পর্ব এক
১৯৭১ সাল
পাতাঙ্গাপাড়া ক্যাম্প, মেঘালয়
নাজমুল বুঝতে পারেননা কেন যে কোন কঠিন দায়িত্ব পালনের আগ দিয়ে উনার এত ঘন ঘন পিপাসা পায়। ঢক ঢক করে দ্বিতীয় দফায় গ্লাসভর্তি পানি শেষ করেন।এত বড় অপারেশনের ভার উনার উপর, উনার তো এত অল্পতে উত্তেজিত হলে চলবেনা ! অল্প একটু ভুলের মাশুল অনেক বেশী দিতে হবে তাহলে। এখন ভুল করার কোন সময় নাই, উপায় নাই। খুব সতর্কতার সাথে এবার তাকে ১০০জন সাহসী যুবক বাছাই করতে হবে। কিছুক্ষন আগে উপর মহল থেকে নির্দেশ পেয়েছেন নতুন অপারেশনের। পরিকল্পনা ঠিকঠাক, এখন বাস্তবায়নের পালা।
সমস্যা হল, খুব বেশী অ্যামনিশন খরচ করা যাবেনা এই বিশেষ অপারেশনটিতে। প্ল্যানিংয়ের মূল বিষয়টাই হল রাতের আঁধারে নীরবে কাজ শেষ করে চলে আসা, আশা করা যাচ্ছে অল্প কিছু অ্যামনিশন দিয়েই অপারেশন ভালভাবেই শেষ করা যাবে। ঝিনাইগাতিতে হারামির বাচ্চা পাকিস্তানি হানাদারেরা খুব বেশী বাড়াবাড়ি শুরু করেছে, আর তাদের দোসর হয়েছে দেশীয় রাজাকারেরা। আহম্মদনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে পাকি হানাদারেরা সেক্টর হেডকোয়াটার বসিয়েছে, পাশেই আছে বগাডুবি ব্রিজ। খবর পেয়েছেন আহাম্মদনগর সহ আশেপাশের এলাকার মানুষজনের অবস্থা ভয়াবহ। ঐ ক্যাম্প আর ব্রিজের নীচে রাত দিন সাধারন মানুষ ধরে এনে পাইকারি হারে গণহত্যা চলছে।
নাজমুল ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা সাজান, এই দফায় বগাডুবি ব্রিজ উড়াতে হবে। আর কাটাখালি ব্রিজের নিচে পাক হানাদারদের একটি বড় গানবোট বাঁধা থাকে, দিনের বেলায় মালিঝি নদী, মৃগী নদীতে সারাক্ষণ টহল দিয়ে বেড়ায়। এই বোটটাও উড়াতে হবে।
প্রথম লক্ষ্য হবে কাটাখালি ব্রিজ আর আর ব্রিজের নীচে খালে বেঁধে রাখা গানবোট উড়িয়ে দেওয়া, তাতে করে নদীর দুই ধার ধরে রাতদিন পাক হানাদারদের শকুন দৃষ্টির হাত থেকে সাধারন মানুষজন কিছুটা হলেও রেহাই পাবে। একসাথে দুই জায়গাই হামলা করতে হবে যেন পাঞ্জাবীরা সতর্ক হবার পূর্বেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আসা যায়। সন্মুখ যুদ্ধে এই মুহূর্তে যাওয়া যাবেনা, আপাতত লক্ষ্য হল ব্রিজ আর গানবোট উড়ান । অতর্কিতে হামলা চালালে একটাই সুবিধা, নিজেদের দিকে পাল্লা কিছুটা ভারী হয় নিজের মনে বিড়বিড় করেন নাজমুল।
পর্ব দুই
পাতাঙ্গাপাড়া ক্যাম্প, মেঘালয়
নাজমুল অবশেষে কঠিন দায়িত্ব শেষ করেছেন। সামনে সার বাঁধা ১০০ জন যুবক। এদের সবার বাড়ি শেরপুরের বিভিন্ন উপজেলায়। শেরপুরের অলিগলি,রাস্তাঘাট নিজের হাতের তালুর মত চিনে সবাই। নাজমুল উনার পরিকল্পনা খুলে বলতেই সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল দেখার মতন। সাবাস, একেক জন বাঘের বাচ্চা। এমন সব রত্ন থাকতে বাংলাদেশের জন্ম হবেই হবে, কেউ ঠেকাতে পারবেনা।
ভিড়ের মধ্যে উনার দৃষ্টি কেড়ে নেয় অল্পবয়সী একটি ছেলে, এখনও ঠিকমত দাড়ি গোঁফ উঠেনি, খুব কচি একটা মুখ। এই ছেলে নতুন যোগ দিয়েছে ক্যাম্পে। নাম প্রস্তাবনার শুরুতে এই ছেলেটার আগ্রহ ছিল দেখার মতন। এই ছেলেটাও যাবে অপারেশনে?
