• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

কারাভাজ্জোর কার্ড শার্পস এবং অন্যান্য

মনি শামিম এর ছবি
লিখেছেন মনি শামিম [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ২০/০৬/২০১৩ - ১১:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

The_Cardsharps

কার্ড শার্পস।

অনেক শিল্প সমালোচকের মতে কার্ড শার্পস হল কারাভাজ্জো অঙ্কিত তাঁর প্রথম মাস্টারপিস। এই ছবিটি রয়েছে কিমবেল আর্ট মিউজিয়াম, টেক্সাসে। এই ছবিতেই প্রথম আলো এবং অন্ধকার সহযোগে মানব মনের বিচিত্র মানসিক জগতকে মূর্ত করার সার্থক প্রয়াস নিয়েছেন কারাভাজ্জো। এখান থেকেই তাঁর স্টাইল স্বরূপে আবির্ভূত হয়েছে। তিনটি ফিগার, তিনটি চরিত্র আর একটি ঘটনা ঘটতে চলেছে। তিনজন চরিত্রের একজন মানে প্রথম কিশোর নিবিড় মনে তাঁর কার্ডের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁর পোশাক সৌম্য, পরিচ্ছন্ন, দেখে নিপাট সাদাসিধে ভদ্র গোছের কিশোর বলে মনে হয়। মনোযোগী, বাইরের নিষ্ঠুর জগতের অপরাধ নিয়ে দুর্ভাবনা নেই তার, তাঁর দৃষ্টি সমর্পিত কার্ডের দিকে। দ্বিতীয়জনের মানে দ্বিতীয় কিশোরের পোশাক পরিচ্ছদ রোমাঞ্চকর, তাঁর পোশাকের একপাশে ড্যাগার ঝুলছে, এক হাতে কার্ড রয়েছে আর এক হাত পেছনে রক্ষিত গোপন কার্ডের দিকে যা সামনে নিয়ে যেতে তিনি উদ্যত। এই প্রতারকের চোখ সুবেশি কিশোরের দিকে, তাঁর চোখেমুখে সংশয় এবং বিস্ময় ভরে আছে। এই দুই চরিত্র ছাড়াও আর একজন আছেন যার অবয়ব সন্দেহজনক, হাতে গ্লাভস, গ্লাভসের একটি আঙুল অনাবৃত! কিশোর নন তিনি, বয়স্ক এবং তাঁর ভাব দেখে মনে হচ্ছে একজন অভিজ্ঞ প্রতারক, কিশোর প্রতারক তাঁর মাধ্যমেই একটি অপরাধ ঘটাতে উদ্যত। তিনি চোখ দিয়ে দেখছেন ভালো ছেলেটির কার্ড আর আঙ্গুল সহকারে ইঙ্গিত দিচ্ছেন প্রতারক কিশোরের দিকে। তাঁর ডান হাতটি কি ধীরে ধীরে প্রতারক কিশোরের ড্যাগারের দিকে ধাবিত হচ্ছে? কিন্তু তিনি কি ভালো ভাবে দেখতে পাচ্ছেন সুবেশী ছেলেটির কার্ড? ছেলেটির মাথার টুপি কি তাঁর দৃষ্টিকে বাধাগ্রস্ত করছেনা? আরেকটি চরিত্র আছে বটে এই চিত্রকর্মে, আর তা হল টেবিলে রাখা কয়েনের স্তুপ। কারণ শেষ পর্যন্ত হোক প্রতারণা কিংবা ছল, কিংবা প্রতারণার অবশ্যম্ভাবী বিজয়, পুরো ঘটনাটাকে নিয়ন্ত্রণ করছে কিন্তু সেই অর্থের প্রলোভন!

এই ছবিটি চিত্রকর্মের জগতে প্রতারণা নামক মানব আচরণের সবচাইতে অনুপম শিল্পরূপ হিসেবে বিবেচিত। এই ছবিটি মানুষের জটিল অপরাধপ্রবন মানসিকতাকে উন্মোচন করেছে যেন। এখানে সুন্দর নেই,আছে অপরাধ, আছে ড্রামা। এ যেন এক থিয়েটার।দর্শক হিসেবে প্রতারণার ঘটনাটি আমাদের সামনে সরাসরি উন্মুক্ত, ঘটনাটি নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ, পরিস্থিতির সামান্য একটু এদিকওদিক হলেই ঘটবে সমূহ সর্বনাশ! আসন্ন এই সর্বনাশকে ঘিরে আমাদের মনে জন্ম নেয়না কি কোনও প্রতিক্রিয়া? কি হবে এর পর? ভালো ছেলেটি যদি বুঝে যায় তাঁর বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্রের সামান্যতম আভাস, সে কি প্রতিবাদ করবে তৎক্ষণাৎ? সে তো নিরস্ত্র। যদি দুষ্টু ছেলেটি কিংবা বয়স্ক প্রতারক ড্যাগার দিয়ে তাঁকে খুন করতে উদ্যত হয়? কিংবা টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দুই প্রতারকের মাঝেই যদি জন্ম নেয় বিবাদ? এই ষড়যন্ত্র, এই জোচ্চুরি, এই অপরাধকেই চিত্রিত করেছেন কারাভাজ্জো তাঁর এই অমর চিত্রকর্মে। ছবিটি এত জীবন্ত, ফিগারগুলি এত নিখুঁত যে ছবিটি বলছে আমাকে দেখ, দেখ এই জগতের অপরাধ! চিনে নাও!

