিল্হলা বলান জেনারেলকে দিয়ে, তারপর ধর্ম রক্ষা, তারপর বহিঃ
শত্রু দমন, তারপর বহিঃ শত্রুদের চর অনু চরদের দমন, তারপর সমৃ দ্ধ দেশ উপহারের যাবতীয় কর্ম সূচীগুলো একের পর এক লিখতে থাকেন দফার নাম করে। যেমন দফা নম্ব র এক, দফা নম্ব র দু ই, দফা নম্ব র তিন, দফা নম্ব র চার এভাবে, দফার পেছনে দফা গেঁথে গেঁথে অনাগত জেনারেলের বক্তৃতা প্র স্তুত হতে থাকে সেই দু জনার হাতে, যাদের একজন আদি বাম দলের তাত্ত্বিক নেতা ও অপরজন ওরকমই আর এক বাম দলের অনুগত সাংবাদিক যে কিনা দৈনিক সংশহরের বিশেষ সম্পাদকের পদ অলংকৃত করে আছেন , ধরে নেয়া হচ্ছে সেখান থেকে মওদু দির সঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে কার্ল মার্ক্সের জন্য একটা মধ্যপন্থী ব্যবস্থা তারা করে এক নতুন তত্ত্বপ্রসব করবেন।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'
আশা করছি এরপর একে একে এরশাদ, গোলাম আজম ইত্যাদি প্রবাদ-পুরুষদের নিয়েও লিখবেন।
অন্য সবাই অনেক মন্তব্য করেছেন, যা বলার বলে দিয়েছেন; সেগুলোর সাথে সাথে এই মেজর জেনারেল নুরুল ইসলাম শিশু লোকটার জন্যেও একরাশ থুতু রেখে গেলাম। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের ক্রমান্বয়ে হত্যা করার পাশা খেলায় তুলনাহীন এই লোকটার নাম আসেনা, আফসোস।
মেজর জেনারেল নুরুল ইসলাম শিশু সম্পর্কে বিস্তারিত লেখেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লেখাটা যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই শুরু হয়েছে, এইখানে একটা বেশ পুরাতন কিন্তু খুব রেলেভ্যান্ট ওয়েল রিসার্চড পোস্টের লিংক দিয়ে যাওয়া দরকার মনে করছি। বাকিটা নিয়ে আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এই লেখা পড়তে এসে এই একটাই লাভ হল, চমৎকার লিঙ্কটার জন্য যাযাদিকে ধন্যবাদ। লেখা নিয়ে কিছু বলার নেই। পড়ে অবাক হয়েছি ।
'একজন পূর্নসচল যখন ছাগুটইপ পোস্ট দেয়, তখন মনে কী হয়?' - পর্ণসচলদের এমন স্ট্যটাস কখন আসবে?
জিয়া'র গাছ লাগানো আর খাল কাটার উৎসাহ নিয়ে লেখক উৎসাহ ভরে কথা বললেন, বাংলাদেশে ধর্মকে রাজনীতিতে নিয়ে আসা, ধর্মকে পলিটিকাল ডিসকোর্সের অংশ করে তোলা, ধর্মভিত্তিক, মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী দলগুলিকে রাজনীতি করার অনুমতি দেয়া, জামাত-ই-ইসলামীকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়া, শাহ্ আজিজের মতো মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী লোককে প্রধানমন্ত্রী বানানো --- এই সব ব্যাপারে জিয়ার উৎসাহ নিয়ে লেখক কিছু বললেন না?
আপনার আগের পোস্ট পড়ে মনে হয়েছিল আপনি অসুস্থ, চলে যাওয়ার জন্যে দিন গুনছেন এবং তার মাঝেই লেখা চালিয়া যাচ্ছেন। আশা করি আপনি খুব তাড়তাড়ি সুস্থ হয়ে উঠে এই লেখাগুলো সব আবার পড়ে দেখবেন। ব্যাক্তি হিসেবে ইচ্ছেমত লেখার অধিকার আপনার নিশ্চয়ই আছে। সেই অধিকার নীতিগত ভাবে সবারই প্রাপ্য। ইচ্ছেমত লেখার এই অধিকার যখন ব্যবহার করলেন, তখন সঠিক ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ এড়িয়ে যাওয়া কোন নীতিটার প্রকাশ হল!!!! আপনারা সৌভাগ্যবান কারণ বাংলাদেশের জন্ম হতে দেখেছেন। আমরা দূর্ভাগা, সেই সময়টা চোখে দেখিনি। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে আপনাদের প্রজন্ম তার থেকে অনেক বেশি দূর্ভাগা কারণ সেই সময়টা পার করে এসেও সত্য বিকৃতির মত্ততা ছাড়তে পারলেন না। আপনার দেয়া লিঙ্কটা পড়ে দেখার উতসাহ চলে গেছে এই পোস্ট পড়ার পর। আপনার আগের মাওলানা ভাসানি সংক্রান্ত পোস্টটা এবার অনেকের কাছেই অন্য একটা মেসেজ দিলেও আর অবাক হব না। খুবি অবাক হচ্ছি, এর আগে আর এক সচলের আওয়ামী চরিত্র-জামাতী চরিত্র পড়েও এত অবাক হইনি। কখন যে কোন মানুষের ভেতর থেকে কি বের হয়ে আসে
যাযাবর তোমাকে ধন্যবাদ লিঙ্কটার জন্যে, এই পোস্টে এসে এটাই যা পাওয়া গেল।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
কেন যেন মনে হইল অন্য কারো পোষ্ট পড়লাম, আপনার একাউন্ট হ্যাক কইরা জামাতি বাহিনীর কেউ এই লেখা পুষ্টাইলো নাকি?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
আপনার আগের লেখাতেই বলতে চাচ্ছিলাম কথাটা, কিন্তু সময় করতে না করতেই এটা দিয়ে দিলেন। এখন বলি, গেট ওয়েল সুন। যদিও এই বয়েসের অসুখ সারাতে নিজের চেস্টার উপর আর কোন কিছু নেই। তবুও বাইরের সাহাজ্য নিতে হবে প্রয়োজন হলে। সুস্থ্য হয়ে সুস্থতার কথা লিখুন।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
১৯৭৫ এর ৩রা নভেম্বরের বিদ্রোহের সময় খালেদ মোশাররফের অনুগত সেনারা জিয়াকে বন্দী করার পর তার এক রুমের টেলিফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ভুলে যায়! সেই টেলিফোন দিয়ে জিয়া তাহেরকে ফোন করে বলে যে, তাহের আমাকে বাঁচাও। তাহের ঠিকই তাঁর অনুগত বিপ্লবী সৈন্যদের নিয়ে জিয়াকে উদ্ধার করেন। এবং সেই তাহেরকেই জিয়া পরে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলায় নিজের ক্ষমতা নিষ্কন্টক করতে। তাই জিয়াউর রহমানের নাম দেখলেই আমার এমন একজন কৃতঘ্ন মানুষের কথা মনে হয় যে কিনা ক্ষমতার জন্য নিজের জীবন রক্ষাকারীকেও নির্দ্বিধায় হত্যা করতে পারে।
এখানে আমি যে ঘটনাটার কথা বললাম তার তথ্যসূত্র শাহাদুজ্জামানের 'ক্রাচের কর্ণেল' এবং লে. কর্ণেল(অব) এম এ হামিদের 'তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও না বলা কিছু কথা' -- সময় পেলে পড়ে দেখতে পারেন! আর যে হাজার হাজার সেনা সদস্যদের জিয়া হত্যা করেছে তাদের কষ্টের একটু আঁচ পেতে আনিসুল হকের 'আয়েশামঙ্গল'ও পড়ে দেখতে পারেন ।
আর উপরে যে প্রশ্নগুলো উত্থাপন করা হয়েছে সেগুলোর উত্তরে আপনি কি বলেন তা শোনার অপেক্ষায় রইলাম!
