মাথা নত হয়ে আসে...

সাফিনাজ আরজু এর ছবি
লিখেছেন সাফিনাজ আরজু [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ০১/০৫/২০১৩ - ৬:২৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেশে থাকতে আমি একটা নামী ঔষধ কোম্পানিতে প্রোডাকশন ফার্মাসিস্ট হিসাবে চাকরি করতাম। দেশের সব ঔষধ কোম্পানিগুলো প্রোডাকশনে মেয়ে অফিসার নেয়না কারন মেয়েরা ওয়ার্কার (তাদের ভাষায়) দের সামলাতে পারবেনা। আমি যেখানে কাজ করতাম তাদের অল্প কিছু মেয়ে অফিসার ছিলেন প্রোডাকশনে, তাদের একজন ছিলাম আমি। যখন ভার্সিটিতে পড়তাম ইচ্ছে ছিল পাশ করে মার্কেটিং এ চাকরি করার। ইচ্ছেটা খুব তীব্র ছিল কিন্তু এই তীব্র ইচ্ছেটাও বদলে ছিল ইন প্লান্ট ট্রেনিং এ গিয়ে।

প্রোডাকশনে কাজ করলে অন্যান্য কাজের সাথে ঔষধ বানানোর তদারকি করতে হয়, সব কাজ ঔষধ শ্রমিকেরাই করে থাকেন, আমার মত প্রোডাকশন ফার্মাসিস্টের কাজ ছিল জি, এম, পি অনুযায়ী পুরো প্রক্রিয়ার তত্তাবধায়ন করা আর সাথে সাথে ঔষধ শ্রমিকদের সুপারভাইজ করা। ভার্সিটি লাইফে আমার সব বন্ধুরা জানত আমি মার্কেটিং এ কাজ করব তাই ট্রেনিং এর পরে হুট করে যখন প্রোডাকশনে কাজ নেই সবাই বেশ অবাক হয়েছিল... অনেকে না করেছিল কারন ওয়ার্কারদের সামলানো নাকি আসলেই বেশ কঠিন কাজ... অনেকের কাছে এমনটাও শুনেছি তারা নাকি ছোট লোকের জাত... কথায় কথায় বেয়াদপি করে... একটা মেয়ে হয়ে এতগুলো পুরুষ এবং মহিলা শ্রমিক সামলানো নাকি আসলেই কঠিন হবে। আমার বাসাতেও কেউ তেমন একটা রাজি ছিলনা তবুও আমি প্রোডাকশনেই কাজ করতে চেয়েছিলাম, তবুও আমি শ্রমিকদের সাথে, তাদের একজন হয়ে তাদের সাথে মিশেই কাজ করতে চেয়েছিলাম।

যে কোম্পানিতে ট্রেনিং এ গিয়েছিলাম সেই কোম্পানিতেই ট্রেনিং শেষে জয়েন করেছিলাম। শুরুর দিনটাতেও জানতাম না যে মাসব্যাপী ট্রেনিং শেষে আমি প্রোডাকশনে কাজ করতে চাইব... আমার ইচ্ছের বদল হয়েছিল কারন আমি এই এক মাসে সেখানকার শ্রমিকদের ভালবেসেছিলাম। ট্রেনিং এর শুরুর দিনটি থেকেই তাদের আমার ভালো লেগেছিল... কি সহজ, সরল, আন্তরিক, কর্মঠ, কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান... কাজের প্রতি কি গভীর মনোযোগ... অনেক সময় দেখেছি কোন অফিসার নাই তারা নিজ দায়িত্ব থেকেই খুব যত্নের সাথে নির্ভুল ভাবে সব কাজ করে চলেছেন। তাদের কাজের প্রতি এত ভালবাসা দেখে আসলেই খুব অবাক হয়েছিলাম... ধীরে ধীরে কিছু মানুষের সাথে আলাপ হল... অনেকেই কোম্পানির শুরু থেকেই আছেন... কি গভীর ভালবাসা তাদের এক একটা মেশিনের প্রতি, এক একটা প্রোডাক্টের প্রতি... অথচ কত টাকায় বা বেতন পান তারা...! তাদের রাত দিন রক্ত নিংড়ানো পরিশ্রমে এই সব প্রতিষ্ঠান গুলো চারাগাছ থেকে মহীরুহে পরিণত হয় অথচ তাদের অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়না।

