আমাদের অনেকের মতোই জার্মান বিজ্ঞানী পেত্রা শোয়েইলকেও জীবনের এক গূঢ় প্রশ্ন তাড়িত করতো - প্রাণ অপ্রাণ থেকে কোন দিক দিয়ে আলাদা? প্রাণের ঠিক কোন বৈশিষ্ট্যটার জন্য প্রাণকে প্রাণ বলছি? আপনাদের মনে হতে পারে এটা আর এমন কী প্রশ্ন। বাহ্যিকভাবে দেখেই তো বোঝা যায়। একজন হাঁটাচলানড়াচড়াখাওয়াদাওয়া করছে, আরেকজন করছেনা, ব্যাস! উঁহু, অতো সহজটি নয়। আপনি যদি একজন আণবিক জীববিজ্ঞানী হন তবে জানবেন যে প্রাণ এবং জড়কে ভেঙে যদি ক্ষুদ্র থেকে ক্ষ্রদতরের দিকে আগান তবে একটা সময় এসে ভেঙে ফেলা জীব আর জড়ের রাসায়নিক এককে কোন পার্থক্য পাবেন না। মানে হয়তো দেখবেন দুইটা থেকেই কোন একটা হুবহু একইরকম দেখতে এমিনো এসিড পেলেন। তাহলে মূলরহস্যটা কোথায়? এই তাড়না শোয়েইলকে প্রাণ সৃষ্টির প্রতিটা পদক্ষেপকে ভেঙেচুড়ে দেখতে উৎসাহিত করেছে। তিনি সেটা করছেনও। আর যে পদ্ধতিতে তিনি করছেন তাকে বলা চলে - বটম আপ বা আপাদশীর্ষ পদ্ধতি।
সেকথায় যাওয়ার আগে প্রথমেই দেখে নেই একটা একবারে সরল প্রাণ কিভাবে গঠিত। একেবারে সরল প্রাণ বলতে আমরা ব্যাকটেরিয়াকে বোঝাতে পারি, যারা এককোষী। তাহলে প্রথম শর্ত হলো কোষ থাকতে হবে। (ভাইরাস নিয়ে এক্ষেত্রে অন্য বির্তক করা যায়, সেটায় যাচ্ছিনা, তবে পরবর্তী কথাগুলা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও খাটে)। একটি কার্যকর কোষ মূলতঃ তিনটা জিনিস দিয়ে গঠিত। লিপিড, প্রোটিন আর নিউক্লিয়িক এসিড (ডিএনএ, আরএনএ)। তাহলে এই তিনটাকে মেশালে প্রাণ পাওয়া যেতে পারে ধারণা করা যায়। লিপিড বা স্নেহজাতীয় পদার্থ আর প্রোটিন তৈরি করে কোষের আবরণী, প্রোটিন কোষের বিভিন্নরকমের কাজকারবার সাধন করে, আর নিউক্লিয়িক এসিড বহন করে বংশগতি এবং কোষকে কার্যকর থাকার আদেশ প্রদানের সূত্র। এধরনের কোষকে বলা চলে নূন্যকল্পী কোষ (মিনিমাল কোষ), মানে কোষ তৈরিতে যা না হলেই নয় সেসব শুধু থাকা। অর্থাৎ, একটা সরল প্রাণ দেখতে মোটামুটি এরকম হবে -
ছবিসূত্র: ড্যানেলন গবেষণাগার ওয়েবপেইজ, টিইউ ডেলফ।
এখন প্রাণকে বুঝতে হলে বিজ্ঞানীদের অনেকটা খোদার ভূমিকা পালন করতে হতে পারে। মানে কোষকে বুঝতে একে ভেঙে না ফেলে গড়া যায় কিনা সেই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। মানে প্রাণ সৃষ্টি করতে হবে। আগেই বলেছি, পদ্ধতিটাকে বটম-আপ বা আপাদশীর্ষ পদ্ধতি বলে। কিন্তু জানেনই, ভাঙা যত সহজ, গড়া তত সহজ নয়। তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রের বিপরীতে চেষ্টা চালানোটা সবসময়ই মুশকিল। প্রাণ সিরিজের শ্রোডিঙ্গারের প্রাণ পর্বে সেসব নিয়ে কিছু আলোচনা ছিলো, পড়ে আসতে পারেন। তাহলে, আপাদশীর্ষ পদ্ধতি দেখতে কেমন হবে? -
আপাদশীর্ষ জীববিজ্ঞানের কার্টুন। ছবিসূত্র: নেচার
