বিটি বেগুন- বাংলাদেশে চাষাবাদে অনুমোদিত প্রথম জিএম উদ্ভিদ: অপপ্রচারণা, সমালোচনা এবং কিছু জবাব

সজীব ওসমান এর ছবি
লিখেছেন সজীব ওসমান (তারিখ: মঙ্গল, ২৯/১০/২০১৩ - ৫:৩৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(লেখাটি পরিমার্জন করা হয়েছে নতুনপ্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে)

ভূমিকা

গত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের কৃষির জন্য একটা বিশেষ দিন। ২৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার জিএমও বা জিনেটিকালি মডিফাইড অর্গানিজম হিসেবে একধরনের বেগুন (বিটি বেগুন) কে বাংলাদেশে চাষের অনুমতি দিল। কিন্তু এর আগে এবং পরে কিছু মহল থেকে চরম বিরোধিতা এবং প্রতিবাদ আসতে শুরু করল। বিশেষ করে প্রাকৃতিক কৃষি ব্যবস্থার সমর্থনের যেসব এনজিও বাংলাদেশে আছে তাদের কাছ থেকে। নতুন জিনিস গ্রহণ করতে দ্বিধা মানুষের সবসময়েই থাকে। আবার নতুন জিনিস যাচাইও করে নেয়া উচিত। কিন্তু জিএমও কি বা বিটি বেগুন কি সেটা না জেনে বা বুঝে বা নিজেদের লাভের জন্য কোন এনজিও'র প্রোপাগান্ডা প্রচারে কিছু মানুষ ভুলভাবে সমালোচনা করছেন, মিথ্যা বলছেন। পুরো জিএমও পদ্ধতিটিরই সমালোচনা করছেন এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। আমি এখানে চেষ্টা করছি কিছু প্রশ্নের উত্তর আমার মত করে দিতে যাতে ব্যাপারগুলো পরিষ্কার হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

যেসব খবর প্রচার হচ্ছে

সরকার কর্তৃক বিটি বেগুনের অনুমোদন লাভ নিয়ে একেকটি পত্রিকার খবর একেকভাবে এসেছে। দুই ধরনের উদাহরণ একটু দেখে নিতে পারেন নিচের লিংক থেকে:

১। স্বাগত জানানো
ডেইলি স্টার

২। বিরোধিতা করা
বাংলানিউজ২৪

আবার বিটি বেগুন নিয়ে সাধারন আলোচনা (বেশিরভাগই বিটির সমালোচনা, দুএকটি সমালোচনার সমালোচনা) করতে গিয়ে কিছু খবর উঠে এসেছে যার বেশিরভাগই বায়াস্ড মনে হয়েছে। যেমন:

১। মুক্তকথা

২। বিডিনিউজ২৪

৩। সকালের খবর

৪। জোবায়ের আল মাহমুদ

৫। ফরিদা আখতার (ফরহাদ মাজহার সাহেব আরও আগে একটি কলাম লিখেছেন কোন ব্লগ এ যা এখন খুঁজে পাচ্ছিনা। তবে ফরিদা আখতার এর লেখার সুরেই লেখা।)

৬। আমার ব্লগ

উপরের যতগুলি লেখার উদাহরণ দিলাম তার প্রায় সবগুলিই (শেষেরটা বাদে) বৈজ্ঞানিক তথ্যে ইচ্ছাকৃত বা জানতে না চেয়ে ভুল বা মিথ্যা প্রচারের উদাহরণ। আমি এই লেখায় মূলতঃ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখার চেষ্টা করছি।

বিটি বেগুন কী?

প্রশ্নোত্তরে যাওয়ার আগে আমি একটু বিটি বেগুন কি সেটা ছোট করে বলে নেই। নামটি এসেছে একধরনের ব্যাকটেরিয়া থেকে- Bacillus thuringiensis (BT)। এই ব্যাকটেরিয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ গুণ আছে। ব্যাকটেরিয়াগুলি একধরনের বিষ (Cry প্রোটিন) তৈরি করে যা প্রায় ৪ টি বর্গের পোকাকে মেরে ফেলতে পারে। মানে পোকারা এই ব্যাকটেরিয়া খেলে মারা যাবে। এই জিনটিকে নিয়ে উদ্ভিদের ডিএনএ'র সঙ্গে যুক্ত করে দিলে উদ্ভিদটিও এই প্রোটিন বা বিষটি তৈরি করবে। ফলে উদ্ভিদের কোন অংশ যদি পোকা খেতে আসে তবে সেটা মারা যাবে। কয়েকধরনের Cry প্রোটিন তৈরি করতে পারে B. thuringiensis। তারমধ্যে Cry1A.105, CryIAb, CryIF, Cry2Ab, Cry3Bb1, Cry34Ab1, Cry35Ab1, mCry3A, and VIP ইত্যাদি জিন তুলা এবং ভূট্টার জিনেটিক উঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহৃত হয়েছে এবং এখনও এসব শস্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত হয়। এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে রাখি। Cry প্রোটিন গ্রহণ করার জন্য নির্দিষ্ট রিসেপ্টর বা গ্রাহক থাকে পোকার অন্ত্রে, কিন্তু মানুষের এই রিসেপ্টর নাই। তাই প্রোটিনটি শুধু পোকার ক্ষতি করার কথা, মানুষের নয়।

বিটি বেগুনের কিছু বৈজ্ঞানিক দিক নিয়ে জানতে চাইলে রায়হান মাহবুব এর এই লেখাটা পড়তে পারেন।

জিনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যাপারটা এই ছবিটা থেকে দেখে নিন।

বিস্তারিত বর্ণনা করছিনা। কিন্তু ছোট করে তুলনা দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি। মনে করেন বিটি ব্যাকটেরিয়া একটা বাইসাইকেল যার একটি হর্ন (বিটি জিন) আছে, টিংটিং করে বাজে। তাহলে একজন কারিগর হর্নটি খুলে নিতে পারেন তার টেকনোলজি (জিনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং) দিয়ে। এখন কারিগর সাহেব আবার ট্রাকও তৈরি করতে পারেন। ট্রাকটা হল এখানে সাধারন বেগুন (বা সাধারন শস্য)। তাহলে কারিগর যদি সাইকেলের হর্নটি নিয়ে সেটা লাগিয়ে একটা নতুন ট্রাক বানান তবে সেই ট্রাকটিকে আমরা বলব বিটি বেগুন (বা জিএম শস্য)।