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
লেখাটাও পড়লাম, লিংক থেকে সিসিবি র টাও পড়লাম আর তারপর সবার কমেন্ট গুলোও পড়লাম।
কিন্তু খটকা টা লাগলো এত জন সচল এবং সচল পাঠকের ছাগু স্টাইল মন্ত্যব্য দেখে।
আপনার লেখায় অন্ততঃ পাকিস্তানী নৃশংসতার কোন ছাপ দেখা যায়নি। কেবল বাঙালী মিলিটারীর নৃশংসতার কথাই আসলো? নীড় সন্ধানী
ছাগু রাও জাফর ইকবাল স্যার এর নাম আসলে এই টাইপের উদাহারন দেয়, যেন সবকিছু উনাকেই লিখতে হবে।
আরো কিছু কমেন্ট দেখলাম এই টাইপের।
জিয়ার করা সামরিক খুনগুলো আপনার লেখায় বেশ বৈধতা পেলো । নজরুল ইসলাম
কিছু কইলেই আপনি একটা ভাদা,নাস্তিক, টাইপের কমেন্ট।
'একজন পূর্নসচল যখন ছাগুটইপ পোস্ট দেয়, তখন মনে কী হয়?' - পর্ণসচলদের এমন স্ট্যটাস কখন আসবে? মজারু
লেদা ত দেখলাম না কোন লেখাতে , বরঞ্চ মন্ত্যব্য তেই সন্মানের ঘাটতি।
"নোংরা লাইনের" ব্যাপারে আমার মনে হয়েছে, লেখক ৩০ বছর আগের কিছু স্মৃতি রিক্যাপ করছেন এই অসুস্থ বয়সে। অত আগের ঘটনা যা লেখার সময় মনে এসেছে তাই তিনি লিখেছেন। লেখার মান তাতে নেমছে নি;সন্দেহে কিন্তু এর জন্যে তার লুঙ্গি টানাটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। "যদিও সে পর্জন্ত্য যায়নি"
আমার কাছে লেখাটির চাইতে মন্ত্যব্য গুলোই বেশি একপেশে মনে হয়েছে।
সিসিবির লেখাটিঃ
লেখাটি ত উনি লিখেছেন ই একটি ভিন্ন জানালা, দৃস্টিভঙ্গি থেকে। তো এর সত্য অসত্যতা যাচাই না করেই কাউকে ছাগু বানিয়ে ফেলা ছাগু চরিত্রেই পরে। যেমন পরে অপরাধ অস্বিকার করার পাকি মনোবৃত্তি।
আমাদের মিলিটারি/বাহীনি যদি পার্ব্যত্য অঞ্চলে শান্তিবাহিনি র সময় থেকে টুকটাক পাকিপনা চালাতে পারে,পিলখানায় ২০১০ এ এসে পাকিপনা চালাতে পারে। তবে ইস্পাহানির ওই ঘটনাও অবাস্তব কিছু না। কিন্তু তাতে পাকিদের নৃসংশতা ত খাটো করা হয়না। বরঞ্চ আমাদের অস্বিকার(যদি সত্যি হয়ে থাকে সে ঘটনা)বছর বছর বাঙালি বেশী ছাগুর জন্ম দেয় দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা বিহারী ক্যাম্পের নতুন প্রজন্মের মাঝে। যারা "তাদের বাপ দাদার" কাছে ইতিহাস শিখে। আর ভয় হয় যে তারা বাংলাদেশি হয়েই বড় হয় ভেতরে একটা লুকানো সাপ রেখে।
পরিশেষে
আমি সচলের একজন নিরব পাঠক। সচলের লেখার মান সচল ভাবেই হয় বলে মুগ্ধতা নিয়ে পরি। কমেন্ট করার প্রয়জনিতা দেখিনা। আর আজকে কমেন্ট দেখেই মনে হল বলি, শান্ত হন সচল ভাইরা, একটু শাণ দেন মাথায়(পাকি মসলা না কিন্তু, ধার করার কথা বলসি,বানান ভুল মনে হয়)। নিজেরাই সঠিক ভাবলে মাথার শাণ কমে যায়।
সোনা ব্লগ তার প্রমান।
একটাই প্রশ্ন, দীঘদিনের মুগ্ধ নীরব পাঠক আজকেই ভিন্নমতের এই ইস্যুতেই আপনি এতবড় কমেন্ট সহ সরব হইলেন? এর আগে সচলের কোন লেখাই কি আপনাকে পজিটিভ বা নিগেটিভ ভাবে সরব করার জন্য মোটিভেট করে নাই?