"এই ছেলে, তোমার নাম কি?"
"মুজিবুর রহমান" , মাথা নিচু করে জবাব দেন মুজিব।
"বাহ, আমাদের নেতার নামে নাম। তোমার বয়স তো দেখছি একদম কম, যুদ্ধে আসার আগে কি করতে?"
"কলেজে ভর্তি হইছিলাম", লাজুক স্বরে জবাব দেন মুজিব।
মুজিব কে দেখে খুব মায়া হয় নাজমুলের, বাচ্চা একটা ছেলে, এখনও কৈশোর ছাড়েনি পুরোপুরি, চোখে মুখে কেমন একটা মায়া জড়ানো।
"তোমার জীবনের প্রথম অপারেশন এটা?"
" জি নাজমুল ভাই।"
"ভয় পেয়না মুজিব, জানি এই অবস্থায় সবারই ভয় হবে। ভয় না পাওয়াটাই অস্বাভাবিক। তবে ভয় কে জয় করে এগিয়ে যেতে হবে, দেশের জন্য যুদ্ধ এটা, মাটির জন্য যুদ্ধ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের যুদ্ধ। আমাদের জয় হবেই।"
নাজমুল শক্ত করে মুজিবের হাত ধরে বেশ জোরে একবার ঝাঁকুনি দেন।
মুজিবের বুকের মধ্যে একটা থম ধরা, জমে থাকা ভয়। আসলে তিনি খুব বেশি একটা সাহসী মানুষ কখনই ছিলেননা। এই তো বছর খানেক আগে,এমন কি গরুর দড়ি ধরে মাঠে নিতেও তার ভয় লাগলো- গরু যদি গুঁতা দেয়! বড়দা জহুরুল তো এটা নিয়ে অনেক খেপাত তখন।
সেই তিনিই যখন মে মাসের শুরুতে বাবার সামনে মাথা উচু করে বলেছিলেন- আর তো সহ্য হচ্ছেনা বাবা, মুক্তিবাহিনীতে নাম লেখাব,মেঘালয় যাব ট্রেনিং নিতে। দেশে ফিরে, মরি মরব, কিন্তু অন্ততপক্ষে একজন হলেও ঐ খবিশের বাচ্চাদের কে মারতে চাই। সবাই খুব অবাক হয়েছিলেন। সবচেয়ে অবাক হয়েছিলেন মুজিবেব বাবা। ছোট ছেলেকে তিনি বোকাসোকা নরম মনের মানুষ ভাবতেন, যে কিনা কিছুটা ভীতুও। বয়স তেমন একটা বেশি না। এইত সেদিন শেরপুর সরকারী কলেজে ভর্তি হয়েছে- সেই ছেলে যে মুক্তিবাহিনীতে নাম লেখাতে চায়, আসলেই অবাক ব্যাপার।
ছেলের দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মনোভাব দেখে আর বাধা দিতে মন চায়নি উনার। ছেলেকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন- শুধু একটা কথায় মুখ দিয়ে বলেছিলেন-
তোর যদি যুদ্ধে যেতে সাহস হয়, তাহলে তুই যা।
হ্যাঁ সাহস সেদিন হয়েছিল মুজিবের। ভীষণ সাহস, আর দ্বিধা না করে পরের দিনই রউনা দিয়েছিলেন গারো পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে মেঘালয় সীমান্তের উদ্দেশে। ট্রেনিং নিবেন, ফিরে এসে ঝিনাইগাতি মুক্ত করবেন, সাথে ছিল সাত্তার ভাই।
পর্ব তিন
মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে - কুচনিপাড়া, শেরপুর
মুজিবুর রহমান, বাড়ির ছোট ছেলে। লাজুক, আলাভোলা টাইপের। মুজিব ছোট থেকেই পাড়ার মুরব্বিদের, বাসায় বাবা চাচাদের নাখোশ দেখেছেন পাকিস্তানের প্রতি। দেশ বিভাগের পরে এতগুলো বছর চলে গেল তবুও যে পূর্ব পাকিস্তানের কোন উন্নতি হচ্ছেনা, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সমস্ত ক্ষেত্রে ভয়াবহ শোষণ, অন্যায় আর অবিচার চলছে, শুনতে পেতেন। উনার তখন বয়সি বা আর কত। স্কুলে পড়েন, শুরুতে মাথা ঘামাননি এইসব বিষয়ে তেমন একটা। সহজ মানুষ উনি, দিনভর নিজের কাজেই ডুবে থাকতেন। দুরের গারো পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে মাঝে মাঝে স্বপ্নালু হয়ে যেতেন। কখনও মন বিষণ্ণ হলে গারো পাহাড়ের নিচ হতে ঘুরে আসতেন।
