স্মৃতিভ্রষ্টতা একটি ব্যাধি

সজল এর ছবি
লিখেছেন সজল (তারিখ: মঙ্গল, ২৯/০৩/২০১১ - ১১:০১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


১৮৫৭, বৃটিশ ভারত। দাবানলের মত সিপাহী বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়েছে মীরাট থেকে দিল্লী পর্যন্ত। অনেক দিনের জমা হওয়া বঞ্চনা আর ক্ষোভের আগুন সিপাহীদের ব্যারাকের বাইরে এসে বিদ্রোহ করতে উদ্ধুদ্ধ করে। তবে পরিকল্পনাহীন বিদ্রোহ মুখ থুবড়ে পড়ে স্বল্প সময়ে। নানা সাহিব সহ কয়েকজনের হঠকারিতায় জিম্মি কয়েকশ ইয়োরোপীয় নারী ও শিশুদের হত্যা করে নিক্ষেপ করা হয় কূপে। প্রতিশোধে উন্মত্ত ব্রিটিশরা এর প্রতিশোধ নেয় দশ বছর ধরে কয়েক লাখ সামরিক-অসামরিক ভারতীয়কে নির্মমভাবে হত্যা করে। [১]

২০০৭, স্বাধীন ভারত। রক্তক্ষয়ী সেই মহাবিদ্রোহের দেড়শ বছর পূর্তি উদযাপন করে ভারত। এই ঘটনায় নিহত বৃটিশ সৈনিকদের কিছু উত্তর পুরুষ লখনৌ দর্শনে আসতে চায়। কিন্তু ভারতীয় জনতার বিক্ষোভে ভারত সরকার তাদেরকে আসতে বাধা দেয়। পশ্চাৎপদ ভারতীয় জনতা এই গণহত্যা, যে ঘটনায় তাদের তরফ থেকেও কিছু সংশ্লিষ্টতা আছে, দেড়শ বছরেও ভুলে যেতে পারেনি!


১৯৩৯, জার্মান উপদ্রুত পোল্যান্ড। বিপদাপন্ন পোল্যান্ডকে আক্রমণ করে ২২,০০০ পোলিশকে যুদ্ধবন্দি হিসেবে রাশিয়া নিয়ে এসেছে তখনকার পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন। এই ২২,০০০ এর ৮,০০০ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, বাকিরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এক কথায় পোল্যান্ডের মস্তিস্কের বড় একটা অংশ। তারপর তাদের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায় না চার বছর।

১৯৪৩, কাতিন ফরেস্ট, নাৎসি জার্মানি আক্রান্ত রাশিয়া। নাৎসিদের মাটি খোঁড়া যন্ত্রের সাথে উঠে আসে নিখোঁজ পোলিশদের হাড়গোড়। পরাশক্তি রাশিয়ার দাপটে পুরা বিশ্ব মেনে নেয়, এখানে কোনো গণহত্যা হয়নি। সোভিয়েতের আজ্ঞাবাহী পোলিশ সরকারও মুখ বুজে থাকে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলা যে কোন পোলিশকে সহ্য করতে হয় অমানষিক নির্যাতন।

২০১০, পুঁচকে পোলিশদের ৭০ বছর ধরে ক্রমাগত চাপের মুখে মাথা নোয়াতে বাধ্য হয় সুপার পাওয়ার রাশিয়া। কী আশ্চর্য, মাত্র ২২,০০০ নিহত পোলিশকে ভুলে যেতে পারেনি বেঁচে থাকা পোলিশরা, এই ৭০ বছরেও! [২]


