এবং বই (পর্ব - ০১)

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি
লিখেছেন অতন্দ্র প্রহরী (তারিখ: রবি, ২৪/০৮/২০০৮ - ১০:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাধারণত যে বিশেষ একটি কারণে আমি আব্বুর প্রতি সীমাহীন কৃতজ্ঞ, তা হলো ছোট্টবেলায় গল্পের বইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। তাও আবার মাসুদ রানা! জেনেই দিক বা না জেনে, আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ এই কারণে যে সেইসময় তিনি আমার হাতে বইগুলো তুলে দিয়েছিলেন। এই একটি দৈব ঘটনা আমার পরবর্তী জীবনে যে কি অপরিসীম তাৎপর্য বহন করেছে তা কেবল আমিই অনুভব করতে পারি।

তখন আমি ক্লাস ফোর/ফাইভে পড়ি। থাকি পাবনার এক মফস্বল শহরে। আব্বুর পোস্টিং ছিল উল্লাপাড়ায়। কোন একদিন অফিস শেষে ফেরার পথে উল্লাপাড়ার ট্রেন স্টেশনের ছোট্ট এক বুকস্টল থেকে তিনি চারটা মাসুদ রানা কিনে আনেন। তিক্ত অবকাশ-১,২ এবং ব্ল্যাক ম্যাজিক-১,২। রূপকথার বইয়ের বাইরে তখনো পূর্ণাঙ্গ কোন গল্পের বইয়ের সাথে আমার পরিচয় হয়নি। সেই প্রথম। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়েছি আরো অসংখ্য বই। হোক তা সেবার বই বা হুমায়ূন আহমেদের, জহির রায়হানের, রবি ঠাকুরের, রুশ লেখকদের বা অন্য কারো। আব্বুও প্রতি সপ্তাহান্তে কিনে আনতেন বিভিন্ন ধরণের অসংখ্য বই।

মজার ব্যাপার হলো, পড়াশুনার ব্যাপারে আব্বু এতোই কড়া ছিলেন যে তার সামনে কখনোই গল্পের বই পড়ার সাহস পেতাম না। আমরা দুই ভাইবোনই গল্পের বই পড়তাম লুকিয়ে চুরিয়ে। স্কুলে বা বাসায় পড়ার বইয়ের ভেতরে গুঁজে পড়তাম, কখনো কোমরে প্যান্টের ভেতর গুঁজে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে, আবার কখনো স্টোররুমে (দরজাবিহীন, শুধু পর্দা দেয়া একটা ছোট্ট ঘর যেখানে কাপড় রাখার আলনা, বই রাখার র‌্যাক, টুকিটাকি জিনিস রাখা হতো) গিয়ে পড়েছি। বইয়ের কাহিনীর উত্তেজনা আর আব্বুর চোখ ফাঁকি দিয়ে পড়ার উত্তেজনা, দুইয়ে মিলে সে ছিল এক অন্যরকম অনুভূতি যা আর কখনোই পাওয়া সম্ভব না!

আরেকটু বড় হয়ে নিজেই বই কেনা শুরু করলাম। হাইস্কুলে ওঠার পর যাওয়া-আসার রিক্সাভাড়া হিসেবে বাসা থেকে পেতাম চার টাকা। সেই টাকা প্রতিদিন বাঁচাতাম পায়ে হেঁটে যাওয়া-আসা করে। আর প্রতি ঈদের সালামী হিসেবে অল্পকিছু যা পেতাম সেগুলোও খরচ করতাম সব বইয়ের পেছনেই। এই বই কেনা নিয়ে অবশ্য কথা-ও কম শুনতে হয়নি বাসায়, তবুও বই কেনা থেকে তা কখনো বিরত রাখতে পারেনি আমাকে।

