বাচ্চাদের বিজ্ঞান প্রশ্নের উত্তর

সজীব ওসমান এর ছবি
লিখেছেন সজীব ওসমান (তারিখ: শনি, ২১/০৫/২০১৬ - ১২:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

স্বপ্ননগর বিদ্যানিকেতন নামে একটা চমৎকার স্কুল আছে। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পড়াশোনা করানোর স্বপ্ন নিয়ে এই স্কুলটা তৈরি করেছেন কিছু তরুন। আমার কয়েকজন বন্ধু জড়িত এই অসাধারণ কাজে। চন্দনাইশের এক পরিত্যক্ত চাবাগানের ধ্বংসস্তুপে গড়ে ওঠা এক গ্রামের ছেলেমেয়েরা এই স্কুলের প্রাণ। তারা আমাকে কিছু বিজ্ঞান প্রশ্ন করেছে। যেগুলি নিয়ে এই লেখা।

লেখাটার দুইটা উদ্দেশ্য -
এক, শিশুরা কত কৌতুহলী হয় সেটা চমৎকার প্রশ্নগুলি থেকে বোঝা যায়। আমি বেশ মজা পেয়েছি বিজ্ঞান প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে। বড়দেরকে ভাবাতে পারার মত অনেকগুলি প্রশ্ন আছে। আবার এমন অনেক কারন বড়রা ভাবেনই না যা নিয়ে প্রশ্ন করা যায়, বা যা নিয়ে ভাবাভাবি জরুরী। সেসব এই কৌতুহলি মনের শিশুরা প্রশ্ন করে জানার চেষ্টা করছে। আমি আরেকটু বড় পরিসরে জানিয়ে দেই।
দুই, শিশুদেরকে ভুল শেখানোটা রীতিমত অপরাধ। বিজ্ঞানের সব বিষয়ে জানা সম্ভব নয় একজনের পক্ষে। তাই প্রশ্নের উত্তরগুলিতে কিছু ভুল থাকতে পারে। সেটা শুধরিয়ে দিতে পারেন এখানের পাঠক। আবার, প্রশ্নগুলির উত্তর দেয়ার সময় শিশুর বয়সের কথা মাথায় রাখতে হয়েছে। কিছু প্রশ্নের উত্তর হয়তো বয়সের তুলনায় উপযোগী হয়নি। এখানের পাঠকেরা আরও সহজ করে হয়তো বোঝাতে পারেন। সেইদিক থেকে আমি সাহায্য চাইছি।

কয়েকজন শিশু একাধিক প্রশ্ন করেছে। সবগুলিই তুলে দিচ্ছি।
===========================================

উত্তম, ৩য় শ্রেণী
কঁচুপাতা কেন ভেজেনা?
প্রিয় উত্তম,
কঁচুপাতা বা শাপলাপাতা পানিতে কেন ভেজেনা তার একটা কারন তো নিশ্চয়ই আছে। আসলে কারনটা আসলে লুকিয়ে আছে পাতার গঠনে। কঁচুপাতার উপরিভাগে খুব ছোট ছোট একধরনের গঠন আছে যা পানিকে ফোঁটা ফোঁটা হয়ে থাকতে সাহায্য করে। আর ফোঁটা ফোঁটা অবস্থায় থাকতে পানি সবচেয়ে ভালবাসে। দেখবে পুকুর বা নদী বা কল থেকে হাতের তালুতে অল্প পানি নিয়ে যদি আকাশে ছুড়ে মারো তবে তারা গোলাকার ফোঁটা ফোঁটা হয়ে নিচে পড়বে। একধরনের টানের কারনে তারা গোলাকার ফোঁটা হয়ে থাকে। আর ফোঁটা হয়ে যখন পানি থাকে তখন তারা কোন কিছুকে ভেজাতে পারেনা। উঁচু ক্লাসে গিয়ে যখন পৃষ্ঠটান নিয়ে আরও পড়বে তখন ব্যাপারটা আরেকটু ভালভাবে বুঝতে পারবে।

ফুলের এত রঙ কোথা থেকে এসেছে?
আর ফুলের রঙের পেছনে আছে বিভিন্নধরনের রঞ্জক পদার্থের কারসাজি। রঞ্জক পদার্থ হলো বিভিন্ন রঙের পদার্থ। তোমার রঙপেন্সিলের রঙও তৈরি হতে পারে রঞ্জক পদার্থ দিয়ে যেটা মানুষ তৈরি করেছে বা বিভিন্ন উদ্ভিদ থেকে বা অন্যকোন জায়গা থেকে নিয়েছে। তবে বিভিন্ন ফুলের গাছগুলি নিজেরাই বিভিন্ন ধরনের রঞ্জক পদার্থ তৈরি করে। কেন বিভিন্নধরনের গাছ বিভিন্নধরনের রঙের ফুল তৈরি করে সেটার পেছনে আছে আরেকটা কারন। ফুলের রঙের কারনে বিভিন্ন পোকা তাদের দিকে আকৃষ্ট হয়। তুমি যেমন কোন গাছে কোন টকটকে হলুক রঙের কলা দেখলে পেড়ে খেতে চাও তেমনি পোকারাও বিভিন্ন রঙ দেখে সেই ফুলে মধু খেতে আসে। এর ফলে গাছেরা রেণু এক ফুল থেকে আরেক ফুলে ছড়াতে পারে। গাছেদের এই উপায় ব্যবহার করতে হয় কারন তারা হাঁটতে পারেনা বলে একটা গাছ আরেকটা গাছে কাছে যেতে পারেনা। আর একেক গাছ একেকরকম পোকা ভালবাসে বলে একেক পোকাকে আকৃষ্ট করতে একেক গাছের ফুলে একেক ধরনের রঙ হয়।