ট্রেনিং এর সময় তারা আমাদের ডাকত ট্রেইনি ম্যাডাম বা ট্রেইনি স্যার বলে... কাজের ফাঁকে এক তিল অবসর নাই তারই মাঝে হয়তবা কেউ জিজ্ঞেস করত ম্যাডাম আপনার দেশের বাড়ি কোথায়... পরের দিনটাতেই দেখতাম তাদের অনেকেই জানে আমি কোন জেলা থেকে এসেছি। সবচেয়ে বেশী কথা বলার সুযোগ হত দুপুরে লাঞ্চের সময়... আমি মাঝে মাঝেই তাদের টেবিল এ বসে খেতাম... শুধু এই টুকুতেই উনারা কি অসম্ভব খুশী যে হতেন... অবাক হতাম। অনেকেই সেই সময় বলেছিল ম্যাডাম আপনি এইখানেই কাজ নেন।। আমাদের এমন একটা ম্যাডাম দরকার... তাদের আগ্রহে আস্তে আস্তে আমার ভিতরেও তৈরি হয়েছিল সেখানে তাদের সাথে কাজ করার।

ট্রেনিং এর শেষ দিনে ভাইভা দিতে গিয়ে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর কে খুব স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছিলাম আমি শুধু মাত্র প্রোডাকশনেই কাজ করতে চাই... উনি অবাক হয়েছিলেন, অনেক প্রশ্ন করেছিলেন ওয়ার্কার দের সামলানো নিয়ে তারপরে কি ভেবে জানি প্রোডাকশনেই আমাকে নির্ধারিত করেছিলেন।
ট্রেনিং এর সময় যে সকল শ্রমিক দের সাথে পরিচয় হয়েছিল তাদের সাথেই আমি ছিলাম ফিনল্যান্ডে আসার আগ পর্যন্ত দুই বছর।। এর মাঝে কোনদিন বিন্দু মাত্র অসম্মান বা অশ্রদ্ধাটুকুও আমি পাইনি উনাদের কাছ থেকে। অনেক সময় কাজের প্রয়োজনে আমি তাদের বকা ঝকা করেছি, রাগ করেছি হয়ত শাস্তি ও দিয়েছি কিন্তু আমার প্রতি তাদের বিন্দু মাত্র অসন্তোষ কখনও দেখিনি।

