সলোমন আইল্যান্ডের স্টলের সামনে এক বিশাল দেহী রাজার ছবি রাখা, তার সামনে দাঁড়িয়ে এক সলোমন আইল্যান্ডার সেই রাজার গুণগান করে যাচ্ছে। তার বর্ণনার শেষ দিকে উচ্ছাস কমে এসে দূরবর্তী বিষাদের ছোঁয়া, সারমর্ম করলে দাঁড়ায়, "আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম"। তারপর? "দেন দ্যা ইউরোপিয়ান কেইম, এন্ড মেসড এভরিথিং"। আমার সাথে অ্যামেরিকান রেড ইন্ডিয়ান কারো সাথে দেখা হয়নি কখনো, তবে আন্দাজ করতে পারি, এই বিষয়ে তাদের কী বলার থাকতে পারে।
অ্যামেরিকার ভিসা পাওয়া নিয়ে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে নিশ্চয় কেউ একজন এই জোকটা বানিয়েছিলো, "একমাত্র কলম্বাসই ভিসা ছাড়া অ্যামেরিকা ঢুকেছিলো"। অ্যামেরিকা বলতে উত্তর, মধ্য, দক্ষিণ অ্যামেরিকা মিলিয়ে যে নতুন পৃথিবী বুঝানো হয়, সেটা যদি ধরি, তাহলে এই জোকের কথা সত্যি। কিন্তু ইউএসএতে ঢুকার সৌভাগ্য এমনকি কলম্বাসেরও হয়নি!
সে যাই হোক, এইসব পুরান কাসুন্দি ঘাটছি কেন? ফ্লোরিডা ভ্রমণের দ্বিতীয় দিনে ধারে কাছে কোথাও ঘুরে আসার প্ল্যান করাতেই কল্যাণদা বললো অ্যামেরিকার সবচেয়ে পুরনো শহর আর সর্বপ্রথম ইয়োরোপিয়ান সেটলমেন্ট সেইন্ট অগাস্টিন শহরের কথা। মোটামুটি সবজান্তা আমি সেইন্ট অগাস্টিনের নাম কখনো শুনিনি, তাই হালকা অবিশ্বাসের সাথেই জায়গাটার দিকে রওয়ানা দিলাম। সেই ভ্রমণের গল্প আর ছবিতো সবাই এমনি এমনি শুনতে আর দেখতে চাইবে না, তাই ট্যাবলেটের মিষ্টির মত ইতিহাস মিশিয়ে দিচ্ছি ফাঁকে ফাঁকে।
গেইনসভিল থেকে সেইন্ট অগাস্টিন প্রায় দেড় ঘন্টার দূরত্বে। অল্প দূরত্ব, কিন্তু পথের উপরে নীচে পথের এত মোচড়, মনে হল ফেরেশতাদের সাইন, কোসাইন ইত্যাদি ত্রৈকোণমিতিক বক্ররেখা শেখানোর সময় বুড়ো ঈশ্বর তার বিশাল লাঠি দিয়ে এখানেই ছবি এঁকেছিলেন।
আগাছা হোক, বন হোক আর ক্ষেতই হোক, রাস্তার দুইপাশ ব্যতিক্রমহীনভাবে সবুজ। তেপান্তরের মাঠে হঠাৎ হঠাৎ একটা দুইটা একলাটি বাড়ি। সব কিছু সাজিয়ে গুছিয়ে প্রস্তুত, শুধু ছুটন্ত কিশোর কিংবা খিলখিল হাসিতে নিস্তব্ধতা ভেঙে দেয়ার মত কিশোরীর অভাবেই দৃশ্যটা জীবন্ত হতে পারছে না।
তারপর হঠাৎ করে এক পাশে উদয় হয় জলরঙে আঁকা কিছু দৃশ্যপট। সবুজ খয়েরির নানা স্তর সুষম ভাবে সাজিয়ে তার উপর মেঘের টপিংস। কিংবা শ্রীমঙ্গলের সেই বিখ্যাত নানা লেয়ারের চায়ের মত।
গোড়ার ইতিহাস
