সচলত্ব প্রাপ্তির পর প্রথম লেখা
অসাধারণ দৃশ্যপট, মাথা নষ্ট করা ক্যামেরার কাজ, উজ্জ্বল শিল্প নির্দেশনা আর নিখুঁত কম্পোজিশানে তৈরি করা হয়েছে সিনেমাটা। দুই মিনিট পর পর মারাত্মক সব ‘ওরে খাইসে’ টাইপের ব্যাপার-স্যাপার। সাধু সাবধান, আমি কিন্তু ভিস্যুয়াল ব্যাপার গুলোর কথা বলছি, সিনেমার কাহিনী ব্যক্তিগত ভাবে আমার ভালো লাগে, অনেকের নাও লাগতে পারে।
এই সিনেমা দেখতে গিয়ে প্রথম লাদাখের লেক গুলো দেখি। তখন একবার চাঁদি গরম হয়ে গিয়েছিলো, কিন্তু ছাত্র অবস্থায় তেমন কামাই না থাকায় সেই গুড়ে এক বস্তা বালি ঢেলে বসে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না। আরেকবার সেই পোকা কিলবিলিয়ে উঠলো থ্রী ইডিয়েটস দেখার পর। আমি হিন্দি সিনেমা দেখি না বললেই হয়, কিন্তু আমির খানের লাগান এর পর থেকে সিনেমা গুলো দেখেছি। ‘রাং দে বাসান্তি’ আমার খুবই পছন্দের ছবি।
থ্রী ইডিয়েটস এর শেষ দৃশ্যটা লাদাখে শুটিং করা। ঐটা দেখার পর থেকে আবার আগের শখ জেগে উঠলো, যাবোই যাবো কাশ্মীর-লাদাখ। খোঁজ খবর নেয়া শুরু করে যা বুঝলাম, ঐদিকে যেতে হলে ডিসেম্বর থেকে মার্চ একদম হারাম। ভয়াবহ শীত আর তুষার ঝড়ে টুরিস্ট তো দূরের কথা, স্থানীয় মানুষজনই বের হয় না ঘর থেকে। তুষারপাতে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়,অফ সিজন দেখে হোটেল-গেস্ট হাউজ বন্ধ হয়ে যায় আর লেকগুলো যায় জমে। সোজা কথা যেভাবেই হোক নভেম্বরের মধ্যে জার্নি শুরু করতে হবে। তখন নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ। ধুমধাম অনলাইনে গিয়ে ইন্ডিয়ার ভিসা ফর্ম ফিল-আপ করে জমা দিলাম। এবার মাথায় হাত। বজ্জাতের দল পাসপোর্ট জমা দেবার তারিখই দিয়েছে পনের দিন পরে! আমার আবার ডিসেম্বরের চার তারিখে IELTS পরীক্ষা দেবার রেজিস্ট্রেশান করা ছিল, তাই ট্যুরের প্ল্যান পিছিয়ে নিলাম একেবারে ডিসেম্বরের পাঁচ তারিখ।
সময়মত পাসপোর্ট জমা দিয়ে আসলাম মতিঝিলের IVAC অফিসে, সেদিন হরতাল থাকায় জমা দিতে পনের মিনিটের বেশি লাগলো না। তিনদিন পরে গুলশানের IVAC থেকে ভিসা সহ পাসপোর্ট তুলে আনলাম, তাও আধা ঘণ্টার বেশি লাগলো না, তিন তলার টুরিস্ট ভিসা দেবার জায়গাটা প্রায় ফাঁকাই থাকে। চাপ থাকে চিকিৎসা আর ইমার্জেন্সি ভিসা গুলোয়। একমাসের ভিসা চেয়েছিলাম, ঠিক তাই দিয়ে দিলো। অনেককেই ইন্ডিয়ার ভিসা পাওয়া নিয়ে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয় শুনেছি, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে আমার কোন সমস্যাই হয় নি।
আমার প্ল্যান ছিল সম্পূর্ণ ট্যুরটাই বাই রোড করবো। ঢাকা-কলকাতা ট্রেন এ যাবো আর কলকাতা থেকেও যতদূর সম্ভব ট্রেনেই জার্নি করবো। কমলাপুর থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেসের টিকেট কাটতে গিয়ে আরেক দফা ভ্যাবাচ্যাকা। ট্রেন যায় মাত্র দুইদিন সপ্তাহে।ঢাকা থেকে ছেড়ে যায় রবি আর মঙ্গলবার, আর কোলকাতা থেকে ফিরে আসে সোম আর বুধবার। কিছুই করার নেই, কেননা ভিসায় বলে দিয়েছি ট্রেনে যাবো। ভিসায় সিল লেগে গেছে Entry: By rail Gede, এখন ট্রেনেই যেতে হবে।এটা নিয়ে পরে কি যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল.....থাক, সময় মত বলি।