মানুষের রক্ত কেন লাল?
রক্ত লাল হওয়ার কারণ হল আমাদের রক্ত অনেক লোহার অণু বহন করে যার মধ্যে অক্সিজেন অণু লেগে থাকে। লোহার কোন জিনিসে যখন জং ধরে তখন সেটা লালচে হয়ে যায় খেয়াল করেছো? কারন টা হল জং ধরা মানে হল লোহার মধ্যে অক্সিজেন লেগে গিয়েছে। তেমনি আমাদের রক্ত একধরনের প্রোটিন নামক জিনিস বহন করে যার নাম হল হিমোগ্লোবিন, যার মধ্যে লেগে তাকে হিম, যার মধ্যে লেগে থাকে লোহার অণু। আর লোহার অণুগুলি যখন আমাদের শ্বাসের সাথে থাকা বায়ুর অক্সিজেনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে তখন রক্তের রঙ লাল হয়ে যায়। রক্তে লোহার জায়গায় ক্রোমিয়াম নামের অন্যধরণের অণু থাকলে রক্তের রঙ হয়তো সবুজ হত! হয়তো ভিনগ্রহের কোন জীব একদিন পৃথিবীতে নেমে আসবে যার রক্তে আছে ক্রোমিয়াম, মানে রঙ সবুজ!

রিমা, ৫ম শ্রেণী
হাঁসের শরীর কেন ভেজেনা?

প্রিয় রিমা, ভাল আছো নিশ্চয়ই।
হাঁসের শরীর পানিতে না ভেজার একটা মজার কারন তো আছেই। তুমিতো জানোই তেল আর জল একসাথে মেশেনা কখনো। এই দুই তরল পদার্থের দুইধরনের বৈশিষ্ট্য বিধায় এরা একসাথে মেশেনা। তো হাঁস এবং এধরনের অন্যান্য পাখিরা একটা চমৎকার উপায় বের করেছে না ভেজার জন্য। তাদের লেজের কাছে একধরনের থলী থাকে যা ভর্তি থাকে একধরনের তেলে। এই তেল তারা নিজেরাই তৈরি করতে পারে। হাঁসকে দেখবে একটু পর পর ঠোঁট দিয়ে নিজের পালকে বা গায়ে কিসব লাগাচ্ছে। আসলে সে থলীটা থেকে তেল নিয়ে পালকে লাগায়। আর ফলে যখন পানিতে নামে তখন এই তেলের কারনে তার পালকে পানিও লাগেনা। ফলে সে আর ভেজেনা।

আকাশ, ৪র্থ শ্রেণী
পাখিদের ডানা ব্যাথা হয়না কেন?

প্রিয় আকাশ, ভালো আছো?
খুব সুন্দর প্রশ্ন। পাখিরা যেমন উড়তে পারে তেমনটা আমরা পারিনা। তাদের মত ডানা বা পাখা আমাদের হাতে লাগিয়ে দিলেও পারতাম না। হাত ব্যাথায় প্রায় মরেই যেতাম, কাহিলও হয়ে যেতাম যদি উড়তে চেষ্টা করতাম। পাখিরা কেন হয়না?
কারনটা হল পাখিদের কাঁধের এবং ডানার হাঁড়ের এক বিশেষ ধরনের গঠন আছে। ফলে হাঁড়গুলি খুব হালকে হলেও খুব শক্তও হয়। আর গায়ের যে জায়গায় পাখাটি লেগে থাকে সেখানে এক বিশেষ ধরনের আরেকটা হাঁড়ের কারনে খুব সহজে ডানা নাড়তে পারে। আমাদের হাতের মত মোটেই নয়। আবার তাদের ডানার কাছে আছে খুব শক্তিশালী মাংশপেশী। আমাদের রানে যেমন আছে যা আমাদের দৌঁড়াতে সাহায্য করে, অনেকটা তেমন। এসবগুলি কারনে পাখিরা সহজে ডানা ঝাপটাতে পারে আর ব্যাথাও পায়না।

নারায়ন, ৩য় শ্রণী
সজারু এবং শুকর কচু খেলে তাদের গলা চুলকায় না কেন?

