একজন স্বঘোষিত অসাধারণ মানুষ হিসেবে সাধারণ মানুষ যেসব কাজ অনায়াসে সেরে ফেলে, যেমন সাতার কাটা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি ন্যূন কাজ আমি পারি না। এই নিয়ে বিড়ম্বনার ও শেষ নেই। তাই মাঝে মাঝেই ঠিক করি, কালকেই সব শিখে ফেলে দুর্মুখের মুখের উপর জবাব দিয়ে দেই। কিন্তু আইনস্টাইন যদি বাসার ঠিকানা মনে রাখবে তো রিলেটিভিটি আবিস্কার করবে কে! শয়তানের বাক্সের সামনে নানান ওয়েবসাইট ঘুরে তাই আমার সময় কেটে যায়, সাধারণ আর আমার পক্ষে হয়ে ওঠা হয় না।
নানান দুনিয়াবি বেকামিয়াবীতে নিতান্ত হতাশ হয়ে দিন গুজরান করছিলাম। এই অবস্থায় মানুষ সাধারণত মারফতি লাইনে ঝুকে পড়ে। কিন্তু থাকি ম্লেচ্ছদের দেশে, নানান বেশরিয়তি কারবারের মাঝে কোন রকমে দ্বীন বাচিয়ে চলি, মারফতে ঝুকার মত গুরু পাই কই। এমন দুর্দিনে আমার কোরিয়ান অফিসমেট আরাম চেহারায় অভয় মুদ্রা ফুটিয়ে বললো, “আমার সাইকেল দিয়ে চালানো শিখবে?”। এক সাথে দুই দুইটা সমস্যার সমাধান দেখতে পেয়ে অন্যান্য বারের মত আর হাইকোর্ট না দেখিয়ে ওর কথায় রাজী হয়ে গেলাম।
ডিপার্টমেন্ট বিল্ডিঙ্গের লাগোয়া চত্ত্বরে শুরু হলো আমার প্রশিক্ষণ। এক পায়ে প্যাডেল চেপে আরেক পা দিয়ে ধাক্কা দিয়ে সাইকেলে কিছুটা বেগ সঞ্চার করেই মাটিতে পড়ে যাই। আমার ওস্তাদ আরামের মুখে তখন, “ইউ ডিড গ্রেট”; একটু পরে সাইকেল ধাক্কা দিয়ে সিটে বসি, এবং বসেই পড়ে যাই। আরামের মুখে তখনো, “ইউ ডিড গ্রেট”। গরমের জ্বালায় পনেরো মিনিটের বেশি সাইকেল চালাতে পারিনা, আর এরই মাঝে শরীর থেকে লিটার খানেক পানি বেরিয়ে যায়। তবু এমন উৎসাহ দেয়া ওস্তাদ, তার উপর সাইকেলের চাকার ঘূর্ণনের মাঝে দুনিয়ার যাবতীয় সাফল্য খুঁজে মরছি, তাই তিন দিনের মাঝে প্যাডেল মেরে টেরে বেশ খানিকটা দূরে চলে যাওয়া শিখে গেলাম।
আমি সাইকেল ঠিক চালালে কি হবে, ক্যাম্পাসের লোকজন তো আর ঠিক মত হাটা শিখেনি, আর তাছাড়া ক্যাম্পাসের বিল্ডিং, বাগান প্রায়ই আমার সাইকেলের সামনে চলে আসতে শুরু করলো। সময় মতো ব্রেকের কথা মনে পড়ে না, তাই বেয়াড়া প্রতিবেশের পাল্লায় পড়ে মাঝে মাঝেই সাইকেল সহ উল্টে পড়ি। শুরুতে সাইকেলের উপর দিয়েই যা ঝক্কি যাওয়ার যেতো, আমি নিরাপদে আগেই দ্বায়িত্ববান বাস চালক বা প্লেনের পাইলটের মত নিজে সটকে পড়ি। তার সাইকেলের অবস্থা দেখে আরাম ফতোয়া দিলো, “নিজের একটা সাইকেল কিনে ফেলো, তাহলে মোটিভেশন আসবে, আরো তাড়াতাড়ি শিখবে”।
