পাণ্ডবের চীন দর্শন-০৫

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: শনি, ১০/০১/২০০৯ - ২:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হান, হুই, মেঙ, ৎস্যাঙ

দুনিয়ার সবচে’ বেশি লোক কোথায় থাকে? এই প্রশ্নের উত্তর সবার জানা, চীনে। কিন্তু চীনে কত জাতির মানুষ আছে? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের বেশির ভাগ জনের পরিষ্কার জানা নেই। আমাদের সাধারণ ধারণা চীনে চীনারা থাকে। এমন কী চীনে গেলেও প্রথম প্রথম এই ধারণাই হয় যে চীনে শুধু এক জাতির মানুষই থাকে। একটু ভাল করে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় চীন বহু জাতির দেশ। সরকারী হিসেবে চীনে কম পক্ষে ছাপ...হান, হুই, মেঙ, ৎস্যাঙ

দুনিয়ার সবচে’ বেশি লোক কোথায় থাকে? এই প্রশ্নের উত্তর সবার জানা, চীনে। কিন্তু চীনে কত জাতির মানুষ আছে? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের বেশির ভাগ জনের পরিষ্কার জানা নেই। আমাদের সাধারণ ধারণা চীনে চীনারা থাকে। এমন কী চীনে গেলেও প্রথম প্রথম এই ধারণাই হয় যে চীনে শুধু এক জাতির মানুষই থাকে। একটু ভাল করে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় চীন বহু জাতির দেশ। সরকারী হিসেবে চীনে কম পক্ষে ছাপান্ন জাতির বাস। এই ছাপান্ন জাতিকে দেখে পার্থক্য করার এলেম আমার নেই। তবে কিছু কিছু জাতিকে অন্যদের থেকে সহজেই আলাদা করা যায়।

চীনের প্রধাণ চারটি জাতি হচ্ছে হান (চীনা বলতে যাদেরকে আমরা বুঝি), হুই (পশ্চিম ও মধ্য-পশ্চিমের মুসলিমরা), মেঙ (মঙ্গোলিয়ান) এবং ৎস্যাঙ (তিব্বতী)। হানরা সংখ্যায় চীনা জনগণের নব্বই শতাংশের বেশি বলে চীনকে এক জাতির দেশ বলে মনে হয়। আবার চেহারা-সুরতে হুইদেরকে হানদের থেকে আলাদা করা অসম্ভব। তাই আমার মত বিদেশীদের বিভ্রান্তি আরো বাড়ে। মেঙ আর ৎস্যাঙ-দের চেহারা, গায়ের রঙ হান-হুইদের থেকে একেবারে আলাদা, তাই এদের সহজে চেনা যায়। মেঙরা হান-হুইদের তুলনায় অনেক ভোঁতা চেহারার। ৎস্যাঙ-রাও অনেকটা ভোঁতা চেহারার (বাজে কথা বললাম, মাফ করবেন)। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের রঙ-চেহারা অনেকটাই ইন্দোচীনাদের মত। সেটা আপনি দেশ থেকে কুনমিঙ নামলেই টের পাবেন। উত্তর-পূর্বের জ়িলিন, হারবিনের মানুষরা আবার অনেকটা কোরিয়ানদের মত। পশ্চিমের শিনজিয়াঙ-এর মানুষরা দেখতে পুরোপুরিই মধ্য-এশিয়ানদের মত। উত্তর হেলোঙজিয়াঙ-এর মানুষরা আবার ককেশিয়ানদের মত। চেহারার সাথে সাথে গায়ের রঙ, উচ্চতা, চোখের আকার আর রঙ, ঠোঁটের গড়নও বদলে যায়। তা যাকগে, আমি তো আর চীনা জাতিদের নিয়ে গবেষণা করতে বসিনি, আমি বসেছি আমার অভিজ্ঞতার কথা বলতে। তাই অতসব খুঁটিনাটিতে যাবনা।

বহু জাতির দেশে ঘোরার অন্যতম আনন্দ হচ্ছে আপনি যতই পথ যাবেন ততই দেখতে পাবেন মানুষ, ভাষা, পোষাক, খাবার, কালচার আপনার চোখের সামনে একটু একটু করে পালটে যাবে। চীনে এই আনন্দ ভারতের মত অত বড় মাত্রায় না হলেও অনেকটাই পাবেন। আমি দেখেছি এমন কী এক প্রদেশের এক মাথা থেকে আরেক দিকে যেতে যেতে ল্যাণ্ডস্কেপ থেকে শুরু করে প্রায় সব কিছুই পালটে গেছে।