DSC_4054

কারাভাজ্জো রোমে আসার ঠিক এক বছরের মাথায় আঁকেন তাঁর অবিস্মরণীয় "দি ফরচুন টেলার।" এটি রয়েছে রোমের পালাতিনে জাদুঘরে। ১৫৯৪ সালের পুরো বছরজুরে মাত্র দুটি ছবি এঁকেছিলেন তিনি। আরেকটি হল অনবদ্য কার্ড শার্পস। গুনের দিক দিয়ে কার্ড শার্পস ছবিটি শিল্প সমালোচকদের কাছে অধিকতর আদরণীয় হলেও এই চিত্রকর্মকে খাটো করে দেখার কোনও অবকাশ নেই। দি ফরচুন টেলার কে বরং কারাভাজ্জোর অমরত্তের দিকে যাত্রার প্রথম সোপান হিসেবে ধরা যেতে পারে। এই ছবিতেই আমরা প্রথম কারাভাজ্জোর শিল্পকর্মে দ্বৈত অবয়ব দেখতে পাই। এই দুইটি চরিত্রের একজন তলোয়ার পরিবেষ্টিত বনিক, আরেকজন জিপসি ভাগ্য গণনাকারী। তো বোঝা যাচ্ছে, বনিক মশাই গেছেন ভাগ্য গননা করতে। কিন্তু তাঁর মুগ্ধ দৃষ্টি বলছে যে তিনি আসলে প্রেমে পড়ে গিয়েছেন ওই জিপসির রূপে। জিপসি নারীর চোখেও আমরা ভালোরকম একটা আবেশ দেখি। আরও দেখতে পাই, জিপসি নারীর আঙ্গুল বনিকের হাতে মোলায়েম স্পর্শের যোগান দিচ্ছে। যাঁরা ভাগ্য গণনা করেন, তাঁরা কি এভাবে করেন? একে অন্যের দিকে গভীরভাবে দৃষ্টি বিনিময় করে? একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আসলে তিনি বনিকের মুগ্ধতার ফায়দা লুটে তাঁর আঙ্গুলের আংটি বেহাত করতে ব্যাস্ত! কারাভাজ্জোর কাছে প্রেম মানেই কি তবে এমন? আবেগের হোলি খেলা আর জোচ্চুরি?

কারাভাজ্জো যখন এই ছবি আঁকেন তখন তিনি নিজেই রোমে এক আনকোরা নতুন শিল্পী, কোথাও পাত্তা না পাওয়া এক জোচ্চোর ভ্যাগাবন্ড। একাধারে জুয়ারি, মদ্যপ এবং রাস্তাঘাটে ভয় দেখিয়ে বেড়ানো ঝামেলা সৃষ্টিকারী তরুণ। ছবি আঁকেন রাস্তা থেকে ধরে আনা হতাচ্ছারাদের, আর তাঁদেরই মডেল বানিয়ে ফেলেন। তাঁর ছোঁয়ায় অচেনা পথচারী কিংবা জিপসি নারী হয়ে ওঠেন স্বপ্নের জিপসি ফরচুন টেলার, মদ্যপ যুবক হয়ে ওঠেন জুয়ারি কিংবা বণিক। এনিয়ে হৈচৈ কিছু কম হয়নি। তখন চল ছিল রোমের আনাচে কানাচে যেসব ভাস্কর্য দেখা যেত তাঁদের দৈহিক অবয়ব অনুকরণে পোর্ট্রেট আঁকা । কিন্তু কারাভাজ্জো যে এক ভিন্ন জগতের বাসিন্দা! তাঁর মডেল হবেন প্রকৃতির সন্তান, রক্ত মাংসের মানুষ! প্রকৃতির কাছেই তো রয়েছে অঢেল রসদ, সাদামাটা নিথর মূর্তির কাছে তিনি হাত কেন বাড়াবেন?

