বিবর্তন ৬: আমাদের আধুনিক চিন্তনে ডারউইনের প্রভাব। প্রথম পর্ব: জীবনের ইহসর্বস্ব দৃষ্টিভঙ্গি

সজীব ওসমান এর ছবি
লিখেছেন সজীব ওসমান (তারিখ: বুধ, ১৪/০২/২০১৮ - ৫:৩৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(ডারউইন দিবসে তাঁর শ্রদ্ধার্ঘ্যে বিজ্ঞানী আর্নেস্ট মায়ারের একটি লেখার অনুবাদ করছি)

স্পষ্টতই ১৯ শতকের শুরুতে যুগের ভাবধারা যেমন ছিলো তার চেয়ে ২১ শতকের শুরুর দিকে বিশ্ব এবং এখানে আমাদের স্থান নিয়ে আমাদের ধারণা ব্যাপকভাবে ভিন্ন। কিন্তু এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের উৎস হিসাবে কোন ঐকমত্যে আমরা পৌঁছাতে পারিনা। কার্ল মার্ক্সের নাম প্রায়ই উল্লেখ করা হয় অন্যতম প্রভাবক হিসেবে; সিগমুন্ড ফ্রয়েড বারবার এসেছে এবং মুছে গিয়েছে; অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের জীবনী লেখক আব্রাহাম পয়স একান্তই দাবি করেন যে আইনস্টাইনের তত্ত্বগুলি "আধুনিক পুরুষ ও নারী স্বতঃস্ফূর্ত প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো নিয়ে যেমনটা ভাবেন সেই ভাবনাপদ্ধতিকে গভীরভাবে পরিবর্তিত করেছে।" কিন্তু পয়স কিছু পরেই ধরতে পেরেছেন যে তিনি একটু বাড়িয়ে বলছেন এবং তিনি কথাটা একটু পরিবর্তন করে বলছেন "আধুনিক পুরুষ ও নারীদের তুলনায় এটি 'আধুনিক বিজ্ঞানী' বললে আরও ভালো হবে," কারণ পদার্থবিজ্ঞানের শৈল্পিক চিন্তাভাবনা এবং গাণিতিক পদ্ধতিতে চিন্তায় আইনস্টাইনের অবদানের ব্যাপারটা পূর্ণাঙ্গভাবে বোঝার জন্য কিছু শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। প্রকৃতপক্ষে, এই সীমাবদ্ধতা আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের সমস্ত অসাধারণ তত্ত্বগুলির জন্য সত্য, যার প্রভাব খুব সামান্যই পৃথিবীর সাধারণ মানুষ গড়ে যেভাবে চিন্তা করে তার উপর আছে।

কিন্তু জীববিজ্ঞানের ধারণাগুলির সাথে পরিস্থিতিটি নাটকীয়ভাবে ভিন্ন। গত ১৫০ বছরে প্রস্তাবিত বহু জীববৈজ্ঞানিক ধারণার অনেকগুলিই সাধারণ মানুষ যেভাবে বিশ্বাস করতেন তার সাথে একেবারেই মেলেনি, বরং মানুষের সেসব বিশ্বাসের বিরোধিতা করেছে। এই জীববৈজ্ঞানিক ধারণাগুলির স্বীকৃতি আদায়ের জন্য একটি মতাদর্শগত বিপ্লব প্রয়োজন হয়েছিলো। গড় ব্যক্তির বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গির সম্পূর্ণ সংশোধন এবং পরিবর্তনের পেছনে জীববিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের তুলনায় আর কোন বিজ্ঞানী এত বৃহৎ প্রভাব রাখতে পারেন নাই।

এখানে ডারউইনের কৃতিত্ব এত সংখ্যক এবং এত বৈচিত্র্যপূর্ণ যে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে প্রধান অবদানগুলি আলোচনা করা প্রয়োজন: বিবর্তনীয় জীববিদ্যা; বিজ্ঞান দর্শন; এবং আধুনিক যুগভাবনা। আমি সেগুলো নিয়েই আলোচনা করছি।