এবার বিটি জিন ছাড়া প্রাকৃতিক বাদাম গাছ (উপরে) এবং বিটি জিন সহ জিএম বাদাম গাছের (নিচে) পোকা আক্রমণের পার্থক্য দেখে নিন এই ছবি থেকে।

বিটি-উদ্ভিদকে পৃথিবীর অনেকগুলি দেশে ইতিমধ্যেই সফলভাবে চাষ করা হয়েছে। প্রথমবারের মত তামাক উদ্ভিদকে পরিবর্তিত করা হয়েছিল Cry জিন দিয়ে ১৯৮৫ সালে। কিন্তু সেটা বাজারজাতের জন্য নয়, পরীক্ষার জন্য। দশ বছর পরে ১৯৯৫ সালে প্রথম আলুকে এভাবে পরিবর্তিত করা হয় যা বাজারজাতও করা হয়, কিন্তু ২০০১ সালে চাষ বন্ধ করে দেয়া হয় পর্যাপ্ত চাহিদা না থাকার জন্য। স্বাস্থ্যগত কোন ক্ষতির কোন রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তারপরে তুলা এবং ভূট্টায় বেশ কয়েকটি জিন ঢুকিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে যার মধ্যে কয়েকটি এখন চাষ করা হচ্ছে পৃথিবীজুড়ে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলিতেও (ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার) এসব জিনেটিকালি পরিবর্তিত উদ্ভিদ চাষ করা হচ্ছে আগে থেকেই। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক বেগুন জাতগুলির ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ শস্য উৎপাদন কম হয় শুধুমাত্র পোকার জন্য। তাই বিটি বেগুনের গুরুত্বটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।

কিন্তু যেহেতু নতুন বিষয় এবং আমাদের খাবারের বিষয় তাই এই কৃত্রিমভাবে পরিবর্তিত উদ্ভিদ নিয়ে সংশয় থেকে অনেক মানুষই বাংলাদেশে প্রতিবাদ করছেন। কিছু প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক তথ্য এসব জিএম-বিরোধী মানুষকে সাহায্যও করেছে, যার প্রায় সবগুলিই বৈজ্ঞানিক মাপকাঠিতে যথার্থ নয়। পরবর্তী অংশে আমি একটা পরীক্ষার কথা উল্লেখও করেছি।

এবার আসি প্রশ্নোত্তরে।

প্রশ্নোত্তর

১।

সমালোচনা:
জিএম খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বিটি-বেগুন মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতি করে (বাংলানিউজ২৪ এর রিপোর্ট অনুযায়ী)

উত্তর:
ভুল। এখন পর্যন্ত যতগুলি অনুমোদিত জিএম খাদ্যশস্যের স্বাস্থ্যহাণীর রিপোর্ট এসেছে তার কোনটাই পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয়নাই।

একটি ফরাসী পরীক্ষা নিয়ে বারবার উদাহরণ হিসেবে দিচ্ছেন জিএম-বিরোধী লোকজন বাংলাদেশে। পরীক্ষাটা নিয়ে একটু বলি। প্রথমেই, পরীক্ষাটিতে Cry জিন দিয়ে পরিবর্তিত ভূট্টা (মানে বিটি ভূট্টা) নিয়ে গবেষণা করেনি সেরালিনি ল্যাব। করেছে আগাছানাশক প্রতিরোধী একধরনের জিনেটিকালি মডিফাইড ভূট্টা দিয়ে। এই ভূট্টাগুলি আগাছানাশক ব্যবহার করলেও বেঁচে থাকে, আগাছা মারা যায়। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী সেরালিনির দল একধরনের ইঁদুরকে এই ভূট্টা খাইয়েছেন ২ বছর ধরে এবং দেখেছেন ইঁদুরগুলিতে প্রায় ৭০% এর টিউমার হচ্ছে।

কিন্তু ঝামেলা হল সেরালিনি যেই পরীক্ষাটা করেছেন তাতে অনেকগুলি ফাঁক ছিল। যেমন যেই ইঁদুরে (স্ট্রেইনে) পরীক্ষা করেছেন সেই ইঁদুরে নাকি তাদের সাধারন খাবারের কোন পরিবর্তন হলেই টিউমার হতে দেখা যায়। আবার সেরালিনি বিখ্যাত এন্টি-জিএম ব্যক্তি। তার সঙ্গীসাথীও আছেন কিছু।

কিন্তু এখানে দেখুন তার পরীক্ষা নিয়ে কেকে কি ধরনের সমালোচনা করেছেন:

১। তবে এখানে দেখুন সেরালিনির পরীক্ষাটি সম্বন্ধে তাবৎ বিজ্ঞানসমাজ কি বলছেন। পরীক্ষাটির স্বচ্ছতার অভাব, স্যাম্পল বাছাইয়ে কারচুপি, আগে থেকে ফলাফল ধরে নিয়ে সেই অনুযায়ী পরীক্ষার নকশা করা ইত্যাদি অভিযোগ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

২। পরীক্ষার ভুলগুলির এই লেখাটিও পড়ে নিতে পারেন।

৩। এমনকি যেই দেশে গবেষণাটি হওয়ার দাবী করা হয়েছে সেই খোদ France এর পাবলিক গবেষণাকেন্দ্র Institut National de la Recherche Agronomique (INRA) এর প্রেসিডেন্ট Francois Houllier সমালোচনা করেছেন এই পরীক্ষার।

৪। অবশেষে গত বছরের শেষে যেই জার্নালে লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল তারা কয়েকবার বিভিন্ন বিজ্ঞানীকে দিয়ে লেখাটি রিভিউ করে অবশেষে ভুয়া উপাধি দিয়ে নিজেদের পত্রিকা থেকে তুলে নিয়েছে নিবন্ধটি।

আবার জিএম মাত্রেই খারাপ এটা কোন কথা হতে পারেনা। যখন পৃথিবীতে প্রথম টিকাদান শুরু হয়েছিল তখন কিছু মানুষ বিরোধীতা করেছিলেন। এখনও আমেরিকা এবং অন্য কিছু দেশে কেউ কেউ এটা প্রচার করে যে শিশুকে টিকা দিলে তার অটিজম রোগ হয়। এসব মানুষের কথা শুনে টিকা উদ্ভাবন এবং ব্যবহার না করলে পৃথিবীজুড়ে কোটিখানেক শিশু এতদিনে মারা যেত। গণহারে জিএম খাবারের বিরোধীতা একেবারেই এই ঘটনার সমতূল্য।

