বাংলাভাষায় বিজ্ঞানচর্চার গুরুত্ব বলে বোঝানো সম্ভব নয়। শুধু মাতৃভাষার কারনে বিজ্ঞান বুঝতে আমাদের সুবিধা হওয়ার জন্যই নয়; বরং দেশের শিশু-কিশোরদের বিজ্ঞানমুখী করে তোলার জন্য, বিজ্ঞানকে মাতৃভাষায় চিন্তা করার জন্য বাংলায় বিজ্ঞান চর্চা প্রয়োজন। হ্যাঁ, আমরা যখন চিন্তা করি সেটা যেকোন একটা ভাষায় করি। মনে করেন, আমি মাধ্যাকর্ষণ বল নিয়ে চিন্তা করছি, এখন নিউটনের পরীক্ষাকে বাংলাভাষায় পড়লে আমি সেটা নিয়ে চিন্তা করতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাতেই করব। এভাবে চর্চা করতে করতে একসময় একটা অভ্যাস তৈরি হবে। ফলে পুরো জেনারেশান নিজের ভাষায় বিজ্ঞান চর্চাকে সাবলীলভাবে গ্রহণ করবে, তেমনি বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চাও মিউচুয়ালি বেগবান হবে। আর বিজ্ঞান চর্চার এবং কার্যকরভাবে সম্প্রসারণের সবচেয়ে সহজ কাজটি হল- মজার, গুরুত্বপূর্ণ, সাম্প্রতিক বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, ঘটনা, মৌলিক বিষয়, চিন্তাভাবনা এসব বাংলায় লিখে ফেলা এবং ছড়িয়ে দেয়া। আবার এখন ছড়িয়ে দেয়াটা সবচেয়ে ভাল হয় সম্ভবত অনলাইন পত্রিকা বা ব্লগগুলি দিয়ে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
কিন্তু ঝামেলা বাঁধে আপনি যখন বিজ্ঞান লেখা নিয়ে যথেচ্ছাচার করেন। বিজ্ঞান এমন বস্তু নয় যে নিজে আধো আধো বুঝে বা নিজের কল্পনা দিয়ে যেকোন কিছু লিখে ফেলবেন। তাতে ঝামেলা যেটা হয় সেটা হল আপনার ভুল খবর বা তথ্য থেকে মানুষ ভুল জানছে। বাংলাদেশের মানুষ এখনও খুব বেশি বিজ্ঞানমুখী হয়নি, বিজ্ঞানের খবরটবরও যা পায় তা কাগজের বা অনলাইন বিভিন্ন পত্রিকা থেকে জানছে। মৌলিক বিজ্ঞান নিবন্ধ বিজ্ঞানীরাই হয়তো বেশি পড়ছেন না, সাধারনের কথা তো ছেড়েই দিলাম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাচাই এর সুযোগ না থাকার কারনে বা যে বিষয় পাঠক পড়ছেন সেবিষয়ে খুব ভাল জ্ঞান না থাকার কারনে পাঠকেরা ভুল লেখাটাকেই সঠিক হিসেবে জেনে নিচ্ছেন। আশঙ্কাটা আরও বড় হয় যখন শিশু-কিশোর’রা এসব ভুল খবর পড়ে। কোন জিনিস যদি গোড়াতেই ভুল শেখানো হয় তবে শিশু কিশোরেরা পরবর্তীতে যখন সঠিক তথ্য জানবে তখন বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। এটা তাদের আত্মবিশ্বাসে দারুন খারাপ প্রভাব ফেলে। আবার সহজে বুঝে ফেলার মত বিষয় লেখক না বুঝে বিভ্রান্তিকরভাবে এবং ভুল তথ্য দিয়ে লিখলে নতুন পাঠক সেটা বুঝতে না পেরে হতাশায় ভুগতে পারেন, সে বিষয়ে আগ্রহও হারিয়ে ফেলতে পারেন সহজে।
এবার আসি এসব কেন বলছি তাতে। এখন এত এত অনলাইন খবরের পত্রিকা এমন এমন সব কথা লিখছে (বিজ্ঞান বা অন্য সংবাদ নির্বিশেষে) যে খবরগুলি বা লেখাগুলি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে এবং পত্রিকার লেখার বিশ্বস্ততা নিয়ে দ্বিধান্বিত হচ্ছি দিন দিন। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ক লেখাগুলি নিয়ে। অনুবাদ করতে গিয়ে, অথবা সঠিক তথ্য না জেনে, অথবা কত দ্রুত কত লেখা তৈরি করা যায় সেই চাপে পরে অদ্ভুত অদ্ভত খবর আসছে। বেশিরভাগই অনিচ্ছাকৃত ভুল। প্রতিদিনই এত এত বিজ্ঞান নিবন্ধ কেন গণহারে প্রকাশ করতে হবে সেটা বুঝিনা। জনপ্রিয়তা ধরে রেখে পত্রিকার ব্যাবসায় সুবিধা হয় বলে হয়ত।
আবার এসব পত্রিকার রিভিউ করার ব্যাপারটা কিভাবে কাজ করে জানিনা। অনেকগুলোতেই ভুল ধরিয়ে দিয়েছি, কিন্তু লেখক বা সম্পাদক খবরগুলির সত্যতা ঠিক করে আপডেট করছেন না। লিখে ফেলেই ফেইসবুকে শেয়ার দিতে দিতে দায়িত্ব শেষ করার প্রয়াস। আমি এখানে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি একটা পত্রিকার উদাহরণ দিয়ে। প্রিয়.কম। এদের বিজ্ঞান শাখা আছে একটি, লিংকে গিয়ে উপরের বিজ্ঞান ট্যাব ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন। বিভিন্ন সাইটে আমার কাছে ইন্টারেস্টিং বিজ্ঞানের লেখাগুলি পড়ি। এখান থেকেও পড়ি। তবে, যা পড়েছি তাতেই এমন কিছু ভুল পেয়েছি যেগুলি অগ্রহণযোগ্য।