তখন বই কেনাটা খুব একটা সহজসাধ্য ব্যাপার ছিল না। বই কিনতে যেতে হতো পাবনায়। এদিক দিয়েও অবশ্য ভাগ্য সহায়তা করেছে। কারণ পাবনায় আমার খালাতো বোনের বিয়ে হয়েছিল। তার বাসায় বেড়াতে গেলেই কেনা হতো বই। দুটো দোকানের নাম মনে পড়ে যেখান থেকে বই কিনতাম। "ইসলাম ব্রাদার্স" আর "বিকিকিনি মার্ট"। ইসলাম ব্রাদার্স থেকে খুব একটা কিনতাম না অবশ্য, কারণ যতদূর মনে পড়ে ওদের ব্যবহার খুব একটা আন্তরিক মনে হয়নি! অথচ আমি বিকিকিনি মার্টে গেলে কাটাতে পারতাম প্রচুর সময়। “ছোটমানুষ” হয়েও ক্রেতা হিসেবে আমি ওদের কাছ থেকে বেশ গুরুত্ব পেতাম, আদর-ও! এমনটাও হয়েছে যে আমাকে ওই দোকানে রেখে আম্মা আর ওই খালাতো বোন কেনাকাটা করতে গেছে আর আমি একের পর এক বই বাছাই করছি। সাধারণত বিশ/পঁচিশটার কমে কখনোই কিনতাম না। তাই এক পর্যায়ে এমনও হয়েছে, আমি কয়েকমাস বাদেও ওই দোকানে গেলেও দোকানদার ঠিকই আমাকে চিনত আর বেশ আদরের সাথেই বই দেখাত।

এরপর আমাদের মফস্বলেই একটা দোকান হলো যেখানে সেবার বইগুলো পাওয়া যেত। তাই কষ্ট করে আর পাবনায় যাওয়ার দরকার পড়ত না। হয়ত কিছুদিন দেরি হতো বই হাতে পেতে কিন্তু দেখা গেল লুকিয়ে চুরিয়ে তখন ওখান থেকেই কেনা শুরু করলাম। শুধুই যে সেবার বই, তা না। ততোদিনে নানান রকম বইয়ের রুচি গড়ে উঠেছে। এই বই কিনতে গিয়ে ঝক্কিঝামেলাও কম পোহাতে হয়নি। যে দোকান থেকে কিনতাম সেই দোকানে আবার আব্বুর যাতায়াতও ছিল। কারণ দোকানদার ছিল আমার বোনের স্কুলের এক শিক্ষকের, যার মেয়ে আবার ওর সাথেই পড়ত। মেয়ের মামা দোকানে বসতো, কখনো বা বড় ভাই। কেন মনে নেই, তবে একবার বই কিনে সেই মামাকে বলেছিলাম যেন আব্বুকে না বলে যে আমি ওখান থেকে বই কিনেছি। কারণ আব্বু মাঝে মাঝে ওখান থেকে বই কিনে এনে দিত। আমি আর তাকে জানাতে চাইনি যে আমি নিজেও ওখান থেকে বই কিনি। কিন্তু ওই মামা গাদ্দারি করেছিলেন, বলে দিয়েছিলেন আমার বই কেনার কথা। পরে কি হয়েছিল পুরোপুরি মনে নেই, শুধু মনে আছে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে আমি জবাবদিহির জন্য গিয়েছিলাম আব্বুর কাছে।

অবশ্য আব্বু বই পড়তে দেয়ার ব্যাপারে কিছুটা উদারই ছিলেন বলা চলে। কারণ শুধু যে বই কিনে দিতেন তাই নয়, বইগুলো রাখার জন্য একটা তিন তাক বিশিষ্ট বুকশেলফও বানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তার কিনে দেয়া বইগুলো দিয়েই শেলফের তিন তাক ভরে গিয়েছিল। আর আমার কেনা বইগুলো স্থান পেত ওই বইগুলোর পেছনে যাতে করে আব্বুর নজরে না পড়ে!