যে পরিমান ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা আমি তাদের কাছ থেকে পেয়েছিলাম আমি সারাজীবন মনে রাখব। অথচ আমার অনেক সহপাঠী যারা কিনা অন্য কোম্পানিতে প্রোডাকশনে কাজ করে তাদের কাছে শুনতাম তাদের অধীনে কাজ করা ওয়ার্কাররা নাকি অনেক বেশী খারাপ এবং বেয়াদপ(?!)।
অনেক ছোটতে পড়েছিলাম ভদ্রতা, ভদ্রতা নিয়ে আসে। আমি নিজে কারো সাথে বেয়াদপি করলে সেও পাল্টা আমার সাথে বেয়াদপি করবে, আমি নিজে কাউকে ছোট করে কথা বললে সেও আমাকে অসম্মানিত করবে এটাই স্বাভাবিক। এই সহজ কথাটাই আমরা ভুলে যায়।
আজ প্রায় বছর তিনেক আমি সেই কোম্পানি ছেড়ে দেশের বাইরে, কিন্তু এখনও তাদের অনেকের সাথেই আমার যোগাযোগ আছে... এখনও ঈদ, পহেলা বৈশাখ এই ধরনের উৎসবে তারা আমাকে এস এম এস করে। আমার এই অকিঞ্চিৎকর জীবনে এই মানুষ গুলোর ভালবাসা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, ব্যক্তিগত সবচেয়ে বড় অর্জন বলে মনে হয়।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে এত কথা বললাম কারন আমাদের দেশের এক শ্রেণীর শ্রমিকদের আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি... আমার সরাসরি তদারকিতে প্রায় জনা পঞ্চাশেক শ্রমিক কাজ করতেন। এছাড়াও সারা ফ্যাক্টরির সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজন মত তো যেতেই হত সেভাবেই কম বেশী অনেকেরি মুখ চিনতাম। যদিও ঔষধ শ্রমিকদের অবস্থা কোনভাবেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের মত না, তুলনা করলে তারা অনেক দিক থেকেই বেশ ভালো আছেন তবুও নিজের চোখে আমি তাদের সাথেই যে পরিমান অন্যায়(খুব সল্প বেতন, ওভার টাইমের কথা বাদ রেখেই বলছি), অনাচার দেখেছি(অন্য কোনদিন বিস্তারিত বলা যাবে) তা কখনও কখনও অসহনীয় পর্যায়ে চলে যেত।

আমি যেখানে কাজ করতাম সেখানে সিকিউরিটি বেশ ভালো ছিল কিন্তু সেখানে একটি নিয়ম ছিল শ্রমিকেরা ফ্যাক্টরিতে একবার ঢুকলে গেট পাস ছাড়া আর বের হতে পারতেন না। গেট পাস বিষয়টা ছিল এমন- কারো যদি কোন জরুরী দরকার হয় তাহলে একটি প্রিন্ট করা কাগজে সেই শ্রমিকের নাম , আইডি এবং গেট পাস নেবার পিছনের কারন বর্ণনা সহ সেখানে নিজ সেকশন অফিসারের সিগনেচার লাগবে আর তার সাথে কোন ম্যানেজারের সিগনেচার লাগবে। এই দুটি সিগনেচার দেখতে পেলেই তবে গেটে দাঁড়ানো সিকিউরিটি গার্ড সেই শ্রমিককে বের হতে দিবে। এই ধরনের প্রটোকলগুলো কোম্পানির স্বার্থ দেখলেও শ্রমিকদের স্বার্থ যে একেবারেই দেখত না তা নির্দ্বিধায় বলতে পারি। অনেক সময় দেখা যেত কোন শ্রমিকের বাসা থেকে জরুরী সংবাদ আসল। অবস্থার গুরুত্ব বুঝে আমরা যারা প্রডাকশান অফিসার ছিলাম তারা গেট পাসে দ্রুত সিগনেচার করে দিলেও ম্যানেজারেরা হয়তবা কোন মিটিং এ হেড অফিসে ব্যাস্ত। অথবা ফ্যাক্টরিতেই রুদ্ধ দ্বার বৈঠক চলছে, এর মাঝে সেই মানুষ টি অসহায়ের মত ছটফট করছে কখন সে ম্যানেজারের একটি সাইন পাবে কখন সে বাড়ি যেতে পারবে।

শ্রমিকদের কাছে মোবাইল রাখা নিষিদ্ধ ছিল। তাদের কাছে জরুরী কোন খবর আসলে হয় গেটে খবর আসত অথবা অফিসে ল্যান্ডফোনে ফোন করে জরুরী সংবাদ জানান হত। একবারের একটি ঘটনা বলি- গেটে খবর আসল এক শ্রমিকের আড়াই বছরের ছেলেটার হাত গরম পানিতে ঝলসে গেছে। সাথে সাথে প্রডাকশান অফিসারের সাইন পাওয়া গেলেও ম্যানেজার পাওয়া যাচ্ছিল না কোনোভাবেই... অবশেষে অফিসারদের অনুরোধে অ্যাডমিন থেকে তাকে ছাড়পত্রের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। আর এই অপেক্ষার সময়ে সেই অসহায় মা টির কান্নার আওয়াজ কোনদিন ভুলতে পারবনা। মানছি যে কিছু নিয়ম কানুন কোম্পানির স্বার্থেই প্রয়োজন কিন্তু অবস্থার প্রয়োজন বা গুরুত্ব বলেও একটা কথা থাকে। অনেক সময় অনেকের মৃত্যু সংবাদ আসার পরেও বিভিন্ন নিয়ম কানুনের বেড়া জালে আটকে ছটফট করতে দেখেছি।