বলে রাখি, পত্রিকাটিকে আক্রমণ করার জন্য আমি এসব লিখছিনা। ফেইসবুক থেকে কমেন্ট করে বেশ কয়েকটি লেখায় আমি ভুল ধরিয়ে শুধরাতে বলছি গত দুইমাস ধরে। কেউ কর্ণপাত করছেন না। আজকে চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরষ্কার দেয়া নিয়ে যখন মনের মাধুরী মিশিয়ে লেখা ছাপালো এই পত্রিকা তখন ভাবলাম অনেকখানিই তো দেখলাম। এবার এদের নিয়ে লিখে ফেলি।
এখানে সবগুলি উদাহরণই জীববিজ্ঞানের (আমি এগুলিই অল্পস্বল্প বুঝি)। জীববিজ্ঞানের পাঠকেরা উদাহরণগুলি হয়তো ভাল বুঝতে পারবেন। ভুলগুলি উল্লেখ করছি এক এক করে।
ফেইসবুকের কল্যাণে সম্প্রতি খবরটা শুনেছেন নিশ্চয়ই:
http://www.priyo.com/2013/09/09/30608.html
'আমাদের দেশের মেয়ে কৃত্রিম ফুসফুস তৈরি করে ফেলেছেন'
খবরটা সম্পূর্ণ ভুল। আয়েশা আরেফিন কোন কৃত্রিম ফুসফুস তৈরি করেন নাই। তাঁর গবেষণাটি হল ফুসফুসে এমন কৃত্রিম অবস্থা তৈরি করা যেটা ফুসফুসে একটি ত্বক তৈরি করতে পারে। এই গবেষণা ফুসফুসের রোগ নিরাময়ে অবদান রাখতে পারে, কিন্তু এটা দিয়ে কৃত্রিম ফুসফুস নির্মানের কোন সম্ভাবনা নাই।
আয়েশা আরেফিন নিজেই তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে এই ভুল খবরের কথা বলেছেন। কিন্তু পত্রিকার কোন বিকার নাই। অনেকেই তাদের এই ভুল খবরের কথা তুলে ধরেছেন, ফেইসবুকের সুবাদে এই পত্রিকার লোকজনও অবশ্যই শুনেছেন বলে মনে করি। কেন তারা খবরটি এখনও তুলে নেননি বা অন্ততঃ শোধরানোর চেষ্টা করেননি সেটা কে জানে। আবার তাদের এই খবর আরও কিছু পত্রিকা শেয়ার দিয়েছে। অর্থাৎ ভালভাবেই ভুল সংবাদ ছড়িয়েছে।
প্রায়ই পত্রিকাটির কোন লেখার শেয়ার পরছে ১০০'র ও বেশি। চরমভাবে ভুল খবর দেয়ার পরও। নিচের উদাহরণটি দেখুন:
http://www.priyo.com/2013/09/11/30954.html
এখানে একটা অংশে তারা লিখছেন- 'আর Cryptococcus neoformans এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই এটি মানুষের বেশ কিছু ভয়াবহ রোগের কারণ। যেমন-Dawn’s Syndrome হয় এই ইস্টের মাঝে থাকা ক্রোমোসোম ২১ এর কারণে।'
পুরাই ভুল কথা। Dawn’s Syndrome বলে মানুষের কোন রোগ নাই। Down syndrome বোঝাতে চেয়েছেন বুঝতে পেরেছি। কিন্তু সেটা কখনই ছত্রাকের দ্বারা হয়না, ছত্রাকের ক্রোমোজম দিয়ে তো হওয়ার প্রশ্নই আসেনা। এই রোগ হয় মানুষের ২১ তম ক্রোমজম এর তৃতীয় কপি থাকলে। ছত্রাকেও ক্রোমজমের বাড়তি কপি থাকার ঘটনা ঘটতে পারে সেটা বোঝানো হয়েছে মূল আর্টিকেল এ (যেখান থেকে সম্ভবত লিখেছেনঃ http://www.livescience.com/39541-deadly-fungus-mates-with-clones.html)।
এত শেয়ার কারা করেন সেটা আমার জানতে ইচ্ছা করে। বাংলাতে দারুন ভাল কোন বৈজ্ঞানিক লেখাওতো ২০ টা শেয়ার হলে দারুন ব্যাপার বলে ধারনা করা যায়। কিন্তু এই অজানা ছত্রাক নিয়ে লেখা, যে যৌণ মিলনে গেলে বা না গেলেও কারও এত উৎসাহ দেখানোর কিছু থাকার কথা না- সেইটা ১০০ বার শেয়ার করা? মানুষের যৌনতা বা নামিদামি মানুষের স্ট্যাটাস বা বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ জয়ের খবরও এত শেয়ার হয় কিনা সন্দেহ। দুনিয়া আসলেই অদ্ভুত।
তাদের সাইটে সাধারন কিছু ভুলের কথা আমি উল্লেখও করেছিলাম। যেমন উত্তর আমেরিকার ব্যাঙকে বলছেন উত্তর মেরুর ব্যাঙ, বা শুক্রাশয়ের আকার বড় হওয়াকে বলছেন ‘শুক্রাশয়ের আকৃতির উপর নির্ভর করে..' ইত্যাদি। এগুলো পাত্তা দিতাম না যদি না তারা ভুলগুলি শুধরে নিতেন। কিন্তু কে কার কথা শোনে।
ক.