প্রিয় নারায়ন, কেমন আছো?
প্রথমেই বলি কঁচু খেলে আমাদের গলা চুলকায় কেন। আসলে কঁচুর মধ্যে আছে একধরনের রাসায়নিক পদার্থের স্ফটিক। স্ফটিক হলো চকচকে বালুর দানার মত দেখতে বস্তু। কঁচু খেলে এই স্ফটিকগুলি আমাদের গলায় লেগে যায় আর চুলকানো শুরু হয়। যদি কঁচুকে অনেকখন ধরে সিদ্ধ করা যায় তবে দেখতে খেলে ততটা চুলকানি হচ্ছেনা। কিন্তু একটা সজারু বা শুকর ভাইয়ের কেন চুলকানো হয় না সেটা খুব ভাল আমার জানা নাই। তবে একটা পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে কঁচুকে যদি সিদ্ধ করা হয় তবে শুকর বেশি বেশি কঁচু খায়, অর্থাৎ কাঁচা কঁচুর চেয়ে সেদ্ধ কঁচু বেশি খায়। এখান থেকে বুঝতে পারি শুকরেরও সম্ভবত কঁচু খেলে চুলকানি হয় গলায়। তারা শুধু বলতে পারেনা যে চুলকানি হচ্ছে। পরেরবার একটা সজারু বা শুকরের সাথে তোমার দেখা হয়ে গেলে জিজ্ঞেস করে দেখো তো? কী বললো সেটা আমাকেও জানিও।

খাদ্য খেলে কিভাবে গায়ের মাংশ বাড়ে?
খাবার খেলে সেটা আমাদের পেটের ভেতরে থাকা পাকস্থলীতে গিয়ে জমা হয়। তারপর পাকস্থলী এই খাবারদাবারকে ভাঙতে শুরু করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায়। সকালবেলা যে কলাটা খেলে সেই কলাটা পেটে গিয়ে ভেঙে এমন অবস্থা হবে যে তাকে আর কলা বলে চেনাই যাবেনা! খাবার ভাঙার ফলে পাকস্থলী দেয়াল সেই খাবারগুলিকে শুষে নিতে পারে। এই শুষে নেয়া খাবারগুলিকে পুষ্টি বলে। পুষ্টিগুলি রক্ত এবং দেহে থাকা অন্যান্য তরলের মাধ্যমে শরীরের কোণায় কোণায় পৌঁছে যায়। হাতে যায়, পায়ে যায়, মাথায় যায়। এই পুষ্টিগুলি তারপর আমাদের শরীরের বিভিন্ন কোষ তৈরিতে সাহায্য। পুষ্টিগুলি যদি মাংশপেশির কোষ তৈরি করে তবে তোমার দেহে মাংশ তৈরি হবে! বুঝেছো তো?

আগুন কোথা থেকে হয়েছে?
আগুন তৈরি হয় তখনই যখন বাতাসে থাকা অক্সিজেনের সাথে কোন জ্বালানিবস্তু, যেমন কাঠ, কাগজ, তেল, গ্যাস ইত্যাদির মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। এই সম্পর্ককে বিক্রিয়া বলে, উঁচু ক্লাসে উঠলে এনিয়ে আরও জানতে পারবে। কিন্তু এই অক্সিজেন আর কাগজ সবসময়ই আমাদের কাছাকাছি থাকলেও আগুন সবসময় ধরেনা কেন?
কারনটা হল অক্সিজেন আর কাগজের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করার জন্য দরকার তাপ। সেই তাপটা আসতে পারে কোন দুইটা জিনিসের ঘষা দেয়ার ফলে। তোমার দুইহাত খুব জোরে ঘষা দিলে দেখবে হাতদুইটা গরম হয়ে উঠেছে। সেরকমভাবেই। তবে আগুন তৈরির জন্য অনেক বেশি পরিমান তাপ দরকার যা হাত ঘষায় তৈরি হবেনা।
প্রাচীনকালে মানুষ প্রথম আগুন তৈরি করতে পেরেছিল কাঠ বা পাথরের ঘষা দিয়ে দিয়ে। এই আবিষ্কারের ফলে মানুষের ইতিহাস পরিবর্তন হয়ে যায়। আগে আমরা খাবারদাবার কাঁচাই খেতাম। নিজের আগুন জ্বালাতে শেখার পরে থেকে রান্না করা শিখেছি!

মানুষ কোথা থেকে এসেছে?
উত্তরটা দিচ্ছি, তবে প্রথমে একটা অন্য কথা বলে নেই। সেটা হল পৃথিবীর সকল জীবের মধ্যে সম্পর্ক আছে, জানো? এই যেমন মাঠে যেই গরুটাকে দেখছো, সেটার সঙ্গে কিন্তু তোমার একধরনের সম্পর্ক আছে! হয়তো এখন ভাবতে অবাক লাগে, কিন্তু গরু এবং মানুষ কিন্তু বহু বহু বছর আগে একই প্রাণী ছিল। যে প্রাণী থেকে বংশধর হতে হতে হতে হতে একটা ধারার প্রাণীরা গরু হয়েছে, আরকেটা ধারার প্রাণীরা মুরগী হয়েছে, আরেকটা ধারার প্রাণীরা সাপ হয়েছে আবার একটা ধারা মানুষ হয়েছে। বোঝার জন্য বলি, গরু এবং মানুষের মধ্যে রক্তনালীরা কিন্তু ঠিক একইরকম, তাদের মস্তিষ্ক আছে, তারাও মায়ের দুধ পান করে। কত মিল! কিন্তু এই মিলগুলি আছে কারন আমরা একে অন্যের সাথে সম্পর্কিত। এভাবে মানুষও তৈরি হয়েছে। বহু বহু বছর আগে আমাদের পৃথিবীতে এমন একটা প্রাণী ছিল যা দেখতে মানুষ বা বানর দুজনের সাথেই মিল ছিল। তারপর সেই জীবটা থেকে বংশধর হতে হতে হতে হতে একটা ধারা এখন আধুনিক বানর হয়েছে আর আরেকটা ধারা মানুষ হয়েছে। পৃথিবীর সকল জীবের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা চলে। এই ব্যাপারটাকে বলে জীবের বিবর্তন। বড় হয়ে এনিয়ে আরও অনেক পড়বে। অনেক আগের কোন প্রাণী হতে পরিবর্তন হতে হতে মানুষের মস্তিষ্ক অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বলে আমরা আজকে পৃথিবী রাজত্ব করছি। কম শক্তিশালী মস্তিষ্কের বানরেরা আমাদের মত দাপট দেখাতে পারছেনা!

