সরল অঙ্ক আমার সবসময়েই ভীষণ জটিল লাগে, আর সিঁড়িভাঙ্গার নাম শুনলে তো একদম সিঁড়ির ওপর বসে পড়ি। কাজেই রথীনস্যার যখন ক্লাসে চার নম্বর চ্যাপ্টারের বারো নম্বর অঙ্ক নিয়ে ব্যস্ত, আমি তখন জানালার বাইরে আমগাছের ডালে শালিক পাখিদুটোর ঝগড়া শুনছি। বিকেলে পটলাদের সাথে ফুটবল ম্যাচ আছে। ওদের রাইট-ব্যাক হারুটা একটু খনি আছে। ওর দিকে বল গেলে একটা ইন্সাইড ডজ মারলেই সামনে শুধু গোলকিপার বোঁচা। শরীরটা বাঁকা করে সেকেন্ডবারের দিকে আমি ঝুঁকতেই বোঁচাও ডানদিকে লাফালো। আমি আস্তে করে ডান পায়ের টোকায় বলটা ফার্স্টবারে রাখলাম। বোঁচা ফ্যালফ্যাল করে দেখলো বল ঢুকে যাচ্ছে জালে .. গো - ও - ও - ও ..
রথীনস্যারের ছোঁড়া চকটা আমার মাথায় এসে লাগতেই খেলার মাঠটা কেমন জানি ক্লাসরুম হয়ে গেল। আর আমি বোর্ডের দিকে তাকিয়ে দেখি অনেক হিজিবিজি লেখা হয়ে আছে তাতে।
"এইদিকে আয় হতচ্ছাড়া", স্যারের দিঁত কিড়িমিড়ি শোনা গেল,"তখন থেকে ডাকছি। আমগাছের দিকে তাকিয়ে কি কবিতা ভাবা হচ্ছে?"
এইবার নীলডাউন কিংবা বেঞ্চির ওপরে দাঁড়ানোর জন্য মনে মনে তৈরী হচ্ছি, এমন সময় ক্লাসের দরজায় বনমালীদার আবির্ভাব। সঙ্গে আমাদের বয়সী একটি রোগা-পাতলা গোবেচারা চেহারার ছেলে।
"হেডস্যার পাঠালেন ... নতুন ছেলে", এই বলেই বনমালীদা দাঁড়িয়ে থাকলো।
- অ, কি নাম তোমার?
- নীলমনি দাশ।
- তা দু-মাস পরে কেন?
- আজ্ঞে, বাবা বদলি হয়ে এলেন।
- অ, তা এই দু-মাসের পড়া সামলে নিতে পারবে তো?
ছেলেটি ঘাড় কাত করে জানালো,সে পারবে।
"ঠিক আছে, ঐ হনুমানটার পাশে গিয়ে বস", আমার পাশের সীটটা দেখিয়ে দিলেন স্যার, "দেখ,আবার ওর পাল্লায় পড়ে ওর মতো আরেকটা বাঁদর হও না।"
নীলুর সঙ্গে সেই আমার পরিচয়। প্রথম পরিচয়েই ছেলেটাকে ভালো লেগে গেল,আর খুব তাড়াতাড়ি আমরা বন্ধু হয়ে গেলাম। ক্লাসে নতুন ছেলে এলেই তাকে মেপে নেওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। কিন্তু যেহেতু, ক্লাসে
লেখাপড়া না করা বজ্জাত ছেলেদের মধ্যে আমার একটা নাম ছিল,আর নীলু আমার বন্ধু,ওর সাথে কেউ ঝামেলা করার সাহস করলো না। তবে পটলার দল তক্ক্বে তক্ক্বে ছিল, সে আমি পরে জেনেছি।
নীলু আমার থেকে পড়াশোনায় ভালো ছিল। মাঝেমধ্যে আমাকে সাহায্যও করত। আর আমিও ওকে চিনিয়ে দিয়েছিলাম কোন গাছের আম সব চাইতে মিষ্টি, কাদের বাড়ির গাছের পেয়ারা পাড়তে গেলেই ধরাপড়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি এই সব।
দিন দশেক পরের কথা। টিফিনের আগের পিরিয়ড ছিল সেটা। অন্যদিনের মতই দরজার পাশে নিল ডাউন হয়ে বাইরে মাঠের দিকে চেয়ে আছি। একটা লাল রঙের চাঁদিয়াল ভো-কাট্টা হল, আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই টিফিনের ঘণ্টা বেজে উঠলো ঢং ঢং করে। আমি কোনদিকে না তাকিয়ে দৌড়। সবার আগে একদৌড়ে গিয়ে চাঁদিয়ালটাকে বগলদাবা করে ফিরে আসছি নীলুকে দেখাব বলে, দেখি ও নিজেই আসছে মুখ কালো করে। সাধারণতঃ ও হাসি-খুশিই থাকে। কাজেই কেমন যেন খারাপ লাগলো।
- কি রে, কি হয়েছে?