জীবনের ইহসর্বস্ব দৃষ্টিভঙ্গি

ডারউইন জীববিজ্ঞানের একটি সম্পূর্ণ নতুন শাখার উৎপত্তি ঘটিয়েছেন - বিবর্তনিক জীববিজ্ঞান। বিবর্তনিক জীববিজ্ঞানে তাঁর চারটি অবদান বিশেষত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই শাখার বাইরেও তারা যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছিল। প্রথমটি হচ্ছে প্রজাতির অনিত্যতা, যেটা বিবর্তন সম্পর্কেই আধুনিকতম ধারণা। দ্বিতীয়টি হল শাখাবিবর্তনের ধারণা, যার অর্থ হলো কোন একক অনন্য উৎস থেকে পৃথিবীর সব জীব প্রজাতির উদ্ভব। ১৮৫৯ সাল পর্যন্ত, বিবর্তনীয় সব প্রস্তাব, যেমন প্রকৃতিবিদ জ্যান-ব্যাপটিস্ট লামার্কের প্রস্তাবগুলি সমর্থন করতো রৈখিক বিবর্তনকে, শাখাবিবর্তনকে না। যেমন উল্লেখ করা চলে অ্যারিস্টটলের স্কালা ন্যাচুরিতে বর্ণিত জীবনের শৃঙ্খল, যেখানে জীবের অগ্রগমণ হয়েছে একরৈখিকভাবে একটি বৃহত্তর পরিপূর্ণতার দিকে। ডারউইন আরও লক্ষ্য করেছিলেন যে বিবর্তন ক্রমিক উপায়ে হওয়া উচিত, কোন বড় বিরতি ছাড়াই বা ধারাবাহিকতা ব্যহত হওয়া ছাড়াই। আর সবশেষে, তিনি যুক্তি করেছিলেন যে বিবর্তনের প্রক্রিয়াটির উপায় আসলে 'প্রাকৃতিক নির্বাচন'।

এই চারটি পরিজ্ঞান ডারউইনের প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান দর্শনের একটি নতুন শাখার ভিত্তি হিসাবে পরিবেশিত, যাকে আমার জীববিজ্ঞানের একটি দর্শন হিসেবে চিনি এখন। যদিও এই দর্শন দর্শনের একটি নতুন শাখা হিসেবে সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হতে হতে শতাব্দী পার হয়ে গিয়েছে, কিন্তু মূল বুননটি ডারউইনীয় ধারণার উপরই ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। উদাহরণস্বরূপ, ডারউইন বিজ্ঞানে ঐতিহাসিকতা চালু করেছেন। পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন বিপরীতে বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞান আসলে একটি ঐতিহাসিক বিজ্ঞান যেখানে একজন বিবর্তন বিজ্ঞানী জীববিজ্ঞানের ঘটনাগুলি ইতিহাসে ইতিমধ্যেই ঘটেছে এমন ঘটনা এবং প্রক্রিয়ায় ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। বৈজ্ঞানিক সূত্র এবং পরীক্ষা এসব ঘটনা এবং প্রক্রিয়া ব্যাখ্যার জন্য অনুপযুক্ত কৌশল। এর পরিবর্তে একজন বিবর্তন বিজ্ঞানী বিশেষ পরিস্থিতির একটি আনুমানিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি ঐতিহাসিক বিবরণ গঠন করেন যা ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির একটি ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা করে।

উদাহরণস্বরূপ, ক্রিটাসিয়াস যুগের শেষে ডাইনোসরদের হঠাৎ বিলুপ্তির জন্য তিনটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ প্রস্তাব করা হয়েছে: বিধ্বংসী মহামারী; জলবায়ুর বিপর্যয়কর পরিবর্তন; এবং শেষটি হলো উল্কার আঘাত, যাকে আলভারেজ তত্ত্ব বলে। প্রথম দুটি তত্ত্ব পরে প্রমাণের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় বাতিল বলে ঘোষিত হয়। সমস্ত পরিচিত ঘটনা, প্রমাণ এবং ব্যাখ্যা আলভারেজ তত্ত্বকেই এখন বৈধতা দেয়, যা এখন ব্যাপকভাবে গৃহিত। ঐতিহাসিক বিবরণকে পরীক্ষা করলে বোঝা যায় যে বিজ্ঞান ও মানবিকের মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান রয়েছে যা পরীক্ষা দিয়ে প্রমাণ করা সম্ভব ছিলোনা, যা পদার্থবিজ্ঞানী সি. পি. স্নোকে দারুণ খটকায় ফেলেছিলো; সময়ের সঙ্গে যে পরিবর্তন সম্ভব সেই ধারণা গ্রহণযোগ্যতা হিসেবে বিবর্তনিক জীববিজ্ঞান একটি সেতু হিসেবে কাজ করেছে।