উদাস ভাই। আকাশসাব্বির ভাইয়া মনে হয় নিজের পজিটিভ ভাব খঁুইজা পাইছে। তাই ভাইয়া শ্র ! ব থুক্কু সরব হৈছে ।
পয়েন্ট
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নীরব পাঠক, কাউকে ছাগু বানানো হয়নি এখানে।
প্রত্যেকটা রাজনীতি সচেতন মানুষের অবস্থান হওয়া উচিত স্পষ্ট। সাইফ ভাই রাজনীতি করতেন বলে লিখেছেন, দলীয় গুরুত্বপূর্ন অবস্থানেও ছিলেন। ওই পোষ্টে সেই অবস্থানটা মোটেও স্পষ্ট হয়নি। একাত্তরে মিলিটারী বলতে আমরা সাধারণত পাকি মিলিটারী বুঝি। মিলিটারী মানেই শত্রুপক্ষ ধরে নেই। ইস্পাহানী জুটমিলের মিলিটারীরা ছিল ওনার জাত ভাই। আন্দাজ করি জিয়ার ৮ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্য। স্বাভাবিকভাবে ওই হত্যাকান্ডের দায় মেজর জিয়ার ঘাড়েও চাপে। কিন্তু তার বক্তব্য পড়ে বুঝতে কষ্ট হয় ওরা কারা? বাঙালী প্রমান করলে ছেড়ে দেয়। মুক্তিযোদ্ধারাও কোন অপকর্ম করলে সেটা স্পষ্ট করে বলা উচিত। কিন্তু তিনি সেদিকে না গিয়ে কেবল 'মিলিটারি' নামক বিভ্রান্তিমূলক শব্দ দিয়েই পুরো ব্যাপারটা বর্ননা করেছেন। মেজর জিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাননি বলেই কি? একজন পাঠক হিসেবে লেখকের ওই ধোঁয়াশাপূর্ন অবস্থানকে ভালো চোখে দেখতে পারিনি। তাই কয়েকজনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ এবং সন্দেহবিদ্ধ হয়েছেন। আশা করবো পোষ্ট লেখক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে উত্থাপিত প্রশ্নগুলোর ধোঁয়াশাগুলো দূর করবেন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
বরঞ্চ মন্ত্যব্য তেই সন্মানের ঘাটতি
কেমনে ঘটল? পোস্ট পড়ে পাঠকের যা মনে হয়েছে বলেছে, অনেক সহনশীলতার সাথেইতো সবাই মন্তব্য করে যাচ্ছে দেখছি। এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র আপনার মন্তব্যেই ছাগু, লেদা জাতীয় শব্দ ও আক্রমণাত্মক ভাব প্রকাশ পাচ্ছে
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
আপনার মাথার শানও কি নিজেকে সঠিক ভেবে কমে গেছে গো ভাইয়া?
মুখ থেকে সামরিক শাসকদের ল্যাওড়া নামিয়ে বুক ভরে শ্বাস নিন। শরীরে অক্সিজেন ছড়িয়ে পড়তে দিন। তারপর মাথায় শান দিন। চাইলে এই পোস্টলেখককে করা প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনিও দিতে পারেন। সামরিক শাসকদের ল্যাওড়া চুষতে চুষতে নীরব থেকে সরব হলে কীভাবে হবে?
আপনার আগের পোস্টে আমার করা মন্তব্যটা কি খেয়াল করেছিলেন?? না করে থাকলে আবার দেখে নিন। তবে দ্বিতীয় অংশটা এখানেও তুলে দিলামঃ
আপনিই তো সেই লোক যিনি দাবি করেছেনঃ পাকিস্তান রেডিওতে শেখ মুজিবের ৭ মার্চ, ১৯৭১ ভাষণ শুনেছেন যেখানে 'জয় পাকিস্তান' শব্দটি ছিল! আমি আমার কাছের ৫-৬ ব্যক্তির সাথে কথা বলেছি যারা পাকিস্তান রেডিওতে ভাষণটি শুনেছিলে্ন এবং এর কোন অংশেই 'জয় পাকিস্তান' কিংবা 'জিয়ে পাকিস্তান' পান নি!
!
এবার এই পোস্ট নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসাঃ
১)ক্ষমতার অপব্যবহার কি দুর্নীতির মাঝে পড়ে??
২) আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার ভুমিকা কতটুকু বলে মনে করেন??
৩) জিয়ার রাজাকার পুনর্বাসনে আপনার মতামত কী??
৪) জিয়ার মুক্তিযোদ্ধা হত্যার ব্যাপারে আপনার মতামত কী??
৫) পাহাড়ে যুদ্ধের ব্যাপারে জিয়ার ভূমিকা ছিল কি?? থাকলে সেই ব্যাপারে আপনার মতামত কী??
আপাতত এ ক'টাই দিলাম। আশাকরি আগের পোস্টের মতন পিছলাবেন (দুঃখিত, এর চাইতে ভদ্রস্থ শব্দ খুঁজে পেলাম না) না।
দেবাশিস মুখার্জি
[db.mukherjee.blog@gmail.com]
ইতিহাস বিকৃতি কিভাবে ঠান্ডা মাথায় করা যায় বা প্রোপাগান্ডা কিভাবে ভদ্রভাবে ছড়ানো যায় এই পোস্টটি পড়ে বুঝলাম।
এই পোষ্টকে ঘিরে অনেক আলোচনা হয়েছে, অনেকগুলো প্রশ্নও জমা হয়ে গেছে মন্তব্যের ঘরে। সাইফ শহীদ যতো দ্রুত এসবের জবাব দেবেন এবং তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করবেন ততই মঙ্গল। এত দীর্ঘ নীরবতা ভালো দেখায় না।
সাইফ ভাই, সুস্থ হয়ে উঠুন সেই কামনা করি। লেখা নিয়ে আর কিছু না বলি, অনেকে অনেক কিছু বলে দিয়েছে। একটা জিনিষ পড়ে হেসে দিয়েছি। রি ইউনিয়নে এসে ইসলামে মেয়েদের সাথে ব্যবহার আলোচনার প্রতিপাদ্য় হয় কীভাবে?
আমার সামান্য একটা লেখা এতটা আলোড়ন তুলবে ভাবিনি। প্রথমে, যারা কষ্ট করে মন্তব্য লিখেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
অনেকগুলি প্রশ্ন উঠে এসেছে, সেগুলিতে যাবার আগে আমার শুধু একটি প্রশ্ন - এত দিনেও কি আমাকে জানতে পারেন নি?