১৯৭১, পূর্ব পাকিস্তান। আলোচনার নামে টালবাহানা করে পশ্চিম থেকে সৈন্য এনে পুরোটা প্রদেশ বোঝাই করতে থাকে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা। অপারেশন সার্চলাইটের নেপথ্যে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানের জনপ্রিয় নেতা জুলফিকার ভুট্টো [৩]। ২৫এ মার্চ এ শুরু হওয়া পাকিস্তানীদের বিভৎস গণহত্যায় নিহত হয় ৩০,০০,০০০ নিরীহ বেসামরিক বাংলাদেশি। ধর্ষিত হয় ৩,০০,০০০ এর মত নারী। এক কোটি লোক উদ্বাস্তু হয়ে মানবেতর অবস্থায় আশ্রয় নেয় শরণার্থী শিবিরে। অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের সংখ্যা দাঁড়ায় চার কোটিতে। ১৪ই ডিসেম্বর, জাতির সেরা সন্তানদের ধরে ধরে নিয়ে স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ানো বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার হীন মিশন বাস্তবায়ন করে পাকিস্তানি সৈন্যরা।[৪]

জুলফিকার ভুট্টো তার রক্তে ভেজা হাত নেড়ে পাকিস্তানী ভোটারদের সমর্থন আদায় করে চলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত, তার মেয়ের নেতৃত্বে তার দল জনপ্রিয়তা টিকিয়ে রাখে এখনো পর্যন্ত।

২০১১, মিরপুর স্টেডিয়াম, স্বাধীন বাংলাদেশ। পাকিস্তান ক্রিকেট টিমকে সমর্থন জানাতে প্রাণের উচ্ছ্বাসে ভেসে স্টেডিয়ামমুখী অগণিত তরূণ বাংলাদেশি। এই সমর্থন দেখে বিস্মিত ইএসপিএন-এর সাংবাদিকের খেলার সাথে রাজনীতি মিশ্রিত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কিছু তরুণ চোস্ত ইংরেজিতে বলে উঠে, “We forgot everything”।[৫]

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
উৎসঃ
১। সিপাহী বিদ্রোহ
২। কাতিন গণহত্যা
৩। লারকানা ষড়যন্ত্র, The Betrayal of East Pakistan এবং লারকানা ষড়যন্ত্র, UntoldFact
৪। গণহত্যা, ১৯৭১
৫। সেই ভিডিও


মন্তব্য

একজন পাঠক এর ছবি

ভুলি নাই, ভুলব না ।

দিফিও-1 এর ছবি

ভিডিওটা আসলেই অবিশ্বাস্য, দেখলে হা হয়ে যেতে হয়।

তবে একজন মন্তব্য করেছেন যে এদের একটা বড় অংশ বিহারী জনগোষ্ঠী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ভিডিওটায় একজনের মুখ থেকে উর্দু/হিন্দী ভাষা শুনলাম, তার উপর খেলা হচ্ছে মীরপুরে।

সজল এর ছবি

বিহারীরা মোটামুটি মানবেতর অবস্থায় এখানে আছে, তারা আর যাই হোক ইংরেজীতে এত চোস্ত হবেনা। আর ছেলেগুলার স্মার্টনেস খেয়াল করুন, আমি বিহারিদের মধ্যে এটা আশা করছিনা।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

দিফিও-1 এর ছবি

হুম, তবে সব বিহারী লোকজনই কিন্তু মানবেতর অবস্থায় নেই, যদ্দুর জানি, পুরান ঢাকায় আর মীরপুরে অনেক বিহারী সাধারণ জীবনযাপনই করছেন। আর তাদের বংশধররা কিন্তু আর দশটা বাংলাদেশী ছেলে মেয়ের মতই হওয়ার কথা, স্বাভাবিক নিয়মেই।

সজল এর ছবি

তা হতে পারে। তবে স্টেডিয়ামে যে বিপুল সমর্থন ছিল, তাদের সবাইকে বিহারী বলা যাবে না। ভিডিওর ম্যাক্সিমাম লোক বিহারী হলেও কিছুটা সান্ত্বনা পাওয়া যাবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

পাগল মন এর ছবি

খালি কিছু ব্রিটিশ সৈনিকের উত্তরপুরুষের আগমন ঠেকিয়ে কীভাবে তারা ইতিহাস মনে রাখছে সেটা বুঝতে পারলাম না যেখানে তারা নিজেরাই প্রতিবছর ইংল্যান্ডে দৌড়াচ্ছে

শুধু শুধু ৭১এর গণহত্যার সাথে অন্য কিছুর তুলনা করার কোনই প্রয়োজন নেই। কাউকে যদি অন্য দেশের উদাহরণ টেনে ফাকিস্তানীদের ঘৃণা করাতে হয় তাহলে সেটা আমাদের দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে বলে আমার মনে হয় না।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

