১
ভাড়া বাসার এক চিলতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে মেঝভাই হাত ঘুরিয়ে বোলিং কিভাবে করতে হয় দেখিয়ে দিলো। ওকে নকল করে ছুড়লাম জীবনের প্রথম বল, সিমেন্টের মেঝেতে পড়ে বলটা হয়ে গেলো লেগস্পিন। ক্রিকেট যেমনি খেলতাম, আমার করা বলগুলো আর সোজা হয়নি কখনো। জীবনে প্রথম কথা বলার কথা মনে নেই সংগত কারণেই, তবে বুঝতে শেখার পর থেকেই যদ্দুর মনে পড়ে কথাবার্তা বলি পেঁচিয়ে। মানে সিরিয়াস কথা বলার সময়ও একটু জোক করতে না পারলে পোষায় না, আশেপাশের মানুষ আমার কথার জালায় কতবার যে হাতের সুখ মিটাতে চেয়েছে কে জানে!
কথা হচ্ছে জীবন একটা সিরিয়াস ব্যাপার, তার প্রতিটা বিষয়ে জোক করা কি ঠিক? বেশ জ্ঞানী একটা কথা আছে, “জীবনকে সিরিয়াসলি নিও না”। পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির পরিমাণ অঢেল এবং মাথায় ধূসর পদার্থের পরিমাণ নগণ্য হলে জীবনের সিরিয়াস বিষয় গুলো নজরে না পড়ারই কথা। আমার সাথে অন্তত প্রথমটা যায় না, সেই জ্ঞানী কথার তাই খ্যাতা পুড়ি। তবে খ্যাতা পুড়েও জীবনকে খুব একটা সিরিয়াসলি নেই না। কারণ বাস্তবের জমিন অনেক শক্ত, একেবারে শান-বাঁধানো। হাতে গোণা যে কয়বার জীবনকে সিরিয়াসলি নিতে গিয়েছি, এই শান-বাঁধানো মেঝেতে পড়ে গিয়ে বুঝেছি, ব্যাপারটা সহজ নয়। তাই পাথুরে মেঝে যেমন তুলোটে গালিচা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়, আমার চারপাশ আমি তাই রম্য-কৌতুকের নরম প্যাড দিয়ে ঢেকে দেই, মেঝে দেয়াল সব কিছুকে আড়াল করে।
অবশ্য খুব সতর্ক থাকতে হয়, তা না হলে মাঝে মাঝেই কিছু দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
২
ঈশ্বর একটা দারুণ হাইপোথিসিস, যুক্তি-তর্ককে একটু দূরে সরিয়ে রাখতে পারলেই হলো। অ্যাকশন মুভি দেখতে বসে বলবিদ্যার অঙ্ক কষলে যেমন মুভি দেখাটাই মাঠে মারা যায়, তেমনি ঈশ্বর হাইপোথিসিসে যুক্তি-চর্চা একটি অতীব বর্জনীয় অনুষঙ্গ। শুরুতে অনেক পড়াশোনা করে একবার বাসার ঠাকুরঘরে প্রণাম করে, বাসা থেকে বেরিয়ে আবার বাসার কাছের মিশনের মন্দিরে প্রণাম করে তারপর পরীক্ষা দিতে বেরোতাম। তিন লেয়ারের প্রিপারেশনে পরীক্ষায় ভালোই উৎরে যেতাম। তারপর দুর্ঘটনা ক্রমে চিন্তা করতে শিখে গেলে, ফিজিক্সের ছোট খাট সূত্র দিয়ে দুনিয়ার ঘটে চলা আজব ঘটনা গুলো ব্যাখ্যা করতে জেনে গেলাম। দুইটা লেয়ার সরিয়ে দিয়েও তাই আগের চেয়ে খারাপ কিছু করলাম না।
তাই বলে আমি এই চমৎকার হাইপোথিসিসের বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাইছি না। এই হাইপোথিসিসে বিশ্বাস থাকার অনেক সুবিধা। এমন একটা গাড্ডায় পড়লাম যা থেকে বস্তুত কোন বেরিয়ে আসা নেই, এমন একটা কিছু আমার চাই যা বাস্তবে আমার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, গেমের চিট কোডের মত ঈশ্বর এসে যে কোন সময় আমাকে এ থেকে উদ্ধার করে দিবেন, যে কোন কিছু মিলিয়ে দিবেন এই এক স্বর্গীয় আশ্বাস মানুষের মানসিক যন্ত্রণা অনেক কমিয়ে দিতে পারে। গীতার সেই শ্লোকের মত, যার মর্মকথা “ঈশ্বর ভক্তের ভার বহন করেন”। আমার সারল্য অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে, টেলিস্কোপে চোখ রেখে সূর্যের গায়ের কলঙ্ক ও আমি দেখে ফেলেছি। আমার ভার তাই আমাকেই বহন করতে হয়।
তবে স্বীকার যাই, সময়ে সময়ে বিশ্বাসীদের আমি অনেক ঈর্ষা করি।
৩
এটা একটা জ্ঞানী পোস্ট, ব্যাপক চিন্তা ভাবনা করে লিখা যাকে বলে। কালকে সকালে প্রফের সাথে মীটিং আছে, তার প্রাক্কালে লিখা। সুতরাং পোস্টের গুরুত্ব তো বুঝতেই পারছেন। এটা নিয়ে ফাজলামি করা তাই সম্পূর্ণ রূপে নিরূৎসাহিত করা হচ্ছে
মন্তব্য
(আসলেই দাঁত বেরিয়ে গেছে, ফাজলামো করে দেয়া ইমোট নয়)
(ফাজলামো করছি না, আমার পেটে ব্যাথা করছে এজন্য এরকম করছি)
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
জটিল !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ধন্যবাদ
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমার মুখের কাটা বড়। সবসময় এমন মুখ হয়ে থাকে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
দুনিয়াবী শান-শওকত/টাকা-পয়সা আপনার হাইপোথেসিস বিশ্বাস-অবিশ্বাসের উপর নির্ভর করেনা। বস্তুত আমরা ইহাই বুঝিতে পারিনা যে, সফলতা বলিতে কি বুঝায়?
