হ্যালোইনে সত্যিকারের বেতালসিদ্ধির গল্প

সজীব ওসমান এর ছবি
লিখেছেন সজীব ওসমান (তারিখ: বিষ্যুদ, ০১/১১/২০১৮ - ৯:৫৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজ হ্যালোইন। জানেনই বোধ হয়, ৩১ অক্টোবর দিনটাতে উত্তর আমেরিকায় হ্যালোইন বেশ জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা হয়। এই উৎসবে যেমন খুশি তেমন সাজোর মতো করে বিশেষ করে শিশুরা সেজে বিভিন্ন বাসায় গিয়ে চকোলেট চায়, গৃহস্থরাও সানন্দে বিভিন্ন কায়দার চকলেট কিনে রাখেন বাচ্চাদের জন্য। তবে উৎসবটা শুধু ছোটদেরই নয়, বড়রাও সেজেগুজে বেরোয় এই দিনটায়। হ্যালোইনের সাজাগোজের একটা বড় অংশ হলো ভুত, প্রেত, পেত্নী, জোম্বি বা বেতাল ইত্যাদির মতো সাজা। এর মধ্যে বেতালের মতো সাজা ব্যাপারটা হলো একটা ভয়ানকভাবে মৃত মানুষের মতো সেজে হেঁটে বেড়ানো। ব্যাপারটা মজা করতেই করা।

জোম্বি বা বেতাল বলতে মোটামুটি বোঝায় কোন মৃতদেহ যার উপর অন্যকেউ ভর করে তাকে পরিচালনা করছে। অথবা বলা চলে ইচ্ছাশক্তিহীন, অন্যের আদেশে চলা কোন একসময় জীবিত বস্তু। ব্যাপারটা রূপকথাতেই পাওয়া যায়, মানুষ কখনও বেতাল হয়েছে সেটা এখন পর্যন্ত আমরা জানিনা। তবে ভারতীয় উপকথা বা রূপকথায় ভুতে ভর করা ব্যাপারটা আছে, কিন্তু সেটা মৃতদেহে ভর করা নয়। ব্যাপারটা অনেকটা পশ্চিমা গল্পেই মোটামুটি পাওয়া যায়। সত্যিকারের বেতাল হয়? উত্তরে বলবো, হয়। প্রকৃতিতে অন্যধরনের পরজীবি আর পোষকজীবের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় এই বেতালসিদ্ধির উদাহরন।

সেসব কথায় আসছি। তবে হ্যালোইনের সাথে অন্য জীবের এক অদ্ভুত সম্পর্কের কথা শুনে হয়তো অবাক হবেন, সেই গল্পটা বলি। আগের দিনের ইউরোপ/আমেরিকায় ডাইনি বলে কাউকে প্রমাণিত করা গেলে শাস্তি ছিলো প্রায়ই মৃত্যুদন্ড। তেমনি ১৬৯২ - ৯৩ সালে আমেরিকায় ২০০ জন মানুষকে প্রেতসাধনা বা ডাকিনীতন্ত্র বা উইচক্রাফ্টিং এর অভিযোগে বিচার করা হয়, তাদের মধ্যে ১৪ জন মহিলা এবং ৫ জন পুরুষকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। ঘটনাটি ঘটে বোস্টনের পাশের শহর সালেমে। ফলে ঘটনাটা 'উইচ ট্রায়ালস ইন সালেম' বা 'সালেমের ডাইনীদের বিচার' নামে পরিচিত। এখন হ্যালোইনে প্রতিবছর এই শহরটি অনন্য সাজে সজ্জিত হয়। বহু মানুষ ঘুরতে আসে।

অধুনা কিছু প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে - যে মানুষগুলিকে মারা হয়েছিল তারা রাই (পাতিগম) রুটি খেতে অভ্যস্ত থাকায় ছত্রাক সংক্রমিত (পাতিগমের ছাতা) কিছু তেমন রুটি ভক্ষণের কারনে অদ্ভুত আচরণ করছিল। এই ছত্রাকের নাম ক্লেভিসেপস পারপিউরিয়া - যারা এলএসডি'র মত একধরনের প্রাকৃতিক রাসায়িনক যৌগ তৈরি করতে পারে। এলএসডি তুমুল হ্যালোসিনোজেনিক বা মস্তিষ্কবিকৃতকারি যৌগ হিসেবে পরিচিত। তো ছত্রকের তৈরি প্রাকৃতিক যৌগটি খেলেও একইরকম হ্যালুসিনেশান হয়। মস্তিষ্কের সেরেটোনিন গ্রাহকের সঙ্গে মশকরা করে এইধরনের যৌগ। তবে হ্যালুসিনেশানটা সঠিক কিভাবে হয় সেটা বোঝা যায়নি এখনও। ফলে আক্রান্ত মানুষ অদ্ভুত জিনিসকে সত্যি মনে করা, বিড়বিড় করা, উল্টাপাল্টা পা ফেলে হাঁটা এসবই হতে পারে। এমন আচরনের কাউকে সে যুগে লোকে ডাইনী ভাববেনা কেন?