নীচের এই লাইনটা কি কারো চোখে পড়েছিলঃ
"এর চাইতে আর স্পষ্ট করে কি ভাবে বলি দেশের প্রেসিডেন্টকে দুর্নিতি আর অপচয় বন্ধ করার কথা?"
আমি জানি না আপনাদের মধ্যে কারা কারা দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন। আমার জীবনে তেমন সুযোগ তেমন বেশী আসেনি। স্বাভাবিক ভাবেই এটা একটা বিশেষ ঘটনা মনে রাখার জন্যে।
জিয়ার জীবন কাহিনী লেখার চেষ্টা এখানে করিনি, আমার দেখা ছোট এক অভিজ্ঞতার কথাই এখানে লিখেছি। "জিয়া নিজে ব্যক্তিগত ভাবে যে কোন দূর্নীতির বাইরে ছিলেন" - এই কথাতে অনেকে ভুল বুঝেছেন। স্বীকার করি এখানে ভুলটা আমার। এখানে আমি খুবই সংকীর্ন অর্থে 'দুর্নীতি' শব্দটা ব্যবহার করেছি। রাজনীতি বা ক্ষমতা দখলের 'দুর্নীতি' না বুঝিয়ে - এখানে শুধু 'ঘুষ, কমিশন, আত্মীয়-স্বজন ও দেশের লোকের চাকরি দেওয়া, পিএসের গাড়ীতে ব্যাগ ভর্তি টাকা পাওয়া, ইত্যাদি' অর্থে ব্যবহার করেছি। এমন কোন ঘটনার কথা তখন শুনিনি।
আমি জানি না আমাদের 'সেন্স অব হিউমার' কমে যাচ্ছে কিনা। "তিনি কি এই বয়েসেও গাছ লাগানো আর খাল কাটায় উৎসাহ দেখাতেন?" - এই কথাটার মানে কি? আমাদের স্কুলের এক বন্ধু একটা দামী হাত ঘড়ি কিনে খুব 'শো' করে আমাদেরকে দেখাচ্ছিল প্রশংসা পাবার জন্যে। আমাদের অধিকাংশেরই তখন হাতে কোন ঘড়ি ছিল না। আমরা তার ঘড়িটা দেখে খুব প্রশংসা করে বললাম 'ব্যান্ডটা সত্যিই খুব সুন্দর হয়েছে।'
বঙ্গভবনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথী আসার আগেই খাওয়া শুরু করা কি প্রকাশ করে? তেমনি বিগলিত স্রদ্ধাভরা চোখে প্রেসিডেন্টের দিকে না তাকিয়ে কম বয়েসী মেয়েদের দিকে তাকানোর মানে কি?
আমি কি ভবিষ্যতে আমার পাঠকদের কাছ থেকে আরও গভীর ভাবে সব কিছু দেখার প্রত্যাশা করতে পারি? আমি তো সচলায়তনে লিখছি, 'মধু-কন্ঠ' বা তেমন কোন 'হলুদ-কাগজে' লিখছি না।
আমার এই প্রত্যাশা ঠিক না হলে একই সাথে তাদের এবং আমার সময় নষ্ট করে লাভ কি?
সাইফ শহীদ
রাজনীতি বা ক্ষমতা দখলের 'দুর্নীতি' না বুঝিয়ে - এখানে শুধু 'ঘুষ, কমিশন, আত্মীয়-স্বজন ও দেশের লোকের চাকরি দেওয়া, পিএসের গাড়ীতে ব্যাগ ভর্তি টাকা পাওয়া, ইত্যাদি' অর্থে ব্যবহার করেছি। এমন কোন ঘটনার কথা তখন শুনিনি।
'রাজনীতির দুর্নীতি', আমার মতে, পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্টতম দুর্নীতি। সবচেয়ে বড় কথা, এই রাজনৈতিক দুর্নীতি অন্য সব দুর্নীতির অনুঘটক হিসাবে কাজ করে থাকে। একটা উদাহরণ প্রাসঙ্গিক হতে পারে এখানে। জিয়ার আমলে দেশে অনেক যুব কমপ্লেক্স করা হয়েছিল, যেখানে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছিল। এই স্বেচ্ছাসেবকদের স্বভাবতই কোন বেতন ছিল না, তবে তাদের হাট-ঘাটের ইজারা পাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল। ফলে এই স্বেচ্ছাসেবকগণ স্বাভাবিক কর্ম করে যে উপার্জন করতেন, তার চেয়ে অনেক বেশী অর্থ কামাতে সক্ষম হন অতি অল্প সময়ের মধ্যে। কিন্তু এই অবিশ্বাস্য সুবিধাপ্রাপ্তির বিনিময়-মূল্য কি ছিল? এই যুবকেরা সবাই বিএনপির ক্যাডার বাহিনীতে পরিণত হয়! দেশের যুবসমাজকে এভাবে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির পাকে ফেলে দেয়ার চেয়ে বড় দুর্নীতি আর কি হতে পারে?
জিয়ার কি প্রয়োজন ঘুষ-কমিশন-পিএসের গাড়িতে ব্যাগ ভর্তি টাকা প্রভৃতির, যখন দেশের সর্বময় ক্ষমতা তার হাতে, যখন চাইলেই ৯৯% হ্যাঁ ভোট পাওয়ার অবারিত সুযোগ থাকে (১৯৭৭, ৩০ মে), যখন চাইলেই দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করা যায় (১৯৭৯ সালে ১৮ ফেব্রুয়ারি), যখন আ'লীগ-বিএনপির মত বিরোধী দল থাকে না, যখন চিরস্থায়ী ক্ষমতার স্বপ্নে বুদ থাকা যায়!
এই দুই বাক্যের আগে আরো দুটো বাক্য আছে।
স্বীকার করি এখানে ভুলটা আমার। এখানে আমি খুবই সংকীর্ন অর্থে 'দুর্নীতি' শব্দটা ব্যবহার করেছি।
আমার মনে হচ্ছে, এই চার বাক্য দিয়ে তিনি তার আগের "জিয়া নিজে ব্যক্তিগত ভাবে যে কোন দূর্নীতির বাইরে ছিলেন" বলার ভুলটা স্বীকার করে নিয়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবকদের হাট-ঘাটের ইজারা পাওয়ার বিষয়টা আগেও শুনেছি। এমনটা ঘটেছে- বিশ্বাস করতেও বেগ পাচ্ছিনা। কিন্তু সেরকম তথ্যসূত্র নেই আমার হাতে। আপনার হাতে কোন সূত্র থাকলে জানাবেন কি?
