১৯৭৬ সালের রিচার্ড ডকিন্স, প্রায় যেসময়ে তার প্রথম বেস্ট সেলিং বইটি প্রকাশিত হয়েছিল।
রিচার্ড ডকিন্সের দ্য সেলফিশ জিন বইটির প্রকাশ বিজ্ঞানের জগতের এক অসাধারণ ঘটনা। এই বই যেমন বিবর্তন এবং জিন নিয়ে আমাদের প্রচলিত ধারণাকে নাড়া দিয়েছিল, তেমনি খুব সহজেই সাধারণ মানুষের কাছে বিবর্তনকে পৌঁছে দিয়েছিল। এই জনপ্রিয়তার কারনে বিবর্তনকে বুঝতে চেষ্টা করায় দ্বিধাবোধ করা সাধারণ মানুষও উৎসুক হয়ে ওঠেন 'ঘটনা কী' জানতে। তেমনি বইটিতে উল্লেখ করা জিন-কেন্দ্রিক বিবর্তনিক ধারণা নতুন নতুন গবেষণায় এবং বিজ্ঞানীদের নতুনভাবে চিন্তা করায় উৎসাহ দেয়। এই বই বহু ছাত্রছাত্রীকে বিবর্তন এবং জিন গবেষণায় অনুপ্রাণিত করে। ম্যাট রিডলি ছিলেন এমন একজন। তিনি যখন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র তখন প্রথম দ্য সেলফিশ জিন তার হাতে আসে এবং পড়ে তিনি বিহ্বল হয়ে যান। বইটি তাকে প্রভাবিত করে। যেমন করছে বিশ্বের বহু বহু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ মানুষকে, উৎসুক ছাত্রছাত্রীদেরকে গত ৪০ বছর ধরে। ৪০ বছর বয়সী বইটি নিয়ে নেচার পত্রিকায় লিখছেন বিজ্ঞান লেখক ম্যাট রিডলি। এই লেখাটি ২৭ জানুয়ারি প্রকাশিত। আমি অনুবাদ করেছি।
(অনুবাদটি কিছু কিছু জায়গায় একটু খটোমটো লেগেছে আমার কাছে। সেজন্য ক্ষমাপ্রার্থী। তবে যেকোন পরামর্শ সাদরে গৃহীত হবে।)
-----------------------------------------------------------------------------------------
বিজ্ঞানের বই সাধারনত দুইটি গোত্রের অন্তর্ভূক্ত ধরা যায় - যে বই সাধারন পাঠকের কথা চিন্তা করে রচিত যেন বিশাল সংখ্যক পাঠকের কাছে পৌঁছাতে পারে, এবং যে বই অন্যান্য বিজ্ঞানীদের সাধারণত সূত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করা একটি নির্দিষ্ট তত্ত্বকে সমর্থন দিতে উৎসাহিত করে। এই দুইগোত্রেরই অন্তর্ভূক্ত বই খুবই দূর্লভ - যেগুলি বিজ্ঞানকে যেমন পরিবর্তন করে দেয়, তেমনি সাধারন মানুষের কাছেও পৌঁছায়। চার্লস ডারউইনের অন দ্য অরিজিন অফ স্পেশিজ (১৮৫৯) ছিল এমন একটি বই। আর রিচার্ড ডকিন্সের দ্য সেলফিশ জিন (১৯৭৬) হল আরেকটি। ৪০ বছর আগে, প্রথম প্রকাশের পর থেকেই বইটি ছিল একটি বেস্ট সেলার এবং বৈজ্ঞানিক পট-পরিবর্তনকারী (গেইম-চেইঞ্জার)।
রিচার্ড ডকিন্স যে জিন-কেন্দ্রিক বিবর্তনের ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত এবং কেলাসিত করেছিলেন তার বইয়ে সেটা পরবর্তীতে বিবর্তনকে তত্ত্বায়িত করতে এবং বিজ্ঞান পামান্যচিত্রে ব্যবহারের মত করে সাধারনের কাছে পৌঁছে দিতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা রেখেছে। একটি পাখি বা একটি মৌমাছি তার জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে পর্যন্ত সন্তানকে ভূমিষ্ঠ করে - যেমনটি জুলিয়ান হাক্সলি এবং কনরাড লরেঞ্জ ভেবেছিলেন তেমনটি নিজেকে সাহায্য করতে বা অবশ্যই নিজের প্রজাতিকে বাঁচিয়ে রাখতে নয়; বরং (অসচেতনভাবে) তাদের জিন যেন প্রবাহিত হতে পারে এবং টিকে থাকে সেজন্য। যেসব জিন পাখি বা মৌমাছিকে বংশবিস্তার করতে সাহায্য করে তারা অন্য কিছু জিনের ত্যাগের বিনিময়ে টিকে থাকে। অন্য কোন ব্যাখ্যা এখানে খাটেনা, যদিও কেউ কেউ অন্যভাবেও গল্পটা বলা যায় বলে পরামর্শ দিয়েছেন।