সালেমের ডাইনী বিচারের চিত্রকর্ম

সুখের ব্যাপার হলো এমন ছত্রাকের আক্রমণে মানুষ আর যাই হোক, জোম্বি বা বেতালে পরিণত হয় না। তবে ছত্রাকের দ্বারা কাউকে বেতালে পরিণত করার ঘটনা অসম্ভব নয়। তেমনটা ঘটেও। প্রথম সত্যিকারের বেতালের গল্পটা এরকম একটা ছত্রাককে নিয়েই।

পিঁপড়াবেতালি ছত্রাক

আসলেই বেতাল দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে ব্রাজিলের আমাজন বনের গভীরে। সেখানে কোন গাছের ঠিক ২৫ সেন্টিমিটার উপরের কোন পাতার দিকে চোখ রাখুন। আপনি ভাগ্যবান হলে সেখানে কোন পাতার নিচে একটু খুঁজলেই দেখতে পাবেন একটি পিঁপড়া তার চোয়াল দিয়ে কোন পাতার মধ্যশিরা শক্ত করে ধরে আছে, যেন বাঁচার চেষ্টায়। তবে প্রাণ তার ইতিমধ্যেই গত। কিন্তু তার দেহ রয়েছে এক ছত্রাকের দখলে - নাম Ophiocordyceps unilateralis, পিঁপড়াবেতালি ছত্রাক!


বেতালসিদ্ধ পিঁপড়ার মাথা থেকে বেরিয়ে বেতালকারী ছত্রাক

এই ছত্রাক যখন সূত্রধার পিঁপড়াকে আক্রমণ করে তখন তারা পোকাটির দেহের ভেতরেই বেড়ে ওঠে, তার দেহের সব পুষ্টি কেড়ে নিয়ে আর মস্তিষ্ককে ছিনতাই করে। সপ্তাহখানেক সময়ে সে পিঁপড়াকে তার দলচ্যুত করে নিয়ে আসে আর পাশের কোন গাছ বেয়ে উঠে পড়তে নির্দেশ দেয়। ঠিক ২৫ সেন্টিমিটার মতো ওঠার পরে পিঁপড়াটি থামে, ছত্রাকের নির্দেশেই - কারন এই উচ্চতাটায় আছে ছত্রাকটির বেড়ে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত তাপমাত্রা আর আর্দ্রতা। ছত্রাক পিঁপড়াটিকে বাধ্য করে কোন পাতার মধ্যশিরা বা ডালে শক্ত করে কামড়ে ধরতে। শেষপর্যন্ত সে পিঁপড়ার মাথা দিয়ে একটা লম্বা অঙ্গ বের করে বৃদ্ধি ঘটায়, একটা কন্দের মতো গঠন তৈরি করে যা ভর্তি থাকে স্পোর, মানে ছত্রাক বীজে। আর যেহেতু পিঁপড়ারা গাছের গুড়িতে তাদের বসবাস গড়ে তোলে, ছত্রাক থেকে বীজ নিচে পরে সেই পিঁপড়া গ্রামের অন্য সদস্যকেও সেভাবে ছত্রাকটি আক্রমণ করে একে একে বেতাল বানিয়ে দেয়।

প্রকৃতির এই চমকপ্রদ ঘটনাটা নিয়ে ডেভিড এটেনবরোর বিখ্যাত ভিডিওটি দেখেছেন নিশ্চয়ই -

ছত্রাকটি যখন পিঁপড়ার রক্তনালীতে প্রবেশ করে তখন তারা এককোষী জীবের মতো কাজ করে, পরবর্তীতে সেই এককোষী ছত্রাকগুলি নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ে ধীরে ধীরে পিঁপড়াটির দেহ আর মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকে বিভিন্ন রাসায়নিক আর জৈবিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে। শেষে সেই পিঁপড়া ছত্রাকটির দাসে পরিণত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। তবে এই প্রাকৃতিক খেলায় ছত্রাকটি এককভাবে জয়ী হয় সেটা বলা যাবেনা। এদেরকে খাওয়ারও পোকা যেমন আছে, তাদের এদেরকে মেরে ফেলা অন্য ছত্রাকও পাওয়া যায়। নাহলে হয়তো পিঁপড়াদের বেঁচে থাকা কষ্টকরই হতো!