সজল এর ছবি

তুলনা আনছিনা, শুধু ভুলে যাওয়ার সময় কাল দেখাচ্ছি। তারা ইংল্যান্ডে দৌড়াচ্ছে, আমাদের দেশের অনেকে পাকিস্তানে থাকছে, চাকুরীও করছে, তাই বলে তাদের সবাই গণহত্যাকে ভুলে গেছে তা তো না । আমার এই পোস্টের কনসার্ন আসলে ঘৃনা বিষয়ক না, ভুলে যাওয়া বিষয়ক।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

স্পর্শ এর ছবি

এত শত উদাহরণ দেওয়ার পরেও কত লোকের মন মানে না। আর না দিলে...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সংসপ্তক এর ছবি

ভারতবাসী ইংল্যান্ড যাচ্ছে বলে তারা নিজের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা মনে রাখবে না? জার্মানীর সাথে ই.ইউ তে আছে বলে ফ্রান্স দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তাদের নিহত দের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে না? উদাহরণ টানলে সমস্যা কোথায়?

.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

পাগল মন এর ছবি

যারা ফাকিস্তানকে সাপোর্ট করছে, তারাও দেখবেন বাংলাদেশের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা মনে রাখছে। তারাও হয়ত একুশে ফেব্রুয়ারীতে শহীদ মিনারে যাচ্ছে, স্বাধীনতা দিবসে, বিজয় দিবসে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছে। কিন্তু এই মনে রাখাতে কী লাভ হবে?
একুশে ফেব্রুয়ারী, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসে মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর হিড়িক দেখে কিন্তু মনে হয় না বাঙালি ভুলে গেছে আবার ফাকিস্তানের সাপোর্টারের সংখ‌্যা সে ধারনাকে বুড়ো আংগুল দেখায়। এজন্যই বলেছি বাঙালিকে উদাহরণ দেখিয়ে কোন লাভ নেই, কেউ যদি দেশের ইতিহাস, ফাকিস্তানীরে কী করেছে সেটা জানার পরেও ফাকিস্তানকে সাপোর্ট করে তাকে/তাদেরকে আপনি কোন উদাহরণ দেখিয়ে কিছু করতে পারবেন বলে আমার মনে হয় না।
তবে আমার ধারনা বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই আসলে সঠিক ইতিহাসটা ভালোভাবে জানে না, কেননা গত ২৫-৩০ বছর ধরে ইতিহাসকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যাতে মানুষ ফাকিস্তানীদের ঘৃণা না করে। যদি সবাইকে সঠিক ইতিহাসটা জানানো যেত, বোঝানো যেত তাহলে আমার ধারনা বেশিরভাগই তাদের ভুল বুঝতে পারত।
এখন এই ইতিহাস জানানোর, বোঝানোর দায়িত্ব আসলে যারা ইতিহাসটা ভালোভাবে জানে তাদেরই। তারপরেও হয়ত কিছু পাওয়া যাবে যারা ফাকিস্তানকে সাপোর্ট করছে, তবে সেটা হবে খুবই নগন্য সংখ্যক, তাদেরকে গুরুত্ব না দিলেও চলবে।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পাকিস্তান সমর্থক মাত্রেই ***চো*। এদেরকে ইতিহাস শিক্ষা দিলেও ***চো* থেকে যাবার সম্ভাবনা থেকে যায়।

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

আসলেই কেমন ইতিহাস শিখছে পাকিস্তানের প্রজন্ম, তার কিছু উদাহরণ এই লেখাটায় পাবেন।

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

ধুসর গোধূলি এর ছবি

পাগল মন লিখেছেন:
খালি কিছু ব্রিটিশ সৈনিকের উত্তরপুরুষের আগমন ঠেকিয়ে কীভাবে তারা ইতিহাস মনে রাখছে সেটা বুঝতে পারলাম না যেখানে তারা নিজেরাই প্রতিবছর ইংল্যান্ডে দৌড়াচ্ছে।