আমার নিজের অভিজ্ঞতায় এমন দুইবার হয়েছে কোন প্রেগন্যান্ট মহিলার হঠাৎ করে ব্যথা উঠলেও তাকে প্রটোকল মেনে বাসায় নিয়ে যেতে না যেতেই তার বাচ্চার পৃথিবীতে আগমনের সংবাদ পেয়েছি।

সমস্ত প্রতিষ্ঠান গুলোর এই সকল প্রটোকল কেবল মালিকদের স্বার্থ দেখে, কোনভাবেই শ্রমিকদের নয়। আর সে কারণেই তাজরিন ফ্যাশনে আগুন লাগলেও সিকিউরিটি গেট আটকে মানুষগুলোকে মৃত্যুর মুখে ছুঁড়ে দেয়। রানা প্লাজায় বিশাল ফাটল দেখা যাবার পরেও জোর করে শ্রমিকদের কাজে ঢুকানো হয়। আর এভাবেই তাদের অভাবটাকে পুঁজি করে মালিক পক্ষ ব্যাবসা করে যায় আর তাদের লাশের পাহাড়ে মানবতা চাপা পড়তে থাকে। এই মানুষগুলোর এই অতি কিঞ্চিত বেতনের টাকা গুলো তাদের কাছে অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ সে জন্যই প্রানের মায়া ত্যাগ করে সেই মানুষগুলো কাজে যোগ দিতে যায়। আমি জানি, আমি অনুভব করতে পারি তাদের কষ্ট বা তাদের প্রয়োজন টুকু। কারন আমাদের সেই কোম্পানিতেও নির্দেশ ছিল কেউ না বলে অফিস কামাই করলে সেই দিনের বেতনের টাকা কেটে নেবার। কতদিন দেখেছি কতজন কাচু মাচু মুখে কোন অফিসারের সামনে দাঁড়িয়ে বার বার অনুরোধ করছে যেন তার টাকা না কাটা হয়।

আমাদের দেশে সবচেয়ে সস্তা হল মানুষের জীবন। গার্মেন্টস মালিকেরা সহ বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা এই সকল শ্রমিক দের মানুষ হিসেবেই মনে করেনা অথচ এই শ্রমিকগুলো কাজকে কখনোই শুধু কাজ মনে করে করেননা এটা নিজের অভিজ্ঞতা থেকে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি। কাজের প্রতি যে পরিমান নিষ্ঠা এবং ভালবাসা তাদের থাকে, প্রতিষ্ঠানটির প্রতি যে পরিমান আবেগ তাদের মনে জমা থাকে আর তার বিনিময়ে মালিক পক্ষ থেকে যে বেতন, যে ব্যবহার তারা পায় তা আসলে ভয়ংকর অমানবিক। লাভের চাকায় শ্রমিকদের উন্নতি দূরে থাক জীবনের নিরাপত্তায় কোথায় যেন হাওয়া হয়ে যায়। অথচ এই শ্রমিকেরাই আমাদের দেশের চালিকা শক্তি। আমাদের অর্থনীতি সমাজ ব্যবস্থা তারাই ধরে রেখেছে। খুবই সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে তারা তাদের সর্বস্ব ঢেলে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির উন্নতি করে চলে রাত দিন... অথচ বিনিময়ে বেশীরভাগ মানুষ তাদের মানুষ হিসেবেই মনে করেনা।

