মধুচন্দ্রিমা
বিদেশ যাব শুনেই সবাই পরামর্শ দিচ্ছিলো রান্নাটা ভালো করে শিখে যাওয়ার জন্য। রিভিশন দিতে হবে এই ভয়ে পরীক্ষার আগে ছাড়া পড়তে বসিনা এই আমার কাছে ব্যাপারটা তেমন দরকারী কিছু মনে হলোনা। এছাড়া আমিতো ডিম ভাজি, ঘন ডাল আর ভাত রান্না করতে পারিই। আমার নির্বিকার ভাব দেখে কেউ কেউ জিজ্ঞেস করে, "তুই কি রান্না পারিস?"। আমার সপ্রতিভ উত্তর আমি আগে থেকে কিছুই পারি না, দরকার হলে সবকিছুই শিখে নিতে পারি।
কিন্তু জীবন অনুশীলনীতে ছাপানো সমস্যামালা নয়, যে খুব করে মাথা খাটালাম আর সবকিছুর সমাধান হয়ে গেলো। সিদ্দিকা কবিরের বই কিনে নিয়ে এসেছিলাম, আর এখানে এসেই গ্রোসারি ঘুরে দুনিয়ার তাবৎ মশলা যোগার করে ফেললাম। মাছ, মুরগী, ডিম, সবজি ইত্যাদি ও কেনা সারা। যাকে বলে সবাই সবার সাথে মেলার জন্য প্রস্তুত, কিভাবে মেলাতে হবে তাও সিদ্দিকা কবির বইয়ে বলে দিয়েছেন। রেসিপি বের করে ভাষার বেড়াজালে পড়ে যাই, আমি জানি আমার কাছে দুনিয়ার তাবৎ মশলা আছে, কিন্তু পোস্তদানা, সেটা আবার কী? পাঁচফোড়ন কাকে বলে? বুঝলাম এত ঝামেলায় যাওয়া যাবে না। মানুষ প্রজাতি পৃথিবীর বুকে এসেছে প্রায় আড়াই লাখ বছর হয়ে গেছে, আর লেখার প্রচলন মাত্র চার হাজার বছর আগে। সুতরাং এটা চোখ বুজে বলে দেয়া যায়, কোন রেসিপি বইয়ের সাহায্য ছাড়াই মানব সভ্যতা এতদূর এসেছে, আগামী কয়েকটা বছরও এগিয়ে যেতে পারবে।
তাই বইটাকে তাকের উপর তুলে রাখলাম। মশলার মাঝে চিনি আদা, হলুদ, রসুন, মরিচ, জিরা আর ধনে। প্রথমেই টার্গেট হলো মুরগী, টুকরো টুকরো করে কেটে সব মশলার প্যাকেট খুলে ঝাকি দিয়ে মশলা যোগ করে ভালো করে মাখালাম। এবার গরম তেলে পেঁয়াজ সহ মাংস ভাজতে ভাজতে গরম মশলার প্যাকেট বের করে একটা ঝাকি। দারুচিনি, এলাচ ও দেয়া হয়ে গেছে ততক্ষণে, রান্নার পাত্র জুড়ে তুমুল বিশৃঙ্খলা। অনেক ক্লান্ত লাগলে দিলাম সব উত্তেজনায় পানি ঢেলে। তারপর যখন মোটামুটি চেনা সুবাস পাওয়া যাচ্ছিলো, আমার রান্না বস্তুটিকে মুরগী কারী ঘোষণা করে চুলা থেকে নামিয়ে নিলাম। অনেক সময় লেগে গেলো, কিন্তু তাতে একটা সুবিধাঃ যেকোন রান্না ভালো লাগার প্রধান উপকরণ এক পেট ক্ষুধার শর্তটা পূরণ হয়ে গেলো।
তারপর চিংড়ি কারী, ডিম কারী যাই রান্না করি তাই দেখি খাওয়া যাচ্ছে। একের পর এক সব ফ্রন্ট থেকে বিজয়ের খবর পেতে পেতে আলেকজান্ডার সুলভ আত্মবিশ্বাসে সব রান্নার ছবি তুলে একটা অ্যালবামই তৈরী করে ফেললাম, নাম “দ্য সজল’স”। চা, নুডলস, ফ্রাইড রাইস, আলুভর্তা, ডিমভাজা, বেগুনভাজা ইত্যাদি নানা আইটেমে অ্যালবামটা সমৃদ্ধ হয়ে উঠতে থাকলো। তবে যেটা হয়, কারো সমৃদ্ধি বাঙ্গালি সহ্য করতে পারে না, নরকের কড়াই-এর গল্পটা এখানে প্রযোজ্য। কেউ আমার নুডলসের ছবির নীচে কমেন্ট করে যায়, "দারুণ খিচুরি রান্না করেছিস তো"। কেউ চায়ের ছবির নীচে কমেন্ট করে, "এটা কী?"। আর এক দুরাত্মা তো আমার ফ্রাইড রাইসকে বাগাড় ভাত বলার স্পর্ধা পর্যন্ত দেখালো। প্রাতঃস্মরণীয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বলেছিলেন, "আম গাছেই লোকে ঢিল মারে, শেওড়া গাছে কেউ ঢিল মারতে যায় না"। তাই লোকের মন্দ কথায় আমার আত্মবিশ্বাস আরো বাড়তে থাকে, ভালো না হলে কি আর লোকে এইসব নেগেটিভ কমেন্ট করে!