প্রেমের ছবি কি একটিও এঁকেছেন কারাভাজ্জো তাঁর সাঁইত্রিশ বছরের জীবনে? আতঙ্ক, হতাশা, মৃত্যু, খুন, রক্ত, বেদনা আর নিকষ কালো আঁধার- এই নিয়েই তো কারাভাজ্জো। কারাভাজ্জোর প্রথম দিকের সব ছবিতে এমনকি পরবর্তী সময়েও তিনি কিশোরদের মূর্ত করে বহু ছবি এঁকেছেন। সেই কিশোরদের হাবেভাবে আনন্দ আছে, উল্লাস আছে, ছল চাতুরি আছে, আছে আদিম রিপুর আহ্বান। কিন্তু নারী প্রেম? তাঁর পরবর্তী কিছু ছবিতে নারী রয়েছেন ঠিকই, তবে তাঁরা কেউবা মাতা মেরি হিসেবে ক্ষমার অনুভূতি দ্বারা সমৃদ্ধ আবার কেউবা কোনও একটি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, মুখ্য সঞ্চালক নয়! তবে নারী প্রেম তো এসেছিল তাঁর জীবনে। তাহলে সেই অনুভবের তেমন চিত্রায়ন আমরা পরবর্তী ছবিগুলিতে দেখতে পাইনা কেন? যেটুকু আবেশ, মুগ্ধতা, মূর্ছনা তা শুধু এই চিত্রকর্মেই মেলে, তাও কেমন ছল চাতুরির আদলে ঢাকা!

Bacco

কারাভাজ্জো ১৫৯৫ সালে আঁকেন বাক্কুস, এটি সংরক্ষিত আছে ফ্লোরেন্সের উফিজি জাদুঘরে। এই ছবিটির জন্য কমিশন প্রদান করেন কারদিনাল দেল মন্তে। বাক্কুস হলেন ওয়াইন, আঙ্গুর ক্ষেত এবং এক্সট্যসির দেবতা। জিউসের সুঠাম দেহী পুত্র। তবে এই ছবিতে বাক্কুস কোনও প্রাপ্ত বয়স্ক সুঠামদেহী পুরুষ নন, নিছক অল্প বয়সী কিশোর। এমন যুবকের ছবি কম আঁকেন নি মিকেল। এক্সট্যসির প্রতীক হিসেবে কেন অল্প বয়সী যুবকদেরই বেছে নিতেন তিনি, এনিয়ে নানান মুনির নানান মত রয়েছে। এই ছবিটিতে এই তরুণ এর চোখ বলে দিচ্ছে সে মাতাল হয়ে রয়েছে, তাঁর চোখ আধো উন্মিলিত। তাঁর শরীর থেকে খসে গেছে ময়লা ভরা চাদর। হাতের আঙ্গুলে তাঁর মাটির দাগ, যেন ক্ষেত থেকে উঠেই সূরা পান শুরু করেছে এই বালক, একটি গ্লাস বাড়িয়ে দিয়ে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে আমাদের তাঁর সাথে সুরাপান করার জন্য। তাঁর মাথা আঙ্গুর দানা আর পাতার ঝাঁকা দিয়ে ঢাকা। এই দেবতা স্বর্গে বিরাজমান নন, মাতাল হয়ে সুরাপানের নেমন্তন্ন জানাতে ব্যাস্ত! এই আমন্ত্রণের মধ্যে কি ইরোটিক কোনও এলিমেন্ট রয়েছে? যে ফলগুলি সাজানো রয়েছে টেবিলে তাঁদের শরীর ময়লা, পাতাগুলিও সজীব নয়। কেন পুষ্ট ঝকঝকে ফলের পরিবর্তে পচা বাসি ফলে ঝাঁকা ভরে আছে? অনেক সমালোচক বলেছেন এই ছবির মাধ্যমে তিনি সময়ের ক্ষয় কে বুঝিয়েছেন আবার কেউবা বলেছেন আসলে এসব কিছু নয়, কারাভাজ্জোর খাবার টেবিলে তখন বাসি ফলের সমাহার ছিল বলেই ফলগুলি এমন! তা বাক্কুস কিশোরের মুখমণ্ডলের রঙ এমন গোলাপি কেন, এমনকি তাঁর বুকের অংশটুকুও কেন এমন? শুধু হাতের কিছু অংশ তুলনামুলকভাবে অনুজ্জ্বল। অনেকে বলেছেন ক্ষেত থেকে উঠে আসা কিশোরের গায়ে মাটির দাগ লেগে আছে! ফলের ঝাঁকার এক পাশে ওয়াইনের বোতল। তাঁর মাঝে নাকি ভালোভাবে দেখলে একটি প্রতিবিম্ব চোখে পড়ে আর তা নাকি স্বয়ং আর্টিস্ট মশাইয়ের!

বাক্কুস নামক এই চিত্রমালা নিয়ে সেই সময় কম হৈচৈ হয়নি! এ কেমন অনাচার, এ কেমন দুঃসাহস! একটি কিশোরের অঙ্গভঙ্গীর মধ্যে দিয়ে যৌন আমন্ত্রন জানানো? যে সময় এধরণের যৌনকর্মের শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড, এমন সময়ে এরকম ছবি কে আঁকেন, কেন আঁকেন, আর কারা আঁকার জন্য কমিশন দেন? এগুলি কি আদৌ চিত্রকর্ম? ধর্ম যে গেল রসাতলে! ভালগার, ভালগার!! তাঁর সমসাময়িক অনেক শিল্প আলোচক এবং শিল্পী নামধারী শত্রু এসব অপবাদ দিয়ে পিছু লাগলেন কারাভাজ্জোর। কিন্তু কারাভাজ্জো তো আর দশটা সাধারন বাক্কুস আঁকবেন বলে নিয়ত করেন নি! যে বাক্কুসের দেহে, মনে, দৃষ্টিতে মর্তের মানবিক আহ্বান নেই তিনি আবার কিসের এক্সট্যসির প্রতীক? যে বাক্কুস পানাসক্ত নন, তিনি আবার কিসের আঙ্গুর ক্ষেতের দেবতা?