বাংলার অবিসংবাদিত নেতার কথা ততদিনে ভালোমতই জানা হয়েছিল তার। সেই মস্ত নেতার নামে উনার নাম- ভিতরে ভিতরে কেমন একটা গর্ব হত। বন্ধু বান্ধবেরা মাঝে মাঝে খেপালেও উনার আসলে খুবই ভালো লাগত ভিতরে ভিতরে।
১৯৭০ সালে সাধারন নির্বাচন হল, সেই মস্ত নেতার দল, বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়লাভ করল। পাড়ার বড়রা ছোটরা সবাই তখন কি ভীষণ খুশি। এবার তাহলে পূর্ব পাকিস্তানের উন্নতি হবে! সবাই ভেবেছিলেন নিজেদের হাতে কিছুটা ক্ষমতা আসা মানে ধীরে ধীরে পূর্ব পাকিস্তানের উন্নতিলাভ... কিন্তু কিসের কি? উল্টা নির্বাচনের কোন পরোয়া না করে ৭১সালের শুরু থেকেই ইয়াহিয়া খান পূর্ব পাকিস্তানে পুরা সামরিক শাসন জারি করল। ঢাকার অবস্থা তখন খুব উত্তাল। ঢাকা তখন চরম উত্তেজনায় টগ বগ করে ফুটছে।
যখন ৭ই মার্চ রেস কোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু তীব্র জ্বালাময়ী ভাষণ দিলেন- "আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোকদের উপর হত্যা করা হয়- তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল......রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।জয় বাংলা। ''
সেই তীব্র জ্বালাময়ী ভাষণে মুজিব ভিতরে ভিতরে ভীষণ আন্দোলিত হলেও তখনও ঘটনার গুরুত্ব তেমন করে বুঝতে পারেননি। ঢাকার সেই তীব্র আঁচ তেমন জ্বালাময়ী রুপে তখনও শেরপুর জেলার, ঝিনাইগাতি উপজেলার কুচনিপাড়া নামক ছোট সীমান্তবর্তী হিজল গ্রামে এসে পৌঁছায়নি। শুধু বাবার পাশে বসে রেডিও শুনতে শুনতে এক তীব্র শিহরণ টের পেয়েছিলেন শরীর মন জুড়ে? তবে কি যুদ্ধ একটা বেঁধেই যাবে? তবে কি নতুন একটা দেশ পৃথিবীর বুকে নতুন ভাবে জন্ম নিতে যাচ্ছে এবার?
[এই গল্পের মুজিবুর রহমান আমার বড় খালু। উনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১ নাম্বার সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন। উনার এলাকাতে উনাকে মুক্তিযুদ্ধের সেই গৌরবময় সময়ের সবাই চেনেন। এই ইতিহাসের সবটুকুই উনার কাছ থেকে শোনা, কিছু জিনিষ আমি মিলিয়ে নিতে চেষ্টা করেছি, পর্যাপ্ত বই পত্রের অভাব সত্তেও চেষ্টা করেছি মুল ইতিহাসের কোন বিকৃতি না ঘটাতে। যে অংশটুকু উনি ভুলে গেছেন, আমি সযতনে এড়িয়ে গেছি সেই অধ্যায়গুলো। উনার এখন বেশ বয়স হয়েছে। তাছাড়া জীবন উনার সাথে ভীষণ রুক্ষ আচরন করেছে পদে পদে , তার ফলে মানসিক ভাবেও উনি অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছেন তাই অনেক কিছুই মনে করতে পারেননি। তারপরেও উনার বয়ানে, এবং খালার কাছ থেকে কিছু তথ্য নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে উনার অংশগ্রহনকৃত ”অপারেশন কাটাখালি ব্রিজ” নিয়ে লিখতে বসলাম। আমার অজান্তে কোন ভুল ত্রুটি থাকলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কারো কোন পরামর্শ থাকলে সাদরে আমন্ত্রিত। ]
কৃতজ্ঞতা স্বীকার- বড় গল্পাকারে কিছু লেখার এটাই আমার প্রথম প্রচেষ্টা। আমার এক পোস্টে স্যামদার উপন্যাস আকারে লেখার প্রস্তাবনা থেকেই এই লেখাটির অনুপ্রেরণা।
চলবে......
