• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

একটুর জন্য

শঙ্কর এর ছবি
লিখেছেন শঙ্কর [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ১৭/০৭/২০০৯ - ৮:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ধানবাদ ছাড়িয়ে হাইওয়ে দিয়ে সাঁ সাঁ করে ছুটে যাচ্ছিল সোনালী রংয়ের মারুতি SX4. স্টিয়ারিংয়ে বসা রন্টার সামনে দিয়ে ছুটে পেরিয়ে যাচ্ছিল বিহারের একের পর এক মফস্বল শহর। একটু ক্লান্তও লাগছিল। কাল সারারাত ঘুম হয় নি। হতচ্ছাড়া বুড়োটা যে ঘোড়েল তা অবশ্য সে আগেই জানতো, কিন্তু এতোটা ঘাগু সে কল্পনাও করতে পারেনি।

মারুতিটা প্রথম যেদিন দেখে, সেদিন থেকেই মনে মনে স্বপ্ন দেখা শুরু করে সে। যাকে বলে, লাভ এট ফার্স্ট সাইট। এর আগে বারোটা ৮০০, আটটা অল্টো, ছটা করে স্যান্ত্রো আর জেন চুরি করেছে সে, কিন্তু এটার কথাই আলাদা। সেগুলো হল নাচের সিনের এক্সট্রা, এ হল মাঝখানের করিনা কাপুর। একটা ঝাড়তে পারলে মিনিমাম তিন লাখ। সোনারপুরে জমি দেখে রেখেছে রন্টা, সেখানে নিজের গ্যারেজ বানাবে এর পর। এসব লাইনে বেশি দিন থাকতে নেই। আজ পর্যন্ত পুলিশ তার নামই জানতে পারেনি। কিন্তু যেদিন জানতে পারবে, মামার সাথে মামদোবাজি সেদিন শেষ। একবার ও খাতায় নাম উঠে গেলে, আর রক্ষা নেই। গ্যারেজের কথা ভাবতে ভাবতে আরো কয়েকটা শহর পেরিয়ে যায় সে। নেপাল বর্ডার এখনও অনেক দূর।

বুড়োটা অবশ্য সাবধানতার কসুর করে নি। গ্যারেজের ছাদে একটা সিকিউরিটির মেশিন বসিয়েছে। রাতের বেলায় কেউ গ্যারেজে ঢুকলেই হুটার চ্যাঁ-ভ্যাঁ শুরু করে দেবে। ভাগ্যিস একদিন দিনের বেলা বুড়ো গাড়ী বের করার সময় ওটা খেয়াল করেছিল রন্টা। নাহলে, কাল গ্যারেজে ঢোকার আগেই গল্প শেষ। গাড়ী চুরি করতে তো লাগে পাঁচ মিনিট, খোঁজ নিতেই তো লাগে দু-মাস। ঠিকঠাক খবর না পেলেই মুস্কিল।

তবে এ গাড়ীটা ঠিক পাঁচ মিনিটে চুরি করা যায়নি। বুড়ো গাড়ীর দরজায় চাবির জায়গাটাই সিল করে দিয়েছে। যতই মারুতি তার নতুন স্পেশ্যাল চাবি নিয়ে গর্ব করুক, গাড়ী কেনার সময় বুড়ো বলেছিল, 'ওই চাবির গর্তটাই বন্ধ করে দেন। আমি শুধু রিমোট দিয়েই খুলব।' কাজেই রন্টাকেও রিমোটটা সিমুলেট করতে হয়েছিল। তারপর ভেতরে ঢুকে, স্টিয়ারিং লক, গিয়ার লক - চারখানা স্পেশ্যাল তালা ভেঙ্গে তবে গাড়ীটা ফ্রি হল। তারপর সেটাকে ঠেলে ঠেলে বাইরে আনা হল। গ্যারেজের ভেতরেই স্টার্ট দিলে, বুড়ো হয়তো শব্দ পেয়ে জেগে উঠবে। সেখান থেকে একটু দূরে নিয়ে এসে নাম্বার প্লেটটা বদলে তবে হাঁফ ছাড়ল রন্টা। এবার আর কেউ সহজে তাকে ধরতে পারবে না।

খুব সাবধানে চালাচ্ছিল রন্টা। এখন ছোটখাটো কারণে কেস খেয়ে গেলে আর আপসোসের অন্ত থাকবে না। অবশ্য এই সাবধানতাই তার বড় গুণ। এই জন্যই আজ পর্যন্ত মামাবাড়ী যেতে হয় নি তাকে। দুপুর হয়ে এসেছে। সকাল থেকে পেটে দানাপানি পড়েনি। প্রথম সুযোগেই যতটা পারে দূরে চলে এসেছে সে। এখানে আর তেমন ভয় নেই।