ডারউইনের ভয়ঙ্কর দানব

প্রকৃতির এক নিষ্ঠুর ঘটনা অবলোকন করে চার্লস ডারউইন বেশ মুশড়ে পরেছিলেন। Ichneumonidae গোত্রের একধরনের বোলতা তার বংশবিস্তারের সময় হয় গাছপালা লতাপাতা ঘুরে ঘুরে মথ বা প্রজাপতির ছানা, মানে শুয়োপোকা খুঁজতে থাকে। খুঁজে পেলে সেই অসহায় শুয়োপোকার দেহে ডিম পেড়ে দেয়। শুয়োপোকাটির তখন আর কিছুই করার থাকেনা। মানে বেতালে পরিনত হয়। শুয়োপোকাকে ভেতর থেকে জ্যান্ত খেয়ে সেখান থেকে নতুন বোলতা বেড়ে ওঠে এবং জীবন পায়। বলা চলে শুয়োপোকার জীবন শুষে নিয়ে তার কাছ থেকে নতুন জীবন পায় বোলতা। বেতাল হওয়ার অদ্ভুত ভৌতিক কাহিনী!


এক অভাগা শুয়োপোকা থেকে বেরিয়ে আছে বোলতার ছানাপোনা

এই জিনিস প্রত্যক্ষ করে দারুণভাবে প্রভাবিত ডারউইন তার হতাশা প্রকাশ করেছিলেন তার বন্ধু হার্ভার্ডের উদ্ভিদবিজ্ঞানী আসা গ্রের কাছে। এক চিঠিতে লিখছেন -

"প্রশ্নটি একটু ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে: তবে বিষয়টি আমার জন্য সর্বদাই বেশ বেদনাদায়ক। আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। নাস্তিক্যভাবে লেখার কোনও ইচ্ছাই আমার ছিল না, কিন্তু মেনে নিচ্ছি যে অন্যরা যত পরিষ্কারভাবে বিষয়টা দেখে সেভাবে আমি দেখতে অপারগ, যদিও আমিও সেভাবেই দেখতে চাই - আমাদের চারিদিকে ছড়িয়ে থাকা নকশা এবং উপকারের প্রমাণগুলিকে। আমার মনে হচ্ছে পৃথিবী জুড়ে শুধুই কষ্ট-দুদর্শা। আমি নিজেকে বোঝাতে পারছি না যে একজন উপকারী এবং সর্বশক্তিমান খোদা - সৃষ্টিকর্তা Ichneumonidae (পরজীবি বোলতা) তৈরি করেছেন যা শুঁয়োপোকাদেরকে জীবন্ত দেহের ভেতর থেকে খেয়ে ফেলার স্পষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে বানানো"

কী ভাবছেন? জীবন্মৃত বেতাল হওয়ার কী ভয়ঙ্কর বাস্তব কাহিনী! হয়তো ভাবছেন এমন জিনিস আমাদের দেশে বিরল। কিন্তু এই পুরো বেতাল হওয়ার ঘটনাটাকে চলমান দেখতে না পেলেও আমি জানি আমরা বেশিরভাগই এমন জিনিস আমাদের দেশে গাছে বা ডালে দেখেছি যেটা যে আসলে অচল বেতাল সেটা বুঝিনি। নিচের ছবিটি দেখুন। একটু লক্ষ্য করলেই গাছের ডালে বা পাতায় এমন গঠন দেখতে পাবেন।

আলেকজান্ডারের মতো কৃমি

৩৩৩ খ্রীষ্টপূর্বে আলেজান্ডার দ্য গ্রেট গোর্ডিওন শহরে তার সেনাবাহিনী নিয়ে প্রবেশ করলেন। সে শহরে কোন কারনে ছিলো এক বিশাল গেরো। নাম শহরের নামেই - গোডিয়ান নট বা গোর্ডিওনের গেরো। এই গেরো নিয়ে শ্রুতি ছিলো এমনটা যে যেই ব্যক্তি এই অতি জটিল গেরোকে খুলতে পারবেন তিনি একদিন পুরো এশিয়া মহাদেশে রাজত্ব করবেন। আলেকজান্ডার চেষ্টা চরিত্র করে সেই গেরো খুলতে না পেরে নিজের তলোয়ার বের করে আনলেন। তারপর এক কোপে গেরো কেটে সামনে এগিয়ে গেলেন। সেই গেরোর আশির্বাদে পরে তিনি সত্যিই এশিয়া মাইনরে রাজত্ব করেছেন!

