বনের সীমানার প্রাচীনবৃক্ষ
বনের সীমানায় প্রশ্নসিদ্ধ পর্বতস্বরূপ
দাঁড়িয়ে আছে কতগুলো প্রাচীনবৃক্ষ।
জিজ্ঞেস করেছিলাম :
প্রাচীন মানেই কী নির্জন?
প্রাচীনেরা গ্রাহ্য করেনি। করে না তেমন।
ঠিক পরিমিত আবহাওয়ায়, ছায়ার তলে
নরম মাটিতে গোপনে
জন্মে-উঠে যে সবুজপাটি,
জিজ্ঞেস করেছিলাম : এ বিরলতমপ্রশান্তি
পাওয় কোথায় শুনি?
গুল্মেরা শব্দ করেনি।
তখনি দখল করে বসলো
সমুখের ছোট্টগাছটি
কয়েক ঝাঁক ক্ষুদেপাখি,
তাদের কাকলি আর আবৃত্তিমুখর নিসর্গ
তখন আমাকে বলেই ফেলেছে সম্মতি :
প্রজাপতি
নিসর্গে ঢুকেই নিরীক্ষণযোগ্য মনেহলো :
একটার পর একটা ফুল বদলিয়ে বসছে প্রজাপতি।
সময় দেবার মতো সুন্দর, নয় কোনোটি?
ফুলের উপর বসে রোদে ভিজে
রঙিনডানা বাতাসে মেলে, কখনো দুলছিল
কোনো কোনো ফুলের সঙ্গে,
জিজ্ঞেস করেছিলাম : এসব অনুদ্দিষ্টপ্রেম,
কাকে জানানো হচ্ছে শুনি?
ভ্রূক্ষেপ করেনি প্রজাপতি!
তখন আমি নিশ্চিত হতে চাচ্ছি,
ঠিক কাকে ভালোবাসে প্রজাপতি? বললাম :
দেখ হে প্রজাপতি, খুব বেশী দূরে যেও না,
ফিরতে পারবে না। খুববেশী উড়াউড়িও করো না,
শেষে কিন', বসবার জায়গা পাবে না!
জানোই-তো, বসনে-র পর শীতই থাকে বাকি।
তুমি কী জানো প্রজাপতি,
কত-সহস্রফুল ঝরার পর
কাননে একটি ফুল ফোটে?
০১.০৫.০০৫
ফড়িংয়ের অমৃতস্বপ্ন
সবুজ পাতার উপর শুয়ে, মিশে গিয়ে সঙ্গে
সে কোন্ অমৃতের স্বপ্ন দেখে?
জিজ্ঞেস করেছিলাম : এসব নিবিষ্টচিঠি,
কাকে লেখা হচ্ছে শুনি?
ফড়িংয়ের কর্ণকুহরে প্রবেশ করেনি।
নির্জনতার প্রভাব ছাড়া কেউ কী কখনো
নিসর্গে প্রবেশ করতে পারে?
অথচ মরিয়া হয়ে আমি নির্জনতা দেখছি :
এতোঘাস-ঘাসফুল, প্রজাপতি,-পালের বাহার ;
অজস্রকীট, পতঙ্গের গন্ধ-গুঞ্জন
পাখি আর তাদের বিক্ষিপ্ত কাকলি :
মহাসংগীত না বলে পারিনি!
নিসর্গ যাকে বলে তারই মধ্যে ডুবে আছে আমার
লিখনি : কালির যোগান হয়ে বয়ে চলেছে
সান্ধ্য-ক্ষীণ, খালের ধারা মহিয়ান-
আমি নির্জনতা দেখতে পারি,
শুনতে পাচ্ছি এদের মাধ্যমে ...
কিন', সবুজ পাতার উপর শুয়ে মিশে গিয়ে সঙ্গে
সে কোন্ অমৃতের স্বপ্ন দেখে?
এখনো জানতে পারিনি।
০১.০৫.০০৫
মন্তব্য
প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধে ভরা কবিতা। ভাল্লাগলো।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
বনের সীমানার প্রাচীনবৃক্ষ
প্রজাপতি
ফড়িংয়ের অমৃতস্বপ্ন
নতুন মন্তব্য করুন