আমি যখন নিজে নিজে পড়তে পারতাম না বইয়ের প্রতি আমার আকর্ষন তখন থেকেই। বড়দেরকে জোর করতাম পড়ে শোনানোর জন্য। তারপর একসময় নিজে নিজে বাংলা এবং ইংরেজীতে পড়তে শিখলাম, বইপড়া আমার জন্য প্রিয় খেলায় পরিনত হল। এই গল্প শুধু আমার নয়, পাঠকদের মধ্যে আরো অনেকের বলে মনে করি। একটা বিশেষ বিষয় এই যে, কিছু কিছু মানুষ বয়স বাড়লেও শিশুতোষ বইয়ের আকর্ষন কাটাতে পারেন না। আমি নিজে সেই দলের। আজ আমাদের সন্তান নিজে নিজেই বই পড়া শিখে গেছে। তবু আমি শিশুতোষ বইয়ের মায়া কাটাতে পারিনা। সন্তানের নাম করে কেনা অনেক বই কেনার আসল উদ্দ্যেশ্য নিজে পড়া।
বাংলাদেশে যাদের জন্ম ১৯৮০ সাল বা তার আগে তাদের অধিকাংশ জনের ছেলেবেলা কেটেছে মস্কোর “প্রগতি প্রকাশন”, “রাদুগা প্রকাশন” অথবা তাশখন্দের “মীর প্রকাশন”-এর বাংলায় অনুদিত বই পড়ে। অনুবাদগুলো মূলতঃ রুশ থেকে ছিল, তবে কালে-ভদ্রে রুশ ছাড়া এক-আধটা অন্য সোভিয়েত ভাষার বইও এসব প্রকাশনী থেকে অনুদিত হত। এসব বই-এর কাগজ, বাঁধাই, ছাপা, ছবি, রঙ সেসময়কার বাংলাদেশের মুক্তধারা, নওরোজ কিতাবস্তান বা চট্টগ্রাম বইঘরের চেয়ে অনেক উন্নত, সুন্দর ও আকর্ষনীয় ছিল। সত্যি বলতে কি এখনকার প্রকাশিত ছোটদের বইগুলোও অঙ্গ-সৌষ্ঠবে ঐসমস্ত বইয়ের সাথে তুলনীয় নয়।
অধিকাংশ রুশ বই বাংলায় অনুবাদ করতেন বাংলাদেশের হায়াৎ মামুদ ও দ্বিজেন শর্মা এবং ভারতের ননী ভৌমিক ও অরুন সোম। এঁদের মধ্যে ননী ভৌমিক আমার মত অনেকের কাছে ছিলেন রূপকথার গল্প-দাদুর মত। তাঁর ভাষা, শব্দচয়ন, উপমা এমন ছিল যে, মনেই হতোনা গল্পগুলো ভীনদেশের-ভীনভাষার। সাম্যবাদী সমাজের মূলভাবনা শিশুমনে সৎভাবে তুলে ধরার আশ্চর্য দক্ষতা ছিল তাঁর। ১৯৯৭ সালে ননী ভৌমিকের করুন মৃত্যু আমার কাছে রূপকথার মৃত্যুর মত মনে হয়েছিল।
এক সময় গণচীন থেকে ছোটদের জন্য অল্পকিছু বই বের হয়েছিল। তবে সে উদ্যোগ বেশীদিন টিকেনি। শত ফুল ফুটতে দেয়া দেং-এর দল গরীব বিশ্বের না ফোটা কলিদের বিকশিত করার প্রকল্প দ্রুতই বন্ধ করে দিয়েছিল।
প্রগতির বই ছাড়া সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে কিছু বাংলা পত্রিকাও প্রকাশিত হত। এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য “সোভিয়েত নারী” এবং “উদয়ন”। ঐসমস্ত পত্রিকার কনটেন্টকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ্য প্রনোদিত বলে উড়িয়ে দেবার উপায় নেই। তাদের মানকে অতিক্রম করতে পারে এমন নিয়মিত পত্রিকা আজো বাংলাদেশ ক’টা আছে তা ভাবার বিষয়।
অত্যন্ত সঙ্কোচের সাথে বলতে হচ্ছে যে বাংলাদেশের অনেকেই “সোভিয়েত নারী” বা “উদয়ন” কিনতেন বাচ্চাদের বইয়ে মলাট দেবার জন্য। এদের রঙ, রূপ এবং কাগজের উন্নতমান এহেন পছন্দের কারন। পত্রিকাগুলো ঠোঙ্গাওয়ালাদের কাছেও প্রিয় ছিল। কারন এতে ঠোঙ্গা ভারী হত, সমান দামে কম সওদা দেয়া যেত।