এই কাহিনী থেকে পরে ইংরেজিতে একটা বাগধারা প্রচলিত হয়েছিলো - “to cut the Gordian Knot"। মানে হইলো কোন কার্য যদি বেশ কঠিন হয় তবে সেটা সমাধানের জন্য মোটাদাগের কোন উপায় বের করে সমাধান করা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় দেশ থেকে ভিক্ষুক নির্মূল করার জন্য অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নতির পথে না গিয়ে ভিক্ষুকদের জেলে পুরে দেয়াটা হবে "কাটিং দ্য গর্ডিয়ান নট"। কেন এতো কথা বলছি এই গেরো নিয়ে? প্রাণীরাজ্যে একটা প্রাণী আসলে যার নাম গর্ডিয়ান কৃমি! জটিল জীবনচক্র সমাধানের সে একটা আপাত সহজ কিন্তু মোটাদাগের সমাধান বের করেছে বলে এই নাম।


একটা মৃত বেতাল ঝিঁঝিঁপোকা থেকে বেরিয়ে আছে অনেকগুলি কৃমি

যখন তারা অপরিনত বা শূককীট অবস্থায় থাকে তখন তারা পানিতে সুবিধামত অন্য পোকার শূককীট বা মূককীটদের খাবার হয়। ফলে সেই পোকা যখন পরিনত হয়ে উড়ে বেড়ায় তখন এই কৃমিও তাদের গায়ের সাথে লেগে থাকে। কৃমিওয়ালা সেই পোকাদের তারপর যখন কৃমির আসল পোষক, ঝিঁঝিঁপোকা ধরে খেয়ে ফেলে তখনই এই গর্ডিয়ান কৃমির দৈহিক বৃদ্ধির আসল পর্যায় শুরু হয়। ঝিঁঝিঁপোকার পাকস্থলী থেকে বেরিয়ে এরা তাদের অন্য দেহগহ্বরে আশ্রয় নেয়। সেইভাবে পোকার দেহ থেকে খাদ্যপুষ্টি গ্রহণ করে এরা কয়েক ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে যেতে পারে। কোন মুখ বা চোষকহীন এই কৃমি যে কিভাবে খাদ্যগ্রহণ বা পাকস্থলী বা পোকার বহিআবরণ ভেদ করে সেটা একটা রহস্যের ব্যাপার এখনও। তবে দেখা গিয়েছে যে এদের ত্বক দিয়েই পোকার দেহ থেকে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে কৃমিগুলি।

তবে, সবচেয়ে মজার কাহিনী এখনও বলিনি। ঝিঁঝিঁপোকা কিভাবে বেতাল হয়? দেখা গিয়েছে যে গর্ডিয়ান কৃমি ঝিঁঝিঁপোকার দেহে বসে অনেক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার বা স্নায়ুসঞ্চালক রাসায়নিক ত্যাগ করে। এর ফলে পোকার মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত হয় কৃমির আদেশে। একটা উদাহরণ দেয়া যায়। যার জন্য নাম ঝিঁঝিঁপোকা সে যদি ঝিঁঝিঁ শব্দই না করে তাহলে কেমন হয়? আসলে কৃমি আক্রান্ত ঝিঁঝিঁপোকা তাদের বিরক্তিকর একঘেয়ে এই ডাক বন্ধ করে চুপচাপ বসে থাকে। কেন এমন করে সেটা আসলেই এক কঠিন প্রশ্ন। তবে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন ঝিঁ ঝিঁ করতে যেই শক্তি প্রয়োজন হয় সেটা অপচয় না করে কৃমিকে শক্তি যুগিয়ে যাওয়ানোর জন্যই কৃমি পোকাকে আদেশ দেয় ডাক বন্ধ করতে!

এবার আসি পরের পর্বে। যখন কৃমির আর পোষকের প্রয়োজন হয়না, অর্থাৎ তারা পূর্ণবয়স্ক হয় এবং প্রজননের সময় হয় তখন তারা পোকাকে আরেকটা অদ্ভুত নির্দেশ দেয়। যে পোকার কোনদিন পানিতে যাওয়ার কথাই ছিলোনা সে পোকা যদি কৃমি আক্রান্ত হয় তবে প্রতিবার পানি দেখামাত্রই পানিতে ঝাঁপ দেবে। কারন কৃমি তাকে সেভাবে চালিত করে। বেতাল না বলে একে কী বলবো? পোকা পানিতে ঝাঁপ দিলে কৃমি বেরিয়ে আসে, বিপরীত লিঙ্গের সাথে মিলিত হয়ে আবার শূককীট ছাড়ে এবং সেই শূককীট পরের পোকার সন্ধান করে!