তো অন্য কারীগুলোর রেসিপি কী? পুরা বিশ্বের বাঘা বাঘা পদার্থবিদেরা যেখানে একটা মাত্র থিওরির পিছনে হন্য হয়ে লেগে আছেন, সেখানে আমার মত চরম বিজ্ঞানমনস্ক ছেলে যদি হাজারটা রান্নার জন্য হাজারটা রেসিপি খুঁজে মরে তাহলে তো আর কথা নেই। আমি তাই ‘রেসিপি অফ এভরিথিং’ অর্থাৎ মুরগী রান্নার রেসিপি দিয়েই সবকিছু রান্না করে ফেলি। বৈচিত্র্য যা আসে, সে মশলার প্যাকেট ঝাকি দিয়ে যোগ করা মশলার পরিমাণের র্যান্ডমনেস থেকে।
তবে মাস দুয়েক পরেই বুঝতে পারি, "রান্নাবান্না, সে আমার কম্ম নহে"!
(চলবে...)
মন্তব্য
চমৎকার লাগলো, এক্কেবারে আমার দশা দেখা যায়। আমিও আমার বাসার সবাইকে প্রচন্ড উদ্বেগের মাঝে ফেলে কোন রকম রান্নার এক্সপেরিয়েন্স ছাড়া এখানে আসার দুঃসাহস দেখিয়েছি। আমার রান্নার স্কিল সম্পর্কে আমার বোন বলত, আমি নাকি জানি ১০০ডিগ্রি সেলসিয়াসে পানি ফুটে বের হয়, তবে তার জন্য যে চুলায় পানিভর্তি হাঁড়ি বসিয়ে চুলাটা জ্বালাতে হয় সেটা আমার জানা নেই (দেখেন দেখি দুষ্ট লোক কত কটু কথা বলে)।
তবে আমি কিন্তু এখন থিওরি অফ এভরিথিং দিয়েই সব রান্না চালিয়ে দেই, লোকে খেয়ে কেউ মন্দও বলে না, বরং আমার বিজি ফ্রেন্ডরা আমার রেসিপি নিয়ে যায়, কারণ ওরা জানে রান্নায় এক স্টেপের বেশি লাগলে আমি সেটা রান্না করি না।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
আমার বাসার সদস্যরা আমাকে পানি গরম করতে দেখেছে কিনা সন্দেহ। রেসিপি বইয়ের দুর্বোধ্য ইনস্ট্রাকশনের জ্বালায় কোন কিছু ঠিকমত রান্না করতে পারি না, নাইলে আমিও একেবারে দেখিয়ে দিতাম!
