আবার ভিজে মাটির গন্ধ আসে
পরশ লাগে গায়
হাওয়ায় হাওয়ায় চুল খেলে যায়
চুল খেলে যায়
সে মেয়ের চুল খেলে যায়
গ্রীবায় দুলে ওঠে সে মেয়ের লজ্জানম্রনদী
আঁধারের অধর ভাসিয়েছে যেন সেই সন্ধ্যা আবার
পথ তার চেনা ছিল এক আঙুর অন্ধকার
সে তো পথ নয় মাবীর ঠোঁট
সে তো চেনা নয় ছিল সম্মোহনী টান
সেই টান আবার টানছে আমায়
তোমরা বুকে ধরো মাথায় রাখ দেশের মাটি ছুঁয়ে শপথ করো
প্রাণ দেবো তো গান দেবো না, দেবো না সুন্দরবন
ফিরে যাও বিশ্বরাজন
আমরা রুখেই দেবো কয়লার গাড়ি ময়লা জঞ্জাল আর
মহাজনের থলে ভরা কালো বিড়াল।
রুখে দেবো জঙ্গিবাদের ব্যবসা এবার
তোমরা ভয় পেয় না সুন্দরী বন, সবুজ পাখি, সুর ভুলো না
আগুনমুখি পশুর নদী, প্রাণীকুল ছেড়ো না সুন্দরবন
আমরা রুখেই দেবো ষড়যন্ত্রের বাণ
এ আমার দেশ নয়।
যে দেশকে আমি স্বপ্ন দিয়ে ধরি প্রাণের মধ্যে রাখি
এ আমাদের দেশ নয়।
যে দেশে আজ হিন্দু-মুসলমান বৌদ্ধ-খৃষ্টান
পারছে না গাইতে নাগরিক জীবনের গান
পারছে না গাইতে জাতীয় সংগীত
“আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।“
আমাদের হাতে কাঁপছে চর্যা পদের ঝাণ্ডা
উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া
বাংলা ভাষার প্রথম প্রদীপ
আমরা স্তম্ভিত হে আমার প্রিয় স্বদেশ ।
১.
দাসের মতো দুঃখ নিয়ে
নিরুপায় নরহত্যা, নিরপরাধ শিশুহত্যার কাজ করে
খেতে পায় সে দেশের সৈনিকেরা!
দেশটার কাটা মুণ্ডু রাখা আছে, ভিটেমাটিহীন ভুঁইফোঁড়
এক পরজীবী রাষ্ট্রের পতাকায় মোড়া।
সেখানেই গড়ে উঠেছে এক প্রাচীর,
প্যালেষ্টিনা জাতির রক্তে ধোয়া ।
পৃথিবীর দীর্ঘতম দীর্ঘশ্বাস আর করুনতম ক্রন্দন,
এখান থেকেই শুরু।
পৃথিবীর প্রতিটি যুদ্ধ, মৃত্যুর নকশা, আঁকা হয় এখানেই।
যে গান এখনো হয়নি লেখা
সেই গান গাইছিল সন্ধ্যা
কৃষ্ণ হলো কথা, সুর হলো রাধিকা
কথা আর সুরের যুগল নৃত্যে নাচছিল সন্ধ্যা
আর আমি যাচ্ছিলাম বনের ভেতর দিয়ে একা
আমাকে ভাবতে হয়েছিল সেই সব কথা
যে সব আত্মার ভেতরে এতোকাল মীমাংসিত ছিল
তোমার হৃদয়ও ছিল মীমাংসিত
আমার পায়ের তলার মাটি এ জন্যই থেমে ছিল
আর তোমার পথ এ জন্যই ছিল অতটা দ্রুতগামী
যাকে পেছনে ফেলে যায় মানুষ
ঈশান কোণে কোণে প্রলয়ের নৃত্য জুড়ে, ছোপ ছোপ রক্ত পায়ে
নয় পর স্বাধীনতা এসে দাঁড়াল আমাদের দরজায়, হাজারটা সূর্য
তাকে আশীর্বাদ করল। আমরা পেলাম লাল-সবুজের অবিনাশী পতাকা,
একটা মানচিত্র আর পেলাম স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, বাংলাদেশ।
পেলাম নি:কন্টক ভাষা, যার রাজধানী এখন ঢাকা। একুশ
এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আমরা পেলাম অদ্বিতীয়
এক জাতীয় সংগীত--
অন্ধকার তোমাকে ভয় পাইনি কোনদিন
একদা অন্ধকার মানুষই তো ছিলাম
প্রিয় পাখির সংস্কৃতি
জানালায় রাখলে হাত
স্বর্গে চোট লাগতো
আর খসে পড়তো নরকের কারুময় চুড়ি
সুতরাং নরককেও পাইনি ভয়
মারাত্মক নেশা ভরা বাদুড়ের চোখ ছিল আমার
দূরে কোথাও দুলে উঠতো লাল লিচুর বাগান
সুতরাং নিশাচরও ছিলাম ভয়ানক
জংলি-ঝড় উঠতো কাননে কাঞ্চনে
হাঁটতাম বুনোর মতো, বৃষ্টি-বজ্র মাথায়
অরণ্যের হাত ধরে, বনচারির মর্যাদায়
মৃত্যু এসে নাম লেখাবে
এ বনের প্রতিটি ফুল
প্রতিটি পাখি
বুনো-গন্ধ
কীট-পতঙ্গ
প্রজাপতি আর তোমাদের মাঝে
পৃথিবীর কোন খানে আমি আর নেই
তারপর শিশির ধোয়া রাত
পাতায় পাতায় জোনাকি
পৃথিবীকে সাজাতে যেয়ে
সহসা সাজিয়ে ফেলবে তোমাকেই
সমস্ত দু:খের হাত খুলে খুলে
অতৃপ্তির বাঁধন ছিঁড়ে ছিঁড়ে
আমি উঠে বসেছি, পরিপূর্ণ-আনন্দে!
তখন সময়
নি:চিন্তে মুছে ফেলেছে আমাদের পদচিহ্ন ...
২৬.১০.২০১৪
এই যে পাথর
শতাব্দীর পর শতাব্দী হয় তো পড়ে থাকবে কথাহীন
বসে কেউ জিরিয়ে নেবে
রোদ পোহাবে
আর কেউ কীটের কোলাহল আরতি লিখে
পাথরকে শোনাবে এক শ্বাসরুদ্ধকর কষ্ট, এবং
গল্প ।
এই যে পাতার ছায়া
আর বনের মধ্যে যে ছন্দে নাচছে অন্ধকার
এই নৃত্যে তুমি কি টের পাও, রাত আসছে ?
জীবনের কালি ফুরিয়ে যায়
লেখার শেষ আছে একদিন
এই তো পাথর জীবন ?
প্যালেস্টাইন/ ১
মুখে ভয়াল এক পাথর গোজা
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি
বয়ে যাচ্ছে রক্তের নদী।
ধুঁয়া আর অগ্নিকুণ্ডলি স্পর্শ করছে আকাশ
সারি সারি মৃত শিশুর লাশ,
আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি।
এই রক্ত-নদীর পিতৃ-পরিচয়, উৎস-মূলে -
কোন বাড়ির রক্তমাখা হাত, জোয়ার ভাটার টান,
কোন জাতির বিশ্ব-শোষণ সর্বনাশা লোভ,
সবাই জানে, কিন্তু মুখ খুলছে না কেউ ।
এদের নাকি অতীত খারাপ,