http://www.priyo.com/2013/08/27/28605.html
খ.
http://www.priyo.com/2013/09/12/31046.html
এরপরে আছে কিছু ক্লাসিক ভুল।
ক.
http://www.priyo.com/2013/10/01/33878.html
প্রিয়.কম লিখছে:
'তিনজন মানুষের থেকে নেওয়া ডিএনএ ব্যবহার করে সন্তান জন্মদানের এই পদ্ধতি কিভাবে কাজ করে? পিতা এবং মাতা অর্থাৎ দুইজন মানুষের জিনের সমন্বয়ে প্রাকৃতিকভাবে যে শিশু জন্ম নেয় তার সাথে এই পদ্ধতিতে জন্ম নেওয়া শিশুর বাহ্যিক কোনও পার্থক্য থাকবে না। আমাদের দেহকোষের নিউক্লিয়াসে যে ডিএনএ থাকে তার অর্ধেক জিন আসে আমাদের মায়ের থেকে এবং বাকি অর্ধেক আসে আমাদের বাবার থেকে। এই জিন কিন্তু এটা ছাড়াও আরেকটা জিন আছে, আর সেটা থাকে আমাদের কোষের মাইটোকন্ড্রিয়ায়।'
পুরাই কনফিউজিং কথাবার্তা। লেখক জিন এবং ডিএনএ একই অর্থে ব্যবহার করছেন যে কি মনে করে কে জানে। 'আরেকটা জিন মাইটোকন্ড্রিয়ায় থাকে' বলতে কি কিছু বোঝায়? কোন জিন থাকে? মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ তে তো একাধিক জিন থাকে। সবচেয়ে জরুরী ছিল এটা বলা যে- মাইটোকন্ড্রিয়াটি আসে শুধুমাত্র মায়ের কাছে থেকে, বাবার কাছ থেকে নয়। সেজন্য তৃতীয় ব্যক্তিটি মেয়ে হতে হবে।
খ.
http://www.priyo.com/2013/08/19/27437.html
এই লেখার মধ্যে এতগুলা ভুল যে আলাদাভাবে সংশোধন প্রায় অসম্ভব। কয়েকটা অংশ তুলে দিচ্ছিঃ
‘মানবদেহে যত কোষ আছে,সবগুলোর নিউক্লিয়াসে আছে একটি করে ডিএনএ।’ - ভুল (২৩ ধরনের ক্রোমোজম থাকে, প্রতিটার এক জোড়া)
‘মইয়ের দুই পাশের লম্বা অংশটিকে ডাবল হেলিক্স বলা হয়।’ - ভুল (পুরো গঠনকেই ডাবল হেলিক্স বলে)
‘মৃত্যু পর্যন্ত মানবদেহের সমস্ত কার্যক্রম কিভাবে পরিচালিত হবে,তাও সব ডিএনএ কোডে লেখা আছে।’ - বিভ্রান্তিকর
‘এভাবে দেহের লক্ষ লক্ষ কার্যাদি অনায়াসে সম্পন্ন হয় একমাত্র ডিএনএ কোডের তথ্য অনুযায়ী।’ - আংশিক সত্য
গ.
http://www.priyo.com/2013/09/03/29725.html
এই লেখাটিতে কথা বলছেন ডিএনএ খাঁচা নিয়ে, কিন্তু ছবি দিয়েছেন প্রোটিন খাঁচার (শেষ ছবি)।
আবার কেউ কেউ অনুবাদ করতে গিয়ে এমন কিছু বাংলা করছেন যেটা থেকে আসল নাম বোঝার কোন উপায় নাই।
ক.
যেমন, এখানে একটা উদাহরণ দেখুন:
http://www.priyo.com/2012/05/25/4100.html
কাটানাল ১ জিন কি জিনিস? catanal, katanul, katanale, katanal, catanale, catanul ইত্যাদি লিখে খুঁজে দেখলাম। কিছুতেই পাচ্ছিনা। বরং গুগল আমাকে মাঝে মাঝে আপত্তিকর সাইটে নিয়ে যাচ্ছে, শব্দের শেষের অংশটার কারনে। এখন কাটানাল ১ কি জিনিস এটা কি খুব সহজেই বের করা যেতনা যদি তারা ইংরেজীতে লিখে দিতেন আসলেই কি নাম বোঝাচ্ছেন? তবে ইংরেজী নামকে ভুলভাবে লেখাটা খুব অস্বাভাবিক না। কিন্তু সঙ্গে ইংরেজীটা দিয়ে দিলে আমাদের বুঝতে সুবিধা হয়। আর এরকম খবরের জন্য আমি বারবার বলি যে, আপনারা যেখান থেকে অনুবাদ করছেন সেটার লিংকটা অন্তত দিয়ে দিন।
খ.