- না কিছু না।
- কিছু না তো মুখ কালো করে বসে আছিস কেন?
"কই না তো", বলে কষ্ট করে হাসলো।
- ঠিক আছে, বলবি না তো, বলিস না। কেমন চাঁদিয়ালটা পেয়েছি দেখেছিস। চ টিফিন খেয়েনি।
- আজকে টিফিন আনিনি।
- কেন রে? কাকিমার শরীর খারাপ নাকি?
- হ্যাঁ।
- ঠিক আছে, চল আমারটাই ভাগ করা যাক।
- না না, তুই খা।
"ইয়ার্কি হচ্ছে, চল", বলে মাঠের একধারে নিয়ে গেলাম ওকে। টিফিন খেতে খেতে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না নীলু। পটলার দল আজ ওকে একা পেয়ে টিফিন কেড়ে খেয়ে নিয়েছে।
মাথায় রক্ত উঠে গেল। এত বড় সাহস। আজকে যদি পটলার মুন্ডুটা ছিঁড়ে নিয়ে গেন্ডুয়া না খেলেছি,দাঁত কিঁড়িমিড়ি করতে করতে উঠে দাঁড়ালাম। নীলু অনেক কষ্টে আমাকে থামালো। একেই আমার বদনাম আছে, তার
ওপর যদি বাড়াবাড়ি হয়ে যায়, পটলার বাবা হেডুকে নালিশ করে, তাহলে আমার বাবা আমার পিঠের চামড়া আর আস্ত রাখবেন না। তার ওপর পটলারা নীলুকে একা পেলেই আবার প্রতিহিংসা নিতে পারে - এই সব অনেক যুক্তি দিয়ে কোনমতে আমাকে বশে আনলো নীলু। আমি আবার এতোদূর ভাবতে পারিনা। টিফিনের ঘণ্টা পড়ে গিয়েছিল। "তোর ব্যাপার তুই বুঝবি", বলে ঘুড়ি নিয়ে আমি ক্লাসের দিকে চললাম। স্কুল শেষ না হওয়া পর্যন্ত পটলার দল যে পেছনে বসে মুচকি মুচকি হাসছে, সে আমি পেছনের দিকে না তাকিয়েই বুঝতে পারছিলাম।
এর নয়মাস বাদে, ফাইনাল পরীক্ষার দুদিন আগে যখন পটলার ইতিহাস বইটা হারিয়ে গেল, কেউ তার সাথে টিফিন-ডাকাতির সম্পর্ক খুঁজে পায়নি। এমন কি, আমিও সন্দেহ করিনি, ঐ গোবেচারা-মার্কা রোগা-পাতলা চেহারার চুপচাপ বসে থাকা ভালো ছেলেটার এ-ব্যাপারে কোন হাত থাকতে পারে। পরীক্ষার আগে দ্বিতীয় বই দোকানে পাওয়া গেল না। পটলা বাবার হাতে বেশি কিল খেয়েছিল, না ইতিহাস স্যারের হাতে বেশি লাড্ডু, তা সে নিজেও গুণে উঠতে পারেনি। তবে পরের বছর তাকে ছাড়াই আমরা অন্য ক্লাসে চলে এলাম।
পটলার অনুপস্থিতিতে হারু হয়ে উঠলো ওদের দলের নেতা, আর নীলুর সাথে শত্রুতার সম্পর্কটা সে বজায় রেখেই চলল। কয়েকদিন আমি জ্বরে কাবু হয়ে স্কুল কামাই করলাম। তারমধ্যে একদিন নীলুর সাথে পায়ে-পা বাধিয়ে হারুরা ঝগড়া করল, আর নীলুকে ধরে বেশ ধোলাই লাগালো। নীলুর পক্ষে মারপিট করা সম্ভব নয়। সে মার খেয়ে গেল একতরফা। হাফ-ইয়ার্লির ঠিক আগে একদিন টিফিনের পর স্কুল-ব্যাগের মধ্যে হাত ঢোকাতে গিয়ে হারু বিছের কামড় খেল আর দুটো পরীক্ষা দিতে পারলো না।
এর পরেই দেখলাম নীলুর ওপর আক্রমণ হওয়াটা বন্ধ হয়ে গেল। হতে পারে, কেউ দুয়ে দুয়ে চার করেছিল। হয়তো নীলুর ভালো রেজাল্ট আর ওর প্রতি শিক্ষকদের প্রীতি দেখে ওকে আর কেউ ঘাঁটাতে সাহস করেনি।
অথবা, নীলুও তখন বেশ পুরনো ছাত্র হয়ে গিয়েছিল, আর ওরা ওকে নিয়ে মাথা ঘামায়নি। নীলু কিন্তু কোনদিনই এ-সমস্ত অপকর্মের ব্যাপারে কৃতিত্ব স্বীকার করেনি। বরং আমি-ই দুয়েকবার এ-ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে বোকা বনেছি ওর কাছে। যাই হোক, পরবর্তী কয়েক বছর আমাদের নির্ঝঞ্ঝাট কাটলো আর আমাদের বন্ধুত্বও অনেক গাঢ় হল।
তখন আমরা ক্লাস এইটে। একদিন জ্যামিতি ক্লাসে নতুন অঙ্ক স্যার নীলুকে জিজ্ঞেস করলেন, "কোন পরিস্থিতিতে এই ত্রিভুজটা আঁকা যাবে না?"