আপনার হাতে কোন সূত্র থাকলে জানাবেন কি?
জিয়ার আমল দেখেছে এমন লোকদের জিজ্ঞাস করলেই জানা যাবে, তবে নিরপেক্ষ ও সুবিধাভোগী নয় এমন লোক বাছাই করতে হবে। আর দেশের উৎস যদি আপনার পছন্দ না হয়, তা হলে তালাস করে দেখতে পারেন 'A legacy of blood' by Anthony Mascarenhas যেখানে আরও অনেক কিছুই বলা আছে।
এই দুই বাক্যের আগে আরো দুটো বাক্য আছে।
ঐ আগের দুটো বাক্য আমিও পড়েছি এবং লেখক যে এক প্রকার ভুল স্বীকার করেছেন তাও দেখেছি। কিন্তু লেখক মনে হয় সংকীর্ণ অর্থে জিয়ার দূর্নীতিহীনতা নিয়ে বেশ কনফিডেন্ট এবং ইমপ্রেসড। তাই আমি বলতে চেয়েছিলাম, জিয়ার এপিএসের গাড়িতে ব্যাগভর্তি টাকা না পাওয়া যাওয়ার ঘটনায় মুগ্ধতার কিছুই নাই, কারণ জিয়াকে পরের টার্মের ক্ষমতাহীনতার আশংকা করতে হয়নি, যেহেতু দেশের সর্বময় ক্ষমতার কর্তৃত্ব নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছিলেন; যে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি তিনি করেছিলেন, তা কিছুতেই তার ব্যক্তি জীবনের দূর্নীতিহীনতা দিয়ে চাপা দেয়া যায় না, (যদিও তার ব্যক্তিগত দূর্নীতিহীনতা নিয়েও অনেকেই সন্দিহান)।
সাইফ ভাই, আপনার পাঠকরা অনেক গভীর ভাবে পড়ে এবং বোঝার চেষ্টা করে এবং
আমি তো সচলায়তনে লিখছি, 'মধু-কন্ঠ' বা তেমন কোন 'হলুদ-কাগজে' লিখছি না।
আপনার উপরের মন্তব্য ঠিক আছে বলেই আপনি প্রতিক্রিয়ার সম্মুখিন হচ্ছেন। বিশেষ করে একটা লেখা যখন আপনার মত পুরনো সচলের কাছ থেকে আসে সেটা আরো গুরুত্ব পায় এবং সচলায়তনে সবাই জবাবদিহিতার সামনা সামনি হয়, নাকি ভুল জানলাম এতদিন?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
আপনি জিয়া' র গুণাবলী খুব পরিষ্কার ও সহজবোধ্য করে লিখলেন কিন্তু তার দোষ বর্ণনা 'র সময় এত ইঙ্গিত, রহস্যময় আর অবোধ্য করে লিখলেন কেন ? জিয়া কে না হয় সাহস করে বলতে পারেন নি সে সময়ের সমাজের দুর্নীতির কথা , সচলে ত পারতেন ।
রেডিয়োতে ৭ই মার্চের ভাষন আমিও শুনেছিলাম, এবং খুব আয়োজন করেই, এখানে সেই কথাগুলো আছে http://www.sachalayatan.com/mustafiz/29364
আমার স্মৃতি দুর্বল না। আপনার লেখার ৭ই মার্চের অংশটুকু অতিরঞ্জিত/মিথ্যা।
বাকি অংশ নিয়ে মন্তব্য আর নাই বা করলাম।
...........................
Every Picture Tells a Story
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেক আগ্রহ নিয়ে এই ব্লগ পর্যবেক্ষন করছিলাম। আশা করেছিলাম প্রশ্ন আর জবাব আরো কিছুদিন চলবে। সাইফ সহীদের উত্তরের পর হটাৎ থেমে গেলো সবাই।
সত্বি বলতে আমি উনার লেখার একনিষ্ঠ ভক্ত। অন্য সবার মতো আমিও এই লেখা পড়ে একটু ভ্যবাচ্যকা খেয়ে যাই। বাট উনার জবাবে আমার ভুল শুধ্রেছে। এখন ভাবছি কতো সহজেই না আমরা কাউকে ভুল বুঝি।
উনার সিসিবি এর লেখা নিয়ে অনেকেই বিরুপ মন্ত্যব্য করেছেন, বাট্ আমার কাছে তো তার বর্ননা খুবি ন্যচারাল মনে হয়েছে। আমার মনে হয়েছে আমি সেই ঘটনার মধ্যো দিয়ে যাচ্ছি। কী অপরুপ বর্ননা, কী থ্রিলিং।
ইপিআর যদি সত্যিই সেইরকম ঘটিয়ে থাকে আমরা তো সেটা পরিবর্তন করতে পারবোনা। আত্বসমালোচনা যদি আমরা না করতে পারি তাহলে আমরা মাথা উচু করে দাড়াতে পারবোনা। মুক্তিযোদ্ধাদের বা সেসময়কার বা পরবর্তিতে যারা আমাদের রাষ্ট্রনায়ক হয়েছেন , তাদের অবদান স্মরনের পাশাপাশি তাদের ভুল্গুলো আমাদের আলোচনায় আশা উচিৎ, না হলে যে আমরা মিথ্যা লালন করে যাবো।
মানুষ মাত্রই ভুল হয়, আমাদের নেতারাও মানুষ ছিলেন। সো তাদের সমালোচনা শুনলে কেনো আমরা হতাশ হই? যে অপরাধের জন্য পাকবাহিনী/তাদের দোশর দের বিচার দাবী করি, সেই একি অপরাধের জন্য আমরা নিজেদের কাউকে ক্ষমা করতে পারিনা। তাহলে যে আমরা সত্যকে আডাল করে যাবো, আর সেটা করে কি আমরা সত্যিকারের সভ্য জাতি হতে পারবো?