ডারউইন এবং অ্যালফ্রেড রাসেল ওয়ালেসের প্রাকৃতিক নির্বাচন আবিষ্কারকে একটি অসাধারণ দার্শনিক অগ্রগতি হিসেবে গণ্য করা আবশ্যক। গ্রীক থেকে হিউম, কান্ট এবং ভিক্টোরিয়ান যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত দর্শনের দুহাজারের চেয়েও বেশি বছরের ইতিহাসে এই দর্শনটি অজানা ছিল। প্রাকৃতিক নির্বাচনের ধারণা দিকনির্দেশনামূলক এবং অভিযোজিত পরিবর্তন ব্যাখ্যা করার জন্য উল্লেখযোগ্য শক্তি। তার প্রকৃতি হলো নিজস্ব সরলতা। পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রে বর্ণিত শক্তির মত কোন শক্তি এটা নয়; এর প্রক্রিয়া নিছকই অনুপযুক্তের বর্জন প্রক্রিয়া। 'উপযুক্তের টিকে থাকা' (survival of the fittest) নামক বিবর্তনকে ব্যাখ্যা করা পদটির এই অনক্রম বিলুপ্তি প্রক্রিয়াটি ডারউইনের সমসাময়িক দার্শনিক হার্বার্ট স্পেন্সারকে তাড়িত করেছিলো। (এই বর্ণনাটিকে দীর্ঘকাল ধরে চক্রিক যুক্তি হিসাবে ব্যঙ্গ করা হয়েছিল: "সবচেয়ে উপযুক্ত কে? যারা বেঁচে থাকে"। বাস্তবতা হলো একটি সতর্ক বিশ্লেষণ সাধারণত বলে দিতে পারে নির্দিষ্ট কিছু প্রজাতির একক কোন নির্দিষ্ট অবস্থায় কেন টিকে থাকতে ব্যর্থ হয়।)

প্রাকৃতিক নির্বাচন নীতির অসামান্য অবদান হল যে এটি "চূড়ান্ত কারণ", মানে যে কোনও পরমকারণবাদী শক্তি একটি বিশেষ শেষের দিকে অগ্রসর হয় - এর আহ্বানকে অনাবশ্যক করে তোলে । আসলে, কিছুই পূর্বনির্ধারিত নয়। উপরন্তু, নির্বাচনের উদ্দেশ্য এমনকি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ভিন্ন বা পরিবর্তিত হতে পারে, যেমন পরিবেশগত অবস্থার পরিবর্তন হয়।

প্রাকৃতিক নির্বাচনকে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ জনগোষ্ঠী প্রয়োজনীয়। বিচিত্রতার গুরুত্বের কারণে প্রাকৃতিক নির্বাচনকে দুটি ধাপের প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা উচিত: প্রচুর প্রকারণের উৎপাদনের পরে অনুপযুক্ত প্রজাতির এককের বর্জন। পরের ধাপ হলো নির্দেশকমূলক। প্রাকৃতিক নির্বাচনকে গ্রহণের মাধ্যমে ডারউইন আকষ্মিক উদ্ভব এবং প্রয়োজনীয়তা নিয়ে দার্শনিকদের মধ্যে চলা কয়েক হাজার বছর পুরোনো কলহের অবসান ঘটিয়েছেন। পৃথিবীতে পরিবর্তন হলো - প্রথম ধাপ অক্রমতা এবং দ্বিতীয় ধাপ প্রয়োজন - উভয়ের ফলাফল।

ডারউইন ছিলেন একজন সার্বিকতাবাদী: তাঁর জন্য নির্বাচনের বস্তু বা লক্ষ্য ছিল প্রাথমিকভাবে একটি প্রজাতির একক তার সম্পূর্ণতায়। জিনতত্ত্ববিদেরা প্রায় ১৯০০ সাল থেকেই জিনকে বিবর্তনের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনা করতে পছন্দ করতেন। কিন্তু গত ২৫ বছরে, তারা আবার ডারউইনিয় দৃষ্টিভঙ্গিতে ফিরে এসেছেন যেখানে সম্পূর্ণ জীবসত্তাকেই বিবর্তনের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে ধরা হয়।

১৮৫৯ সালের পরবর্তী ৮০ বছর ধরে চারটি প্রতিদ্বন্দ্বী বিবর্তনীয় তত্ত্বের মধ্যে কোনটি সবচেয়ে সঠিক তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছিলো - "রূপান্তরকরণ" ছিল একটি একক পরিব্যক্তি বা চন্ড-বিবর্তন (অতিদ্রুত বড় ধরনের পরিব্যক্তির কারনে পরিবর্তন মাধ্যমে নতুন প্রজাতি) বা নতুন প্রকার প্রতিষ্ঠা। সদিশ বিবর্তন অনুযায়ী বিবর্তন একটি নির্দিষ্ট দিক অনুসরণ করে এবং এটা কেবল বিচ্ছিন্ন বা যদৃচ্ছামূলক নয়। ল্যামার্কীয় বিবর্তন হলো অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকারের উপর নির্ভরশীলতা। এবং তারপরে ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বৈচিত্রিক বিবর্তন। ১৯৪০-এর বিবর্তনীয় সংশ্লেষণের সময় ডারউইনের তত্ত্ব স্পষ্টভাবে বিজয়ী হিসেবে আবির্ভূত হয়, যখন জিনতত্ত্বের নতুন আবিষ্কারগুলির সাথে প্রণালীবদ্ধকরণগত শ্রেণীভিত্তিক পর্যবেক্ষণের, অর্থাৎ জীবজগতকে তাদের পরস্পরের সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে শ্রেণীবিভাগের সংযোগ ঘটানো হয়। ডারউইনের তত্ত্ব এখন প্রায় পুরোপুরি বোদ্ধা বিবর্তন তত্ত্ববিদদের দ্বারা গৃহীত। উপরন্তু, এটি জীববিদ্যার নতুন দর্শনের মৌলিক উপাদানে পরিণত হয়েছে।