২।

সমালোচনা:
অন্য জীবের জিনিস আমাদের দেহে কৃত্রিমভাবে ঢুকিয়ে দিলে মারাত্মক ক্ষতি করে আমাদের।

উত্তর:
না করেনা সবক্ষেত্রে। আপনি যেই টিকা দিচ্ছেন নিজের শিশুকে তাদের মধ্যে প্রায় সবগুলিই পরিবর্তিত জীবাণু বা জীবাণুর অংশ। এই টিকা আপনার শিশুকে বাঁচিয়ে রাখছে বিভিন্ন রোগ হওয়া থেকে।

আবার মানুষ কৃত্রিমভাবে অনেককিছু তৈরি করে এবং খায়। যেমন, পৃথিবীর বেশিরভাগ ঔষধই কৃত্রিমভাবে তৈরি করা। এরা আমাদের ভয়াবহ রোগ থেকে বাঁচায়। এসব ঔষধ তৈরির সময় এতগুলা প্যারামিটার পরীক্ষা করে আসতে হয়যে কোন ধরনের ভুল থাকার অবকাশ যেন না থাকে তার ব্যবস্থা করেন বিজ্ঞানীরা। জিএম খাবার যখন বাজারজাত করা হয় তখনও একই কাজ করা হয়। বরং বলা যায়, আপনি প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত কোন বিশেষ খাবার বহুদিন ধরে খেলেও স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকতে পারে।

ফরহাদ মাজহার এবং ফরিদা আখতার তাদের লেখায় বার বার বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল তথ্য দিয়ে এসেছেন। নিজেরা বিজ্ঞানী নন বলেই হয়তো। কিন্তু তাহলে কি এরকম লেখা থেকে সেজন্য বিরত থাকা উচিত ছিলনা?

যেমন ফরিদা আখতার লিখছেন-
যেই বেগুন পোকায় খায়না সেটা মানুষ খাবে কিভাবে?

হাস্যকর যুক্তি। এমন অনেক জিনিসই পোকা খেয়ে হজম করতে পারে যেটা মানুষ পারেনা। ফরিদা আখতার নিজে ঘাস খেয়ে হজম করার চেষ্টা করুন তো? পারবেন না। কিন্তু একটি গরু বা ছাগল ঠিকই পারবে। কারন তাদের আছে রুমেন। ফরিদা আখতারের নেই। আবার মানুষ যেমন মাংস খেতে পারে তেমন করে গরুকে মাংস খাওয়ানোর চেষ্টা করেও দেখতে পারেন তিনি। গরুর পিছনের পায়ের লাথি খাবার তুমুল সম্ভাবনা!

আবার মুক্তকথা বলে পত্রিকাটি কি লিখেছে দেখুন:

'বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিএমও ফসলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, জিএমও ফসলের অন্য জীব থেকে ঢোকানো জেনেটিক ইনফরমেশন মানুষের স্টমাক ও ইনটেস্টাইনের মাধ্যমে হজম হতে পারে না বা কখনো কখনো রক্তের মাধ্যমে সাধারণ ডিএনএর সঙ্গে মিশে যেতে পারে।'

বিজ্ঞানকে একবারে শিকেয় তুলে ছেড়েছেন এরা। আমরা যত খাবারই খাই তার প্রায় সবগুলির মধ্যেই আছে বিভিন্ন ধরনের ডিএনএ, যার মধ্যে আছে জিন। খাবার আমাদের পাকস্থলীতে পরিপাক হয়। ডিএনএ ভেঙে যায়। সেজন্য খাদ্যগ্রহণের ফলে এধরনের ডিএনএ আমাদের ডিএনএ'র সাথে মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা শূণ্য।

৩।

সমালোচনা:
বিটি বেগুন যকৃত নষ্ট করে ফেলে।

উত্তর:
ভুল। যেই প্রোটিনটা সম্বন্ধে যকৃতে প্রভাব ফেলার কথা জানা গেছে অল্প কিছু রিপোর্টে সেটা হল Cry1Ab। তাও যকৃতের ক্ষতি হয় যখন মাত্র কীটনাশক সহকারে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশের Bangladesh Agricultural Research Institute (Bari) বা বারি'র বিজ্ঞানীরা Cry1Ab মোটেই ব্যবহার করছেন না। বরং Cry1Ac জিন ব্যবহার করছেন যা পৃথিবীজুড়ে কয়েকটি শস্যের জন্য ইতিমধ্যেই পরীক্ষিতভাবে ব্যবহৃত। The National Committee on Biosafety (NCB) সেটা নিশ্চিত করেছেন।

এভাবে মিথ্যা খবর প্রচার করা দেশের একমাত্র সরকারি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রকে ক্ষতির সম্মুখীন করারই সামিল।

৪।

সমালোচনা:
জিএম উদ্ভিদ বীজের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন করে।

উত্তর:
না, করেনা যদি আমাদের নিজেদের দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান এটা উদ্ভাবন করে থাকে।

৩ নম্বর পয়েন্টে বললাম যে এই বিটি বেগুন তৈরির কৃতিত্ব বারি'র বিজ্ঞানীদের। সহায়তা নিয়ে থাকতে পারেন বিশ্বের যেকোন গবেষণাগার থেকে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে বিটি-উদ্ভিদের চালানকারী প্রতিষ্ঠান মনসান্টো (পক্ষান্তরে মাহিকো কোম্পানি) বাংলাদেশের বিটি বেগুন তৈরি করেনি। যারা সমালোচনা করছেন তাদের কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে আপনারা কিভাবে জানেন যে এটা মনসান্টোর পেটেন্ট। কোন উত্তর এখনও পাইনি। 'জিনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং' জিনিসটার যে পেটেন্ট করা যায়না সেটা এরা জানেনা। বারি করেছে আমাদের দেশের বেগুনের উপর পরীক্ষা। মনসান্টো'র ভারতীয় বেগুনের উপর পরীক্ষা নয়।