785px-Caravaggio_-_I_Musici

১৫৯৪ সালে কারদিনাল দেল মন্তের কমিশনে কারাভাজ্জো আঁকলেন আরেক অনবদ্য চিত্রকর্ম, মিউজিশিয়ানস। এটি রক্ষিত আছে মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট, নিউ ইয়র্ক এ। মিউজিশিয়ানস অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি চিত্রকর্ম হলেও বিষয় বৈচিত্রের দিক দিয়ে বেশ জটিল। আর কালের আঁচড় লেগেছে এর গায়ে, রেস্টোরেশন হয়েছে এই চিত্রকর্মের। তারপরেও আদি রঙকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। এটিকে অনেক শিল্প বোদ্ধা খারিজ করে দিলেও সাধারন দর্শকের এই ছবি পছন্দ হতে বাধ্য। চারটি ফিগার যার ভেতর তিন জনই সঙ্গীতকার। একজন মুখ পেছন করে বসে রয়েছেন। তাঁর হাতে বই, তাঁর চোখ সেই দিকেই নিবদ্ধ। আরেকজন আধো অন্ধকারে গান গাইছেন, তাঁর হাতে যে সঙ্গীতযন্ত্র রয়েছে তাঁর অল্প অংশই প্রস্ফুটিত। আর এক পাশে প্রেম এবং সঙ্গীতের দেবতা কিউপিড। এই চিত্রকর্মের সবচাইতে আকর্ষণীয় পোর্ট্রেটটি পুরো ক্যানভাসের মাঝখানে যিনি লুট যন্ত্রটি হাতে কর্ড ঠিক করছেন। তাঁর পুরো অবয়ব এমন মায়াকাড়া যে একদৃষ্টে তাকিয়ে থেকেও যেন সাধ মেটেনা। আর একি, তাঁর চোখ তো ছলছল করছে! তাঁর মানে হল গান গাইবার সময় তিনি আবেগে অভিভূত হয়ে গেছেন। তিনি গাইছেন, যন্ত্রের কর্ড ঠিক করছেন আবার একইসাথে গানের মুর্ছনায় অভিভুত হয়ে আছেন!

ক্যানভাসের পুরো অংশটি খুব টাইট, যদিও প্রথম দিকের অনেক ছবিতে এটাকে কারাভাজ্জোর বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরা হয়েছে। তিনি আসলে স্পেসকে ভরিয়ে দিতে চান ড্রামা দিয়ে, অ্যাকশন দিয়ে। সঙ্গীতকে আশ্রয় করে অনেক ছবিই আঁকা হত তখন। চার্চ সঙ্গীত তখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কাজেই এ ধরণের ছবি সহজেই কমিশন পেত। কারাভাজ্জোর 'দি লুট প্লেয়ার' তাঁর অন্যতম একটি মাস্টারপিস হিসেবে স্বীকৃত। তবে এই ছবিতে কারাভাজ্জো যেন স্বরূপে আবির্ভূত। এই ছবিতে অনুভুতির যে প্রকাশ ঘটানো হয়েছে তা ছিল সেই যুগে অনাস্বাদিত। এই ছবির সকল মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু যে শিল্পী তিনি যেন তাঁর সকল সঙ্গীত সুধা ঢেলে দিয়ে গাইছেন। আর দর্শক হিসেবে আমরা যেন তাঁর আকুলতা শুনতে পাচ্ছি। কারাভাজ্জোর শক্তির দিকটি ঠিক এখানেই। তাঁর ছবির সাথে আমরা সহজেই যোগাযোগ করতে পারি। আমাদের মনে হতে পারে, আরে এই ধরণের গানের আসরে তো আমরাও ছিলাম এবং আছি! আর এধরণের গানের আসরই তো আমরা চাই। যেখানে যন্ত্র সঙ্গীত পরিবেশনের পাশাপাশি শিল্পি তাঁর সকল আবেদন নিবেদন দিয়ে পাগল পারা গান গাইবেন আর আমরা তন্ময় হয়ে তা শুনব!