পন্সে দি লিওন ব্যুলেভার্ড হয়ে সেইন্ট অগাস্টিনে ঢুকলাম। ব্যাপারটা কাকতালীয় কিনা জানি না, কিন্তু এই ভদ্রলোকই সর্বপ্রথম সেইন্ট অগাস্টিনে এসে একে স্প্যানিশ সাম্রাজ্যের মাঝে কাগজে কলমে ঢুকিয়ে নেন। সে ১৫১৩ সালের কথা, মধ্য ও দক্ষিণ অ্যামেরিকা নিয়ে কামড়াকামড়ি শুরু করে দিলেও, এর আগে উত্তর অ্যামেরিকায় ইয়োরোপিয়ানদের পা পড়েনি। তারো সাত বছর আগেই পটল তুলেছেন মশলার লোভে পশ্চিমের পথে ভারত আবিস্কার করতে গিয়ে ভুল করে অ্যামেরিকা আবিস্কার করে ফেলা কলম্বাস। ১
কাগজে কলমে স্পেনের অন্তর্গত হলেও, বেশ কয়টা সামরিক অভিযান চালিয়েও পরবর্তী পঞ্চাশ বছরেও সেইন্ট অগাস্টিনকে বাগে আনতে পারেনি স্প্যানিশরা। রেড ইন্ডিয়ানদের সাথে এমনি এক যুদ্ধে আহত হয়ে অ্যামেরিকার মায়া ছেড়ে স্বর্গরাজ্যে উপনিবেশ গড়তে রওয়ানা দেন স্বয়ং পন্সে ডি লিওন।
বুড়িগঙ্গা দিয়ে, থুক্কু, আটলান্টিক দিয়ে অনেক পানি গড়ায়। গন্ধে গন্ধে হাজির হওয়া ফরাসীরা যুদ্ধ টুদ্ধ করে দুর্গ বানিয়ে ঘাটি গেড়ে বসে ১৫৬২ সাল নাগাদ। নতুন পৃথিবীর বিশাল বিস্তার দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়েই কিনা, ফরাসীরা ইতস্তত ঘুরে বেড়ায় ফ্লোরিডার সংলগ্ন উপকূল ধরে। তারপর থিতু হয়ে ফোর্ট ক্যারোলিন দুর্গ বানিয়ে সুখ শান্তিতে বসবাস করতে থাকে।
স্প্যানিশরা তখন ক্যারিবিয়ান আর দক্ষিণ অ্যামেরিকায় উপনিবেশ গড়ে "গান, জার্মস আর স্টিল" এর দাপটে বেশ করে টরে খাচ্ছিলো। এমন সময় বাগড়া বাধায় ফোর্ট ক্যারোলিন থেকে পালিয়ে পাইরেট বনে যাওয়া ফরাসী বিদ্রোহীরা, বেশ কিছু জাহাজ লুট করে স্প্যানিশদের ব্রহ্মতালু পর্যন্ত জ্বলিয়ে দেয়। কাজে কাজেই, আজকের দিনে অ্যামেরিকা যেমন টেররিস্ট দমন করার নামে ইরাক, আফগানিস্তানে দক্ষযজ্ঞ বাঁধিয়ে দেয়, স্প্যানিশরাও ফরাসীদের উৎখাতে সৈন্যবহর পাঠায় সেইন্ট অগাস্টিন অভিমুখে।
স্প্যানিশ হানাদারদের হঠিয়ে দিতে রওয়ানা হওয়া ফরাসী জাহাজের বহর পড়ে বিশাল ঝড়ের কবলে। এই সুযোগে স্প্যানিশরা স্থলপথে হাজির হয় ফোর্ট ক্যারোলিনে, তারপর যেমনটা কর্টেজ করছিলো অ্যাজটেকদের সাথে, তেমন করে কচু কাটা করে দুর্গে থেকে যাওয়া হাতে গোণা কয়েকশো সৈন্যদের। এই দিকে ঝড় থামে, এরই মাঝে স্প্যানিশরা ফিরে যায় তাদের আগের অবস্থানে, আর গিয়েই পায় ঝড়ের কবল থেকে বেঁচে যাওয়া হাতে গোণা ফরাসী সৈন্যদের। রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয় তারা মাতানজাস ইনলেট জুড়ে; মাতানজাস স্প্যানিশ শব্দ, যার বাংলা মানে কোতল। মাতানজাস ইনলেট সার্ফিং শেখার জন্য বেশ ভালো জায়গা, পাঁচশো বছরে ফরাসীদের রক্ত ধুয়ে টুয়ে গেছে।
