কাদেরীয়া বাহিনীর ভয়ে টাঙ্গাইল এলাকায় পাকিস্তানী খুনীরা তটস্থ থাকত। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভারত আমাদের যুদ্ধে যোগ দিলেও, তাদের ছত্রীবাহিণী টাঙ্গাইলে অবতরণ করে কাদেরীয়া বাহিনীর পাহারায়। ষোল ডিসেম্বরের পাকিস্তানী জান্তার আত্মসমর্পণের সময় কসাই নিয়াজীকে কাদের সিদ্দিকীর হাত থেকে বাঁচাতে ভারতীয় বাহিনীকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হয়। তারপর চল্লিশ বছরের অনিবার্য পঁচনের ফলশ্রুতিতে কাদের সিদ্দিকী এক দিন বিক্রী হয়ে যান জামায়াতে ইসলামীর কাছে।
জামায়াত নেতা মুজাহিদের নেতৃত্বে গঠিত বদর বাহিনী বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করে মেধাশূন্য বাংলাদেশ গড়ার সূচনা করে। কিন্তু চল্লিশ বছরেও এই মেধাশূন্যতার কাটিয়ে উঠতে পারলাম না এমনি হতভাগ্য জাতি আমরা। আর তাই আমাদের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারক হিসাবে নিয়োগ পেয়ে যান সাধারণ মানবিকতা আর যুক্তিবোধ হীন কিছু ক্লাউন। তাদের যুক্তিতে ত্রিশ লক্ষ মানুষ হত্যার মাস্টারমাইন্ড হিসাবে কাজ করে গোলাম আজম একটা মন্দ কাজ করে ফেলেছে বটে, কিন্তু যেহেতু সে একজন ৯০ বছর বয়স্ক বুজুর্গ তাকে ফাঁসির শাস্তি দিয়ে বেয়াদবী করা যাবে না। এত বড় ঘৃণ্য অপরাধ করার পরেও যদি কেউ ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে, সেটাই মানুষের তৈরী সমস্ত আইনের প্রতি তুমুল উপহাস আর প্রতিটা মানুষের জন্য চরম অপমান হয় না? ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থেকে পুরা মানবজাতিকে অপমান করার দায়েইতো এই কুকুরের হাজার বার ফাঁসি দেয়া উচিত।
সংসদের প্রায় সব কয়টা আসন জনগণ তুলে দেয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের হাতে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আশায় তরুণ প্রজন্মের ভোট একটা বড় অবদান রাখে এতে। এই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এই সরকার বাহাত্তরের সংবিধানকে ফেরানোর নাম করে কার্যত তাকে মেরে ফেলে শুধু মাত্র নিজেদের সুবিধার নির্বাচনী ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে। জনগণ যেহেতু ভোট দিয়ে দেশকে তাদের মালিকানায় দিয়েই দিয়েছে, তাই দয়া করে দায়সারা ভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আয়োজন করেই তাদের কাজ সেরে ফেলতে চাইছে, এ এমনি এক বিচার মাস্টার মাইন্ড প্রমাণিত হওয়ার পরেও গোলাম আজমের কেশাগ্রও ছোয়া যায় না। সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আপিল শেষ করে রায় কার্যকর করারও কোন লক্ষণ নেই। দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা উপহার দেয়ার প্রতিদান জনগণকে দিচ্ছে অমার্জনীয় প্রতারণা করে।
এবং সর্বশেষ আশার জায়গা জনগণ। পাঁচটা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিএনপি-জামাতের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জিতিয়ে সামনের সংসদ নির্বাচনের একটা আগাম আভাষ দিয়ে রেখেছে। যা বুঝা গেলো, আরেক মেয়াদে নিজামী আর মুজাহিদকে মন্ত্রী হিসাবে দেখতে জনগণের তেমন আপত্তি নেই। মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধের বিচার এগুলো জনগণের মানসে তেমন বড় কোন প্রভাবক না।
দেশকে নিয়ে হতাশ হওয়া কোন কাজের কথা না। কিন্তু সব কিছুরই একটা সীমা আছে আর আমি সুপারম্যানও না। তাই অসহায়ের মত বলতে চাই, আমি বাংলাদেশকে নিয়ে হতাশ।
মন্তব্য
হতাশ
ইসরাত
আপাতত আমিও হতাশ, তবে সময় হয়ত বদলাবে পরে।
- মুকুল
৫ টা সিটি তে হারের বড় কারণ লীগের যথাচ্চার আর লীগের তৃণমূল পর্যায়ে রাজনৈতিক দুর্বলতা।
বি এন পি জামাত যে স্টাইলে তৃণমূল এক্টিভ তার ।৫ % এক্টিভ থাকলেও আজকে এই অবস্থা হইতো না
হাতাশার কি দেখছেন!! সবে তো শুরু! আগে আগে দেখেন কি হয়!!