ওয়ালমার্ট থেকে মাঝারি মানের একটা সোয়াইন সাইকেল নিয়ে এসে বিপুল উদ্যমে আবার শেখা শুরু করলাম। নিজের সাইকেল, নিজের শরীর; তাই এবার তামাম দুনিয়া আমার সাইকেলের সামনে চলে আসলেও আর গা করলাম না। দ্রুত শিখতে লাগলাম, আর কোলাটরেল ড্যামেজ হিসেবে সাইকেলের ব্রেক, গিয়ার, সামনের চাকা ইত্যাদি নিজ নিজ কাজ ভুলে যেতে লাগলো। দেড়শো ডলারের সাইকেলের দশা দেখে নিজের মোরব্বা হয়ে যাওয়া পা, মচকে যাওয়া কবজি আর রক্ত জমে লাল হয়ে যাওয়া বুকের ব্যাথা ভুলে যাই। এবার দরকার মেরামতি।
আমার অ্যাডভাইজর একজন বাইসাইকেল ফ্রিক কাম উইজার্ড। তার কাছে মেরামতির টুল চাইতে গেলাম, সে তার টুলবক্স হাতে নিয়ে বললো দেখি সাইকেলের কী দশা করেছো। গুরুর কাজ জ্ঞান দান করা, তাই শুরুতেই আমাকে সাইকেলে চড়িয়ে, সাইকেল ধরে রেখে আমাকে প্যাডেল মারতে বলে কিছু আনুষঙ্গিক টিপস দিয়ে দিলেন। তার পর ঘন্টা খানেক মেরামতির পর আমার সাইকেল আবার নিজের চাকায় দাড়াতে পারলো।
সাইকেলের দশা দেখে আমার পড়ে যাওয়ার একটা আন্দাজ নিয়ে সব শেষে একটা মূল্যবান উপদেশ দিয়ে গুরুর বিদায়, “একটা হ্যালমেট কিনো তাড়াতাড়ি। মনে রেখো, তোমার শরীরে মাথাটাই একমাত্র তোমার অক্ষত রাখা জরুরী, এটাই সবচেয়ে কাজের জিনিস”। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি, আমার ফাঁকা মাথায় যে ঘুঘু চড়ে বেড়াচ্ছে, সেটা গুরু এখনো তাহলে বুঝে উঠতে পারে নাই!
ক্যাম্পাসের নিরাপদ রাস্তায় সাইকেল চালিয়ে টালিয়ে বেশ খানিকটা সাহস জমা হয় কোথাও। সেটা পুঁজি করে ওস্তাদ আরামের সাথে তাই একদিন মেইন রোডেই নেমে গেলাম। চ্যাপেল হিলের মোটর ড্রাইভারেরা ভদ্রলোক বিশেষ, তাই একবারো আমাকে ধাক্কা টাক্কা না দিয়ে আমার নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের ব্যাবস্থা করে দেয়। বিশেষত যখন দুনিয়াবি ব্যাপার স্যাপারে নিজেকে লুজার মনে হতে থাকে, আমি তখন সাইকেলের চাকা ঘুরিয়ে দ্বীনের পথে বেরিয়ে পড়ি।
আপহিল বেয়ে উঠতে গিয়ে জিভ বেরিয়ে যায়, আবার ডাউনহিলে হ্যান্ডেল ধরে রেখে হাওয়ার বেগে নেমে যাই। ঝুম বৃষ্টিতে ওস্তাদের নিষেধ না মেনে একদিন অনেক গাড়ীর সাথে পাল্লা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যা মজা পেয়েছিলাম, পুরাই আধ্যাত্মিক! অবশ্য মাঝে মাঝে সিগনাল গুলিয়ে গাড়ীর স্রোতের সামনে সাইকেল ঘুরিয়ে দেই, কখনো ডান বামের সুরাহা না করতে না পেরে উলটা দিক দিয়ে আসা গাড়ীর লেন ব্লক করে দেই।
গতকাল তো ৯০ ডিগ্রীর বাক নিতে গিয়ে এক সোনালী চুল মেয়ের সামনে সাইকেল উলটে পড়ে গেলাম। আমার আহত পৌরুষে মিষ্টি হাসির প্রলেপ দিয়ে সে বললো, “ডোন্ট ওরি, আমিতো সাইকেল চালাতেই জানি না”। তারপর কী হলো সেটা জানতে এবার নিশ্চয় সবার নড়েচড়ে বসার কথা। কী আর হবে, যেহেতু আমি ভালো ছেলে, উত্তরে একটা মাপা হাসি দিয়েই সাইকেলে চড়ে বসলাম আর কি