কেন এমন হবে?? কেন একজন মানুষকে শ্রমিক বা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হিসেবে না দেখে একজন মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করব না? কেন একজন মানুষের জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে স্থান পাবেনা? তারা যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করে তার বাইরেও তাদের নিজস্ব জীবন রয়েছে, পরিবার রয়েছে... কেন তাদের সমস্যা গুলো এত ছোট করে দেখা হবে? বারবার শ্রমিকেরা পোকা মাকড়ের মত মারা যাচ্ছে, আহত হচ্ছে, সর্বহারা হচ্ছে আরও হাজার হাজার তবুও সরকারের টনক কেন নড়বেনা?

সাভারের রানা প্লাজার ঘটে যাওয়া ভয়ংকর ঘটনাটি নিয়ে কিছু বলব তেমন মনের জোর বা সাহস আমার নেই। তবে আমি খুব ভাল ভাবেই ধারনা করতে পারি সেই সকল অসহায় মানুষগুলোকে কিভাবে বাধ্য করা হয়েছিল সেদিন সকালে কাজে যেতে। আজ খুব আমার সেই শ্রমিক বন্ধুদের কথা মনে হচ্ছে যাদের অনেকের সাথেই বয়সের বিস্তর ফারাক থাকা সত্ত্বেও খুব আপন করে নিয়েছিল সহজেই। ভয়ংকর লোভী অর্থ পিশাচ গার্মেন্টস মালিকেরা, মুনাফা লোভী ব্যাবসায়ীরা অল্প কিছু টাকার মুলো ঝুলিয়ে হাজার হাজার শ্রমিকদের জীবন নিয়ে চিনি মিনি খেলছে প্রতিনিয়ত। যদিও এখন পর্যন্ত ঔষধ শিল্পের অবস্থা এমন না(বেতনের কথা বলছিনা, অবস্থাগত কাঠামো) তবে ঔষধ শিল্প ও দ্রুত সম্ভবনাময় শিল্প হিসেবে গড়ে উঠছে বাংলাদেশে। অর্থলোভী অমানুষ গুলোর কথা বলে তো আর লাভ নেই । বাকিরা যদি এখনও আমরা সজাগ না হয়, শ্রমিকদের তাদের প্রাপ্য মজুরী, সম্মান, এবং শ্রদ্ধা দিতে না শিখি হয়ত অচিরেই গার্মেন্টসের মতই নতুন করে হয়ত ঔষধ শিল্পের লোভের ফাঁদে আরও হাজার হাজার শ্রমিক নামক মানুষের জীবন নষ্ট হবে।

মে দিবসে শ্রমিকেরা নিজেদের অধিকার আদায়ের উদ্দেশে লড়ায় করেছিলেন। আর আমাদের দেশে শ্রমিকদের নিজেদের অধিকার তো দুরের কথা নিজেদের প্রান বাঁচানোর অধিকারটুকুও নেই। আর কত জীবন গেলে আমরা জীবনের দাম দেওয়া শিখব? আর কত মানুষ মারা গেলে শ্রমিকেরা মানুষ হিসাবে অধিকার পাবেন?

মহান মে দিবসে সকল মেহনতি মানুষের জন্য রইল শ্রদ্ধা আর ভালবাসা। মেহনতী মানুষের জয় হোক।


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

মেহনতী মানুষের জয় হোক।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

মেহনতী মানুষের জয় হোক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

চরম উদাস এর ছবি

মেহনতী মানুষের জয় হোক।

এর বেশি কিছু বলার মত আর মনের জোর নেই।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

সব কিছু দেখে শুনে আর কিছু বলব এমন ক্ষমতা, জোর আর সাহস নেই।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সুমাদ্রী এর ছবি

খুব ভাল একটা লেখা। মেহনতি মানুষকে সালাম জানাই।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

ধন্যবাদ সুমাদ্রীদা। মেহনতী মানুষের জয় হোক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

আমাদের দেশে সবচেয়ে সস্তা হল মানুষের জীবন।

কথা ঠিক না। সবচেয়ে সস্তা হল গরীব মানুষের জীবন। ধনী কাউকে দেখেছো কারখানায় আগুনে পুড়ে/ দেয়াল ধ্বসে মরতে? কখনো দেখবা না। গজব সব গরীব মানুষের ওপরই পড়ে।

মে দিবসের একটাই চাওয়া আর একটিও বাচ্চা যেন মা হারা না হয়। আর একটি মাকেও যেন কোলের বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে না পারার বেদনা নিয়ে পৃথিবী ছাড়তে হয়।

দুনিয়ার মজদূর, লাল সালাম।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

সেটাই আপুনি, আসলেই সবচেয়ে সস্তা গরীব মানুষের জীবন। মন খারাপ
মে দিবসের একটাই চাওয়া আর একটিও বাচ্চা যেন মা হারা না হয়। আর একটি মাকেও যেন কোলের বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে না পারার বেদনা নিয়ে পৃথিবী ছাড়তে হয়।

মেহনতি মানুষকে সালাম জানাই।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

তিথীডোর এর ছবি

নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখার চেষ্টা করছিলাম, তোমাকে পড়তে দেব।

পোস্টে পাঁচ তারা।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

পড়ার অপেক্ষায় রইলাম...

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

অতিথি লেখক এর ছবি

মহান মে দিবসে সকল মেহনতি মানুষের জন্য রইল শ্রদ্ধা আর ভালবাসা। মেহনতী মানুষের জয় হোক।

সুবোধ অবোধ

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

মেহনতী মানুষের জয় হোক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

তাসনীম এর ছবি

মেহনতী মানুষের জয় হোক।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

মেহনতী মানুষের জয় হোক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

শিশিরকণা এর ছবি

এই মানুষগুলোর জন্যই এখনো দেশটাকে ভালবাসি, হতাশ হই না, মনে করিয়ে দেই, যাদের দূর্নীতি আর কালো চেহারা আমাদের হতাশ করে প্রতিনিয়ত তারা সংখ্যালঘু এদেশে। এরকম কর্মঠ মানুষ না থাকলে বাংলাদেশ এত ঘুনপোকার অত্যাচার সয়ে টিকে থাকতে পারত?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক
এই মানুষগুলোয় আসলে দেশটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

বাংলাদেশে ন্যুনতম মজুরী আইন বলে কিছু আছে কিনা, সেটা জানি না। পত্রিকায় গার্মেন্টসের ন্যুনতম মজুরীর যে অংক দেখতে পাই, সেটা কোনভাবেই জীবনধারণের ব্যয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এই আইনের একটি কার্যকর সংশোধনী প্রয়োজন।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

সেটাই,আইনের একটি কার্যকর সংশোধনী প্রয়োজন।
সারাদিনের এই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরে এই খুবই সামান্য কিছু টাকায় কিভাবে যে সেই মানুষগুলো জীবন ধারন করছেন জানিনা।
আমি যখন কাজ করতাম তখন প্রতি ঘণ্টা ওভার টাইমের জন্য শ্রমিকেরা ১০ টাকা করে পেতেন, ভাবা যায়?! তাও আবার ওভার টাইম ছিল বাধ্যতামূলক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

নীল আকাশ এর ছবি

মেহনতী মানুষের জয় হোক। চলুক

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
মেহনতী মানুষের জয় হোক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ধুসর জলছবি এর ছবি

অসাধারণ লেখা। মেহনতী মানুষের জয় হোক।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

ধন্যবাদ বন্ধু।
মেহনতী মানুষের জয় হোক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সচল জাহিদ এর ছবি

চলুক চলুক চলুক


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
মেহনতী মানুষের জয় হোক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