বাংলায় ভুল নাম ব্যবহারের আরেকটা উদাহরণ:
http://www.priyo.com/2013/08/27/28495.html
এক জায়গাতে লিখছেন-
‘এক্ষেত্রে ডেসিটাবিন ওষুধ 'প্রোটিন কিনাসে ডি১' (পিআরকেডি১) নামে একধরনের এনজাইমের জন্য জিন কোডিং হিসেবে কাজ করে।’
‘কিনাসে’ যে আসলে কাইনেজ এনজাইম সেইটা কিভাবে বুঝবো? মানুষের দেহের সবচেয়ে বড় প্রোটিন পরিবারগুলির একটা হল কাইনেজ পরিবার। নাম দেখে কিভাবে চিনবো যে এই পরিবারের সদস্যের কথা বলা হচ্ছে? তারপর লিখছেন-
‘এনজাইমের জন্য জিন কোডিং হিসেবে কাজ করে।’
ক্যামনে কি? এই ওষুধ কিভাবে এনজাইমের জন্য ‘জিন কোডিং’ হিসেবে কাজ করে? ওষুধটা কি ডিএনএ’র অংশ?
http://www.priyo.com/2013/10/07/34875.html
এই লেখাটি শেষ করেছেন এভাবে-
‘২০১০ সালে ক্রেইগ ও তার দল একটি কৃত্রিম DNA থেকে টেস্ট টিউবের ভেতর নতুন ক্রোমোসম তৈরি করতে সক্ষম হন। এরপর একটি কোষের ভেতর ক্রোমোসমটিকে স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে এটি সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে থাকে, অর্থাৎ এটি জীবন্ত স্বত্বার মতোই আচরণ করতে থাকে।’
প্রশ্ন হল, ক্রোমোজটিকে স্থানান্তরিত করার পরে কিভাবে সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়? ভেন্টার কাজটি করেছিলেন ব্যাকটেরিয়ার উপর। অল্পকিছু ব্যাকটেরিয়াতে শুধুমাত্র একাধিক ক্রোমোজম থাকতে দেখা যায়, তাও একই ক্রোমোজমের একাধিক কপি নাই। ভেন্টার এমন কোন ফলাফলও পান নাই।
আবার বলছেন-
‘এটি জীবন্ত স্বত্বার মতোই আচরণ করে’ ?? ক্রোমজমটি? নাকি কোষটি? যেভাবে লিখেছেন তাতে মনে হচ্ছে ক্রোমোজমটির কথা বলছেন লেখক। ক্রোমোজমের জীবন্ত স্বত্বার মত আচরণ করা কল্পকাহিনীতেও সম্ভব না।
এইবার আসি শেষ উদাহরণে:
http://www.priyo.com/2013/10/08/35046.html
গত সাত তারিখে (অক্টোবর, ২০১৩) চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয় তিনজন বিজ্ঞানীকে যাঁরা কোষে ভেতরে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়, এবং সঠিক স্থানে জৈব অণু একধরনের থলির দ্বারা কিভাবে পরিবাহিত হয়- সেটা নিয়ে গবেষণা করেছেন। আবার বলছি, ‘কোষের ভেতরে পরিবহন’ নিয়ে গবেষণা করেছেন। এবার দেখি প্রিয়.কম কি লিখেছে-
'প্রতিটি কোষ একেকটি ফ্যাক্টরি বা কারখানার মতো কাজ করে, যেটি কিনা বিভিন্ন জৈব-রাসায়নিক অণু তৈরি করে দেহের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠিয়ে দেয়। আর এই অণুগুলো কিছু vescicle এর মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়। পুরস্কার বিজয়ীরা এটিই আবিষ্কার করেছেন যে, কিভাবে এই ভেসিকলগুলো বিভিন্ন অণুকে শরীরের নির্দিষ্ট স্থানে সঠিকভাবে পৌঁছে দেয়ার কাজটি সম্পন্ন করে।'
‘কোষ’কে ‘দেহ’র সাথে কিভাবে গুলিয়ে ফেলছেন সেটা বুঝছিনা। দুইটা তো ইংরেজীতে স্পষ্টতঃই আলাদা দুইটা শব্দ। অনুবাদের কারনে ভুল নিশ্চয়ই হওয়ার কথা না। এমন ভুল কিভাবে সম্ভব? অবহেলার উদাহরণ সম্ভবত।
যাই হোক, আমি প্রিয়.কম এর সাইট টাতে লেখাগুলোয় ফেইসবুক থেকে একের পর এক কমেন্ট করেই যাচ্ছি। তাদের বা লেখকের কাছ থেকে কোনধরনের উত্তর বা ভুল শোধরানোর উদাহরণ এখনও পাইনাই। এখানে ১১ টা উদাহরণ দিলাম বাজে বিজ্ঞান লেখার উদাহরণ হিসেবে। তবে শুধু আমার কৌতুহলের বিষয়গুলির ভুল ধরেছি। কিন্তু লেখাপ্রতি ভুলের হারটা আশঙ্কাজনক বলেই ধারনা করছি অন্যান্য লেখাগুলিতেও ভুল হচ্ছে। প্রিয়.কম এর টনক নড়লে হয়। নাহলে মানুষকে ভুলই শিখিয়ে যাবেন। এত দূর্বল রিভিউ ব্যবস্থায় কোন পত্রিকা খুব একটা দেখা যায়না।
মন্তব্য
কৃত্রিম ফুসফুস তৈরির খবর ফেসবুকে অনেককে শেয়ার করতে দেখেছি । এত মারাত্মক সব ভুলে ভরা লেখায় মানুষ জন তো বিভ্রান্ত হচ্ছে । এখন ওদের বোধোদয় হলে হয়।
তাহসিন রেজা
সেটাই প্রত্যাশা।
বিজ্ঞান নিয়ে এধরনের ভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করা যে পত্রিকাওয়ালাদের শুধুমাত্র আন্তরিকতার অভাব তাই নয় এটা তাদের জ্ঞানের অভাবও বটে।
এগুলো দেখারও কেউ নেই। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আইসিটি আইনের স্বার্থসুলভ ব্যবহার না করে এসব বিভ্রান্তিকর সংবাদ যারা পরিবেশন করে,তাদেরকে এর আওতায় আনা উচিত।
-ছায়াবৃত্ত
লেখালেখিকে এত এত আইনের আওয়তায় আনাটা ভাল হবেনা বলেই বোধ করি। পত্রিকাগুলির নিজের দায়িত্বে যাচাই বাছাই করা বা যোগ্য লোককে দিয়ে লেখানো উচিত।
যাক, অবশেষে প্রিয়ডটকম নিয়ে কেউ লিখলো!