কিন্তু জেনেছি যে মনসান্টো মূল বিটি জিন এর পেটেন্টিং করেছে। এধরনের পেটেন্টিং আমার মতে কখনই উচিত নয়। জিন কখনও কোন পেটেন্ট এর আওতায়া আসা উচিত না। কিছুদিন আগে আমেরিকায় মানব জিন পেটেন্টের মামলায় পেটেন্টের আবেদনকারীরা হেরে গেছে। মানে মানব জিন কখনও পেটেন্ট করা যাবেনা। জীবজগতে সব জীবের ক্ষেত্রেই এটা হওয়া উচিত। তবে এইখানে একটি জিনিস এখন একটু বিবেচনা করতে হবে। বারি এটা ব্যবহার করে বীজ উৎপাদন করলে বারি'কে কিছু পয়সা মনসান্টোকে দিতে হতে পারে। কিন্তু প্রোডাক্ট এর স্বত্ত্ব মনসান্টো'র কিনা সেটা জানানো হয়নাই কোন পক্ষ থেকেই। বীজের স্বত্ত্ব এককভাবে কোম্পানিটির হলে খারাপ কথা। বারি'র কাছ থেকে এইবিষয়ে জানতে পারিনি। জানলে আপডেট করে দেব।

যেসব দেশে জিএম খাবারের প্রতিবাদে জিএম নিষিদ্ধ হয়েছে তার সবগুলিই হয়েছে স্বত্ত্ব দ্বন্দের জ্নয। (আমাকে কেউ একজন স্বাস্থ্যঝুঁকির কারনে কোন জায়গায় জিএম নিষিদ্ধ হয়েছে এমন উদাহরণের যথাযোগ্য খবর দিতে পারলে খুশি হব।) স্বত্ব নিয়ে চিন্তাটা এখানে তাই গুরত্বপূর্ণ। বাংলাদেশী কোন উদ্ভিদ বা ফসলের বীজের স্বত্ত্ব পুরোপুরি বাংলাদেশ সরকারের হওয়া উচিত। সরকারি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারি (BARI) এই স্বত্ত্ব অনুযায়ী কাজ করতে পারে। আর বীজ ব্যবহারের অধিকার কৃষকের নিরঙ্কুশ হওয়াটাও জরুরী। কিন্তু বিটি'র ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এখনও পরিষ্কার নয়। এখন পর্যন্ত সবকিছুই অন্যসব তথ্যের মত গোঁজামিল হিসেবে পাচ্ছি বিরোধী চক্রের কাছ থেকে। যেহেতু মূল চারটি বেগুনের গোত্র বাংলাদেশী তাই ধারনা করছি স্বত্ত্ব বাংলাদেশ সরকারেরই থাকছে। আবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কে এম নাসির উদ্দিন বলেছেন:

'বিটি বেগুনের উদ্ভাবন বিষয়ে ড. নাসির বলেন, ২০০০ সালে ভারতের মহারাষ্ট্র হাইব্রিড সীড্স কোম্পানি (মাহিকো) সর্বপ্রথম তাদের বেগুনের হাইব্রিড তৈরির প্রোগ্রামের আওতায় ক্রাই ওয়ান এসি জিন ট্রান্সফারের মাধ্যমে বিটি বেগুন উদ্ভাবন করে। মাহিকো কোম্পানি বিটি বেগুন টেকনোলোজি ভারতের তামিল নাডু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কইম্বাটর ও কৃষি বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে দান করেছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল মাহিকো কোম্পানি শর্তবিহীনভাবে এই বিটি বেগুন টেকনোলোজি বাংলাদেশ ও ফিলিপাইন এর সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে দান করেছে।'

কিন্তু তারপরও, গবেষণার ক্ষেত্রে যদি মনসান্টোর সাথে কোন ধরনের স্বত্ত্বের চুক্তি হয়ে থাকে তবে সেটা সামনে আসা জরুরী। যারা প্রতিবাদ করছেন তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির মিথ্যাখবর প্রচার না করে এই স্বত্ত্বের বিষয়টিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া উচিত বলেই মনে করি। বারি যতদিন না জানাচ্ছে ততদিন এটা ধোঁয়াশাই থাকবে।

৫।

সমালোচনা:
বিটি বেগুন খেয়ে ভাল সব পোকামাকড় মরে যাবে।

উত্তর:
সব পোকা মরবে না। ৪ টি বর্গের পোকা মরবে, তবে শুধুমাত্র বেগুন গাছের কোন অংশ খেলে। না খেলে মরবেনা।

ব্যাপারটা একটু অন্য দিক থেকে চিন্তা করার অনুরোধ করছি। শস্যক্ষেতে পোকা মারতে যখন আপনি কীটনাশক ব্যবহার করেন তখন নির্বিশেষে প্রায় সব পোকা মারা যায়। সেই তুলনায় বিটি বেগুনতো বরঞ্চ ভাল। এই উদ্ভিদ যেসব পোকা খাবেনা তাদের কোনই ক্ষতি হবেনা। বেগুনের প্রচুর উৎপাদনের এর চেয়ে ভাল উপায় আর কি হতে পারে? প্রাকৃতিকভাবে আমাদের দেশে এমন বেগুন এখনও উৎপাদন সম্ভব নয় যা বিটি বেগুনের চেয়ে বেশি ফলনক্ষম (পোকাহীন অর্থে)। আগেই বলেছি, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক বেগুন জাতগুলির ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ শস্য উৎপাদন কম হয় শুধুমাত্র পোকার জন্য। আবার এই পদ্ধতি যেকোন ধরনের বেগুনেই করা যায়। বারি ৪ ধরনের বাংলাদেশি বেগুনকে পোকাবিহীন উৎপাদনক্ষম হিসেবে তৈরি করেছে।

যেমন, সম্প্রতি বিটি চারা বিতরণের সময় বিরি গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক নাকি বলেছেন (এই পত্রিকার খবর নিয়ে খুব বেশি শিওর না, তবে কিছু বিটি বিরোধী বন্ধুও একই কথা বলেছেন) যে এই বেগুন কয়েকটি জাতের পোকা মারতে পারেনা। সেটা পরিবেশবাদীরা জোরেশোরে প্রচারও করছেন। তাহলে নিজেদের আগের দাবীর বিপক্ষে যাচ্ছে এই দাবী। এবং এটাই বৈজ্ঞানিকভাবে সঠিক ছিল সেটা বুঝতেই পারছেন।

৬।

সমালোচনা:
বাংলাদেশকে পশ্চিমারা এবং বহুজাগতিক কোম্পানি তাদের ব্যবসার পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করছে।