রেসিপি অফ এভরিথিং কাজে দিত, যদি মশলার কাস্টমাইজেশনটা বুঝে যেতাম। দেখি আরো বছর পাঁচেক আছে, এর মাঝে শিখে যাবো নিশ্চয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
হে হে, বাসায় ঐটা বলার পিছনে কারণ ছিল। কোর্সওয়ার্কের একটা প্রবলেম নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, আমার বোন আমাকে ভাতের জন্য চাল ধুয়ে চুলায় চাপিয়ে দিয়ে আসতে বলেছিলো। আমি করেওছিলাম, বিশ্বাস করুন নিজে বুদ্ধি খাটিয়ে চুলা জ্বালিয়েও দিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু চালে পানি দেওয়ার কথা ও আমাকে বলে নি, আর আমিও অন্যমনস্ক ছিলাম, সেটা আমার দোষ বলুন?
মশলার কাস্টমাইজেশন আসলে সোজা। বেসিক স্বাদ টক, ঝাল, মিষ্টি আর নোনতা বুঝে ফেলুন। তারপরে শুধু পারমুটেশন কম্বিনেশন। দরকারে স্পর্শ ভাইয়ের অভয়বাণী পড়ে ফেলুন।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
এই সামারে তাইলে চূড়ান্ত পরীক্ষা নীরিক্ষা সেরে নিতে হবে।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
--ডুপ্লি--
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
হা হা হা...
আপনার প্রথম রান্না তো খাওয়া গিয়েছিলো। আমার প্রথম রান্না হয়েছিলো পুড়ে ছাই। সে গল্প নাহয় আরেকদিন করা যাবে। আগে একটু হেসে নেই।
যে অধ্যবসায় নিয়ে রান্না করেছিলাম, তারপর যদি ওই খাবার খাওয়া না যেতো তাইলে সেটা হতো মানব সভ্যতার অন্যতম ব্যার্থতার ইতিহাস। আর দুর্গত মানুষের অবস্থা দেখে হাসা কী ঠিক?
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
"আপনার মন্তব্য জমা হয়েছে..." এই টেক্সট আসার পরই নতুন কমেন্ট করছিলাম, তাও দেখি কমেন্টগুলো জায়গামত গেলো না । কোন সমাধান?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
পোস্তদানা চিনেন না এখনো? আপনি তো শ্যাষ! শ্যা...ষ!
গুগল ইমেজে পোস্তদানা লিখে সার্চ দিলাম। হাজির হয়ে গেল পোস্তদানা মেশানো একগাদা বাঙালি রসনাই খাবার, বাট খোদ পোস্তদানা কোঈ নেহি!
প্রবাসজীবন আর কদ্দিন ভাইয়া?
গুগল ইমেজে আমিও সার্চ দিয়েছিলাম, ছবিতে যারা এসেছিলো তারা অন্য উপাদান গুলোর সাথে রান্না অবস্থায় মিশে ছিলো বলে আর আলাদা করতে পারি নি। প্রবাস জীবন হয়তো আর বছর পাঁচেক।
অনেক দিন তোমার গল্প দেখি না সচলে, লিখো না কেন?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
পোস্তদানা এক অদ্ভুত উপকরণ...রান্নায় ব্যবহার করলে স্বাদ অনেক বদলে যায়...আর অন্যকাজে এর আলাদা গুন... ইংরেজীতে যাকে বলে পপি সিড...
-
বঙ্গসন্তান
আহ! পপি সীড নাম জানলেতো গুগলে সার্চ করে পেয়ে যেতাম। ধন্যবাদ বিনে পয়সায় এই অমূল্য তথ্য আমাকে দিয়ে দেয়ায়। আগে রান্নায় এর গুণ পরীক্ষা করে নেই, অন্য কাজে গুণের কদর আরেকটু বড় হয়ে করবো
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
সবারই তো একই দশা দেখি...তবে আপনার মত আমি ওসব মশলা টশলার ঝামেলায়ই যাইনি...কি দরকার যেখানে স্রেফ সেদ্ধ করে নিলেই গিলে ফেলা যায়?