মন্তব্য
চলুক
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
চলুক বলছ আপু, তাহলে চলুক।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
মেজর নাজমুল হক ৭ নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, ১১ নং সেক্টরের নয়। ১০ই এপ্রিল থেকে শুরু করে ২৭শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। এখানে উল্লেখ্য, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ শিলিগুড়িতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় উনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর ৭ নং সেক্টরের দায়িত্ব পান মেজর কাজী নুরুজ্জামান।
ময়মনসিংহ (ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর), টাঙ্গাইল, রংপুর (গাইবান্ধা, উলিপুর, কামালপুর, চিলমারী) ১১ নং সেক্টরের অন্তর্ভূক্ত ছিল। এই সেক্টরের সেক্টর কমান্ডাররা হচ্ছেনঃ
১। মেজর জিয়াউর রহমান (২৬শে জুন - ১০ই অক্টোবর, ১৯৭১)
২। মেজর আবু তাহের (১০ই অক্টোবর - ২রা নভেম্বর, ১৯৭১)
৩। স্কোয়াড্রন লীডার এম হামিদুল্লাহ্ খান (২রা নভেম্বর, ১৯৭১ - ১৪ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২)
********************************************
মুক্তিযুদ্ধের যে কোন ইতিহাস শুনলে "Fact is stranger than fiction" কথাটার সত্যতা হাড়ে হাড়ে টের পাই। বস্তুত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এমন যে সেখানে কোন রঙ চড়ানোর দরকার নেই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ফিকশন লেখার সুবিধাটা হচ্ছে এখানে যে, কেবল ঘটনা বর্ণনা করলেই টানটান উত্তেজনা, করুণরস আর বীরত্বগাঁথার গল্প তৈরি হয়ে যায়। আর বিপদটা হচ্ছে, সেখানে কোন তথ্যবিভ্রান্তি বা ওভারস্টেটমেন্ট বা আন্ডারস্টেটমেন্ট পাঠক মেনে নেবে না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনেক ধন্যবাদ পাণ্ডবদা। আপনার মন্তব্যগুলো এই জন্যই এত ভালো লাগে।
কিন্তু উনার নাম ছিল নাজমুল আহসান। নাজমুল হক নয়। উনি সেই অপারেশন কাটাখালি ব্রিজ এর মূল দায়িত্তে ছিলেন এবং খালু জোর দিয়ে বলেছেন উনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। সেই অপারেশন করতে গিয়ে উনি মারা যান।
আমি আগেই স্বীকার করেছি যে আমার কাছে পর্যাপ্ত বই পত্র ছিলনা তাই ঠিক ঠিক মত রাঙ্কিং গুলো যাচাই করা সম্ভব হয়নি আর এই কারনেই কিন্তু আমি ট্যাগিং এর সময়ে "গল্প" ট্যাগ রেখেছি। যদি ঠিকমত নিশ্চিত থাকতাম তাহলে গল্প ট্যাগিং করতাম না।
এইখানে আমি অন্য কোনই ইতিহাস রাখবনা কারন আমার কাছে সমস্ত তথ্য নেই, শুধু সেই অপারেশন টুকুর বর্ণনা দিব। আর সেই কাটাখালি ব্রিজ উড়ানোর ঘটনাটি নিশ্চিত জেনে তবেই লিখতে বসেছি।
কোন রং না চড়িয়ে খালুর কাছ থেকে যা শুনেছি তাই লিখার চেষ্টা করছি। উনার উপর জীবনে এত বড় বড় আঘাত গেছে যে উনার কিছু জায়গা ভুলে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক আর আমি কিন্তু সেই কথা লিখার নিচেই লিখে দিয়েছি।
পুরা ঘটনাটি এত বেশী রোমাঞ্চকর যে গল্প আকারে লিখার লোভ সামলাতে পারিনি। ভুল হলে ক্ষমা মার্জনীয়।
সম্ভবত বয়সজনিত কারণে আপনার খালু অতি সামান্য কিছু তথ্য ভুলে গেছেন। তবে সেটা সমস্যা না। আপনি লেখার সময় একটু যাচাই করে নিলেই সেগুলো দূর হয়ে যাবে। শহীদ নাজমুল আহসান সেক্টর কমান্ডার ছিলেন না, তবে মুক্তিযোদ্ধাদের কোম্পানী কমান্ডার ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ) কৃষি প্রকৌশল বিভাগের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। সেই সময় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় থেকে ভর্তি হতে হতো বলে মোট শিক্ষাবর্ষ ৬ বছরের ছিল। ১৯৭১ সালের ৫ই জুলাই রাতে আরো ৫৩ জন মুক্তিযোদ্ধা সহযোগে তিনি কাটাখালি ব্রিজ অপারেশনে সফল নেতৃত্ব দেন। ভোরে তাঁদের দল দুই ভাগ হয়ে দুই দিকে চলে যায়। তাঁর গ্রুপ খাটিয়া বিলের মাঝে খাটিয়াপাড়া গ্রামের হাজী নাঈম উদ্দিন ও হাজী শুকুর মাহ্মুদের বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিন্তু