শহরটার নাম সেইন্ট অগাস্টিন দেয় এই অভিযানে জয়ী স্প্যানিশেরাই। ২
ক্যাস্টিলো ডি স্যান মার্কোস
বৃষ্টি সাথে আছে আমাদের পুরোটা দিন জুড়েই, কিছু সময়ের জন্য থেমে গেলেও আকাশ কালো করে পাহারা দিয়ে বেড়াচ্ছে মেঘের দল। সেই মেঘের নীচে সদ্যধুয়া সবুজের উপর এক চিলতে লম্বাটে ধুসর স্থাপনা, সামনের সাইন দেখে জানা গেলো এ হচ্ছে ক্যাস্টিলো ডে স্যান মার্কোস।
কাছে এগিয়ে গেলে চোখে পড়ল গোয়ার প্রহরির মত বিদ্রোহী ভঙ্গিতে দাঁড়ানো গাছ।
এই দুর্গের ভেতরে ঢুকে যে দেখব এর মাহাত্ম্য কী? ফরাসীদেরকে তাড়িয়ে উপনিবেশ গড়ে বসা স্প্যানিশদের শুরুর শতকটা খুব একটা শান্তিতে কাটেনি। তাদের সামলাতে হচ্ছিল ত্রিমুখি চাপ। স্থানীয় ইন্ডিয়ানদের সাথে ফরাসীদের খুব বন্ধুত্ব থাকলেও, স্প্যানিশদের সাথে তাদের শত্রুতার কোন কমতি ছিলো না। মাতানজাসের গণহত্যার প্রতিশোধ নিতে এসে এক ফাঁকে ফরাসীরা তাদের সাবেক দুর্গ ফোর্ট ক্যারোলাইনে জাকিয়ে বসা স্প্যানিশদের কচুকাটা করে। নতুন পৃথিবীতে ইচ্ছামত ছড়িয়ে ছিটিয়ে খাচ্ছে স্প্যানিশ আর ফরাসীরা, ব্রিটিশ শকুনেরাই বা কতদিন অ্যামেরিকা থেকে দূরে সরে থাকে! স্প্যানিশরা ঝামেলা পাকিয়ে বসলো ব্রিটিশদের সাথেও, ক্যারিবিয়ানে তাদের মাছ ধরার জাহাজ হারাক আর ভার্জিনিয়াতে বৃটিশ কলোনি গুম হয়ে যাক, গিন্নি বলেন, "স্প্যানিশ" বেটাই চোর।২
একশ বছরের ব্যবধানে দুই বার ব্রিটিশদের হাতে বেধড়ক মার খেয়ে স্প্যানিশরা তখন এই দুর্গ গড়ায় মন দেয়। ১৬৭২ সালে বানানো শুরু করা দ্বীপটার নকশা দেখে আমার মনে হলো তৎকালীন স্প্যানিশরা জ্যামিতি বিষয়টা নিশ্চয়ই অনেক পছন্দ করতো।
দুই স্তরের পরিখা আর তার উপরের ড্রব্রিজ পেরিয়ে দুর্গে প্রবেশ করা গেলো। ঢুকতেই চোখে পড়লো দুর্গের ছাদ থেকে সমুদ্রের দিকে তাক করা কামানের সারি।
ভেতরের ড্রব্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলার কসরত করতে গেলে নাইকন ক্যামেরা হাতে এক যুগল তাদের ছবি তুলে দিতে বলে, আমার হাতে নাইকন দেখতে পেয়েই তারা আমার দক্ষতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যায়। ক্যামেরা তাক করে ব্রিজটা ফাঁকা হওয়ার অপেক্ষা করতে থাকলে এক হাস্যোচ্ছল পরিবার আঙুল উচিয়ে ভি দেখিয়ে এগিয়ে আসতে থাকে, কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তাদের ছবি তুলতে তুলতে বেশ খানিকটা দেরী হয়ে যায়।