কলকাতা থেকে শ্রীনগর বহু দূর, আড়াই হাজার কিলোমিটারের বেশি। এতটা পথ যদি ট্রেনে যাওয়া যায়, তবে জানালা দিয়েই ভারতের বেশ খানিকটা অংশ দেখে নেয়া যাবে, এই চিন্তা থেকেই ট্রেন নেয়া। দুইদিন ধরে ইন্ডিয়ান রেলওয়ের ওয়েবসাইট ঘাঁটলাম, মোটামুটি একটা শিডিউলও দাঁড় করিয়ে ফেললাম। প্ল্যানটা ছিল এইরকম: ঢাকা-কলকাতা-দিল্লী-সিমলা-মানালি-রোটাং পাস-লেহ-শ্রীনগর-দিল্লী-কলকাতা-ঢাকা
মোটামুটি কুড়ি দিনের একটা প্ল্যান।
এবার ট্রেনের টিকেট বুকিং দেবার পালা। ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রীর টিকেট কেটে ফেলেছি। কলকাতা-দিল্লীর রুটে দ্রুততম ট্রেন রাজধানী এক্সপ্রেস। টিকেট বুকিং বাংলাদেশ থেকে দেয়া যায় জানতাম, কিন্তু কি ভাবে তার কোন আইডিয়াই ছিল না। শরণাপন্ন হলাম ওডিন ভাইয়ের। সচলে ওনার ভারত ভ্রমণ-কাহিনী যারা পড়েছেন তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন, উত্তর ভারত-ভুটান ইত্যাদি জায়গার ধুলাবালি ওনার ঠ্যাঙ্গের তলায় পার্মানেন্টলি জমা থাকে।
ওডিন ভাই সন্ধান দিলেন এক এজেন্টের। টিকেট যখন কাটতে গেলাম, ঐ ব্যাটা দিলো আমার প্ল্যান একদম বরবাদ করে।হাসি মুখে তিনি আমাকে জানালেন, ডিসেম্বর মাস, সুতরাং রোটাং পাস বন্ধ হয়ে গেছে। আমি তব্দা খেয়ে বসে থাকলাম, এখন কি করি? সিমলা-মানালি হয়ে রোটাং পাস ছাড়া লাদাখ যাবার উপায় একটাই, আগে শ্রীনগর গিয়ে তার পর লেহ (লাদাখের রাজধানী)। সুতরাং আবার প্ল্যান বদলাতে হল। সেই এজেন্টই জানালো হিমগিরি এক্সপ্রেস এর কথা, সোজা কলকাতা থেকে জম্মু যায়। দিল্লীতে থামাথামি-ট্রেন পালটানো ইত্যাদির দরকার নেই। তাই সই। সিমলা-মানালি বাদ। শেষমেশ শিডিউল দাঁড়ালো ঢাকা-কলকাতা-জম্মু-শ্রীনগর-লেহ।
ফেরার মতলবটা ওখানে গিয়েই দাঁড় করাবো ঠিক করলাম। টিকেট কেটে ফেললাম কলকাতা থেকে জম্মু পর্যন্ত হিমগিরি এক্সপ্রেস এর। বলতে ভুলে গিয়েছি, টিকেট অনুযায়ী, কলকাতা-জম্মু ২০২১ কিলোমিটার এবং জার্নিটা ৪৬ ঘণ্টার! আরও আনন্দের বিষয়, হিমগিরি বাংলাদেশের ট্রেনের মতই, শিডিউল মেনে চলে না। কিছুটা দেরি হয়। কি আছে জীবনে, দলছুটের অমর ভাষ্যে, ডরাইলেই ডর......ইত্যাদি চিন্তা করে টিকেট কিনে নিলাম। ট্রেনে একবার চাপলে, একসময় তো থামবে। দেখা যাবে কি হয়।
বাক্স-প্যাটরা গুছিয়ে নিয়ে পাঁচ তারিখ ভোর ছয়টায় বেরিয়ে পরলাম বাসা থেকে। সকাল সাতটায় ট্রেন ছাড়বে, ক্যান্টনমেন্ট স্টেশান থেকে। শীতের ভোর, একেবারে মাঝরাতের মত অন্ধকারে ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে স্টেশান এ গিয়ে উঠলাম। (শীত কাহাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি ধারনা এতদিনে অবশ্য পালটে গিয়েছে, ঢাকায় নাকি এবার প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পরেছিল......ছোঃ। ফেরত এসে বাকি শীত মোটামুটি স্রেফ হাফ শার্টে কাটিয়ে দিয়েছি।)