তবে এই ছবি দর্শক হিসেবে কিছু প্রশ্নের উদ্রেক করে। যেমন, সঙ্গীত এবং প্রেমের দেবতা কিউপিডের তো এই সুরেলা গানের প্রেমময় দৃশ্যের দিকে মুগ্ধ নয়নে চেয়ে থাকার কথা, কেননা তিনি তো একাধারে শ্রোতা এবং দর্শক, তাহলে এভাবে ঝুঁকে থেকে আঙ্গুরের গোছা সামলাতে তিনি ব্যাস্ত হয়ে উঠবেন কেন? তাহলে কি গান এখনো শুরু হয়নি? যন্ত্রীরা কি পরীক্ষা করছেন তাঁদের বাদ্যযন্ত্র ঠিকমতন টিউনিং হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য? বই হাতে যিনি পেছন ফিরে আছেন সম্ভবত তাঁর বেহালাটি পাশে পড়ে রয়েছে। আচ্ছা, তিনি কি বাদ্যযন্ত্রী নাকি কণ্ঠশিল্পি নাকি দুটোই? তাহলে কিসের অপেক্ষা করছেন তিনি? সঠিক মাত্রার টিউনিং এর? তাঁর মানে কি রিহার্সেল চলছে? যদি রিহার্সেল চলে তাহলে মূলযন্ত্রীর চোখ ছলছল কেন? তাঁর এবং তাঁর পেছনের শিল্পি, দুজনাই তো গাইছেন আবেগ সহকারে, এমনটাই তো মনে হচ্ছে, তাহলে মুলযন্ত্রীর হাত যন্ত্রের টিউন ঠিক করায় অগ্রণী কেন? গান গাওয়া এবং টিউন ঠিক করা একই সাথে কি সম্ভব, যদি শিল্পী আবেগের থরথর চূড়ায় পৌঁছে যান?

এই চারটি ছবি অবলোকন করে আমরা কি কারাভাজ্জোর প্রথম দিকের সৃষ্টির বিশেষ কোনও বৈশিষ্টকে চিহ্নিত করতে পারি? এই চারটি ছবিই অঙ্কিত হয়েছে ১৪৯৪ এবং ১৪৯৫ সালে। তখন কারাভাজ্জোর বয়স মাত্র আঠারো উনিশ! তাঁর উপরোক্ত চারটি ছবিতে মোট দশটি চরিত্রের আনাগোনা, যার সাতজনই কিশোর। এই চারটি ছবির তিনটিই কমিশন হিসেবে দিয়েছেন কার্ডিনাল দেল মন্তে। মন্তে মশাইয়ের বাসায় এইসব কিশোরদের অবাধ যাতায়াত ছিল বলেই কি মডেল হিসেবে কারাভাজ্জো তাঁদের পেয়েছিলেন? আবার কয়েকজন মডেলের চেহারায় মিল আছে বেশ। যেমন, বাক্কুস এর সেই কিশোর আর মিউজিশিয়ানস এর আধো অন্ধকারে বসা কিশোর কি একই নন? আবার ফরচুন টেলার এর কিশোর আর মিউজিশিয়ানস এর মূলযন্ত্রীও তো একইরকম দেখা যায়। এর অর্থ হল একই মডেলদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যাবহার করা। এইসব কিশোরদের সাথে কি কোনও যৌন সম্পর্ক ছিল কারাভাজ্জোর। অনেক শিল্প সমালোচক সেদিকে ইঙ্গিত করেছেন বটে তবে কেউই ফার্স্ট হ্যান্ড কোন উদাহারণ দিতে পারেন নি। তবে মনে হয় অনেক সময় কাটিয়েছেন কারাভাজ্জো তাঁদের সাথে। নইলে মডেলসমূহের আবেগের ডিটেইলস এত সূক্ষ্মভাবে কিভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি? এই চারটি ছবির ক্যানভাসের সেটিং বেশ টাইট। শুধুই চারিত্রিক অবয়বের সমাহার। কারাভাজ্জোর পেইন্টিং এর শুরুর দিকের এই ছবিগুলি সহজ, সরল কিন্তু মানবমনের সুক্ষ তারগুলি তিনি যেন জোড়া লাগিয়েছেন দক্ষ শিল্পীর মতন ব্রাশের একেকটি অনুপম আঁচড়ে। আর এইজন্যেই তাঁর পরের দিকের অনেক পরিণত কাজের মত এই ছবিগুলি এখনও দর্শক মনে বিপুল চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে চলে।

( একমাত্র দি ফরচুন টেলার ছাড়া বাকি ছবিগুলি উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত)


মন্তব্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

(Y)

(পপ্পন)

মনি শামিম এর ছবি

(ধইন্যা)

সত্যপীর এর ছবি

=DX অসাধারন। পাঁচতারা পোস্ট। আসতেই থাকুক।

..................................................................
#Banshibir.

স্যাম এর ছবি

সহমত :)

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ সত্যপীর। আসুক বলছেন? তথাস্তু!