সিক্স বা সেভেনে পড়ার সময় আব্বু একবার অফিসের কি এক কাজে ঢাকা গিয়েছিলেন। সেবার তিনি আমার না পড়া সব তিন গোয়েন্দার ভলিউম কিনে এনেছিলেন। সত্যি কিনা জানি না, হয়ত বা আমাকে খুশি করার জন্যই তিনি বলেছিলেন যে তিনি সেবা প্রকাশনীতে গিয়েছিলেন এবং রকিব হাসানের সাথে তার দেখা হয়েছিল! রকিব হাসান নাকি আমার তিন গোয়েন্দা প্রীতি শুনে খুবই খুশি হয়েছিলেন এবং বলেছিলেন পরবর্তীতে আমি কখনো ঢাকা গেলে আমার সাথে তিনি দেখা করবেন এবং গল্প করবেন! আমার আনন্দ তখন দেখে কে!

(আগামী পর্বে সমাপ্ত)


মন্তব্য

পরিবর্তনশীল এর ছবি

বইবিলাসীর স্মৃতি দারুণ লাগল। আমার সাথে ৯৫ পার্সেণ্ট মিলে গেছে। শুধু মাসুদ রানাটাই মিলে নাই। মাসুদ রানার বই তেমন একটা পড়া হয় নাই। ছোটবেলায় কে কত বেশি তিন গোয়েন্দা পড়ছে- এটা একটা মজার প্রতিযোগিতা ছিল।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বইবিলাস! বাহ, দারুন বলসো তো! আগে জানলে এইটাকেই শিরোনাম বানাতাম হাসি

ছোটবেলায় আসলেই তিন গোয়েন্দার যে কি বিশাল ভক্ত ছিলাম! এক পর্যায়ে আইসা যখন দেখলাম তিন গোয়েন্দারে এলিয়েনরা ধইরা নিয়া যায়, মঙ্গলগ্রহে যায়, না কি সব হাবিজাবি, তখন থেকে ভক্তি-শ্রদ্ধা উইঠা গেসে! মন খারাপ

তবে পুরানগুলা এখনো পড়তে গেলে সেই আগের অনুভূতি কাজ করে হাসি
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

স্বপ্নাহত এর ছবি

আপনি আমার পুরা ছোটবেলা ধরে টান দিসেন।

লেখাটা পড়তে পড়তে কত স্মৃতি মনে পড়ে গেল। ক্লাস থ্রি পর্যন্ত খালি ঠাকুরমার ঝুলি আর কমিকসগুলা পড়া হইসে। তারপর থ্রিতে উঠলে আমার এক বন্ধু শাওন, ও নিজেও এখন আই ইউ টি তে, আমাকে তিন গোয়েন্দার বিষের ভয় এনে দেয়। সেই যে শুরু। দেখতে দেখতে তিনগোয়েন্দার সবগুলো ভলিউম (২৮ পর্যন্ত) পড়া হয়ে যায় খুব কম সময়ের মধ্যেই। তারপর থেকে টুকটাক অন্য বইগুলার পড়াও শুরু।

আপনার যেমন বাবা বেশি উৎসাহ দিয়েছেন তেমনি আমার ছিল আপু। ও যে কোন বই নিয়ে আসলে তার নেক্সট রীডার হতাম আমি। খালি মাসুদ রানা গুলা প্রথমে দিতনা। লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তে গিয়ে কতবার যে ধরা খাইসি তার ইয়ত্তা নাই। দেঁতো হাসি

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

জিহাদ, ঠিক কইরা কও তো, তুমি আমার ছোটবেলায় হারায়া যাওয়া কোন ভাই না তো? দেঁতো হাসি

লুকায়া বই পড়া আর ধরা খাওয়ার মজাই আলাদা, নাকি বলো? হো হো হো

_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বহুদিন মাসুদ রানা পড়ি না
দুই হাতে দুই বন্দুক ডান হাতে লাঠি....