____________________________________________________________________________________
তবু বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর,
এখনি, অন্ধ, বন্ধ কোরো না পাখা।
লেখককে অনেক ধন্যবাদ এই বিষয়ে লেখার জন্য। আমাদের দেশী পত্রিকা গুলোতে যে ভাবে বিজ্ঞান নিয়ে লেখা হয়, সেটা যাচাই না করেই প্রকাশ করাটা উচিত না। পাঠকেরা ভুল জানবে। আমি নিজেও এই ধরনের লেখা পেলে পড়ার পরে লেখককে ভুলটা জানাই, কিন্তু কোন উত্তর দেয় না। আমি প্রথম আলোতেও এ রকম অনেক পেয়েছি, তাদেরকে জানিয়েছি, কিন্তু কোন প্রতিকার করে না। এই ভাবে প্রকাশ করলে মানুষে তো সঠিকটাই জানতে পারছে না। তার উপরে আছে উদ্ভট বাংলা প্রতিশব্দ প্রয়োগ, যেটার অর্থই বুঝা যায় না, তার উপরে পুরা প্রতিবেদন বুঝা তো আরো কঠিন হয়ে দাড়ায়। এটা শুধু প্রিয়.কম ই করে না, আমাদের দেশের প্রথম আলোও করে থাকে। এটা কি 'Lost in translation' নাকি অন্য কিছু সেটাই একটা প্রশ্ন।
desh_bondhu
আপনিও লিখে ফেলুন ভুলগুলি নিয়ে।
আপনি ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়ার পর আমি খেয়াল রাখতাম তারা কোন Response করছে কি না! কিন্তু সম্ভবত তারা একটি কমেন্টেরও উত্তর দেয় নি!
সৈয়দ মনজুর মোর্শেদ
সেটাই তো বলছি। এরা মনে হয় তত কেয়ার করেনা। দায়িত্বহীন পত্রিকা।
প্রিয় ডট কমে জীন/ডিএনএ/ক্রোমোসোম/প্রোটিন নিয়ে যেসব লেখা আসে তা ঠিক ভাবে অনুবাদ করতে গেলে ইন্টারমিডিয়েটের বায়োলজি বই ঠিকমত পড়া থাকলে আর মাথার কল্কাঠি ঠিকমত নড়লেই চলে। আমি বেশ কিছু ভুল পেয়েছি যা তারা অজ্ঞতার কারণে করে, নাকি অবহেলার কারণে করে, নাকি অন্য কোন কারণ আছে তা বুঝে উঠতে পারিনি। বিজ্ঞানের মত একটি সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে যে যাই করুক না কেন আরো যত্নবান হওয়া উচিত।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসার জন্য।
-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------
কিছু জিনিস এরা না বুঝে লিখে ফেলতে চায় দ্রুত। ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু এসব লেখকে মনিটর করে কে সেটা হল প্রশ্ন।
দারুণ ... প্রিয় ডট কম সহ আরও কিছু পত্রিকার এইসব আজগুবি বিজ্ঞান সংবাদ দেখে মাঝেমাঝেই বিরক্ত হই। বিজ্ঞান নিয়ে বাংলাভাষায় সরলভাবে আরও নানা লেখালেখি হওয়াটা জরুরী কিন্তু সেই সরলীকরণ করতে গিয়ে রুমালকে বেড়াল বানানোর চর্চা বন্ধ করা আরও বেশী জরুরী।
ধন্যবাদ। জনপ্রিয়তা পাওয়া বা বাড়ানোর জন্য বাড়িয়ে বাড়িয়ে এবং কম সময় নিয়ে লিখে ফেলার চলন এটা।
আমার তো মনে হয় মাঝে মাঝে ইচ্ছা করেই কিছু সংবাদের অনুবাদ করতে তারা চটকদার কিন্তু বিভ্রান্তিকর শব্দ ব্যাবহার করে কারন 'পাবলিকে খায়"। ভুল ধরার তো কেউ নেই। সুতরাং সঙ্গিলা আকাশে উড়াও মনে ঘুড়ি।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
ঐ সব পত্রিকাতে যারা অনুবাদ করে বা লিখে তাদের অনেকেই মনে হয় context চিন্তা না করে বাঁ না বুঝেই অভিধান দেখে একটা অর্থ লিখে ফেলে। যেমন, দেখা গেলো কোন আদান প্রদানের একটা বিষয় আছে, সেখানে একজনের লেনদেনের বিষয়ে লেখা আছে 'he was fair' , কিন্তু অনুবাদে লিখে ফেললো 'সে সুন্দর ছিল'। তাহলে লেখাটা পড়ে কি বুঝবেন? আবার অনেক সময়ে একটা ইংরেজী শব্দের বাংলা করে উদ্ভট অর্থ দিয়ে, সেটার নাম আগে কেউ হয়তো শুনে নাই। সে দিন প্রথম আলোর একতা লেখাতে পড়লাম 'সাতারপুল', যেটা সুইমিংপুলের বাংলা করেছে অর্ধেক বাংলা আর অর্ধেক ইংরেজী দিয়ে। দেশের সবাই জানে সুইমিংপুল কি, কিন্তু সাতারপুল লিখলে মানুষ হয়তো চিন্তা করতে পারে এটা মনে হয় হাতিরপুলের মতো কোন জায়গা হবে।