ইতিহাস মনে রাখার দরকার নেই, আপনি বরং 'পার্থক্য'টাই বুঝার চেষ্টা করুন। কোন পার্থক্য বুঝবেন, সেইটা বুঝতে পারছেন তো! আচ্ছা, সেটাও বলে দেই। পার্থক্যটা হলো, তারা ঘটনাটা মনে রাখছে। আর বাংলাদেশের ঐ নপুংশকগুলা কিছু মনে তো রাখেই নাই, উল্টা 'ভুলে গেছে' বলে গর্বিত হচ্ছে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

ওই শুয়োরের বাচ্চাগুলারে তাদের “We forgot everything”-সহ ওদের মায়ের যেই দিক দিয়া পয়দা হইছে, ওইদিক দিয়া ঢুকাইয়া পাকিস্তান পাঠাই দেয়া দরকার।
গাদ্দারের বেজন্মা বাচ্চা।
জন্মভূমির নিমক আদায় কর শুয়োর।

একজন পাঠক এর ছবি

আমরা পরবর্তী প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। অনেকে তো এর effect সম্পর্কেও উদাসীন। ভারত এর জনগন অনেক বেশি সচেতন, কারন হিসেবে আমি মনে করি, ঐ দেশের প্রচার মাধ্যম অনেক বেশি active. তারা,, অন্তত জাতীয়তাবাদের সত্মায় একাত্ম। আমি যখন কোন ভারতীয় দেশাত্মবোধক প্রচারণা দেখি বা শুনি আমি আমার নিজের অস্তিত্মে spirit transcend করার চেষ্টা করি। সহমত নাও হতে পারেন আপনরা। আমরা সাধারন মানুষেরা respond করতে পছন্দ করি। আমাদের দেশে এই ধরনের প্রচারনার সংখ্যা করা যায়। our things are still falling apart. we r not united in spirit. so we tend to forget.

অতিথি লেখক এর ছবি

মাঝে মাঝে নিজের রক্তকে বোঝার চেষ্টা করি, পারিনা। শহীদদের রক্তকে কল্পনা করার চেষ্টা করি, পারিনা। দুই রক্তের মধ্যে সম্পর্ক বের করার চেষ্টা করি, কিছুই মেলেনা। কারণ "We Forgot Everything"

অতীত

সজল এর ছবি

এই ভিডিওর একটা সাক্ষাৎকার সম্পর্কে ম্যানিপুলেশনের কথা জানতে পেরেছি। সাক্ষাৎকারদাতার কাছের অনেকেই জানিয়েছে, ও তীব্র পাকিস্তান বিরোধী। যেখানে আসল টেক্সট ছিল নীচের মতঃ

Journalist: Why people of urs support Pakistan?
Ans: I think still some of “The people here do believe we was once part of Pakistan….we was used to say east Pakistan…….”

Journalist: Do u think only for the religious issue the Bangladeshi people support Pakistan forgetting the past politics
Ans: Its true that Muslim are brothers to each other…All Muslim contain the same blood…here many supporters considering only religious issue like....“Its not that we r separated from them now…still we came from the same blood” if we think only religious matter...

Journalist: Why people here support Pakistan only considering religious matter…but Bangladesh has language bond to India…
Ans: If here is a match between India-Pakistan..then there will be 50-50

ইএসপিএন এর সাংবাদিকদের কাছ থেকে এটা কাম্য ছিলনা।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সাফি এর ছবি

যে সাক্ষাৎকারের কথা বলছেন, সেটা বুয়েটের ০৩ ব্যাচের কম্পিউটার সাইন্সের জাহিদের। ভিডিও দেখে আমার মনে হয়নি সেটা এতবড় একটা প্রশ্নোত্তর অংশ থেকে কেটে করা। বিশেষ করে "Its not that..." অংশটা কন্টিনুয়াস মনে হয়েছে (আশেপাশের মানুষের প্রতিক্রিয়া লক্ষণীয়)। জাহিদের বন্ধু-বান্ধবের বক্তব্য থেকে আমিও জানতে পেরেছি যে সে পাকমনপেয়ারু না, কিন্তু এর সাথে তার বক্তব্য মেলানো যায়না।