- এ যখন বি-র থেকে বড় হবে।
- তুমি একটি মহামূর্খ। কান ধরে দাঁড়িয়ে থাক।
কান ধরে দাঁড়ানোটা আমার কাছে জলভাত। কিন্তু নীলুর কাছে এই প্রথম। আমি না তাকিয়েও দেখতে পাচ্ছি, নীলুর কান-দুটো লাল হয়ে গেছে। পেছনে হারূর দল নির্বিকার মুখে মজা দেখছে।
পাঁচ মিনিট ধরে স্যার অঙ্কটা বুঝিয়ে বললেন, "যখন বি এ-এর থেকে ছোট হবে, তখন এই ত্রিভুজটা আঁকা যাবে না।" তার পর হঠাত যেন খেয়াল হতেই বললেন, "তুমিও বোধ হয় একই কথা বলেছ। তাই না?"
নীলু মুখ লাল করে মাথা উপর-নীচ করল। এমনিতেই চুপচাপ ছেলে। তার ওপর রাগে তখন ওর মুখ দিয়ে কথা সরছে না।
-আচ্ছা, আচ্ছা। তুমি বস।
নীলু চুপ করে বসে পড়ল।
সেদিন বিকেলে নীলু খেলতে এল না। পরের দিনও যখন এলো না, আমি চললাম ওর বাড়িতে। কাকিমা দরজা খুলে দিলেন।
- কাকিমা, নীলু আছে?
- হ্যাঁ রে, আছে।
- দুদিন খেলতে যায়নি কেন?
- কি করে বলব বল? কাল বিকেলেও দেখি ঘরে বসে কি সব কাগজ-পত্তর ঘাঁটাঘাঁটি করছে, আজকেও দেখি তাই। তোর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে নাকি?
- না তো। আমিও তো তাই দেখতে এলাম।
নীলুর ঘরে ঢুকে দেখি, একরাশ ম্যাগাজিনের মধ্যে ডুবে আছে সে।
- এগুলো কি রে?
- এগুলো একটা মজার ম্যাগাজিন, 'ধাঁধা' এর নাম। উত্তর কলকাতা থেকে বেরোয়। যেমন মজার ভাষা, তেমন মজার মজার সব ধাঁধা। কয়েক মাস আগে আমার পিসতুতো দাদা আমার নামে চাঁদা দিয়েছে। প্রতি মাসে
আসে।
- তা তুই হঠাত খেলার সময় ধাঁধা নিয়ে পড়লি?
- ঐ দুদিন দেখছিলাম। কাল থেকে ঠিক যাবো।
পরের দিন অঙ্ক ক্লাসের শেষে, নীলু হাত তুললো, "স্যার।"
- কি?
- স্যার, একটা অঙ্ক ছিল।
- কিসের অঙ্ক?
- সেটাই বুঝতে পারছিনা। আমার পিসতুতো দাদা আই.আই.টিতে পড়ে, সে দিয়েছে। ঠিক ধরেও ধরতে পারছিনা। তাই ভাবলাম আপনি যদি একটু দেখিয়ে দেন।
"দে", বলে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে কাগজটা নিলেন স্যার।
- হুঁ, বাবার বয়স যদি ... তাহলে ছেলের বয়স ... তাহলে ... এটা আমি নিয়ে যাচ্ছি। টীচার্স-রুমে বসে করে রাখবো। কাল যখন ক্লাসে আসবো পেয়ে যাবি। আমি বুঝলাম স্যার নিজের পকেটে করে নিজের মৃত্যুবাণ নিয়ে গেলেন। এটা নীলুর পিসতুতো দাদার বানানো অঙ্ক নয়, ইউক্লিড বা পিথাগোরাস বা গত শতাব্দীর অন্য কোন পন্ডিতের বানানো ব্রহ্মাস্ত্র ধাঁধা পত্রিকার মাধ্যমে নীলুর হাত বেয়ে স্যারকে ধরাশায়ী করে দিল আজ।
পরবর্তী এক মাস স্যার ঐ নিয়ে আর উচ্চবাচ্য করলেন না। নীলু কেন, অন্যদেরও শাস্তি পাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। এক মাস বাদে যখন সবাই বুঝে গেছে স্যারের দ্বারা ওটা আর হবে না, শুধু কবে কখন সেই প্রশ্নটা করে
স্যারকে বেইজ্জত করা হবে সেটা শুধু সময়ের ব্যাপার, স্যার নিজেই একদিন নীলুকে ডাকলেন, "হ্যাঁ রে, তুই একদিন একটা অঙ্ক দিয়েছিলি না, ওটা একটু গন্ডগোল আছে। আরেকটা ইনপুট লাগবে।"
"ও সেই অঙ্কটা স্যার। আপনাকে বলতে ভুলে গেছি, ওটার উত্তর তো দাদা পরে দিয়ে দিয়েছে। ওটা এভাবে হবে", বলে স্যারের চোখের সামনেই বোর্ডে অঙ্কটা কষে দিল।
ক্লাস নাইনে ওঠার দশ দিনের মধ্যে আমাদের ইংরেজী স্যার বদলে গেলেন। পুরনো স্যার নাকি কি একটা পরীক্ষা দেবেন বলে ছুটি নিয়েছেন, নতুন একজন এলেন অস্থায়ী শিক্ষক হিসাবে। ইনি এসেই সবাইকে বুঝিয়ে দিলেন যে তাঁর কাছে কোচিংয়ে না গেলে নম্বর পাওয়া যাবেনা।
কয়েকজন ঝপাঝপ ভর্তি হয়ে গেল। প্রথম ক্লাস টেস্টে তাদের কোশ্চেন কমন এল, আর আমাদের খাতাগুলো একটু বেশিই কড়া করে দেখা হল, নম্বরগুলো যোগ্যতার থেকেও কমে গেল।
কি করি। বাবাকে বলে লাভ নেই। উনি ওনার বন্ধু মথুরাস্যারের কছেই আমাকে পাঠাবেন। ওখানে একটু বাঁদরামি করলেই বাড়িতে খবর এসে যাবে। আর ওনার কাছে গিয়ে এতদিন তো খারাপ নম্বর পাইনি। কাজেই
বাব ইংরেজী স্যার বদলাবেন না। এদিকে টেস্টে নম্বর কম পেলে কি হবে কে জানে। কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছি না। কদিন বাদে নীলু ডাকলো, "চ, ইংরেজী স্যারের সাথে দেখা করে আসি।"
- তুইও স্যারের কোচিংয়ে ভর্তি হবি নাকি?
- ভাবছি।
- কিন্তু আমি যাব কি করতে। আমার পক্ষে তো আর স্যার বদলানো সম্ভব নয়।
- ঠিক আছে। না হয় সেটাই স্যারকে বুঝিয়ে বলে আসিস। এমনিই আমার সাথে আয় না।
চললাম স্যারের বাড়ি। সেদিন স্যার একটু তাড়াহুড়োর মধ্যে ছিলেন। আজ নাকি ওপর থেকে কেউ আসছেন। স্যারের ইন্টারভিউ হবে। ওটা হলে আমাদের স্কুলেই স্যার পাকাপাকি হয়ে যাবেন। নীলুর সাথে কথা হল, সামনের মাস থেকে সে আসবে। স্যার ওর ওপর বেশ খুশি হয়েই ভিতরে চলে গেলেন। আমি বেরিয়ে এলাম, পেছনে পেছনে নীলু। বেড়িয়ে দেখি নীলু পেছনে নেই। কয়েক সেকেন্ড পরেই অবশ্য ও চলে এল।
পরের দিন অন্য একজন স্যার আমাদের ইংরেজী নিতে এলেন। বিকেলের দিকে খবর পাওয়া গেল, আগের ইংরেজী স্যার নাকি ইন্টারভিউ দিতে আধঘণ্টা দেরীতে এসেছিলেন, ওপরওলা রেগেমেগে তাঁর ইন্টারভিউ নেন নি। আমার শুধু মনে পড়ে গেল, কাল সকালে স্যারের ঘরে টেবিলটার ওপর ওনার হাতঘড়িটা দেখেছিলাম, আর আমি বেড়িয়ে আসার পর কয়েক সেকেন্ড নীলু ওঘরে একা ছিল।
মফস্বল শহর হলেও আমাদের স্কুলের বেশ নাম ছিল। প্রায় প্রতি বছরই জয়েন্টে দু-চারটে উতরে যেতো। সে বছর আমি আর নীলু ছাড়াও তিন জনের নাম উঠলো। আমি আর নীলু এলাম যাদবপুরে, জয়ন্ত গেল ডাক্তারিতে, দেবাশিস আই.আই.টিতে, আর অসীম শিবপুরে।
ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজের প্রথম দিকে সবাইকেই র্যাগিংয়ের মুখোমুখি হতে হয়। আমরাও ব্যাতিক্রম হলাম না। গোবেচারা বলে নীলুর ওপর একটু বেশিই হল। অতীশদার বেশ কয়েকটা থাপ্পড় আর কৃষ্ণেন্দুদার কয়েকটা লাথি নির্বিবাদে হজম করতে হল তাকে। অবশ্য পরে এই দুজনের সাথে আমাদের বেশ ভাব হয়ে গিয়েছিল।
পরের বছর আমরা হলাম সেকেন্ড ইয়ার। এবার আমরা র্যাগিং করার অধিকারী। গতবছর আমাদের ওপর দিয়ে যা হয়েছে সেগুলো সুদে-আসলে উসুল করে নিতে হবে। এর মধ্যে আবার নতুন-নতুন আইডিয়া নিয়ে আসতে হবে। র্যাগিং শেষ হতে হতে শীত পড়ে এল। নীলু একদিন নতুন প্রস্তাব নিয়ে এলো, "চল প্ল্যানচেট করা যাক।"
আমরা এক পায়ে খাড়া। নিয়ম মাফিক টেবিলে ছয়জনা বসলাম রাত-বারোটার পর। অন্ধকার ঘরে মোমবাতি জ্বালিয়ে নিঃশব্দ ঘরে গোল হয়ে বসে আমরা আত্মা নামানোর জন্য মনঃসংযোগ করে চলেছি। পাশের বিছানাতে অতীশদা, বিশু, চঞ্চল, গোরা মজা দেখতে এসেছে। এদের মধ্যে অতীশদার আবার ভূতের ভয়ও আছে। নেহাত, আমাদের প্ল্যানচেটে তার বিশ্বাস নেই, তাই মজা দেখতে এসেছে। প্রায় পনেরো মিনিট কেটে গেছে, মোমবাতির শিখা কেঁপে কেঁপে উঠছে। এমন সময় হঠাত দড়াম করে দরজা খুলে ঘরে ঢুকলো গগন। এমনিতেই লম্বা কালো চেহারা,
তার ওপর ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া চুল। পরণে শুধু একটা লাল জাঙ্গিয়া। ঘরে ঢুকেই বিকট স্বরে চিতকার করে উঠলো,
"কে? কে ডেকেছে আমাকে এখানে?"
আমরা সবাই থতমত। নাটক আমাদের হিসাবের বাইরে চলে গেছে। সত্যিকারের ভূত এসে গেছে ঘরের মধ্যে। গগন বড় বড় চোখ করে সবার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে চলেছে, "তুই ডেকেছিস? তুই? তুই?"
সবাই ভয় ভয় মাথা নাড়লাম। সবার শেষে এল অতীশদার পালা। তাকে আর জবাব দেবার সুযোগ না দিয়ে, "তবে তুই-ই ডেকেছিস শালা" বলে গগন ঝাঁপিয়ে পড়ল তার ওপর। কে একটা বুদ্ধি করে আলো জ্বেলে দিল, আর আমাদের সংবিত ফিরে এল। কোনমতে অতীশদাকে গগনের হাত ছাড়িয়ে গগনকে উপুড় করে শুয়ে দিলাম আমরা। গগনের শরীরটা তখন থরথর করে কাঁপছে। নীলু ওকে আলাদা করে বলে রেখেছিল। বেচারী অতি-অভিনয় করে তখন আর হাসি চাপতে পারছে না। নীলু শুধু আস্তে করে অতীশদাকে বলল, "একটু জল খেয়ে নাও। আর একটু নিয়েও এস। বোধহয় ওর মাথাতেও একটু জল দেওয়া দরকার।"
অতীশদা টয়লেটে চলে গেল। বিশু ওখানে তখন বোতলে জল ভরছে। অতীশদাকে দেখেই ওর মাথায় বদ বুদ্ধি চাগিয়ে উঠলো। ও ফ্যাল ফ্যাল করে অতীশদার দিকে তাকিয়ে জল ভরছে। বোতল ভরে উপচে পড়ছে, তবুও কোন খেয়াল নেই, অতীশদার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়েই আছে। রাত প্রায় দেড়টা। অতীশদা টয়লেট থেকে ছুটে বেরিয়ে আমাদের ঘরে এসে হাঁপাতে লাগলো। বাকি রাতটা আমরা একসাথেই কাটালাম।