মন্তব্য
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ইয়ে, বলেই ফেলি... আমি সাইকেল চালানো আর সাঁতার কাটা দু'টোই যথেষ্ট ভালোভাবে পারি। তবে রামআছাড় খেয়েছি দুইবার।
প্রথমবার '৯৩ তে। ব্রীজের ঢাল বেয়ে নামছিলাম, পুরো রাস্তায় কোন ট্রাফিক নেই। প্যাডেলও মারছি পুরোদমে। হঠাৎ দেখি ঠিক সামনে এক বিড়ালছানা হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে। কিছু চিন্তা না করেই দিলাম ব্রেক ধরে টান, তারপরেই দেখলাম আমি পাখি হয়ে গেছি। একটা ডিগবাজি খেয়ে রাস্তার পাশের ঘাসে উলটে পড়লাম, আর শুয়ে শুয়েই দেখলাম সাইকেলটা নিজেই একটা ডিগবাজি খেয়ে আরো কিছুটা দূরে গিয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে উঠে দেখি বিড়ালছানা তখনো রাস্তার মাঝখানে বসে বেশ প্রশংসার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, ভাবটা অনেকটা, "বেশ তো সার্কাসের খেল দেখাও বাপু, আরেকখানা দেখাবে?"
এই আঠেরো বছর পরে এখানে সাইকেল চালাচ্ছিলাম একদিন, সামনে থেকে আসছিলো সেই রকম "হট" এর স্বর্ণকেশী। পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় আবার একখানা ভুবনভোলানো হাসি দিয়ে গেলো - নিজের অজান্তেই মুন্ডুটা ঘুরে গেলো তার দিকে। শেষটা যখন দেখা গেলো মাথা আর ঘোরাতে হলে ঘাড় মটকে ফেলতে হবে তখন সামনের দিকে তাকালাম, এবং তাকিয়েই দেখলাম একেবারে সামনে এক ল্যাম্পপোস্ট! সেটা এড়াতে গিয়ে আরেকবার হুমড়ি খেলাম ঘাসের উপরে। রাস্তার পাশেই এক পুলিশপুঙ্গব দাঁড়িয়ে ছিলো, খ্যাক খ্যাক করে হেসে বললো "ভাগ্যিস আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম না, এই দৃশ্য দেখলে শেষটা রাস্তার মাঝে গাড়িসুদ্ধই..."
হে হে, সোনালী চুল থেকে সাবধান!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
"এক স্বর্ণকেশী" টাইপিং এর ভুলে "এর স্বর্ণকেশী" হয়ে গেছে
আমি সাইকেল চালাতে পারি, সাঁতার কাটতে পারি, তবুও আমারই কিছু হয় না... তো আপনার আর হবে কোত্থেকে?
swine সাইকেল? ছি ছি, হারাম জিনিস!
আমার আগে আপনার পোষ্ট আইলো ক্যামনে!!
আমি সেই ১১টায় পোষ্ট মারছি!!
আমরা গরীব (অতিথি) বইলা কি আমাগো কোন মান সম্মান নাই!!
ভাই, আমার পোস্ট্ও এখনো আসে নাই। ভাই গরীবকো (অতিথিকো) কেউ ইনসাফ করে না?
আমরা গরীব (অতিথি) বইলা কি আমাগো কোন মান সম্মান নাই!!
মডুরা শুনলে আবার আমার "সিরাজনগর বৃত্তান্ত-২" না ঘ্যাচাং কইরা দে য়? দুনিয়ায় ভয়ে মনে হয় আর হ্বক কথা ক্ওন যাইবো না?
সজল ভাই; সাতার শিখে আরেকটা পোস্ট দেন। সুইমিং কীটস পরে নেমে পড়ৃন।
ভাইয়েরা, দুঃখ নিয়েন না, হা-চল আর অ-চল দের লেখা আর কমেন্ট মডুদের হাত ঘুরে আসে, আর সচলদেরটা সরাসরি পোস্ট হয়, সুতরাং একটু আগে পরে হবেই।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমিতো এখন সাইকেল চালাতে পারিই, সাতারও এই সেমিস্টারে হয়ে যাবে। আপনার "কিছু" হওয়ার জন্য শুভকামনা! আর ব্যাপারটা হালালই, Schwinn । কানের উপর দিয়া গুলি গেছে!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
সাবলিল লেখা,ভালো লাগলো
ধন্যবাদ চৌধুরী সাহেব!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমি সাইকেল চালাতে পারি না , বয়স প্রায় ত্রিশ হয়ে গেছে। আমি কি শিখতে পারব এই বয়সে। নিন্দুকেরা বলে সাইকেল শিখার বয়স নাকি পেরিয়ে গেছে। মতামত কাম্য আপনার মত বুজুর্গের কাছ থেকে।
সাইকেল চালানো শেখার আবার বয়স আছে নাকি, থাকলেও সেটা ত্রিশের মত এত কম কোন ভাবেই না। সাইকেল শেখার একটাই সমস্যা সাথে শেখানোর জন্য কারো থাকা লাগে, আমার ইনস্ট্রাক্টর আমাকে সব মিলিয়ে এক ঘন্টার মত সময় দিয়েছিল, সাইকেল ধরে রেখেছিল মনে হয় পনেরো মিনিটের জন্য। আমার নাম নিয়া একটা সাইকেল কিনেই ফেলেন আর গুরু ধরেন, সাইকেল শিক্ষা হচ্ছে গুরুমুখি শিক্ষা
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
কিনে ফেলেছি এখন গুরু ধরতে হবে
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
নড়েচড়ে বসার আগেই যেভাবে সাইকেলটা ব্রেক করলেন তাতে আর যাই হোক আপনার "ব্রেকিং" ক্যাপাসিটি সম্পর্কে একটা যুৎসই ধারনা হলো
আপনার কথায় উইট পাওয়া গেলো জায়গায় জায়গায়, বিষয়টা আমার বরাবরই খুব পছন্দ! ভালো থাকবেন, শুভেচ্ছা,
আঘাত এড়াতে সময়মতো ব্রেক কষা চাই । পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
দারুণ লিখেছেন
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমি একটা মটর সাইকেল কিনছি, কিন্তু চালাইতে পারি না। এই কারনে বন্ধুরা আমারে পচাইয়া মারছে!!! আপনেরে দেইখা (লেখা পইরা আরকি) সাহস পাইলাম, গুরু। দোয়া কইরেন, আর পারলে অধমরে এটটু পানি পরা যদি দিতেন
চালাতে পারে এমন কারো কাছ থেকে শিখে ফেলুন, নিজে নিজে শেখার চেয়ে সেটা সহজ হবে। আর দিলাম চাইরধারে ফু, যেকোন জলাধার থেকে পানি তুলে খান, কাজ হবে আশা করা যায়। বিফলে মূল্য ফেরত!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ত্রিচক্রযান চালানো কিন্তু বাইক থেকেও কঠিন! একবার টান ধরলে সামলানো কঠিন।
লেখা ভালো লেগেছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
রিকশা চালাতে নিশ্চয় অনেক শক্তি লাগে, আর বাইসাইকেল তো ব্যালেন্সের ব্যাপার। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
খুব মজা পেলাম। আরো লিখুন।
পড়াচোর।
ধন্যবাদ
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
মজা পাইলাম। আমিও মনে হয় আইনস্টাইন কিসিমের তাই আমিও সাঁতার, সাইকেল এগুলা পারিনা। সাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে বড় ভাইর কাছে এত মাইর/বকা খাইতে হইসে যে সাইকেল দেখলে ওইগুলাই মনে আসে।
বাইসাইকেল ভালো লাগলে "life Cycles" ডকুমেন্টারিটা দেইখেন। ভালো না লাগলে মূল্য ফেরত। যারা সাইকেল পছন্দ করেন না কিন্তু প্রকৃতি ভালো লাগে এইটা তাদেরও ভালো লাগার কথা। ট্রেইলারটা দিলাম http://www.youtube.com/watch?v=aJgaSTuwp7I