দুর্গের ভেতরে বর্গাকার জায়গা জুড়ে সবুজ চত্বর। চত্বরের চারপাশে ব্যারাক, বন্দীশালা, অস্ত্রাগার। ব্যারাকে কাঠের বিছানার উপর পাতা বিছানা দেখে মনে হচ্ছিলো সন্ধ্যাটা নেমে আসলে সত্যি সত্যি বুঝি স্পেনীশ সৈন্যরা ঘুমাতে আসবে।
ভিতরের একটা ঘরের দেয়ালে ব্রিটিশ নৌবহরের স্কিমাটিক চিত্র আকা, ব্রিটিশরা স্প্যানিশদের ভালোই জালিয়েছে বুঝা গেলো। ছাদের কাছে স্প্যানিশে লেখা অর্ধ দুর্বোধ্য ম্যাসেজ, আর অর্থ আজো কেউ বের করতে পারেনি। কিছু অতীত ইতিহাসের গর্ভেই হারানো ছাড়া কোন উপায় নেই, যত চেষ্টাই করুক বাঁচার। একই ঘরের দেয়ালের ছোট ছিদ্র দিয়ে দেখতে পেলাম এক ভয়ানক অন্ধকার বন্দীশালা। ভিতরে একটা বৈদ্যুতিক বাতি আছে, তারপরো তিন সেকেন্ড ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলে বেচারাকে তুলে আনা গেলো না।
পরের ঘরে রাখা চাকাওয়ালা কামান। কোন রকমে মানুষ ঢুকে যাওয়ার একটা গর্ত দিয়ে পাশের রূমে গেলে মনে হলো এটাও সম্ভবত এক বন্দীশালা। ছাদ থেকে ঝুলে থাকা বাতি এই বিপুল অন্ধকারের সামনে অসহায়।
সিড়ি বেয়ে ছাদে উঠে গিয়ে কামানের সামনে দাঁড়িয়ে দুর্গ পাহারা দিত স্প্যানিশ প্রহরীরা। বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কারণে দুর্গ/মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ এই সিড়ি পথ বন্ধ করে দিয়েছে। কীভাবে দুর্গরক্ষা করা হতো, তার একটা চিত্রায়ন এখানে দেখা যেতে পারে।
সময়ের থাবায় কোট ডে আর্মসের মলিন দশা। তাই আসলটা খুলে ভেতরে প্রদর্শনীর জন্য রেখে, তার অবিকল প্রতিরূপ বানিয়ে বাইরের দেয়ালে বসিয়ে রেখেছে।
ব্রিটিশরা দুই বার অবরোধ করে, তোপ দাগিয়েও এই দুর্গের দেয়ালের কোন ক্ষতি করতে পারে নি। একবার কিউবার হাভানা থেকে স্প্যানিশ অবরোধের মুখে পড়ে আর আরেকবার সাপ্লাইয়ের অভাবে ব্রিটিশেরা পালিয়ে বাঁচে। প্রশ্ন জাগলো মনে কী দিয়ে বানানো এই দেয়াল, দেয়ালের পিঞ্জর হা করে সেই উত্তর দিয়ে দিলো।
ব্রিটিশরা অবশ্য একবার আপসে এই দুর্গের দখল নেয়, তাদের দখল করা হাভানা স্প্যানিশদের ফিরিয়ে দেয়ার বিনিময়ে। তবে ব্রিটিশ প্রশাসক স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে এতটা অজনপ্রিয় ছিলেন যে শেষতক স্প্যানিশদের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে শান্তি খুঁজেন।
যত ঝড়-ঝাপটাই যাক, এই দুর্গে এখন কোন সত্যিকার সামরিক আয়োজন নেই, পাখিদের তাই বসতে কোন মানা নেই।
দুর্গের বাইরের চত্বরে বসানো আছে নানা আকৃতির কামান।
আনাস্তাসিয়া