তবে নিজে ছাড়া অন্যরা খেতে পারে না
আমার চাইনীজ রূমমেটের তরিকা দেখি, ওর রেসিপি সহজ। বাজারে পাওয়া যায় এমন সবচেয়ে বড় পাত্র/গামলা ভর্তি করে পানি নিন, তার মাঝে যা যা রান্না করতে মন চায় ঢেলে দিন, সিদ্ধ করুন, ডান। নিজে খেতে পারা নিয়ে কথা, সব কাজে পীয়ার রিভিউ এর দরকার কী
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
চায়নীজ
একবার কোন এক বিজাতীয় দেশের বিজাতীয় এলাকায় বসে বাধ্য হয়ে দুই মাস ধরে চায়নীজদের সাথে ওদের কিচেনে খেতে হয়েছিলো। লবণ ছাড়া মিষ্টি কুমড়া সেদ্ধ যে কারো খাদ্য হতে পারে সেটা ওই সময়েই শিখেছি। স্টিমড চায়নীজ ক্যাবেজ আর কাঁচা বীন স্প্রাউট হলো ব্যাটাদের দ্বিতীয় পছন্দ! এদের সাথে খেতে গিয়েই মোটাসোটা নুডলস ভেবে কেঁচো সেদ্ধ খেয়েছিলাম - সে এক অভিজ্ঞতা বটে!!!
এখনো চায়নীজ খাওয়ার কথা মনে পড়লেই গা শিউরে ওঠে
ওদের জিহবায় মনে হয় বিল্ট ইন স্পাইস সিমুলেটর আছে। তবে আমার রূমমেটের সাথে মিলে বিভিন্ন জায়গায় খেতে যাই, ও এখনো সেই রকম সাজেশন দেয় নি।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
--মিসপ্লেসড কমেন্ট--
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
পোস্তদানা কী? খায় না মাথায় দেয়?!
আমি অবশ্য রেসিপি নেই আমার বউয়ের কাছে থেকে, কারণ ও রেসিপিকে অনেক শর্টকাট করে নিয়েছে আগেই। তাই আমার আর কোন কারিকুরি ফলাতে হয় না।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
আমার এক বন্ধু একটা নতুন ফ্রেজ আবিস্কার করেছে, "বিবাহ--The Panacea"। আপনার কমেন্টে তারই প্রতিফলন পেলাম। ঠিক আছে, এক দিন আমিও...
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমি দেখেছি লবন পেয়াজ মরিচ দিয়ে কিছু ভাজলেই আমি খেতে পারি। সুতরাং বেঁচে থাকব নিশ্চিত!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কোন কোন সপ্তাহে আমার একবারও ভাত খাওয়া হয় না, সুতরাং বুঝতে পারছেন, বেঁচে থাকা আমার জন্য কোন সমস্যাই না
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আরে না না হাল ছাড়বেন না! আপনি তো রীতিমত রন্ধনশিল্পী! রংতুলিতে আঁকা ছবির যেমন নিয়ম নেই তেমন রান্নারও নেই। আমি তাই মানি চালিয়ে যান।
::একাকিত্বের বিলাস আমার অনেকদিনের সাধ::
হা হা। সমস্যা হলো আমার শিল্প আধুনিক চিত্রকলার মতই বিমূর্ত, আমজনতা (মানে আমার জিহবা) তার কোন অর্থ করে উঠতে পারে না।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ব্যাপার্না ... ... খাইতে ভালবাসলে রান্না এম্নিতেই হবে।
রেসিপি বইয়ের সমস্যা অনেক।
১। রান্নার মাঝে বাতাসে বা দৈব দূর্ঘটনায় পৃষ্ঠা উল্টিয়ে গেল যেটা রাধুনি খেয়াল রাখতে পারলো না (পারার কথা না, রান্না করতে এ্যাত ব্যাস্ত) তখন কী হবে ভাবুনতো!