গিয়ে দেখি পুরো ট্রেন এ মোটমাট তিরিশ জন যাত্রীও নেই। বুঝলাম কেন মৈত্রী এক্সপ্রেসের শিডিউল এত কম । ট্রেনটা যে আন্তর্জাতিক তা যাত্রীদের এক নজর দেখলেই বোঝা যায়। ছিলা মাথা, মিষ্টিকুমড়া রঙের চাদর পরা একদল ইসকন (International Society for Krishna Consciousness ,ISKCON) কাস্টমস অফিসারের সাথে কি জানি হাত-পা নেড়ে বোঝানোর চেষ্টা করছে, বিশাল দুই সরদারজি পাশাপাশি বসে গম্ভীর মুখে দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে আড্ডা মারছে, মরিচ লাল চাদর আর উলের টুপি পরা এক বৃদ্ধা শ্বেতাঙ্গিনী বসে বসে জপ মালা টিপছে। সবার কাঁধে পর্বত প্রমাণ লাগেজ, কিন্তু ঐ বৃদ্ধার হাতে শুধু একটা চোপসানো ময়লা জিন্সের স্কুল ব্যাগ। একটু পর পর টুপি খুলে নিজের চকচকে চাঁছা মাথায় হাত বোলাচ্ছে। পরে জেনেছি, তাঁর নাম অ্যাডেল, ব্রিটিশ নাগরিক। ট্রেনে আমার ঠিক সামনের সিটে বসেছিলেন তিনি। তাঁকে নিয়ে পরে আরও কাহিনী আছে, শুধু এটুকু বলে রাখি, তাঁর সাথে আবারো দেখা হয়েছিলো আমার ইন্ডিয়া গিয়ে। দালাই লামার দর্শনপ্রার্থী বৃদ্ধা অ্যাডেল আমার ভারত ভ্রমণের অন্যতম স্মরণীয় চরিত্র।
বেশ দ্রুতই কাস্টমস পার হয়ে ট্রেন এ গিয়ে উঠলাম। কেবিনে উঠে দেখি আমি ছাড়া কেবিনে আছেন মাত্র একজন ভদ্রলোক। একটু পরে দেখি উনিও উশখুশ করে উঠে চলে গেলেন পাশের চেয়ার কোচে। আমিও একটু পরে তাই করলাম। যা বুঝলাম পুরা ট্রেনের লোক এই এক বগিতেই এসে বসে গেছে। তাও বগি ভর্তি হয়নি! ঠিক সাড়ে সাতটা বাজতেই ট্রেন ছেড়ে দিলো।
ট্রেনের সিট গুলো ছোট-ছোট কিন্তু লোক কম থাকায় একেকজন দুই-তিনটা সিটে হাত-পা ছড়িয়ে আরাম করে শুয়ে বসে যেতে পারে। বাংলাদেশে শেষ স্টেশান কুষ্টিয়ার দর্শনা, এর পর কিছুদূর নো ম্যান্স ল্যান্ডের পর ওপারে স্টেশান গেদে। দুই খানেই চেকিং হয়, তবে যাওয়ার সময় বাংলাদেশে লাগেজ খুলে চেক হয় না, তাই ঝামেলা একটু কম। গেদে গিয়ে শুরু হয় ফুল চেকিং। এই দুই স্টেশান এই চেকিঙেই মোটামুটি ঘণ্টা তিন-চারেক খেয়ে নেয়, নাহলে ঢাকা-কলকাতা ট্রেন জার্নি ৭-৮ ঘণ্টার বেশি না। যাওয়ার সময় বাংলাদেশের ভেতর ৫ ঘণ্টার মত, আর ঐ পারে দুই-আড়াই ঘণ্টার মত যাত্রা। যাবার ট্রেনটা ভারতীয় ট্রেন, আসার সময় ট্রেনটা বাংলাদেশ রেলওয়ের। বাংলাদেশের ট্রেনটা অনেক বেশি সুন্দর, ঝকঝকে-তকতকে এবং সিট গুলাতেও আরাম বেশি :)।
