আমার ছোট্ট খাটটির পাশে বেশ কয়েকটি বই পরে রয়েছে ক'দিন হল। বুদ্ধদেব বসুর 'শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ', রমিলা থাপার এর 'ভারতবর্ষের ইতিহাস', হাসানের 'চালচিত্রের খুঁটিনাটি', মওলানা আবুল কালাম আজাদের 'ভারত স্বাধীন হল'- এইসব বইগুলি আমার বিছানার পাশে বেশ একটা ঢিবির আকৃতি নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। তবে মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে, কিছুতেই বই পড়ায় মনোনিবেশ করা যাচ্ছেনা। একটি বইয়ের কিছু অংশ পড়ি তো আরেকটি বইয়ে হাত দিই। মনে শান্তি না থাকলে যা হয়!
পাঁচ পাঁচটি বছর কেটে গেল এই ইটালিয়ান পেনিনসুলায়। কত বিচিত্র, বর্ণীল মানুষের সাথে পরিচয় হল। কতশত জায়গায় যাওয়া হল। কত শত বাঙালি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন পুরো দেশটা জুরে। যেখানেই গেছি, সেখানেই বাঙালির সন্ধান মিলেছে। সেইযে শুরুর দিকে বারিতে দেখা ফুল হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা এক অর্ধবয়স্ক বাঙালি। রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছি, আমাকে দেখে কেমন আড়ষ্ট একটা ভাব তাঁর, করবেন না তাঁর ফুল বিক্রি আমার কাছে। উপহার দিয়েছিলেন একটি লাল টকটকে গোলাপ! মনে পড়ছে এই বোলোনিয়ার পাহাড়ে দেখা আনিসের সাথে। ১৮ বছরের এক বালক। কত শত পথ পেরিয়ে, বাধার পাহাড় ডিঙ্গিয়ে, কখনও ডিঙ্গি নৌকো, কখনও বা গাড়ির পেছনে মাথা লুকিয়ে এসে পরেছে ইটালির দক্ষিনে। চোখ মেলতেই দেখেছে পুলিসের চোখরাঙ্গানি। ঘুরতে ঘুরতে এসে আশ্রয় পেয়েছে এই শহরের এক সরকারি আশ্রমে। আবার একজন রাজ্জাক কে দেখেছি জেনোয়ায়। জেনোয়াতে গিয়ে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত অবসন্ন হয়ে ফোনের ক্রেডিট শেষ করেছি যেই, সেইমাত্র সন্ধান পেয়েছি এক বাংলা ফোনের দোকানের। সেখানে অচেনা রাজ্জাক আমার দশ মিনিট খরচ করা ফোনের টাকা নিলেননা তো নিলেনইনা। কত জোর করলাম, তাও কাজ হলনা। গারদা লেক দেখতে গিয়ে এক সুন্দরীকে দেখেছি লেকের ধারে বই পড়তে। কাছে এসে ছবি তুলতে চাই বলতেই রাজি হয়ে গেলো। সেদিন আকাশ ভরা মেঘ, বৃষ্টি বুঝি নেমে আসবে এখুনি! মায়াবতীকে দেখে মনে হয়েছিল যেন কতদিনের চেনা! ও কি আমার মতই দুদণ্ড আশ্রয় চেয়েছিল এই শহরে?
পাঁচ বছরের খানিক বেশিই হয়ে গেল এই ইটালি থাকা। এখানে একে একে অণু এল, আনন্দ আপা এল, ঝুমা এল, কৌশিক এল, কৌস্তুভ এল, সবশেষে এল বাঁধনরা। ওদের সবার হাত ধরে হেঁটেছি ইটালির পথে পথে। সচলে লিখতে শুরু করলাম এখানে এসেই। লিখতে না লিখতেই সচলের সূত্রে দেখা হয়ে গেল সমমনা এক ঝাঁক তরুণের। মিঠু ভাই, জিল্লুর ভাই, মুরাদ ভাই, রিমন, শিপলু ভাই, সাথী ভাবী, শিল্পী ভাবী। সবাই মিলে এখানেও গড়ে তোলা হল এক সংগঠন। দেশে গণজাগরণ মঞ্চ হচ্ছে, সেটা ঘিরে এখানেও ব্যাপক উত্তেজনা, আশার আলো। এই আকাংখাকে কেন্দ্র করে দেখতে দেখতে এখানেও কিভাবে জানি একটা পাঠাগারও আমরা নির্মাণ করে ফেললাম। এই পাঠাগারে বই দিতে প্যারিস থেকে ছুটে এল সজীব, এ যেন কল্পনাকেও হার মানায়!