যশো, ৫ম শ্রেণী
সাগরের পানি নোনা কেন?

প্রিয় যশো, ভালো আছো নিশ্চয়ই।
তুমি তো জানোই যে পৃথিবীর সমুদ্রগুলিতে পানি বয়ে নিয়ে যায় হাজার হাজার নদী। বাংলাদেশে যেমন মেঘনা নদী গিয়ে সমুদ্রে মিশেছে, ঠিক তেমনি। মেঘনা নদী যখন সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয় তখন সে তার পথ থেকে, পাহাড় থেকে অনেক অনেক লবন নিয়ে যায়। কিন্তু নদীর পানিতে লবনের পরিমান অল্প থাকে বলে নদীর পানিকে নোনতা লাগেনা। সেজন্য একে মিঠা বা মিষ্টিপানি বলে। কিন্তু হাজার হাজার নদী যখন সমুদ্রে অনেক অনেক লবন নিয়ে যায় তখন হয় ঝামেলা। সমুদ্রের পানি সূর্যের তাপে বাষ্পিভূত হয়ে আকাশে চলে যায়, ফলে বৃষ্টি হয়, জানোই তো। পানিকে পাতিলে গরম করলে যেই ভাপ তৈরি হয়ে উপরে উঠে আসে সেইরকম। পানি বাষ্প হয়ে উড়ে গেলেও পানিতে থাকা লবন বাষ্প হয়ে উড়তে পারেনা। তার ফলে সমুদ্রের পানিতে লবনের ঘনত্ব বেড়ে যায়। এভাবে লবনের ঘনত্ব বাড়তে বাড়তে এত বেশি হয়ে যায় যে সমুদ্রের পানি খেতেই নোনতা হয় যায়।

পৃথিবীতে মাটির উৎপত্তি কিভাবে হল?
পৃথিবী যে মহাকাশের শূণ্যে ভেসে থাকা একটি গোলক সেটা তো জানোই। এই পৃথিবী নামক গোলকটার শুধু উপরের একটি খুব চিকন বা সূক্ষ্ম স্তরকে আমরা মাটি বলি। মাটি আসলে তৈরি হয়েছে পৃথিবীর উপরিভাগে থাকা বিভিন্ন পাথর আর পর্বতের কাছ থেকে ভেঙে ভেঙে, পানিতে মিশে, বাতাসে উড়ে, গাছপালা জীবজন্তুর মরদেহ পঁচে, কেঁচো পোকামাকড় অতিছোট জীবের চলাফেরা খাওয়াদাওয়ায়। তোমার পায়ের নিচে যে মাটি সেটা হয়তো কোন এক সময় হিমালয় পর্বতের অংশ ছিল। অথবা হয়তো অনেকদিন আগে মরে যাওয়া একটা ডাইনোসরের দেহের কিছু অংশের উপর দিয়েই হয়তো তুমি হেঁটে গেলে আজকে!

ক্রেস্কোগ্রাফ যন্ত্র কেমন?
বাপরে, কঠিন নামের যন্ত্র। তবে জানো কি? ক্রেস্কোগ্রাফ নামের যন্ত্রটা আবিষ্কার করেছিলেন বিশ্ববিখ্যাত বাঙালী বিজ্ঞানী জগদিশ চন্দ্র বসু, যাঁর বাড়ি ছিল বাংলাদেশে? তিনি উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণায় খুব কৌতুহলী ছিলেন। গাছদের হাবভাব বোঝার চেষ্টা করতেন। তাই গাছ বা উদ্ভিদ বিভিন্ন ধরনের প্রভাবে কতটুকু বাড়ে তার পরীক্ষার জন্য একটা যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন যার নাম ক্রেস্কোগ্রাফ। তাপমাত্রা, রাসায়নিক দ্রব্য, তড়িৎ বা বিভিন্নধরনের গ্যাসের সংস্পর্শে কোন উদ্ভিদ কতটুকু বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটা মেপেছিলেন জগদিশ চন্দ্র বসু। কী দারুণ যন্ত্রের কী দারুণ মালিক! তাইনা?

ঝুমা, ৩য় শ্রেণী
চোখের জল নোনা কেন?

