আকাশ-নীল-নিভিয়া
ঐ তো তোমার দিকেই তাকিয়ে আছে,
নীলাকাশ।
ভালবাস মনে মনে, তা বলো না কেন তাকে ?
তোমার প্রয়োজন মাত্রতো কিছু নীল,
তা বলো না কেন আকাশ কে ?
স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর মুখ খানা তোমার
আমি নিয়ে যাই আকাশের কাছে ...
আকাশের গায়ে লেপ্টে থাকা নীল
নেমে আসে তোমার মুখের কাছে,
যেন বা নিজহাতে আকাশ -
তোমার দু-গালে মাখিয়ে দিচ্ছে নীল।
চেরী ফলের টিপ
তোমার লাল-টিপ্গুলো এখনো রয়ে গেছে সবুজ
কাজ চলছে, কবির হৃদয়ে এখনো চলছে কাজ :
চেরী ফলের সবুজ গুটিগুলো
রোদে ভিজে চকচক করছে,
বৃক্ষটা গীতার শ্রীকৃষ্ণের মতো
চতুর্ভঙ্গনৃত্যে ফলবতী ডালগুলোকে
মেলে ধরেছে নিসর্গের উদ্যানে। সেখানে দুপুর বাজিয়ে
চলেছে ঝুমুর, উদাসীন বাঁশি।
পাখিরা ঝোপে জিরিয়ে নিচ্ছে।
জগতের যাবতীয় অকল্যাণ
অগ্রাহ্য করে, একদিন রঙ ধরবে
ফুলোঙ্গুরীয়
যুক্তমুক্তোর আকৃতিতে এই কাননেও
পুষ্পে রচিত হয় কারও জন্য অঙ্গুরীয় ?
কেউ তা পরে অথবা কেউ পরেই না। এক
বিমূর্তের খেয়াল-খুশী যেন বিরাজমান এখানে!
আমার যুবক পিতার আঙুলে এরকম
কয়েকটি উপমা দেখেছি,
বদলিয়ে বদলিয়ে পরতেন
আবার কাউকে দিয়ে দিতেন খুব সহজে।
পথে ফোটা রঙেছোপা মুক্তোর ঝুরির মতো
এই অতি ক্ষুদ্র ফুলগুলোকে দেখে,
পিতার যৌবনচিত অহংকারগুলোও
আমার চোখে ভাসে।
ফুলের ঝুমকো
আমার মায়ের কানে দুলতে দেখেছি
এ রকম ঝুমকো :
কয়েকটি যুক্তফুলের গোলাকার গুচ্ছকে
অনুভূতির সূক্ষ্মবৃত্তে বসিয়ে
তোমার কানের দুল
এখন সত্যি সত্যিই আমি
ফুল দিয়ে বানিয়ে দিতে পারি :
তাতে- গুড়ি গুড়ি-
বুটি বুটি
ঝুলে থাকবে-
হলুদ-
সবুজঝুরি...।
বনের ঠিক যেখানে ওরা ফুটে আছে -
ভরদুপুরে নিরিবিলি
তাদের সমুখে দাঁড়িয়ে বলেছি :
হে আমার মায়ের কানের ঝুমকো,
নাকফুল
এখনো সবুজ রয়ে গেছে
ব্যক্ত হয়ে উঠেনি,
মিহিদানার মতো বুটি বুটি
কুঁড়ির এই সুপ্তরঙগুলো দিয়ে
ঈষদ বাঁকানো তোমার ভ্রূলতার কোমলে
আপাতত আল্পনা আঁকা চলে ...
চেরীফলের সবুজগুটিগুলো
সূর্যের দিকে মুখ করে আছে,
রঙ ধরবে একদিন ওদের শরীরে ?
গোপনে গোপনে সেই কাজগুলোই চলছে :
লাল-টকটকে, নীল-জবজবে হবে ওরা।
জানোই-তো মেয়ে, বসন্তের প্রভাবে
কৃষ্ণ আসে শরীর আর মনে!
তোমার নাসিকার জন্য এখনো
তার বাড়িতে
স্বপ্নরা এসেছে দেখতে নীল-নাক-ফুল
ঘরময় শয্যায় ঝরে আছে ফুল
সে ঘুমিয়ে আছে
তাকে ডাকা যাবে না এখন
কাহিনীর অপশব্দ শুনি
জানাতে যেওনা ওকে,
সম্পর্কগুলো ভাঙছে রাতদিন
কেউ যেন বলো না তাকে
কোনো প্রতিবিম্ব ছিল না চোখের
কাকে বলে ছায়া
বড় অদ্ভুত এই মনুষ্যজীবন
সংশয় ছিল না কোনো
কাকে বলে জটিল হৃদয়
ছায়াহীন দেখতে পেতাম
ভাসতো আকাশ নীল সমুদ্রে
কাকে বলে মেঘ
বড় অদ্ভুত এই মানসিক আকাশ
এ আমার কী হলো নিসর্গ ?
....
৪
আশ্রিত ছিলাম সন্ন্যাসীর ঘরে,
যে আমার মধ্যে বসত করে।
সময় কাটত বনচারির মর্যাদায়,
যে আমার মাথার সমান সমান
বয়সের চেয়ে অনেক গুণ বড় ;
তার মাথার ভেতরে ফোটে বনফুল
এখন বাড়ে বুনোলতা ...
লতার প্রেমটাও বলে রাখি :
লতাদের একজনের নাম প্রশান্তি,-
আমাদের কথা কিছু শোনো কবি ?
ভুল চালকের হাত কিন' সরিয়ে দিতে হবে,
ভালবাসা ধরে থাক পৃথিবীর হাত।
-শুনিনি, আর এমন সুললিত ধ্বনি!
৫
ঠিক সবুজ নয় জ্যোৎস্নায় ...
২
খুব সূক্ষ্ম সাদাফুল
রক্তিম আভার
ফুটে আছে পথে
দেখে মনে হয়
তার উপর অস্ত- গেছে সূর্য!
যে তুমি আছো ফুলের ভেতরে
বাইরে এসে বলো-
কী করে সাজাবো,
আমার প্রিয়তমারে ?
মনস্তাপের কারণ আছে শাহীন!
তীর্থস'ান নিজেও তো আসতে পারে
একবার আশেকের দরজায় ?
ভক্তের দরজায় সূর্যের প্রকাশ
আর দাঁড়িয়ে আছে অপেক্ষায়,
পুষ্পপ্রভা, - সে দেখে যাক!
০৮.০৮.২০১০
৩
আমার চোখের মধ্যে ফুল আছে
দুলে উঠে বাগান
অধীর আ ...
১
এ বনের প্রতিটি ফুল কে আমি চিনি
ঘাসের সাথে আমার কথা হয়
শিশিরের শব্দে আমি কান পাতি
পাতার প্রকৃতি পাখিদের কলস্বর
আমি পৃথক করতে পারি
বাতাসের আবৃত্তি আমার মুখস্থ
এ বনের মাটির গন্ধে আমি বুঝি পৃথিবী
যে ফুল পরিপূর্ণ হয়ে ফোটেনি,
প্রার্থনার হাত আমি তাদের জন্য বাড়িয়ে ধরি
ঝরা গোলাপের পাপড়িকে
আমি কারও হৃদয় বলে ভুল করি
এ বনের বুনোগন্ধে নেমে আসে বিকেল
গোধূলির আলতায় পা-ফেলে ফিরে যায় ...