স্থানীয় রাজাকার জালাল মিস্ত্রী আগেভাগেই পাকিস্তানী বাহিনীকে তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে খবর দেয়ায় পাকিস্তানীরা ট্রলার নিয়ে অতর্কিতে হাজির হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ শুরু করে। এই আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা বিলের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এই সময়েই পাকিস্তানী বাহিনীর গুলি বর্ষণে নাজমুল আহসান শহীদ হন। তাঁর সাথে আরো শহীদ হন তাঁর চাচাতো ভাই মোফাজ্জল হোসেন, তাঁর ভাতিজা আলী হোসেন, ফজলু, আব্বাস আলী, আয়াতুল্লাহ, আমিজ উদ্দিন, শামস্ মিস্ত্রি ও বাদশা আলী। রাজাকারদের দৌরাত্বে এই নয়জন শহীদকে স্বাভাবিক দাফন করা সম্ভব হয়নি। কলার ভেলায় বিলের পানিতে তাঁদের লাশ ভাসিয়ে দিতে হয়েছিল।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা হল তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে "শহীদ নাজমুল আহসান হল" নামে। নালিতাবাড়িতে একটি কলেজও তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে।
একটা দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি'র আহ্বায়ক ডাঃ এম এ হাসান কর্তৃক প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় নালিতাবাড়ি থানার রাজাকারদের নামের তালিকার ৬৩ নং নামটি হচ্ছেঃ মোফাজ্জল হোসেন, ১৩৬ নং নামটিঃ শহীদ নাজমুল আহসান এবং ১৩৮ নং নামটিঃ আলী হোসেন। এর প্রতিবাদে গত ১১ই অক্টোবর, ২০১২ বৃহস্পতিবার নালিতাবাড়ীর মুক্তিযোদ্ধারা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ে একটি প্রতিবাদ সভা ও সেঁজুতি বিদ্যানিকেতনে সংবাদ সম্মেলন করেন। সভায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাব উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে জানান, ২০১১ সালে নালিতাবাড়ি উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সংশোধনী পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তখন পর্যন্ত তা সংশোধন করা হয়নি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি পরে বিস্তারিত মন্তব্য করছি পাণ্ডবদা, এই কম্পিউটারে অভ্র নাই। এই কাহিনী গল্প আকারে লিখতে চেয়েছিলাম খালুর বয়ানে। কৃতজ্ঞ রইলাম আপনার কাছে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
পাণ্ডবদা লিখতে অনেক দেরী হয়ে গেল। পরে মন্তব্য করব ভেবে ভুলে গেছি।এই জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
আপনাকে কৃতজ্ঞতা এত চমৎকার ভাবে তথ্যগুলো দেবার জন্য। খালু ঠিক এই ঘটনাটি বলেছিলেন উনার নিজের ভাষায়। বিলের পানিতে মুক্তিযোদ্ধারা যখন মাথায় কচুরিপানা দিয়ে পালাচ্ছিলেন তখন হানাদারেরা কভারিং ফায়ার শুরু করে তাতে করেই সেই ৯জন শহীদ হন। নাজমুল আহসান যখন গুলি খান খালু উনার বেশ কাছেই ছিলেন।
খালু উনার বর্ণনাতে বলেছিলেন যে উনারা ৫০জন ব্রিজ উড়াতে যান আর বাকি ৫০জন যান বোট উড়াতে। কিন্তু আপনার কাছ থেকে জানলাম মোট ৫৩ জন ছিলেন। আসলে সঠিক সংখ্যা কোনটি নিশ্চিত হবার উপায় কি? আমার কাছে পর্যাপ্ত বই পত্র নাই এখানে।
আপনার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য গুলোর সব কিছু আমার জানা ছিলনা। আসলে খালুর বর্ণনাতে ঘটনাটি এত বেশী রোমাঞ্চকর ছিল যে সবাইকে নিজের ভাষায় জানানোর লোভ সামলাতে পারিনি। খালু জীবনের নানান ঝড় ঝাপটায় কিছু ঘটনা হয়ত ভুলে গেছেন, কিন্তু মূল ঘটনাটি ঠিক মতই বলতে পেরেছেন।
চেষ্টা করছি আরও বেশী তথ্য যোগাড় করতে, এই জন্যই দ্বিতীয় পর্বটা আর লিখিনি। আপনার কাছে আর কোন তথ্য থাকলে জানালে খুব ভাল লাগত।
মানিক ভাই বা সচলে অন্য সবার সাথে কিভাবে যোগাযোগ করতে হয় জানা নেই।
আবারও ধন্যবাদ আপনাকে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
আরেকটি ব্যাপার পাণ্ডবদা, আপনার সেক্টর কমান্ডারদের নামগুলো পড়তে পারছিনা।