সজল এর ছবি

আমি যাদের কাছ থেকে শুনেছি, তাতে সে যে পাকমনপেয়ারু না সেটা আমি বিশ্বাস করছি। ভিডিওতে পুরোটা না হলেও কিছু অংশ হয়ত মিক্স এন্ড ম্যাচ হয়েছে।

রেস্ট্রিক্টঃ

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সাফি এর ছবি

কেউ মন্তব্যের উত্তর দিয়ে দিলে সেটা আর সম্পাদনার সুযোগ থাকেনা। তবে আপনি চাইলে আমার মন্তব্য মুছে দিতে পারেন।

একজন পাঠক এর ছবি

পাগল মন যে প্রশ্নটা করেছেন আমিও সে এক-ই প্রশ্ন রাখলাম....যে আমেরিকা সে সময় পাকিস্তানের সব অন্যায় কে সক্রিয় সমর্থন দিল সে আমেরিকাতে যাবার জন্য বেহুঁশ হয়ে থাকি আম্রা....তাদেরকে সব কিছুতে আব্বা মানি...তখন এসব কথা মনে থাকেনা! বাংলাদেশের প্রতি অন্যায় আচরণকারী সকল দেশের প্রতি আমাদের অভিন্ন দৃষ্টি ভংগী থাকা উচিত।

সজল এর ছবি

পাকিস্তানকে ঘৃণা করতে হলে ছটাক মেপে সেই পরিমাণ ঘৃণা আমেরিকাকেও দিয়ে আসতে হবে? আমেরিকান সরকার তাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থে পাকিস্তানকে পুরোটা সময় জুড়ে সমর্থন দিয়ে গেছে। আবার আমেরিকান কংগ্রেসই পাকিস্তানকে অর্থসাহায্য বন্ধ করার প্রস্তাব নিয়েছে। আমেরিকান সরকার অস্ত্রসাহায্য পাঠিয়েছে, এবং আমেরিকান শ্রমিক ও জনতা অস্ত্র জাহাজে বোঝাই করতে বাঁধা দিয়েছে। 'কনসার্ট ফর বাংলাদেশ' এর জন্য আমেরিকান শিল্পীদের ভূমিকাও ভুলে যাওয়ার মত না। আমি তাই হলে আমেরিকাকে ছাড় দিচ্ছি না, আমেরিকা তার প্রাপ্য ঘৃণা পাচ্ছে, পাবে। আপনি পাকিস্তানকে ঘৃণা করতে পারছেন না, ঠিক আছে। কিন্তু তাই বলে আমি আমার বাড়িতে অস্ত্রের মুখে খুন ধর্ষণ করে যাওয়া দুর্বৃত্তকে ঘৃণা করলে আপনি যদি দাবী তুলেন, ওকে ঘৃণা করতে হলে আগে তোমাকে অস্ত্র বিক্রেতাকে ঘৃণা করে দিস্তার পর দিস্তা লিখে আসতে হবে, তবে আপনার যুক্তিবোধের প্রতি আমার অনাস্থা জানানো ছাড়া কিছু করার নেই।

আর দুঃখিত সকল দেশের প্রতি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দিতে পারলাম না বলে। ঘুষি দেয়া আর খুন করা দুটোই অপরাধ, তাই বলে দুই অপরাধের জন্য সমান শাস্তি দিতে হবে!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

একজন পাঠক এর ছবি

"আপনি পাকিস্তানকে ঘৃণা করতে পারছেন না, ঠিক আছে"-- দুঃখিত, আমি সেটা বুঝাইনি...আমার লিখায় আপনি সেটা বুঝে থাকলে সেটা আমার লিখার দূর্বলতা...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

বাংলাদেশের প্রতি অন্যায় আচরণকারী সকল দেশের প্রতি আমাদের অভিন্ন দৃষ্টি ভংগী থাকা উচিত।

আপনার পরিবারের সদস্যদের উদাহরণ হিসেবে ব‌্যবহার করলে হয়তো বাংলাদেশের সাপেক্ষে পাকিস্তান এবং অন্যসব দেশের পার্থক্যটা বুঝতে পারতেন। কিন্তু সেটা অনেকের কাছেই 'অন্যরকম' লাগতে পারে বলে উল্লেখ করলাম না।