ডকিন্সের মৌলিক চিন্তাগুলির মধ্যে সবচেয়ে চমৎকার ছিল যে ধারণা সেটা হল - কোন জিনের মধ্যে থাকা ডিজিটাল তথ্যগুলি কার্যত অমর এবং অবশ্যই নির্বাচনের প্রাথমিক একক। অন্যকোন এককই এরকম স্থায়িত্ব দেখাতে পারেনা - কোন ক্রোমোজম নয়, জীব নয়, গোত্র নয়, প্রজাতি নয়। এগুলি শুধু জিনগুলির ক্ষণিক বাহন - যেমন কোন নৌকাবাইচে নৌকাগুলি নাবিকদের দক্ষতার বাহন।
বইটি কিভাবে বিজ্ঞানকে পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাখ্যাও করেছে সেটার একটি উদাহরণ হিসেবে বলা চলে ডকিন্সের ছুড়ে দেয়া একটি মন্তব্য জিনবিজ্ঞানের একটি নতুন তত্ত্বের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া। বইটির তৃতীয় অধ্যায়ে রিচার্ড ডকিন্স সেসময়কার নব্যআবিষ্কৃত 'বাড়তি ডিএনএ' নিয়ে জটিল প্রশ্নটি তুলে ধরেছেন। বিজ্ঞানীরা তখন মাত্র বুঝতে শুরু করেছেন যে মানুষ প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ডিএনএর তুলনায় প্রায় ৩০ থেকে ৫০ গুন বেশি ডিএনএ বহন করে, কিছু প্রজাতি, যেমন লাঙফিশ আরও বেশি পরিমান বহন করে। এই আপাত বাড়তি ডিএনএ এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ডকিন্স লিখেছেন "স্বার্থপর (সেলফিশ) জিনের এই দিক থেকে তাদের নিজেদের মধ্যে কোন কূটকৌশল নেই। ডিএনএ'র সঠিক 'উদ্দেশ্য' হল টিকে থাকা, এর বেশিও না, কমও না। বাড়তি ডিএনএ'কে ব্যাখ্যা করার সবচেয়ে সরল উপায় হল এদেরকে পরজীবি হিসেবে চিন্তা করা।"
বইটি প্রকাশের চার বছর পর দুইজোড়া বিজ্ঞানী নেচার পত্রিকায় 'স্বার্থপর জিন' এর এই ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন (নেচার, ১৯৮০) এবং দুইটি দলই রিচার্ড ডকিন্সের প্রাপ্তিস্বীকার করেন এবং ডকিন্সকে তাদের অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে ডকিন্সের ধারণা আরও প্রতিষ্ঠালাভ করে যখন বাড়তি ডিএনএতে প্রতিক্রম ট্রান্সক্রিপ্টেজ (রিভার্স ট্রান্সক্রিপ্টেজ) খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিক্রম ট্রান্সক্রিপ্টেজ হল একধরনের ভাইরাস উৎসেচক যার কাজ নিজের অনুলিপি তৈরি করা এবং ছড়ানো, অনেকটা অদলবদলির (ট্রান্সপোজন) সরলিকৃত ভার্শন। এভাবে, ডকিন্সের ধারণাগুলি ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করেছিল কিসব কান্ড হচ্ছে জেনোমের ভেতরে, এমনকি জীবদেহগুলির মধ্যে, যদিও বইটি লেখা হয়েছিল ডিএনএ বিন্যাস খোঁজা ডালভাত হয়ে যাওয়ারও বহু বছর আগে।
এরপর অন্তর্ভূতঃ (ইনট্রোন), নিয়ন্ত্রক বিন্যাস (কন্ট্রোল সিকোয়েন্স), আরএনএ জিন, বিকল্প স্প্লাইসিং এবং আরও কিছু আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে জিনের গঠনের জটিলতা দিন দিন আমাদের কাছে বেড়েছে। কিন্তু, জিন যে বংশক্রমে প্রবাহিত তথ্যের একটি একক - ডকিন্স প্রণিত এই আবশ্যক ধারণাটি এখনও সত্য হিসেবে টিকে আছে।
