খাল গিয়াকে বিয়ে করে খুশিতে আটখানা খালিসি। এসোসে এত বড় বীর আর একটাও নেই। দশাসই সব ছাগলের পিঠে চড়ে একের পর এক গ্রাসল্যান্ড জয় করে গিয়া নিজেকে খালদের খাল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার নতুন এলাকা জয় করার উপায় এত অনায়াস ছিলো যে স্বয়ং আলেকজান্ডার লজ্জা পেয়ে যেতেন। গিয়া নতুন এলাকার সর্বোচ্চ কোন ঢিবিতে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিবেন, "আজকে থেকে এই এলাকার বাপ মা আমি", আর সাথে সাথে সবাই দল বেঁধে তার অধিকার মেনে নিত। খালিসির খুশিকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে তার বিয়েতে তিন তিনটা ড্রাগনের ডিম উপহার দেন ফালু মর্মন্ট।
যুদ্ধ শেষে আসে শান্তি, খাল গিয়া তাই তার উপাধির প্রতি সুবিচার করতে গিয়ে এসোসের সব মরুভূমিতে খাল কেটে নিয়ে আসেন সবুজ বিপ্লব। খালিসির দাসীরা সেই খাল বেয়ে আসা পানি সবুজ বিপ্লবে জন্মানো গাছ পুড়িয়ে গরম করে খালিসির জাকুজিতে ঢেলে দেয়। রূপচর্চা আর মাঝে মাঝে ড্রাগনের ডিমের দিকে আলসে দৃষ্টি দিতে দিতে খালিসির দিন কাটে। রূপকথার মত সুখে শান্তিতে দিন কেটে যাচ্ছিলো খাল আর খালিসির। চির দিন কারো সুখে যায় না, আতাতুর্কের হাতে যেমন খিলাফতের পতন ঘটে, তেমনি খালের ব্লাডরাইডারদের হাতে একদিন খালের মৃত্যু হয়।
উপায়-উপান্তর না দেখে খালিসি ডিমগুলো হ্যাচারিতে নিয়ে যান হ্যাচ করে ড্রাগন বের করার জন্য। বড় ডিমটাতে বেশ খানিক্ষণ তা দেয়ার পরে সেখান থেকে বের হয় আসে এক বড়সড় ড্রাগন, বেরিয়ে এসেই সে আগুনের হলকা ছুঁড়ে। আর তাতে খালিসির দুই ভ্রু পুড়ে যায়। খালিসি অশেষ স্নেহে তার নাম রাখেন ত্রাকন।
মেঝটাকে অল্প তাপ দিতেই বের হয়ে আসে, একটু ইতস্তত ভাবে, ত্রাকনের মত ডাকাবুকো ভাব দেখাতে গিয়ে সে অল্প একটু ধোঁয়াও ছুড়ে মারে। খালিসির স্নেহ আরো বেড়ে যায়। এর নাম রাখা হয় কোকন।
সবচে ছোটখাট দেখতে ডিমটাকে হ্যাচারিতে ঢুকানোর আগেই নিজে থেকেই ডিমের একটা অংশ ভেঙে বের হয়ে আসে তৃতীয় ড্রাগন। খালিসি প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে ছোটখাট মুরগীর মত দেখতে ড্রাগনটার দিকে তাকিয়ে তার কী নাম দিবেন ভেবে পান না। হ্যাচারিতেই একে ফেলে রেখে ত্রাকন আর কোকনকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন খালিসি।
খালিসির দিন কাটে ত্রাকন আর কোকনের যত্ন-আত্মি নিয়ে। দিনে দিনে ফুলে ফেঁপে উঠে ত্রাকন, কিন্তু কোকন কেন জানি তেমন একটা বাড়ে না। ত্রাকনকে নিয়ে খালিসির গর্বের অন্ত না থাকলেও তার মেজাজ নিয়ে প্রচণ্ড ভয়ে ভয়ে থাকে সে। কিছু পছন্দ না হলেই আগুন ছুঁড়ে পুড়িয়ে দেয় ত্রাকন। তবু ত্রাকনই তার সুদিন উদ্ধারে কাজে লাগবে ভেবে তার জন্য রাজ্যের সবচেয়ে উঁচু জায়গাতে বিশাল ভবন বানিয়ে দেন। প্রজারা সমীহ করে তার নাম দিলো হাওয়া ভবন।
ত্রাকন-কোকন যথেষ্ট বড় হলে খালিসি চিন্তা করলেন এখনি সময় খালের হাতে গড়া রাজ্য পুনর্দখলের। তার মূল ভরসা ত্রাকনকে তাই সব শত্রুদের নামঠিকানা বার বার করে বলে দিয়ে প্রতিশোধ নিতে পাঠালেন। দিন শেষ হয়ে আসতে থাকলে খালিসির নজরে পড়ে রাজ্যজুড়ে আগুন আর আগুন। কোকনের পিঠে চড়ে একটা ড্রাগন’স আই ভিউ নিতে উপরে উঠে তিনি দেখতে পেলেন সবুজ ঘাসের উপর আগুনের রৈখিক নকশা। আগুনে পুড়িয়ে ত্রাকন পুরা এসোস জুড়ে ফুটিয়ে তুলেছে তাদের হাউস গিয়ার সিজিল, একটা ভাঙা স্যুটকেসের ভেতরে একটা ছেঁড়া স্যান্ডো গেঞ্জি। স্নেহে খালিসির চোখে পানি চলে আসে, চোখ মুছতে মুছতে তিনি অস্ফুটে বলেন “পাগল একটা”।