সঠিক। অবৈধ সেনাশাসকের জন্য মানুষ মাত্রই ভুল করে। সেইগুলা বলার দরকার নাই। আর মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের অন্যতম সূচনাকারী ইপিআরের 'ভুল' থাকলে সেইটা ফলাও কৈরা বলা দরকার। নাইলে মাথা উঁচু কৈরা দাঁড়ানোয় সমস্যা। ক্যাডেট কলেজ ব্লগ ঐ ব্লগের গড় মানসিকতা প্রতিফলন করলে এইটা ওদের সমস্যা। সচলায়তনের পাঠকরা বলদ না। তারা সকলেই ভুল কৈরা রিঅ্যাক্ট করছে এমন ভাবলে, আমি প্রতিবাদ করলাম। এই পোস্টের লেখককে বেশ কিছু স্পেসিফিক প্রশ্ন করা হইছে, উনি একটারও সরাসরি জবাব দেন নাই।
যে অপরাধের জন্য পাকবাহিনী/তাদের দোশর দের বিচার দাবী করি, সেই একি অপরাধের জন্য আমরা নিজেদের কাউকে ক্ষমা করতে পারিনা। তাহলে যে আমরা সত্যকে আডাল করে যাবো, আর সেটা করে কি আমরা সত্যিকারের সভ্য জাতি হতে পারবো?
ক্ষমার কথা কে বলল? আগবাড়ায়া এই সমীরকণ তৈরি করার হেতু কী? কোনো সত্যকে আড়াল করা হইতেছে? মুক্তিযুদ্ধ হত্যাকারী জিয়াকে দুর্নীতিমুক্ত পরিচয় দিয়া এই পোস্টের লেখক যখন সত্য আড়াল করল তখন আপনি কৈ আছিলেন?
তা ঠিক, লেখকের এডিয়ে যাওয়া অনভিপ্রেত। তবে যেহেতু এই লেখা বা সিসিবি এর লেখাগুলা নিতান্তই লেখকের সে সময়্কার অভিগগতা নিয়ে, তাতে মুক্তিযু্দ্ধের পুরো চিত্র না থাকাই স্বভাবিক। এরকম খন্ড খন্ড কাহিনী নিয়েই কিন্তু আমাদের ইতিহাস।
ল্যাঞ্জা ইজ আ টাফ থিং টু হাইড।
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
ছড়াকার তুমি ভাই ভাল যে রিটন
কিন্তু
হাঁচা কথা কইলেই খাবে যে পিটন।
সিরাজুর রহমানের 'একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিন লাখ শহীদ' তত্ত্বে আপনার অখণ্ডনীয় দৃঢবিশ্বাস কি এখনো আছে? দয়া করে এড়িয়ে না গিয়ে একটু জানাবেন।
অবাক কাণ্ড! এন্তার কটু মন্তব্যের পরও রহস্যজনকভাবে লেখক নীরব! সহিষ্ণুতায় ইনি মহাভারতের কর্ণকেও হার মানিয়েছেন! নাকি কোন রহস্যময় কারণে জবাব তার কাছে নেই? গন্ধে তো টেঁকা দায়!
যাই হোক, জিয়ার নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান দাবী করা ভাষণের কোন রেকর্ড আছে কি? এটা বিভিন্ন জনের লেখায় পেয়েছি। যাইহোক, একজন মেজর নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান বলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিল আর মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ল- মানুষ কি বদ্ধ পাগল ছিল নাকি আগুনে ঝাঁপ দেয়া পোকার দল? জিয়ার দ্বিতীয় ভাষণ(লেখকের মতে) অবশ্য ইউটিউবে সংরক্ষিত আছে যেখানে তিনি বারবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্ব স্বীকার করেছেন।
জিয়া যখনই কোন ক্রাইসিস দেখতেন, চুপচাপ সেখান থেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করতেন। একাত্তরে-পঁচাত্তরে বারবার তাঁর রহস্যময় ভূমিকা প্রমাণিত হয়েছে।
উনি দুর্নীতি করতেন না- এই মতবাদকে এন্থনি ম্যাস্ক্যারেনহাস জনপ্রিয় করেছেন। ম্যাস্কারেনহাসের লেখায় মিলিটারিদের প্রতি গোপন মমতা আর গোপন থাকেনি, উছলে পড়েছিল। তা সেই ম্যাস্কারেনহাস সাহেবও কিন্তু জিয়াকে দুর্নীতিবাজ নয় বরং দুর্নীতিবাজদের গডফাদার হিসেবে দেখিয়েছেন! আচ্ছা, জিয়ার ক্ষমতাদখল কোন উপায়ে বৈধ ছিল? কোন মতবাদ অনুযায়ী তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক? কোন সততায় তিনি শাহ আজিজুর রহমানের মত যুদ্ধাপরাধীকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন? এটা করে তিনি কি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে গালি দেওয়া এবং শহীদের স্মৃতির প্রতি বেইমানি করার ঘৃণ্য ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেননি?
এসব প্রশ্নের জবাব কোথায়?
আমাদের দেশের নেতাদের অনেকে অসৎ। কিন্তু আর্মি জেনারেলদের ঐ শান-শওকত আর আর অস্ত্রের গর্জন ঠিক কত যুগের শোষণের ফল? ও ভালো কথা, জিয়া নামের এই ভেরি স্মার্ট ব্যক্তি কি রাতের বেলায়ও গগলস পরিধান করতেন? তার গগলসের রুচি ভালো ছিল, এখনকার যুবসমাজে আওয়ামী-বিএনপি নির্বিশেষে "এভিয়েটর" জনপ্রিয়, যদিও মূর্খরা একে জিয়া-গ্লাস বলে!
অলয়
মন্তব্য
অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী এবং নির্বিচারে অগণন মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী জিয়া "ব্যক্তিগতভাবে যেকোনো দুর্নীতির বাইরে ছিলেন" … বাহ!
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আসলেই কি তাই? ঠিক কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কথাটা বললেন বুঝতে পারলামনা !!
শুধুমাত্র গাছ লাগানো আর খাল কাটায় দেশের কতোটা উন্নতি হয় জানিনা, তবে এই দুইটি কাজ দিয়েই একজন মানুষের উন্নয়ন কর্মকান্ড কতটুক বিবেচনা করা যায় সে সম্পর্কে সন্দেহ আছে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
"কর্নেল তাহের থেকে শুরু করে এক বড় সংখ্যক সেনা সদস্যদের কোর্ট-মার্শাল-এ বিচার করে মৃত্যুদন্ড দেওয়া"
!!!