এই পাঁচ বছরে নানান ছুটি ছাটায় কাজের ফাঁকে ইটালির পথে পথে ছুটেছি অনেক, ঘুরেছি অনেক। বড় বড় জাদুঘরে ঢোকার জন্য উন্মুখ হয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা, এখানেই আমি আমার মত করে আবিষ্কার করতে চেয়েছি বের্নিনিকে, কারাভাজ্জোকে। আল্পস পর্বতের ধার থেকে ভিসুভিয়াসের কোল পর্যন্ত ছুটে গিয়েছি। বোলোনিয়ার হারিয়ে যাওয়া রেশম শিল্পের গল্প জেনেছি, দান্তের কবরে গিয়ে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে রাভেনা এবং ফ্লোরেন্স নগরীর দীর্ঘদিনের টানাপড়েনের গল্প শুনেছি! রাভেনায় যিশুর প্রথম মোজাইকের পোর্ট্রেট দেখেছি, জেনোয়ার মুল গির্জার বাইরে এক সিংহ মূর্তির রূপ দেখে বিস্মিত হয়েছি, ভেনিসে সারাদিন টোটো করে ঘুরে বেলাশেষের ট্রেন মিস করে সারারাত ঠাণ্ডায় কাতর হয়ে রেলস্টেশনে ঘুমিয়েছি! শুধু রোম দেখব বলে কত বিনিদ্র রজনী গেছে, মিলানের কেন্দ্রীয় গির্জা কিংবা নেপোলির সমুদ্র তীরের দুর্গ দেখে অভিভূত হয়েছি। বুট সদৃশ এই ইটালির হিলস্বরূপ সালেন্তো যেমন গিয়েছি তেমনি দেখেছি এর পায়ের পাতার সদৃশ শহর রেজ্জো ক্যালাব্রিয়া। ত্রেন্তোর পাহাড়, পাদোভায় জত্তোর কীর্তি, গারদা লেকের টলটলে জল, ভেরোনায় জুলিয়েটের বাড়ি, বারির বেতের ঝুড়ি, কাতানিয়ার সিরামিক, মুরানোর গ্লাস, পম্পেইয়ের ভস্ম, পালেরমোর বোটানিক্যাল গার্ডেন, মদেনার ভিনেগার, আপেনিনো পাহাড়ের ধার ঘেঁষে গাড়িতে করে ছুটে চলা- এমনি কতশত ছোটবড় স্মৃতি মনের কোণায় ভিড় করছে আজ!
এখন বড়দিনের উৎসব চলছে। দুই সপ্তাহের অখণ্ড অবসর। অনেক কিছু লেখা বাকি। রাহুল দেব বর্মণকে নিয়ে একটি ধারাবাহিক লেখার কাজে হাত দিয়েছিলাম। প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্তের অভাবে তা এগুচ্ছেনা। বের্নিনিকে নিয়ে লেখারও সেই একই হাল। কি করি কি করি। মনটা ছটফট করছে দুইদিন হল। দেশের পরিস্থিতিও ভাল নয়। হঠাৎ মনে হল, কিছু ছবি রয়েছে ইটালির। সেগুলি খানিক বিনিময় করা যেতে পারে। এই বিনিময় করে যদি মনে খানিক শান্তি পাওয়া যায়!
১) গারদা লেকের ধারে বইপড়ুয়া সেই মেয়েটি
২) পাখির চোখে দেখা ভেরোনা নগরী
৩) নেপোলির দুর্গ
৪) পম্পেইয়ের ভস্ম থেকে জেগে ওঠা শহর
৫) বোলোনিয়ার পাহাড়ে
৬) অপূর্ব ফ্লোরেন্স নগরী
৭) পিসার হেলানো দালান
৮) প্রাতোর গির্জায় দোনাতেল্লোর অপরূপ শিল্পকর্ম।
৯) রাভেনায় মোজাইকের ওপর আঁকানো প্রথম যিশুর আত্মপ্রতিকৃতি
১০) রোম শহরের জৌলুস
১১) মিলান রেলস্টেশন
১২) পাহাড় থেকে দেখা কুয়াশামাখা তুরিন নগরী
১৩) চিনকুয়ে তেররে কিংবা পঞ্চগ্রামের এক গ্রাম!
