নিরক্ষর হোজ্জার সেই গল্পটা সবাই জানেন, যেখানে নিরক্ষর প্রতিবেশী হোজ্জাকে চিঠি লিখে দিতে বললে হোজ্জা বলেন যে তার পা ভেঙ্গে গেছে তাই তিনি চিঠি লিখে দিতে পারবেন না। হতবাক প্রতিবেশীর প্রশ্ন, হোজ্জা পা দিয়ে লেখেন কিনা। সপ্রতিভ হোজ্জার উত্তর, তার লেখা এমন বিশেষ ধরনের যে, সেটা খোদ হোজ্জা ছাড়া অন্য কেউ পড়তে পারে না। ফলে হোজ্জা চিঠি লিখলে তা হোজ্জাকেই প্রাপকের কাছে গিয়ে পড়ে দিয়ে আসতে হয়। অধম পান্ডবের লেখা হোজ্জার লেখা চিঠির মত, যেখানে এক লেখা লিখে তা ব্যাখ্যা করার জন্য তাকে আবার লিখতে বসতে হয়।
প্রকৃতির নতুন সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনের জন্য ভোট দেবার বিষয় নিয়ে লেখা আমার N7W পড়ে গুটিকয় পাঠক যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তাতে আমার মনে হয়েছে আমার বক্তব্য তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। আমার আশঙ্কাগুলো তাদের কাছে স্পষ্ট নয়। এবং আমি নিজেও সম্ভাব্য বিপদগুলোর কথা (আমার কাছে যা মনে হয়েছে) তা ভালোভাবে বলিনি। তাই এই সম্পূরক পোস্টের অবতারনা।
আমার প্রশ্ন ছিল, এই আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি কাদের? তার উত্তর কেউ পরিষ্কার ভাবে জানাতে পারেন নি। জাতিসঙ্ঘের সাথে তাদের সম্পর্ক কি? তাও স্পষ্ট নয়। এই ভোটে যে ফলাফল পাওয়া যাবে তা কিভাবে ও কিসের ভিত্তিতে মূল্যায়ণ করা হবে? ব্যাখ্যা নেই। এই ভোট কার্যক্রমের কোন রাষ্ট্রিয় অনুমোদন আছে কি? জানা নেই। ফলাফল নিয়ে কি করা হবে, তাও স্পষ্ট নয়। এই ফলাফল কি পর্যায়ে রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারবে? তাও জানতে পারিনি। ব্যয়বহুল এই কার্যক্রম ও তার বিপুল প্রচারণার অর্থায়ণ কিভাবে হচ্ছে? একেবারেই কোন তথ্য নেই। সারা বিশ্বের মানুষের অংশগ্রহনের জন্য করা এমন প্রোগ্রামের মূল বিষয়গুলো নিয়ে এত ঢাক ঢাক গুড় গুড় কেন? উত্তর নেই।
তারপরও তাদের উদ্দ্যেশ্য নিয়ে কোন সন্দেহ প্রকাশ করা যাবে না?
এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে যদি “প্রকৃতির নতুন সপ্তাশ্চর্য” নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে তাহলে এর আগের অর্থাৎ “প্রকৃতির পুরাতন সপ্তাশ্চর্যগুলি” কারা নির্বাচনের ব্যবস্থা নিয়ে ছিলেন? আসলেই “প্রকৃতির পুরাতন সপ্তাশ্চর্য” বলে কিছু কি আছে? যদি থাকতো তাহলে আপনি আমিতো সেগুলোর কথা জানতাম। কিন্তু আমরা তা জানি না, কারন অমন কিছু বাস্তবে নেই। তাজমহল, চীনের প্রাচীর, মস্কোর ঘন্টাকে কোন ভোট আয়োজন করে স্বীকৃতি দিতে হয়নি। সেগুলো আপনা থেকেই স্বীকৃতি পেয়েছে, এবং সবাই সেগুলোর কথা জানেন।