হান ছাড়া চীনের অন্য তিনটি প্রধাণ জাতি অধ্যুষিত প্রদেশগুলোতে গেলে আপনি একটি অন্য ধরণের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবেন। যেমন মেঙ অধ্যুষিত নেঈ মঙ্গোল, হুই-উই্যগুর অধ্যুষিত Shanxi, Shaanxi, নিঙশিয়া, গ্যানসু, চিঙহাই বা শিনজিয়াঙ আর ৎস্যাঙ অধ্যুষিত শিঝ্যাঙ (তিব্বত) গেলে দেখতে পাবেন সেখানেও হানদের ছড়াছড়ি, তাদের দাপট। রাষ্ট্রভাষা ম্যাণ্ডারিন বলে স্থানীয় ভাষা কোনঠাসা, সাথে সাথে স্থানীয় মানুষরাও। সরকারী নানা স্কীম-স্কলারশীপ-প্রজেক্টের ধাক্কায় কোটি কোটি হান ঘর ছেড়ে ঐসব প্রদেশে ঠাঁই গেড়েছে। ফলে যতই দিন গেছে ঐসব প্রদেশের ডেমোগ্রাফিক প্রোফাইলে হানদের অনুপাত ক্রমেই বেড়েছে। উচ্চ শিক্ষা-চাকুরী-ব্যবসা-বাণিজ্য-রাজনীতি সব ক্ষেত্রে হানদের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের দাবী এবং শক্তিও বাড়ছে। কম করে হলেও দুইশত বৎসর ধরে এই ধাক্কা চলছে। অত্যন্ত কুন্ঠার সাথে বলতে হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম গেলেও আমার একই ধরণের অনুভূতি হয়। মাতৃভাষা আন্দোলনের দেশের মানুষ হিসেবে আমি অবাক হয়ে দেখেছি ম্যাণ্ডারিন ভাষার সর্বগ্রাসী আগ্রাসণে বাকি ভাষাদের কালের গর্ভের দিকে রওয়ানা হতে। অথচ ঐসমস্ত ভাষা একেবারেই ভিন্ন ঘরানার, ভিন্ন বর্ণমালার, ভিন্ন ঐতিহ্যের এবং সমৃদ্ধ। দুইশত বৎসর ধরে এথনিক ক্লিনজিং চালিয়ে হুই-দের নব্বই শতাংশ মানুষকে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নকে এক কালে বলা হত “সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ”, আর একে আমরা কী বলব? “নৃ-তাত্ত্বিক সাম্রাজ্যবাদ”!

চীনের ছাপান্ন জাতির বেশির ভাগের অবস্থাই আমেরিকার রেড ইণ্ডিয়ান বা অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের তুলনায় ভালো কিছু বলে মনে হয় না। সরকার এদের এবং এদের সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক পদক্ষেপ নেয় ঠিকই, কিন্তু আরো হাজারোটা কারনে এদের অস্তিত্ব আজ সংকটের মুখে। একটা সময় হয়তো আসবে যখন চীনের ছাপান্নর মধ্যে পঞ্চাশটা জাতিই নৃতাত্ত্বিক জাদুঘরে ঠাঁই পাবে।

চীনারা কেমন মানুষ? চীনাদের সাথে ডীল করতে গেলে আমাদের দেশের সবাই বলে যে “হুঁশিয়ার”। অবশ্য আমার দেখা মত চীনারা এশিয়ার অন্য অনেক জাতির চেয়ে নম্র, ভদ্র, পরিশ্রমী, অনুগত, সময়ানুগ এবং সৎ। এর মানে এই নয় যে আমি “হুঁশিয়ার” বলি না। বরং আমি নিজেই যথেষ্ঠ “হুঁশিয়ার”। ভালো-মন্দ মিলিয়েই মানুষ, চীনারাই বা তার ব্যতিক্রম হবে কেন? সহকর্মী হিসেবে, সাব-অর্ডিনেট হিসেবে চীনারা অসাধারণ। উপরওয়ালা চীনা হলে কেমন হবে সে অভিজ্ঞতা অবশ্য আমার নেই। চীনাদের আতিথেয়তা অতুলনীয়। দরিদ্র চীনাদের মধ্যে আবার আতিথেয়তার মাত্রা বেশ বেশি। তারা সাধ্যাতীত করার চেষ্টা করে, একেবারে আমাদের মত।