শুধু এইটুকুই মনে রাখুন, বাংলাদেশের প্রতি অন্যায় আচরণকারী সকল দেশ আর পাকিস্তান এক কথা না।

এই সোজা কথাটা মাথায় যদি না ঢুকে আপনার, তাইলে কোনো কিছুই আপনার মাথায় ঢুকবে না। সেক্ষেত্রে আমার করুণা থাকবে। আপনার প্রতি না। আপনার অভাগা মা'য়ের প্রতি। এমন বলদ আর বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য।

একজন পাঠক এর ছবি

আপনাদের মত সুন্দর আর গুছিয়ে, বুঝিয়ে লিখতে পারিনা বলেই যে ধরে নিবেন রাজাকার, পাকিপ্রেমি, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী...এসব ঠিক না...। সচলায়তন আমার খুব প্রিয় একটা ব্লগ, সবসময় পড়ি, আপনার লিখাও খুব ভালো লাগে, কিন্তু লেখতে পারিনা বলে লিখা হয়না, যদিও অনেক ইচ্ছা হয় লিখতে। আমার আগের মন্তব্যে যদি আপনার মনে হয়ে থাকে যে আমি "বাংলাদেশের প্রতি অন্যায় আচরণকারী সকল দেশ আর পাকিস্তান এক কথা"--এটা বুঝিয়েছি তাহলে আমি ক্ষমা প্রার্থি। আমি পাকিদেরকে অন্য কারো সাথে তুলনা করার কোন সুযোগ-ই দেখিনা...আমি মনে করি ওদেরকে অন্য কারো সাথে তুলনা করা মানে অন্য কাউকে অপমান করা...আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা হল, আমাদের মেরুদন্ড এতই দূর্বল যে আমরা কউকেই আমাদের প্রতি তাদের অন্যায় আচরণের যুতসই জবাব দিতে পারিনা...।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

গত কয়েকদিন ধরে "পাকিস্তানকে ঘৃণা করলে অমুক দেশকেও ঘৃণা করা উচিৎ" সমৃদ্ধ বাণী শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে যাবার যোগাড়। আপনার কথাতেও একই সুর বাজলো আমার কানে। যদি আপনার বলাটা ঠিক থাকে, তাহলে হয়তো আমার কানেই সমস্যা।

আমরা আমাদের মেরুদণ্ড তখনই শক্ত করে 'সকল দেশের' অন্যায় আচরণের সমুচিত জবাব দিতে পারবো যখন পাকিস্তান প্রশ্নে আমাদের মেরুদণ্ড শক্ত করতে পারবো। বাংলাদেশের পথে-ঘাটে-বাড়িতে-স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে, শ্লোগান দিয়ে মেরুদণ্ড শক্ত করার আহ্বান কোনো কাজেই আসবে না।

মেরুদণ্ড শক্ত করার আগে জন্মের ইতিহাসের ভিত্তি শক্ত করা দরকার।

অতিথি লেখক এর ছবি

এখন যতো রাজাকার আছে বাংলাদেশে, একাত্তরেও ততো রাজাকার ছিলোনা। এই লেখাটি পড়ে, আর ভিডিও-টিতে নব্যরাজাকারদের কথা শুনে হুমায়ুন আজাদ-এর একটি কবিতার অংশবিশেষ মনে পড়ছে:

.. যে তুমি বইয়ে দাও মধুদুগ্ধ গাভীর ওলানে
খড় আর ঘাস থেকে, যে তুমি ফোটাও মাধবী
আর অজস্র পুত্রকে দাও ছন্দ- ক'রে তোলো কবি,
যে তুমি ফোটাও ফুল বনে বনে গন্ধভরপুর-
সে তুমি কেমন ক'রে, বাঙলা, সে তুমি কেমন ক'রে
দিকে দিকে জন্ম দিচ্ছো পালে পালে শুয়োরকুকুর?