এই নির্বাচনটা নিয়ে এতদিন ধরে এত বেশী মাতামাতি চলছে যা আমাদের মত দেশে অস্বাভাবিক। দেশের জন্য জরুরী বা অত্যাবশকীয় অনেক বিষয়ে নির্বিকার গোষ্ঠীদের এসব নিয়ে কোমর বেঁধে নামতে দেখলে তার উদ্দ্যেশ্য নিয়ে শঙ্কা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
কক্সবাজার বা সুন্দরবন সেরাদের মধ্যে নির্বাচিত হলে ক্ষতিটা কোথায়? আমার বলা “আন্তর্জাতিক সম্পত্তি” কথাটার মানে কি? সেরা নির্বাচিত হলে পর্যটকদের অর্থই বা কিভাবে অন্যরা হাতিয়ে নেবে? আমি নিজে ভোট দানে বিরত থাকতে পারি, কিন্তু অন্যকে কেন ভোটদানে নিরুৎসাহিত করব? আমার এসব আশঙ্কার সপক্ষে প্রমান কি? পাঠকদের করা এসব প্রশ্নের উত্তর এখন একে একে দেবার চেষ্টা করব।
না, কক্সবাজার বা সুন্দরবন সেরাদের মধ্যে নির্বাচিত হলে আপাতদৃষ্টিতে কোন ক্ষতি নেই। তবে কারা, কেন, কিভাবে, কি উদ্দ্যেশ্যে নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে আমাদের এই উপকার করছেন তা না জানতে পারলে খটকাটা থেকেই যাবে। আয়োজকরা কি এমন কিছু করেছেন যাতে এসব খটকা দূর হয়ে যাবে? তা নয় বলেই প্রথম শঙ্কার সৃষ্টি।
আমি বলেছিলাম “আন্তর্জাতিক সম্পত্তি বা এই ধরনের কিছু ঘোষণা দিয়ে”। এটি দ্বিতীয় শঙ্কার কথা। আপনার ধানী জমিতে যদি গ্যাস পাওয়া যায় তবে আপনার জমি রাষ্ট্রের হয়ে যাবে। কিছু ক্ষতিপূরণ আপনি পাবেন, তবে জমি আর নিজের বলে দাবী করতে পারবেন না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে “রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি”র মত “আন্তর্জাতিক সম্পদ” বলে যে কিছুর উদ্ভব হবে না তা কেমন করে বলি?
একটা উদাহরন দেই, ২০০১ সালের ১লা এপ্রিল একটি মার্কিন গোয়েন্দা বিমানকে চীনের আকাশসীমায় দেখা গেলে এক চীনা জঙ্গীবিমান তাকে ধাওয়া করে। মার্কিন গোয়েন্দা বিমান চীনা জঙ্গীবিমানটিকে ধ্বংস করে দেয়। পরে চীনা বিমানবাহিনী মার্কিন গোয়েন্দা বিমানটিকে ২৪ জন ক্রুসহ হাইনান দ্বীপে নামিয়ে আনে। এসংক্রান্ত খবর ও প্রতিবেদন পড়ুন এখানে, এখানে এবং এখানে। সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য ছিল “মার্কিন বিমানটি সার্বভৌম যুক্তরাষ্ট্রীয় টেরিটোরি বলে গন্য হবে এবং চীনের তা আটক করার, তদন্ত করার বা সেখানে প্রবেশাধিকার নেই”। প্রিয় পাঠক, এমন কঠিন, বাস্তব আর সৎ যুক্তির বিপক্ষে আপনার কি কোন যুক্তি আছে? হাইনানের ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠিন, বাস্তব আর সৎ যুক্তি শেষ পর্যন্ত টেকে নি প্রতিপক্ষ চীন বলে। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ হলে কি হত তা সবাই বুঝতে পারেন। এখন কি বুঝতে পারছেন কিভাবে আমাদের সম্পদ প্রয়োজন হলে “আন্তর্জাতিক সম্পদ” হতে পারে?
বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের নামে যা কিছু হয় সে সব এখানকার সম্পদ ব্যবহার করে মুনাফা লুট করা ছাড়া কিছু হয় না। তার বড় প্রমান আমাদের তেল-গ্যাস এবং মোবাইল ফোন। কক্সবাজার বা সুন্দরবনের ক্ষেত্রে এর ব্যতয় হবে তা ভাবাই দুরাশা। বলতে পারেন তবু কিছু লোকের কিছু দিনের জন্য চাকুরীতো হবে। তবে সম্ভাব্য মোট ক্ষতির পরিমান যদি বিপুল হয়, তাহলে অমন চাকুরীর প্রয়োজন নেই। সেই সম্ভাব্য বিপুল ক্ষতিটা কি এবার তার কথা বলি।
আফ্রিকার, বিশেষতঃ পূর্ব-আফ্রিকার অনেক দেশের যুদ্ধ বা গৃহযুদ্ধের পেছনে একটা কারন হচ্ছে তার বনজ সম্পদ। বনজ সম্পদের লুটের জন্য সুযোগ পেলে সুন্দরবনের দিকে কেউ লোভের হাত বাড়াবে না এটা হতে পারে না। তার উপর সুন্দরবনের নীচে এবং এর উপকূলে তেল-গ্যাস পাওয়া যাবার সম্ভাবনাও প্রচুর। সুতরাং বাগে পেলে “প্রজেক্ট সুন্দরবন” মন্দ লাভ দেবে না।
কক্সবাজারে লাভের পরিমান সুন্দরবনের চেয়ে বহুগুন বেশী। এক, সেখানে পর্যটকদের জন্য বহুজাতিক কোম্পানীর বিলাসবহুল হোটেল তৈরী হলে তার আয়ের সিংহভাগ দেশের বাইরে চলে যাবে। যেভাবে আর দশটা বহুজাতিক কোম্পানী তাদের সমূদয় মুনাফা বাংলাদেশের বাইরে নিয়ে যায়।
দুই, কক্সবাজারের উপকূলেও তেল-গ্যাস পাওয়া যেতে পারে। সেটা পেলে বিনিয়োগকারীদের গোটা বিনিয়োগ তুলে আনতে এক বৎসরও লাগবে না।
তিন, কক্সবাজারের সৈকতে Black Sand পাওয়া যায় যা Zircon, Ilmenite, Rutile, Lucoxene, Anatase ও Brookite সমৃদ্ধ। এটি বুয়েটের মেটেরিয়াল এণ্ড মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক আ, সা, ও, কারনীর গবেষনায় প্রমানিত। কক্সবাজারের কলাতলীর কাছে বাংলাদেশ পারমানবিক শক্তি কমিশনের একটি ছোট কেন্দ্রও আছে এসব সংগ্রহের জন্য। জিরকনিয়াম ও টাইটানিয়ামের মত মূল্যবান ধাতুসমৃদ্ধ এসব খনিজের গুনাগুন বিস্তারিত জানার জন্য আগ্রহী পাঠক Wikipedia দেখতে পারেন। আমি শুধু এইটুকু জানাবো যে, হালকা অথচ শক্তিশালী হবার দরুন টাইটানিয়ামের অ্যালয় জেট ইঞ্জিন, মিসাইল বা নভোযান তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। সহজদাহ্যতা গুনের জন্য জিরকনিয়াম
BLU-97/B Combined Effects Bomb তৈরির অত্যাবশকীয় উপাদান। কোনভাবে এসব খনিজের বড় ধরনের ভান্ডার কক্সবাজার এলাকায় পাওয়া গেলে সেগুলো উত্তোলনের জন্য আন্তর্জাতিক নানা মহল থেকে লোভ ও চাপ আসবে। এসব খনিজ উত্তোলন করতে হবে Open Pit বা Hydraulic Mining পদ্ধতিতে, যা পরিনতিতে ভয়াবহ পরিবেশ দূষন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনবে।
চার, ভৌগলিক অবস্থানের দিক দিয়ে কক্সবাজারের কৌশলগত (Strategic) গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশের সাথে মায়ানমারের সীমান্ত এখানে। এটিকে নিয়ন্ত্রন করা গেলে বাংলাদেশের তিনদিকে ভারত ছাড়া আর কিছু থাকবে না। কক্সবাজারের উপর দিয়ে এশিয়ান হাইওয়ের একটি শাখা যাবার কথা যা বাংলাদেশকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে যুক্ত করবে। এই সড়কটি অবশ্যই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়াবে এবং পণ্য আমদানীর জন্য বাংলাদেশের অতিমাত্রায় ভারত নির্ভরতা কমাবে। সুতরাং কক্সবাজারকে নিয়ন্ত্রন করা গেলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথের সম্ভাব্য সড়ক যোগাযোগকেই নিয়ন্ত্রন করা যাবে। কক্সবাজারের উপকূলে নৌঘাঁটি স্থাপণ করা গেলে ভারতের গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ভূমি থেকে ভুমিতে নিক্ষেপনযোগ্য ক্ষেপনাস্ত্রের আওতায় বা দ্রুত বিমান হামলার আওতায় চলে আসবে। আর নৌঘাঁটি স্থাপণের জন্য প্রয়োজনীয় বৈধতা দেবার জন্য “হানা” বা “সোফা” জাতীয় চুক্তিতো আছেই। দরকার পড়লে অনুরূপ নতুন চুক্তিও করা যাবে।
দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে সে সম্পর্কে সতর্ক হওয়াই বুদ্ধিমানের লক্ষন। সতর্ক না হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে গেলে আফসোস করা বোকামীর লক্ষন। নিজ দেশ, নিজেদের জীবন আর সম্পদ নিয়ে উদাসীন হবার বা বোকামী করার কোন সুযোগ কি আমাদের আছে?