উত্তর:
ভুয়া কথা। এমন কথা বাংলাদেশের বহু বাম ঘরানার সংগঠন বলে থাকে। (ভন্ড ঘরানার এনজিও, যেমন ফরহাদ মাজহার এবং তার সঙ্গীর এনজিও এদিক দিয়ে সবচেয়ে সোচ্চার) একে আমার ফাঁকা বুলি ছাড়া কিছুই মনে হয়না। কেন বলছি।

এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত পৃথিবীর সবচেয়ে কার্যকর ঔষধগুলির প্রায় সবগুলিই পশ্চিমা ঔষধ কোম্পানিরাই উদ্ভাবন করেছেন। এদের পরীক্ষা প্রায় সবগুলিই পশ্চিমা দেশেই করেছেন, পশ্চিমা মানুষদের উপরেই করেছেন। দুয়েকটা ঘটনা আফ্রিকায় বা এমনকি আমাদের দেশেও শোনা যায় যে 'ঔষধ কোম্পানিগুলি গোপনে এসব অনুন্নত দেশের মানুষদেরকে ব্যবহার করছে।' কিন্তু একটি ঔষধ উদ্ভাবন থেকে শুরু করে মানুষে পরীক্ষিত হয়ে বাজারে আসতে এতগুলি স্বচ্ছতার মানদন্ড পাশ করে আসতে হয় যে এমনসব গোপন পরীক্ষার জন্য অর্থ খরচ ঔষধ কোম্পানিগুলি না করারই কথা। আর বাংলাদেশের বিটি বেগুন বারি'র তৈরি, বহুজাগতিক কোম্পানির নয়। পরীক্ষা করলে আমাদের দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানই করবে। এতেও যদি সমস্যা থাকে কারও তবে বলার কিছুই নাই। তবে হ্যা, এতে বাইরের কোম্পানির সুবিধা হতে পারে এই দিক দিয়ে যে তারা এই ফলাফল কে ব্যবহার করতে পারেন।

৭।

সমালোচনা:
বিটি বেগুন আমাদের নিজেদের দেশের বেগুনের জাতকে কলুষিত করবে।

উত্তর:
পরাগায়নের মাধ্যমে বিটি বেগুনের সাথে দেশী জাত মিশে যেতে পারে। ২০০১ সালে আমেরিকার একটি পরীক্ষা দেখিয়েছিল যে নেটিভ বা নিজস্ব জাতের যব গাছে বিটি জিন ঢুকে গেছে। তবে পরে ২০০৫ সালে অবশ্য এই পরীক্ষা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এটা হওয়া সম্ভব।

এখানে আমার মন্তব্য হচ্ছে আপনি কতটুকু ছাড় দিতে চান পরিবেশের বিষয়গুলি নিয়ে সেটাই বিবেচনার বিষয়। যেমন, কেউ চীন ঘুরে এল এবং সেখানকার একটি বেগুন গাছ নিয়ে এসে বাড়ির কোণায় লাগিয়ে দিল। চীনের গাছটি প্রাকৃতিক। কিন্তু সেতো দেশী বেগুনকে কলুষিত করা শুরু করবে। বাংলাদেশের বহু শস্যের ক্ষেত্রে এটা হয়েছে বলে ধারনা করা যায়। এই কলুষিত হওয়াটা হয়েছে আমাদের অজান্তেই, কোন পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়াই। কিন্তু আমরা বিটি বেগুনের গুণাগুণ পরীক্ষা করা। এই বেগুণগুলি বাংলাদেশি জাত থেকেই নেয়া। শুধু একটা জিনে পার্থক্য প্রাকৃতিক উদ্ভিদ থেকে। তাই, কলুষিত যেটা করবে সেটা হল অন্য প্রাকৃতিক জাতেও নিজের বিটি জিনটা পাঠিয়ে দেবে। এটা ভাবতেই হবে যে দেশী বেগুনের বিশুদ্ধতা আপনি জেনেশুনেই পোকায় খাওয়া রাখতে চান? না জিনেটিকালি মডিফাইড পোকায় না খাওয়া গুণ দিয়ে কলুষিত করতে চান? আবার নতুন কোন শস্য আমদানীর জন্য বাংলাদেশে আরও সুসংগঠিত নিয়মনীতি থাকা উচিত। এমন কোন 'প্রাকৃতিক' উদ্ভিদই বিদেশ থেকে আসতে পারে যারা দেশী জাতের তুলনায় আগ্রাসী। জীববিজ্ঞানের ছাত্রমাত্রেই জানার কথা, প্রাকৃতিকভাবে ভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতির, যেমন বেগুনের বিভিন্ন প্রজাতির জেনোমের পার্থক্য, দেশী জাতে শুধু একটি জিন পরিবর্তন করা বিটি'র চেয়ে অনেকগুন বেশি হবে।

পরিশেষ:

অনুমোদন পাওয়ার পরও অভিযোগের কারনে বাংলাদেশে বিচার বিভাগ ৩ মাসের মধ্যে একটি স্বাস্থ্য রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে কোন একটি স্বাধীন বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানের দ্বারা। স্বাধীন প্রতিষ্ঠানটি বিদেশী। যাদের অভিযোগ তারা পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন, আবার এনজিও'র জন্য পশ্চিমা অর্থ সাহায্য আনছেন আর নিজের দেশে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রকে বিশ্বাস না করে পশ্চিমা প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরীক্ষার আবদার জানাচ্ছেন। তবে, রিপোর্টটা করাটা ভাল হবে। নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে যে আসলেই কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা নাই। বারি'র দ্বারা পরীক্ষাটা করা হলে সবচেয়ে খুশি হতাম।

তবে আমার লেখার মূল কারণ হল এটা বোঝানো যে, যদি আগে থেকেই না জেনে বা ইচ্ছাকৃত ভাবে একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠানের শুভ উদ্যোগকে এভাবে আক্রমণ করে বলেন যে 'আপনার যকৃত খারাপ হয়ে যাবে', 'স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর', 'সব পোকামাকড় মেরে ফেলবে' তবে যখন আপনাদের অভিযোগের ভিত্তিতে সকল পরীক্ষা পাশ করে বেগুনটি বাজারে আসার জন্য প্রস্তুত হবে (যদি করে) তখনও মানুষে এইসব মিথ্যা রিপোর্টের জন্য ভয় পাবে এই বেগুন চাষ করতে বা খেতে। ক্ষতিটা কার করছেন সেটা বুঝে করুন অনুগ্রহ করে।