দ্য সেলফিশ জিন বইটির ৩০তম বার্ষিকীতে ডকিন্সের বহু ভক্ত, যেমন লেখক ফিলিপ পুলম্যান এবং বিজ্ঞানী স্টিভেন পিংকার রিচার্ড ডকিন্স (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০০৬) বইটিতে ডকিন্সকে নিয়ে লেখেন। সম্পাদনা করেন তার প্রাক্তন ছাত্র এলান গ্রাফেন এবং ম্যাক রিডলি (আমার আত্মীয় নন)। এই সম্মাননায় দার্শনিক ড্যানিয়েল ডেনেট লেখেন যে বইটি (দ্য সেলফিশ জিন) শুধু বিজ্ঞানই ছিলনা, বরং 'সর্বোৎকৃষ্ট দর্শন'ও ছিল। সেখানে আমার ভূমিকা ছিল এই যে আমি দেখিয়েছিলাম বইটি কিভাবে বিজ্ঞান লেখকদের জন্য স্বর্ণখনির সন্ধান দিয়েছিল, প্রকাশকেরা পরবর্তী 'সেলফিশ জিন' এর জন্য লেখকদের কাছে বেশ ভাল প্রস্তাব নিয়ে আসা শুরু করেছিল। জেমস গ্লেইকের ক্যাওস (এবাসকাস, ১৯৮৮), স্টিফেন হকিংয়ের এ ব্রিফ হিস্টোরি অফ টাইম (বানটাম, ১৯৮৮) এবং পিংকারের ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্সটিংক্ট (উইলিয়াম মরো, ১৯৯৪) ছিল কতিপয় বইয়ের উদাহরণ, আসল বুম (বিজ্ঞানবই প্রকাশের) শুরু হওয়ার আগে।
যদিও ডকিন্সের বইটি মৌলিক ধারণায় ভরপুর ছিল, তারপরও ডকিন্স কিন্তু এটা স্বীকার করতে দেরি করেননি যে তার লেখা অন্যান্যদের আবিষ্কার এবং ব্যাখ্যার উপর ভর করেই নির্মিত, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বিবর্তন তাত্ত্বিক উইলিয়াম হ্যামিল্টন, জর্জ উইলিয়ামস, জন মেনার্ড স্মিথ এবং রবার্ট ট্রাইভার্স। তারাও প্রশংসা করতে দেরি করেন নি যে ডকিন্স তাদের ধারণাগুলি শুধু ব্যাখ্যাই করেননি, বরং তারচেয়ে বেশি কিছুই করেছেন। ট্রাইভার্স বইটির ভূমিকা লিখেছেন এবং মেনার্ড স্মিথ বইটি প্রকাশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই একটি টেলিভিশন প্রামাণ্যানুষ্ঠান তৈরি করেন। উইলিয়ামস লিখেন যে ডকিন্সের বইটি 'অনেকখানি এগিয়ে নিয়েছে, আমার কাজের চেয়েও", হ্যামিল্টন লেখেন যে দ্য সেলফিশ জিন "সাধারন এবং অকঠিন ইংরেজী ব্যবহার করে আধুনিক বিবর্তনের ধারণাগুলির অজানা, কঠিন-আংকিক বিষয়কে বোঝাতে সফল হয়েছে যা প্রায় আপাতভাবে অসম্ভবকে সম্ভব করার মত" এবং এমনভাবে যা "যেকোন জীববিজ্ঞান গবেষককেও বিস্মিত এবং সতেজ করে তোলে।"
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষে পড়ছি, যখন ডকিন্স আমাদেরকে কম্পিউটিং এবং প্রাণীর ব্যবহার নিয়ে ক্লাস নেয়া শুরু করবেন, এমন সময়ে ডকিন্সের বইটি আমার কাছে যেমন মহাকাব্যিক লেগেছিল, তেমনি আমাকে বিহ্বল করেছিল। ততদিনে আমার শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ সঠিক ধারণা এবং ভুল ধারণার মধ্যে পার্থক্য করতে শিখিয়েছিলেন। কিন্তু এখানে একজন লেখক বিজ্ঞানের কিছু প্রতিষ্ঠিত ধারণাকে উল্টেপাল্টে দিচ্ছিলেন এবং আমাকে আহ্বান করছিলেন এমন একটি ভ্রমণে যেটা ছিল তার মতে "কল্পকাহিনীর চেয়েও অদ্ভুত।" তিনি কি সঠিক ছিলেন, নাকি ভুল? আমাকে আসলে দ্বন্দগুলি দেখানো হচ্ছিল, উত্তরগুলি নয়।
দ্য সেলফিশ জিন এর উৎস খুবই চিত্তাকর্ষক। ডকিন্স তার আত্মজীবনী, অ্যান এপেটাইট ফর ওয়ান্ডার (বানটাম, ২০১৩) এর প্রথম খন্ডে বলছেন যে সেলফিশ জিনের ধারণাটি আসে বইটি প্রকাশেরও ১০ বছর আগে। ১৯৬৬ সালে ডকিন্স একজন নতুন ডক্টরেট পাওয়া গবেষক সহকারী ছিলেন এবং তাকে একজন ওলন্দাজ জীববিজ্ঞানী নাইকো টিনবারজেন বলেছিলেন তার হয়ে কিছু ক্লাস নিতে। হ্যামিল্টনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ডকিন্স তার নোটে লিখছেন, "জিনগুলি বলা চলে অমর, যারা নিজেদেরকে পুনঃপুনঃ গুছিয়ে নেয় প্রতিবার যখন বাবা মা থেকে সন্তানে প্রবাহিত হয় ... প্রাকৃতিক নির্বাচন সেসব জিনকেই সুবিধা দেবে যেগুলি নিজেদেরকে পরবর্তী বংশধরে অনেকগুলি সংখ্যায় প্রবাহিত হওয়ার সময় সবচেয়ে নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়ার মত করে একত্রিত হয়ে কাজ করবে ... আমাদের প্রাথমিক প্রত্যাশা এই অর্থডক্সের উপর ভিত্তি করে, বিবর্তনের নব্য-ডারইনিয় তত্ত্ব বলে "জিনগুলি হবে স্বার্থপর"।
ডকিন্স ১৯৭৩ সালে বইটি লেখা আরম্ভ করেন এবং ১৯৭৫ সালে শেষ করেন, যখন তিনি স্যাবাটিকাল ছুটিতে ছিলেন। প্রাণীবিজ্ঞানী এবং দ্য নেকেড এপ (জনাথন কেপ, ১৯৬৭) বইয়ের লেখক ডেসমন্ড মরিসের পরামর্শে জনাথন কেপের টম ম্যাশলারকে কতগুলি অধ্যায়ের খসড়া দেখান ডকিন্স, যিনি খুব শক্তভাবে বলেছিলেন যে বইটির শিরোনাম হওয়া উচিত 'দ্য ইম্মরটাল জিন'। এখন, ডকিন্স অনুশোচনা বোধ করেন যে কেন তিনি উপদেশটি গ্রহণ করলেন না। তাহলে বহু সমালোচকের বেশকিছু ইচ্ছাকৃত তর্কই তিনি এড়াতে পারতেন 'স্বার্থপরতা সচেতনভাবে হয় বা হয়না' এসব বিষয় নিয়ে। এর ফলে হয়তো ডকিন্সকে নিয়ে যে বেশ প্রচলিত ভুল ধারণা, যেমন 'ডকিন্স ব্যক্তির স্বার্থপরতায় বিশ্বাসী', এসবও এড়ানো যেত।
অবশেষে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসের মাইকেল রজার্স উৎসাহ নিয়ে দ্য সেলফিশ জিন বইটি প্রকাশ করলেন, যার প্রথম কয়েকটি অধ্যায় পড়েই তিনি দাবী করেছিলেন যে "বইটি আমার চাই!" প্রকাশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সাফল্য পেল বইটি, প্রায় ১০০টি রিভিউসহ, যারমধ্যে বেশিরভাগই ছিল উৎসাহজনক। এরপরে আরও অনেকগুলি বই লিখেছেন ডকিন্স যেগুলি বিশেষ দিক দিয়ে উন্নততর বই ছিল। এক্সটেন্ডেড ফেনোটাইপ ছিল অনেকটা গ্রাউন্ডব্রেকিং, দ্য ব্লাইন্ড ওয়াচমেইকার অনেকটা কৌতুহলোদ্দীপক, ক্লাইম্বিং মাউন্ট ইমপ্রোবাবল অনেকটা যৌক্তিক, রিভার আউট অফ ইডেন এন্ড আনউইভিং দ্য রেইনবো অনেকটা কাব্যিক, দ্য এনসেস্টরস টেইল অনেকটা তথ্যসমৃদ্ধ, দ্য গড ডিলিউশন অনেকটা বিতর্কিত। কিন্তু এগুলো সবকিছুই এমন একটি আখ্যানের উপর ভিত্তি করে রচিত যা ডকিন্স অতি দক্ষতায় এবং উৎসাহ নিয়ে বুনেছিলেন দ্য সিলফিশ জিন এ।
মন্তব্য
ইন্টারেসটিং!