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বহুদিন আমিও মাসুদ রানা পড়ি না। বিশেষ করে নতুনগুলো, যেগুলো কাজী আনোয়ার হোসেন লেখেন না। তবে পুরোন দিনগুলোর কথা মনে হয়... কি পাগলের মতো মাসুদ রানার বইগুলো কিনতাম, জোগাড় করতাম, পড়তাম। সেই স্মৃতি অতুলনীয়!
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍বই পড়ার ব্যাপারে কারুর কাছ থেকে বিশেষ উত্সাহ পেয়েছি বলে মনে পড়ে না। তবে আমার পড়ার নেশাটি পারিবারিক সূত্রে পাওয়া বলে ধারণা করতে পারি।

এখন এমন অবস্থা যে, মাতাল অবস্থায় ঘুমোতে গেলেও চোখের সামনে বই ধরে রাখতেই হবে। পড়া হয় না কিছুই, কিন্তু ওই যে অভ্যাস! হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও। - হুমায়ুন আজাদ

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বস, আপনের লগে আমার পার্থক্য হৈলো মাতাল অবস্থায় ঘুমোতে গেলে আমি খালি গেলাস লৈয়া যাই! দেঁতো হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বই পড়ার অভ্যাস আমার মতে শ্রেষ্ঠতম অভ্যাস, এমনকি "বদভ্যাস" হলেও! চোখ টিপি
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

শিক্ষানবিস এর ছবি

বই পড়া শুরু করেছি ক্যাডেট কলেজে গিয়ে, ক্লাস এইটে। কলেজ লাইব্রেরিটাই আমাকে বইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এখনও সেই লাইব্রেরিটাকে খুব মিস করি।
কোন লাইব্রেরিতে দুর্ব্যবহার পেলে আর সেখানে যেতে ইচ্ছে করে না। ময়মনসিংহে পাঁচ-ছয়টা ভাল লাইব্রেরি আছে। সবচেয়ে ভাল টাতে আমি কখনই যাই না। কারণ একবার দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছিলাম।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পুরো একমত। কারণ কলেজের (ক্যান্ট. পাবলিক) লাইব্রেরি-তে বই-য়ের টানেই যেতাম কিন্তু লাইব্রেরিয়ানের কিছুটা খিটমিটে ব্যবহার খারাপ লাগতো খুব!
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

আহারে বই! কী মধুময় সেই দিনগুলো। প্রথম বই পড়ি ক্লাস ফোর-এ। বন্ধু নঈম-এর কাছ থেকে ধার করি ঠাকুরমার ঝুলি। তারপর আরো কয়েকটা নিয়ে পড়ি। এর মধ্যে মনে আছে জাদুর আপেল।

সুন্দর স্মৃতি জাগিয়ে দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

তারপর অনেকদিন পর সতীর্থ নয়ন এর কচি খালা। তিনি একদিন আমাদের নিয়ে গেলেন শিশুপরিষদের পাঠাগারে। সেখানেই প্রথম খাতায় নাম লিখে তাক থেকে পছন্দের বই নিয়ে পড়া শুরু হয়। যে কারণে আজও কচি খালাকে মনে রেখেছি পাঠাগার নামক বিশাল এক আনন্দ ভান্ডার আমার দৃষ্টিপটে উম্মোচন করে দেবার জন্য। আমার যাবতীয় পাঠ পিপাসা তৈরীর ক্ষেত্রে মূল ভিত্তি তৈরী হয় কচি খালার সঙ্গে সেই একদিন শিশু পরিষদের পাঠাগারে যাওয়া থেকেই। তারপর পাঠপিপাসা মেটাতে বড় ভাইদের বই চুরি করে পড়া থেকে নানা জাতের ম্যাগাজিন। মাঝে মধ্যে মাথায় গাট্টা ছিলো উপরি।