মাইর আসলে শেখানোর জন্য কোন ভালো পদ্ধতি না। ট্রেলারটা দেখেতো ভয় পাইলাম, মানুষের তো অনেক সাহস!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আক্ষরিক অর্থেই তার কথাগুলো উপশমের কাজ করছে । পড়ার জন্য ধন্যবাদ রোমেল ভাই।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
সাঁতার শিখলাম মাসখানেক হলো, এইবার তাহলে সাইকেল চালানো শেখার পালা
শুভ কামনা রইলো
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ভালো লাগলো খুব। সাইকেল চালানোর কিছু টিপস দিতে পারবেন ভাইয়া, যেমন ধরেন ৩ দিনে সাইকেল চালানো টাইপ। আমার খুবই ইচ্ছে শিখার জন্য, কিন্তু ভয় লাগে, বুড়া বয়সে হাড়গোড় ভাঙলে আর রক্ষে নাই।
প্রথমে জ্ঞানের কথা বলি। রাইট ভ্রার্তৃদ্বয় ছিলেন বাইসাইকেল নির্মাতা। বাইসাইকেল বানাতে বানাতে তাদের মাথায় চিন্তা আসে বাইসাইকেলের মত অ্যাস্ট্যাবল যান চালানোর সময় ঠিক স্ট্যাবল হয়ে চলে, সুতরাং উড়োযান বানাতে স্ট্যাবল স্ট্রাকচার বানানোর দরকার নেই। উল্লেখ্য, তাদের আগে সবাই জবরজং স্ট্যাবল স্ট্রাকচার বানানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। জ্ঞানের কথা শেষ।
সাইকেলকে স্থির করতে চাইলে তার মাঝে যথেষ্ট গতি সঞ্চার করতে হয়। শুরুতে এক পা প্যাডেলের (৪৫ ডিগ্রীতে প্যাডেল রাখতে হবে) উপর রেখে অন্য পা একটু পিছিয়ে মাটিতে রেখে সাইকেলের উপর দাড়াতে হবে। তারপর মাটিতে রাখা পা দিয়ে ধাক্কা এবং প্যাডেলে রাখা পা দিয়ে প্যাডেলে চাপ দিলে সাইকেল গতিশীল হবে। সাইকেল কয়েক পা এগুনোর পর মাটিতে পড়ে যাওয়ার নিয়ম । মনে রাখতে হবে এই ধাপে সিটে বসার চেষ্টা না করাই ভালো।
এবার আগের মতই সাইকেল কে গতিশীল করে সীটে বসার চেষ্টা করতে হবে। সাইকেল পড়ে যেতে চাইলে যেদিক পড়বে সেদিকে শরীর মুভ করা দরকার। বলাই বাহুল্য কয়েক হাত এগুনোর পর আবারো মাটিতে পড়ে যাওয়ার নিয়ম।
সীটে বসে কয়েক সেকেন্ড থিতু হওয়া রপ্ত হলে এই ধাপ। যে পা এত ক্ষণ মাটিতে থেকে ধাক্কা দিচ্ছিলো, তাকে কাজে লাগাতে হবে। ধরা যাক বাম পা দিয়ে প্যাডল মারা শুরু করলেন, প্যাডল মারা মাত্র ডান দিকের প্যাডল ডান পায়ের নীচে চলে আসবে, সুতরাং এবার ডান পা দিয়ে ওই প্যাডলে চাপ দিতে হবে। এরপর পড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এই সাইকেল রিপিট করতে হবে। ব্যালেন্স রাখার একই নিয়ম।
এরপরের ধাপটা জরুরী, যখন প্যাডল মেরে সামনে এগুতে থাকবেন, তখন পেছন থেকে সাইকেল যেন না পড়ে যায়, এই জন্য কারো ধরে রাখা জরুরী। আমার ক্ষেত্রে দুই দিন মিলিয়ে পনেরো মিনিটের কম ধরে রাখা লেগেছিলো। এবং এই সময়টাতে নিজের শরীরকে ব্যালেন্স রাখার ব্যাপারটা শিখে নিতে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, দুই চাইরটা হাড় ভাঙ্গা(এমনি বললাম ), পায়ের চামড়া ফালাফালা হয়ে যাওয়া এইগুলো হচ্ছে খুব জরুরী।
আর মোদ্দা কথা হচ্ছে, সাইকেল চালানো একটা প্র্যাকটিকাল কাজ, চালাতে পারে এমন কেউ আশে পাশে থাকলে তার ডিরেকশন ফলো করে শেখা সহজ। থিওরীতে কাজ হলে আমিতো হাটতে শেখার আগেই সাইকেল চালানো শিখে যেতাম
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
উচ্চ-মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান বইয়ে সাইকেলের একটা অংক ছিল না?
