৮ ঘণ্টার রিগা

আরিফিনসন্ধি এর ছবি
লিখেছেন আরিফিনসন্ধি [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ০১/০৩/২০১৬ - ১১:০০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার অর্ধ যুগের বেশি সময় ধরে এই উত্তর ইয়্রোপের দেশে বাস, এখানে পড়তে কিংবা বেড়াতে এলে মানুষের অন্তত একটা কাজ করে, সেটা হল ক্রুজ শিপে করে বাল্টিক সাগরের আশে পাশের দেশ গুলোতে ঢু মারা। সেটা ফিনল্যান্ড থেকে, এস্তোনিয়া কিংবা লাটভিয়া হতে পারে। এই সুইডেন থেকে অনেক দূরের দেশে যাওয়া হয়েছে, কিন্তু কক্ষনো শিপে চড়া হলো না, যেকোন সামাজিক অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝে আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে আমি কেন একবারও নাম মাত্র মূল্যে এই সমুদ্র বিহারে যাই না কেন? আমার যুক্তি হলো, দক্ষিণ বঙের এক বিভাগে আমার দেশে বাড়ী হওয়া তে অনেক ছোট বেলা থেকে দেশের সেই বিখ্যাত ইংরেজ আমলের স্টিমারগুলোতে গাজী, লেপচা, টার্ন, অস্ত্রিচ তে ইতিমধ্যে চড়া সারা। সেই কারণে আমাকে জাহাজ ভ্রমণ বেশি একটা টানে না। আর এই বাল্টিকের সমুদ্র বিহারে বেশির ভাগ বিদেশীদের আগ্রহ থাকে ডিউটি ফ্রি দামে এলকোহল কেনা। সুইডেনে আবার জিনিসপাতির দাম এবার একটু চড়া কিনা, তাই সবার আগ্রহ থাকে সস্তায় একটু গলা ভিজিয়ে নেয়া।

সেই যাই হোক, এবার সত্যি সতি্য বের হলাম। আমার যদিও আর কোন কিছুর চেয়ে আগ্রহী ছিলাম, ক্যামেরার নতুন কেনা লেন্সটা ভ্রমণ ফটোগ্রাফিতে কেমন সঙ্গ দেয়। কারণ, এই নতুন ৩৫ মিমি টা কেনার পর আর কোথায় যাওয়া হয়নি।

তো সেই গত সপ্তাহান্তে আগেই টিকেট করে রাখলাম। জাহাজে যথারীতি উইক ডে ছাড়ার কারণে তেমন কেউ নেই। স্টকহোমের উপকণ্ঠ থেকে এই ফেরি বা জাহাজগুলো ছেড়ে যায়। আমাদের এক রাত পুরো জাহাজে থাকতে হবে । তবে জাহাজের ভিতরটা বলা যায়, ছোট খাট টাইটানিক। পাব,ডান্স ফ্লোর, সাউনা বাথ, জিম, ক্যাসিনোর কিছুর অভাব নেই। আর বেশির ভাগ লোকের আকর্ষণ সস্তায় মদ কেনা আর গেলা। জাহজ ছাড়ার এক ঘণ্টা পরেই বিভিন্ন ফ্লোরে দেখলাম বেশ কিছু রাশিয়ান ডিউটি ফ্রি শপ থেকে মদ কিনে আকণ্ঠ মদ গিলছে। ওদের জিনের মাঝে আছে ভদকা, সেটা যাবে কি করে।

উপরের এই ছবিটা জাহাজ ছাড়ার সময়, আমার বউ বলে, এ ধরনের আলোকে নাকি বলে কনে দেখা আলো। বুঝলাম না, আমার নিজের বেলায় তো ঠা ঠা রুদ্দুরে আসাদগেটের আড়ং এর সেই ছোট্ট কফি শপে দেখলাম। সেটা বলতেই আমার দিকে আমার বউ যে চাহনিটা দিলো, আমি বুঝলাম এই জার্নি আমার জন্য মুখ বুঝে থাকাই অনেক বেশি কাজের হবে। সব জায়গায় মত প্রকাশ করলে পরে প্যারার চান্স আছে।