N7W নিয়ে আমি কাউকে ভোট দিতে বা না দিতে বলিনি। আমি শুধু আমার সংশয় ও শংকার কথা আগে এবং এবার বললাম। আমার করা প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর যদি কেউ দিতে পারেন তাহলে আমার সংশয় কেটে যাবে, শংকারও তখন কোন কারন থাকবে না। এক্ষেত্রে আপনি ভোট চাইতেই পারেন। সেটি আপনার নাগরিক অধিকার। আমিও আমার সংশয় ও শংকার কথা বলতে পারি। সেটি আমার শুধু নাগরিক অধিকারই নয়, নাগরিক দ্বায়িত্বও বটে।
মন্তব্য
অনেক ধন্যবাদ আপনার গুরুত্বপূর্ন পোষ্টের জন্য। আমি পুরো বিষয় সম্পর্কে অবগত না থাকলেও সুন্দরবনের বিষয়টি সম্পর্কে জানতাম তাই আমার বন্ধুরা বলার পরেও ভোট দেই নাই। তবে কাউকে এই বিষয়ে সতর্কও করি নাই।
আপনার এবং সচলায়তনের অনুমতি সাপেক্ষে আমি কি এই পোষ্টটি আমার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারি?
কল্পনা আক্তার
.......................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
লেখাটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে চাইলে আমার আপত্তি নেই। আমি যতদূর বুঝি এব্যাপারে সচলায়তন কর্তৃপক্ষেরও আপত্তি থাকার কথা নয়।
===============================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি অসম্ভব মুগ্ঘ হলাম আপনার ব্যতিক্রমী বিশ্লেষণ পড়ে। এইভাবে ভোটদানের মাধ্যমে সপ্তাশ্চর্য নির্ধারণ করার বিষয়টি নিয়ে আমি দ্বিধায় ছিলাম, যে প্রক্রিয়ায় ভোটদান করা হচ্ছে- সেটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও আমার মধ্যে প্রশ্ন ছিলো। এটা হলে কী হবে তাও এখন পর্যন্ত জানি না।
কিন্তু আপনি যেভাবে উদাহরণ দিয়ে কিছু শঙ্কার কথা বললেন, সেগুলো আসলেই উড়িয়ে দেওয়ার মতো না। এই পৃথিবীতে তলে তলে কতো কিছুই তো হয়, সব কি আমরা জানি? আমরা কি উপরের প্রলেপ দেখেই মন্তব্য বা সিদ্ধান্ত নিই না?
হয়তো সব শঙ্কাই অমূলক। কিন্তু শঙ্কাগুলোকেও মাথায় রাখা উচিত। না হলে কে কোনদিকে কাপড় ধরে টান দিবে- বুঝে উঠতে উঠতেই দেখবো শরীর থেকে কাপড় হাওয়া!
-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!
আসলেই তো! এভাবে কখনো ভেবে দেখিনি! এইসব বিষয়ে আমার খুব একটা জানা নেই, তাই আপনার প্রশ্নগুলোর জবাব আমি দিতে পারলাম না। কিন্তু আশা করব কেউ না কেউ হয়তো আপনার সাথে সাথে আমার শংকা-ও দূর করে দেবে।
লেখা ভালো লেগেছে। আগের পোস্টটা পড়িনি, কিন্তু এটা পড়ে বুঝতে কোন সমস্যাই হয়নি! ধন্যবাদ আপনাকে।
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো। কক্সবাজার যদি বিশ্বে সুপরিচিত হয় এবং আমরা কিছু ট্যুরিস্ট পাই, এতে আমি কোন খারাপ দিক দেখি না। হয়তো বিদেশে অনেক টাকা যাবে; কিন্তু দেশেরও উন্নতি হবে।
আপনার মত আমিও জানতে চাই এ প্রশ্নগুলোর সঠিক জবাব কী?
তবে আমি কিন্তু ইতোমধ্যে ১৫-২০টা ভোট দিয়ে ফেলছি... কী আর করা??