অন ​​দ্য অরিজিন অব স্পিসিসের প্রকাশনার পরে প্রায় এক শতাব্দী ধরে নতুন জৈবিক দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি আবিষ্কৃত হয়েছে - জৈবিক প্রক্রিয়াগুলির দ্বৈত প্রকৃতি। এই ক্রিয়াকলাপগুলি পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের সার্বজনীন সূত্র এবং একটি জিনগত প্রোগ্রাম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা নিজে প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলাফল, এবং যা লক্ষ লক্ষ প্রজন্মের জন্য জিনোটাইপ (নির্দিষ্ট প্রজাতির জেনোমের নির্দিষ্ট ধরন) তৈরি করেছে। জিনগত প্রোগ্রামের কার্যকারিতার গুণটির উপস্থিতি জীবের জন্য অনন্য, এবং এটি বিশ্বের জড়জগতে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। ডারউইনের সময়ে অাণবিক এবং জিনগত জ্ঞানের অপ্রতুলতার কারনে ডারউইন এই অত্যাবশ্যক গুণটির ব্যাপারে জানতেই পারেননি।

জীববিদ্যার নতুন দর্শন আরেকটি দিক হলো সূত্রের ভূমিকা। সূত্র ডারউইন তত্ত্বের ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করে। ভৌতবিজ্ঞানের নিয়মানুযায়ী বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব সূত্রের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত; উদাহরণস্বরূপ, গতির সূত্রগুলি মহাকর্ষের তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করেছিলো। বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানে, তত্ত্ব মূলত বিভিন্ন ধারণা, যেমন প্রতিযোগিতা, স্ত্রীলিঙ্গের পছন্দ, নির্বাচন, উত্তরাধিকার এবং আধিপত্য ইত্যাদি ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এই জৈবিক ধারণাগুলি, এবং তাদের উপর ভিত্তি করে তত্ত্বগুলি, ভৌত বিজ্ঞানের সূত্র এবং তত্ত্বগুলিতে পরিণত করা যায় না। ডারউইন নিজে এই ধারণাটি স্পষ্টত কোথাও বলেননি। কিন্তু আধুনিক চিন্তনে প্রভাব বিস্তারে ডারউইনের গুরুত্ব সম্পর্কে আমার দাবির ভিত্তি হলো গত এক শতাব্দী ধরে চলা ডারউইন তত্ত্বের বিশ্লেষণের ফলাফল। এই সময়ের মধ্যে, জীববিজ্ঞানের পরীক্ষাপদ্ধতিতে একটি আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। এই রূপান্তর শুধুমাত্র ডারউইনের দ্বারা সৃষ্ট হয়নি, কিন্তু এটি বিবর্তনিক জীববিজ্ঞানের উদ্ভব দ্বারা ব্যাপকভাবে শক্তিশালী হয়েছে। পর্যবেক্ষণ, তুলনা এবং শ্রেণীবিন্যাসের পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ঐতিহাসিক বিবরণগুলির পরীক্ষা, ইত্যাদি বিবর্তনিক জীববিজ্ঞানের মূল পদ্ধতি হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং পরীক্ষালব্ধ গবেষণাকে একপাশে ঠেলে দিয়েছে।

আমি দাবি করছি না যে ডারউইন এই যুগের সকল বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতির জন্য এককভাবে অবদান রেখেছেন। তবে ফ্রান্সের গণিতবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী পিয়ের-সাইমন ল্যাপলেস এর 'অদৃষ্টবাদ' ধারণার মৃত্যুর মতোই নতুন চিন্তনের উদ্ভব অবশ্যম্ভাবী ছিল। তবে মানুষের ইতিহাসে ডারউইন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গিগুলি সর্বাধিক জোরালোভাবে অগ্রাধিকার দিতে বা অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন।

(দুই খন্ডের লেখা। পরের পর্ব আসছে।)