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আমি হ্যান্ডেল না ধরে সাইকেল চালাইতে পারি.........ইয়য়য়য়য়য়াহ!
আর আপনার লেখা বরাবরের মতই
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
এই লেখা সাইকেলের অংক দিয়ে শুরু করার ইচ্ছা ছিলো । আমি আপাতত এক হাত দিয়ে ধরে পারি, কয়েক মাস যাক, তখন আমিও...
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমি হ্যান্ডেল না ধরে রাস্তায় বাঁক নেয়া সহ পাঁচ কিলোমিটার চালানোর রেকর্ডধারী ...ইয়ায়ায়ায়ায়ায়হুহুহুহুহুহ
যাক, আপনের কথায় ভরসা পাইলাম। সাইকেল চালানি শিখে ফেলতে হবে এইযাত্রা। তাতেও যদি কোনো সোনালী চুলের বালিকার একটা হাসি মিষ্টি মেলে। শুধু রাস্তাতেই চিৎপটাং কেনো, আল্পসের চূড়া থেকেও সাইকেল নিয়ে ইয়ালি বলে লাফিয়ে পড়ার জোশ পাবো তাইলে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আল্পস থেকে লাফ দেন, সোনালী চুল নার্স না হয় সোনালী চুল ফেরেশতা কারো সাথে দেখা হয়ে যাবে ঠিক! কিন্তু আপনি সাইকেল চালাতে পারেন না! আর আমারে আগের একটা লেখায় ঝাড়ি দিছিলেন!!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অনেকদিন পর আপনার কোন লেখা পড়লাম । বরাবরের মতোই বেশ সুন্দর গুছানো লেখা । আপনার অভিজ্ঞতাগুলো পড়ে মজা পেলাম । বিশেষ করে স্বর্ণকেশীর ঘটনাটা আগে ভাবতাম এধরণর ঘটনা কেবল সিনেমাতেই ঘটে । কিন্তু আপনি ভালো মানুষ হলেও বেরসিক
অনেকদিন পর আপনার কোন লেখা পড়লাম । বরাবরের মতোই বেশ সুন্দর গুছানো লেখা । আপনার অভিজ্ঞতাগুলো পড়ে মজা পেলাম । বিশেষ করে স্বর্ণকেশীর ঘটনাটা আগে ভাবতাম এধরণর ঘটনা কেবল সিনেমাতেই ঘটে । কিন্তু আপনি ভালো মানুষ হলেও বেরসিক
ধন্যবাদ রিদওয়ান। বেশি রসিক হতে গেলে তো আর ভালো মানুষ থাকা যাবে না হে!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
মজা পেলাম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ হে!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমার জীবনে ৩ টি অবশ্য শিক্ষণীয় ছিল । ১। দুই চাকার সাইকেল চালানো ২। গাছ বেয়ে উঠা ৩। সাঁতার শেখা ১ নং স্বপ্ন পুরন হয়েছে , ২ নং স্বপ্ন পুরনের আশা ( আসলে বয়স ) নেই , ৩ নং স্বপ্ন পুরন করতে পারি কিনা দেখি । ভাইজান কি সাতার কাট তে আর গাছে চরতে পারেন?? দেশে আসেন ( অথবা আমি আমেরিকা যাই ) , দেখা যাবে কার সাইকেল এর স্পীড কত ??