প্রিয় ঝুমা, কেমন আছো?
আমাদের সারাদেহেই আছে লবণ। একজন বড় মানুষের দেহে প্রায় ১ কাপ পরিমাণ খাবারের লবণ থাকে। এই লবণ আমাদেরকে শরীরের ভেতরে বাইরে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। দেহে তরলের ঘণত্বের ভারসাম্য বজায় রাখতে লবণ কাজ করে। আমাদের ঘাম এবং চোখের পানিতেও তাই লবণ থাকে বলে এদের স্বাদ নোনতা।

আকাশ, ৪র্থ
জাহাজ কী করে ভাসে?

প্রিয় আকাশ,
জাহাজ জলে ভাসার একটা মজার কারন আছে। কারনটা খুঁজে বের করেছিলেন বিজ্ঞানী আর্কিমিডিস। একটা বস্তু যখন পানিতে ফেলা হয় তখন সেই বস্তুকে পানিতে জায়গা দিতে কিছু পানি চারপাশে সরে যায়। কিন্তু সরে যাওয়া পানিগুলি আবার আগের জায়গায় ফিরে আসতে চায়, ফলে পানিতে পরা বস্তুটির উপর একধরনের বলপ্রয়োগ করে। এই বলের কারনেই জাহাজ পানিতে ভাসে। সরে যাওয়া পানির বলের পরিমান যদি বস্তুর ওজনের সমান বা তার চেয়ে বেশি হয় তবে বস্তু পানিতে ভাসবে, নাহয় ডুবে যাবে। জাহাজের আকৃতি এমনভাবে তৈরি করা যেন বেশিপরিমাণ পানিকে সরাতে পারে। আর সমপরিমান লোহা দিয়ে তৈরি কোন বাস সঠিক আকৃতির নয় বলে ডুবে যাবে। পানির এই বলটিকে বলে প্লবতা বল।

হৃদয়, ৩য় শ্রেণী
সূর্যের তাপ থেকে কিভাবে সোলার প্যানেল কারেন্ট তৈরি হয়?

প্রিয় হৃদয়,
সোলার প্যানেল বা সৌর প্যানেল আসলে সূর্যের আলোর শক্তিকে বিদ্যুতে রূপান্তর করার একটা যন্ত্র। জানোইতো, সূর্যের আলোতে অনেকধরনের শক্তি থাকে। আমাদের পৃথিবীর যেই সবুজ গাছপালা আছে তারা পাতার মাধ্যমে এই শক্তি গ্রহণ করতে পারে এবং নিজেদের কাজে লাগাতে পারে। তাই পাতাকেও একধরনের সোলার প্যানেল বলা চলে। মানুষ শুধু পাতার মত করে একটা যন্ত্র তৈরি করেছে। সূর্যের আলোর কণিকা, যার নাম ফোটন, তারা সোলার প্যানেল এসে একটা ক্ষুদ্র পরমাণুর কণাকে (ইলেক্ট্রণ বলে) ধাক্কা দেয়। এর ফলে ইলেক্ট্রণগুলির প্রবাহ শুরু হয়। ইলেক্ট্রণের প্রবাহকেই আমরা বিদ্যুৎ বলি। এভাবেই সোলার প্যানেল কাজ করে।

মানুষ আঘাত পেলে ব্যাথা পায় কেন?
আমাদের শরীরের প্রায় প্রতিটা কোণায় আছে স্নায়ু বলে একধরনের সংবেদণশীল গ্রাহক। স্নায়ুদের কাজ হল মস্তিষ্ককে শরীরের বিভিন্ন জায়গার অবস্থা সম্বন্ধে জানানো যাতে মস্তিষ্ক সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে কী করতে হবে। আমাদের গায়ে যখন আঘাত লাগে তখন কোন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। কিন্তু মস্তিষ্ক সেটা হতে দিতে চায়না। ফলে যে জায়গায় আঘাত লাগে সে জায়গার স্নায়ুতে চাপ পড়লে স্নায়ু মস্তিষ্কে আঘাতের সংকেত পাঠায়। মস্তিষ্ক ভাবে, আরে! আঘাত পাচ্ছে শরীর। এখান থেকে পালানো উচিত। মস্তিষ্ক তখন আমাদের পাকে সংকেত দেয় দৌড়ানোর জন্য। আর আমরা দৌড়ে পালাই।

পানি কোথা থেকে হয়েছে?
এটা একটা জটিল প্রশ্ন। কোন কোন বিজ্ঞানী মনে করেন যে পৃথিবী যখন প্রথম তৈরি হয়েছিল ঠিক তখন থেকেই পানি ছিল পৃথিবীতে। ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী তৈরি হওয়ার সময় বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে প্রচুর পরিমানে পানি তৈরি হয়। রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে পৃথিবীর চারিদিকে বিভিন্ন গ্যাসে ভরা বায়ুমন্ডলটিও তৈরি হয়েছে। আরেকদল বিজ্ঞানী মনে করেন পৃথিবী তৈরি হওয়ার পরে কোন উল্কাপিন্ড পৃথিবীতে আঘাত করার সময় পানিগুলি পৃথিবীতে এসেছে। কিন্তু এই ধারনার চেয়ে প্রথম ধারনাটার পক্ষে প্রমাণ বেশি। যেমন, পৃথিবীর একেবারে ভেতরের পাথর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে সেই পাথরের মধ্যে যে পানি আটকে পরে আছে তাদের বয়স প্রায় পৃথিবীর বয়সের সমান। তাহলে ব্যাপার হল পানি একেবারে আদিকালের পৃথিবী থেকেই আমাদের সাথে আছে।