যাত্রার শুরুর প্রথম ঘণ্টা খানেক আমি স্রেফ বই পড়ে কাটিয়ে দিলাম। ট্রেন যমুনা ব্রিজে ওঠার পর নিচে তাকিয়ে দেখলাম অপূর্ব এক দৃশ্য। শীতের শুকনো যমুনার আদিগন্ত বিস্তৃত চর আর তাদের চার দিকে স্বচ্ছ সবুজ পানি। আমার সামনে মুখামুখি সিটে বসে থাকা দুই পরিবারের এতক্ষণে বেশ ভাব জমে উঠেছিলো। ছিটেফোঁটা কথাবার্তায় যা টের পেলাম, একটা সিলেটি পরিবার, আরেকটা কলকাতার। এদের উপলক্ষ করে আরও কিছু মানুষ জুটে গিয়ে ভালোই জমজমাট একটা আড্ডা বসে গিয়েছিলো। ব্রিজে উঠে সিলেটি ভদ্রলোক হঠাৎ দাবী করে উঠলেন যমুনা ব্রিজের মত ব্রিজ ইন্ডিয়ায় একটাও নেই, এবং এটা এশিয়ার বৃহত্তম ব্রিজ। এই নিয়ে তুমুল চেঁচামেচি লেগে গেলো। একটু পরে আবার যার যার খাবারের বাটি বের হয়ে বিলি ব্যবস্থা হওয়া শুরু করায় আবার খাতিরের সুবাতাস।
খানিক পর, টিকেট চেকার এসে টিকেট নেয়ার সময় হঠাৎ করে দেখি অ্যাডেল পাগলের মত তার সেই ময়লা জিন্সের ঝোলা হাতড়াচ্ছে। চোখ মুখে প্যানিকের স্পষ্ট ছাপ, প্রায় কেঁদে দেয় আরকি। টিটি এসে ততোক্ষণে আমার কাছে টিকেট চাওয়ায় আমি নিজের টিকেট নিয়েই ব্যস্ত। অ্যাডেলের কাছে গিয়ে টিটি ওর টিকেটটা চাইতেই টের পেলাম ব্যাপার কি। টিকেট খুঁজে পাচ্ছে না। যেহেতু ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনেই একবার টিকেট চেক হয় এবং তার ডকুমেন্ট টিটির হাতেই থাকে, তাই পাসপোর্ট চেক করেই ছেড়ে দিলো টিটি। কিন্তু টিটির দেশজ ইংরেজি এ বোঝে না, এর ব্রিটিশ গলাবন্দী উচ্চারণও বোঝে না টিটি। শেষে বিরক্ত টিটি চলে যাবার পরও মিনিট পাঁচেক পাগলের মত ব্যাগ হাতড়ানো আর নিজের মনে বিড় বিড় করতে থাকায় আমি তাকে ডেকে বললাম টিটি বলে গেছে সব কিছু ঠিক আছে, য়্যু ডোন্ট নীড টু ওয়ারি। কে শোনে কার কথা। তখনই আমার হাল্কা সন্দেহ হয়েছিল, এর মনে হয় মাথার স্ক্রু একটু ঢিলা।
বাংলাদেশের ভেতরে ট্রেনের লাইনের বাকি অংশটার চারদিক সোনালি সরিষার ক্ষেতে মোড়ানো। হলুদ সরিষা ফুল, সবুজ মাঠ আর নদী একেবারে জ্যামিতিক আকারে চারদিকে ছড়িয়ে আছে। অন্তহীন হলুদ-সবুজ নকশীকাঁথার মাঝখানে দ্বীপের মত একেকটা গাছগাছালিতে ঢাকা ঘর। দেখতে দেখতে মন ভালো হয়ে যায়। যা ব্যাটারা, বাংলাদেশ কম কিসে? বরফে ঢাকা পাহাড় বা ঢেউ খেলানো মরুভূমি না থাক, যা আছে সেটা তোদের ঐ স্কটিশ হাইল্যান্ড, বোহেমিয়ান প্রাসাদ নাইলে রিভিয়েরার চেয়ে কোন অংশে কম না।
তাই দেখতে দেখতে এক সময় পৌঁছে গেলাম দর্শনা স্টেশানে। দর্শনা বাংলাদেশের শেষ স্টেশান, এরপর নো ম্যান্স ল্যান্ড। যাওয়ার সময় দর্শনাতে লাগেজ নামাতে হল না। স্টেশানে পুলিশ বুথে গিয়ে কাগজ পত্র দেখিয়েই ছুটি। এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর ট্রেন ছেড়ে দিলো। একটু পরেই আবার থেমে গেলো। টুক করে মাঝখান দিয়ে দেশ পালটে গিয়েছে। এবার নামলাম গেদে তে। ভারতের প্রথম স্টেশান। মালপত্র নিয়ে টানা হ্যাঁচড়া করে পার হলাম ইমিগ্রেশান। কোন ঝামেলাই করলো না কেউ। অনেকরকম হয়রানীর ঘটনা শুনে এসেছি তাই একটু অবাকই হলাম। বরং লাগেজ চেকের সময় আমার কাঁচের ডিওডরেন্টের বোতলটা হাত থেকে ফসকে পড়ে যাওয়ার কারণে এক সিপাহী তার সিনিয়রের কাছে রীতিমত ঝাড়ি খেলো!