নাজমুল আহসান যদি সেক্টর কমান্ডার না হয়ে থাকেন তাহলেও সেই বিশেষ অপারেশনটিতে উনি মূল দায়িত্তে ছিলেন। সে ক্ষেত্রে আমার লেখাটি থেকে নাজমুলের নামের সামনে থেকে সেক্টর কমান্ডার শব্দটি তুলে দিলেই মনে হয় আর কোন অতিরঞ্জিত বিষয় থাকেনা কেননা ঘটনাটি পুরাটাই সত্যি ছিল।
আগের কমেন্টে বলেছি আবারও বলছি পর্যাপ্ত রেফারেন্স না থাকায় আমি শুধু সেই অপারেশনের বর্ণনা থেকে শুরু করে খালুর জীবন কাহিনী লিখে যাব। মুক্তিযুদ্ধের তথ্যবিভ্রান্তি অথবা তথ্যবিকৃতি সংক্রান্ত কোন অপরাধ অন্ততপক্ষে আমি কখনও করতে চাইনা, এবং করবও না।
আবারও ধন্যবাদ পাণ্ডবদা।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
সচলেই অনেকে আছেন যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে অনেক দিন ধরে কাজ করছেন। লেখা পোস্ট করার আগে তাদের কারো সাথে একটু পরামর্শ করে নিলে ভালো হয়। যেমন, নুরুজ্জামান মানিকের কথা বলা যায়। তাছাড়া মানিক নিজের বাড়ি শেরপুরে এবং তার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা।
আপনার উদ্দেশ্যের সততা নিয়ে কোন প্রশ্নের অবকাশ নেই। যেহেতু বিষয়টা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ তাই আমি শুধু একটু সাবধান করেছি মাত্র। লেখা চালিয়ে যান। মুক্তিযুদ্ধে জনযোদ্ধাদের ভুমিকা ও অবদান চাপা পড়তে চলেছে। তাঁদের কথা ভুলে 'নিমকহারাম' হিসাবে চিহ্নিত হতে চাই না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
পড়তে পড়তে যেন ১৯৭১ এ ফিরে গেলাম।
চলুক
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সবসময় পাশে থাকার জন্য।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
দারুন শুরু - পড়ে যাবার আগ্রহ থাকল - উপরে পান্ডব্দার লেখার শেষ অংশে আপনার এবং যারা ভবিষ্যত এ লিখবেন সবারই উপকার হবে আশা করছি।
অসংখ্য ধন্যবাদ সাফিনাজ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরেকটি লেখা শুরু করার জন্য।
আপনার অনুপ্রেরনাতেই তো লিখার সাহস করলাম, আপনি না পড়লে চলবে?
অনেক ধন্যবাদ স্যামদা সাথে থাকার জন্য।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
কেমন জানি খুব অন্যরকম ভাল লাগছে - এ মনিহার আমায় নাহি সা... হাহাহহা
আন্তরিক শুভকামনা।
বাহ বাহ, ভালোই তো হচ্ছিল গান থামল কেন স্যামদা??
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ লেখাটা শুরু করার জন্য ।প্রথম পর্ব দারুণ হয়েছে। সচলে লেখার একটা বড় সুবিধা হল এখানে বিভিন্ন বিষয়ের উপর অগাধ পড়াশুনা করা বেশ কিছু মানুষ আছেন। ছোটখাটো ভুল ত্রুটি হলে যারা খুব চমৎকার ভাবে শুধরে দিতে পারেন। তুমিও নিশ্চয়ই এই সুবিধাটা পাবা। সো, লিখতে থাক। এই গল্প গুলো লিখে রাখাটা খুব জরুরী।
সম্পূর্ণ একমত।
কিন্তু আমারও কিছু বলার ছিল।।
আমার মন্তব্য কখন যে প্রকাশ হবে?
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ এত ভাল ভাল কথা লিখার জন্য।
আর মাত্র একটি প্রজন্ম হয়ত, তারপরে সেইসব মানুষগুলো আর থাকবেননা। তাই ইচ্ছে করে সেই গল্পগুলো যত টুকু জানি লিখে ফেলতে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ধন্যবাদ, এ বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।
৭ই মার্চ, ১৯৭১, রমনা রেসকোর্সের ময়দানে ঐ ভাষণে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। এ নিয়ে আমার একটা লেখা আমার স্মৃতিতে ৭ই মার্চ ।ভাষণের শেষ বাক্যে, 'এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।। আপনার লেখার ঐ অংশের শেষে 'জয় বাংলা' শব্দ দুটো যোগ করে দিন। তা নাহলে বাক্যটি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
"জয় বাংলা।"-- ওয়ার্ড ফাইলে যখন লিখেছিলাম শব্দদুটি ছিল, কপি পেস্ট করার সময় কোনভাবে মিস হয়ে গেছে।
ধরিয়ে দেবার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
আপনার লেখাটি পড়লাম। ওখানে মন্তব্য করেছি। আরও আরও বিস্তারিত লেখা আসুক, প্লিজ আরও লিখুন। এই গল্পগুলো বারবার শুনতে চাই।
সেই প্রথম থেকে আপনাকে সাথে পাই, অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
/
দুইবার এসেছে !
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
লিখতে থাকুন !!!
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
অসাধারণ
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা কাহিনীতে যখন ত্রিপুরার কথা আসে তখন সত্যি এত্ত আবেগ তাড়া করে যে বুঝিয়ে উঠার মতো নয়। মুজিবের সাথে একই শ্লোগানে কেঁপেছে আমার এই ছোট্ট রাজ্যের রাজধানী থেকে গ্রাম। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি ছড়িয়ে আছে মেলাঘর থেকে বিলোনীয়া কিংবা উদয়পুর থেকে বিশালগড় হয়ে আগরতলার অলিতে গলিতে। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি সেই অঞ্চলটা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের বড় ট্রেনিং ক্যাম্প। ৭১ এর বাস্তুহারা মানুষ আমার গোটা পরিবার ( আমাদের প্রজন্ম ছাড়া )। এই যুদ্ধ যেমন একদিকে আমার কাছে শৌর্যের বার্তা শোনায় অন্যদিকে মাটি হারানোর কান্নাও বয়ে আনে
০২
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ত্রিপুরা কেন্দ্রিক একটা লেখা বহুদিন যাবত লিখব লিখব করেও লেখা হয়ে উঠছে না। এইবার সত্যি সময় করে টানা লিখে শেষ করব ভাবছি
থামবেন না। লিখুন। টানা শেষ করুন এই লেখা। পড়তে চাই
ডাকঘর | ছবিঘর
অনেক অনেক ধন্যবাদ তাপসদা, আপনার অনুভুতির জন্য
কেন লিখছেন না বলুন তো? প্লিজ লিখুন, দারুন হবে।
খুব দ্রুত লিখা দেন মিয়া ভাই নাইলে কিন্তু
আপনার হাত থেকে আসামের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ট্রেনিং ক্যাম্প, শরণার্থী শিবির এইধরনের অন্যরকম গল্পগুলো উঠে আসুক।
আমিও লিখতে চাই, টানা পারব কিনা জানিনা। দেশের বাইরে এই একটা সমস্যা চাইলেই যে কোন বই হাতের কাছে পাওয়া যায়না। আপনার আগ্রহের জন্য আবারও
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
লেখা ভালো হচ্ছে আপু। চলুক।
তবে উনার, উনাকে এর পরিবর্তে তার , তাকে এই শব্দগুল ব্যবহার করলে পড়তে আরাম হয় মনে হয় আপু। এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত।
হ্যাঁ, সম্মান প্রদর্শনের জন্য তাঁর, তাঁকে শব্দগুলো ব্যবহার করা যায় বটে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ অমি ভাই।
ঠিকাছে, পরবর্তীতে খেয়াল রাখব।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
তোমার লেখা ঝারঝরে, এক টানে পড়ে ফেলি। আর পরের লেখার আশায় থাকি।
আমি দেশে যাচ্ছি, সচলে সবসময় যাওয়া হবে না, ফিরে এসে পরের পর্ব আর অন্যদের লেখা পড়বো।
যুদ্ধের সময়ের কথা পড়লে গভীর এক খারাপ লাগায় মন ভরে যায়। কি আতঙ্কে কেটেছে সেই সময়।
কত নৃশংস মৃত্যুর কাহিনী জানি কাছের মানুষের।
তোমরা এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যখন সে সময়ের কথা লেখো, গর্ব বোধ করি।
লেখা চলুক, ভাল হচ্ছে।
দিদি আপনি কেন লিখেন না সেই সময়ের গল্প গুলো?
লিখে ফেলুন, আমরা পড়ি, আরও বেশী করে যেন জানতে পারি সবকিছু।
সেই প্রথম থেকেই আপনি আমাকে অনেক উৎসাহিত করেছেন। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
দেশ থেকে ভালভাবে ঘুরে আসুন, আপনার সময় আনন্দময় কাটুক। শুভকামনা রইল।
আপনার জন্য আমরাও অপেক্ষায় থাকব।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
আমাদের মাত্র সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ রয়েছেন, কিন্তু দেশজুড়ে নিশ্চয়ই আরও অনেক বীর আছেন, পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে যাদের ইতিহাস সংরক্ষিত হয়নি তেমনিভাবে অথবা এমন অনেকে রয়েছেন, যাদের শৌর্যবীর্য বীরশ্রেষ্ঠদের সমান না হলেও কাছাকাছি, কিন্তু রয়ে গেছেন আমাদের অগোচরে। মুক্তিযুদ্ধের সেই আনসাং হিরোদের কাহিনি পড়তে আমার ভীষণ ভাল লাগে। এই লেখাটি থেকে চোখ সরিয়ে নিতে পারিনি সে কারণেই।
আপনার এই লেখাটির ফর্মেশন খুব ভাল হয়েছে। শ্বাসরুদ্ধর একটি কাহিনির ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, আসল অংশটুকুর জন্য আমার মত পাঠকদের রেখেছেন অধীর অপেক্ষায়। আপনার গল্পের মত করে বলার ভঙ্গি পাঠকের মনোযোগ কেড়ে রাখে আগাগোড়া!