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
লেখাটা ভালো, কিন্তু এর প্রভাব কি আদৌ 'বাঙ্গালির গনজোয়ারে' পড়বে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান।
অনেক দিন আগেই সপ্তাশ্চার্য নির্বাচনের এই আশ্চর্য সাইট নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম বন্ধু মহলে, অনেকেই বললো আমি বেশি বুঝি। এত বড় একটা ভুল কি সরকারের তরফ থেকে কেউ করতে পারে - এ প্রশ্নটা রেখেছিলো তারা।
জানি না, এই ক্ষেত্রে সরকার ঠিক না আমি ( এবং আপনি, আপনারা যারা ভাবেন এটা ধাপ্পাবাজি ), তবে বাংলাদেশ সরকারের উপর এতখানি অগাধ ভরসা আর বিশ্বাস যারা রাখতে পারে, তাদের যে অচিরেই জাদুঘরে রাখার সময় হয়ে এসেছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
প্রিয় সবজান্তা, আপনি সঠিক। বাংলাদেশের কতজন মানুষ সচলায়তন পড়েন? হয়তো লাখে একজন। তার মধ্যে কত জন এই লেখা পড়বেন? হয়তো একশত জন। তার মধ্যে কত জন এই কথা অন্যকে বলবেন? হয়তো পাঁচ জন। সর্বমোট একশত পাঁচ জন।
কিন্তু এব্যাপারে আরো ভালো বোঝেন এমন মানুষের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। তবে দুর্জনেরা যখন কোন বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে আগায় তখন পাবলিক ভোট দিল কি না দিল তাতে বিশেষ কিছু আসে যায় না। গোটা ভোটের বিষয়টিতে "মিডিয়া ক্যু" ধরনের কিছু করে নিজেদের কাঙ্খিত স্থানটিকে জিতিয়ে দেবার অবাধ সুযোগ আছে। তাই তারা চাইলে কেউ ভোট না দিলেও "কক্সবাজারে"র জিতে যাওয়া ঠেকাতে পারবেন না।
আমাদের কাজ হচ্ছে নিজের, দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য সৎমনে যা ভাল বুঝি তা করা, সতর্ক থাকা।
===============================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনার অবজারভেশনটা কি এরকম যে, এই নাম না জানা কোন গোষ্ঠীর আয়োজনে চালিত জরিপে যদি বাংলাদেশের কক্সবাজার আর সুন্দরবন ভালো অবস্থান পায়, তাহলে বিদেশী বেনিয়া শক্তি এখানে এসে ব্যবসা করে দেশজ সম্পদ লুটেপুটে নেবে? মানে যেমনটা হচ্ছে আমাদের তেলসম্পদের বেলায়?
আমার মনে হয়না এই "প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া" আর "বিদেশী লুটপাট"র সাথে তেমন কোনো কোরিলেশন আছে ...কারণ, আসলেই যদি বেনিয়াদের চোখ কক্সবাজারের উপর পড়ত তাহলে এট কষ্ট করে দু'তিন বছর ধরে অনলাইন ভোটিং করিয়ে তারপর কক্সবাজার (অথবা যে জায়গাগুলো নির্বাচিত হবে) সেগুলোর দিকে হাত বাড়াতো না ...তারা তাদের নিয়মে সরাসরিই এখানে ব্যবসা করতে চলে আসত ,,,যেমনটা অনেক জায়গাতেই করা হচ্ছে
আবার যদি ভাবি যে কক্সবাজারের নির্বাচিত হওয়া উচিত না কারণ তাতে এই জায়গাটা বেনিয়াদের নজরে পড়বে, সেটাও খুব একটা শক্ত যুক্তি হয়না ,,, কক্সবাজার একটা ওপেন জায়গা,,, এটা লুকোনো কিছু না
আমি অবশ্য এটাও খুব একটা নিশ্চিত না যে আমাদের দেশ আর ভিয়েতনাম ছাড়া আর কোথাও এই জরিপট তেমন সাড়া ফেলেছে কিনা?
কে বা কারা একটা জরিপের সাইট খুলে বসেছে ,,, বিশ্বজুড়ে আমার মতো কিছু ইন্টারনেট গীকই হয়ত সেটা নিয়ে মাতামাতি ,,, এর মাঝে দু'চারজন বোকাসোকা সাংবাদিকও হয়ত আছেন যারা কিছু না বুঝেই নিজ নিজ পত্রিকায় সেটা ছেপে দিয়েছেন ,,,গেল ছড়িয়ে
আমার মনে হয় এটা নিয়ে তেমন মাতামাতিরও কিছু নেই, আবার শঙ্কিত হবারও কিছু নেই
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
নতুন মন্তব্য করুন