(যে তুমি ফোটাও ফুল / হুমায়ুন আজাদ )

ধন্যবাদ সজল, লেখাটির জন্যে ।

-- সুমন তুরহান

ফাহিম হাসান এর ছবি

অলৌকিক কলম

স্পর্শ এর ছবি

চলুক

লেখাটির পরিভিউ অংশেও কিছু থাকলে ভালো হতো। হোমপেজ এর 'রিগর' এর স্বার্থে।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সজল এর ছবি

করে দিলাম।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

অসাধারণ!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলেই ব্যাধি। -রু

সংসপ্তক এর ছবি

দারুন লেখা! আপনার লেখার কন্টেন্ট এবং ভঙ্গি আমার খুবই পছন্দ।

.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আজেবাজে কথা বলছেন শুধু শুধু...

কী হবে এইসব মনে রেখে, দিন শেষে এটা তো একটা "খেলা"ই...

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

চলুক

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

পরাধীনতা


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দুর্দান্ত লেখা

bilash এর ছবি

আমি মনে করিনা সেখানে খুব বেশি বিহারী ছিল । খুব ভাল লেগেছে আপনার লিখাটা । যাইহোক আমি বলবো, we remember anything .

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লিখায় ব্যবহৃত পরিসংখ্যানগুলোর কোন উৎস উপরে বা নিচে কোথাও উল্লেখিত দেখতে পেলাম না। এই ধরনের লিখা অনেকে ট্রলিং এর উদ্দেশ্যে লিখে। সংবেদনশীল বিষয়ের উপর লিখে, অনেক মন্তব্য পাওয়ার আশায়, পেজ ভিউ এর আশায়। মডারেটররাও এই সব বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারেন না, যেহেতু এই বিষয়েই লেখককে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তবে আপনার লিখার ধরনটা সুন্দর। আশাকরি প্রতিটি পরিসংখ্যানের উৎস উল্লেখ করে লিখাটিকে বৈধতা দান করবেন।

ছেড়া পাতা
ishumia at gmail dot com

সজল এর ছবি

এই লেখায় মোট তিনটি লিংক দেয়া আছে, আলাদা করে না, টেক্সটকে হাইলাইট করে। দয়া করে লাল (নাকি কমলা) রঙের টেক্সটে ক্লিক করুন, তাহলেই ওই পেজগুলোতে যেতে পারবেন। মুক্তিযুদ্ধের পরিসংখ্যান সবার জানা আছে ধরে নিয়ে তার কোন লিংক দেইনি, ভিডিওটা ছাড়া। অথবা উইকিতে গিয়ে Sipahi Mutini আর Katyn Massacare লিখে সার্চ দিন। মুক্তিযুদ্ধের পরিসংখ্যান ও যোগ করে দিব শীঘ্রই।

মুক্তিযুদ্ধ আমার কাছে সংবেদনশীল বিষয় না। লেখাটিকে অবৈধ বলতে চাইলেন কি? সেই দাবীর সাথে একটু তথ্যসূত্র যোগ করে দিলে ভালো করতেন।

পেজ ভিউ পাওয়ার আশায় এই পোস্ট দিয়েছি অবশ্যই। ভিডিওটা দেখে যখন প্রচন্ড পরাজিত মনে হচ্ছিলো নিজেকে, তখন নিরুপায়ের মত ব্লগ লিখে মানুষের সাথে আমার আইডিয়া শেয়ার করতে চাইলাম।

মডারেটরদের ব্যাপারটা বুঝিনি, আমি এখনো অতিথি, আমার প্রতিটা লেখা পাবলিশ হওয়ার আগে মডারেটরদের হাত ঘুরে আসে। তারা আমাকে সুরক্ষা দিচ্ছে কিভাবে বুঝতে পারলাম না।

বেশ কিছু অভিযোগ করলেন, যা ব্লগ পরিমন্ডলে আপনার অভিজ্ঞতার সাক্ষ্য দেয়, অথচ টেক্সটের সাথে যুক্ত লিংকের ব্যাপারটাই ধরতে পারলেন না! যাই হোক সবার বুঝার সুবিধার্থে লেখার শেষে এক্সপ্লিসিটলিও লিংকগুলো যোগ করে দিলাম।