জাহাজ ছাড়ার সময় জানতাম, রিগাতে আমাদের হাতে প্রায় ৮ ঘণ্টার মত সময় থাকবে। তাই, জাহাজে বুফে প্রাতরাশ সেরে ঝট পট আমরা জাহাজ থেকে নেমে পরি। রিগা জাহাজ ঘাটা থেকে শহরে হেঁটেই আসা যায়। আমাদের সাথে আমার ল্যাবের তাইওয়ানিজ ইন্টার্ন আর তার বান্ধবীদ্বয় ছিল। রিগায় নেমে আমরা শুরু করলাম ম্যাপ দেখে হাটা, অনেক ধরনের টুরিস্ট বাস সার্ভিস আছে, কিন্তু আমি সব সময় নিজে থেকে ঘুরে দেখতেই বেশি পছন্দ করি। রিগা আমরা যেই দিন যাই, সেই দিন আকাশ ছিল অনেক মেঘলা। কাজেই ক্যামেরাতে ভালো করে ছবি তুলতে পারবো না, সেটা ধরেই রেখেছিলাম। কি আর করা।

রিগায় চলা ফেরার সময়, একটা জিনিস বেশ চোখে পরে, সেটা হল সুইডেনে সাধারণত রাস্তায় স্নো থেকে আছাড় খাওয়া থেকে বাঁচার জন্য ছোট ছোট পাথর দেয়া থাকে। সেখানে রিগাতে দেখলাম শুধু মোটা দানার বালি দেয়া, এটা হয়তো খরচ কমানোর জন্য হতে পারে। ইউ জোনে প্রবেশ করলেও পুরো রিগা শহর জুড়ে কেমন একটা চেপে থাকা দারিদ্র জেঁকে বসে আছে বলে মনে হল। আমাদের গন্তব্য হল পুরোনো শহরের দিকে। কারণ সেই দিকটায় নানা রকম নিদর্শন আছে, যেটা দেখার জন্য মানুষ জন রিগাতে আসে.

সেই মেঘলা দিনে রিগার রাস্তায় আমরা হেঁটে চলেছি
Rainy Street

আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল রিগা ক্যাথিড্র্যাল। আর সেখানে যাওয়ারও পথে এই স্কয়ার টা পরে। সামারের সময় এই পুরো জায়গা জুড়ে থাকে হরেক রকম পণ্যের বিকি কিনি আর চা কফির দোকান। কিন্তু আজকে দিনটা অনেকটা মেঘলা থাকায়, আর শীত কালের আবহটা পুরো পুরি যাই নি দেখে, দোকান পাটের কোন সরগরম নেই।

ক্যাথিড্র্যাল স্কয়ায়ের সেই দিনের চিত্র।
Riga, Latvia

আমরা রিগা ক্যাথিড্র্যালের ভিতরে ঢুকলেও পুরোটা ঘোরা হয়নি। কারণ দুটো, এক সময়ের অভাব আর আরেকটা হলো পেটের ভিতর ছুঁচোর কেত্তন শুরু করে দিয়েছিল। আমাদের সফর সঙ্গীদের অনেকেই চৈনিক দেশের কাছে থেকে আসার কারণে, আমরা প্রথমেই একটা চৈনিক ডামপ্লিং রেস্তরাঁ তে দুপুরের খাবারের জন্য থামি। মজার বিষয় হল, পুরো রেস্তরাঁ মাত্র একজন ওয়ট্রেস ইংরেজি জানে। তাকে খুঁজে জানা গেল। খাবার কিভাবে নেয়া যাবে। খাবার নেয়ার বিষয়টা অনেক টা সালাদ কেনার মত। নানা বিধ ডামপ্লিং এর আইটেম থেকে আপনি চয়েস করে নিয়ে কাউন্টারে যাবেন, এবং সেখান থেকে ওজন করে আপনার খাবার দাম দিতে হবে। আমার মোটা মুটি শ্রেণীর পেটুক হওয়া স্বত্বেও দুজনের খাবার দিব্যি ৭ ইউরো র মধ্যে হয়ে গেল। সুইডেন হলে এই খাবারটুকু ১২-১৩ ইউরো এর কমে জুটত না।