desh_bondhu
একমত। বিজ্ঞান লিখতে হলে গোছালো এবং সঠিক তথ্য ঠিক যত পরিমান দেয়া উচিত সেটা দিতে হয়।
একমত। এসব সাইটের বেশিরভাগ লেখাকেই চটকদার বানানোর প্রয়াস থাকে।
প্রিয় ডট কমের নারীপ্রুশ সিরিজ ছাড়া আর কিছু পড়ি না
সবার বোঝার জন্য সহজ করে লেখা এক জিনিস আর গল্পের গরু গাছে উঠানো আরেক জিনিস। আমার ধারণা সাংবাদিকদের গল্প ইন্টারেস্টিং করার জন্য হাল্কা পাতলা পরিবর্তন/পরিবর্ধন/কর্তনের দিকে একটা ঝোঁক থেকেই যাই। কিন্তু বিজ্ঞান ভিত্তিক সংবাদে এই ফরমুলা ফেললে যে বিজ্ঞান রূপকথা হয়ে যায় সেইটা কে বোঝাবে!
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
অপসাংবাদিকতার তো বহু উদাহরণই আছে। তবে আমার মনে হয় এই লেখাগুলি কোন সাংবাদিক লিখেন না। বরং সাইটগুলির চাকুরে লেখকেরা লিখেন।
একবার খবর ছাপালো "ফেসবুক হ্যাকার কাপ" এ দেশের বেশিভাগ মস্ত মস্ত হ্যাকাররা অংশ নিতে পারছেনা কারণ তারা দেশের সাইবারস্পেশ সুরক্ষায় অতি ব্যস্ত! আজগুবি সেইসব হ্যাকারদের সাথে কথোপকথনও ছাপিয়ে দিলো। রিপোর্টটার জানতো না হ্যাকার কাপ কোনো হ্যাকিং/ক্র্যাকিং কনটেস্ট না, এটা অ্যালগোরিদমিক প্রবলেম সলভিং কনটেস্ট, এখানে অংশ নেয় যারা ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড, এসিএম প্রোগ্রামিং কনটেস্ট ইত্যাদি কনটেস্টে অংশ নেয় তারা, সাইবারস্পেশ সুরক্ষায় ব্যস্ত কারো এখানে অংশগ্রহণের কোনো কারণ নেই। ফেসবুক দিয়ে কমেন্ট করার পর লেখক একটা ফেক আইডি দিয়ে উল্টা গালাগালি শুরু করলো, বলে আমি নাকি মুর্খ! পরে অন্যান্য প্রোগ্রামিং কনটেস্টেন্টরাও যোগ দিলে ফেসবুক কমেন্টের অপশনই তুলে দিলো কিন্তু লেখাটা ঠিক করলোনা!
হেহে..
ফেসবুকে একটা হ্যাকার গ্রুপ ছিল সম্পূর্ণ ছাগু পরিচালিত। শুধুমাত্র ইন্ডিয়ান সার্ভার ডি-ডস এটাক করাতে যারা দিনরাত ব্যস্ত থাকত।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
দারুন একটি লেখা
এতো ভুল তথ্য দিয়ে আর কোথাও বিজ্ঞানের তথ্য প্রকাশ পায় কিনা আমার জানা নেই। দিনের পর দিন তারা একি ভুল করেই যাচ্ছে, শুধরানোর কোন নাম নেই। বাঙালি এমনিতে বিজ্ঞানমনষ্ক না, তাই খুব সাধারণ ভুলগুলোও বেশি ভাগ মানুষ ধরতে পারেনা। তাই ফেসবুকে এমন ভুল তথ্যগুলো ও শত শত লাইক পড়ে আর শেয়ার হয়। আমি কয়েকটা শেয়ার করা তথ্যে ভুল ধরে দিয়েছিলাম কিন্তু কেউ সেটার কর্ণপাত করেনি, তারা তাদের মতোই মেতে আছে।
এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে লেখার জন্যে আপনাকে আবারো ।
মাসুদ সজীব
ধন্যবাদ
সবার প্রিয় হতে হবে। মানে খুব সরল করে লিখতে হবে। খাজা-গজা ঠিক আছে, সিঙ্গাড়া অর্ডার দিলে সে অর্ডার লিখে উঠতে পারা যায়! বিজ্ঞান যদি গোল পাকিয়ে চচ্চড়ি রাঁধার বিবরণ হয়ে যায় সেটা লেখকের দোষ? বিজ্ঞানের দোষ। লেখায় ভুল আছে মনে হলে বিজ্ঞানরে চেপে ধরেন। জিজ্ঞেস করেন সে এত গোলমেলে কেন? লেখক কত কায়দা করে কত সরল করে দিয়েছে - কেটে-কুটে, ধুয়ে-মুছে একেবারে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন - পুরাই অন্যরকম। পড়তে না পড়তে সব বোঝা গেল। এইবার পড়ুয়া নিজেই এ নিয়ে নিজের মত করে কত গল্প বলতে পারবে, কত ভুনা পাকাতে পারবে! এমনি এমনি এসব লেখা এত এত লোকের এত এত প্রিয়! হুঁ-হুঁ!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
লেখককে অনেক ধন্যবাদ এই চমৎকার বিশ্লেষনধর্মী লিখাটির জন্য। তবে একটি ছোট্ট বিষয় নজরে আনতে চাই।