ভালো থাকবেন।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

নাশতারান এর ছবি

যারা ভুলে যাওয়ার কথা বলে, ভুলে যাওয়ার মতো কোনো স্মৃতি আদৌ তাদের কখনো ছিলো বলে মনে হয় না। যারা যুদ্ধ চেনে না তারাই যুদ্ধে যুদ্ধে ক্লান্ত।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

একজন পাঠক এর ছবি

দূষিত রক্ত, বয়ে বেড়াচ্ছে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।
ঘৃণা তাদের করি যারা ৭১ ভুলে গেছে,
তাদের আরো বেশি, যারা তা ক্ষমা করেছে।

দ্রোহী এর ছবি

আমাদের তরুণেরা যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। তারা সবকিছু ভুলে গিয়ে বিয়ে করতে চায় খালি।

অতিথি লেখক এর ছবি

বিহারীরা মোটামুটি মানবেতর অবস্থায় এখানে আছে, তারা আর যাই হোক ইংরেজীতে এত চোস্ত হবেনা। আর ছেলেগুলার স্মার্টনেস খেয়াল করুন, আমি বিহারিদের মধ্যে এটা আশা করছিনা।

আছেন কই ভাই? অতীতে এক বাংলাদেশী ও দুই সুইডিশের মালিকানাধীন অফিসে আমাদের HR ছিল এক বিহারী (তখন জানা ছিল না)। তার চোস্ত ইংরেজীতে সব ফরেইন মালিকরা মোহিত। তার প্রধান ডায়ালগ ছিল ‌‌‌‌ "Its a piece of cake!" পরে বাংলাদেশি মালিকের সাথে গাদ্দারি করে বিদেশিদের পা চাটা কুকুরে পরিণত হওয়ায় সে চাকরি থেকে অব্যাহতি পায়। তখন জানা যায় যে এই লোক বিহারি। পুরান ঢাকায় তার বাবার কোটি কোটি টাকার সম্পদ, নর্থসাউথ থেকে BBA, MBA করা!
--
তারিক

সজল এর ছবি

আমি শুধু জেনেভা ক্যাম্পের কথা জানতাম। ওরা উন্নতি করলে তো ভালো।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ভুলি নাই ভুলবো না কোন দিন !

বিষয় বহির্ভূতঃ
'বেসামরিক' না লিখে 'অসামরিক' লিখলে বোধকরি বেশী মর্যাদাশীল হতো।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

সারাহ কারিগান এর ছবি

এজন্য দায়ী আমাদের আগের প্রজন্ম। আমাদের আগের প্রজন্মের অনেক মানুষের ই পাকি প্রীতি আছে। অস্বীকার করে লাভ নেই, বাংলাদেশ এ না হলেও কয়েক কোটি পাকি সাপোর্টার আছে। এদের মাঝে মোটামুটি সবাই ই নিজ নিজ পরিবার থেকেই পাকি প্রেম শিখেছে। তরুনদের আগে আমাদের প্রবীনরা দায়ী এই ব্যার্থতার জন্য।

একজন পাঠক এর ছবি

video te prothom j chele ta kotha bole, se bihari na; gajipur e gram r bari

সজল এর ছবি

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ পড়া, মন্তব্য এবং শেয়ার করার জন্য।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

অরিত্র অরিত্র  এর ছবি

সব জায়গায় পাকিদের বীজ।

anindya এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধ আজ শেগুনবাগিচার কয়েকশ স্কয়ার ফিট আর করপোরেট দালালদের পকেটে বন্দি। আমরা নিজের ইতিহাস জানিনা কিন্তু উন্নতি করতে চাই। পাকিপাছা চাটা মানুষের এই সংখ্যা বার বার প্রমাণ করছে যে আল বদর বাহিনির গন্যমান্য কর্তাগন জন্মনিয়ন্ত্রনের বেপারে কতটা উদাসীন ছিলেন

একজন পাঠক এর ছবি

ব্যাধিটি যেন চরম এই লেখাটিকে

স্মৃতিভ্রষ্ট

না করে দেয়।
লেখক কে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।