৫ টা সিটি নির্বাচনে জনগন যা করছে ,ভালো করছে ।
মুখোশের আড়ালে থাকা নিজামি এর মুজাহিদ এর চেয়ে ,আসল মুজাহিদরা অনেক ভালা ।
আর যাই হোক এদের সরূপ তো আমাদের জানা আছে ।
আসলেই কি কোন পার্থক্য আছে ?
আছে,
এগুলান বালখিল্য টাইপ কথাবার্তা। এখন জামাত-বিম্পি এইসব কথাই শুনতে চায়।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমরা বাঙালিরা হলাম চুতিয়া জাতি ! নিজে চোর হবো লম্পট হবো, কিন্তু অন্যকে শতভাগ ফেরেশতা দেখতে চাই। আর আমার বিশ্বাস ব্যক্তিগতভাবে স্বজন না হারালেই কেবল কেউ বলতে পারে-
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
এরপরেতো শাহবাগীদের বিচার হবে ! ভোটের রাজনীতিতে শহবাগীদের ইম্প্যাক্ট নিগেটিভ।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হতাশ না... খাটনি বাড়লো... লড়াই থামবে না... আমৃত্যু লড়ে যাবো গোলাম আযমের মৃত্যুদণ্ডের দাবীতে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
-----------------------
সুবোধ অবোধ
৩ দিন পর এই কথাটা সবচেয়ে ভাল লাগল।
তরুনদের সামনে একটা চ্যালেঞ্জ দরকার ছিল। এবার সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ । এখনই হবে আসল পরীক্ষা।
নজরুল ভাই, শুধু খাটনি বাড়লে কোন আপত্তি নাই। ভয় হয় সময় বুঝি শেষ হয়ে আসলো। মাথার উপর ফাঁসি দড়ি ঝুলছে, এই ভয় ছাড়াই বুড়া লোকটা মারা যাবে।
হতাশার থেকে খারাপ জিনিষ কম-ই আছে। নজরুল-ভাই যেমন বলেছেন, লড়াই-টা জারী রাখতেই হবে। আর, কোন একটা লড়াইয়ে হার হলে গোটা যুদ্ধটা নিশ্চয়ই ছেড়ে দেওয়া যায় না!
- একলহমা
এই মুহূর্তে প্রচণ্ড হতাশ। আমাদের সেইমানের একজনও নেতা নেই যিনি আশার আশ্রয় হতে পারেন। নেই বিশস্ত কোন দল। সেই একই বৃত্তে ঘুরপাক হয় আম্বা নয় বিম্পি। দুইধারী তালোয়ারের মাঝে আমরা জনগণ। অসহ্য সবকিছু.....
ক্ষমতার রদবদল হলেই আগামীতে বুঝে যাবেন আশাকরি আম্বা ও বিম্পির পার্থক্য কোথায় ! বিয়াল্লিশ বছর পরে এসে যুদ্ধাপরাধীদের ডকুমেন্ট ও সাক্ষি জোগাড় করার ভয়াবহ জটিল একটা কাজ সাধন করেও তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে আটকানোর পরও যখন কেউ পার্থক্য বোঝে না, তখন আর কী বলা যাবে !! নিজে সক্রিয় না হলে কেবল হতাশা নয়, আরো কিছু অপেক্ষা করছে নিশ্চিত থাকেন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কমেন্টটি সাপ্তাহিক একতায় রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশেষ পাতায় সংযুক্ত করার অনুমতি চাই।
স্বয়ম
স্বয়ম এর মন্তব্য কি কারো চোখে পড়ছে ?
"হতাশা" একটি বিলাসি শব্দ, যা আমাদের মত দরিদ্র দেশের মানুষের জন্য বেমানান - মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
দাবি জারী থাকুক।
আমি জানি না।
আমরা সবাই হতাশ আমাদের এই হতাশ-রাজত্বে!