ওয়েটিং রুমটা বিশাল বড়। দুটা বড় স্ক্রিন এর টিভি লাগানো। কোনায় খাবার ব্যবস্থা। মোটামুটি পরিষ্কার। ঘণ্টা দেড়েক এখানে কাটাতে হল। ওয়েটিং রুমের একটা ঘটনা উল্লেখযোগ্য।
রুমের মধ্যে অনেকগুলো ফ্যান। দশ-বারোটা হবে। এক বাংলাদেশী বৃদ্ধ ভদ্রলোক হঠাৎ উঠে সবগুলো ফ্যান বন্ধ করে দিলো। তার কাশি শুনে বোঝা গেল ঠাণ্ডা লাগছে তার। কিন্তু আসলে অতটাও শীত তখনো পরে নি। মানুষ জন মোটামুটি শার্টেই চালিয়ে দিচ্ছে। দামড়া এক ইন্ডিয়ান তরুণ ধুমধাম করে উঠে গিয়ে আবার অর্ধেকের মত ফ্যান ছেড়ে দিলো। ছেড়ে নিজের সিটে বসে উচ্চকণ্ঠে বলত লাগলো, “চালাকি নাকি! আমার তো গরম লাগছে, ফ্যান বন্ধ করে দিলেই হল!”
আমার গেল মেজাজ খিঁচরে। শালা, নিজের দেশে ঢুকেই দাদাগিরি শুরু করে দিলো! এতক্ষণ একটা শব্দও তো করে নাই! এইসব ভাবতে ভাবতে বেশ উত্তেজিত অবস্থা। একবার ভাবলাম গিয়ে ফ্যান গুলা বন্ধ করে দেই আবার। আবার ভাবলাম চারদিকে বি.এস.এফ. গার্ডে ভর্তি। একটা গ্যাঞ্জাম লাগলে যদি এখান থেকে বিদায় দিয়ে দেয়, ট্রিপটাই বাদ হয়ে যাবে। একটু পরে ট্রেন এ আবার উঠে বসলাম। যাত্রার শেষ পর্ব শুরু হল। গেদে থেকে কলকাতা। ট্রেন এ উঠতেই এক বাংলাদেশি ভদ্রলোক বেশ জমিয়ে আড্ডা মারা শুরু করলেন আমার সাথে। তিনিও আমার মত ইন্ডিয়াতে প্রথমবার। সাথে স্ত্রী এবং বাচ্চা একটা ছেলে। এই ৪-৫ বছর বয়স হবে। খুবই অমায়িক মানুষ। রাস্তা ঘাট তেমন চেনেন না। আমি তাঁকে আমার উইকিট্রাভেল প্রাপ্ত আধা-খ্যাঁচড়া জ্ঞান দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করলাম। মোটামুটি বেশ জমে গেল।
কলকাতা পৌঁছনোর আগেই দুইটা ঘটনা ঘটলো। ঐ দামড়াটার কথা মনে আছে? ফ্যান নিয়ে ফাজলামি করেছিলো যে? সে দেখি মোটামুটি উচ্চস্বরে বাংলাদেশের প্রশংসা করা শুরু করেছে।
‘দাদা, আপনারা পারেনও খাওয়াতে। আমি ঢাকা গেলে খেতে খেতে একদম অস্থির হয়ে যাই। আর ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানির তো কোন জবাব নেই। এর চেয়ে মজার আর কোন খাবার পৃথিবীতে নেই।’
শেষ কথাটা একেবারে আমার অন্তরের কথা। তৎক্ষণাৎ তার যাবতীয় গুনাহ মাফ করে আমি তাকে বেশ স্নেহময় চোখে দেখা শুরু করলাম। ব্যাটা খাবারের মর্ম বোঝে।
এবার দ্বিতীয় ঘটনা।