ছবিতে দেখুন লাটভিয়ায় চিনের ডামপ্লিং লাঞ্চ

লাঞ্চ শেষ করে, আবার আমাদের পদব্রজে রিগা ভ্রমণ শুরু হয়। আমাদের এবারের লক্ষ্য হল সেইন্ট পিটার গির্জা। এই গির্জার চূড়ায় লিফট দিয়ে উঠার ব্যবস্থা করা আছে। তাই, ১৩০ মিটার উচ্চতার এই টাওয়ারে উঠতে বলা চলে আমাদের সময় লেগেছিল ৩ মিনিটেরও কম। ১৫ শতকের শেষ দিকে স্থাপিত এই স্থাপনা গির্জা ৩ দফায় পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। শেষ বার হয়েছিল যখন জার্মান বিমান বাহিনীর গোলা বর্ষণের ফলে পুরো টাওয়ারটি ধসে যায়। ৭০ এর দশকে এর লিফট এর ব্ব্যস্থা করা হয় যাতে মানুষ এর উপর থেকে পুরো রিগা শহরটিকে দেখা যায়। আমরাও আর বাদ যাই কেন, পিএইচডি স্টুডেন্ট এর তকমাটা যতদিন আছে ততদিন কিছু রেয়াত পাওয়া যায়, বিভন্ন এই যাদুঘর কিংবা দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করার সময়। সেটা কাজে লাগিয়ে লিফটে চড়ে আমরা চলে এলাম একে বারে ১২৩ মিটার উঁচুতে। একে তো ঠাণ্ডা, তারপর এতো উঁচু, হাত পা ঠক ঠক করে কাঁপছিল। কিন্তু এত চমৎকার পাখির দৃষ্টিতে চারদিকে দেখার ছবি ক্যামেরায় না তুলে থাকি কিভাবে। সেই ঠক ঠক করে কাঁপা কাঁপির মধ্যে তুলে ফেললাম বেশ কতক ছবি।

পাখির দৃষ্টিতে রিগা শহর
Cityscape of Riga
TV tower of Riga

সেইন্ট পিটার গির্জার আরেকটা ভালো লাগার দিক হল, এখানে আর্ট গ্যালারিতে অনেক চমৎকার সব পেইন্টিংস রাখা, আমরা সময়ের স্বল্পতার কারণে ভালো করে দেখতে পারি নি, কিন্তু কিছু ছবি তুলে নিয়ে এসেছিলাম। যদিও আমার কাছে মনে হয়নি, বেশ নামকরা কোন শিল্পী এর আঁকা। কারণ তাহলে এতো খোলা মেলা প্রদর্শনী করে রাখা হতো না। তবে গির্জায় যীশুর মূর্তি টা অনেক সৌম্য। গির্জার মদ্য বয়সী তকেট বিক্রেতা ভদ্রমহিলা বেশ অমায়িক, আমরা চূড়া থেকে নামতেই আমাদের দেখে বললেন, আমরা আরও সময় নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখতে পারি।



সেইন্ট পিটার গির্জা থেকে বের হয়ে আমাদের হাটা শুরু হল শহরের টাউন হল স্কয়ারের দিকে। এই জায়গাটাকে অবশ্য হাউজ অব ব্যাল্কহেডস বলে। ২য় বিশ্ব যুদ্ধের সময় এই স্কয়ারটা পুরো পুরি ধ্বংস হয়ে যায়। পরে পুরো অংশটি আবার পুনর্নির্মাণ করা হয়। এখন অবশ্য এখান থেকেই লাটভিয়ার রাষ্ট্রপতির প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড চালানো হয়। আমরা বেশ কিছু ছবি তুলে আবার সামনের দিকে পা চালাই।

টাউন স্কয়ার আর তার সামনের স্থাপত্য

টাউন স্কয়ার থেকে হেঁটে আমরা চিন্তা করি, আবার কিছু খাওয়া দাওয়া হোক। এবার আমাদের যাত্রা বিরতি করতে হল, প্যানকেকের রেস্তরাঁ। অনেকেই ভাবছেন, আমরা কেন স্থানীয় খাবার চেখে দেখছি না, কারণ হল, আমাদের মাঝে কয়েক জন আবার খাবারের ব্যাপারে বাছ বিচার করে, এবং লাট ভিয়ার বিখ্যাত বিয়ার চেখে দেখতে তাদের আপত্তি আছে, তাই আমরা সবার গণ ভোটে রেস্তরাঁ নির্বাচন করি। প্যানকেকের রেস্তরাঁরে ঝাল, মিষ্টি দুই ধরনের প্যান কেক গরম গরম বানানো হচ্ছিল, কলার পুর, চিজ বা মাংসের পুর দেয়া ধোয়া উঠা সব প্যানকেক, সেই সাথে চিরাচরিত প্যান কেক তো ছিলই। প্যান কেক নাও, আর সাথে স্থানীয় ষ্টবেরি, রাস্পবেরি, আর প্লাম দিয়ে বানানো জ্যাম ইচ্ছেমত। তার সাথে টক দই দিয়ে বানানো একটা পানীয়, নামটা ভুলে গেছি, মাফ করবেন। রিগার সেই মেঘলা বিকেলে উষ্ণ প্যান কেক আর টক দই এর স্বাদ এখনো জিভে লেগে আছে।