৪ এর (ক) তে আপনি লিখেছেন "মাইটোকন্ড্রিয়াটি আসে শুধুমাত্র মায়ের কাছে থেকে, বাবার কাছ থেকে নয়। সেজন্য তৃতীয় ব্যাক্তিটি মেয়ে হতে হবে"। প্রথম বাক্যটির সাথে একমত হলেও দ্বিতীয় বাক্যটির ঠিক যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছে না। প্রকৃতিতে বাবারা তাদের মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ সন্তানের কাছে প্রেরণ করতে পারে না সত্য তবে তার মানে এই নয় যে বাবাদের শরীরে এই ডিএনএ নেই। পুরুষের শরীরেও মাইটোকন্ড্রিয়া থাকে তবে তা সঙ্গমের মাধ্যমে ভ্রূণে পরিবাহিত হয় না। মূল গবেষনার বিষয়বস্তুই যেখানে তৃতীয় কোন ব্যাক্তির মাইটোকন্ড্রিয়া ভ্রূনে প্রতিস্থাপন, সেখানে কোন পুরুষ ডোনারের শরীর থেকেও কেন সেই মাইটোকন্ড্রিয়া সংগ্রহ করা যাবে না তা ঠিক বোধগম্য নয়।
ধন্যবাদ।
সম্ভব। কিন্তু তাতে বহু ধরনের জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। আমরা মায়ের মাইটোকন্ড্রিয়া নিয়ে প্রাকৃতিকভাবে অভিযোজিত। মায়ের কোষটা মূল কোষ হিসেবে যেহেতু ভ্রূণে পরিনত হয় সেখানে বাবার (পুরুষ) কোষের মাইটোকন্ড্রিয়া প্রতিস্থাপিত করলে কোষের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া প্রায় নিশ্চিত। মাইটোকন্ড্রিয়ার সাথে কোষের অন্যান্য অংশের যোগাযোগেই ঝামেলা হওয়ার সম্ভাবনা।
আবার মানুষের উপর যেহেতু পরীক্ষা করতে হচ্ছে তখন বাবার কাছ থেকে মাইটোকন্ড্রিয়া নেয়ার মত ঝুঁকি কেউই নিতে চাইবেন না। মাইটোকন্ড্রিয়া রিজেক্টেড না হলেও পরবর্তীতে জন্মগ্রহণের পরে জীবনঘাতি সমস্যা তৈরি হতে পারে।
ভাল লেখা , এভাবে করে গল্পের গরু গাছে উঠিয়ে দিচ্ছে প্রিয় ডট কম। বিজ্ঞান যে রুপকথা নয় এতা বোঝার মত বুদ্ধি বা জ্ঞান কিছুই এদের নেই কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এরাই এখন বিজ্ঞান লেখক!!!!!!!!!!!
ইসরাত
ধন্যবাদ
জরুরী লেখা।
facebook
ধন্যবাদ
অনেক পরে এই জরূরী লেখাটা পড়লাম। এরকম অনেক ভুল তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে কিছু জ্ঞানপাপীর প্রসব যন্ত্রণার বেগের কারণে। আইন করে তো আর ঠেকানো যাবে না, সেটা উচিৎও নয়। সঠিক তথ্য সহজ ভাষায় মানুষের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা না করতে পারলে এইসব অকালকুষ্মান্ডদের ক্ষণজন্মা লেখার (মুহূর্তের প্রেরণায় লেখা গুলো জন্মায় কিনা!) স্রোতে হাধা দেয়া কঠিন। পাঠকের একটা বড় অংশ যখন প্রতিবাদ করবে, তখনই শুধু এরা সোজা হবে। আর সে জন্য দরকার যারা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় কাজ করছেন, তাঁদের এগিয়ে আসা - কিছুটা হলেও লেখা।
সময়োপযোগী লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ সজীব ভাই।
____________________________
ধন্যবাদ।
আমার মনে হয় এখানে লেখকদের শুধু দোষ দিলেও ব্যাপারটা কেমন জানি হয়। তারা হয়তো ভুল জিনিসই শিখেছেন, আর এই ভুলটাকেই সঠিক মন করছেন। ডিএনএ নিয়ে লেখাগুলোয় এত এত বিভ্রান্তিকর তথ্য দেখে মনে হচ্ছে তাদের কাছে বিষয়গুলি পরিষ্কারও না। এটা তাদের সঠিকভাবে শিক্ষা না পাওয়ারও ঝামেলা হতে পারে। সেইজন্য একটা মনিটরিং বোর্ড থাকা জরুরী, বা এসব লেখা এডিট হয়ে আসাটা।
তবে ভুল ধরানোর পরও এদের ঠিক করার কোন তাগাদা নাই- এই ব্যাপারটা অপরাধের পর্যায়ে পরে।
ভাবনাটা তো ঠিক-ই সজীব-ভাই কিন্তু মুস্কিল হচ্ছে, সেই যে রক্তকরবীতে অধ্যাপক বলেছিল, "যে অপরাধের শাস্তি দেবার কেউ নেই সেটা পাপ হতে পারে, কিন্তু অপরাধ নয়।" - বড্ড দামী কথা।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
দারুন কথা তো! আমি রক্তকরবী পড়িনাই। জানিও না কথাটার কথা!