সেইন্ট অগাস্টিন থেকে ব্রিজ চলে গেছে আনাস্তাসিয়া দ্বীপে। ব্রীজের গা ঘেষে জটলা পাকিয়ে আছে সুদৃশ্য কিছু জলযান। ব্রীজটা বেশ সাজানো গোছানো, দুই কিনারে পায়ে হাঁটার জায়গা আছে বেশ ভালো মত।
দেখার মত আছে একটা লাইটহাউস, যা আজকের দিনেও জলচর যানকে পথ দেখিয়ে যাচ্ছে। আনাস্তাসিয়ার সমুদ্র বা ইনলেটে এক জেটিতে দাঁড়িয়ে গাড়িতে চাপিয়ে নৌকা নিয়ে বেড়াতে আসা কিছু পরিবার দেখি। আশেপাশে নৌকা ভেরানোর কিংবা মাছ ধরার কিছু পাটাতন।
এক তরুণ নৌকা নিয়ে ছুটে গেলে একটা ইয়ট কিনে ক্যারিবিয়ানে ঘুরতে যাওয়ার বহু পুরান পরিকল্পনা নতুন করে জেগে ওঠে। মাছের আশায় কিছু সীগাল উড়ছিল। সীগাল আমার পছন্দের পাখি, ছবি তোলার প্রিয় বিষয়ও বটে। কিন্তু এমন সময় কিনা তারা গলা খুলে এমন বিশ্রী স্বরে চেচামেচি শুরু করল, তাদের প্রতি আমার প্রেম এক ঝটকায় ধুয়ে মুছে শেষ।
ফ্ল্যাগলার কলেজ
বিশ্রী রকমের বৃষ্টি শুরু হল, এমনিতে ঘুরে দেখার জন্য মন্দ না, কিন্তু ক্যামেরার লেন্স পানি খেয়ে গেলে কী হবে সেই চিন্তায় পেরেশান হয়ে আবার সেইন্ট অগাস্টিনে ফিরে আসি। ফ্ল্যাগলার কলেজ ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নেই। উনিশ শতকের অ্যামেরিকান ধনকুবের হেনরি ফ্ল্যাগলার সেইন্ট অগাস্টিনে স্প্যানিশ রেনেসন্সের রীতিতে এক বিলাসবহুল হোটেল বানিয়েছিলেন, চল্লিশ বছর আগে যেটাকে একটা আবাসিক কলেজে রূপান্তর করা হয়। হয় ভুল দিনে, না হয় ভুল সময়ে গিয়েছিলাম, তাই সামনের গেট বন্ধ। বৃষ্টির ফোঁটা বাচিয়ে শিকলের গরাদের ফাঁক দিয়ে ছবি তুলি।
এই ফাঁকে বাদলদা তার কাঠবিড়ালির শরীর নিয়ে কোন ফুটো গলে কলেজের ভিতর ঢুকে যায়। একটু খুঁজতে আমার ঢোকার মত জায়গাও মিলে।
ভেতরের লবি দেখে মনে হলো ভ্যাটিকানের কোন গীর্জার ভেতর এসে পড়েছি হয়ত। উপরে উঠলাম না, কারণ উপরে ছাত্র/ছাত্রীরা থাকে জানিয়ে স্পষ্ট করেই নিষেধ করা আছে।
ঝাড়লণ্ঠন আর রমণীমূর্তিময় কলাম দিয়ে ঘরের ভেতরটা সাজানো। ঘুলঘুলিতেও জ্যামিতিক কারসাজি।
ফ্ল্যাগলার কলেজ দেখা শেষ হলে মনে হয় এক দিনের জন্য অনেক পর্যটন হলো, তাই ফিরতি যাত্রা করি আমাদের "বেসক্যাম্প" গেইনসভিলের দিকে।
মন্তব্য
দারুণ । আমাদেরও বেসক্যাম্প গেইন্সভিল ছিল। একবারে অখাদ্য শহর।
দূর্গের ভিতর যাওয়া হয়নাই, ভালু পাইলাম। এরকম বন্দীশালা দেখসিলাম ক্যেবেক সিটিতে, অন্ধকার সেলের ভিতর গায়ে কাপড় ছাড়া বন্দীকে ফ্লোরে ফেলে রাখা হত। ক্যানাডার ঠান্ডা, চিন্তা কইরা দেখেন
..................................................................