আরশোলাবেতালি বোলতা

প্রথমেই একটা পোকার ছবি দেখে নিন, বোলতা। যদিও এই পোকার আচরণ নিয়ে বাংলাদেশে খুব বেশি কাহিনী লেখা নাই তারপরও দেখেই বুঝতে পারছেন যে এমন বোলতা আমাদের দেশেই দেখেছেন। আর এরা যাদেরকে বেতাল বানায়, সেই তেলাপোকা বা আরশোলা জাতেরাও আমাদের দেশে সহজলভ্য। সেজন্য এমন বেতালের ভৌতিক কাহিনী আমাদের আশেপাশেই যে ঘটছে সেটা সম্ভবত বুঝতে পারা যায়।

জীবনচক্র সম্পূর্ণ করার জন্য এমারেল্ড জুয়েল ওয়াস্প বা আরশোলাবেতালি বোলতার দরকার একটা তেলাপোকা। আরশোলাই এদের জীবনচক্র সমাধানের নির্ভরযোগ্য পোষক। সেজন্য যখন বাচ্চাকাচ্চা পয়দা করতে হয় বা ডিম ছাড়ার সময় আসে তখন এই বোলতা কোন একটা তেলাপোকার কাছে গিয়ে তার ডানার গোড়ার দিকে ধরে প্রথমে একটা আলতো করে হুল ফোঁটায়। হুলটা ফোঁটায় ঠিক তেলাপোকার থোরাসিক গ্যাঙলিওন বা বক্ষকোটরে। বোলতার বিষে সাময়িক কিন্তু প্রতিক্রমভাবে তেলাপোকার সামনের দুই ঠ্যাং অবশ হয়ে আসে। বিষে থাকা গ্যাবা যৌগের কারনে এই ঘটনা ঘটে। এই জিনিসটা বোলতা করে কারন এতে তার দ্বিতীয়, কিন্তু মোক্ষম হুলটা ফোঁটাতে সুবিধা হয়। দ্বিতীয় হুলটা সে ফোঁটায় তেলাপোকার ঘাড় দিয়ে সরাসরি তার মস্তিষ্কে! সেই হুলে থাকে মস্তিষ্কবিকৃতকারি যৌগের এক মিশ্রণ। এই বিষটি দিতে বোলতার কয়েক মিনিট সময় লাগে।

পরবর্তী আধাঘন্টা তেলাপোকা বিষের বশে অদ্ভুত আচরণ করতে থাকে। যেমন, নিজের পরিচর্যা করা বাড়িয়ে দেয়! এই কাজটা তেলাপোকা করে কারন বোলতার বিষে থাকে স্নায়ুসঞ্চালক উপাদান ডোপামিন। আর এই পরিচর্যা পর্বের কারনে তেলাপোকা নিজের দেহে জীবানুরোধী উপাদান নিস্ক্রমণ করে। যার ফলে বোলতার ডিমের জন্য তেলাপোকার দেহে একটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

যতক্ষন এই তেলাপোকা এরকম মেকআপ নিয়ে ব্যস্ত ততক্ষনে বোলতা একটা ছোট বাসা খুঁজে বের করে তেলাপোকাটাকে নিয়ে রাখার জন্য। বিষে মাতাল তেলাপোকা আর বোলতার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে চায় না। বরং প্রভুভক্ত প্রাণীর মতো আচরণ করে। বোলতা সেই তেলাপোকাকে তারপরে শুঁড় ধরে টেনে এনে তার নতুন বাসায় রাখে। তারপরে তেলাপোকার ঠিক মাঝখানের পায়ের কাছে একটা ডিম ছেড়ে দেয়। তারপরে বাসার মুখ আটকে দিয়ে চলে যায়। তার কাজ শেষ।

সেই ডিম থেকে শূককীট প্রথমে তেলাপোকার পায়ের রস থেকে পুষ্টিউপাদান গ্রহণ করে বেড়ে ওঠে। সেখান থেকে তারপরে তেলাপোকার স্নায়ু আর নাড়িভূড়ি খেয়ে বাড়তে থাকে। তেলাপোকা ততদিন মৃত, তবে বেতাল! ভেতরে বসে বসে নতুন বোলতা শূককীট নিজের চারদিকে জীবাণুরোধী রাসায়নিক ছড়িয়ে তেলাপোকার দেহাবসেস খেয়ে দেয়ে একদিন পূর্ণাঙ্গ বোলতায় রূপ নেয়। প্রায় ৪০ দিন পরে মৃত তেলাপোকার কঙ্কাল ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে সে।

পুরো প্রক্রিয়াটা এই ভিডিও থেকে দেখে নিতে পারেন -

ভাবতে পারেন তেলাপোকার কী অসহায় আত্মসমর্পন বোলতার কাছে। ঘটনা সবটাই তা না। তেলাপোকা এই ধরনের আক্রমণ থেকে বাঁচতে কেরাতের আশ্রয় নেয়। বোলতা কাছাকাছি আসলেই এক মোক্ষম জ্যাকি চ্যান স্টাইলের লাথি!