রাফি, ৫ম শ্রেণী
তারছাড়া কিভাবে দূরদেশে খবর পাঠানো যায়?
প্রিয় রাফি, ভালো আছো?
তারছাড়া কয়েকটি উপায়ে দূরদূরান্তে খবর পাঠানো যায়। প্রাচীনকালে মানুষ হেঁটে হেঁটে বা ঘোড়া বা হাতিতে চড়ে কয়েকশো মাইল দূরে যেত এক এলাকার খবর আরেক এলাকায় পৌঁছাতে। আবার মানুষ পাখিকেও শিখিয়েছে দূরে উড়ে গিয়ে কারও হাতে কোন চিঠি দিয়ে আসতে।
তবে আধুনিক কালে মোবাইল ফোন দিয়ে বহুদূরের দেশে খবর পাঠানো যায়। ব্যাপারটা সম্ভব হয় পৃথিবীর চারদিকে মহাকাশে ভেসে থাকা স্যাটেলাইট যন্ত্রের কারনে। তোমার মোবাইল ফোন থেকে তরঙ্গ ভেসে যায় স্যাটেলাইটে কাছে, সেই স্যাটেলাইট সেই তরঙ্গ আবার আরেকজনের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এভাবে একদেশের টেলিভিশনের অনুষ্ঠান আরেক দেশেও দেখা যায়। মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানো হয় মহাকাশযান বা রকেটের মাধ্যমে। বাংলাদেশ কিন্তু একটা স্যাটেলাইট পাঠাবে মহাকাশে ২০১৭ সালে, নাম বঙ্গবন্ধু-১।

গাছ কিভাবে অক্সিজেন দেয় এবং কার্বন ডাই অক্সাইড নেয়?
গাছ খাবার তৈরি করে তাদের শরীরে একটা বিশেষ উপায়ে। উপায়টির নাম সালোকসংশ্লেষণ। এই উপায়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইডে সঙ্গে পানির অণু মিশে গিয়ে শর্করা বা চিনি তৈরি হয়। এই চিনিই হল গাছের খাদ্যশক্তি বা একধরনের খাবার। বলে রাখি, গাছ মাটি থেকেও খাবার সংগ্রহ করে, তবে নিজের জন্য শর্করাটা সে নিজের পাতা দিয়ে তৈরি করে। সালোকসংশ্লেষণ উপায়টির জন্য কিন্তু সূর্যের আলোর প্রয়োজন!
খাবার তৈরির জন্য কার্বন-ডাই-অক্সাইড গাছ বাতাস থেকে গ্রহণ করে পাতার মধ্যে থাকা ছিদ্র দিয়ে। আবার এই খাবার তৈরির প্রক্রিয়ার সময় কার্বন-ডাই-অক্সাইড আর পানি থেকে শর্করার সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেনও তৈরি হয় যা সে পাতা দিয়ে আবার বের করে দেয়। এভাবেই গাছে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নেয় আর অক্সিজেন ত্যাগ করে।
বলে রাখি, গাছ যদি এই প্রক্রিয়া না করতো তবে পৃথিবীর কোন বড় আকারের প্রাণীই বেঁচে থাকতে পারতোনা! গাছ সেজন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশে থাকা। বেশি বেশি গাছ লাগাতে সেজন্যই বিজ্ঞানীরা বলেন। তুমিও প্রতি বছর একটা করে গাছ লাগাতে পারো। তাহলে, তোমার বয়স যখন ২০ হবে তবে তোমার সাথে সাথে পৃথিবীতে ২০ গাছও থাকবে!

কেন শিক্ষার্থীদের মন শুধু খেলতে চায়?
খেলাধুলা আমাদেরকে আনন্দ দেয়। আমাদের মন ভাল থাকে নিয়মিত খেলাধুলা করলে, শরীরও ভাল থাকে। তোমাদের মত ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য খেলাধুলা খুব জরুরী। তোমরা যেন সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠো সেজন্য। আর তাই তুমি যত খেলবে মস্তিষ্ক তোমাকে তত উৎসাহ দেবে খেলার জন্য। মস্তিষ্ক চায় তুমি ভালভাবে সুন্দর করে বেড়ে ওঠো। তারজন্যই তোমাকে দিয়ে শুধু খেলিয়ে নিতে চায় তোমার মস্তিষ্ক! খেলাধুলা করতে গেলে যদি কেউ বকাঝকা করে তবে বলে দিতে পারো, 'এটা আমার দোষ না, আমার মস্তিষ্ক আমাকে শুধু খেলতে বলছে!'।
আর শুধু ছোটরা নয়, খেলাধুলা বড়দের জন্যও ভাল। আমিও প্রায়ই বল নিয়ে মাঠে বেড়িয়ে পরি খেলাধুলা করতে। পড়ালেখা যেমন জরুরী, ঠিক তেমনি খেলাধুলা করাটাও জরুরী। তবে কোনটা যেন কোনটাকে ক্ষতি না করতে পারে সেটা দেখতে হবে। পড়তে গিয়ে খেলা নষ্ট করা চলবেনা, আবার খেলতে গিয়ে পড়া নষ্ট করলে চলবেনা।