সূত্র

বিভিন্ন গবেষণাপত্র, উইকিপিডিয়া, পত্রিকা যাদের প্রায় সবগুলির লিংকই মূল লেখায় দিয়ে দেয়া আছে।

কৃতজ্ঞতা

লিখতে উৎসাহ দিয়েছেন সচল হিমু। বিভিন্ন গ্রুপ, ব্লগ, পত্রিকার লেখায় আমার ভাবনার সমালোচনা বা পাল্টা যুক্তি (খোঁড়া হলেও) আমাকে আরও জানতে বাধ্য করেছে।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

বিটি-বেগুন বিরোধিতা করে ফরিদা আকতারের কিছু লেখা পড়েছিলাম পত্রিকায়। মূর্খতার অনন্য উদাহরণ ছিলো সেগুলো।

সজীব ওসমান এর ছবি

তাদের চেলা-চামুন্ডাদের অবস্থাও একইরকম

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যেই প্রোটিনটা সম্বন্ধে যকৃতে প্রভাব ফেলার কথা জানা গেছে অল্প কিছু রিপোর্টে সেটা হল Cry1Ab। তাও যকৃতের ক্ষতি হয় যখন মাত্র কীটনাশক সহকারে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশের Bangladesh Agricultural Research Institute (Bari) বা বারি'র বিজ্ঞানীরা Cry1Ac প্রোটিন ব্যবহার করছেন। পৃথিবীজুড়ে Cry1Ab ব্যবহার করা হয়না।

ঠিক বুঝলাম না। সারা দুনিয়ায় Cry1Ab ব্যবহার করা হয় না, কিন্তু বারি তা করছে। আবার Cry1Ab-এর সাথে কীটনাশক ব্যবহার করলে যকৃতের ক্ষতি হয়। এখন বিটি বেগুন চাষের সময় আমাদের কোন কৃষক ভাই যদি কীটনাশক ব্যবহার করে ফেলেন (ঐ ৪ বর্গ ছাড়া অন্যগুলোকে নাশ করতে) তাহলে তো যকৃতের ক্ষতি হবে। তাই না?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সজীব ওসমান এর ছবি

বারি করছেন Cry1Ac। Cry1Ab নয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দুঃখিত। c আর b-এর পার্থক্য খেয়াল করিনি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সজীব ওসমান এর ছবি

কনফিউজিং যেন না হয় তাই একটুখানি পরিষ্কার করে দিলাম লেখাটা।

সুবোধ অবোধ এর ছবি

ভাল্লাগল লেখা পড়ে। জানলাম অনেক কিছুই।
হাততালি
আমাদের সমস্যা হচ্ছে নতুন কিছু দেখলে বা শুনলেই আমাদের উপর জুজুর ভয় ভর করে!!

সজীব ওসমান এর ছবি

ধন্যবাদ। টিকা দেয়া নিয়েও একইরকম প্রতিক্রিয়া হয় কিছু মানুষের।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আমি নিজে এই বেগুনটির বেশ ভক্ত। কারনগুলি হলো এতে পোকা দেখা যায় না, এতে বিরক্তিকর বিচির পরিমান বেশ কম, এটা তুলনামূলক ভাবে সুস্বাদু। আরও একটা কারন অবশ্য আছে, এটা দামেও তুলনামূলকভাবে সস্তা।
ফরহাদ চাচার গার্লফ্রেন্ড ফরিদা আন্টি এই বেগুনের উপর বেজায় খাপ্পা(দুর্জনেরা বলে বেগুনের আকৃতিগত কারনে তিনি এটার উপর খাপ্পা), এটা জানার পর নির্দ্বিধায় এটা খেতে শুরু করেছিলাম। দুঃখের বিষয় বেশ কিছুদিন হলো বাজারে এটার দেখা মিলছে না।

সজীব ওসমান এর ছবি

শুধুমাত্র কৌতুহল থেকেই জিজ্ঞেস করছি, আপনি কি এই বেগুন ভারতে খেয়েছেন?

যদি তাই হয় তবে আপনাকে স্যাম্পল হিসেবে দেখাতে পারি যে বিটি বেগুন খেয়ে আব্দুল্লাহ এ.এম. এর কিছুই হয়নি খাইছে

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

জ্ঞাতসারে ভারতে এই বেগুন খাই নি। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক খেয়েছি, সুতরাং বাংলাদেশের জন্য স্যাম্পল হিসেবে আমাকে ব্যাবহার করতে পারেন অনায়াসে।

 মেঘলা মানুষ এর ছবি

আপনার এই লেখাটা না পড়লে জানতামই না এটা বারি'র কাজ, শোনা কথায় কানে আসছিল যে এটা বহুজাতিকডের নীলনক্সা।
ধন্যবাদ এরকম সময়োপযোগী একটা লেখার জন্য।

শুভেচ্ছা হাসি

সজীব ওসমান এর ছবি

শুভেচ্ছা

ছড়াবাজ এর ছবি

এ্যাত এ্যাত কথা শুনে,
খাবি খাই প্রতিদিন,
গুণে ভরা এ বেগুন,
পোকা নাকি মারে জিন!

জিন-পরী ভেবে ভেবে,
চার ঠ্যাঙে খায় ঘাস,
জিন বাদ, পরী চাই,
মন করে হাঁসফাস! চিন্তিত

জিন-গেলমান নিয়ে,
মাথা লাগে প্যাঁচ তাই,
সায়েন্স কি খায় নাকি,
মাথা-পেটে মাখে ভাই? চোখ টিপি

chhorabaz ডট ওয়র্ডপ্রেস ডট কম

সজীব ওসমান এর ছবি

দেঁতো হাসি

কড়িকাঠুরে এর ছবি

সচলে ঢুকেই আবার বিটি-বেগুন হো হো হো

এখন পড়ি।

সজীব ওসমান এর ছবি

হেহে.. বেগুনময় নেট

দিগন্ত এর ছবি

ভারতে বিটি বেগুন কিন্তু এখনও এপ্রুভড হয় নি। এই লেখাটা পড়তে পারেন। আমি বাকি লিখছি।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সজীব ওসমান এর ছবি

পড়েছিলাম। কিন্তু যতদূর জানি ভারতের বিরোধটা মূলত বিদেশী প্রতিষ্ঠানের দ্বারা বীজে স্বত্ত্ব নিয়েন্ত্রণ। স্বাস্থ্য ঝুঁকির কোন পরিষ্কার প্রমাণ কি ভারতে পাওয়া গিয়েছে? আমাদের ক্ষেত্রে কি এটা হচ্ছে?