বোকারো ছাড়িয়ে রাস্তার ধারের একটা ধাবার সামনে গাড়ি দাঁড় করালো সে। গাড়ির মুখটা রাস্তার দিকে রেখে। রোদটা সামনের কাচ দিয়ে সোজা আসছে। খাওয়া শেষ করে যখন আবার উঠবে, সিট গরম হয়ে যাবে। নামবার আগে সামনের উইন্ডস্ক্রীণের গায়ে রোল করে আটকানো সান-ব্লকারটা টেনে দিল। গাড়ী লক করে পেছন দিকে গিয়ে খাটিয়ায় বসে রুটি-মাংস চাইল।

রাস্তার দিকে পেছন ফিরে একমনে খেয়ে চলেছিল সে। ভয় পাওয়ার তো কোন কারণ নেই। কাজেই যখন পুলিশ পেট্রলের জিপটা রাস্তা দিয়ে আসছিল, তখনও খেয়াল করেনি। জিপটা একটু দাঁড়াল, একজন পুলিশ অফিসার বোধ হয় কারো সাথে ফোনে একটু কথা বললেন, এমন কি পুলিশের সাথে দোকান মালিকের চোখাচোখিটা - এসব কিছুই দেখেনি সে। টের পেল, যখন বিরাশি সিক্কার থাবাটা তাকে এক ঝটকায় খাটিয়া থেকে তুলে ধরল।

কে, কেন, কি, কোথায়, কিছু বোঝার আগেই পুলিশের লাথি খেতে খেতে জিপে উঠলো রন্টা। জিপে ওঠার আগে শুধু শেষবারের মত একবার নিজের স্বপ্নের গাড়িটার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলো সে। পুরো উইন্ডস্ক্রীণ জুড়ে সান-ব্লকারটা দেখা যাচ্ছে। তাতে জ্বলজ্বল করছে লেখাটা, 'যদি এটা পড়তে পারেন, তার মানে আমার গাড়ী কেউ চুরি করেছে। ডায়াল করুন ...'


মন্তব্য

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

(y)
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

রেনেট এর ছবি

আপনার প্রতিটা গল্পই ভিন্নমাত্রার, এবং একই সাথে লেখার ধরণও খুব পরিপক্ক।

খুব শীঘ্র পূর্ণ সচলত্ব পান, এই কামনা করি। গল্পকার হিসাবে আপনি হবেন সচলের আরেকটি রত্ন।
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

নিবিড় এর ছবি

রেনেট ভাইয়ের সাথে সহমত (চলুক)


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

রণদীপম বসু এর ছবি

চমৎকার !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মূলত পাঠক এর ছবি

আপনার লেখার হাত আর গল্পে রস জমিয়ে গাঢ় করা অতি চমৎকার। তবে এই গল্পটার প্লট নিয়ে একটু দ্বিধা হচ্ছে। মানছি বুড়ো অতি ঘোড়েল, তবে সান ব্লকার বাবদ ধরা পড়াটা একটু কেমন জানি হলো। চোরেরা সান ব্লকার লাগাবে কিনা এরই কোনো নিশ্চয়তা নেই, এবং লাগাবে ও নজরও করবে না তাতে কী লেখা এইটা আরো বেশি চাহিদা। অতি সাবধানি কেউ তবু সেটা করতেই পারে তার গাড়িতে, তবে সেইটা দিয়ে গল্পের পরিণতি হলে কেমন যেন মন ভরে না।

বোঝাতে পারলাম কি না জানি না, তবে এতো কথা ভালো আরো ভালো হোকের আশাতেই। আরো লেখা চাই, ঘনঘন। :)

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

একদম সহমত। আরেকটা ব্যাপার, আপনার গল্পের নাম। "একটুর জন্য" নামটা দেখে খানিক পড়েই আমি বুঝে গেছি লোকটা নিশ্চয় ধরা পড়বে একটুর জন্য। ফলে চমকটা অনেক মার খেয়ে গেছে। বুঝতেই পারছেন, আমাদের দাবি আপনার কাছে এখন অনেক। :)
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- নামের ব্যাপারে একমত। কিন্তু সান ব্লকারের ব্যাপারে একটু দ্বিমত রাখছি। যেহেতু রন্টা ধরেই নিয়েছে অনেক দূর সে চলে এসেছে, এখানে ধরা পড়ার ভয়ের কিছু নেই। তারউপর সে ক্ষুধার্ত, খানিকটা ক্লান্তও বোধহয় (ভোর বেলা থেকে গাড়ি চালাচ্ছে একটানা)। এমতাবস্থায় সামনে রাখা সানব্লকারটা টেনে নিয়ে সোজা খেতে বসে পড়াটা একজন গাড়ি চোরের জন্য খুবই স্বাভাবিক ঘটনা না হলেও একেবারে অস্বাভাবিকও না।