২। লবন - স্বাদমত। এইবার বুইঝা লন। আবার পরিমান লেখা থাকলেও সমস্যা। দেশের লবনের যে পরিমান নোনতা স্বাদ, অন্য জায়গার তার চেয়ে কম বা বেশি হতে পারে - একই স্বাদের জন্য জাপানে লবন বাংলাদেশের পরিমানের অর্ধেক দেয়া লাগতো, আর চিনি দেয়া লাগতো দ্বিগুন।
৩। আরেকটা বুইঝা নেওয়ার সমস্যাও আছে। যেমন: এবার মুখে ঢাকনা চাপা দিন -- দেখে কেউ কেউ হাঁড়ির আবার মুখ কি! ভেবে নিজের মুখে ঢাকনা চাপা দেয় ... ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
লবণ নিয়ে কী যে ঝামেলায় ছিলাম, শুরুতে সবকিছুতেই লবণ বেশি হয়ে যেতো, পরে কৃচ্ছ সাধন করে নিয়ন্ত্রনে এনেছি। আর রেসিপ বইয়ের একটা ক্লাসিক বিভ্রান্তি হইলো, "বিশ মিনিট ধরে ঢেকে চুলায় রাখুন, রং লাল/নীল/বেগুনী হলে নামিয়ে নিন" এই টাইপ কথা বার্তা, টাইম দেখবো না চেঞ্জ দেখবো বুঝতে না পেরে ঝামেলায় পড়ে যাই।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
এখনো ঠেকায় পড়িনি, তাই হেঁসেলঘরে এখনো ঢুঁ মারা হয়না বললেই চলে। তবে যা দিনকাল পড়েছে, সেই দিন আসতে আর বেশি দেরি নেই বোধহয়।
লেখা
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
দেশে থাকতে ছেলেরা অন্তত কেউই ঠেকায় পড়ে না। তবে রান্না একটা গুরুত্বপূর্ণ লাইফ স্কীল, সবারই কিছুটা হলেও শিখে নেয়া উচিত।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
শুভ নব বর্ষ!!!
রান্না শেখা কিন্ত সহজ একটা কাজ।
শুভ নববর্ষ
"রান্না শেখা সহজ একটা কাজ", হবে হয়তো । একদিন নিশ্চয় শিখে যাবো।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
রান্নাকে একটু ভালবাস হে, সে তোমায় ফিরায়ে দেবেনা
স্টোরি অফ মাই লাইফ। ধৈর্য্যের অভাবে কোন ভালোবাসাই পাওয়া হইলো না । বাই দ্য ওয়ে, বিরিয়ানির জন্য জিনিসপত্র যোগার করে রাখছি অনেকদিন হইলো, ভাবতেছি একদিন আপনার দোয়া নিয়ে রান্না করেই ফেলব।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
বিয়া করেন মিয়া।
এই বালক বয়সে বিবাহ করলে ক্যাম্নে কী! 'বিবাহ-দ্য পেনাসিয়া' [কপিরাইটঃআসিফ]
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
রান্নার কষ্টকর অভিজ্ঞতা নিয়ে এমন একটি মজার পোস্ট পড়ে ভাল লাগল । লেখার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়...।।
ধন্যবাদ প্রস্তর মূর্তি
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
বিবাহ কোন সমাধান না, অন্তত রান্নার ক্ষেত্রে। এই সত্যটা মেম্বরের মতো বিবাহিত লোক কেন চেপে গেলেন বুঝলাম না।
রান্নার ব্যাপারে দিশা'র ধারণা ছিল যে, "যেহেতু মেয়ে হয়ে জন্মেছি তাই জন্মসূত্রেই সব রান্না জানি"। আমিও ওর এই কথায় বিশ্বাস করেছিলাম। বিয়ের পর প্রকৃত সত্যটা দু'জনেই বুঝতে পেরেছিলাম, তবে তখন আর কিছু করার ছিল না। অতএব আমাদের দু'জনের উপরই রান্না শিক্ষার এক্সপেরিমেন্ট চলতে লাগলো। প্রতিদিন খাবার সময় আবার মন্তব্য করা বাধ্যতামূলক ছিল। আর সচলের সবাই জানেন যে আমি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বা জীবনানন্দ দাশ নই।
একদিন দিশা কাচ্চি বিরিয়ানী রান্না করে আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে দাওয়াত দিলো। বিরিয়ানী খেয়ে আমার শ্বশুর বললেন, "সুপার্ব হয়েছে রে মা"! যাকগে, দিশা তো আর আমার কন্যা নয়, কন্যার মা হতে পারে, তাই আমার অমন মন্তব্য করতে কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। তা আমি যা বলেছিলাম আর তার যে কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিলো সেটা বলা নিষ্প্রয়োজন।
এখন অবশ্য আমি জোর গলাতেই দিশার কিছু রান্নার প্রশংসা করতে পারি। দিশাও আমার সামান্য কিছু রান্নার প্রশংসা করতে পারে। এতে ভাববেন না যে বিয়ের মাধ্যমে সমস্যাটার সমাধান হয়ে গেছে। সেটা যে হয়নি সেটা অনেকের বাসায় দাওয়াত খেতে গিয়ে টের পাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
একটা ব্যাপার আমার বেশ অবাক লাগে। বড় বড় হোটেলে যারা রাঁধে বা নামকরা বাবুর্চিদের বেশির ভাগই কিন্তু পুরুষ। তার পরও আমাদের দেশে "রান্না শুধু মেয়েদের জন্য" এই ধারণাটা আসলো কী করে!