কৃত্রিম প্রাণ তৈরিতে গবেষকগণ গত ২০ বছর ধরে চেষ্টা করে আসছেন। কোষের বিভিন্ন অংশগুলোকে একসাথে এনে বিভিন্ন পর্যায়ে জোড়া লাগানো। যদিও এরকম কয়েকটা পর্যায় আছে। যেমন, কক্ষীকরণ (compartmentalization) করা - মানে অঙ্গানুগুলিকে জায়গাভেদে পৃথক রাখা; পরিপাক (metabolism) - প্রাণরসায়ন যা প্রাণকে জিইয়ে রাখে; এবং তথ্য সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থা। উপরে কোষের অংশগুলি নিয়ে যেখানে আলাপ করেছি সেখান থেকে এই কাজগুলিকে মিলিয়ে নিতে পারেন।
২০১৭ সালে ওলন্দাজ দেশের ১৭টি গবেষণাগার নিয়ে একটা দল তৈরি করে, নাম - Building a Synthetic Cell (BaSyC)। অর্থাৎ, কৃত্রিম কোষ তৈরি করা। এর উদ্দেশ্য হলো কোষের মতো, বৃদ্ধি আর বিভাজনসক্ষম কোন ব্যবস্থা আবিষ্কার। ২ কোটি ১৩ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ের এই প্রকল্প আগামি ১০ বছরের মধ্যে কার্যটি হাসিল করতে লক্ষ্যস্থীর করেছে। আমেরিকা আর ইউরোপের আরও কিছু বিজ্ঞান দাতা প্রতিষ্ঠানও প্রথম কৃত্রিম কোষ তৈরিতে সংকল্পবদ্ধ হয়েছে সম্প্রতি।
আপাদশীর্ষ (বটম-আপ) সিনথেটিক জীববিজ্ঞানীরা বেশ আশাবাদ ব্যক্ত করছেন এই লক্ষ্য যথাসময়ে পৌঁছানোর জন্য। তাহলে কিভাবে কৃত্রিম কোষ তৈরির প্রক্রিয়াটা চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা? আসুন জেনে নেই।
কিছু জৈবপদার্থকে কুঠুরিআবদ্ধ করাটাই জীবিত কোষ তৈরির সবচেয়ে প্রধাণ বিষয়। এই কাজ করতে চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা বেশকিছু দিন ধরেই। আমরা জানি স্নেহপদার্থ এক দিক যদি পানি অপছন্দ করে আর আরেক দিক পছন্দ করে তবে তারা পানির দ্রবণে নিজেদেরকে সন্নিবিষ্ট করে নিজেদের আবদ্ধ করে ফেলবে। এতে স্নেহপর্দাথের একটা দ্বিপর্দা বিশিষ্ট বুদ্বুদ তৈরি হবে, ঠিক যেমনটা আমাদের কোষের পর্দায় দেখা যায়। একটা দ্রবণে এমন স্নেহপদার্থরা যে বুদ্বুদের মতোন এমন গঠন তৈরি করে তাকে বলে লিপোজোম, যাকে আমি বাংলায় লিখছি স্নেহবুদ্বুদ। এর সাথে পানিতে তেলের ফোঁটার পার্থক্য আছে। তেলে ফোঁটার মাঝখানে ফাঁপা থাকেনা, স্নেহবুদ্বুদে থাকে। এই স্নেহবুদ্বুদকে আমরা সেজন্য কোষ তৈরির গাঠনিক কাঠামো হিসেবে দেখতে পারি যার ভেতরে কিছু কার্যকর আর তথ্যের উপাদান ঢুকিয়ে দিলেই একটা সাধারণ কোষ তৈরি হয়ে যেতে পারে (উপরের ছবির মতো)।
এই স্নেহবুদ্বুদ তৈরি করতে বিজ্ঞানীরা মাইক্রোফ্লুইডিক্স নামের এক পদ্ধতির ব্যবহার করেন। এই পদ্ধতি আসলে খুবই সূক্ষ কোন জৈব একককে আলাদা করতে ব্যবহার করা হয়। যেমন, একটা কোষকে কোন মিশ্রণ থেকে আলাদা করে তাকে পরীক্ষা করা যায়। এই আলাদা করার পদ্ধতিটা থেকেই স্নেহের বুদ্বুদ তৈরিতে কাজে লাগানো সম্ভব। আমরা সেটা করেও দেখিয়েছি। এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে কিভাবে স্নেহবুদ্বুদ তৈরি হচ্ছে। এই বুদ্বুদগুলি ১০ থেকে ২০ মাইক্রোমিটার ব্যাসের হয়। স্নেহ পদার্থকে (ফ্যাটি এসিড) সূক্ষ্ম নলের মাধ্যমে পাঠিয়ে বুদ্বুদ তৈরি হচ্ছে (প্রচ্ছদের এনিমেশানও একই জিনিসের ভিডিও)। অক্টানল (লাল) স্নেহপদার্থকে দ্রবণে রাখতে সাহায্য করে। এটা তবে এক সরল কোষের খোলস বা বাসা তৈরি হলো। এই পদ্ধতিতে কোষের ভেতরে জৈবপদার্থ ঠেঁসে দেয়াও সম্ভব। ছবির বামে লেখা ইনার সলিউশান দিয়ে সেটাই বোঝাচ্ছে।