মলাটওয়ালা-ঠোঙ্গাওয়ালাদের প্রিয় আরেকটি পত্রিকা ছিল উত্তর কোরিয়া থেকে প্রকাশিত “KOREA” পত্রিকাটি। ইংরেজী ভাষায় প্রকাশিত এই পত্রিকাটিতে কোরিয়ার সংগ্রামের ইতিহাস, তাদের উন্নয়ন কর্ম-কান্ডের বিবরন, তাদের বাঁধার দেয়ালকে অতিক্রম করার গল্প থাকতো। এদের কাগজ সোভিয়েত পত্রিকাগুলো থেকে কম উন্নত মানের হলেও লেখার মান খারাপ ছিল না। একটি ক্ষুদ্রায়তণ, সম্পদে সীমিত, বৈরী প্রকৃতির দেশ কিভাবে বৃহৎ শক্তিগুলোর মোকাবেলা করে শুধু টিকেই থাকল না বরং অন্যদের জন্য আদর্শ হল সেই কথা জানা যেত “KOREA” থেকে। মহান বিপ্লবী কিম ইল সুঙ-এর প্রয়াণের পর সম্ভবতঃ তার সর্বঘটেকাঁঠালীকলা পুত্র কিম জঙ ইল “KOREA”-র প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়। নয়তো গত বারো-তেরো বৎসরে পত্রিকাটি আর চোখে পড়েনি কেন।
আজো আমার চারপাশের মানুষদের লক্ষ্য করলে প্রগতির বই পড়ে বড় হওয়া মানুষদেরকে প্রগতির বই না পড়ে বড় হওয়া মানুষদের কাছ থেকে তাদের মন-মানসিকতা বা বিশ্লেষন করার প্রবণতা থেকে অনেকটাই পার্থক্য করতে পারি। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ায় এদেশের সাম্যবাদের স্বপ্ন দেখা মানুষদের রাজনৈতিক ভাবে যতটুকু না ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হয়েছে এদেশের শিশুদের।
শিশুদের জন্য বই লেখা এবং প্রকাশ করার জন্য যে সাংগঠনিকভাবে চিন্তা-ভাবনা এবং চেষ্টা প্রয়োজন তা এদেশে সঠিকভাবে এক মুক্তধারা ছাড়া আর কেউ করেনি। আজ মুক্তধারাও বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের সরকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে শিশুদের বই বের করা শিশু একাডেমী আর ইসলামী ফাউন্ডেশনের অধিকাংশ প্রকাশনা স্বজনপ্রীতি, তোষন আর অযোগ্যতা দোষে দুষ্ট।
শিশুদের বই যে শক্ত-পোক্ত, রঙীন এবং আকর্ষনীয় হতে হবে তাও এদেশে কেউ বিশেষভাবে ভাবেন না। যা পাওয়া গিয়েছিল তা সব ঐ প্রগতি থেকে। শিশুদের বই যে বেশী দামী হওয়া চলবে না তা এই বৈশ্যযুগে কে কাকে বোঝাবে? বুঝত প্রগতি, বুঝতো মুক্তধারা।
এখন বাজার দখল করেছে ডিজনীর বইয়ের অখাদ্য অনুবাদ, নানা প্রকল্পের টাকা হালাল করার জন্য এনজিওদের বের করা নিম্নমানের শিশুতোষ বই, নিম্নমানের অনুবাদ করা কমিক, বটতলার ছাপা নিউজপ্রিন্টের অদ্ভুত ভাষার রূপকথার বইয়ে। এসব বইয়ের কাগজ, ছাপা, বাঁধাই, রঙই শুধু খারাপ না, এদের ভাষা, বর্ননারীতি, প্রকাশভঙ্গীও শিশুদের অনুপযুক্ত। কিছু কিছু দেশী প্রকাশনী ভালো শিশুতোষ বই বের করে বটে, তবে তা সংখ্যায় খুব অল্প, বেশ দামী এবং একুশের বইমেলা শেষ হবার পর তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায় না।
