মহাকাশের কোন নক্ষত্রপুঞ্জের অপার্থিব সুন্দর ছবি অথবা প্লুটোর বুকের হৃৎচিহ্ন হাবল টেলিস্কোপ বা ডিসকভারি তুলে পাঠালে যেমন আমরা বিমোহিত হই, তেমনি অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে মানবকোষের কোন অতিসূক্ষাতিসূক্ষ অণুর সৌন্দর্য্যও আমাদের মুগ্ধ করে। গবেষণার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করতে গিয়ে বিভিন্ন অতিপ্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের মুখোমুখি হন বিজ্ঞানীরা প্রায়ই। আমরাও ব্যতিক্রম নই। এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি নামক একধরনের পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা জীবের প্রোটিন অণু বা অন্যান্য বৃহৎ অণুর গঠন নির্মান করে বোঝার চেষ্টা করি কিভাবে তারা কাজ করে। এই পদ্ধতিতে কাজ করতে গিয়ে আশাতীতভাবে বিভিন্ন অসাধারণ সুন্দর কেলাস বা ক্রিস্টালের ছবি আমরা অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে দেখতে পাই।
আমাদের কাজের জন্য যে জিনিসটা করতে হয় প্রথমে তা হল কোন জীবের নির্দিষ্ট প্রোটিনকে অতি উচ্চ ঘনত্বে আলাদা করে তাকে কেলাস তৈরি হতে দেয়া। কেলাস তৈরির নিয়ম একেবারেই লবনের কেলাস তৈরির মত। সমুদ্রের পানি যেমন বাষ্পায়িত হতে দিলে শেষে কিছু সাদা লবনের দানা পরে থাকে, প্রোটিনের কেলাস তৈরির প্রক্রিয়াটাও ঠিক সেরকম। তবে প্রোটিনের কেলাসগুলি হয় একেবারে সূক্ষ, খালিচোখে দেখা যায়না। আমি এখানে আমাদের গবেষণাগারে উৎপন্ন হওয়া কিছু প্রোটিনের কেলাসের ছবি দিয়ে দিচ্ছি উদাহরণ হিসেবে। একেকধরনের প্রোটিন একেকধরনের পরীক্ষাবস্থায় একেকরকম কেলাস তৈরি করে। দেখুন, কী বিচিত্র তাদের গড়ন, বর্ণ, আকৃতি।
ছবিগুলি লেইকা আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে তোলা হয়েছে। ২০ বা ৪০ গুণ বৃদ্ধি করে।
মূলতঃ এধরনের কেলাস প্রোটিনের গঠন নির্মানের জন্য আদর্শ, যাদের ধারালো কিনারা থাকে, আকারেও বড়। এরা খানিকটা লবনের দানার মত, তবে স্বচ্ছ
একটা ফোঁটায় অনেকগুলি কেলাস তৈরি হতে পারে
কেলাসগুলি এরকম 2B পেন্সিলের মত আকৃতির হতে পারে।
নীল কেলাসটির ভেতর দিয়ে কমলাটির অংশ দেখা যাচ্ছে
পপকর্ন কেলাস। এরা প্রোটিনের গঠন নির্মানের জন্য একেবারেই ভাল হওয়ার কথা নয়, কারন ধারালো কিনারা নাই এবং এক্স-রে প্রতিসরণ ভালভাবে হবেনা
ঝকমারি, এরা বিভিন্ন ধরনের লবনের কেলাস
প্রচ্ছদের ছবিটি সিডিং পদ্ধতিতে প্রোটিনের কেলাস করা দ্রবণের ফোঁটা থেকে তোলা হয়েছে। দেখতে কি ঠিক চুনির হারের মত নয়?!
মন্তব্য
এইগুলা কিতা দিলেন ভাই!
দারুণ।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
দারুণ! রং গুলো কি ফলসকালারিং নাকি এমন রঙিন ছবি-ই ওঠে?
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
না, রঙ যা থাকার সেটা প্রোটিনই তৈরি করে, এবং বিভিন্ন তলে আলো বিভিন্ন কোণে এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্যে বিচ্ছুরিত হয়ে এমন রঙ দেয়। আবার কখনও প্রোটিন যদি রঙিন কোন যৌগের সঙ্গে বন্ধন স্থাপন করে তথন কেলাস রঙও যৌগের রঙ ধারন করে।
দারুণ! সবগুলি খুব সুন্দর
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
বাহ! ক্যাপসুলগুলো পছন্দ হয়েছে বেশি।
খুব সুন্দর। অনুপ্রাণিত হলাম। আমার কাছে কিছু ছবি আছে সেগুলো নিয়ে একটি পোস্ট দিবো একদিন।
আপনারও কি কেলাসের ছবি? দিয়ে দিন।
না। সাইটোপ্লাজম, নিউক্লিয়াস আর দুষ্টামি করে তোলা নষ্ট এক্সপেরিমেন্টের ছবি।
শিগ্গিরি দেন!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ঠিক আছে।
দিয়া দ্যান। দেখি!
বাহ...
স্বয়ম
প্রচ্ছদের ছবিটি আসলেই সুন্দর মনে হয়েছিল যেন জোনাকি দিয়ে গাঁথা মালা
ফাহিমা দিলশাদ
আসলেই তো! জোনাকির মতই।
দারুণ, দারুণ।
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
অতীব সুন্দর। এইরকম প্যাঁচালো দেখতে একটা জিনিস যে এমন জ্যামিতিক কেলাস তৈরি করতে পারে প্রথমে বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হত।
হেহে।
বাহ!
নীড়পাতায় ছবিটা দেখে ধারণাই করতে পারি নাই কি নিয়ে লিখে রেখেছেন ভেতরে
যন্ত্রটির ছবি মূল লেখার সাথে জুড়ে দেয়া যায়?
কোন যন্ত্রের কথা বলছেন বুঝিনাই। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের?
হুমম।
কেলাসানুভূতিতে আঘাত পাইলাম
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনি সহীহ কেলাসমালিক নন।
দারুণতো!
অনুবীক্ষণুভূতিতে আঘাত পেলাম। এক্সরে ক্রিস্টালোগ্রাফি ট্যাগানো, আর ছবি দেয়া এমনি মাইক্রোস্কোপে তোলা।
মানি না, মানবো না।
এক্স-রে প্রতিসরণ যন্ত্রে তোলা ছবিতো এমন আসবেনা ভাইজান। পুরা প্রক্রিয়াটার নামই এক্সরে ক্রিষ্টালোগ্রাফি, অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে কেলাসগুলিকে পর্যবেক্ষণ করাটা এই প্রক্রিয়ার অংশ। তবে আপনার আঘাত প্রশমণের জন্য নিচে একটা ছবি দিলাম প্রতিসরণের, দেখেন :
নতুন মন্তব্য করুন