ছবিতে সেই প্যানকেক বাছাই আর আমার প্লেট

তারপর আমরা আবার হাটতে থাকি। আমাদের শেষ গন্তব্যে প্রায় চলে আসি। আমাদের শেষ দেখার জায়গা হল রিগা সেন্ট্রাল মার্কেট। এই জায়গাটা ১৯৯৮ সাল থেকে ইউনেস্কো হেরিটেজ এর তালিকাতে ভুক্ত করা হয়েছে। আসলে ৪০ এর দশকে পুরনো জার্মান এয়ার শিপ জেপেলিন এর হাঙ্গার গুলোকে পরে এই মার্কেট হিসাবে রূপান্তরিত করা হয়। পুরো মার্কেট টা এক রকম কাচা বাজার বলা চলে, আমাদের দেশের মতই, তবে অনেক পরিষ্কার পরিছন্ন, আমরা যখন সেইন্ট পিটার গির্জা থেকে ছবি তুলি, তখন প্রথম ছবিতে আপনি চারটি প্লেনের হ্যাঙ্গার এর মতো স্থাপনা দেখতে পাবেন, সেটিই হল এই সেন্টাল মার্কেট। মার্কেটে জিনসইপত্রের দাম বেশ কম, আর পণ্যের মান তেমন ভালো না। ইইউ এর একটি দেশ হওয়া স্বতেও আমার কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশের অনেক মার্কেট এর থেকে অনেক বেশ সরগরম।

হয়ত, এই এলাকাটা একটু বেশি পুরনো শহরের দিকে, তাই ধনিক শ্রেণীর মানুষজনের আনা গোনা কম। এই জায়গাটাতে এসে আমার মনে হচ্ছিল, সেই ছোট বেলার মস্কো থেকে প্রগতি প্রকাশনীর কোন গল্পের সোভিয়েত শহরে চলে এসেছি। সেই পুরোনো আমলের ট্রাম। আর সাধারণ চেহারা মানুষ জন। সবার মাঝেই হয়ত কেমন এক বিষণ্ণতা বিরাজ করে।

এভাবেই আমাদের ৮ ঘণ্টার রিগা শহর ঘোরা শেষ হয়, আমরা এবার পা বাড়াই আমাদের সেই জাহাজঘাটার দিকে। পিছনে পরে থাকে সাবেক এক সোভিয়েত শহর।
আমাদের সাগর পাড়ি দিতে হবে.. ফিরে যেতে হবে ভাইকিংদের দেশে

-আরিফিন সন্ধি


মন্তব্য

নুড়ি এর ছবি

রূপকথার মত একটা শহর, পাঁচ নম্বর পাখি দৃষ্টির ছবিটা খুব সুন্দর!

আরিফিনসন্ধি এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ হাসি

........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ ছবি এবং দারুণ বর্ণনা। ২,৩,৫,৬ নম্বর ছবিটা দেখে মনেই হচ্ছে না যে ক্যামেরায় তোলা। মনে হচ্ছে যেন কোন পেইন্টিং।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

আরিফিনসন্ধি এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ রূপক ভাইয়া, আপনার ভ্রমণ কাহিনী লেখার হাত অনেক ভালো গুরু গুরু । ঐ ছবি গুলোও ক্যামেরায় তোলা, তবে এইচডিআর ফরম্যাটে এডিট করা হাসি । তাই হয়তো আপনার কাছে বেশি ভালো লেগেছে হাসি চোখ টিপি

........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি

অতিথি লেখক এর ছবি

উপর থেকে ছবি নং ২, ৩, ৫ আর ৬-কে এডিটিং-এর সময় পেইন্টিং-এর মতো বানিয়েছেন নাকি আসলেই দেখতে অমন?

ডাম্পলিং-এর পাতে দেখি ডাম্পলিং-এর চেয়ে গ্রিল করা মাংস আর ঘাসলতাপাতার পরিমাণ বেশি!

আপনি এই জেলখানার রুটির মতো দেখতে অমন প্যানকেক নিতে গেলেন কেন? কী ছিল এর ভেতরে?

রিগা'র মানুষজন, জনসমাগম, গাছপালা, পাখি'র ছবি তোলেননি? থাকলে সেগুলো কিছু দিন। তাহলে আপনার সুবাদে রিগাকে আরও ভালোভাবে দেখতে পেতাম।

ভ্রমণ, ফটুকবাজী এবং ভ্রমণ নিয়ে লেখা সব খুব জোরেশোরে চলুক!