বিরোধীরা ভারতের ব্যাপারটাকে বারবার উদাহরণ হিসেবে দেখাচ্ছে। কিন্তু সেখানে বিটি তুলা অনুমোদিত! একই কোম্পানির কাছ থেকে।

দিগন্ত এর ছবি

আপনার লেখা #৭ এর ইস্যুটাই ভারতে মুখ্য। সেই ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে কেস চলছে। এর নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিটি বেগুন চাষ বন্ধ। যেহেতু বিষয়টা পরীক্ষালব্ধ ফলের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত, আমার এই বিষয়ে কোনো আলাদা মতামত নেই। পরীক্ষা (ফিল্ড-ট্রায়াল) ও তার ফলাফল নিয়ে আদর্শগত মেরুকরণ দেখে আসছি গত এক দশক ধরে। অন্যদিকে বেগুন খুব একটা নিত্য-প্রয়োজনীয় সব্জী নয় যার জন্য রিস্ক নেওয়াটা যুক্তিসঙ্গত। আবার কার্পাসের মত অর্থকরী ফসলও নয় বেগুন। সেই কারণে আমি পরীক্ষা করে এক দশক পরে চাষের অনুমতি দেওয়া যুক্তিসঙ্গত মনে করছি।
একই সাথে অন্য একটা কেস ঝুলে আছে যার সাথে কিন্তু বিটি বেগুনের বিশেষ কোনো সম্পর্ক নেই। সেটা হল ভারতে বিটি বেগুন বানাতে গিয়ে মনসান্তো ভারতীয় আইন ভেঙেছে কিনা (বায়ো-পাইরেসি কেস) বুঝতেই পারছেন এই দুটো বিষয় এক নয়। প্রথমটা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ও বাংলাদেশে বিটি বেগুনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রভাবিত করে। দ্বিতীয়টা বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট নয়। বিটি-বিরোধীরা যখন ভারতের উদাহরণ দেয়, তখন আপনি এর মধ্যে কোনটার উদাহরণ দিচ্ছে সেটা আলাদা করে তবে আলোচনা করলে ভাল হয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সজীব ওসমান এর ছবি

এখানে কয়েকটা বিষয় এসেছে। বলছি-

১। বিটি বেগুনের উৎপাদন কেমন হয় এবং এতে মানুষ আগ্রহী হয় কিনা সেটা একটা কৃষি পরীক্ষা হতে পারে যে অভিজ্ঞতা অর্থকরী ফসল চাষের জন্য পরবর্তীতে ব্যবহার সম্ভব। দশ বছর পিছিয়ে দেয়া সেজন্য কৃষি এবং বিজ্ঞান গবেষণা দুইটার জন্যই ভালনা।

২। ভারতের মনসান্টো'র ব্যাপারটা বাংলাদেশে প্রযোজ্য নয়। কিন্তু বিরোধী মানুষেরা (ফরিদা আকতার গ্রুপ মূলত:) এই বিষয়টাকে ক্যাপিটালাইজ করছে এবং মনসান্টোর বীজের স্বত্ত্বাধিকার পাওয়া কে বাংলাদেশের সাথে ইচ্ছা করে গুলাচ্ছে। খবরের লিংকগুলি দেখলে বুঝবেন। সেজন্য এটা উল্লেখ করাটা খুবই জরুরী ছিল।

৩। একইরকম কারন দেখিয়ে বিটি তুলা চাষকেও পিছিয়ে দেয়া যায়!

দিগন্ত এর ছবি

১) পরীক্ষা হতে যতটা সময় লাগে সেটাই দরকার। বেগুনের সাথে অর্থকরী ফসল না মেশানো উচিত নয়। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বস্তু।
২) আমি দেখেছি সর্বত্রই খালি রেফারেন্স দেওয়া হচ্ছে এইটার। বিরক্তিকর।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

এরকম লেখা আর মন্তব্য আরো আসুক। জ্ঞানের জন্য মুক্ত আলোচনার কোন বিকল্প নেই।

____________________________

সজীব ওসমান এর ছবি

হুম। কিন্তু পত্রিকাগুলোয় যেই খবরগুলো এসেছে সেখানে বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলি নিয়ে যথেচ্ছ মিথ্যাচার হয়েছে। সেটাই আশংকার।

স্পর্শ এর ছবি

প্রশ্নঃ
১- ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিনের এই বিষক্রিয়ায় যে পোকাগুলো মারা যায় তারা ঠিক কিভাবে মরে? মানে তাদের শরীরের কোন অংশে এটা বিরুপ প্রতিক্রিয়া ঘটায়? নার্ভাস সিস্টেম, শ্বসন তন্ত্র, নাকি ক্যানসার হয়ে মরে? (গ্যামাক্সিন ব্যবহার করলে পোকামাকড় ক্যান্সার হয়ে মরতো বলে মনে পড়ে)

২- কতদিনের/বছরের মধ্যে ঐ চার প্রজাতির পোকামাকড়ের এই Cry1Ac রেসিস্ট্যান্ট স্ট্রেইন ইভল্ভ করবে বলে অনুমান করা হয়? পোকামাকড়ের ক্ষেত্রে তো বিবর্তন বেশ দ্রুত গতিতে হয় বলে শুনেছি। তখন আমরা এই জিন আনডু করবো কীভাবে? নাকি নতুন আরো ব্যাকটেরিয়া জিন ভরে দেবো?

৩- জেনেটিক্যালি মডিফাই করে, উচ্চফলনশীল বানানো, বা বিরূপ পরিবেশ বান্ধব করা, বা বিশেষ ভিটামিনএর পরিমান বাড়ানো, বা আমরুল, কলাঠাল টাইপ অদ্ভুত ফল উৎপাদন, এ ধরনের কিছু হতে দেখলে খারাপ লাগোবে মনে হয় না। কিন্তু ব্যাকটেরিয়া থেকে আমদানি করে কীটনাশক টাইপ জীন ঢুকিয়ে দেবার ব্যাপারটা নিয়ে একটু সতর্ক থাকাই ভালো। পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে অর্গানিক ব্যবস্থা আরো জোরদার করা নিয়ে কি কোনো গবেষণা হয় দেশে?