জরুরী লেখা। তবে সাংবাদিকদের ভুল ধরিয়ে দিলে বেশির ভাগ সময়ই কোন লাভ হয় না। ফিডব্যাক গ্রহণের মানসিকতা এখনো সবার হয় নি।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ। তবে আমার মনে হয়না যারা বিজ্ঞান খবর নিয়ে লিখছেন তারা ঠিক সাংবাদিক। মানে সাংবাদিকতার পাঠ তাদের নেয়া আছে। আবার পত্রিকায় যারা লেখেন সবাই তো সাংবাদিক নন, তাইনা? তবে, বিজ্ঞান লেখা খবরগুলি কি সাংবাদিকতার অংশ হবে কিনা সেইটাও একটা প্রশ্ন।
বিজ্ঞান বিভাগে ভুতের গল্পও ছাপা হওয়া শুরু করেছে। মারা যাবার পর একে দেখা গেছে, এরকম কাহিনী নিয়ে চটকদার বই বের হতে পারে, তবে এরকম বিজ্ঞান পাতায় বর্জনীয়।
প্রিয়ডটকম/2013/10/11/35461.html
ব্যাখ্যাহীন বাস্তব ঘটনা- ফ্লাইট 401 এর অশরীরী দুই বৈমানিক!
ক'দিন পর, মানুষ এই লেখার রেফারেন্স দেবে, "ক্যান, মারা যাওয়া পাইলটদের যদি দেখা যায়, তাইলে আমাদের পূব পাড়ার মোকলেসরে ক্যান বাঁশ বাগানে দেখা যাইবো না?"
হেহে.. সবকিছুকেই এখন বিজ্ঞান বানাচ্ছে। যেমন, স্বাস্থ্য বলে বিভাগে যা থাকা উচিত তাকে বিজ্ঞান বলে চালায়। যেমন, ঘুম থেকে সকালে না উঠলে মেজাজ কেমন থাকবে, মেয়েদের চুলে সয়াবিন তেল মাখলে চুল ভাল থাকে কেন, ঘামের গন্ধ কেন ভালনা, চায়ের রঙ লাল না হয়ে হলুদ হলে দিন কেমন যাবে.. এইসব জিনিসপত্র।
স্বাস্থ্য কে বিজ্ঞানের মধ্যে ঢোকানো ভালো না, তবে সেটা খুব মারাত্মক না।
তবে, এই যে মারা যাবার পরেও তাদের দেখা যাচ্ছে এই ধরনের হ্যালুসিনেসনে ভোগা লোকদের কাহিনী বিজ্ঞান পাতায় কিভাবে আসে? এই টাইপের অমীমাংসিত রহস্য বিজ্ঞান না। এরকমটা হলে, পুরোনো জমিদার বাড়িতে রাতের বেলায় বাইজীর নূপুরের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে -এসব জিনিসও এরা কদিন পর বিজ্ঞান বলে প্রচার শুরু করবে।
পাইলটের ভুতের গল্প আর বাইজীর ভুতের গল্প আদতে একই, খালি দেশ আলাদা। বিদেশের ভুতের গল্প, বাংলাদেশে বিজ্ঞান পাতায় চলে আসছে! বিদেশি বইতে লেখা থাকলেই সেটা সত্যি না -এই বোধ আমাদের সবার মাঝে আসেনি।
বিজ্ঞানের পাতায় যদি কুসংস্কার প্রচার শুরু হয় তাহলে আর বাকি থাকলো কি?
এইমাত্র আবার দেখে এলাম খবরটা, ১০৫৪ বার ফেসবুকে শেয়ার হয়েছে। মানুষ, OMG! , এটা কি এখন ও দেখা যায় ??? এসব কমেন্ট করছে
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই জরুরি লেখাটা লেখার জন্য।
শুভেচ্ছা
খাড়ান, প্রিয়'র পদার্থবিজ্ঞান সংক্রান্ত লেখাগুলারে বিশ্লেষণ শুরু করতাছি
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লিখে ফেলুন।
অপেক্ষায় থাকলাম
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
বেশ ভালো একটা লেখার (আর প্রয়োজনীয় জায়গায় প্যাঁদানীর) জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
____________________________
ভালো লিখেছেন। কিন্তু টনক নড়বে কি? শুধু প্রিয় ডট কমে, আরো কিছু অনলাইন পত্রিকায় এই রকম ভ্রান্তিপূর্ণ লেখা দেখি। খুব বিরক্ত লাগে, কিন্তু কী করা যায় এট প্রতিরোধে?
-এস এম নিয়াজ মাওলা
আগের ভুল না শোধরালেও তারা বিজ্ঞান খবরের ধরনটা পরিবর্তন করে দিয়েছেন। এখন বেশিরভাগ খবরই ভুত-প্রেত, অদৃশ্যমানব, নিজেকে আকর্ষণীয় করবার বৈজ্ঞানিক উপায় এইসব নিয়ে।
নতুন মন্তব্য করুন