কেন রোজ এসেম্বলি করতে হয়?
এসেম্বলি করাটা কিন্তু খুব জরুরী। তোমাদের স্কুলে সব ছেলেমেয়ে যে একসাথে পড়াশোনা করছো, খেলাধুলা করছো তাদের সবার জন্য একটা মিলনস্থান হলো এসেম্বলির মাঠ। এর ফলে স্কুলটা সবাইকে নিয়ে একসাথে একটা পরিবারের মত করে গড়ে উঠতে পারে। এসেম্বলির ফলে তোমাদের মধ্যে শৃংখলাবোধও জন্ম নেয়। দশেমিলে একসাথে কাজ করা, নিজেদের মধ্যে দলগত শক্তি তৈরি হওয়া, স্কুল যেন ভালভাবে কাজ করতে পারে এইসবের জন্য এসেম্বলি প্রয়োজন। প্রতিদিন এসেম্বলির সময় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাইতে কিন্তু ভুলোনা!

নয়ন, ৩য় শ্রেণী
কাগজ কিভাবে তৈরি হয়?

প্রিয় নয়ন, কাগজ তৈরি হয় গাছের ডাল, কান্ড ইত্যাদি থেকে। গাছের মধ্যে আছে অনেক অনেক সেলুলোজ এবং লিগনিন নামের পদার্থ। এসব পদার্থ না থাকলে কাগজ তৈরি হতোনা। কোন গাছের কান্ডকে প্রথমে ভেঙে গুড়া করে পানি এবং আঁঠা দিয়ে আঁঠালো একটা জিনিস তৈরি করা হয়। এই জিনিসটার নাম মন্ড। এই মন্ডকে তারপর পিষে, চেপে, চ্যাপ্টা করে, শুকিয়ে যে জিনিসটা বানানো হয় সেটাই আসলে কাগজ। সেজন্য হাতের কাছে যে কাগজটা দেখছো তা আসলে গাছের অবদান।

রিয়া, ৫ম শ্রেণী
পাহাড় কোথা থেকে হল?

প্রিয় রিয়া, ভাল আছো?
পাহাড় তৈরি হয়েছে একধরনের বিশেষ উপায়ে। পৃথিবীর উপরিভাগের অল্প অংশ আমরা দেখতে পাই, যার মধ্যে আছে পাহাড়। কিন্তু পৃথিবীর ভেতরের দিকটা, অর্থাৎ তোমার পায়ের নীচে যদি খুঁড়তে থাকো তবে দেখতে পাবে সেখানে বিভিন্ন পাথরের মত প্লেট আছে, যাদের আকার বিশাল বড়। মনে কর পুরো বাংলাদেশের সমান একটি পাথরের প্লেট আছে আমাদের পায়ের নীচে। আবার ভারতের নীচে আছে আরকেটি বড় প্লেট। তাহলে এই দুটি প্লেট কাছাকাছি আসলে ভাঙচুর শুরু হবে, একটা প্লেট উপরে উঠে যাবে। আর প্লেটগুলির এই নড়াচড়ার জন্য পৃথিবীর উপরিভাগের পাথর এবং মাটি উপরে উঠে যাবে। ফলে ভারত আর বাংলাদেশের কাছাকাছি জায়গায় একটা বিরাট পাহাড় বা পর্বত তৈরি হবে। এভাবেই পৃথিবীর সকল পাহাড়-পর্বত তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এই তৈরি হওয়াটা এতই ধীর গতির যে আমরা দেখে বুঝতে পারিনা যে পর্বত তৈরি হচ্ছে। তোমার বাসার কাছের খেলার মাঠটাই মনে কর একটা পাহাড়ে পরিণত হচ্ছে যা তুমি এখনই বুঝতে পারছো না, যা তৈরি হতে হয়তো ১ লাখ বছর সময় লাগবে। প্রায় লাখখানেক বছর পরের আরকেটা রিয়া নামের মেয়ে হয়তো সেই পাহাড়ের দিকে চেয়ে ভাববে, ‘এমা! এই পাহাড়টা কিভাবে তৈরি হল?’

মানিক, ৩য় শ্রেণী
ফল পাকলে হলুদ হয় কেন?

প্রিয় মানিক, কেমন আছো?
এইটা একটা মজার প্রশ্ন। উত্তরটাও খুব মজার, পাকা ফলের মতই। কাঁচা ফল সবুজ থাকে সাধারণত। কারন এর বাইরের দিকে, মানে ত্বকে থাকে ক্লোরোফিল নামের একটা জিনিস যার রঙ সবুজ। তবে গাছ যখন মনে করি এইবার ফলগুলিকে পাকাবো তখন ফলগুলির বাইরে থাকা ক্লোরোফিল ভেঙে যেতে শুরু করে। আর আমরা ক্লোরোফিলের সবুজটা দেখিনা। ক্লোরোফিল ভাঙার পরে যে রঙটা থাকে সেটা হল হলুদ। তাই ফল পাকলে হলুদ দেখায়।
এবার আরকেটা মজার কথা বলি। ফল পাকলে শুধু হলুদই হয়না, সাথে সাথে তারা মিষ্টিও হয়ে ওঠে। কাঁচা ফল তো মিষ্টি নয় তেমন, তাইনা? এর কারন হল ফল পাকার সময় বাইরের দিকে থাকা ক্লোরোফিল যেমন ভাঙতে থাকে তেমনি ফলের ভেতরে থাকা আরেকধরনের জিনিস ভেঙে চিনি তৈরি করে। তাই ফল মিষ্টি হয়ে ওঠে। কি, মজার না?