একটা জীবিত কোষের কাজ করার জন্য তার নিজের শক্তির আধার দরকার। প্রায় সকল কোষের নিজের এরকম শক্তির আধার বা পাওয়ার হাউস আছে। সাধারণত এই অণুটি হলো এটিপি। আর এই এটিপি তৈরি করে উদ্ভিদের ক্লোরোপ্লাস্ট এবং সকল জীবে মাইটোকন্ড্রিয়া। মাইটোকন্ড্রিয়া আর ক্লোরোপ্লাস্ট হলো আধুনিক কোষের ভেতরে থাকা কোষাঙ্গাণু। ধারণা করা হয় (এবং প্রায় নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত) বিবর্তনের কোন এক কালে ছোট কোন ব্যাকটেরিয়ার মতো কোষকে বড় কোষ খেয়ে রেখে দিয়েছিলো এবং তারাই কোষের ভেতরে ক্লোরোফিল এবং মাইটোকন্ড্রিয়া হয়েছে (বিস্তারিত জানতে বিজ্ঞানী লিন মার্গুলিসের কাজ নিয়ে পড়তে পারেন)। তাই বুঝতে পারছেন ব্যাকটেরিয়ায় মাইটোকন্ড্রিয়া নাই, ব্যাকটেরিয়া নিজেই একটা মাইটোকন্ড্রিয়া, মানে এটিপি তৈরি করতে পারে।
তো ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউটের ইয়োআখিম ষ্পাৎস এরকম কিছু মাইটোকন্ড্রিয়া তৈরি করতে চেষ্টা করেছেন। সেই স্নেহবুদ্বুদ প্রথমে তৈরি করেছেন যারা একধরনের পলিমার দিয়ে আবৃত। তারপরে পিকো ইনজেকশান নামের একটা পদ্ধতির মাধ্যমে সেই স্নেহবুদ্বুদের দেয়ালে কিছু প্রোটিন ঢুকিয়ে দিচ্ছেন তড়িৎস্পৃহ করে। এইটা আমাদের গবেষণাগারের খুব সাধারন পদ্ধতি। নিচের ছবি দেখুন। এভাবে এটিপি তৈরি করতে পারে এমন প্রোটিন, যেমন এটিপি সিনথেজ প্রোটিনকে স্নেহবুদ্বুদের দেয়ালে প্রবেশ করাতে সক্ষম হয়েছেন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের বিজ্ঞানীরা।
একই পদ্ধতিতে কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে শর্করা তৈরির (মানে সালোক সংশ্লেষণে যেটা ঘটে) উৎসেচকদের এরকম এক স্নেহবুদ্বুদে ঢুকিয়ে একটা প্রাক-কোষ তৈরি করেছেন যেটা উদ্ভিদের ক্লোরোপ্লাস্টের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি দক্ষতায় সালোক সংশ্লেষণ করতে পারে! অর্থাৎ বিজ্ঞানীরা কার্যক্ষম মাইটোকন্ড্রিয়া আর ক্লোরোপ্লাস্ট তৈরি করেছেন গবেষণাগারে।
এভাবে বিভিন্ন গবেষকদল আরও কিছু জৈব পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। যেমন, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী এডামালার দল স্নেহবুদ্বুদে প্রোটিন তৈরির যন্ত্রগুলি ঢুকিয়ে দেখেছেন যে সেই স্নেহবুদ্বুদেরা প্রোটিন সত্যিই তৈরি করছে! এর জন্য তারা স্নেহবুদ্বুদে প্লাজমিড ডিএনএ (প্রোটিন তৈরির তথ্যওয়ালা গোলাকার ডিএনএ) এবং উৎসেচকগুলি ঢুকিয়েছেন উপরের পদ্ধতিতে।