জিয়ার করা সামরিক খুনগুলো আপনার লেখায় বেশ বৈধতা পেলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এরশাদও খুব স্মার্ট ছিলো। দড়ির মতো পাকানো শরীর তো ছিলোই। এরশাদের পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি।
দুর্নীতি কি শুধু টাকা পয়সা মারলেই হয়? অবৈধ ক্ষমতা দখল কি দুর্নীতি না? হাজার হাজার সেনা হত্যা ?
লিঙ্ক ধরে গিয়ে সিসিবির পোস্টটা দেখলাম। এরপরের ঘটনাগুলো কোথাও লিখেছেন? জানার আগ্রহ তীব্র।
সেই পোস্টে সিসিবির সবাই দল বেঁধে মুগ্ধতা জানায়ে গেলো কিভাবে বুঝলাম না!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
জিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত না লিখে কেবল আ্পনার ব্যক্তিগত মুগ্ধতা প্রকাশ ও সার্টিফিকেট প্রদানে সত্যি হতাশ হলাম সাইফ ভাই। এই পোষ্টটা বরং শফিক রেহমানের কাছ থেকে আসলে খুব স্বাভাবিকভাবে নিতে পারতাম।
তবে দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে সিসিবিতে আপনার পোষ্টটা পড়ে মনে হলো পাকিস্তানী কোন নাগরিক সেই পোষ্টটা লিখেছেন। ইস্পাহানী জুট মিলে যে মিলিটারীর কথা আপনি বললেন ধরে ধরে অবাঙ্গালী খুন করছে সেই মিলিটারী কারা? বাঙালী মিলিটারী (ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) নাকি পাকিস্তান মিলিটারী? আপনি যে বয়সে ওখানে চাকরীতে ছিলেন তাতে আপনার এই বিষয়ে না জানার কথা নয়। সবচেয়ে অবাক হয়েছি আপনি সক্রিয় রাজনীতি করেছেন বলে লিখেছেন অথচ সেই উত্তাল সময়ে বাংলাদেশের কি দশা চলছে তা আপনি জানতেন না? আপনার লেখায় অন্ততঃ পাকিস্তানী নৃশংসতার কোন ছাপ দেখা যায়নি। কেবল বাঙালী মিলিটারীর নৃশংসতার কথাই আসলো? আপনারা কোয়ার্টার ছেড়ে পালাচ্ছিলেন বাঙালী মিলিটারীর ভয়ে? এই প্রথম আমি মুক্তিযুদ্ধের উপর এরকম বিপরীত কোন অভিজ্ঞতার বয়ান পড়লাম। আমি কি পড়তে ভুল করলাম কোথাও?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ইতিহাস বিকৃতি প্রসঙ্গে:
একাত্তরে পাকিসুহৃদ সুদূর চীনদেশ থেকে অনেক জ্ঞান আসত আমাদের দেশে। হাদিস মেনে মাওলানারা চাইনিজ কুড়াল মেরেই যাচ্ছে আমাদের ইতিহাসে। ইতিহাসে স্রেফ অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাওয়ার বেদনা থেকে ইতিহাসবিকৃতির যে ধারা বাংলাদেশের চিনাবামেরা চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে তাদের প্রতি সহানুভূতি জন্মায়। চল্লিশ বছরে ধরে একমনে এই দুষ্কর্ম না করে গেলে, আজকে গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরাওটা হয়ত হয়েই যেত।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
(Y)
নীড়ুদা,
সাইফ শহীদের এই পোস্টটি পড়ে অন্যদের মত আমিও হতবাক। যদিও জিয়া সম্পর্কে মুগ্ধতা প্রকাশ ও সার্টিফিকেট তার না তার বন্ধু সৈয়দ আমিনের- এটা নিয়ে লেখকের কাছ থেকে পরিষ্কার বক্তব্য আশা করি।
তবে আমি আপনাকে উদ্দেশ্য করে লিখছি আপনার মন্তব্যটার কারনে।
হ্যাঁ, সম্ভবত আপনি তা করেছেন। সিসিবির ঐ পোস্টটি একটি সিরিজের ১ম। একটার শেষে পরবর্তিটির লিঙ্ক দেয়া আছে। পুরোটা পড়লে আপনার অনেকগুলো প্রশ্নই আর থাকতোনা। 'ধরে ধরে অবাঙ্গালী খুন করছে সেই মিলিটারী কারা?', 'বাঙালী মিলিটারী (ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট) নাকি পাকিস্তান মিলিটারী?, 'সেই উত্তাল সময়ে বাংলাদেশের কি দশা চলছে তা আপনি জানতেন না?, 'আপনার লেখায় অন্ততঃ পাকিস্তানী নৃশংসতার কোন ছাপ দেখা যায়নি্ ', কেবল বাঙালী মিলিটারীর নৃশংসতার কথাই আসলো?', 'আপনারা কোয়ার্টার ছেড়ে পালাচ্ছিলেন বাঙালী মিলিটারীর ভয়ে?-ইত্যকার প্রশ্নগুলোর উত্তর ঐখানেই আছে।
ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে আরেক প্রিয় সচল নজরুল ভাইও ওই পোস্টের নিচের লিঙ্ক দেখতে পাননি। লিখেছেন,
কারনটার কিয়দংশ হলেও সম্ভবত লুকিয়ে আছে কল্যানদার কমেন্টের এক অংশে,
যাক, আমি যখন ঐ পোস্টটা সিসিবিতে ১ম পড়ি, আমিও ধাক্কা খেয়েছিলাম। ৩য় পর্বের মন্তব্যে হিমু( সচল হিমুদা নিহি? এই রেফারেন্সটি তাকে বেশ কয়েক বার ব্যবহার করতে দেখেছি বলেই এমন আন্দাজ করছি) লিখলেন,
যদি ঐ ঘটনাটা ঘটে থাকে, সেক্ষেত্রে এটি একটি সম্ভাবনা। আমি নিজেও এ ব্যাপারে আগ্রহী। কোনো জাতিই শুধু মহামানুষের জাতি না। আমরাও না। ছিলামও না। আক্রান্ত হয়ে, বিধ্বস্ত হয়ে, সহ্যক্ষমতার একেবারে শেষ সীমায় গিয়ে আমরা যদি ভুল/অন্যায় করেই থাকি, আমাদেরকে একদিন না একদিন তার মুখোমুখি দাড়াতেই হবে।
আর হ্যাঁ, পাকিস্তানী নৃশংসতার ছাপ পাবেন ঐ সিরিজের ৩য় ও ৪র্থ পর্বে।
রব
পোষ্টের লেখক নিজস্ব ব্লগে লিখেছেনঃ
ইতিহাস বিকৃতির ডিসকার্সিভ, সাবঅল্টার্ন ডিসকার্সিভ, কাউন্টার ন্যারেটিভ আলোচনার সাথে যোগ হল এই লেখকের ইন্ট্রো-রেস্পেক্টিভ দৃষ্টিকোণ।
আপনার মত একজন সিনিয়র সচলের কাছ থেকে এরকম একপেশে লিখা খুবই হতাশাজনক।
দেখা যাচ্ছে আপনি একজন পূর্ণ সচল। আশা করছি সচল হবার অন্যতম শর্ত 'মিথস্ক্রিয়া' আপনি পুর্ণ করেছেন এবং করে যাবেন।
এই ভরসায় আপনার উত্তর পাবার আশায় দুটো ছোট্ট প্রশ্নঃ
১। জিয়াউর রহমানকে আপনি অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী মনে করেন কিনা?