যাই হোক, এই কাহিনীগুলাকে যদি সত্যিকারের ভৌতিক জোম্বি বা বেতাল কাহিনী না বলেন তবে কাকে বলবেন? পরেরবার কেউ যদি জিজ্ঞেস করে বেতাল বলে কিছু আছে নাকি, তবে এইখান থেকে দুটো কাহিনী শুনিয়ে দেবেন!


ফেইসবুকের বাংলা শব্দ পেইজটা কিছু বিজ্ঞান শব্দ বা নামের দারুণসব বাংলা প্রতিশব্দ তৈরি করে দিচ্ছে। যেমন -

পেইজটাকে অনুসরণ করতে পারেন এখান থেকে। আপনি কোন ইংরেজী শব্দের নতুন বাংলা প্রতিশব্দ চাইলে পেইজটাতে অনুরোধও জানাতে পারেন।


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ভয় ধরানো লেখা। এসব তথ্য এড়িয়ে থাকার চেষ্টা করি!

সত্যিকারের বেতালসিদ্ধি না হলেও, মানুষের শরীরেও কিন্তু উৎকট ছত্রাক শেকড় গজিয়ে বেড়ে উঠতে পারে। আমার মাস্টার্স থিসিসের সময় ক্যানডিডা অ্যালবিকানস নামে একটা ছত্রাকের প্রোটিক নিয়ে কাজ করতাম। সেটা মানুষের শরীরে এমনিতেই থাকে, নীরবে, কোন ক্ষতি না করে। কিন্তু রোগপ্রতিরোধশক্তি দুর্বল হয়ে গেলে এরাই মানুষের কোষের ভেতর দিয়ে শেকড় ছড়িয়ে দিয়ে মানুষকে একটা রুটির টুকরোর মতো নিজেদের বীজতলা বানিয়ে ফেলে। মজার বিষয় হচ্ছে, ক্যানডিডা অ্যালবিকানস সাধারণ তাপমাত্রায় এককোষী হিসেবে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু মানুষের শরীরের তাপমাত্রায়, অথবা মানুষের রক্তরসের সংস্পর্শে এলে শেকড় ছড়িয়ে বহুকোষী প্রাণির মতো বৃদ্ধি পায়! মানুষের শরীরে বেড়ে ওঠার জন্য সেটাও সুবিধাজনক!

আমাদের গ্রামে একধরণের পোকা (সম্ভবত বোলতার প্রজাতি/ এখানে যে ছবিটা দিয়েছেন সেরকম দেখতে, তবে আকারে ছোট) দেখতাম, যেটাকে আমরা বলতাম কুমুক্কে। এরা মাটি দিয়ে ছোট্ট ক্যাপসুলের মতো বাসা বানাতো। তারপর সেখানে নানান রকমের পোকা (মাকড়সার কথা মনে পড়ছে এই মুহূর্তে) ধরে এনে ভরে, মুখ বন্ধ করে দিত। ওই বাসা ভেঙে একসময় বেরিয়ে আসত বাচ্চা কুমুক্কে। আমি ধারণা করতাম, কুমুক্কে নিজের বাসায় ডিম পেড়ে রেখে, সঙ্গে অন্য পোকা রেখে দেয় যাতে তার বাচ্চারা খেয়ে বাড়তে পারে। আসল ঘটনাটা হয়তো আরো চমকপ্রদ! ইলেক্ট্রিক সকেটে এই পোকা সবচে বেশি বাসা বানাতো। মাটি দিয়ে বন্ধ করা ইলেক্ট্রিক সকেট দেখলেই বুঝতাম ওটা কুমুক্কের বাসা।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সজীব ওসমান এর ছবি

হুম। টক্সোপ্লাজমা নামের আরেকটা পরজীবি এককোষী প্রাণীযে মানুষের মস্তিষ্ককে সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে তারও কিছু কিছু প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। আবার আমাদের পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়ার সমাবেশ মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে। এগুলা মানুষের বেতালসিদ্ধির উদাহরণ হিসেবে দেয়া যেতো।