৪- টিকা দেবার বদলে যদি এমন একটা সমাধান প্রস্তাব করা যায় যে, নবজাতকদেরকে জেনেটিক্যালি মডিফাই করে, ডিএনএর মধ্যেই সবরকম রোগব্যাধীর অ্যান্টি জিন ভরে দেওয়া হবে। সেটা কেমন সমাধান হবে? জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে, কিন্তু যে জিনিসটা খাবো সেটাকে জেনেটিক্যালি মডিফাই না করে, কোনো সমাধান বের করা যায় না? যেমন বেগুন ক্ষেতে জেনেটিক্যালি মডিফাই করা বিশেষ ধরনের আগাছার চাষ করলাম। যেটা বেগুনের খাবারের ভাগেও টান দিলো না, আবার পোকামাকড়কেও বিনাশ করলো?


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সজীব ওসমান এর ছবি

ধন্যবাদ-

১। এই উত্তরটা দেয়া ছিল একটা লিংক এ। তবে উল্লেখ করা হয়তো দরকার ছিল। পোকার অন্ত্রে একধরনের রিসেপ্টরে বন্ধন তৈরি করে পোকাকে মেরে ফেলে যেই রিসেপ্টর মানুষের নাই। তাই মানুষের ক্ষতি হয়না।

২। এটা বলাটা মুশকিল। ভারতে একধরনের বিটি তুলার বিপক্ষে কিছু পোকা প্রতিরোধ গড়ে তোলার রিপোর্ট পাওয়া যায়। কিন্তু মনসান্টো সেই তুলা জাতকে অন্য বিটি জিন দিয়ে দ্রুত পরিবর্তন করে ফেলে।

৩। বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বারি কিছু গবেষণা করছে বলেই জানি। তবে মাত্রাটা কিরকম সেটা আমার খুব ভাল জানা নাই। ব্যাপার হল আমরা এমন অনেক ব্যাকটেরিয়া খাই যারা অন্য জীবের জন্য বিষ হিসেবে কাজ করে। আমাদের ক্ষতি হয়না। এবং এটা আমরা প্রাকৃতিকভাবেই করি।

৪। আইডিয়া ভাল, কিন্তু আগাছা চাষের ক্ষেত্রেও পরিবেশ বিনষ্টের একই অভিযোগ উঠবে। রাসায়নিক কীটনাশককে কেউকেউ এরচেয়ে বেশি নিরাপদ মনে করে হয়তো।

টুনটুনি পাখি এর ছবি

'' এই উত্তরটা দেয়া ছিল একটা লিংক এ। তবে উল্লেখ করা হয়তো দরকার ছিল। পোকার অন্ত্রে একধরনের রিসেপ্টরে বন্ধন তৈরি করে পোকাকে মেরে ফেলে যেই রিসেপ্টর মানুষের নাই। তাই মানুষের ক্ষতি হয়না''
এই তথ্যটা মূল লেখাতে দিয়ে দিলে খুব ভালো হত- কারণ মানুষের প্রচলিত ধারণা হলো, যা ছোটো কীটের মৃত্যু ঘটায় তা মানুষের কিছু হলেও ক্ষতি করে। এটা যে সব ক্ষেত্রে খাটে না সেটা বোঝা দরকার।
আরেকটি বিষয়, আজকের পৃথিবীতে তথ্য ছড়িয়ে দেয়া খুব সহজ কিন্তু সঠিক তথ্যটি চিনতে পারা সহজ কাজ না। কোনো তথ্য ক্রিটিকালি যাচাই না করে শুধুমাত্র বিশ্বাসভিত্তিক বিবেচনা অথবা নিজের পুর্ব-চিন্তায় প্রভাবিত হয়ে নতুন চিন্তার দ্বার রুদ্ধ করে রাখা এগিয়ে যাবার ক্ষেত্রে অনেক বড় অন্তরায়।

সজীব ওসমান এর ছবি

ধন্যবাদ। দিয়ে দিলাম।

হিমু এর ছবি

বেগুন চাষে যে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, সেই কীটনাশক কোম্পানিগুলোর সরাসরি আর্থিক স্বার্থ রয়েছে এই ধরনের বেগুনের জাতের বাণিজ্যিক ব্যবহার রোধ করায়। ভুঁইফোড় এনজিওগুলোর সাথে এদের কোনো লেনদেন আছে কি না, একটু খোঁজ করে দেখা দরকার।

সজীব ওসমান এর ছবি

হইতেও পারে। ফরহাদ মাজহার যেই জিনিসের সাথে জড়িত সেই জিনিসে ভেজাল, কারচুপি, ভন্ডামি, ব্যবসায়িক স্বার্থ এইসব থাকবে সেটা না বললেও চলে। তবে কেউ খোঁজ নিতে পারলে ভাল হয়।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

চলুক

এক লহমা এর ছবি

৫ তারা

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সজীব ওসমান এর ছবি

ধন্যবাদ

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

ভালো থাকবেন সজীব ওসমান।

------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

সজীব ওসমান এর ছবি

ধন্যবাদ

হিমু এর ছবি

মহাসচিব জানান, সব আনুষ্ঠিকতা মেনে সম্প্রতি বিটি বেগুনের চারটি জাত কৃষকদের সরবরাহ করা হয়েছে।

এ জাত থেকে বীজ সংগ্রহ করে কৃষকরা নিজেরাই চারা উৎপন্ন করতে পারবেন। এতে হাইব্রিড জাতের মতো বার বার বীজ কেনার বিড়ম্বনা নেই।

[সূত্র]

কয়েকদিন আগে দেখলাম বিটি-বেগুনের স্বত্বের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে অনেকেই বলছেন, এই বেগুন চাষ শুরু হলে বীজের জন্য কৃষককে বহুজাতিক কোম্পানির কাছে জিম্মি হয়ে পড়তে হবে। এর বিপরীতে বারি-র মহাপরিচালকের এই আশ্বাস কতোটুকু দলিল-সমর্থিত?

সজীব ওসমান এর ছবি

হুমম। দেখলাম। দাবী সত্যি হলে পরীক্ষার জন্য যেসব কৃষকদের চারা দেয়া হয়েছে তাদেরকে বছরখানেক পরে জিজ্ঞেস করা যায় তারা বীজ থেকে চারা তৈরি করতে পারছেন কিনা। আবার, যেসব পরীক্ষার কথা উল্লেখ করলেন পরিচালক তাদের ফলাফল, পদ্ধতিসহ জনসম্মুখে প্রকাশ করতে পারলে ভাল হত।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।