ট্রেন কলকাতা পৌঁছানোর আগে আগে, সবাই লাগেজ সামলানো শুরু করছে আস্তে-ধীরে। আমার সাথে খাতির হয়ে যাওয়া দেশী ভাইজানও লাগেজ গোছানো শুরু করেছেন। গোছানো বলতে বৌকে দিয়ে গুছিয়ে নেয়া। এক সময় হঠাৎ ভদ্রমহিলার কোলে থাকা বাচ্চাটার হাত থেকে পানি খাওয়ানোর গ্লাসটা ফসকে সীটের ওপর পড়ে গেল। আমার দেশী ভাইজান, ট্রেনের ক্ষণিক আত্মীয়, খাতিরের লোক, তার স্ত্রীর দিকে ফিরে প্রথমেই পিচ্চি বাচ্চাটাকে দিলো কষে একটা থাপ্পড়। তারপর ভদ্রমহিলাকে চিবিয়ে চিবিয়ে এমন কয়েকটা বিশেষণে ভূষিত করলো যে......
মহিলা কুঁকড়ে একদম এতটুকু হয়ে গেলেন আমার চোখের সামনে। এবং আমি স্পষ্ট টের পেলাম অপমানের চেয়েও তাঁর বডি ল্যাঙ্গুয়েজে ভয়ের অংশ অনেক বেশি। আমি কখনো আমার জীবনে এমন কিছু দেখিনি এর আগে।
আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না অপরিচিত একজন লোকের সামনে নিজের স্ত্রীর প্রতি এই ভাষা কোন মানুষের পক্ষে ব্যবহার করা সম্ভব। আমি স্রেফ ভদ্রমহিলার দিকে আমার চোখ পড়লে ওনার অপমানটা কোন পর্যায়ে চলে যাবে এটা চিন্তা করে নিজের লাগেজের বস্তার ভেতর একটা ডাইভ দিলাম।
একটু পরেই চলে এলো স্টেশান। ঐ হারামজাদা আমার কাছে এসে হাসি মুখে বিদায় নিতে চাইলো। আমি না দেখার ভান করে তাড়াতাড়ি লাগেজ টেনে প্রায় লাফ দিয়ে প্ল্যাটফর্মের ওপর নেমে গেলাম। কলকাতা।
বহু পুরনো একটা শিক্ষা নতুন করে নিলাম আবার।
ফার্স্ট ইম্প্রেশানের খ্যাতা পুড়ি।
(চলবে?)
মন্তব্য
দারুণ লাগলো! একাই বেরিয়ে পড়লেন অন্য একটা দেশ ঘুরে দেখতে?! বেশ অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মানুষ আপনি, মনে হচ্ছে!
দৌড়াক!
একলা ঘোরার একটা অন্যরকম মজা আছে। যা ইচ্ছা তাই করার প্রচুর স্বাধীনতা থাকে
ধন্যবাদ!
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
সচলত্ব প্রাপ্তিতে অভিনন্দন!
লেখা + ছবিতে
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অনেক ধন্যবাদ।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
ধন্যবাদ! মাত্র তো তিনশ কিলো এলাম, যাওয়া-আসা মিলিয়ে আরো হাজার ছয়েক কিলোমিটার আছে
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
সচলত্বে অভিনন্দন!
চলবে মানে? মাঝরাস্তায় এনে ছেড়ে দিলে ক্যাম্নে কী!!
লাদাখ পর্যন্ত সাথে আছি...
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ। আবার আসবেন।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
অভিনন্দন!
ছবি দেখে (গুড়) দিয়ে গেলাম, লেখা এসে আবার পড়ে নেব...
ধন্যবাদ
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
সচলত্বে অভিনন্দন!
পরের পর্বের অপেক্ষায়...আর সচলাভিনন্দন
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
অসংখ্য ধন্যবাদ!