২। জিয়াউর রহমানের রাজাকার পুনর্বাসন বিষয়ে আপনার অভিমত কি?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হ
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
জিয়ার কি নিজেকে অস্থায়ী সরকার প্রধান ঘোষণা করার কোন এখতিয়ার ছিল? লেখাটির শুরুতেই জিয়ার সুযোগসন্ধানী এক চরিত্র লেখকের অজান্তেই সুন্দরভাবে ফুটে এসেছে, যে চরিত্র চরম সার্থকতা পেয়েছিল ৭৫ এর ৭ই নভেম্বরে কথিত সিপাহী বিপ্লবকে নিজের ক্ষমতা দখলের সিঁড়ি হিসাবে ব্যবহার করার মাধ্যমে।
এত বড় সার্টিফিকেট আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দাবী করে। মাত্র এক লাইনে এত বড় একটা কথা শুধু দলের কর্মিদের কাছ থেকেই প্রত্যাশিত, যাদের কাছে এটা সত্য বিশ্লেষণের চেয়ে বরং স্লোগান হিসাবেই বিবেচিত হয়!
সেই পয়েন্টগুলো প্রকাশ করা যায়? তাহলে আমরা জানতে পারতাম, জিয়া সেগুলো শুধু পড়েই ক্ষান্ত হয়েছিলেন, নাকি কিছু করেও দেখিয়েছিলেন।
জিয়া নিজে ফিট ছিলেন যথেষ্ট; আর তাই অন্যদেরও ফিট হওয়ার পরামর্শ দিতেন; তো তাতে সমাজের কিছু উন্নতি হল কিনা, তা ধর্তব্যে আনার সময় কোথায়?
শুধু ইসলাম ধর্মের উপর সবক দিয়েছিলেন? অন্যান্য ধর্মে নারীর ব্যবহার নিয়ে কিছু বলেননি তিনি?
সত্যি, কি মহৎ জিয়া! এমন বিরল মহৎ বানী সত্যি মনে রাখার মত!
মামুন সাহেব, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা আপনার অনেক দিনের অভ্যেস। সচলে আমরা কোন দলের ধ্বজ্জাধারী হইনা বলেই আমি মনে করি কিন্তু আপনার মন্তব্যগুলো সুনির্দৃষ্ট ভাবে একটি দলেও প্ররোচনা বলে মনে হচ্ছে। জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে প্রচুর সামরিক-বেসামরিক মানুষ মেরেছিলেন এটা যেমন সত্য, তার সময় বাংলাদেশে পূর্ববর্তী বা পরবর্তী সরকার থেকে কম দূর্ণীতি হয়েছে, এটাও সত্য। সত্যকে স্বীকার করুন, খেলার সাথে রাজনীতি মিশাবেন না।
quote]তার সময় বাংলাদেশে পূর্ববর্তী বা পরবর্তী সরকার থেকে কম দুর্নীতি হয়েছে, এটাও সত্য।
প্রমাণ দিন। লেখকের কাছেও প্রমাণ চেয়েছিলাম। কিন্তু উনি যেমন, আপনিও তেমনি এক বাক্যের মহা সনদ দান করে দায়িত্ব শেষ করে দিলেন, যা সচলের মত ফোরামে কখনই কাম্য নয়, যেহেতু সচল চুলচেরা বিশ্লেষণ ও কাহিনীর অতল সন্ধান করতে আগ্রহী বলেই আমার মনে হয়েছে সবসময়।
কোন দলের বলে মনে হচ্ছে? আজিব! সনদ প্রদান করলেন আপনি, আর দলীয় প্রচারণা বলছেন আমার মন্তব্যকে? কই দেখান, কোথায় কোন দলকে আপনার মত করে এমন হিমালয়-সম বিশেষণে অভিহিত করেছি?
লেখক এখন পর্যন্ত নীরব; অথচ আপনি যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়লেন, তাতে করে নিজেকে কোন দলের ধ্বজাধারী না ভাবাটা কি একটু বেশী দাবী হয়ে গেল না?
কোন সত্যকে স্বীকার করব? জিয়ার সময় দুর্নীতি সব থেকে কম হয়েছিল? দয়া করে এই সত্য কোটি কোটি জিয়া-ভক্তকে গেলান, তারা আপনাকে মাথায় করে রাখবে; আমাদের মত অকিঞ্চিৎকর ব্যক্তিকে আপনার এই সত্য বটিকা সেবন করিয়ে কি লাভ বলুন?
হাসব না কাঁদব, তাই বুঝতে পারছি না? আপনি লেখাটি ভাল করে পড়েছেন তো? বা আমার মন্তব্যগুলো? পড়ে থাকলে বুঝতে হবে, আপনার চোখ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী দেখতে পায়, যে অতিদৃষ্টিবলে আপনি আবার দূর্নীতিহীন জিয়ার বড় বড় সত্য অবলীলায় অবলোকন করতে পারেন!