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ।

ফাহিম হাসান এর ছবি

কারাভাজ্জোর ছবির একটা দিক খেয়াল করেছেন? তার ছবির ফিগারগুলোর স্কিন টোন বেশিরভাগ সময়ই ফ্যাকাশে সাদা-গোলাপী আভাযুক্ত। এই স্কিনটোনে শ্যাডোর কন্ট্রাস্টটা সহজে চোখে পড়ে। আপনি নিজেও ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এই এক্সপেরিমেন্টটা করতে পারেন।

একটা বিউটি ডিশ, ফর্সা মডেল ও ক্যামেরা সমকোণে রাখুন। পর পর দুইটা ছবি নিবেন - একটা ছবি কোন রিফ্লেক্ট্র ছাড়া। আরেকটা ছবিতে যে পাশে বিউটি ডিশ তার ঠিক বিপরীতে রিফ্লেক্টর ধরেন। দেখবেন মুখে, গায়ে শ্যাডো কিভাবে মিলিয়ে যায়।

আর্টিস্টরা অনেক সময়ই শরীরটাকে মুচড়ে দেয় ভলিউমের জন্য। লুভরের ভেনাস দি মিলোর মূর্তি দেখবেন হাল্কা পাশ ফিরে আছে, উপরের ছবিতে দ্যাখেন থুতনিগুলো কাত হওয়া - গলার নিচে, ঘাড়ে শ্যাডোগুলো ধরার জন্য।

পোস্টের বিষয়বস্তু ভালো লেগেছে - (Y)

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ ফাহিম। তুমি ভাই মানুষ না। কতদিন নতুন ছবি দাওনা, হিসেব আছে? আমরা তো কাঙাল হয়ে গেলাম! শ্যাডো গুলি খেয়াল করেছি ফাহিম, তুমি ঠিক ধরেছ। কারাভাজ্জো বস লোক। আলো আঁধারের এই খেলার মধ্যে দিয়ে চরিত্রের একটি বৈশিষ্ট্যকে উনি মূর্ত করতে চান। আর তুমি যে স্কিন টোনের কথা বলছ, সেটা আমি খেয়াল করেছি। ইটালির দক্ষিণের মানুষের গায়ের রঙ তুমি যদি খেয়াল করে দেখ, তাহলে দেখবে তারা কিন্তু ধবধবে সাদা নন, হালকা গোলাপি আভা যুক্ত, সামান্য ট্যানড, আবার কারো কারো গায়ের রঙ একটু বেশিই ট্যানড। অর্থাৎ তুমি যে সাদা এবং গোলাপি আভার মিশ্রণ বলছ সেটা কি তাঁর ইচ্ছাকৃত নাকি তিনি তাঁর মডেলের গায়ের রঙকেই কেবল ফুটিয়ে তুলেছেন। আর স্বাভাবিক এই গায়ের রঙ তাঁর ছবির কাংখিত যাত্রাকেই আরও বিশিষ্ট করেছে, এমনটিও হতে পারে বৈকি!

মসীলক্ষণ পণ্ডিত এর ছবি

দারুণ বরাবরের মতই ! সামনে আরো শিল্পকর্ম নিয়ে আলোচনা করবেন নিশ্চই ! Sacrifice of Isaac নিয়ে লিখবেন আশা করি । শুনেছি, এখানে দেবদূত আর আব্রাহামের চেহারা একই । মিকেল কি তাহলে মনে করতেন দেবদূত বলে আদতে কিছু নেই ? সবই আমাদের মনের কল্পনা ?

মনি শামিম এর ছবি

লিখব। কারাভাজ্জোর ধর্মীয় কিছু চিত্রকর্ম নিয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে আছে। তার আগে ভেরমির!

মসীলক্ষণ পণ্ডিত এর ছবি

(পপ্পন)

মনি শামিম এর ছবি

ভেরমির নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি। খুব একটা সহজে হচ্ছেনা এই কাজ! :(

মসীলক্ষণ পণ্ডিত এর ছবি

'Girl with a Pearl Earring' এর সাথে সাথে নিশ্চই 'The View of Delft', 'Officer and Laughing Girl', 'The Music Lesson' নিয়ে আলোচনা হবে ! দারুণ দারুণ ! :)

মনি শামিম এর ছবি

আরে ভাই, শুধু এক বালিকার মুক্তোর দুল নিয়েই হাবুডুবু খাচ্ছি! বাকিগুলি পরে!

মসীলক্ষণ পণ্ডিত এর ছবি

:( ঠিক আছে, তাই সই ! (পপ্পন)

মনি শামিম এর ছবি

কিন্তু মসী ভাই, আপনি ভেরমিরের 'দি মিল্কমেইডের' কথা বললেন নাতো? আমার আলোচনা তো সেটা নিয়েই হবে এরপর! :p

guest writer এর ছবি

অপূর্ব বিশ্লেষণ।আরো পোস্ট চাই।

মনি শামিম এর ছবি

পোস্ট দেবো, বলছেন? তাঁর আপনার নাম ধাম চাই তো!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

চমৎকার :)

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মনি শামিম এর ছবি

(ধইন্যা)

রিক্তা এর ছবি

আহা আহা!
সুন্দর পেইন্টিং দেখতে ভালো লাগে। কিন্তু এতো গভীর করে মর্মাথ বুঝতে পারি না। কেউ আপনার মত লিখে দিলে আরো উপভোগ্য হয়। ধন্যবাদ!