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
সচলত্বে অভিনন্দন। 'চালাকি নাকি!' মাঝপথে এসে চলবে? বলা! ভালোয় ভালোয় পরের পর্ব ছাড়ুন। ছবিগুলো অন্নেক সুন্দর! পরের পর্বেও বেশি বেশি ছবি দেবেন কিন্তু।
-আয়নামতি
আহা, মাঝপথ কোথায়। কুড়ি ভাগের এক ভাগও যাত্রা হয়নি এখনও।
ধন্যবাদ।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
সচলত্ব প্রাপ্তিতে অভিনন্দন। ছবিগুলো দেখে আমারো বেড়িয়ে পড়তে ইচ্ছা হচ্ছে
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ!
বেড়িয়ে পড়ুন। এই ছবিগুলো তো কাছেই, যমুনা ব্রীজটার আশপাশে।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
সিরিজ দৌড়াক। সচল পরিবারে স্বাগতম!
চেষ্টা করবো নিয়মিত দেবার।
থ্যাঙ্ক ইউ।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
ধন্যবাদ আপনাকে।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
চমৎকার। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের। তাড়াতাড়ি ছাড়ুন।
সুপ্রিয় দেব শান্ত
দারুণ হয়েছে লেখা, মনে হল যেন আপনার সাথে ট্রেনে চড়েছি।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
ধন্যবাদ।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
ছবি দেইখা টাস্কি খাইয়া গেছি লেখা পরে পড়ুম।
-অতীত
ধন্যবাদ। আবার আসবেন।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
আগে থেকেই আপনার ভক্ত ছিলাম, এখন একেবারে গেড়ে বসলাম...
সচলত্বে অভিনন্দন... সিরিজ চলুক দৌড়ায়া...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ নজরুল ভাই।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
প্রথমেই সচলাভিনন্দন! একটু দৌড়ের উপর আছি। পুরোটা পড়ে এই অমানুষিক পোস্টের উপর কমেন্টাবো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ পাণ্ডবদা।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
এভাবে লিখলে কষ্ট করে আর ঘর সংসার ছেড়ে ঘুরতে বেরোনোর দরকারই নেই। আপনি বেড়াতে থাকুন। আর আপনার সাথে সাথে আমারো হয়ে যাক অন্য একটা দেশ দেখা (এই সুযোগে গরীবের ক'টা টাকাও বাঁচলো আর কি)।
চমৎকার ... চলুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
৬,০০০ কিলোমিটারের মধ্যে যদি মোটে ৩০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে থাকো তাহলে তোমার এই সিরিজ ২০ পর্বে শেষ হওয়া উচিত। এইরকম বর্ণনা হলে কুড়ি পর্ব তর তর করে পড়ে ফেলা যাবে। দরকারী জায়গাগুলোতে বর্ণনা সংক্ষেপ করার চেষ্টা করবেনা। তোমার এই পর্বের একটা পলিসি ভালো লেগেছে। প্রকৃতিকে ক্যামেরার চোখে আর মানুষকে তোমার বর্ণনায় দেখিয়েছো। এভাবেই তোমার দেখা জায়গাগুলো আর সেখানকার মানুষগুলোকে দেখতে চাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধন্যবাদ পাণ্ডবদা। কিন্তু ২০ পর্ব! মারা পরবো। আমার ইচ্ছা আছে ৫-৬ তে শেষ করার।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
শাব্বাস! চলতেই থাকুক। আরো ছবি চাই, পথে দেখা মানুষেরও।
ধন্যবাদ!
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
দারুণ একটা সিরিজ হবে এটা !
কিছু ছবি ফেসবুকে দেখছিলাম মনে হয়। লেখা, ছবি দুর্দান্ত !
থেংকু থেংকু
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
অবশ্যই চলবে। এবং আমার হিংসাও চলমান থাকবে লেখার সাথে...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নিজে বসে আছেন ইউরোপের বুকের ওপর, আর আমাকে হিংসা!
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
ধন্যবাদ।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
দুর্দান্ত ওপেনিং
ওরে জটিল ... চালায়া যান, চালায়া যান।
লাদাখ থিকা যদি দমবন্ধ করা লেন্ডস্ক্যাপ তুইলা না আইনা থাকেন, তইলে কইলাম খেলতাম না। মরণের পর আমার হাতে গুলা কয়টা ভালু কামের লাইজ্ঞা যদি কুনু পুরস্কার দিতে চায় তইলে কমু, ভাই আমার D80, Tokina 11-16 সহ লাদাখে ফালায়া দিয়া আসেন ...