এতোক্ষণ যেসব আবিষ্কারের গল্পগুলি বললাম সেগুলি হলো একটা কোষের পৃথক পৃথক কিছু বৈশিষ্ট্যকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু একটা সত্যিকারের জীবের নিজের একটা তথ্য পদ্ধতি (ইনফরমেশান সিস্টেম) থাকবে যেটা তাকে নিজে নিজে বিভক্ত হয়ে নতুন প্রাণ তৈরিতে তথ্য যোগাবে এবং সয়ম্ভু হতে সাহায্য করবে। এই তথ্য আমাদের কোষে আসলে দেয় ডিএনএ বা আরএনএ। সরলতম কোষের ডিএনএতে কয়টা জিন থাকবে সেটা নিয়ে অনেক জল্পনা আর পরীক্ষামূলক কাজ হয়েছে। এই বিষয়ের মহারথিগণ ক্রেইগ ভেন্টার আর জর্জ চার্চের মতো বিজ্ঞানীদের কাজগুলি পড়ে নিতে পারেন যদি আগ্রহ থাকে। তবে একটা সাধারণ মতামত হলো প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ টা জিন নূন্যতম দরকার একটা জীবকে বাঁচিয়ে রাখতে। একে নাম দেয়া হয়েছে মিনিমাল জেনোম, বা নূন্যকল্পী কৌলি।
ক্রেইগ ভেন্টারে নাম যেহেতু তুললামই সেহেতু আরেকটু ব্যাখ্যা করছি তার কাজ। পৃথিবীতে সবচেয়ে ছোট জেনোমওয়ালা একটা জীব হলো Mycoplasma mycoides, একধরনের ব্যাকটেরিয়া। তো ভেন্টারের দল এই জীবটির জিনগুলিকে একে একে বাধা দিয়ে দিয়ে খুঁজে পেলেন যে একটা জীবের নূন্যতম ৪৭৩টি জিন দরকার বেঁচে থাকতে। অর্থাৎ জীবটির মোট জিনের সংখ্যার অর্ধেক জিন থাকলেই জীবটি বেঁচে থাকতে পারে।
এরপর ভেন্টারের দল এক অদ্ভুত কাজ করলেন। কাছাকাছি প্রজাতির আরেকটি ব্যাকটেরিয়া Mycoplasma capricolum থেকে তার ডিএনএ বের করে নিয়ে এই ৪৭৩ টি জিন দিয়ে তৈরি একটা জেনোম, মানে ডিএনএ সূত্রক ঢুকিয়ে দিলেন। বেশ বেঁচে থাকলো নতুন কৃত্রিম ব্যাকটেরিয়াটি! একে প্রথম কৃত্রিম প্রাণও বলে অভিহিতও করেছেন অনেকে। তবে, এখন মনে হচ্ছে এর চেয়ে ছোট জেনোম সম্ভবত তৈরি করা সম্ভব নয় যার জন্য জীবের টিকে থাকা নূন্যতমভাবে সম্ভব।
এখন এই নূন্যতম জেনোমকে নিয়ে বিজ্ঞানীরা স্নেহবুদ্বুদে দিয়ে আরেকটু কৃত্রিম জীব তৈরির প্রচেষ্টা শুরু করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে খুব কম সময়েই সেটা সম্ভব হবে। তাহলে একটা সত্যিকারের কৃত্রিম জীব বা প্রাণ তৈরি হবে যার পুরোটুকুই মানুষ সৃষ্টি করেছে। এই কৃত্রিম জীব তৈরি প্রভাব যেমন গবেষণায় আছে, তেমনি আছে প্রাত্যহিক মানুষের জীবনে। বিভিন্ন জৈবিক ব্যাপারকে নিয়ন্ত্রণ করে ঔষধ এবং অন্যান্য শিল্প যেমন তৈরি হবে তেমনি গবেষণার অনেক দূয়ারও খুলে যাবে। তবে এর সাথে যুক্ত আছে অনেক নৈতিকতার ব্যাপারও। সেটা শুধু বাধ্যবাধকতা নয়। একটি কৃত্রিম জীবকে নিয়ে আমরা কী করবো? একে কী প্রোগামেবল বা আমাদের ইচ্ছানুযায়ী চালাবো (আমাদের সেই ক্ষমতা এখনই আছে!) না একে স্বয়ম্ভর (অটোনমাস) থাকতে দেবো? চিন্তা করে দেখেন।
পরবর্তী পর্বগুলি -
১। জীবনের সংজ্ঞা
২। আত্মাহীন রসায়ন
৩। বিশ্বভরা প্রাণ!
৪। আরএনএ পৃথিবীর আড়ালে
৫। শ্রোডিঙ্গারের প্রাণ!