কুমুক্কের কথা পড়ে কৌতুহল জাগলো। হাসি

ধন্যবাদ কমেন্টটার জন্য।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়া (মাইক্রোবায়োম) এবং তাদের প্রভাব মানুষের স্বাভাবিক জীবনের অংশ হওয়ার কথা। তারা না থাকলেই বরং মানুষ বেতাল হবে। পরজীবিতার বদলে, এইটা বরং খুব ভালো মিথজীবিতার উদাহরণ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

হাতুড়ি এর ছবি

পড়তে গিয়ে মনে ভয় জাগলো, সেই সাথে আগ্রহও জন্মালো। আচ্ছা, জলাতঙ্কের বাহক কুকুরকে আমরা যে পাগলা কুকুর বলি, তার কারন সে মানুষ দেখলেই কামড় দেয়। এক গল্পে পড়েছি, শেয়ালের কামড় খেয়ে মানুষের জলাতঙ্ক হয়েছে, সেই আক্রান্ত মানুষটাও অন্যদেরকে কামড়াতে চেষ্টা করত।-- হয়তো কষ্টে, ব্যথায় মাথা ঠিক থাকে না বলেই পাগলামি করে কামড় দেয়। আপনার এই লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে, সেই কামড় দেওয়াটাও কি প্রকৃত পক্ষে সেই ‌র‌্যবিস ভাইরাসের নুতন বাহক খুজে নেবার চেষ্টা?

সজীব ওসমান এর ছবি

জলাতঙ্ক আসলে একটা ভালো উদাহরণ! এর জীবাণু ভাইরাস যেহেতু স্নায়ুতন্ত্রে সরাসরি আক্রমণ করে সেহেতু মানুষের মস্তিষ্ক পুরোপুরি পরিবর্তন করে দিতে পারে। পাগলামি সেজন্যই হয়। কামড়ানোর ইচ্ছার মাধ্যমে জীবাণু ছড়ানোটা খুবই বেতালসিদ্ধির উদাহরণ হইতে পারে!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এখানে দুই ধরনের উদাহরণ পাওয়া গেলো - উদ্ভিদ কর্তৃক আক্রান্ত প্রাণী বেতাল এবং প্রাণী কর্তৃক আক্রান্ত প্রাণী বেতাল। এখন, উদ্ভিদ কর্তৃক আক্রান্ত উদ্ভিদ বেতাল এবং প্রাণী কর্তৃক আক্রান্ত উদ্ভিদ বেতাল থেকে থাকলে তাদের উদাহরণ জানতে চাইছি।

রাইয়ের রুটি খেয়ে ছত্রাকের আক্রমণজনিত কারণে লোকে অস্বাভাবিক আচরণ করে, আবার রাই থেকে বানানো তরলাগ্নি পান করেও লোকে অস্বাভাবিক আচরণ করে। প্রথম প্রকারের ভিকটিমকে 'ডাইনী' বললেও দ্বিতীয় প্রকারের ভিকটিমকে যে কেন 'ডাইনী' বলে না!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

উদ্ভিদ আক্রান্ত বেতাল প্রাণি কোনটাকে বলছেন? ছত্রাক কিন্তু উদ্ভিদ নয়। ছত্রাক এবং উদ্ভিদের ডোমেইন কেবল এক (ইউক্যারিয়া- প্রাণিও একই ডোমেইনের অংশ)। কিন্তু উদ্ভিদ এবং ছত্রাকের রাজ্য (কিংডম) আলাদা। উদ্ভিদ এবং ছত্রাক এতো বেশি আলাদা যে ছত্রাকের জন্য আলাদা ডোমেইন দরকার হয়, যেমনটা হয় প্রাণির।

আমার মনেহয় এই লেখাটাতে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে প্রাণির স্নায়ুতে কোনরকম প্রভাব ফেলে করে যেসব পরজীবি বেড়ে ওঠে সেসব পরজীবির জীবনচক্রকে। উদ্ভিদের স্নায়ুতন্ত্র নেই বলে তাদের পক্ষে বেতাল হওয়া বোধহয় সম্ভব নয়। স্নায়ুর জিসেবটা না করলে যেসব পরগাছা পোষক উদ্ভিদকে মেরে ফেলে সেগুলোর উদাহরণ টানা যেতে পারে হয়ত এক্ষেত্রে।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সজীব ওসমান এর ছবি

চলুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হ্যাঁ, ভুলটা আমারই। ছত্রাক, শৈবাল ইত্যাদি উদ্ভিদ রাজ্যের নয়। (পড়াশোনা থেকে দূরে থাকার কুফল হচ্ছে অধীত বিদ্যা ক্রমশ লোপ পেতে থাকে)