ত্রাকনের তাণ্ডবে অবশ্য লোকেরা তেমন একটা খুশি হয় না। তাই তার ঘুমের অবসরে একদল এসে বর্শা দিয়ে খুঁচিয়ে তার একটা ডানা প্রায় অকেজো করে দেয়। ভয়ে আর অভিমানে ত্রাকন মহাদেশ পেরিয়ে ওয়েস্টেরসের ওল্ডটাউন লন্ডনে চলে যায় ইতিহাস রচনা করতে। এবার কোকনের পালা, সে তার অর্ধেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে উড়ে চলে যায় পাশের সমুদ্রের দিকে। তার প্ল্যান সমুদ্র থেকে মূল লোকালয়ের দিকে উড়ে আসতে আসতে মানুষজনকে সাইজ করে আসবে। কিন্তু শুরুতেই ভজঘট লেগে যায়, তাল হারিয়ে সে তীরে বাঁধা জাহাজগুলোর উপরে ছিটকে পড়ে যায়। ডুবে যেতে যেতে কোকন ডুবিয়ে দিয়ে যায় খালিসির সর্বশেষ সম্বল জাহাজগুলোকে।
দুইটা তাগড়া ড্রাগন হারিয়ে খালিসি রূমাল চেপে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন, রুমালের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসা কান্নার আওয়াজে এক ভুতুড়ে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ধুপধাপ সব ঘরের ঝাঁপটা পড়তে থাকে, ভয় পাড়ানি গান ছাড়াই বাচ্চারা শুয়ে পড়ে। নির্জন ছমছমে রাস্তায় অঞ্জু ঘোষের মত শাড়ীর আঁচল ঝুলিয়ে হেঁটে হেঁটে শোক প্রকাশ করতে থাকেন খালিসি। এমন সময় পাশের একটা গলি থেকে একটা গাট্টাগোট্টা মোরগ বের হয়ে তার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। প্রথমে একটু বিরক্ত হলেও কাছ থেকে মোরগটাকে তার বেশ চেনা চেনা লাগে, হ্যাচারিতে ফেলে আসা সেই দুবলা ড্রাগনটা।
শেষ সম্বল মোরগসদৃশ ড্রাগনটাকেই বুকে জড়িয়ে ধরেন খালিসি। তার পর তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরেন। খাল আর তার দুই ড্রাগনের মৃত্যুর বদলা নিতে দিন রাত এক করে তার ছোট ড্রাগনটাকেই ট্রেনিং দিতে থাকেন খালিসি। প্রথমে চেষ্টা করেন তার পুড়ানোর ক্ষমতা বাড়ানোর, কিন্তু ওইটুক ড্রাগনের সিনায় কতটুকু আগুনই বা ধরে! তার পরে চেষ্টা করেন তার ডানার বাতাসে ঝড় তৈরী করায়। কিন্তু মুরগীর ডানায় আর কত জোড়ালো বাতাস বয়! লাভের মাঝে লাভ হয়, তার ডানার বাতাসে বাধা পেয়ে বাটারফ্লাই ইফেক্টে দূরের মহাদেশ ওয়েস্টেরসে তৈরি হয় এক ঝড়। তার ছোট থাবায়, ছোট চঞ্চুতেও সামান্য ক্ষতি করার সামর্থ্য দেখা যায় না। দিনের পর দিন খালিসির হতাশা বাড়তে থাকে, আর অনেক দিন পর নিয়মিত ভালোমন্দ খেতে পাওয়ায় কৃতজ্ঞতায় ছোট ড্রাগনটির মন ভরে উঠে।
খালিসির ধৈর্য্য একদিন ফুরিয়ে আসে, আর ত্যক্তবিরক্ত হয়ে তার সর্বশেষ ড্রাগনটিকে তাড়িয়ে দেন। ছোট ড্রাগন হাওয়া ভবন থেকে বেরিয়ে পুরো এসোসের উপর দিয়ে এঁকেবেঁকে উড়তে থাকে। আর এক অদ্ভুত দৃশ্যের সৃষ্টি হয়, তার গতিপথে বিষ্ঠাঝড়ে ঢেকে যায় এসোসের আকাশ। এত দিনের অবহেলা, আর অল্প ক’দিনের ভালো খাবারের উপর ভরসা করে শিটস্টর্ম বইয়ে দেয় লাস্ট অফ দ্য ড্রাগন্স।
খালিসি অস্ফুটে বলে উঠেন, “হলি শিট!”। এই ড্রাগনের ক্ষমতা দেখে তার মনে হয় এতোটা ঝড় বইয়ে দেয়ার ক্ষমতা শুধু ঈশ্বরেরই থাকতে পারে। ড্রাগনের দিকে হাত নেড়ে উঁচু স্বরে চিৎকার করে খালিসি বলে উঠেন, “গুশ্বর”। এতো দিন পরে স্বীকৃতি পাওয়ার আবেগে শিটস্টর্মের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয় গুশ্বর।
মন্তব্য
হায়! এইটা আপনি কী লিখলেন? প্রথমে ভাবলাম আসলেই মনে হয় সেই খালেসি>খালিসির ড্রাগনের গল্প। তারপর এই? হাসতে হাসতে পেটে খিল লেগে গেছে
...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”
খালিসির কাহিনীর গভীরতা আগে ভাগে গেস করলে হবে?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
via GIPHY
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অজ্ঞাতবাস
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