অন্যের রান্না খাবারের ব্যাপারে মন্তব্য করার ব্যাপারে আমি অবশ্য বেশ সুশীল, প্রায় কখনোই রান্না খারাপ হয়েছে বলি না।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
লিখাটা পড়ে অনেক মজা পেলাম। নিজের প্রথমদিক্কার রান্নার কথা মনে পড়ে গেলো।গরুর মাংস রান্না করতে গিয়ে ভীষন নাকাল হয়েছিলাম, ঘন্টার পর ঘন্টা চুলায় জ্বাল দিচ্ছি, কিন্তু মাংস আর সিদ্ধ হয়না। যাও বা রান্না হল খেতে গিয়ে দেখি রাবার এর মত কিছু খাচ্ছি।এরপর একরকম গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিছিলাম। এখন মুটামুটি রান্না করে নিজে ও খেতে পারি মানুষরে ও খাওয়াতে পারি।আপনি ও পারবেন আশা করছি।
উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ। মানুষরে খাওয়ানোর লেভেলে যেতে আমার অনে...ক দূর যেতে হবে।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
তবে আমি মানুষকে খাওয়াতে ব্যাপক উৎসাহী। একবার খেলেই আর কেউ খাওয়ার নামটাও করে না, সেটাই সুবিধা, আমি তাদের রান্না যখন তখন হাজির হয়ে সাপটে দেই, তারা প্রতিশোধ নিতে পারে না :D। বাসায় কেউ এসে বেশীক্ষণ প্যাঁচাল পাড়লেও একই তরীকা। ভাবছি একদিন তাবলিগীগুলোকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াবো, সারা জীবনের মত রোগমুক্তি ঘটে যাবে
তাবলিগীগুলোকে তাড়ানোর না আরো সরেস পদ্ধতি আছে, ওদের স্টাইলে হাতের ভেতর হাত নিয়ে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতে থাকুন
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
এখানে আরো অনেকগুলো কার্যকর পদ্ধতি পাবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
রাবার তো তা-ও ভালো জিনিস, আমারগুলো এখনো ইঁটের টুকরার মত হয়। খেতে গিয়ে দাঁত ভাঙার অবস্থা, কোনমতেই নরম করতে না পেরে ইদানিং ছোট্ট ছোট্ট টুকরা করি, যাতে না চিবিয়ে গিলে ফেলা যায়।
একটা পরামর্শ দেই, আগের রাতে মশলা মাখিয়ে ম্যারিনেট করে রাখবেন। একটু ভিনেগার দেবেন, আর মাঝারি আঁচে অনেকক্ষণ জ্বাল দেবেন। মাংস বাবাজি সিদ্ধ না হয়ে যাবে কোথায়।
আজকেই ফুড ফেস্টিভালে হালিম বেচে সারলাম, তিন দফায় মোট ষোল ঘন্টা মৃদু আঁচে জ্বাল দিয়েছি, মাংস তো মাংস, হাড্ডি পর্যন্ত নরম।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
অনেক ধন্যবাদ।
আমি সাধারণতঃ ম্যারিনেট করি তিন চার ঘন্টা আগে, দেখি আগামীকাল আপনার কথামত রাতভর ম্যারিনেট করে রেখে দেখবো। সমস্যা হচ্ছে, চুলায় দেয়ার মিনিট পাঁচেক পরেই ওগুলো ইঁটের মত হয়ে যায়, জ্বাল যদিও অর্ধেক পর্যন্তও যায় না।
ভিনেগারের বদলে কুকিং ওয়াইন কাজ করবে কি? আমার আগে যে এই বাসায় ছিলো সে আমার জন্য একটা ক্যাবিনেট পুরো করে রেখে গেছে - গোটা পনেরো বোতল, সবগুলোই অন্ততঃ অর্ধেক ভর্তি। বাকিগুলোর ব্যবস্থা করতে পারছি না, একমাত্র কুকিং ওয়াইনটাই যদি ব্যবহার করা যায়
ওয়াইন আমি কখনো ব্যবহার করি নি, হয়ে ওঠে নি আর কি। তবে কাজ হওয়ার কথা। আর চুলায় দেওয়ার মিনিট পাঁচেক পরে কেমন হয় দেখি নি কখনো, আমি চাপিয়ে দিয়ে ঘন্টাখানেক পরে একবার নেড়ে দিতে আর লাগলে পানি দিতে আসি। মাংসের কোয়ালিটির উপরেও ডিপেন্ড করে মনে হয়।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
এতো কিছু বুঝিনে, গরম পানি রান্নায় আমি একজন বিশেষজ্ঞ বলতে পারেন। বেঁচে যাওয়া খাবারটা দিয়ে গোসলও সেরে নেয়া যায় এতে...