#Banshibir.
হ গেইনসভিল পঁচা শহর। ওয়ালমার্ট ছাড়া দেখার কিছু নাই
এই রূমটা দেখে আমার সিরাজের অন্ধকূপের কথা মনে পড়ে গেছিলো।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
বড়ই সুন্দর মের্কিন মুল্লুক -- যামুই যামু।
গত পর্বেতো ট্যাকা পাইলেনই, এখনো যান নাই?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
দারুণ লাগল। ছবি ও লেখা অসাধারণ।
কিছু ছবি একটু ঘোলাটে কি মেঘলা আকাশের জন্য?
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
ধন্যবাদ
ঘোলাটে নাকি অন্ধকার? বৃষ্টি ছিল, আকাশ মেঘলা ছিল, তবে এডিট করে ব্রাইটনেস বাড়ানো যেত কয়েকটা ছবিতে। আলসেমি করে করা হয় নাই।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
মেঘ দেখতে খুব ভালো লাগলো।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
সুন্দর সব ছবি, লেখাও দারুণ।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
সুন্দর ছিমছাম লেখা। অনেক কিছু দেখা ও জানা হল। সজল ভাইকে ধন্যবাদ!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
বাহ, খাসা!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আহা, এইটা আমার বাসার কাছেই ছিলো। যাবো, যাবো করে আর যাওয়াই হলো না । কাছেই 'রিপ্লে'স বিলিভ ইট অর নটের' একটা মিউজিয়াম আছে। ঐটাও শুনেছিলাম ভালো।
রিপ্লি'স বিলিভ ইট অর নট - এ ইচ্ছা করেই ঢুকিনি। অবশ্য এই মিউজিয়াম মনে হয় সব জায়গাতেই আছে, কী ওয়েস্টে গিয়েও দেখা পেলাম।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
দারুণ! চলুক!!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
পরের পর্বের
facebook
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ইশ! আমি দুই দিন দেরি করে পড়লাম, ধোঁয়া ওঠে গরম ভাতের বদলে ঠান্ডা ভাত
তবে দেরীতে পড়লেও খুব ভালো লেগেছে লেখা আর ছবি। খুবই সুন্দর। কলেজের ছবিগুলি আসলেই ভ্যাটিক্যানের মত। জেটির ছবিটা দেখে "ডিয়ার জন" এর কথা মনে হলো।
পরের পর্বের জন্য রাখলাম
দেরীতে হলেও পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আমরা যারা বিজ্ঞানের বিষয়গুলো নিয়ে পড়াশোনা করেছি, সাহিত্য নিয়ে তাদের ভালোবাসা বেশ একটা সৃষ্টিছাড়া ব্যাপার হিসেবে দেখা হয়। কাউকে আবার নিজের বিষয়ে অদক্ষতার অপবাদও মেনে নিতে হয়! তাই বিজ্ঞানের ছাত্রদের কাছে সাহিত্য গোপন প্রিয়ার মতো লুকোনোর বস্তু হয়ে ওঠে।
এ ধরনের শক্তিমান গদ্য লেখার পর আশা করি আর "আমি তো সিরিয়াস লেখা লিখি না" বা "যা লিখি কিস্যু হয় না!" -টাইপের বিনয়ের আতিশয্য আর দেখাতে যাবেন না।
মানুষ এখন শুধু কাজ কাজ করে! ওয়ার্ক্যাহলিক হওয়াটা খুব বেশি জনপ্রিয় হয়ে পড়ছে। আমার কাছে কিন্তু কাজ করার আনন্দ থাকলেও সবচেয়ে ভালো লাগে ছুটির নির্ভার দিনগুলো। মনে হয় সব কাজ আসলে ইয়ট নিয়ে ক্যারিবিয়ানে ভেসে পড়বার যোগাড়-যন্ত্রের জন্যই।
ছবি ভালো হয়েছে? নাইকন কোনটা ব্যবহার করেন?
নির্ঝর অলয়
ধন্যবাদ নির্ঝর। নাইকনের ডি৫১০০
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
নতুন মন্তব্য করুন