এইবার ব্যাপারটা আরও স্পষ্ট হলো। বেতাল হওয়া না হওয়াটা স্নায়ুর ওপর প্রভাব সংক্রান্ত, অন্যান্য জৈবিক প্রক্রিয়া ও বিকাশের অস্বাভাবিকতা সংক্রান্ত নয়। পরজীবি (যেমন, স্বর্ণলতা) বা পরগাছা (যেমন, রাস্না) কর্তৃক পোষক উদ্ভিদের জৈবিক প্রক্রিয়ায় প্রভাব এটার সাথে তুলনীয় হতে পারে না।

উদ্ভিদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে দেখা যাক। কোন বিশেষ ঘটনায় যদি কোন উদ্ভিদের অঙ্গসংস্থানিক অস্বাভাবিকতা দেখা দেয় বা শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রমে অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় তাহলে যদি সেটাকে আমরা 'বৈটাল' (বিটপী + বেতাল) বলি তাহলে কেমন হয়? আমি জানতে চাই, বাস্তবের দুনিয়ায় অমন 'বৈটাল'-এর দেখা পাওয়া যায় কিনা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

যেটাকে বৈটাল বলছেন তেমন ঘটনা বাস্তবে খুবই সাধারণ হওয়ার কথা। পরজীবি বটগাছ যেমন পোষককে প্রায়মৃত করে তরতাজা হয়ে ওঠে। উদ্ভিদে ছত্রাকের সংক্রমণের ফলেও তাত্ত্বিকভাবে উদ্ভিদ বৈটাল হবে। যদিও এটা উদ্ভিদের রোগ হিসেবে পরিচিত।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সজীব ওসমান এর ছবি

তরলাগ্নির ফলে মাতলামি/বিকৃতির ব্যাপারটা জানা বলে ডাইনি বলেনা মনে হয়। রুটির বিষাক্ততা অজানা বলেই এমনটা ভাবা নয় কি?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তাতো বটেই। তবে রুটির বিষাক্ততায় আক্রান্ত মানুষদেরকে 'উন্মাদ' আখ্যা দেবার বদলে 'ডাইনী' আখ্যা দেবার কারণ কী? সমাজে উন্মাদের উপস্থিতি তো স্বাভাবিক ব্যাপার। ব্যাপক হারে বা গণউন্মত্ততাও অস্বাভাবিক নয়। ডাইনী আখ্যা দেবার সংস্কৃতির পেছনে আরও অনেক নিয়ামক কাজ করেছে বলে মনে করছি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমার সরলীকৃত ধারণা হচ্ছে এই বিষয়টা নির্ভর করে আক্রান্ত মানুষের আচরণের উপর। আবার আক্রান্ত মানুষের আচরণ নির্ভর করবে মাদকের ধরণের উপর।

পাগলের আচরণ এবং ডাইনির আচরণ ভিন্ন হবে। সম্ভবত ডাইনির খানিকটা আক্রমণাত্মক মনোভাব থাকবে, সঙ্গে খিঁচুনির মতো অঙ্গভঙ্গি। যেসব দেখে মানুষের মনে হবে আক্রান্ত বৈক্তির ওপর "অন্যকিছু" ভর করে আছে।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মেঘলা মানুষ এর ছবি

হরর লেখা খাইছে

পড়ে ভালো লেগেছে, বাংলায় অথচ সাবলীল!

মুর্কের একটা প্রশ্নের জবাব দিন: জলাতঙ্ক রোগী নাকি পানি খেতে চায়, আবার পানি দেখলেই আতঙ্কিত হয়। পানি খেতে গেলে হয়ত রোগীর গলায় কষ্ট হবে, তবে সে খাবার আগেই কেন আতঙ্কিত হয় পড়ে? এটা কেন হয়?
(উইকি ঘুরে আসলাম: পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ জলাতঙ্ক জনিত মৃত্যু ঘটে ভারতে)

ধন্যবাদ।

সজীব ওসমান এর ছবি

ঢোক গিলতে সমস্যার কারনে পানি খেতে চায়না বলে মালুম হয়।

তবে পাগলামি আর কামড়ানোর প্রবণতা জাগ্রত হওয়া জলাতঙ্কে মানুষ বা অন্য স্তন্যপায়ীর বেতাল হওয়ার একটা ভালো উদাহরণ। উপরে হাতুড়ির কমেন্টের জবাবটা দেখতে পারেন।

হাসিব এর ছবি

পোস্ট পড়ে কিছুক্ষণ গুগল করে শিউরে উঠলাম। মঙ্গলে চলে যাওয়াই এখন সুমায়ের দাবি।

এক লহমা এর ছবি

চমৎকার লেগেছে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সৌখিন  এর ছবি

রোমাঞ্চকর লেখা। অসাধারন উপস্থাপন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।