মূল লেখা:
https://www.scientificamerican.com/article/darwins-influence-on-modern-thought/?utm_source=facebook&utm_medium=social&utm_campaign=sa-editorial-social&utm_content&utm_term=evolution_news_text_resurface


নির্ঘন্ট:
সার্বিকতাবাদ = holism
সার্বিকতাবাদী = holist
আংশিকতাবাদ = reductionism
আংশিকতাবাদী = reductionist
অক্রমতা = randomness
অনক্রমতা = nonrandomness
চন্ড-বিবর্তন = saltation
পরিব্যক্তি = mutation
রূপান্তরকরণ = transmutation
অদৃষ্টবাদ = determinism
বিচ্ছিন্ন = sporadic
যদৃচ্ছামূলক = fortuitous
পরমকারণবাদ = teleology
সদিশ বিবর্তন = orthogenesis
প্রণালীবদ্ধকরণ = systematics


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই ভাষার মাসে এমন বাংলায় লেখা বিজ্ঞান পড়তে পাওয়াটাই উপহার! অসংখ্য ধন্যবাদ। পরে সময় করে লেখাটা সম্পাদনা করে নেবেন - কিছু কিছু জায়গায় বাক্য এমন জটিল হয়েছে যে বুঝতে কয়েকবার পড়তে হয়েছে। আবার কিছু জায়গায় বোঝা যায়নি। যেমন,

বিবর্তন ক্রমিক উপায়ে হওয়া উচিত, কোন বড় বিরতি বা বিরতিহীনতা ছাড়াই

- এটা স্ববিরোধী শোনাচ্ছে।

লেখার কনটেন্ট নিয়ে কিছু প্রশ্ন আছে, পরে লিখবো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সজীব ওসমান এর ছবি

হুমম। হিমু সাহেব কিছু শব্দের সুন্দর বাংলা করে দিয়েছেন। তবে আমার অনুবাদ দক্ষতা খুব ভালো নয়। তারজন্য একটু সিরিয়াস লেখার অনুবাদকে বাংলায় আরও জটিল বানায়ে ফেলি। কিছু জায়গা একটু সহজ করে দেয়ার চেষ্টা করবো।

আপনি একটা ভুল ধরেছেন, থ্যাংকু। এটা হবে 'বিরতি ছাড়াই বা ধারাবাহিকতা ব্যহত হওয়া ছাড়াই'।

হিমু এর ছবি

ল্যামার্কীয় বিবর্তন হলো অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকারের উপর নির্ভরশীলতা।

এটা এর্নস্ট মায়ারের লেখার অনুবাদ, তাই পরে কোনো এক সময় পৃথক আরেকটি লেখায় বিবর্তন সম্পর্কে ল্যামার্কের প্রস্তাবের একটি বিশদ ব্যবচ্ছেদের আবদার জানিয়ে গেলাম। বিবর্তন প্রসঙ্গে কথা উঠলে শিক্ষিত এবং অশিক্ষিত নির্বিশেষে বিপুলসংখ্যক মানুষ যে কানাগলিতে ঘুরপাক খায়, সেটা ল্যামার্কীয়।

সজীব ওসমান এর ছবি

চলুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১.

ব্যাপারটা পূর্ণাঙ্গভাবে বোঝার জন্য কিছু শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ প্রয়োজন

এই কথাটা মার্ক্স, ফ্রয়েড, আইনস্টাইন সবার অবদান বোঝার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা বলেছিলেন, “শৈল্পিক চলচ্চিত্র ঠিকভাবে বোঝার জন্য দর্শকের নূন্যতম শৈল্পিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক”।

২.

এর পরিবর্তে একজন বিবর্তন বিজ্ঞানী বিশেষ পরিস্থিতির একটি আনুমানিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি ঐতিহাসিক বিবরণ গঠন করেন যা ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির একটি ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা করে

ধর্মগুরুদের সাথে সংঘাতের একটা কারণ এখানে বোঝা যাচ্ছে। তারাও পুরাঘটিত বিষয়ের অনুমাননির্ভর ঐতিহাসিক বিবরণ নির্মাণ করেন এবং তার আলোকে সংঘটিত বিষয়াবলীর ব্যাখ্যা দাঁড় করান। একটা পার্থক্য অবশ্য আছে। ধর্মগুরুদের নির্মিত বিবরণে মূল কার্যকারণে অলৌকিকত্ব ও ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশের আবশ্যিক ভূমিকা আছে। পক্ষান্তরে একজন বিবর্তন বিজ্ঞানী কার্যকারণ নির্মাণে যুক্তি ও বাস্তবতার আশ্রয় নেন।

৩.
আলভারেজ তত্ত্বের সপক্ষে কি যথেষ্ট প্রমাণ আছে — প্রত্মতাত্ত্বিক, জীব প্রত্মতাত্ত্বিক?