পরের দিন বিকেলে নীলুর পাত্তা নেই। ফিরলো বেশ রাত করে। মাথায় সিঁদুরের টীকা। কালীঘাটে গিয়েছিল। সেখানে এক সাধু নাকি বলেছেন, কাল রাতে গগনের মাধ্যমে আমাদের হোস্টেলে এক অতৃপ্ত আত্মা ঢুকে
পড়েছেন। তাকে বের করতে হলে যজ্ঞ করতে হবে। প্রায় দু-হাজার টাকার ধাক্কা। কি আর করা। অতৃপ্ত আত্মা বলে কথা। আমরা দশজনে দুশ' টাকা করে দিলাম। পরের দিন সন্ধ্যে বেলা আমরা চারজন বেরলাম পূজো দিতে। তারপর লাইটহাউসে ইভনিং শো দেখে, নিজামে কষা-মাংস আর পরোটা খেয়ে ফিরলাম। নীলু ঐ শীতের বাজারে কোথা থেকে একটা আম যোগাড় করেছিল। ফেরার সময় বালিগঞ্জ কালীবাড়ী থেকে তাতে সিঁদুর মাখিয়ে নিয়ে এলাম। রাত পৌনে বারোটা নাগাদ ফিরে নীলু সাধুর বিধান জানাল, "গগন যখন অতীশদার দিকে গিয়েছিল, তখন বোঝাই যাচ্ছে, আত্মার পরবর্তী আক্রমণ কার ওপর হবে। কাজেই সাধু বলেছেন অতীশদাকে আজ রাতে এখনই স্নান করে ছাদে উঠে খালি গায়ে শুধু ভিজে গামছা পরে পূর্বদিকে মুখ করে ১০৮ বার দূর্গানাম জপ করতে হবে। তারপর এই মন্ত্রপূত আম্রভক্ষণ করলে বিপদ কেটে যাবে। ডিসেম্বর মাসের
রাত বারোটায় চান করে খালি গায়ে ভিজে গামছা পরে ছাদে উঠে ১০৮ বার দূর্গানাম জপ করতে কেমন লাগে, সে আর কাউকে বলে দিতে হবে না।
তার কয়েক মাস পরের কথা। আমাদের সেকেন্ড ইয়ার ফাইনাল সেমেস্টার সামনে। সবাই মন দিয়ে পড়াশুনো করছে। ফাইনাল ইয়ারের সবাই টুকটাক ইন্টারভিউও দিচ্ছে। সেদিন কৃষ্ণেন্দুদার ইন্টারভিউ। ভোরবেলা হৈ হৈ কান্ড। সবার চিতকারে ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি করিডরে জল থই থই করছে। কৃষ্ণেন্দুদার ঘরের সামনে বিশাল ভীড়। সামনে গিয়ে দেখি যাকে বলে লন্ডভন্ড অবস্থা। কৃষ্ণেন্দুদার ঘরে সেদিন সে একাই ছিল। মাঝরাতে কৃষ্ণেন্দুদা ঘুমিয়ে পড়লে, কে যেন দরজার চৌকাঠে মাটী দিয়ে চৌকাঠ বানিয়েছে। তারপর তুরপুন দিয়ে দরজায় ফুটো করে সরু পাইপ দিয়ে ঘর জলময় করে দিয়েছে। প্রায় তিন ইঞ্চি জল জমে গিয়েছিল। কৃষ্ণেন্দুদা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে নামতে গিয়েই জলে পা। দেখে হাওয়াই চপ্পলজোড়া দরজার কাছে ভেসে বেড়াচ্ছে। সব থেকে খারাপ ব্যাপার হল, চামড়ার সুটকেশটা আলমারীর মাথায় ছিল। কে যেন কাল সেটাকে খাটের তলায় করে দিয়েছিল। কৃষ্ণেন্দুদা শোয়ার সময় খেয়াল করেনি। সেই সুটকেশের মধ্যে কৃষ্ণেন্দুদার সমস্ত রেজাল্ট এবং সার্টিফিকেট ছিল। সেগুলো পুরো ভিজে গিয়েছে। আজ সেগুলো নিয়ে যাওয়া যাবেনা।
কলেজ পাশ করার পর সবাই এক একদিকে ছড়িয়ে পড়লাম। তারপর যা হয়, কারো সাথে কারো কোন যোগাযোগ রইল না। বহু বছর বাদে, ই-মেল ঠিকানা চালু হলে, আবার কিছু বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করা গেল।
গত বছর মিউনিখ থেকে ফিরেছি। একদিন অমিতের ফোন, "অনেকদিন দেখা হয়নি। চল না একদিন বসি।"