১৪) সালেন্তো শহরের সমুদ্রে নীল রঙের আভা
১৫) পালেরমো কিংবা সিসিলিতে ভোর হয় হয়
১৬) রেজ্জো ক্যালাব্রিয়ায় সাগর ধারে একটি উন্মুক্ত মঞ্চ
১৭) পাদুয়ায় বিয়ে
১৮) জেনোয়ার সিংহ মূর্তি
১৯) তুসকানি রাজ্যের আরেক শহর সিয়েনা
২০) জেনোয়ার অপূর্ব প্রকৃতি
২১) মদেনা শহরে বেলা শেষের এক চিলতে রোদ্দুর
২২) ভেনিসে সন্ধ্যা
২৩) বোলোনিয়া শহরের এক আর্টশপ
২৪) ফ্লোরেন্স শহরে মুক্তিযোদ্ধার হাতে ছাগু নিধন!
মন্তব্য
আমাদের দেশের মানুষগুলো সত্যি তুলনাহীন! এরকম বিশাল হৃদয় বোধ করি খুব দেশের মানুষেরই আছে!
লেখাটা ভাল লাগল, তবে এর মূল আকর্ষন যে ছবিগুলো, তা কিন্তু আসেনি পোস্টটিতে! হয়ত ট্যাকনিকাল সমস্যা!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
ধন্যবাদ। মন্তব্য করবার সময় নাম দেবেন। আচ্ছা, আমি এই পোস্ট টিতে সর্বসাকুল্যে ২৫ টি ছবি যুক্ত করেছি। আপনি কি একটি ছবিও দেখতে পাচ্ছেন না? তাহলে নিচে লিলেন ভাই ছবি দেখলেন কি করে?
লিলেন ভাইয়ের কথা আলাদা, কারণ উনি যেখানে কোন ছবি নেই (মানে, আমজনতা যেখানে আন্ধা), সেখানেও ছবি দেখতে পান আর সেগুলোকে বিশুদ্ধ কবিতায় রুপান্তরিত করেন।
যাইহোক, নীচে তানিম ভাই ও কিন্তু বলেছেন যে, উনি দেখতে পাননি। জানি না, এইটা হয়ত পার্সোনাল কম্পিউটারের পার্সোনাল সমস্যা, ইউনিভার্সাল হইলে তো কেউই দেখত না।
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
ধন্যবাদ দীনহীন। ছবি না দেখলে আমার সমস্যা। কারণ আসলে আমি ছবি ব্লগই দিতে চেয়েছিলাম। মানে কিছু লিখতেই চাইনি প্রথমে। তারপর কিছুমিছু লিখে ছবি যুক্ত করেছি। এখন ছবি যদি নাই দেখতে পান তাহলে আমার পণ্ডশ্রম। ছবি ব্লগে ছবি সচলে যুক্ত করা খুবই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আর এবার কেন জানি, আমাকে এই কাজটি করতে গিয়ে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। বারবার এরর দেখাচ্ছিল। সমস্যাটা আমার এখান থেকেই হল কিনা বুঝতে পারছিনা। কি করি বলুন তো?
দীনহীন, আমি ছবিগুলি ঠিক করে দিয়েছি। এই টেকনিক্যাল সমস্যাটি আমার দ্বারাই ঘটেছে। সংশোধন করেছি। আশা রাখি এবার দেখতে পাচ্ছেন। ধন্যবাদ সমস্যাটি ধরিয়ে দেয়ার জন্য।
অসাধারণ ছবিগুলা
ধন্যবাদ লিলেন ভাই। ছবিগুলি দেখতে পাচ্ছেন ঠিকমতন? একজন তো দেখতে পাচ্ছেন না বলে জানাচ্ছেন!
দারুণ সব ছবি, সুন্দর বর্ণনা।
অমি_বন্যা
ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
আহ, দারুণ ছবি আর দুর্দান্ত ক্যাপশন (বিশেষতঃ শেষটার)
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
অঞ্চলভিত্তিক সমিতি আর মসজিদ-মন্দির গড়তে অতিউৎসুক প্রবাসি বাঙালি অনেক দেখেছি, আপনারা পাঠাগার গড়ে তুলেছেন এমন উদ্যোগ আমায় বিস্মিত এবং আনন্দিত করেছে।
পোষ্টের প্রিয় ছবি সিসিলির ভোর।
......জিপসি
জিপসি, আমি অপেক্ষা করছি তোমার জন্য এই বলনিয়া শহরে। আমার শহর আঁচল পেতে বসে আচে আছে তুমি আসবে বলে। তুমি বই নেবে, বই পড়বে। তুমি কবে আসবে, আমাদের যে আর তর সয়না!
এত অসহ্য সুন্দর ছবির পোস্টগুলোতে প্রথম দেখায় লেখা পড়তে আমার ক্লান্ত লাগে
পরে মুগ্ধতা কিছুটা কেটে গেলে সেই পোষ্টটাতে আরেকবার ঢুকে বর্ণনা টা পড়ি। এই কমেন্ট তাই প্রথম দর্শনের।
মাসুদ সজীব
ধন্যবাদ সজীব। ছবিগুলি তোমার ভাল লেগেছে এইতো অনেক। তোমার 'প্রাণ' লেখাটা নিয়ে আজই একটু আলাপ করছিলাম আমার এক বন্ধুর সাথে। ভাল থেকো।
বোধহয় একটু ভুল হচ্ছে শামিম ভাই,
প্রাণ নিয়ে লিখেছেন "সজীব ওসমান" আর কমেন্টকারী "মাসুদ সজীব"
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আরে তাইতো! আমি তো খেয়ালই করিনি! এত সজীব থাকলে তো মুশকিল!
শামিম ভাই নামে মিল না শুধু কাকতালীয় ভাবে আমার আর আমার মিতার পড়ালেখার বিষয়ও প্রায় এক (অনুজীব বিজ্ঞান) এইটুকু মিল ছাড়া বাকী সব বোধহয় অমিল । উনি আমার চেয়ে জ্ঞানে, অভিজ্ঞতায় অনেকবেশি অভিজ্ঞ, আমার লেখার হাত নেই, আমি বয়সেও বেশ ছোট। মাত্র পাশ করে বের হওয়া বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কামলা দেই।
মাসুদ সজীব
কি সুন্দর করে বললে! সজীব নামের ছেলেগুলির প্রতি আমার আগ্রহ তো বাড়িয়ে তুলছ তোমরা!জানো? সজীব নামের প্যারিসের এক ছেলে আমাদের লাইব্রেরির জন্য ওখান থেকে পাঁচটি বই সেদিন এসে দিয়ে গেছে। আমি বিস্মিত, অভিভূত! ভালো থেকো সজীব। আশীর্বাদ নিও।
অসাধারণ ছবি গুলো। বার বার শুধু দেখতে ইচ্ছা করে। আফসোস হচ্ছে এই ভেবে যে এত কাছে থাকি ইটালির। অথচ কখনো যাওয়া হয়নি। সুন্দর একটা সময় কাটে যখন এরকম কোথাও যাওয়া হয়। মনে পরছে ক্রিমিয়া তে গিয়েছিলাম একটা কনফারেন্সে। এত সুন্দর যে দেখতে দেখতে সময় পার করে দিয়েছি। দুচোখ ভরে শুধু সৌন্দর্যে অবগাহন করেছি। সেরকম করে ছবি আর তোলা হয়নি।
গবেষক
আপনি কোথায় থাকেন জানাবেন? আমাদের এই বোলোনিয়া শহরের ঠিকানায় আপনাকে স্বাগতম। এত কাছে থাকেন যখন, এখানে আসতে ভুলবেন না যেন! ক্রিমেয়া তো অপূর্ব। আপনি ঠিকই বলেছেন, অনেক সময় প্রকৃতি এত সুন্দর হয়ে ধরা দেয় যে তার দিকে বিমুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে ছাড়া উপায় থাকেনা। ছবি তুলে যাওয়া নয়, হয়ত তা একান্ত করে দেখারই মতন, নীরবে উপলব্ধি করবার মতন। ছবি তুলে বিনিময় করা হয়ত বাইরের ব্যাপার, আর প্রকৃতিকে নিজের মতন বুঝে নেয়াটা ভেতরের কারবার, নিজের সাথে নিজের কথা বলবার মতন, নিজেকে চেনার মতন।
। ঘন ঘন এমনতর পোস্ট দিয়ে আমাদের চিত্তকে আরো তৃপ্ত করুন। লেকের পাড়ে বসা পড়ুয়া মেয়েটি মন কেড়ে নিয়েছে।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
লেকের ধারের মেয়েটি দিপু ভাই মিলানে মডেলিং পেশায় জড়িত। ও ছবি তোলার পর আমাকে ওর মেইল ঠিকানা দিল। এরপরে ওকে ফেসবুকে যুক্ত করে দেখি ও রীতিমত পেশাদার মডেল। খুব ভাল যন্ত্রশিল্পীও বটে। মানে বহু গুনে গুণান্বিত আরকি। তাইতো মেয়েটির ছবি যখন তুলি, আমার ছবি তোলাটা ওকে যেন কোনভাবেই অমনোযোগী করতে পারেনি। ওর ছবি তুলতে চাই জিজ্ঞেস করার পর ওর উত্তর ছিল, "তোমার যত খুশী তোল!" আমারও ছবিটি বিশেষ প্রিয়। ইউরোপে আত্মপ্রতিকৃতি না জিজ্ঞেস করে তোলাটা কিন্তু ভীষণ ঝক্কি!
কয়েকটা ছবির এক্সিফ দেখলাম। দারুণ!! বিশেষ করে ২২ এবং ১৫ নম্বর। প্রত্যেকটা ছবি নিয়েই একটা করে ছোট পোস্ট হতে পারতো।
একটা জিনিস ভালো লেগেছে--অনেকদিন ধরে ছবি তুলে সেরা গুলোই প্রকাশ করেছেন। এরকমই হওয়া উচিত।
ধন্যবাদ প্রকৃতি প্রেমিক। আসলেই, প্রত্যেকটি ছবি নিয়ে পৃথক পোস্ট হতে পারত। কিন্তু মন ভাল ছিলনা কাল। স্মৃতি মেদুর হয়ে পরেছিলাম বড়!
সত্যি বলতে কি, আমি আমার সেরা ছবিগুলি এখানে প্রকাশ করতে চাইনি। মানে বিভিন্ন জায়গায় তোলা ছবির একটা সন্নিবেশ ঘটাতে চেয়েছি। আর আমি দেখেছি, ভ্রমনের সময় সময় স্বল্পতার কারণে কিংবা বিক্ষিপ্ত মনের কারণে খুব ভাল ছবি আমি তুলতে পারিনি। আমার ভাল ছবিগুলি ঘুরে ফিরে এই শহরকে কেন্দ্র করেই ঘুরপাক খেয়েছি।
বাকিগুলি ঝড়েবক বলতে পারেন!
আমি আসলে সেরা বলতে সেই অর্থে বোঝাইনি যে বাকীগুলো সেরা নয়। আমি জানি আপনি হয়তো বুঝতে পেরেছেন কী বলতে চেয়েছি
সেরা বলতে সিলেক্টিভ ছবিগুলোর কথাই বলতে চেয়েছি। তবে মানছি শব্দ চয়নে গণ্ডগোল হয়েছে
ঠিক বলেছেন প্রকৃতি প্রেমিক, আমি নির্বাচিত ছবিই দিয়েছি। তবে শুধু নির্বাচিত ছবিই অনেক ভাল হতে পারত। কিন্তু হিসেব করে দেখেছি, যা তুলেছি তা বিশেষ ভাল কিছু হয়নি। শুধু ভ্রমণে ভাল ছবি তোলা মনে হয় আমার কম্ম নয়। আর দেখছেন তো, আমি আপনার পরামর্শ মাফিক ছবিগুলি ঠিক করে দিয়েছি এখন। ভাল থাকুন।
রাজু, আপনিও চমৎকার লেখেন, আপনিও চমৎকার ছবি তোলেন। যদি এদিকে কখনও আসা হয়, ডাক দিয়েন। জানান দিয়ে ডেকেন। ইটালি অপরূপা দেশ। এখানে এলে, শুধু প্রকৃতিই নয়, কলা, সাহিত্য কিংবা ইতিহাসের মাঝে হারিয়েও যেতে পারেন! খাবারের কথা আর নাই বা বললাম! আসুন জলদি!