আরিফিনসন্ধি এর ছবি

হাহাহা, না ঐ ছবি গুলো আসলেই ঐ রকম না। এইচডিআর করা ছবি, তবে আসল জায়গা গুলো খারাপ না। আমি যেদিন গেলাম, সেই দিন বৃষ্টি আর ঠাণ্ডা, তাই ফুল লতা পাতা পাখি দেখা হয়ে ওঠে নি। আর ৮ ঘণ্টার জার্নি এর মধ্যে বেশি কিছু দেখলে শেষে আমার জাহাজ মিস করে কাঁদতে হত হাসি হো হো হো

হ্যাঁ ভাই, ঘাস লতা পাতায় এই দেশে বড় অভাব। দেশের শাক সবজি যে কত মিস করি, এখন বুঝতে পারি। ওঁয়া ওঁয়া

জেলখানার রুটির মত দেখতে এটাই আসল প্যানকেক দেঁতো হাসি । এটা শুধু ময়দা, ডিম, বেকিং পাউডার আর সামান্য চিনি দিয়ে বানানো হয়, ভিতরে কিছু থাকে না, বিভিন্ন জ্যাম কিংবা আইস ক্রিম দিয়ে খাওয়া যেতে পারে । আমেরিকারগুলো একটু স্বাস্থ্যবান হয় আর কি।

........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

জীবনযুদ্ধ এর ছবি

রিগার পুরোনো বাজারটি দেখতে অনেকটা আমাদের গুলিস্তানের মতোই। আপনি ঠিকই বলেছেন, লাটভিয়ায় খাবারের দাম এখনো বেশ সস্তা।

আরিফিনসন্ধি এর ছবি

হমম তা ঠিক বলেছেন, গুলিস্তানে এর চেয়ে বেশি মানুষ আছে আর পণ্যের বৈচিত্র্য বেশি, কিন্তু বাজারটা বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছিল। আপনার এই রিগা সম্পর্কে লেখায় বেশ চমৎকার ইতিহাস ছিল। আমার নিজের কাছেও অনেক ভালো লেগেছে। আপনি মনে হয় বাসে করে গিয়েছিলেন, তাই না ?

........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি

জীবনযুদ্ধ এর ছবি

হ্যা আমি গিয়েছিলাম লিথিয়ানিয়া থেকে বাসে

অর্ণব এর ছবি

দারুণ সব ছবি। চলুক কিন্তু এইচডিআর গুলো একটু বেশি সারিয়েল হয়ে গেল না?

অর্ণব

আরিফিনসন্ধি এর ছবি

ধন্যবাদ, আসলে রিগাতে ট্রাইপড নিয়ে যাইনি, আর হাতে রেখে তিনটা একই ছবি ভিন্ন এক্সপোজারে তোলা মুস্কিল চিন্তিত । এগুলো আসলে সিঙ্গেল ছবিকে এইচডিআর করা, তাই কোওয়ালিটি ততো ভালো নয় মন খারাপ

........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি

কৌস্তুভ এর ছবি

HDR এর ডোজ একটু বেশিই হয়ে গেছে, পরের বার থেকে একটু সংযম করলে ভাল লাগবে। ঘোরাঘুরি চলুক।

আরিফিনসন্ধি এর ছবি

হুমম, একে তো একটা ছবি থেকে করা, তারপর আবার ফটোম্যাট্রিক্স ডেমো ভার্সন, হাসি

........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি

কেহেরমান এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

তারেক অণু এর ছবি

রিগার মোট জনসংখ্যার ৬০%ই রাশান, এই নিয়ে লাটভিয়ানদের মাঝে বেশ অসন্তুষ্টি আছে দেখেছিলাম, যদিও বেশ কবছর আগে যাওয়া, তবুও খুব বেশি পরিবর্তন ঘটেছে বলে মনে হল না। স্থানীয় বন্ধু জানিয়ে ছিল রিগা শহরের অধিকাংশ স্থাপনার স্থপতি ছিলেন পরিচালক আইজেনস্টাইনের বাবা।

প্যানকেক ভাল লাগে, কিন্তু লাইফের সবচেয়ে সুস্বাদু ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেয়েছিলাম রিগার এক রেস্তোরাঁয়, সাথে সে দেশের পোষা হাঁসের মাংস। নাম-ঠিকানা মনে নেই। মন খারাপ

ঘোরাঘুরি চলুক-

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।