আর লেখা মজার হয়েছে। আপনার একদম প্রথম দিককার পাস্পোর্ট অফিস জনিত ঘটনাগুলোর কথা মনে করায়।
বিরাট স্কীল দেখি আপনার! হিংসা!
ব্লগরব্লগর গুলা পড়ার জন্য ধন্যবাদ
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
দারুণ জিনিস রান্না করতে শিখেছেন তো! একটু শেখাবেন?
ভালো লাগলো ভাই, তয় আমার সে ডর নাই, ভালই পারি
অলস সময়
ভালো পারায় ধিক্কার!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
রান্না আর এমন কি, কোন উপাদান কতক্ষণ গরম করতে হবে এটাই তো ! থার্মোডিনামিক্স আর ফুরিয়ারস ল'টা ভালো করে বুঝলেই হয়ে যাবে।
সেই! ফুরিয়ারস টা ভালোই বুঝি। শুধু রান্নার কোন পর্যায়ে থার্মোডিনামিকসের কোন সূত্রটা কাজে লাগাতে হবে বুঝে উঠতে পারি না, এই যা!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ফুরিয়ারটা কাজে লাগাতে পারেন?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আপনি তো দেখি উত্তাধুনিক রন্ধন শিল্পী! রান্না বান্না অসহ্য লাগে রে ভাই কেউ যদি আমারে প্রশ্ন করে 'রান্না পারো?' সপাটে জবাব দেই 'না'। ভাবখানা এমন যেন, মেয়ে হয়ে জন্মেছি বলেই আমার ভেতরে সিদ্দিকা আন্টি ঘুমোচ্ছেন! আরে বাবা, পৃথিবী ব্যাপী বড় বড় রাঁধুনীদের বেশির ভাগই তো পুরুষ...দর্জিও! তবে কেন আমায় জন্ম সূত্রে রন্ধন আর সেলাই ফুঁড়াইয়ের দলিল দস্তাবেজ বগল বন্ধী হতেই হবে বলেন দেখি! দিন বদলের কথাই খালি মুখে, মনের ভেতরের বৃটিশ আমলীয় চিন্তা ভাবনা কেন যে পালটান না কিছু মানুষ খোদাই জানেন আপনি দারুণ রম্য রচনা করতে পারেন।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হেঁসেলের গল্পে হাসতে হাসতে শেষ। আপনার কসরত জয়যুক্ত হউক।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ পড়ার জন্য। আর কসরত সফল হওয়ার জন্য জনগণের দোয়া প্রার্থী
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আরে ক্ষেপেন কেনো? বরকে রান্না করে খাওয়াতে হবে না? (জাস্ট কিডিং) । ছেলে মেয়ে ব্যাপার না, যে রান্না পছন্দ করে সে ভালো রান্না করতে পারবে।
রম্য পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
দারুণ লাগলো।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ ভাইয়া।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
লোকজন রান্নারে এতো ভয় কেন পায় বুঝি না?
আমার তো রান্না করতে দারুণ লাগে
পৃথিবীর সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ কাজ হলো রান্না করা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নিয়মিত লেখেন রে ভাই, নিয়মিত লেখেন। রান্না হোক না হোক, লেখা আপনার বড়ই স্বাদু হয়।
নতুন মন্তব্য করুন