শিশুতোষ পত্রিকার মধ্যে “শিশু”র মান তলানীতে ঠেকেছে। টাপুর-টুপুর, নবারুন, কিশোর বাংলার মত পত্রিকা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আজ তাই শিশুদের মধ্যে টেলিভিশনের বিভিন্ন চ্যানেলে দেখানো “পাওয়ার রেঞ্জার”-এর মত ভায়োলেন্সপূর্ণ কার্টুন বা অ্যানিমেশন মুভি জনপ্রিয়। তাদের মনোযোগ নতুন নতুন ভিডিও গেমের প্রতি যেগুলোকে ঠিক শিশুতোষ বলার উপায় নেই।
আমি কার্টুন, অ্যানিমেটেড মুভি বা ভিডিও গেমের বিপক্ষে নই। কিন্তু বইবিমুখিতা তাদের সঠিক শিক্ষা আর মানসিক বিকাশের অন্তরায়। ফলে নিজের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর গর্ব করার মত বিষয়ে তারা অজ্ঞ থেকে যাচ্ছে। শিশুতোষ বইয়ের অভাবে বাবা-মারাও শিশুদের ডিভিডি, ভিসিডি কিনে দেয়া ছাড়া উপায় দেখেন না। শিশুরা বই থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে একথা বলব না, বরং তাদের মুখ ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
ডালিমকুমার, কঙ্কাবতী, লালকমল-নীলকমল, পান্তাবুড়ি, চালাক জোলা, ধূর্ত শেয়াল আর বোকা কুমিরদের জায়গা দখল করেছে মিকি, মিনি, গুফি, নডি, পুহ আর লায়ন কিং-রা। এই শিশুরা যখন বড় হবে তখন নিজেদের অতীতের দিকে তাকালে দেখতে পাবে ধার করা সব জিনিষে তা ভরা। নিজেদের ঐতিহ্য ততদিনে জাদুঘরে ঠাঁই পাবে।
মন্তব্য
আমার হাতেখড়ি ঠাকুরমার ঝুলি দিয়ে। সেই সব গল্পগুলোর জন্য এখনো মন কেমন কেমন করে
---------------------------------
বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ। কম্পিউটার আসার পর বই ছাপাবার প্রক্রিয়াটা কিন্তু আরো সহজ হয়েছে। তবুও এই ভাটার টান ছাড়ছে না।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
রাদুগা, প্রগতি, মীরের এক গাদা বই এখনো আমার কাছে আছে । এখনো আমি পুরাতন বইয়ের দোকান বা ফুটপাথ থেকে এসব বই খুঁজে খুঁজে কিনি । মীরের কিছু বিজ্ঞান বিষয়ক প্রকাশনাও পাওয়া যেত । পেরেলমানের লেখা পদার্থ বিদ্যার মজার কথা (এই বইটার বাংলা ইংরেজী দুটাই আমার সংগ্রহে আছে), গনিতের মজা ইত্যাদি । শৈশবে এই বই গুলো আমার কৌতূহলকে ভীষণ নাড়া দিয়েছিল ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আমার এবং আমার খুব কাছের, আপন একজনের শখ হচ্ছে রাদুগার বই সংগ্রহ করা ( আসলে শখটা ওরই মূলত, আমি মাঝে মধ্যে ওকে সাপ্লাই দেই )। সেদিনও রাস্তার উপরে রাদুগার কিছু বই পেয়ে চোখ বন্ধ করে কিনে ফেললাম।
লেখাটা অত্যন্ত চমৎকার হয়েছে। সময়াভাবে বিস্তারিত আলোচনায় যেতে পারলাম না, তবে সময় পেলে বিস্তারিত মন্তব্য করবো।
আপাতত পাঁচ।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ভালো শিশুতোষ বইয়ের আকাল কি লেখক ও প্রকাশকদের উদ্যোগের অভাবে, নাকি শিশুতোষ বইয়ের বাজারে নিম্নমানের অনুবাদ কমিক বা এমনিধারা উপাদানের চাহিদার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে?