তারপর ক্লাস সেভেন-এইটে কুমিল্লার মুরাদনগর থানার লাজৈর গ্রামের বন্ধু সাখাওয়াত-এর ঘরে রাখা বিশাল টিনের এক ট্রাংক ভর্তি বই-- বঙ্কিম থেকে শুরু করে ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়, জরাসন্ধ, নীহার রঞ্জন, শংকর পড়তে পাই।

বিশেষ করে কম বয়সেই বড়দের অনেক বই পড়া হয়ে যাওয়াতে খুব বেশিই ইঁচড়ে পাকা হয়ে গিয়েছিলাম।
দেঁতো হাসি
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সুন্দর মধুময় স্মৃতি জাগিয়ে দিতে পেরেছি জন্য ভালো লাগছে।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ হাসি
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

নিরিবিলি এর ছবি

ছোটবেলায় গল্পের বই সব পড়ারবইয়ের নিচে রেখে পড়েছি। ধরা পরলে যে কত বাহানা বানিয়েছিলাম। অনেক ভাল লাগলো।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আমিও হাসি
ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল। ধন্যবাদ হাসি
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আহ্ বিডিআর ভাই... ভালো লাগলো লেখাটা... ধন্যবাদ...
এই বিষয়ে আমার বক্তব্য বহু পূর্বে সচলে ছাড়ছিলাম... লিঙ্কাইলাম...
http://muktopran.org/nazrul_islam/13160
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আপনার কমেন্ট পেয়ে আমারও খুব ভালো লাগল, বস হাসি
অনেক ধন্যবাদ। "অবাক বই পাঠ" পড়ব এখন। হাসি
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

স্নিগ্ধা এর ছবি

আমি কৃতজ্ঞ আমার মা'র প্রতি! গাদা গাদা প্রগতি প্রকাশনী'র বই আর রূপকথার বই কিনে দিয়ে যে অভ্যাসটা তৈরী করে দিয়েছিলো আম্মা, তার জন্য জীবন অনেক উপভোগ্য, অনেক রোমাঞ্চময়!!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আপনার মায়ের প্রতি আমারও কৃতজ্ঞতা, স্নিগ্ধাদি। ছোটবেলায় আপনার হাতে ওই বই তুলে দেয়ার কারণেই হয়তো আজ আমরা সচলায়তনে আপনাকে পেয়েছি হাসি

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমার ছোটবেলায়, মানে স্কুল জীবনে সেবা প্রকাশনীর - তিন গোয়েন্দা, ওয়েস্টার্ন, কিশোর ক্লাসিক, অনুবাদ এ সব সিরিজের একটা বই বোধহয় পাওয়া যাবে না যা আমার পড়া হয় নাই। এখনো মনে আছে ভিক্টর হুগোর হাঞ্চ ব্যাক অভ নটরডেম পড়ে কোয়াসিমোদোর জন্য কেঁদে কেঁদে পুরো একটা রাত পাড় করে দিয়েছিলাম। আমার পড়া আরেকটি সেরা বই থ্রি কমরেডস। এছাড়া আরো কত কত যে বই পড়েছি সেবা প্রকাশনীর কল্যানে - হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের - শি, রিটার্ন অব শি, অ্যালান কোয়াটারমেইন সিরিজ, তারপর জুলভার্ন-এর অনুবাদ ইত্যাদি ইত্যাদি বলে শেষ করা যাবে না। পড়তাম আর মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকতাম দিনের পর দিন।

আপনার লেখা পড়ে সব মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ অ প্র ভাই। আগামী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

থ্রি কমরেডস আমার পড়া অন্যতম প্রিয় একটা বই। খুব ছুঁয়ে দিয়েছিল বইটা। জুল ভার্ণের চাঁদে অভিযান-ও খুব রোমাঞ্চকর লেগেছিল।

ধন্যবাদ কীর্তিনাশা ভাই। পরবর্তী পর্ব খুব তাড়াতাড়িই আসবে হাসি
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