লাফিয়ে উঠলাম। প্রায় বিশ বছর পর সেই পুরনো আড্ডা। বালিগঞ্জের কাছে একটা রেস্তোঁরা ঠিক করা হল। প্রায় জনা কুড়ি এসেছে। বাকিরা অনেকেই ফোন করে যেতে লাগলো। সবারই বয়স বেড়েছে, ছোটখাট ভুঁড়ি, ফোলা ফোলা চেহারা, টুকটাক চশমা, এদিক ওদিক টাক। ঘণ্টাখানেক বসার পর হঠাত ওয়েটার এসে বলল, আমাদেরকে একটু নিচে যেতে হবে, কে একজন লোকাল মস্তান এসেছেন। তাকে জায়গাটা ছেড়ে দিতে হবে।
একটু চেঁচামেচি করে দেখা গেল, ছেড়ে দেওয়াই ভালো। মধ্যবয়সী ভদ্রলোকেরা তো আর লোকাল গুন্ডার সাথে লড়তে যাবে না। আমরা কি আর করি। নিচেই নেমে এলাম। কিন্তু তার পর আড্ডাটা আর জমল না। রাত নটা নাগাদ আমরা ঠিক করলাম এখান থেকে বেরনো যাক। বিল চুকিয়ে বেরতে যাচ্ছি, নীলু বলল, "একটু দাঁড়া। টয়লেট থেকে আসি। শঙ্কর, তোর কাছে রুমাল আছে? একটু দে না।"
রুমাল নিয়ে টয়লেট চলে গেল নীলু। একটু পরে বেরিয়ে এসে রুমালটা ফেরত দিয়ে বলল "চ"।
রাস্তাটা পেরিয়ে অন্যদিকে আরেকটা রেস্তোঁরার দিকে যাচ্ছি। হঠাত দেখি আগের রেস্তোঁরাতে হঠাত কারেন্ট চলে গেল। নীলুর দিকে তাকালাম। সেই নির্বিকার দৃষ্টি। বুঝলাম বাথরুমের বাল্বটা খোলার জন্য রুমালটা দরকার ছিল। সুইচ অফ করে, বাল্বটা খুলে হোল্ডারে একটা সিকি বা আধুলি রেখে আবার বাল্বটা চেপে চুপে লাগিয়ে দিয়ে এসেছে সে। পরের জন বাথরুমে গিয়ে অন্ধলার দেখে সুইচ অন করলেই শর্ট সার্কিট হয়ে কারেন্ট অফ।
নীলু এখনও বদলায় নি।
***********************
শঙ্করঃ ক্লাস এইটে আমার অঙ্কের স্যার সত্যি সত্যি আমাকে জ্যামিতির ঐ প্রশ্নটা করে অকারণে কান ধরে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন। ক্লাসে ভালো ছেলে বলে আমার সুনাম ছিল। উত্তর কলকাতা থেকে বেরনো ধাঁধা পত্রিকার সভ্য ছিলাম আমি। প্রতিশোধটা ঠিক এরকমই ছিল।
***********************
যাদবপুরে পড়াকালীন একবার ছুটিতে বাড়ি ফিরে পুরনো কোচিং ক্লাসের মাস্টারমশাইয়ের হাতঘড়ি এগিয়ে দিয়েছিলাম। বাড়িতে আমি নীলুর মতই গোবাচারা ছিলাম, স্কুলে-কলেজে চীনে-পটকা। কাজেই কয়েকদিন পর (আমি তখন যাদবপুরে ব্যাক) যখন রাস্তায় মায়ের সঙ্গে মাস্টারমশায়ের দেখা, মা নমস্কার করে পরিচয় দিলেন, "চিনতে পারছেন স্যার। আমি শঙ্করের মা।"
- ওঃ, আপনি শঙ্করের মা! ডেঞ্জারাস ছেলে।
মা এবং আমার প্রতিবেশিনী জেঠিমা চমকে উঠলেন। তাঁরা জানেন এমন ভালো লক্ষ্মী ছেলে।
"জানেন কি করেছে? সেদিন পরীক্ষা ছিল। আমি চান করিনি, খাইনি। দৌড়তে দৌড়তে স্কুলে গিয়ে ছাত্রদের বললাম, "বই বন্ধ কর। খাতা দেওয়া হবে।" সবাই বলে উঠলো "স্যার, এখন তো সবে সাড়ে দশটা। বুঝে দেখুন।"
*********************
যাদবপুরের হোস্টেলের গল্পটা সিনিয়রদের মুখে শোনা। আর একটা ঘর সত্যি জলে ভাসানো হয়েছিল।
*********************
জোরহাটে বা ইম্ফলে, ঠিক মনে নেই, একবার এক হোটেলে আমাকে টেবিল বদলাতে হয়েছিল, লোকাল গুন্ডার জন্য।
মন্তব্য
খুবই চমৎকার লাগল শঙ্করদা!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
পড়তে পড়তে একটা কথাই মনে হইছে, সিনেমা বানাইলে কেমন হয় । বাংলা চলচিত্রে এমন দুর্দান্ত প্লটের বড়ই অভাব।
-সমুদ্র সন্তান
চমৎকার।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সুন্দর লেখা দাদা। ভালো লেগেছে।
গল্পে ঝাঝা।
অসাধারণ।
আপনিই কি তাহলে 'নীলু' ছিলেন?