সবগুলো ছবিই বাঁধিয়ে রাখার মত।
ধন্যবাদ আব্দুল্লাহ ভাই। আপনার নতুন লেখার অপেক্ষায় আছি।
খুব সুন্দর লিখেছেন। ছবিগুলো দেখেতো এখনি ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
ছবিগুলো দেখতে পারছি না। আপাতত
তানিম ভাই, ছবিগুলি দেখতে পাচ্ছেন না কেন? কি মুশকিল? জানেন, এই ছবি আপলোড করতে গিয়ে পুরো এক দুপুর নিঃশেষ করেছি। বারবার এরর দেখাচ্ছিল। বিরক্ত হয়েছি অনেক। তারপরেও দেখলাম আপলোড হল। এখন একজন বলছেন যে তিনি দেখতে পাচ্ছেন না। কি হল?
চমৎকার দেখা গেল এখন। ছাগু নিধনের ছবি’টা ব্যাপক হইছে
ধন্যবাদ তানিম ভাই। আপনার লেখা পড়ছি।
আপনি আইফ্রেম কোড পেস্ট করেছেন বলে কেউ কেউ দেখতে পাচ্ছে না। বিবিকোড দিলে সমস্যা মিটবে।
ঠিক করে দিলাম। ধন্যবাদ প্রকৃতি প্রেমিক।
ইশ ঠিক যখন করলেনই ৬৪০পিক্সেল প্রস্হের করে দিতেন, তাহলে ছবিগুলো আরো ভালো/বড় দেখাতো!
ইশ। এইটা সত্যিই করা যেত। তবে আবার কি মনে হচ্ছে জানেন? একটা দুটো তো নয়, পঁচিশখানা ছবি! ৬৪০ মাপের হলে কি লেখার আকার বেশী বড় হয়ে যেতনা?
মারাত্মক!
দূর্গের লাইটিং পছন্দ হইছে, ঐখানে কি লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো হয়? ভিতরে গেছিলেন?
..................................................................
#Banshibir.
ধন্যবাদ সত্যপীর। গত বছর বড়দিনের দিন তোলা ছবি। এইজন্যই বিশেষ করে আলোকসজ্জার ব্যাবস্থা করা হয়েছিল। দুর্গের ভেতর গিয়েছিলাম বৈকি। সাধারণ দুর্গের মতই। ছোট ছোট কামান রয়েছে, সৈন্যদের নজরদারির জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত ব্যাবস্থা।দুর্গটি আলাদা করে খুব বৈশিষ্ট্যপূর্ণ মনে হয়নি আমার। তবে পালেরমো শহরের কোস্টাল লাইনটি অপরূপা। তাই দুর্গটি দূর থেকে দেখতে খুবই মনোরম।
অসাধারণ সব ছবি মনি ভাই।
লেখাও ভাল হয়েছে কেমন জানি একটু মন উদাস করা।
ইটালি যাইতে মন চায়।
অফ টপিক- আপনার দেশে যাবার কতদুর কি।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ধন্যবাদ আরজু। ইটালিতে এসো জলদি। একটু মন খারাপ ছিল, ঠিকই ধরেছ। আমার দেশে যাওয়াটা মনে হচ্ছে সুদূর পরাহত। এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছিনা। তোমার সাথে এখনও দেখা হলনা, আফসোস।
ছবিগুলো একটু বেশিই অসাধারণ।
আর কয়দিন আগে ভেনিসে গিয়ে আমার রাজ্জাক সাহেবের মতই অভিজ্ঞতা হয়েছিল। কিভাবে একজনের সাথে যেন পরিচয় আমদের সাথের একজনের, আর সাথে মিলে গেল তারা একই জেলা থেকে এসেছে এবং অনেক বেশি দূর সম্পর্কের আত্মীয়। ব্যাস, এর সুত্র ধরেই একদিনের দুপুরের খাবার খেতে হয়েছিল উনার ফ্ল্যাটে, তিনি এবং আরও ৫ জন বাংলাদেশি এত আয়োজন করেছিলেন যে আমরা অবাক হয়ে গিয়েছিলাম, কারণ জার্মানি আসার পর একসাথে ৫-৬টা দেশি আইটেম কোনদিন খাইনি, তার উপর উনারা এত কষ্ট করে রান্না করেছেন। এই মানুষগুলোকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমরা খুঁজে পাইনি। সত্যিই তুলনাহীন আমদের দেশের মানুষগুলো।
-নিহাদ
ধন্যবাদ নিহাদ। চমৎকার অভিজ্ঞতা বিনিময় কড়ার জন্য ধন্যবাদ। আচ্ছা, আপনি জার্মানির কোন শহরে থাকেন? এদিকে আসলে অবশ্যই আওয়াজ দেবেন।
নতুন মন্তব্য করুন