উদাহরণ দিই। সুকুমার রায়ের বইয়ের কপিরাইটকাল তো উত্তীর্ণ, কিন্তু বাংলাদেশের কোন প্রকাশক কি তাঁর সমগ্র শিশু সাহিত্যকে বাংলাদেশ থেকে স্বল্পমূল্যে শিশুপাঠকের কাছে পৌঁছে দেবার জন্যে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন? আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সুকুমারবঞ্চিত একটি শিশুর শৈশব অসম্পূর্ণ। সুকুমার রায় একটি শিশুর জীবনে আলো-হাওয়া-জল এর মতো গুরুত্বপূর্ণ।
হাঁটুপানির জলদস্যু
কেবলমাত্র রায়পরিবারের রথিমহারথিরা শিশুদের জন্য যা রেখে গেছেন, আজকের দিনের একজন শিশুর পরিপূর্ণ চাহিদা মেটাতে এখনো তা সক্ষম। অথচ তাকেই দুষ্প্রাপ্য করে রাখা হয়েছে কিছুসংখ্যক নিম্নরুচির লেখক প্রকাশকের বাণিজ্যকে পুষ্ট করার জন্য।
বাচ্চাকে নিয়ে বইমেলায় গিয়ে অত্যন্ত আশ্চর্য হই, তন্ন তন্ন করে খুঁজেও এসব বই কোথাও পাইনা। আর এই ঘাটতির সুযোগে বাচ্চা হাতে তুলে নেয় টম এন্ড জেরি জাতীয় অন্তঃসারশূন্য কৌতুকগুলো।
রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমরা আমাদের সরকারি হাতিগুলোকে যে কলাগাছ যোগান দিচ্ছি, তার বদলে আমরা পাচ্ছি আমাদেরকে চাপা দেবার মতো পাহাড় পরিমাণ লেদা বা বিষ্ঠা। তার বিরুদ্ধে বলার কেউ নেই। আমি নিজেও কিছুটা শিশুসাহিত্যের চর্চা করি। এসব কথা বিভিন্ন সমালোচনামূলক গদ্যে তুলে আনি বলে বহুৎ দুর্নাম আমার। পারলে একঘরে করে দেয়। এই আর কি। অথচ এগুলো আমাদের প্রতিনিয়ত বলা দরকার, বলে যেতে হবে। আমাদের সন্তানদের কাছে দায়বদ্ধ হিসেবে।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
লেখার মূল বক্তব্যটা ভালোই ছিল, তবে নানান জায়গায় অনেক মজার মজার কথা পড়লাম - উত্তর কোরিয়া আর "মহান বিপ্লবী" কিম ইল সুং বন্দনা ছাড়াও আরো অনেক কিছু। চলুক।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
প্রিয় সুবিনয়, নব্বই নয় পঞ্চাশের দশকের কিমকে দেখুন। আপনিও তখন তার প্রাপ্য সম্মান দিতে কার্পন্য করবেন না। সেসময় বিপদ্গ্রস্থ কোরিয়ার প্রতি গণচীন আর সোভিয়েত ইউনিয়নের ব্যবহার দেখুন, তখন কিমের মহত্ত্ব বুঝবেন।
আর কোন বিষয়গুলো মজার লেগেছে জানালে ভাল লাগতো।
===============================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
- ভালো লাগলো।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আহ্... ছোটবেলার কত কত কথা মনে করায়া দিলেন।
আরকিদা গাইদারের ইশকুল... মালাকাইটের ঝাঁপি... রুশ দেশের রূপকথা... আরো কতো কতো বই...
আলেক্সান্দার বেলায়েভের উভচর মানুষ পড়ছি আরো একটু বড় হয়ে।
আমার কাছে প্রগিত রাদুগার অনেক বই-ই আছে... আর বাকীগুলো সংগ্রহ করার চেষ্টায় আছি... করবো...
@এনকিদু...
অঙ্কের মজা ইয়া পেরেলম্যানের... পদার্থবিদ্যার মজার কথা অন্যজনের লেখা... নামটা এখন মনে করতে পারছিনা... বাড়িতে বইটা আছে... দুটোই খুব মজার বই... পদার্থবিদ্যার মজার কথা পড়ে পড়ে কত কত জাদু যে শিখেছি...
@ষষ্ঠ পাণ্ডব...