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
ছবি কিছু তুলেছি, কিন্তু ঐ যে....যা দেখলাম তার ১/১০০ ও আসে না। আর মরা লাগবে না, আমি জুনে আবার যাবো ভাবছি, লেন্সটা আমাকে দিয়ে দিলে.......এই আমিই ধরেন ফেলে আসলাম।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
চলবো মানে!!!! দৌড়াইবো! নাইলে অর্ক মিয়ার পিছে চাইনিজ কুড়াল লয়া তাড়া করুম!
লেখা স্রেফ দুর্দান্ত হছে- আর ছবিও সেইরকম। ভাবছিলাম অনেক হিংসা করবো, কিন্তু করলাম না- কারণ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সেপ্টেম্বরের পয়লা হপ্তায় আমি হেমিস গুম্ফার নিচে বইসা নুন-মাখন দেয়া লাদাখি চা খাওয়ার আশা রাখি!
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
চাইনিজ কুড়াল! আপনেরে ডিপজলের ভূতে ভর করসে।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
এই জিনিস না পড়লে মিস ক্রতাম। লাদাখ যাবার শখ আমার বহুদিনের, আদৌ পূর্ণ হবে নাকি জানি না।
লেখা খুব ভালো লেগেছে, অকপট ভঙ্গীতে এইভাবে ভ্রমণকাহিনী পড়তে দারুণ লাগে।
আর সচল পরিবারে স্বাগতম।
ধন্যবাদ
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
অপূর্ব! যেমন লেখা তেমনি ছবি!
আহাহা কবে থেকে লাদাখ যাব করে তাক করে আছি, কিছুতেই আর ঠিক সময়ে ছুটি পাই না| জানেন আমাদের অফিসের পুণে কিম্বা নয়ডা ব্র্যাঞ্চ থেকে প্রত্যেকবার ২-৩ টে ছেলে বাইক নিয়ে লাদাখ যায়| ওদের ব্লগ পড়ে আর ছবি দেখে এমন হিংসে হয়!
এই বছর কিম্বা সামনের ফেব্রুয়ারীতে একবার বাংলাদেশ বেড়াতে যাব| তখন ঠিক করে রেখেছি যাওয়াটা ট্রেনে যাব|
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
লাদাখে একটা চাকরি পেলে আমি থাকা খাওয়ার টাকা দিলেই রাজি হয়ে যাবো। বাংলাদেশ আসুন। ঘুরে দেখানোর লোকের অভাব হবে না।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
মাত্র ৫-৬ পর্বে শেষ করার ইচ্ছা মানে???! মাইর খাইতে চান নাকি?!
আমি তো এইসব পড়িনা, লাদাখ হিমালয় এইসব দেখলেই আমি ইগনোর করি! নিজে না গেলে অন্যদের এইসব ভ্রমণকাহিনি পড়া হারাম!
তাও ঢুকে গেছি ভুলে পোস্টে! এখন এই অ্যাত্ত অ্যাত্ত হিংসা নেন! আমি দুই বছর থেকে প্ল্যান করছি যাবোই, যাবো একদিন! খ্রান আগে গিয়ে নেই, তারপর দেইখেন, লিখে ফাডায়ালামু! আর আপনি কিনা ৫-৬ পোস্টেই কাজ সারতে চান! তাও আবার আমি পড়া শুরু করার পরে!
লেখা তো দারুণ লাগলো! ছবিও। বর্ণনা ভালো হচ্ছে। ব্রিজের উপর থেকে যমুনার ছবিটা সবচেয়ে মারাত্মক হয়েছে, পড়া শুরু করার আগে ছবি দেখে আমি ঐটা লাদাখের ছবিই ভেবেছিলাম প্রথমে!! কেমন যেন মহাকাশ থেকে পৃথিবী দেখছি এমন একটা ভাব!
তাত্তারি পরের পর্ব দেন!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এই মানে, ৫-৬ হাজার শব্দের ১৭টা ডকুমেন্ট ট্রান্সলেট করতে হচ্ছে, এর সাথে টিচার্স ট্রেনিং ম্যাটেরিয়েলের স্ক্রীপ্ট লেখা, স্টুডিও তে ঐ স্ক্রীপ্টের রেকর্ডিং, একটা ওয়েব পোর্টাল ডেভালাপমেন্ট......ইত্যাদি সাইমালটেনিয়াসলি। এখন ভাবছি আর দুই পর্বে শেষ করা যায় কিনা।
দুই বছর প্ল্যান! আমি প্ল্যান করেছি দুই দিন মনে হয়। প্ল্যান করবেন না। স্রেফ চলে যান
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
তুমি আছো মজায়।
নতুন মন্তব্য করুন