৪.

ঐতিহাসিক বিবরণকে পরীক্ষা করলে বোঝা যায় যে বিজ্ঞান ও মানবিকের মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান রয়েছে যা পরীক্ষা দিয়ে প্রমাণ করা সম্ভব ছিলোনা, যা পদার্থবিজ্ঞানী সি. পি. স্নোকে দারুণ খটকায় ফেলেছিলো; সময়ের সঙ্গে যে পরিবর্তন সম্ভব সেই ধারণা গ্রহণযোগ্যতা হিসেবে বিবর্তনিক জীববিজ্ঞান একটি সেতু হিসেবে কাজ করেছে।

এই বাক্যটি আমার বোধগম্য নয়। এবং এটি হঠাৎ করে কোত্থেকে উদয় হলো তাও বোধগম্য নয়।

৫.
বৈচিত্রতার > বিচিত্রতার
প্রচুর প্রকারণের উৎপাদনের > প্রচুর প্রকরণের উৎপাদনের

পৃথিবীতে পরিবর্তন হলো - প্রথম ধাপ অক্রমতা এবং দ্বিতীয় ধাপ প্রয়োজন - উভয়ের ফলাফল।

পরিষ্কার হলো না। বিশেষত, “প্রয়োজন – উভয়ের ফলাফল” কথাটার মানে বুঝতে পারিনি।

৬.

লক্ষ্য ছিল প্রাথমিকভাবে একটি স্বত্বা তার সম্পূর্ণতায়

একটি সত্ত্বার সম্পূর্ণতা বোঝার উপায় কী?

৭.

পর্যবেক্ষণ, তুলনা এবং শ্রেণীবিন্যাসের পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ঐতিহাসিক বিবরণগুলির পরীক্ষা, ইত্যাদি বিবর্তনিক জীববিজ্ঞানের মূল পদ্ধতি হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং পরীক্ষালব্ধ গবেষণাকে একপাশে ঠেলে দিয়েছে।

এইখানে পরীক্ষালব্ধ গবেষণা ‘ফেইল’ করলো কোথায়? পর্যবেক্ষণ>তুলনা>শ্রেণীবিন্যাসকরণ>প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণ বিশ্লেষণ – পুরো প্রক্রিয়াটি তো যথাযথ ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাই বটে। নাকি ‘পরীক্ষালব্ধ গবেষণা’ বলতে আপনি অন্য কিছু বোঝাচ্ছেন?

৮.
নিঃসন্দেহে ইহজাগতিকতা ডারউইনের আবিষ্কার নয়। তবে প্রাণের উদ্ভব ও প্রজাতির উদ্ভবের ব্যাপারে ডারউইনীয় বিবর্তনের ব্যাখ্যা সৃষ্টির ক্ষেত্রে অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাকে নাকচ করেছে। অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নাকচ হলে ‘স্রষ্টা’র ধারণাটিও নাকচ হয়ে যায়। ডারউইনীয় বিবর্তনের গুরুত্বটা এইখানে মানুষের গোটা চিন্তার জগত, দর্শনের ভিত্তির বাইরে প্রতিদিনের দুনিয়াতেও এসে হানা দেয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

তবে প্রাণের উদ্ভব ও প্রজাতির উদ্ভবের ব্যাপারে ডারউইনীয় বিবর্তনের ব্যাখ্যা সৃষ্টির ক্ষেত্রে অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাকে নাকচ করেছে।

ভুল! দেঁতো হাসি

অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নাকচ হলে ‘স্রষ্টা’র ধারণাটিও নাকচ হয়ে যায়।

ভুল! দেঁতো হাসি

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কেবল দাঁত বের করে হাসলে চলবে? একেবারে দাঁতভাঙা জবাব দিয়ে 'প্রমাণ' করে দিতে হবে ডারউইন কতোটা ভুল, এবং বিবর্তনবাদে 'বিশ্বাস' করাটা আরও কতো বড় ভুল!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

ডারউইন বা বিবর্তনবাদ ভুল আমি কোথায় বললাম?!!! দেঁতো হাসি

তবে প্রাণের উদ্ভব ও প্রজাতির উদ্ভবের ব্যাপারে ডারউইনীয় বিবর্তনের ব্যাখ্যা সৃষ্টির ক্ষেত্রে অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাকে নাকচ করেছে।