ইন্টারেষ্টিং তো বটেই। বিশেষ করে যখন চিন্তা করি ডকিন্স এত বছর আগেই জিনকেন্দ্রিক বিবর্তন চিন্তার প্রসারে কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন এবং সাধারনের জন্য জনপ্রিয় বিজ্ঞানবই লেখার আজকের ধারাটি তৈরিতে সাহায্য করেছিলেন।
এই রিভিউটার কথা শুনেই আমার মনে হয়েছিল, এটার একটা অনুবাদ হলে ভাল হয়। দরকারি কাজটা দ্রুত করার জন্য ধন্যবাদ!
অস্বীকার করব না যে কিছু কিছু জায়গা আমারও খটোমটো মনে হয়েছে, যেমন দ্বিতীয় পরিচ্ছেদটা। হয়ত বাক্য-অনুযায়ী আক্ষরিক অনুবাদ করার বদলে নিজের বোঝাবার সুবিধা অনুযায়ী দুয়েকটা বাক্য যোগ করে দিলে ভাল হত?
রিভার্স ট্রান্সক্রিপ্টেজ এর অনুবাদ প্রতিক্রম ট্রান্সক্রিপ্টেজ, ইনট্রোন এর অনুবাদ অন্তর্ভূতঃ, এগুলো কি প্রচলিত নাকি আপনার করা অনুবাদ? আমার মনে হয় এসব টেকনিকাল শব্দ ইংরাজিতে রেখে দিলেও অসুবিধা নেই। যেসব পাঠক ইনট্রন শব্দের সাথে পরিচিত না তাঁদের অন্তর্ভূতঃ অর্থ জানারও সম্ভাবনা কম।
হুমম। ধন্যবাদ।
আসলে রিভিউটা লেখা হয়েছে বইটা পড়েছেন এমন এবং জীববিজ্ঞান নিয়ে কিছুটা ধারনা রাখেন এমন পাঠকদের উদ্দেশ্যে। সেজন্য বোধকরি লেখক ধারনা করে নিয়েছেন যে অনেক যায়গাতেই পাঠক নিজে বুঝে নেবেন। অনুবাদ করতে গিয়ে এটা মনে হল। ঠিক বলেছেন, নিজের ভাষায় কিছু জায়গায় লিখলে হয়তো ভাল হত।
বাংলাশব্দগুলি নিজে ব্যবহার করেছি। রিভার্স এর বাংলা হিসেবে প্রতিক্রম হয়তো খারাপ শোনায় না (হিমু সাহেবের কৃতিত্ব এই শব্দটা), বিশেষ করে রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন কিভাবে হয় সেটা চিন্তা করলে প্রতিক্রম বেশ নিখুঁত শব্দ। ইনট্রনকে হয়তো একইরকম রেখে দেয়া যায়। কিন্তু যারা ইনট্রন কী জানেন না তাদের কাছে তো অন্তর্ভূতঃ বা ইনট্রন যেকোন শব্দই জনপ্রিয় করা চলে, যদি তারা জানেন বাংলা শব্দটি দিয়ে আমি কোন টার্মটি বোঝাচ্ছি।
বইটা আছে পড়া হয়ে উঠছেনা, রিভিউটা পড়ে মনে হচ্ছে আর দেরী করা চলেনা। সুন্দর লিখেছেন সজীব ওসমান।
সোহেল ইমাম
পড়ে ফেলুন এবং জানান কেমন লাগলো।
লেখাটা ভাল হয়েছে। ইংরেজী টার্মস গুলো বাংলা না করাই ভাল।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমি মনে করি বাংলা শব্দ ব্যবহার করার সময় আসলে বিজ্ঞানের কোন টার্মটাকে বোঝানো হয়েছে সেটা প্রথম দিকে বলে দিলে একসময় এমন ব্যাপার হবে যে ইংরেজী শব্দটার ব্যবহার না করেই লোকে বুঝতে শিখবে বাংলা শব্দটা দিয়ে আসলে কী বোঝাচ্ছি। তবে জানেনই তো, বিজ্ঞানশব্দের বাংলা করা এবং ব্যবহারের ব্যাপারে আমরা বহুলাংশেই এখনও দ্বিধাবিভক্ত।
দেরি হয়ে গেল পড়তে, প্রিয় লেখকের প্রিয় বই! ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
facebook
নতুন মন্তব্য করুন