মূল হতাশা- জামাতী মতবাদের বিরুদ্ধে আসলে কিছুই করা যাচ্ছে না। ওদের টাকার জোর এতই বেশি যে, এই গরীব দেশে হাতে গোণা কিছু বিবেকবান মানুষ বাদে প্রায় সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জামাতের সাথে অর্থনৈতিকভাবে জড়িত। কাজেই তাদের গোষ্ঠীস্বার্থ অভিন্ন। রাজনীতি এখন ব্যবসায়ীদের হাতে এবং ব্যবসায়ীদের ধর্ম টাকা। আর জামাত এদেশের সবচেয়ে বিত্তবান গোষ্ঠী। বামপন্থীরা আমাদের জীবদ্দশায় ক্ষমতায় যেতে পারবে না, তাই আওয়ামী লীগই ভরসা! আবার আওয়ামী লীগেও ইসলামী ব্যাংক-পন্থী একটি গোষ্ঠী রয়েছে। আরো বড় সমস্যা বাংলাদেশের দুচারজন দুর্ভাগা রাজনৈতিক কর্মী বাদে সবারই তিন দলেই আত্মীয় থাকে। এদের সংখ্যা ফেলনা নয় এবং বাংলাদেশ এদের জন্য স্বর্গরাজ্য। আন্দালিব পার্থর মত ক্রিমখোর মধ্য পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে খুব বেশি। আমাদের এক স্যার ছিলেন , সারা জীবন বি,এন,পি ও ড্যাব করে এই আমলে তাঁর স্ত্রীর রেফারেন্সে লীগ ভেক ধরে গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবী সংগঠনের সভাপতি পর্যন্ত হয়েছিলেন। আমাদের এক সহপাঠী ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদকের মত পদ পেয়েছিল টাকা দিয়ে যে কিনা নটর ডেম কলেজ জীবন থেকেই এবং পুরো বি,এন,পি আমল শিবিরের রাজনীতি করেছে। এরকম অজস্র মাঠের নমুনা আমি দেখাতে পারব। এখানে কিছুই আশা করে নিজেদের হার্টের ক্ষতি করে লাভ নেই।
গোলাম আজমকে প্রকাশ্য কোন কক্ষে রাখা হোক। যদি মরেই যায় তবে মমি করে সেটাকে কাচের শোকেসে রেখে দিক। মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের যেমন স্মৃতি সৌধের বেদী আছে, তেমনি গো-আর কারাকক্ষ হোক আমাদের ঘৃণা প্রকাশের বেদী। আমরা সব প্রজন্ম মাঝে মাঝে গিয়ে থুতু দিয়ে আসব সেখানে।
একবার ফাসিতে ঝুলিয়ে দিয়ে গোল্ডফিশ মেমরির বাঙ্গালী যেন এদের কথা ভুলে না যায়।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
মানুষ শুধু বোঝে, গত পাঁচ বছর তারা কেমন ছিলো। বিএনপি এর যাঁতাকলে পড়ে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়, আবার আওয়ামী গ্যাঁড়াকলে পড়ে বিএনপিকে ভোট দেয়। এই চক্র শেষ হওয়া দরকার। এখন সঠিক প্রশ্ন এবং সঠিক ইস্যুতে আন্দোলন করার দায়টা যেন শুধু কিছু বাম দলের। তারাই আরো বড় হো, বড় হয়ে সঠিক প্রশ্নগুলো করতে ভুলে না যাক, এটাই প্রত্যাশা।
হতাশ? নাহ্, কোনভাবেই না। হতাশ হয়ে মাঝপথে থেমে গেলে তো হেরেই যাওয়া হল, ওরাও তো সেটাই চায়। নজরুল ভাইয়ের কথা আমারও। যতক্ষণ আছি, যেভাবে পারি লড়ে যাব। বাংলাদেশটা আমার, আমাদের।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আমার অবস্থা অনেকটা পেন্ডুলামের মত। নিয়মিত বিরতিতে আশা-হতাশার মাঝে দুলছি।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ভোট দিলে আর দায়িত্ব কাউকে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। দায়িত্ব দেবার পর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালিত হচ্ছে কিনা সে তদরকী না করলে স্বয়ং মাদার তেরেসার মধ্যেও বোধ হয় শিথিলতা এসে যেত। আর এরা তো হচ্ছেন আমাদের চিড়িয়া রাজনীতিবিদগণ। ভোটের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দায়িত্ব সরকারকে দিয়ে আমরা তদরকী করিনি বলেই সরকার গড়িমশি করতে পেরেছে। যেভাবে ভোট দেবার জন্য রাস্তায় নেমেছিলাম, আসুন গো আযমের ফাঁসির দাবীতে আবার সম্মিলিতভাবে রাস্তায় নামি এবং রায় কার্যকর হবার আগে ঘরে ফিরে না যাই। তাহলেই সংশ্লিষ্ট সবায় দায়িত্ব পালনে বাধ্য হবে।
-পামাআলে
কী কমু। জনগণকে দেখিয়া হতাশ! বাংলাদেশের একটা বিশাআআল অংশের কাছে মুক্তিযুদ্ধ কোন বিষয়ই নয়।
বিশাল একটা অংশের কাছে পৃথিবীই কোন বিষয় না পরকাল এর চিন্তায় অস্থির!
নতুন মন্তব্য করুন