থ্রি কমরেডস-এর সেবার অনুবাদটা আমি খুজতেছি... পাইতেছি না... অনুবাদটা ভালো লাগছিলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কীর্তিনাশা এর ছবি

ঠিক মতো খোঁজেন নজরুল ভাই, পেয়ে যাবেন। প্রজাপতি প্রকাশনের হার্ডকভার মুদ্রনও পাবেন।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

নজরুল ভাই, যতদূর মনে পড়ে আমার বাসায় আছে বইটা। আপনি চাইলে আমার কাছ থেকে নিয়ে পড়ে দেখতে পারেন। হাসি

_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

রায়হান আবীর এর ছবি

জবাবা ধইরা টান দিতে হইলো, কারণ মূল লেখায় দেখায় আমি লগ আউট। যাই হোক।

ছোট বেলায় আমি বই পড়েছি কম। তিন গোয়েন্দা, মাসুদ রানা এইসব কিছুই পড়া হয় নাই।

আমিও আমার বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ। এবার উনি আমাকে কিনে দিয়েছিলেন, সুকুমার রায় সমগ্র। আমার পড়া একটা সেরা বই ছিল সেটা। আব্বুর পছন্দ খুব ভালো। এই কারণেই কম পড়া হলেও ভালো ভালো বই পড়েছিলাম ছোট বেলায়। জুলভার্ণ সমগ্রটা তো আমি এখনও পড়ি।

সকল ধরণের স্বাদের বই পড়া শুরু হয়েছে মূলত ক্যাডেট কলেজে যেয়ে। এখানেই আমি প্রথম পড়ি কালপুরুষ বইটি। তারপর থেকে সমরেশ সুনীল, শীর্ষেন্দুর যত মোটা বই আছে সব পড়ে ফেলেছিলাম। ,

রুপকথার বই ছিল একটা, চিলড্রেন ফেয়ারি টেলস। এইটা কিনে দিসিলো আমার আম্মা। যদিও আম্মু বেশীরভাগ সময় হাদিস, কুরানের বই গিফট করতো।

লেখাটা ভালো লাগছে। এইটাও কি আপনার শুরু করা, কিন্তু শেষ না করা আরেকটি দুই পর্বের সিরিজ হতে যাচ্ছে নাকি?

গতকালকে খুঁজছিলাম আপনাকে... আসেন নাই নিশ্চই।
=============================
তু লাল পাহাড়ীর দেশে যা!
রাঙ্গা মাটির দেশে যা!
ইতাক তুরে মানাইছে না গ!
ইক্কেবারে মানাইসে না গ!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

নাহ, এইটা শেষ হবেই! কারণ পরের অংশটা লিখে ফেলসি অলরেডি! দেঁতো হাসি

ভালোমতো খোঁজো নাই মনে হইতেসে মন খারাপ
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

রূপতথার বাইরে প্রথম পড়া বই বোধহয় 'উইজার্ড অফ ওজ', বাবা ব্রিটিশ কাউন্সিলের সভ্য ছিলেন, নিয়ে এসেছিলেন আমার জন্যে। পড়ুয়া স্বভাবের জন্য একেবারে ছোট বয়েসেই গোল কার্বন ফ্রেমের একটা চশমার মালিক হয়েছিলাম, কিন্তু পড়া থামেনি! এখনও পড়ি! বাসে, ক্লাসে, অফিসে, আরও অনেক বলা যায়না এমন সব জায়গায়! খাইছে পুরানো এবং ফালতু বলে আখ্যা দিলেও আমার ভালো লাগলো! বইবিলাসী কোন লেখা কি কখনও খারাপ হতে পারে? দেঁতো হাসি

----------------------------
ইহাসনে শুষ্যতু মে শরীরং
ত্বগস্থিমাংসং প্রলয়ঞ্চ যাতু।
অপ্রাপ্য বোধিং বহুকল্পদুর্লভাং
নৈবাসনাৎ কায়মেতৎ চলিষ্যতি।।

- ললিতবিস্তর

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।