গাড়িটা সাক্সেসফুলি চুরি করে ভেগে গেলে কিন্তু গল্পটা হতো না। রাস্তায় অমন করে থেমেছিলো বলেই রন্টা ধরা খেলো, আর ধরা খেলো বলেই গল্পটা তৈরী হলো।

যাইহোক, গাড়িচুর রন্টার ব্যাপারে সেই আদি ও এতিম প্রবাদটাই প্রযোজ্য। চুরের দশদিন আর সাধুর একদিন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

স্নিগ্ধা এর ছবি

ইয়ে, আমিও না পাঠক মশাইয়ের সাথে একমত :( আর কোন উপায় ছিলো না, রন্টাকে কান্টানা খাওয়ানোর?

আপনি তাড়াতাড়ি আরেকটা গল্প লিখে আমাদের মুখ বন্ধ করুন ... :)

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

বর্ণ্না সেরোম। কিন্তু টুইস্ট পাইনাই... অনেক অনেক অনেক গল্প চাই... :D

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

বর্ণ্না সেরোম। কিন্তু টুইস্ট পাইনাই... অনেক অনেক অনেক গল্প চাই... :D

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

=)) বস, জটিল দিয়েছেন, ^:)^

যে যাই বলুক না কেন, আমি এখনও হেসে যাচ্ছি। গল্পের নাম যখন একটুর জন্যে, ধরা তো খেতেই হত, জোশ হয়েছে দাদা।

=))

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

অসাধারণ আপনার লেখার হাত।

প্রপ্রে এর ছবি

আমার কিন্তু দারুণ লাগলো..

স্বপ্নহারা এর ছবি

ভাল লাগল! তবে কিছুটা আন্দাজ করে ফেলেছিলাম নামটা দেখে...লেখা চমৎকার!
------------------------------------------
হতাশাবাদীর হতাশাব্যঞ্জক হতশ্বাস!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

বেশ ভাল্লাগলো (চলুক)

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

তানবীরা এর ছবি

যদি এটা পড়তে পারেন, তার মানে আমার গাড়ী কেউ চুরি করেছে। ডায়াল করুন .....................।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মামুন হক এর ছবি

ভালৈছে। বহুৎ মজা আয়া :)

দ্রোহী এর ছবি

আপনার লেখার হাত এককথায় অসাধারণ!

আপনি কী নামে বই বের করেন বলবেন কি?

ভুতুম এর ছবি

শন্করদা, ভালু লাগলু অনেক। আরু লিখুন।

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

শঙ্কর এর ছবি

দ্রোহী ভাই, আমি লেখক নই। আমার লেখনীর বয়স মাত্র এক মাস। ১৯শে জুন থেকে সচলে। কোনকালে ভাবিনি আমিও লিখতে পারি। আপনাদের ভালোলাগায় লিখে চলেছি।

গল্পের নামকরণ নিয়ে নিজেই দ্বিধায় ছিলাম।

আর বুড়ো সান-ব্লকারের ওপর তো ভরসা করেনি। সে প্রচুর সিকিওরিটির ব্যবস্থা করেছিল। তার সব কটা কঠিন কঠিন তালা রন্টা ভেঙ্গেছে। সান-ব্লকার তো জাস্ট আরেকটা চান্স। বরং সবার সাথে একমত, সব থেকে দুর্বল চান্স। ওটাই বেচারী রন্টা খেয়াল করেনি।

সব শেষে এটাও মানি, গল্পটা সাবমিট করার পর আমারও মনে হয়েছিল, তেমন হয় নি।

মর্ম এর ছবি

আপনার গল্প অনেকের থেকেই আলাদা, মানতেই হচ্ছে। এমনিতে বাড়তি কোন মালমশলা নেই, কিন্তু পড়তে পড়তে মুচকি হাসি চলে আসছে- এমন লেখা পছন্দ না হওয়ার তো কোন কারণ দেখিনা! :-)
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।