--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।

মনি শামিম এর ছবি

আমি আমার সীমিত সামর্থ্য নিয়ে লিখছি। কিছু নিজের ভাবনা আবার কিছু আলোচনা দেখে-শুনে-বুঝে লেখা। চিত্রকর্ম ভালোবাসি। সেই টান থেকেই লেখা আসলে। বিশেষজ্ঞ নই, ভুল ত্রুটি হলে ধরিয়ে দেবেন। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ সুহান। অনেকে বলছেন সিরিজ করতে। কিন্তু আমি আসলে বিশেষজ্ঞ তো নই আবার শিল্প সমালোচকও নই। কিছুটা দ্বিধা তো কাজ করেই। নেহাত ভালোবাসার টানে এই লাইনে আসা যাওয়া করি। লিখতে ইচ্ছে করে, তাই নিজের কিছু ভাবনা আর এদিক ওদিক থেকে কিছু ধার করা তথ্য জুরে দিই। ঠিক সিরিজ করবো, এমনটা হবে কিনা আদৌ জানিনা। তবে হয়তো ছবি ধরে ধরে কিছু আলোচনা আর স্বল্প খ্যাত কিন্তু বিস্মৃত কিছু দিগগজদের নিয়ে আলোচনা চালানো যেতে পারে। আবার আপনাদের পাশে পেলে আলোচনাকে আরেকটু টেনে দীর্ঘ করা সম্ভব। সেটাতে এই প্রচেষ্টায় খানিক নতুন মাত্রা যুক্ত হবে হয়ত। দেখা যাক। আপাতত সামনের আলোচনা ভেরমির নিয়ে!

মসীলক্ষণ পণ্ডিত এর ছবি

একমত

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সিরিজ করুন একটা ছবি নিয়ে :)

তারেক অণু এর ছবি

বাহ, দারুণ হচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ।
মনে আছে বাক্কাসের পেইন্টিঙটা একসাথে দেখেছিলাম উফিজিতে !

মনি শামিম এর ছবি

হ্যাঁরে মনে আছে। সেদিন আবার দেখা হল কৌস্তুভদের সাথে। এইবার দেখলাম উফিজি কর্তৃপক্ষ কারাভাজ্জোর নামে পৃথক একটি ঘর উৎসর্গ করেছে। নাম রেখেছে 'কারাভাজ্জো রুম।' কারাভাজ্জোর গৌরব দিন দিন বেড়েই চলেছে মনে হচ্ছে। সেই ঘরে মোট তিনটে ছবি। এর আগে এমনটা ছিলনা। উফিজির সংস্কার কাজ চলছে, মূলত সম্প্রসারণ এর উদ্দেশ্য। আচ্ছা, উচ্চারণ বাক্কুস না বাক্কাস?

মসীলক্ষণ পণ্ডিত এর ছবি

বাক্কাস !

মনি শামিম এর ছবি

তাহলে তো নামটি পাল্টাতে হয় মশাই! আপনি নিশ্চিত তো?

মসীলক্ষণ পণ্ডিত এর ছবি
মনি শামিম এর ছবি

(Y)

নজমুল আলবাব এর ছবি

ছবি বুঝি না বেশিরভাগ সময়। দেখে ভালো লাগে, খারাপ লাগে এরকম হয় অবশ্য, কিন্তু সেটাকে ছবি বুঝা বলা যাবে না। তবে ছবির গল্প শুনতে বেশ লাগে। মন দিয়ে শোনার মতো করে যদি কেউ বলেন, তখন সেটা শুনি। আপনি বল্লেন, আমি শুনলাম। ধন্যবাদ।

মনি শামিম এর ছবি

আমি নিজেও ছবি ভালো বুঝিনা, তবে বোঝার চেষ্টা করি শুধু সেগুলি, যেগুলি ভালো লাগে। ছবির পেছনের গল্প আমাকেও আকৃষ্ট করে আপনার মতন। আর একটু জানার চেষ্টা করি এইসব ছবি তৈরির প্রেক্ষাপট, কারণ ইত্যাদি। কারাভাজ্জোর চিত্রকর্ম রক্ত মাংসের মানুষের নিয়ে। এইজন্যই তা আমাকে বেশী টানে হয়ত। কিছু কিছু ছবি মুহূর্তের কথা বলে, কিছু বলে অব্যাক্ত যন্ত্রণা কিংবা আনন্দের কথা। কিছু ছবি নিস্তব্ধতাকে বুনতে থাকে। আবার আর একটা জিনিষ ভালো লাগে। তাহলো ছবিটি দেখে আমি কি বুঝলাম সেটি। আপনাকে শোনার জন্য ধন্যবাদ।

চরম উদাস এর ছবি

বাপরে! কলা বলতে একমাত্র গাছের কলা ছাড়া ছাড়া আর অন্য কোন কলার আগা মাথা বুঝি না। কিন্তু এমন সুন্দর করে ছবিগুলো বুঝিয়ে দিলেন যে আসলেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম।
(Y)

মনি শামিম এর ছবি

চৌ ভাই, আপনি যা নিয়ে লিখবেন তাতেই তো সোনা মেশানো থাকবে, তা সে ত্যানা প্যাঁচানোই হোক কি কণে দেখা! এই লাইনে আপনি আসলে আমাদের পালানো ছাড়া উপায় থাকবে কি? আপনার ভালো লেগেছে, তাতেই আমি খুশী। ধন্যবাদ!