৬। প্রথম স্বানুলিপিকারকের খোঁজে
৭। প্রাণের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞার পরিসর দিন দিন ছোট হয়ে আসছে
৮। ত্বকের কোষ থেকে কিভাবে পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরি করবেন
৯। গবেষণাগারে কিভাবে প্রাণ তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা
১০। সম্পূর্ণ সংশ্লেষিত জেনোম দিয়ে প্রথমবারের মতো ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি: এ কি কৃত্রিম ব্যাকটেরিয়া তৈরি হলো?
Minimal Cell | নূন্যকল্পী কোষ |
Minimal Genome | নূন্যকল্পী কৌলি |
Compartmentalization | কক্ষীকরণ |
Liposome | স্নেহবুদ্বুদ |
Bottom-Up | আপাদশীর্ষ |
Autonomous | স্বয়ম্ভর |
মন্তব্য
এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা দবিরের সিঙ্গারা কবিরের টিফিনবক্সে ভরে টিফিন সৃষ্টির বাহাদুরি করছেন। একদম কাঁচামাল, মানে ময়দা-আলু-তেল থেকে সিঙ্গারা ভাজতে আর কতো দেরি?
হেহে.. এখনই আসলে পারে মোটামুটি সবকিছু। যেমন, এই ৫০০ জিনের ডিএনএ আমরা কৃত্রিমভাবেই তৈরি করতে পারি। স্নেহতো তৈরি করা যাচ্চেই দেখলেন। ঝামেলা মোটামুটি নূন্যতম প্রোটিন যেগুলি কোষে দিয়ে দিতে হবে সেটা তৈরি করা। আমরা এখন ছোট ছোট পেপটাইড তৈরি করতে পারি কৃত্রিমভাবে। আর কিছু সংশ্লেষ মাধ্যম ব্যবহার করে কয়েকটা পেপটাইড জোড়া লাগিয়ে বড় প্রোটিন কমপ্লেক্সও তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু এটাতে ঝামেলা যেটা হয় সেটা হইলো খরচ।
একটা বিশাল মেশিনে যেই প্রোটিনটা বানানো হয় সেটা একটা ব্যাকটেরিয়ার ভেতরে বানিয়ে সেখান থেকে বিশুদ্ধ করে নেয়া সহজ আর কম খরচ। ডিএনএর অনুলিপি তৈরিতেও একইরকম ব্যাপারটা। এটা ঠিক জীব ব্যবহার করতে হচ্ছেই নতুন জীব তৈরিতে - এমন ব্যাপার না। সহজ হওয়া আর খরচের ব্যাপার অনেকটা। তবে এসব সামনে কেটে যাবে।
হিমুর এই প্রশ্নটি আমাদের আমজনতার সকলের প্রশ্ন বলা যায়। এর জবাবে সজীব-এর উত্তর খুব ভাল হয়েছে। প্রশ্ন-উত্তরে
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
(১)প্রাণ নিয়ে সজীব-এর আগের পর্বগুলোর মত এই পর্বটিও চমৎকার হয়েছে। ৫ তারা।
(২) "এক কুঠুরি নো দরজা" - হঠাৎ এই বাংরেজিটুকু এই লেখার বাকি অংশের থেকে আলাদা হয়ে গেছে। 'দরজা ছাড়া এক কুঠুরি' লিখলে কেমন হয়?
(৩) Bottom-Up = আপাদশীর্ষ --> এইটি আর একটু চিন্তা করা দরকার মনে হচ্ছে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
অনেক ধন্যবাদ।
'আট কুঠুরি নয় দরজা' থেকে মিলায়ে লিখলাম
বটম-আপের অনেকগুলা বাংলা নিয়া আসলে আমরা চিন্তা করসি। আপাদশীর্ষ সবচেয়ে যথার্থই মনে হইলো। তবে ভাবতে পারেন আরও কিছু বাংলা। আমাকে জানান নতুন কিছু পাইলে।
চমৎকার। বেশ ভালো লাগলো। সিরিজ চালু থাকুক।
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
প্রথম ছবিতে, যেখানে অবিরাম কোষ তৈরি হয়ে চলেছে, দেখে কেমন যেন হাঁসফাঁস মত লাগছে।
আপনার ট্রিপোফোবিয়া বেশিমাত্রায় আছে আছে মনে হয়!
আপনার এই সিরিজ পড়তে পড়তে মাঝে একবার নেশা ধরে গিয়েছিল সেল বায়োলজি নিয়ে কিছুমিছু পড়ার। শুধুমাত্র মাইটোকেন্ড্রিয়ার কাজকর্ম দেখেই মাথা চক্কর দিয়ে উঠেছিল। এই পর্বটাও খুব ভালো লেগেছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন