সামহোয়ার থিকা অনেকে রাগ কইরা আইছে,কেউ লেখার আগ্রহ হারাইছে ,কেউ কেউ এখনো লেইখা যাইতাছে। আমার কেইসটা একটু অন্যরকম। আমারে খেদাইয়া দেওয়া হইছে কোনরকম ব্যাখ্যা না দিয়া। পুরান লেখাগুলার কিছু কিছু নিয়া আসুম এইখানে। তারই প্রথম কিন্তি দিতাছি আইজকা।এইটা ৪ কিস্তিতে "সিভিল সোসাইটি কয় কারে" শিরোনামে সামহোয়ারে দিছিলাম ২০০৬ এর জুন মাসে।
১.
অনেক পুঁথিপত্তর ঘাটলাম । দুই রকম ধুমা পাইলাম । জনগন আর রাষ্ট্রের মাঝখানে স্যান্ডউইচের অদৃশ্য কাবাব আর "অগ্রসর" বুদ্ধিওলা "জাতির বিবেক"। আরও একটা মতামত আছে কিন্তু সেইটা সরাসরি উৎপাদন সম্পর্কের দন্দ্বমুক্ত কোন শ্রেণী বা গোষ্ঠী অস্বীকার করছে । তাগো মতে "জাতির বিবেক"রা হইলো বেশী বেতনের কর্মচারী । তো তিন নম্বরটা যেহেতু অস্তিত্বই অস্বীকার করতাছে তাই সেইটারে বাদ দেই আপাতত। কারণ এতোগুলা জ্ঞানীগুণী লোকে এত মোটা মোটা ইংলিশ বই পইড়া যা কইতাছে তারে ভুল কওয়ার আমি ক্যাঠা ? মনে করেন আমি একটা আলোচনা প্রস্তাব করতাছি । আমারে দরকার হইলে দশটা গাইল দিয়া লন । তবুও আসেন বিষয়টা লইয়া প্যাচাল পাড়ি । যারা জানেন তারা এবং যারা জানেনা তারাও আসেন ।
বিষয়টা হইলো "সিভিল সোসাইটি " শব্দটা পুরানা । সাধারণত বুদ্ধিবৃত্তিক পেশার লোকেগো দিকে ইঙ্গিত করা হয় এই শব্দটা দিয়া । কিন্তু ঠিক কারা এবং কি ধরনের জ্ঞনীলোক সিভিল সোসাইটির আওতায় পড়ে সেইটার কোন পরিস্কার ধারণা পাওয়া যায় না । তা ধরেন পুরা পরিস্কার ধারণা ওয়ালা জিনিস এমনেও খুব বেশী নাই , কিন্তু তার পরেও ধরেন শোষক আর শোষিত এই দুইটার চিত্র মোটামুটি পরিস্কার । বিভিন্ন মাত্রায় যাদের উদ্বৃত্ত শোষণ করা হয় তারা শোষিত আর যাদের পকেটে সেইটা বিভিন্ন পরিমানে যায় তারা বিভিন্ন স্তরের শোষক । এই হইলো মোটামুটি "সভ্য" সমাজের চেহারা । এখন এই কাঠামোর মধ্যে থিকা এই প্রক্রিয়ার বাইরে অবস্থানকারী কতিপয় জ্ঞানী লোক বাইর করা তো ভিষন মুস্কিলের কথা । আরো সমস্যা হইলো সিভিল সোসাইটির সমর্থক গো একটা দল আবার এগোরে "নিরপেক্ষ"বইলা দাবী করতাছে । নিরপেক্ষ বইলা আল্লাহ-ভগবান-গড-মওদুদী-বুশ-লাদেন-ইনুইচ্চা কারো দুনিয়াতেই কিছু আছে বইলা তো শুনি নাই । তাইলে কি যাহাই নিরপেক্ষ তাহাই সিভিল সোসাইটি ? তার মানে কি ভুত আছে ?
২.
আচ্ছা একটা কথা । আমলাগো(সামরিক-বেসামরিক) দিয়া দ্যাশ চালানো তো হইছেই অলরেডি অনেকবার । তারপর পরে আবার পাট্টি আর আমলারা মিলা চালাইলো অনেক দিন । গত ৩০ বছরে ,, বিশেষ কইরা গত ১৬-১৭ বছরে এন.জি.ও দের দিয়া যে প্যারালাল আমলাতন্ত্র বানানো হইছে এইটার ভবিষ্যত প্রয়োগ কি ? এগো নিশ্চয়ই হুদা হুদাই এতগুলা টেকা দিয়া পুষে নাই । এরাও খেয়াল করবেন সব জাগায় একটু আ করার চানস পাইলেই কয় রাজনৈতিক দল ব্যর্থ ...তারপর রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের বাইরে উন্নয়ন বা দারিদ্র বিমোচনের "পক্ষের" লোকদের কে "এগিয়ে" আসতে হবে আর শুইনা "রুচিশীল" মানুষরা ব্যাকুল হইয়া প্রমিত হাততালি দেয় । প্রাক্তন এবং বর্তমান বিপ্লবীদের বিপুল সমাবেশ থাকে এইসব জাগায় । ভালো ভালো পরিশিলিত খাওন । লগে বিলাতি পানি।
৩.
আমি নিরপেক্ষ লোক না । আমার রাজনৈতিক মতামত খুব স্পষ্ট । আমার মতামত কোন দল ধারণ করে বা আদৌ কেউ করে কিনা সেইটা নিয়া তর্কাতর্কি হইতে পারে । আর কোন দলের সমর্থক যে হইতেই হবে এইটাও কিন্তু একধরনের ভাববাদী বা অ্যাবসল্যুটিস্ট চিন্তা । রাজনৈতিক ঘটনাবলীর বিশ্লেষক , যে কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থনে কথা কইতাছে না , সে কিন্তু নিরপেক্ষ না । তারও একটা সাইড আছে এবং সেই সাইডরে সুনির্দিষ্ট সাইনবোর্ডে অনুবাদ করা নাও যাইতে পারে । মানে সেই সাইনবোর্ড খোলা চোখে নাও দেখা যাইতে পারে । কিন্তু তার অস্তিত্ব আছে । যেমন , বাংলাদেশরে যদি আমরা নির্ভরশীল দরিদ্র দেশের মডেল ধরি , সেইখানে কিছু লোক দেখা যাবে যারা ভাল খায়দায়, ভাল একটা বাসায় থাকে , কোন দলের সদস্য না এবং যতদুর সম্ভব মাইর খাওয়ার রাস্তা এড়াইয়া চলে , দ্যাশের ভবিষ্যত নিয়া খুবই চিন্তিত, পোলাপানরে "উচ্চ সাংস্কৃতিক সুশিক্ষা" দেয়, এবং সব রকম তর্কাতর্কিতেই সবময় অন্য একটা লাইন বাইর করার তালে থাকে যাতে তার খোমাটা নজরে পড়ে । মাঝে মধ্যে "নাগরিক ইস্যু"তে হালকার উপর ঝাপসা দৌড়ানি খাইয়া বাসায় আইসা আত্মীয় স্বজনরে ফোন কইরা ১০ বছর ধইরা হেই গল্প করে ।
পেশাগত জীবনে কিন্তু তারা সকলেই "সৎ"। হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, নয় রিটায়ার্ড আমলা কাম লেখক, এন.জি.ও পরামর্শদাতা ইত্যাদি । আমরা ছুডু লোকেরা রাস্তাঘাডে যা করি, যেমন লইয়া দৌড় দেওয়া, হেগুলা খারাপ খারাপ চুরি তারা করে না । বাংলাদেশের রাজনৈতিক ওঠানামায় তাগো কিছুই যায় আসে না , বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বিকল্প ব্যাবস্থা তারা কইরা রাখছেন ।যারা রাখেন নাই তারাও অন্তত শেষ পর্যন্ত চেষ্টা কইরা যান যেকোন ভাবে এই ময়লা-ছয়লা দেশ থিকা গা বাচাইয়া চলতে । এদের মধ্যে শ্রেণীভেদ আছে । কারণ নিম্নমধ্যবিত্তশ্রেণীর অংশটা "সিভিল সোসাইটি " জাতীয় সংগঠণে বা সমাবেশে আমন্ত্রিত হন না । সেইখানে আসেন এদের মধ্যে যাদের ট্যাকের অবস্থা ভালো তারাই ।
আমরা কি, কী হইতে পারতো বা কী হওয়া উচিতের মতো অ্যাবসার্ড বিষয়ের মাধ্যমে একটা বিষয়রে বুঝার চেষ্টা করুম ? না কি যা ঘটছে, ঘটতেছে এবং এক্সিসটিং তথ্যাবলী কী নির্দেশ করে সেইটা বিচার করুম ? আমার মতে ২য় টা সঠিক । তাতে আমরা সিভিল সোসাইটি বলতে কিছু উচ্চমধ্যবিত্তরে বুঝি যারা শোষকের নিরাপদ সহায়ক হিসাবে স্বচ্ছল জীবন যাপন করে । জনৈক দাড়িওয়ালা জামর্ানের মতে "বুর্জোয়া ভদ্রলোক"। শোষিতের সহায়ক হিসাবে তারা শোষকদের নানারকম বুদ্ধি পরামর্শ দেয় , কিভাবে ব্যাথা কম দিয়া ভুখা-নাঙ্গা মাইনসের গোয়া মারা যায় ।
৪.
সিভিল সোসাইটি নিয়া এতো গুতাগুতির কারণ হইতেছে আমার গত পরশুদিনের পোস্ট "জনগণ কি ভাবতেছেন?" এর শেষে যে তিনটা সম্ভাবনার কথা বলছি তার প্রথমটার দ্বিতীয় অংশকে বুঝবার চেষ্টা করা। বাকি গুলা অর্থাৎ , সামরিক শাসন, আওয়ামী লীগ এবং বি.এন.পি সম্পর্কে মানুষ অলরেডি অনেক বেশী জাইনা ফালাইছে। রিক্সাওয়ালারে জিগান, দেখবেন ওর ব্যাখা আরও অনেক অনেক বেশী র্যাডিক্যাল। হে দেখবেন কথাই শুরু করবো গালি দিয়া। অবশ্য ভদ্রলোক অর্থাৎ সিভিল সোসাইটির লোক হিসাবে জিগাইলে সে কোন জবাবই দিবো না । হয় ডরাইবো নাইলে "গরীবের আবার ভুট " কইয়া নিজের রাস্তায় যাইবো গা । যাউকগা । ঘটনা হইলো আউমিলীগ, বি এম্পি বা মেলেটারিরে পাবলিকে চিনে । সুতরাং পাবলিক ঠাঙ্গানোর বা পাবলিকরে ভুদাই বানানোর নতুন একটা রাস্তা বাইর করার প্রয়োজন অনেকদিন থিকাই বড় মুরুবি্বর দিমাগে সুড়সুড়ি দিতাছিল । ইদানিং মুরুবি্বর কথার তালবাল ঠিক বুঝা যাইতাছে না । কারে যে উঠাইবো আর কারযে সিলাই ছিড়বো সবই অস্পষ্ট । এই পরিস্থিতিতে ফ্যালফ্যালে ভ্যালভ্যালে চেহারা নিয়ে পালিশ করা গুদবয় রা সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি হইয়া হোগার সকেটে মেলেটারি কাম বড় মুরুবি্বর চার্জলইয়া গদীতে বইতে পারে । তখন দেখবেন কত লোকে লাফাইবো ! ভাল ভাল ! এই রকম সরকার চাই..লগে আবার এক নি:শ্বাসে গুলশানী ইংলিশ কইয়া ..কইবো ..দেখছেন রাস্তায় একডম জ্যাম নেই , কত সেইফ, লার্নেড গাভার্ণমেন্ট থাকলে যা হয় ....ইত্যাদি । তখন আইজকা যারা আমার এই পোস্ট পড়তাছেন মনে কইরেন যে হ কইছিল...সাধকে কইছিল....
সাধকের কথা ফইলা গেল ২০০৭ এর ১১ জানুয়ারী..
মন্তব্য
জাঝা
চলুক (আসুক)।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
না মনে হয়...
গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা
আমি আইছি শহিদ হইয়া
-------------------------------------------------
আমি ভালবাসি বিজ্ঞান
আমি ঘৃণা করি জামাত॥
শহীদরে তালকিা দখেি বড় হইত্ছেে
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
আরো বড় হইবো
গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা
আমার পোস্ট লিখনের টাইমে এই পোস্টটার কথা মাথায় ছিলো...সামহোয়্যারে থাকতে কমেন্টও করছিলাম...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
সাধকের কথা ফলবো না তো কি নাদান বান্দাদের কথা ফলবো?
এই সিরিজের সবগুলো লেখাকে একসাথে করে একটা ইবুক করে রাখুন।
কাজে দেবে অনেকেরই।
হ তাই করতে হইবো।
গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা
নানা কারণে মনে হইলো এই পোস্টটা ঠেলা দেওনের টাইম আইছে।
মামারা প্রতিবার চিপায় যাওনের আগে তাগো সমর্থনে কিছু ছাগু বানাইয়া থুইয়া যায়।
এইবারো গেছে।
গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা
গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা
ঠেলা হউক
সুমন চৌধুরী কে ধন্যবাদ লিঙ্ক এর জন্য।
নতুন মন্তব্য করুন