অতি চমৎকার লাগলো। অনেক কিছুই মনে পড়লো 'জীবন থেকে নেয়া'।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমার রুটি গল্পটা কি করে যেন হারিয়ে গেছে। প্রথম বা দ্বিতীয় পাতায় সেটা এখন থাকার কথা। আমার ব্লগে গেলে পাওয়া যাবে, কিন্তু সচলায়তনের পাতায় নেই। নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য সামলাতে গিয়ে গল্প নিজেই অন্তর্ধান করল - কোন মডুভাই কি এই রহস্যের সমাধান করে দেবেন?
প্রথম পাতায় একই লেখকের দুটো পোস্ট রাখা হয় না, তাই হয়ত সরিয়ে দেওয়া হয়েছে...
দারুণ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সরল অঙ্ক আমার সবসময়েই ভীষণ জটিল লাগে........
গল্পের শুরুতে একটা ম্যাগনেটিক লাইন খুব দরকার পড়ে। আপনার গল্পে সেটা অসাধারণ ভাবে এলো।
খুব ভালো লাগলো।
পড়তে পড়তে মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল সুকুমারের "পাগলা দাশু" পড়ছি আবার মাঝে মনে হচ্ছিল "থ্রি ইডিয়টস" দেখছি কিন্তু এটাতো আসলে দু'টোর কিছুই না, এটা অসাধারণ একটা গল্প।
চমৎকার হয়েছে।
পাগল মন
মুগ্ধতার পারদ আকাশে চড়িয়েছেন। স্বল্প বিরতিতে আরো অনেক অনেক গল্প আসুক।
কাকস্য পরিবেদনা
আপ্নি বস লোক,লেখা চলুক।
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
... চমৎকার একটা ছোটদের গল্প। কিশোরদের ভালোগল্পের আকালে এই রকম একটা গল্প পড়তে খুব ভালো লাগে।
আপনিই যে 'নীলু', এটা না বললেও হতো কিন্তু- মনে হলো। মুগ্ধতা তাতে কমতো না...
_________________________________________
সেরিওজা
খুবই ভাল!
খুব ভাল লাগল । পড়তে পড়তে কেন জানি না পাগলা দাশুকে মনে পড়ে যাচ্ছিল । শান্ত, ধীরস্থির, বুদ্ধিমান নীলুকে শুভেচ্ছা জানাবেন ।
……………………………………
বলছি এক জ্যোতির্ময়ীর কথা
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
নীলু দিয়া একটা ব্যবসা সফল মুভি হতে পারে।
মজা পাইলাম !
আহারে নীলু।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
প্রতিশোধ নেয়ার মত মজা আর কিছুতেই নেই। লেখা ভালো লাগলো।
সজল
ডি লা গ্র্যান্ডি মেফিস্টোফিলেস গপ্প মশাই আপনি তো বোমবাস্টিক ছিলেন নাকি আছেন?
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
দারুন মজার কাহিনী। সুস্বাদু এবং মচমচে। লেখনীও চমৎকার।
ওয়াও!
ভীষণ রোমাঞ্চকর একখান কাহিনী পড়লাম।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আহ্! অনেকদিন পরে ছোটবেলার পরীক্ষা শেষ শীতের রোদে বসে একটা গল্প পড়লাম মনে হল।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
খুব ভালো লাগলো!!!!
কিছু কিছু সিনেমার শেষে যেমন থাকে, অমুক এখন এখানে আছে, তমুক ঐখানে কাজ করছে; আপনার শেষটাও তেমন লাগলো।
পরেরটা দ্রুত পড়বার অপেক্ষায়
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
নতুন মন্তব্য করুন