ফরহাদ হোসেন মাসুম এর ছবি

তবে চলুক, কারাভাজ্জো। (গুড়) গুড় নেন

মনি শামিম এর ছবি

ঠিক আছে। বলছেন যখন কারাভাজ্জো নিয়ে দেবো আরেকখান পর্ব। তবে খানিক পর!

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ একটি পোস্ট। শুভকামনা রইল।

তুহিন সরকার

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ তুহিন। শুধু ধন্যবাদ দিলেই চলবে? আপনার লেখা কই?

মেঘা এর ছবি

অসাধারণ পোষ্ট দেরী করে পড়ার জন্য দুঃখিত মনি ভাই। এতো সুন্দর করে কেমন করে বুঝিয়ে দিলেন ছবিগুলো! শিল্পী কী ভেবে কী এঁকেছেন জানতে খুব ভাল লাগে আমার। একটা সিরিজ করেই ফেলুন তো! আমরা এখানে অনেকেই আছি যাঁরা ছবির ভক্ত কিন্তু বুঝি না কিছুই :p

পোষ্টে পাঁচ তারা! (Y)

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ আপু ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য। কানে কানে বলি আপু, ভেরমিরের বালিকার মুক্তোর দুল নিয়ে একটা লেখা দিয়েছি পাঠিয়ে সচলে। অপেক্ষা করছি, কখন প্রকাশিত হয়! ওই লেখাটি পড়ে তোমার মতামত জানাবে অবশ্যই, যদি তা সচল প্রকাশ করার যোগ্য মনে করে। সিরিজ করার কথা বলছ না? এইতো হয়েই যাচ্ছে সিরিজের মতন। একটু একটু করে। এরপর আরও শিল্পী আসবে, আসবে জলরং, আমার প্রিয় মাধ্যম, আসবেন দুরের, আসবেন টার্নার সাহেব!

মেঘা এর ছবি

ইটা রেখে এসেছি :D

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মনি শামিম এর ছবি

দেখলাম। তোমাকে কানে কানে বলা কথা পাড়ায় পাড়ায় রটে গেল! সচলকে ধন্যবাদ।

রণদীপম বসু এর ছবি

বাহ্ ! এভাবে চিত্রকলার চমৎকার ব্যাখ্যা পড়তে পড়তে নিশ্চয়ই সমঝদার হয়ে ঊঠবো। চিত্রকলায় বরাবরের আগ্রহ থাকলেও আফসোস ও দুঃখ হলো শিল্পের ভাষাটা বুঝে ওঠতে পারি না।

ধন্যবাদ শামিম।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মনি শামিম এর ছবি

আমিও পারিনা দাদা। তবে চিত্রকলার ব্যাখ্যা অনেকটা নিজের সাথে কথা বলার মতন, নেজেকে বোঝার মতন। চিত্রকর্ম আর সাহিত্যের মধ্যে খুব বেশী তফাৎ নেই, দুটোই শিল্পীর ভাষ্য। আমরা আমাদের মত করে তা বোঝার চেষ্টা করি। শিল্প আলোচনা সাহিত্য আলোচনার মতই কৌতূহল উদ্দীপক। আর দাদা আপনি অনেক ভালো শিল্পের ভাষা বোঝেন। সেটা আরে কেউ না জানুক, আমি তো জেনেছি।

কৌস্তুভ এর ছবি

চমৎকার সিরিজ হচ্ছে মনিদা!

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তুভ। সিরিজ করব এমনটা ভাবিনি আগে। তোমাদের উৎসাহ পেয়ে মনে হচ্ছে, করলে মন্দ হয়না। দেখি চেষ্টা করে, কি দাঁড়ায় শেষ পর্যন্ত!

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক অনেক অনেক সুন্দর, ছবি দেখতে ভাল লাগে কিন্তু বুঝি না। আপনার এত চমৎকার করে কাহিনী বলে দিলেন ছবি আরও ভাল লাগলো

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে। কিন্তু নাম দিলেন না যে?

অতিথি লেখক এর ছবি

সবসময়ই কমেন্ট করার পর নাম দিতে ভুলে যাই :p
ইসরাত

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ ইসরাত। মন্তব্য করলে নামটি দিতে ভুলবেন না।

সন্দেশ এর ছবি

একই সময়ে প্রথম পাতায় একাধিক পোস্ট থাকায় অপেক্ষাকৃত পুরনো পোস্টটিকে প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে নিজের ব্লগে প্রকাশ করা হলো।

ধন্যবাদ।

মনি শামিম এর ছবি

সঠিক কাজটিই করা হয়েছে। ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।