আপনার এই লেখাটি 'মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোন' শীর্ষক পাতায় দেখতে পেলে ভাল লাগবে! আমাদের এই টুকরো টুকরো গৌরবগাঁথাগুলোকে আরও ছড়িয়ে দেয়া দরকার।
পরিশিষ্ট: মুক্তিযুদ্ধের সময় কি মানুষ মেঘালয় বলত? নাকি আসাম বলত? তাছাড়া, বাছাই করার পর কেন মুজিবরকে জিজ্ঞেস করলেন যে, উনার প্রথম অপারেশন কিনা? বাছাইয়ের সময় কি জানতে পারেননি?
অনেক ধন্যবাদ মামুন ভাই। আমার কাছে যেটা মনে হয় - এই মানুষগুলো, এই গল্পগুলো অল্প কিছুদিন পরেই বলার আর কেউ থাকবেনা। মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে আমরা ইতিহাস বিকৃত করি আর উনারা যখন থাকবেনা তখন কি তাহলে এই গল্পগুলোই হারিয়ে যাবে। আমার খুব ইচ্ছে হয় সেই সময়ের যত মানুষ আমি চিনি তাদের গল্পগুলো লিখে রাখি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরও অনেক কিছু লিখার ইচ্ছে আমার আছে সমস্যা হল এই মুহূর্তে আমার কাছে ইতিহাস নির্ভর কোন বই নাই যেখান থেকে আমি রেফারেন্স নিতে পারব, নেট ঘেটেও তেমন কিছু পাইনি। তবে ভবিষ্যতে দেশে গেলে নিশ্চয় এমন মানুষদের গল্পগুলো আরও লিখব, বারবার লিখব।
খালুর কাছ থেকে গল্প শুনে আমি নিজে ভীষণ রোমাঞ্চিত বোধ করেছিলাম, সেই টুকু ভাগাভাগি করার উদ্দেশেই এই লিখা।
খালুর বাড়ি গারো পাহাড় থেকে খুব কাছে, উনি যতবার গল্প বলেছেন মেঘালয় উল্লেখ করেছেন। সঠিক জানা নেই আমার সবাই আসাম বলত নাকি মেঘালয় বলত, তবে উনি মেঘালয় বলতেন।
বিষয়টা হল বাছাইয়ের সময় উনার খুব আগ্রহে উনাকে নেওয়া হয়েছিল, তার মাত্র অল্প কিছুদিন আগেই উনি ক্যাম্পে যোগ দিয়েছিলেন। বাছাইয়ের পরে যখন নির্দেশনা পর্ব চলছিল তখন উনাকে মেজর নাজমুল আলাদা ভাবে খেয়াল করেছিলেন উনার এত অল্প বয়স দেখে।
খালুর জানা আরও অনেক গল্প আছে, সমস্যা হল উনার মানসিক অবস্থা খুব খারাপ তাই অনেক কথাই ভুলে গেছেন।
ভালো থাকবেন।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
তোমার খালুর প্রতি শ্রদ্ধা আরজু! শুরুটা ভালো লাগলো, চলুক...
তোমাকেও ধন্যবাদ আপু পড়ার জন্য।
তোমার নতুন পোষ্টের অপেক্ষায় আছি।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
চলুক, পড়ছি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ রাতঃদা।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
দারুণ একটা কাজ শুরু করেছেন। অভিনন্দন। খুব ভালো লাগলো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ তুলি আপু।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
এটা জেনে খারাপ লাগল। যদিও জানিনা কেন, কিভাবে। সম্ভব হলে জানাবেন।
আপনার লেখা ভাল লাগল।
এগিয়ে যান।
শুভকামনা থাকল।
সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমারও ইচ্ছে আছে উনার বর্তমান জীবন নিয়ে লেখার অবশ্যই উনার অনুমতি সাপেক্ষে। দেখা যাক কি হয়।
ভাল থাকবেন।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
পড়ছি কিন্তু
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
ঠিকাছে আপু !
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
নতুন মন্তব্য করুন