আমি ডারউইন বা বিবর্তনবাদ ভুল বলিনি, আমি "নাকচ" শব্দটাকে ভুল বলেছি। এখানে আপনার এই শব্দটার আনকোয়ালিফাইড ব্যবহার এই 'নাকচত্বের' চূড়ান্ত সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা আছে বলে দাবি করে বলে প্রতীয়মান হয়। কিন্তু আসলে তাতো নয়, তাই না? সংখ্যাগরিষ্ঠ সিরিয়াস বিজ্ঞানীরা হয়তো বিবর্তনবাদ মেনে নেন, কিন্তু সাধারণ মানুষ? পৃথিবীর কত পার্সেন্ট সাধারণ মানুষ মনে করেন বিবর্তনবাদ অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছে? বহু মানুষ আছেন যারা বিবর্তনবাদও মানেন আবার অলৌকিক পরমসত্তার অস্তিত্ত্বও মানেন। এমনকি বহু বিজ্ঞানীও আছেন এমন। যেমন ধরুন, এদের অনেকে বলেন - প্রাণের উদ্ভব ও প্রজাতির উদ্ভবের ব্যাপারে বিবর্তনবাদ ঠিকাছে, কিন্তু এতে করে ঈশ্বরের অস্তিত্ত্ব বা অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবণা নাকচ হয় না, কারন পৃথিবী সৃষ্টির সময়ই ঈশ্বর হয়তো বিবর্তনের প্রবণতাটা তার সৃষ্টির মধ্যেই গ্রথিত করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে সেই প্রবণতা বা নিয়ম ধরেই বিবর্তন হয়েছে। অর্থাৎ, বিজ্ঞানীদের ঐ বিবর্তনটাও মূলগতভাবে আসলে ঈশ্বরেরই সৃষ্টি! সুতরাং কোনো অলৌকিক পরমসত্তার অস্তিত্ত্ব বা তাঁর হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা মোটেই নাকচ হয় না। পৃথিবী হোক কি বিগ ব্যাং, যে কোন ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানকে স্বীকার করে নিয়েই অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবণায় বিশ্বাসীদের অনেকে এই যুক্তি দিয়ে থাকেন। বিশ্বাসীরা দেখিয়ে দিচ্ছেন যে --

প্রাণের উদ্ভব ও প্রজাতির উদ্ভবের ব্যাপারে ডারউইনীয় বিবর্তনের ব্যাখ্যা সৃষ্টির ক্ষেত্রে অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাকে নাকচ করে না!

এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে আপনি কি বলবেন? হ্যাঁ, আপনি হয়তো তখন তার বিশ্বাসের পক্ষে প্রমাণ চাইবেন বা সেটাকে আপনার বিস্তৃত যুক্তি-দর্শন ইত্যাদি দিয়ে বিচার-বিশ্লেষণের করতে চাইবেন, কিন্তু সেটা একটা ভিন্ন এবং বৃহত্তর বিতর্ক হয়ে যাবে। শুধুমাত্র বা এককভাবে প্রাণের উদ্ভব ও প্রজাতির উদ্ভবের ব্যাপারে ডারউইনীয় বিবর্তনের ব্যখ্যা দিয়ে হয়তো তার মোকাবেলা করা যাবে না, আরও অন্য বিষয়ও আনতে হবে। তাহলে কি আপনার উদ্ধৃত স্টেটমেন্টটা আর এ্যজ-ইজ সঠিক থাকলো? এটাই বলতে চাইছিলাম।

অলৌকিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নাকচ হলে ‘স্রষ্টা’র ধারণাটিও নাকচ হয়ে যায়।

এই লাইনের যুক্তির জবাবে কার কাছে যেন একটা পালটা প্রশ্ন শুনেছিলাম (নাকি পড়েছিলাম, মনে নেই) -- স্রষ্টা থাকলেই কেন তাঁকে বারবার, পদেপদে, কথায়-কথায় অলৌকিক হস্তক্ষেপ করতে হবে? আমি তো কোনো কারন দেখছি না। একবারে নিয়মকানুনসুদ্ধ যতটুকু দরকার ততটুকু সৃষ্টি করে ছেড়ে দিয়ে, অর্থাৎ বলটাকে নিজের মতো গড়াতে দিয়ে (সেট দা বল রোলিং), ঐ অলৌকিক সত্তা একটা লম্বা ঘুম দিলে বা অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে অসুবিধা কি? সর্বক্ষণ তাঁর মানুষকে বাচ্চাদের মতো আলো-আলো-তুলো-তুলো করে দেখভাল করতে হবে বা মানুষ ছাড়া তাঁর আর খায়া-দায়া কোনো কাজকম্ম নাই, এত বড় কথা ভাবার ধ্যাষ্টতা পাইলা কই তুমি??