আপনি বলছেন এখনকার শিশুরা বড় হয়ে দেখবে অতীত ধার করা জিনিষ দিয়ে ভরা...
আপনার পোষ্টের মূল ভাবের সাথে একমত থেকেো এখানে একটু খটকা লাগলো... আমাদের রুশ বইসমৃদ্ধ অতীতো তো ধার করাই...
তাহলে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রিয় নজরুল, দুটো পয়েন্ট। এক, তখন মুক্তধারা, নওরোজ কিতাবস্তান বা চট্টগ্রাম বইঘরের মত প্রতিষ্ঠান ছিল, টাপুর-টুপুর, নবারুন বা কিশোর বাংলার মত পত্রিকা ছিল যা এখন নেই। দুই, প্রগতির অনুবাদ দেশ-কালের সীমানা ছাড়ায় যা এখনকার ডিজনীর বইগুলোতে নেই। তাই আপনার-আমার অতীত ধার করা জিনিষে ভরা নয়। তবে আপনার-আমার সন্তানদের জন্য সুসংবাদ অপেক্ষা করে নেই।
===============================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সচলায়তন শিশুসাহিত্যের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এক্ষত্রে শিশুদের উপযোগী সুন্দর আর মনকাড়া লেখা সচলায়তনে শিশুদের জন্য লিখতে পারেন সচলবৃন্দ।
খুব ভালো মানের শিশু সাহিত্য সচলায়তনে সৃষ্টি হলে সচল-প্রকাশনা নিশ্চয়ই চুপচাপ বসে থাকবে না। এ ক্ষেত্রে সচলবৃন্দ উদ্যোগী হলে ভালো হয়।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
প্রিয় জুলিয়ান, সুন্দর প্রস্তাব। কাজটা আপনিই শুরু করুন না। আপনি তো বিশুদ্ধ সাহিত্যিক।
===============================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
'মালাকাইটের ঝাঁপি' আর 'উভচর মানুষ' এর মত ততটা জনপ্রিয় নয় কিন্তু বেশ মজার আরেকটা বই ছিলো 'পেন্সিল আর সর্বকর্মার এডভেঞ্চার', আছে কারো কাছে?
আমার কাছে আছে। ইউরি দ্রুজকভের লেখা।
===============================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমিও হাত তুললাম।
বইগুলোর পিডিএফ সংস্করণ কি কারো কাছে আছে?
অবশ্য পিডিএফ সংস্করণ তো বৈধ হবার কথা নয়।
হাঁটুপানির জলদস্যু
পিডিএফ সংস্করন নেই। তবে মস্কোতে যারা আছেন তারা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন সাবেক প্রগতির কাছ থেকে এই বাংলা বইগুলোর কপিরাইট, সফটকপি ইত্যাদি কিনে নেয়া যায় কিনা। প্রগতির কাছে এখন এসব জিনিষের বিশেষ দাম থাকার কথা না।
===============================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি কিন্তু একুশে বইমেলায় গেলেই এই সব বইয়ের নব্য বাংলা সংস্করন দেখতে পাই। যদিও ছাপা আর কাগজের মান দেখলে যে কোন প্রগতি-প্রেমী দীর্ঘশ্বাস ফেলে বইটা আবার কাউন্টারে রেখে দিতে বাধ্য হবেন।
রুশদেশের উপকথা, মালাকাইটের ঝাঁপি, সার্কাসের ছেলে, কাশতানকা... এগুলোর পিডিএফ সংস্করণ বেশ সহজলভ্য এখন। দুধের স্বাদ অন্তত ঘোলে মেটানো যায়।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এটা সমাধান নয়। নতুন বই না আসলে পুরনো বই একসময় তার উপযোগীতা হারাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পিডিএফ এর লিঙ্ক দিতে পারলে খুব খুব খুব খুশি হতাম
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লেখার সাথে রুশ সাহিত্য নিয়ে পুরো একমত। পশ্চিমবঙ্গর ছেলে আমার অভিজ্ঞতাও একই রকম ছিল।
আমার পড়া প্রথম মুগ্ধ করা বই ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর-এর 'কথামালা'। অনুবাদ শুরু করেছি নিজের মত করে। ভাগ করে নিচ্ছি সচলায়তনের পড়ুয়াদের সাথে।
- একমত
নতুন মন্তব্য করুন