১, ২ পারি। অ্যামেরিকা চলে আসেন, হয়ে যাক গতির লড়াই
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
বরাবরের মতই দারুন লেখা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
ধন্যবাদ। আয়নামতির ডাকে ফিরে এলেন তাইলে
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
সপ্তাহখানেক হলো ৪০ টাকায় একটা রংচটা সাইকেল কিনেছি। বাংগালী বন্ধুরা এখানেও হাইকোর্ট দেখিয়ে দিলো। তবে আমার অপটুতায় মুগ্ধ ইরানি বন্ধুর সহায়তায় কিছুটা শিখে ফেলেছি। কিন্তু স্বর্ণকেশীদের হাসির ভয়ে ভোরবেলা ছাড়া বের হওয়ার সাহস পাচ্ছি না।
কিন্তু সাতারটা কিছুতেই হতে চাচ্ছে না, ৪ ফুট পানিতে গলা ডুবিয়ে অন্যদের দেখাই আপাতত ভরসা।
পি এস: আপনার লেখার হাত অসাধারণ
স্বর্ণকেশীদের হাসি ব্যাপারটা ভয়ের ব্যাপার হবে কেন, প্রেরণা হিসেবে নিন। বলা তো যায় না, পড়ে গেলে কেউ হয়তো হাত ধরে তুলে যত্নআত্তি করলো! সাতার হচ্ছে আমার নেক্সট ফ্রন্টিয়ার, দেখা যাক।
উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ভারী আমার অসাধ্য সাধন করেছেন একটা! বুড়ো বয়সে সাইকেল চালানো শিখে আবার পোষ্ট ঝেড়ে দেয়া হয়েছে আমি মোটেও গেছো মেয়ে না, তারপরও আমি সাইকেল চালাতে পারি(তবে স্পীড তুলতে পারিনা ), সাঁতার জানি। ছোটবেলায় তরতরিয়ে পেয়ারা গাছে উঠেছি। এখানে তেমন আমিবান্ধব গাছ দেখিনা। দেখলেও গাছগুলো এমন গোমড়ামুখো, ইচ্ছে করেনা উঠে ব্যাপারটা ঝালিয়ে দেখি গাছে ওঠা ভুলে গেলাম কিনা।। বৃষ্টি মাথায় করে দ্বীনের পথে বের হওয়াটা কোন কাজের কথা না। কথাটা মনে রাখলে ভালো হয়
লেখা বরাবরের মতই উপাদেয় হয়েছে
এক্কেবারে ঠিক্কইছেন। ছুটুবেলায় যখন লুকোচুরি খেলতাম তখন ঝাঁকড়া আতাগাছের ডালে উঠে লুকিয়ে পড়তাম, বান্ধবীরা বেণীদুলিয়ে তলা দিয়ে ছুটে যেত কিন্তু আমায় খুঁজে পেত না। এখন মনে হয়, দুয়েকজনের হাতে ধরা দিলেই হয়ত ভালো হত...
ছোটবেলাতেই বেশ কেষ্টবাবাজী ছিলেন দেখা যায়!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আহেম আহেম... হেঁ হেঁ...
আহা, মাত্র কৈশোর পেরোলাম, এখনি বুড়ো বলা ঠিক না। গাছ আমিও বাইতে পারি, আমার স্পেশালিটি হচ্ছে সুপোরি গাছ। এত বাছ বিচার করে গাছ বাইলে তো হবে না, আমাদের পূর্বপুরুষেরা তো নির্বিচারে গাছ বাইতো! তবে আপনি কামেল ইনসান, বলতেই হচ্ছে। দ্বীনের পথে বের হওয়ার সময় কি আর বৃষ্টি দেখে ঘরে বসে রইলে হবে!
পড়ার জন্য ধন্যবাদ
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
হায় আফসোস! হায় সে ঝাঁকড়া আতাগাছ! হায় সেই বেণীদুলানো বান্ধবীসকল...কোথায় তোমরা! এসে দেখে যাও
সেদিনের সেই বালক কীসব বলছে নাহ্ এই ছেলেটার যে কী হবে সে চিন্তায় বাঁচিনা গো
মোর তরে এক ফোঁটা রেখো অশ্রুজল...
আহা, মনটা গার্ডেন গার্ডেন হয়ে গেলো!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
কেউ কি আছেন যে ৬৫ কেজি ওজনের ( নাকি ভর ) অধম ধামরা কে গাছে চরা শিখিয়ে একান্ত বাধিত করবেন ? আছেন নাকি ভাই কেউ আগ্রহী ??
আর , সজল , আমার এমেরিকা আসতে আরও মিনিমাম ৩ বছর...। এত বছর পর কি আর কম্পিটিশন এর জোশ থাকবে ( নাকি হেরে যাবার ভয় ) ??
গাছে চড়া আবার শেখাবে কে, গাছ দেখে উঠে পড়ুন।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
নতুন মন্তব্য করুন