ভূমিকম্প কেন হয়?
আমাদের পৃথিবীটা বাইরের দিকে অনেক শান্ত হলেও ভেতরের দিকে অনেক নড়াচড়া ঘটছে প্রতিনিয়ত। বড় বড় পাথরের চাঁই নড়ছে, তরল পাথর বইছে, এক পাথরের সাথে আরেক পাথরের ধাক্কা লাগছে, একজন নীচে পড়ছে তো আরেকজন উপরে উঠছে। পৃথিবীর ভেতরের দিকের এইসকল নড়াচড়ার কারনে উপরে আমরা মাঝেমধ্যে নড়াচড়া টের পাই। সেটাকেই ভূমিকম্প বলে।
একটা জিনিস দিয়ে ব্যাপারটা হয়তো ভালকরে বুঝতে পারবে। তোমার বুকের বামদিকে ডানহাতটা রাখো। দেখবে বুকটা একটু একটু নড়ছে। কেন জানো? কারন বুকের ভেতরে হৃদপিন্ড ধুকপুক করে নড়ছে। সেজন্য উপরে নড়াচড়া টের পাচ্ছো। ভূমিকম্পের ব্যাপারটাও অনেকটা এরকম!


মন্তব্য

সোহেল ইমাম এর ছবি

বাপরে কত প্রশ্নের উত্তরতো আমিই প্রথম জানলাম। অ্যাঁ তবে এই লেখাটা আমার মনে হয় আমাদের আশেপাশের শিশুদের প্রশ্নের উত্তরে কি বলতে হবে তার একটা ভালো দৃষ্টান্ত হলো। আমার এক বন্ধু তার সাত বছরের মেয়ের কোন প্রশশ্নকেই উত্তরহীন রাখতে চায়না। সে গুগল মেরে হলেও উত্তরটা জেনে মেয়েকে জানায়। বাচ্চাদের প্রশ্ন গুলোকে অবজ্ঞা না করে সঠিক উত্তর যুগিয়ে তার কৌতুহলকে আরো বাড়িয়ে তোলা দরকার।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সজীব ওসমান এর ছবি

সেটাই। সঠিক কথা। শিশুদের কোন প্রশ্নকেই অবজ্ঞা করতে হয়না। অবজ্ঞা করতে থাকলে একসময় তারা প্রশ্ন করা ছেড়ে দেবে।

গৌতম এর ছবি

শিশু-কিশোরদের এসব প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে গোছানো একটা ওয়েব সাইট হতে পারে। এতে শুধু শিশু-কিশোররাই নয়, অনুসন্ধিৎসু বড়রাও (বা ক্ষেত্রবিশেষে পিতামাতারা যারা তাদের বাচ্চাদের প্রশ্নের জ্বালায় অস্থির) উপকৃত হতে পারেন।

সজীব ওসমান এর ছবি

ভাল আইডিয়া। তৈরি করে ফেলেন। সাথে আছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

বিষয়টা মনোমুগ্ধকর। বাচ্চারা সত্যি সুন্দর।
বিজ্ঞানের সাথে সাথে সংস্কৃতি নিয়েও বাচ্চাদের উৎসাহিত করা উচিৎ।
--------------------------------------------------------------
অনার্য তাপস

সজীব ওসমান এর ছবি

সংস্কৃতি নিয়ে জানানোটাও খুব জরুরী। লিখে ফেলেন।

সজীব ওসমান এর ছবি

লেখাটায় অনেকগুলা বানান ভুল হয়েছে। ক্ষমাপ্রার্থী।
আমি লেখাটার সম্পাদনা করতে গেলে লেখার উপরের ছবি দেয়া বা লিংক দেয়া বা হেডিং পরিবর্তনের ট্যাবগুলা আসছেনা। সার্ভারে কোন সমস্যা হচ্ছে?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সজীব ওসমান এর ছবি

পপকর্ণ খায়া লাভ কী? পরের পর্ব আসতে আগামী বছর।

শেহাব এর ছবি

হাততালি

সজীব ওসমান এর ছবি

হাসি

সামসুল এর ছবি

এইসব ভুল উত্তর শেখানোর জন্য আপনের পুসি চাই। কল্লায় তেল মালিশ করতে থাকুন। আমি চাপাতি নিয়া আইতাছি। সবকিছু আল্যায় জানে এর উপরে কোন কথা নেই।

সজীব ওসমান এর ছবি

তেল মাখালে কল্লা কাটতে সুবিধা কেন - এই প্রশ্নের বৈজ্ঞানিক কারন আগে ব্যাখ্যা করেন। তারপর মাখবো।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।