ঈশ্বরকে গেম আর চিটকোডের সাথে তুলনা না করে, সেভাবেই বিশ্বাস করুন যেভাবে কুরআন-হাদিসে বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে। তখন দেখবেন আপনার ভার আর আপনাকে বহন করতে হবেনা।
ঠিক আছে বস, করব। তবে কিনা অভ্যাস খারাপ হয়ে গেছে, সবকিছু যাচাই করে দেখার খারাপ অভ্যাস। আর নিজের ভার আর কাউকে দিয়ে বওয়ানো ভালো লাগে না, এটাও একটা সমস্যা। যাই হোক দোয়া করবেন।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
এইতো, সজলভাই সিরিকাস পাঠক পাইছেন!
আমি তো এমনি এমনি হাসি।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
কৌস্তুভ, অপছন্দনীয়, পাগল মন, ফাহিম, তিথীডোরের উদ্দেশ্যেঃ
ব্লগের পরিবেশ পুরোই নষ্ট হয়ে গেছে, মন খুলে দুইটা সিরিয়াস কথা বলার আর উপায় নাই মন খারাপ । আপনাদের সমস্যাগুলো দেখে হোমিওপ্যাথ ডাক্তার হয়ে যেতে ইচ্ছা করছে, বিদঘুটে নামের আর স্বাদের ঝাঁঝালো কিছু ওষুধ খেতে দিলেই সবার মুখের জিওগ্রাফিক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ভাই ট্যাগেতো রম্যরচনা লিখি নাই, তাও আপনার কান্দন আসলো?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
খুবি ভাল লাগলো......।।আরো চাই.........।।
ধন্যবাদ
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
1.
ধন্যবাদ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমি এখনো তিন লেয়ার এর প্রিপারেশন নিয়ে পরীক্ষা দিতে যাই । কোন কারনে প্রথম লেয়ার দুর্বল হলে শেষোক্ত ২ লেয়ার সংগঠনে বেশি গুরুত্ব আরোপ করি । মাঝে মাঝে আমার খারাপ প্রিপারাশন এর বোঝা ঈশ্বর বয়ে দেন । হে হে , বুঝতেই পারছেন এই নিয়েই ভালো আছি । পোস্ট ভাল লাগল । ভাল থাকবেন...... ।।
গুড স্ট্র্যাটেজী, একটা না একটা নিশ্চয় লেগে যাবে। পড়ার জন্য ধন্যবাদ
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমার দাঁতও নেই দেখাবার ঝক্কিও নেই তবে মাথায় এট্টুশখানি বুদ্ধি আছে। সেইটা প্রয়োগ করে যা বুঝলাম এইটা একটা কঠ্ঠিন সিরিয়াস পোষ্ট! কিন্তু এই খোকা-খুকিরদল তোমরা 'হাসছে কেন বলো?' শুভকামনা থাকলো যেন প্রফেসরকে কব্জা করতে পারেন গুগলিতে
সিরিয়াস পাঠক থাকলে লিখে ভালো লাগে। কিন্তু মুখে দাঁত নেই, তার মানে তো দেখি বয়সেরও গাছ-পাথর নেই। প্রফেসরকে সফলতার সাথে ভুঙভাঙ দিতে পেরেছি, মি হ্যাপী
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আবার জিগায়! দিনকাল যা পড়েছে সিরিয়াস পাঠক চাই বলে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে! তবে রক্ষে এখনও টিকে আছি আমি বিন্দাস লিখে যান যতকিছু সিরিকাস লেখালেখি প্রফেসরকে ভুংভাং দিতে পেরেছেন শুনে আমিও ভেরি হ্যাপি হলুম
ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ। তেনার অপেক্ষায়ই আছি
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
এই অংশটা চমৎকার!
আগে ঠাট্টার ঠেলায় বোধহয় চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এই কমেন্টও চোখ এড়িয়ে গেছিলো। রিসেন্ট দেখে রিপ্লাই দিতে বসলাম। আসলেই, মাঝে মাঝে কীসব জ্ঞানী ডায়লগ দিয়ে বসি
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
নতুন মন্তব্য করুন