“হলি শিট!” থেকে “গুশ্বর
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ব্যাপারটা মনে ধরছে। গিয়া সমীকরন মিলানোটা এইবার যদি একটু সহজ হয় আর কি!
লেখায়
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
গিয়া পরিবারে আছে সব প্রশ্নের উত্তর
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
পবিত্র বিষ্ঠা!
ওজু করে কমেন্ট করছেন?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
হাহাহাহাহা। এইটা কী লিখলা
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
হে হে, গিয়া পরিবারের কথা বলতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলি
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
হলি শিট!!!
হে হে
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
খালিসির ভুরু তাহলে এভাবেই পুড়লো, এখন কপাল না পুড়লেই হয়!
খালিসির কপাল বাঁচাতে স্বয়ং গুশ্বর নেমে আসছে, নো ওরিস!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
লিটারেলি লোল।
অর্ণব
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
গেম অফ থ্রোনসের বেস্ট ফ্যানফিকশন। পুরাই ক্লাসিক!!
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
থ্যাংকস আপু!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
হা হা হা হাসতেই আছি
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
গুশ্বর!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
শিটস্টর্ম এবং গুশ্বর!! শেষকালে এই ছিল আপনার পাপী মনে?
তয় এর চেয়ে মারাত্মক জুটি হতেই পারে না।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ঈশ্বরের মাহাত্ম্য বর্ণনা করলাম, আর বলেন পাপী মন!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
দুর্দান্ত হয়েছে......বিপ্লবী সেলাম
সেলাম!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
---------------------
আমার ফ্লিকার
পথ ভুলে আসলা?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অমানুষিক!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অদ্ভুতুড়ে! অনবদ্য! অমানবিক! অসাধারণ!
_____________
সৌমিত্র পালিত
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
গোয়ায় বাঁধা তাহার স্বর!
ফারাসাত
গুশ্বরের শত নাম!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
মারি লাইছেন ভাই, মারি লাইছেন...তুখোর তুখোর
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অসাধারণ।
অর্ণব
ধন্যবাদ অর্ণব!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ত্রাকেন আর কোকেন? হোলি শিট!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সবচে ইম্পর্টেন্ট হইল গুশ্বর, তার নাম নিলেন না!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
'গুশ্বর' আর 'হোলিশিট' আলাদা জিনিস?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এমন একটা এপিক লেখা দেরীতে পড়বার জন্য লজ্জা পাইতাছি। ফাডাইয়ালাইছেন
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
লজ্জার কী আছে! আমরা আমরাইতো
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
আগেই পড়েছিলাম।
একটা মাস্টারপিস।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
একনজরে খালিসির তিন ড্রাগন : ত্রাকন, কোকোন এবং ত্রাকানু ...থুড়ি গুশ্বর
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
এই কমেন্ট করে ত্রাকানুর রোষানলে পড়লেন, তার সুপারপাওয়ার কী থ্রো করা কে জানে!
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
নতুন মন্তব্য করুন