মোদ্দা কথা হলো, উপরে যাদের বক্তব্য তুলে ধরলাম, তাঁদের মতে প্রাণের উদ্ভব, প্রজাতির উদ্ভব বা বিশ্বব্রম্মাণ্ড উদ্ভবের ব্যাপারে ডারউইনীয় বিবর্তন তত্ত্বই হোক আর বিগ ব্যাং থিওরীই হোক বা অন্যকোন তত্ত্ব - সৃষ্টির ক্ষেত্রে স্রষ্টা বা অলৌকিক হস্তক্ষেপের ধারণা বা সম্ভাবনাকে তা নাকচ করে না। সুতরাং এই বক্তব্যের আলোকে আপনার উদ্ধৃত স্টেটমেন্ট স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবে সঠিক নয় বলেই মনে হচ্ছে।

যাজ্ঞে, এগুলি আমার বক্তব্য না, তবে মাথায় ঢোকার পর এককালে এগুলি নিয়ে ভেবে প্রভূত মজা পেয়েছি। তার কিছুটা শেয়ার করলাম আপনার সাথে। এজন্যেই দাঁত বের করে হাসা। পারলে আপনিও হাসুন এবং হাসতে হাসতেই জবাব দিন। কার দাঁত ভাঙাভাঙিতে নাই আমি!!! দেঁতো হাসি

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অল ক্লিয়ার!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

ব্যস্‌? মন খারাপ

****************************************

সজীব ওসমান এর ছবি

মন্তব্যটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১.
সহমত। তবে লেখক সম্ভবত পদার্থবিজ্ঞানের স্নাতক পর্যায়ের (গ্র্যাজুয়েশান শব্দটা ব্যবহার করেছেন লেখক) পড়াশোনার কথা বলছিলেন আইনস্টাইনের ব্যাপারে। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রগুলি অনুধাবনেও নিশ্চয়ই ভালোই পড়াশোনা দরকার।

২.
নিশ্চয়ই। তবে ধর্মের সাথে সবচেয়ে মিল যেখানে সেটা হলো আপনার হাতে আগে 'ফলাফল' এসে হাজির। সাধারন বিজ্ঞান পরীক্ষা প্রক্রিয়ায় এটা ভিন্ন। তারপরে এই ফলাফল থেকে আপনি পেছনে গিয়ে যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করবেন কেন ফলাফলটা হলো। ধর্মবিশ্লেষণে যুক্তির অনুপস্থিতি থাকে।

৩.
মেক্সিকোর উপকূলে Chicxulub impact নিয়ে কিছু তথ্যপ্রমাণ আছে যা অন্য তত্ত্বগুলিতে অপ্রতুল।

৪.
বিবর্তনের ধারণাকে মানুষের চিন্তার সাথে যুক্তি ঘটাতে হয়তো এভাবে বলেছেন লেখক। যেমন, মানুষের আচারণ ইত্যাদি বর্ণনা করার মতো বিষয়গুলি সাধারণত মানবিকের বিষয়গুলিতেই ঘটে (সাহিত্য, ইতিহাস ইত্যাদি)। এর সাথে জীববিজ্ঞানের সংযোগ ঘটানো মানুষের জন্য একটা দারুণ প্রগতি। আমরা জীববৈজ্ঞানিকভাবে এখন জানি কেন আমরা কোন নির্দিষ্ট ধরণের আচরণ করি।

৫.
বিচিত্রতা চলুক
প্রকারণটা ইচ্ছা করেই আকার যুক্ত। আমি রেখে দিচ্ছি এভাবেই। প্রকরণ শব্দটা সম্ভবত বাংলায় ভুলভাবে ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন প্রকার বোঝাতে। এই অর্থ অন্য।

প্রথম এবং দ্বিতীয় ধাপ, উভয়ের ফলাফল।

৬.
ইংরেজী ইনডিভিজুয়াল শব্দটাকে আমি সত্তা হিসেবে ব্যবহার করেছি। তবে এইটা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। হওয়া উচিত ছিলো প্রজাতির একক (যা একটা শব্দে বোঝানো সম্ভব কিনা জানিনা)। লেখাতে পরিবর্তন করে দেবো।

বাক্যটি দিয়ে বোঝাতে চেয়েছি যে আমরা একটি প্রজাতির একজন সদস্যকে তার সার্বিকতায় বিশ্লেষণ করতে চাই বিবর্তনিক জীববিজ্ঞানে। এককে প্রতিটি কোষ বা জিন পর্যায়ে বিশ্লেষণের চাইতে সেটাই বেশি উপযুক্ত।

৭.
সাধারণ বিজ্ঞান পরীক্ষার যে সাধারণ 'মেথডলজি' সেটাকে পাশে ঠেলে দিয়েছে। বির্বতনিক জীববিজ্ঞানে ব্যাপারটা সত্যি বলেই মনে করি।

৮.
চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।