শাব্দিক এর ছবি

আমার চাকরি জীবনের শুরুটাও একই রকম, ওষুধ কম্পানির ইনপ্ল্যান্ট ট্রেনিং দিয়ে, ওখানে ট্রেনিং এর সময় সিনিয়াররা বেশিভাগ সময় দিতে পারত না। শ্রমিকরাই অনেক কিছু হাতে ধরে শিখিয়েছে, তখন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কাজ শিখেছি শ্রমিকদের কাছ থেকে, যারা বড় বড় কারখানা প্রকৃতপক্ষে চালায়, প্রতিটি উপাদান, প্রতিটি পণ্য এদের হাত দিয়েই তৈরি হয়। আমার মনে হয়েছে এরা অফিসারদের চেয়ে কাজ সমন্ধে অনেক বেশি জানে, বোঝে, ভালবেসে কাজ করে।

আমার কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় আমি এইটুকু বলতে পারি এদের কাছ থেকে কখনো "বেয়াদবি" বা খারাপ কোন আচরণ এপর্যন্ত পাইনি। মানুষ হিসেবে আমার মনে হয়ে অন্য যে কোন মানুষকে শ্রদ্ধা করলে তার ব্যবহারে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর প্রতিফলনই পাওয়া যায়।

বিঃ দ্রঃ- বানানগুলি চোখে পড়ছেঃ পকা মাকড়,কথাই কথাই, দায়িত্তেই, সল্প।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আমার মনে হয়েছে এরা অফিসারদের চেয়ে কাজ সমন্ধে অনেক বেশি জানে, বোঝে, ভালবেসে কাজ করে

একদম ঠিক। এই মানুষগুলোর জন্যই কোম্পানিগুলো প্রকৃত অর্থে টিকে রয়েছে।
এতগুলো টাইপো ছিল খেয়াল করিনাই আপু :(।
অনেক রাতে লেখা শেষ করেছিলাম, তাড়াতাড়ি পোস্ট করে দিয়েছি। বানান সব ঠিক এখন, তোমাকে অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমার বাংলাদেশে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। অন্য আরো কয়েক ধরনের ইন্ডাস্ট্রি খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতাও আছে।
আমার বাংলাদেশের শ্রম আইন ও কারখানা আইন পড়া আছে।
আমার পড়া শ্রম আইন ও কারখানা আইনের সাথে আমার কাজ করা/দেখা কারখানাগুলোর কর্মকান্ডের অমিল প্রচুর।
আইনগুলো আর কারখানাগুলো মনে হয় এক দেশের না। আমারই কোথায় ভুল হচ্ছে মনে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

এই বিষয়গুলো নিয়ে আসলে আরও অনেক লেখালেখি হওয়া দরকার মনে হচ্ছে।ফ্যাক্টরিগুলোতে সব জায়গায় এত বেশী বৈষম্য, অরাজকতা, এত অনিয়ম, বঞ্চনা। জানিনা অবস্থার পরিবর্তন কবে হবে, কিভাবে হবে। মন খারাপ
আপনার কলরবের কথাগুলোর সাথে একমত পাণ্ডবদা, কিন্তু দেশে এখনও অনেক কোম্পানি আছে যেখানে শ্রমিক ইউনিয়ন নেই, করতে দেওয়া হয়নি।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ডুপ্লি ঘ্যাঁচাঙ


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ঈয়াসীন এর ছবি

সুখপাঠ্য

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

অমি_বন্যা এর ছবি

লেখা ভালো লেগেছে আপু। সাভার ট্র্যাজেডির পর এই লেখাটি আবার মনে করিয়ে দেয় যে এদেশে শ্রমিকেরা আসলেই কত অসহায়।
খেটে খাওয়া মানুষের জয় হোক। গরীব মানুষেরও জীবনের মুল্য দিতে শুরু করুক এদেশের অর্থ লোলুপ ধনিকেরা।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

ধন্যবাদ অমি ভাই।
খেটে খাওয়া মানুষের জয় হোক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন লেখা চলুক চলুক চলুক

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
অতিথির নাম কই?

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।