এশিয়ার আর দশটা দেশের মত চীনারাও বাবা-মা-ভাই-বোন নিয়ে গঠিত পরিবার নির্ভর। প্রাপ্তবয়ষ্ক ছেলে-মেয়েরা কাজের জন্য বা বিয়ে করে ঘর ছাড়লেও চীনা নববর্ষ, শ্রম দিবস ইত্যাদি এমন সব পার্বণে পরিবারের বাকি সবার সাথে মিলিত হয়। স্বল্প আয়ের শ্রমিককেও দেখেছি বাবা-মায়ের সাথে চীনা নববর্ষ পালন করার জন্য চড়া দামের ট্রেনের টিকিট কেটে হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে। সকল বৃদ্ধের জন্য বৃদ্ধাশ্রম জাতীয় কিছু আছে বলে শুনিনি। কর্মে অক্ষম বৃদ্ধ বাবা-মা’রা এখনো সন্তানদের সাথে বা তাদের সহযোগিতায় পরিবারের মধ্যেই থাকেন। সন্তানদের সাহায্য করার উপায় বা ইচ্ছে না থাকলে কী হয় তা আরেক পর্বে বলব। ব্যক্তিমালিকানা স্বল্প পরিসরে চালু হওয়ায় পৈত্রিক সম্পত্তির ধারণা আবার চালু হচ্ছে। ফলে একটু বড় পরিসরে পরিবারের ধারণা (চাচা-ফুফু-মামা-খালা আর তাদের সন্তান-সন্ততি) উঠতি ধনীদের মধ্যে চালু হচ্ছে। সেখানে দেখা যায় বাবা কোম্পানীর প্রেসিডেন্ট, মা ম্যানেজিং ডিরেকটর, ছেলে-মেয়ে ডিরেকটর বা ম্যানেজার।

চীনে জাতিগত বিদ্বেষ দেখতে পাইনি। তবে হানদের কে তাদের জাতি পরিচয়ের ব্যাপারে গর্ব করতে দেখেছি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাথে ভালোভাবে মেশার সুযোগ হয়নি তাই তাদের মনোভাবের কথা বলতে পারবোনা। তবে চীনা পরিচয় নিয়ে কাউকে খেদ করতে দেখিনি। জাতি নির্বিশেষে এদের দেশপ্রেম অসাধারণ। এমন কী ভিন্ন দেশে কয়েক পুরুষ ধরে থাকা চীনাদের প্রতি মূল চীনাদের ব্যবহার আন্তরিক। আমাদের মত পরিচয় হতে না হতেই “বাড়ী কোন ডিষ্ট্রিক্ট?” এধরণের প্রশ্ন করে না।

স্বর্গ বলে আদৌ কিছু আছে কী না জানি না। পাণ্ডব কখনো সেই অদেখা স্বর্গে যাবে কী না তাও জানি না। তবে এই অধম পাণ্ডব চীনের রাস্তা-ঘাটে স্বর্গের ফুল দেখেছে। আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয় চীনের সবচে’ সুন্দর জিনিষ কী? আমি নির্দ্বিধায় উত্তর দেব চীনের শিশুরা। সুন্দর স্বাস্থ্য, পুতুলের মত চেহারা, ফোলা ফোলা লাল গাল আর ছোট ছোট চোখের চীনা শিশুদের আমার কাছে স্বর্গের ফুল ছাড়া আর কিছু মনে হয়নি। হান-হুই-মেঙ-ৎস্যাঙ যে জাতিরই হোক এদের শিশুদের দিকে সারা দিন তাকিয়ে থাকলেও আশ মেটে না। একবার নিঙবোতে সকাল বেলা রাস্তার পাশের নীচু দেয়ালের ওপাশে দেখি এক কিণ্ডারগার্টেন। কয়েকশ’ বাচ্চা সাদা শার্ট, লাল শর্টস/স্কার্ট পরে গলায় লাল স্কার্ফ বেঁধে পিটি করছে। আমি অপলক চোখে সেই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে লাগলাম। আমার চীনা সহকর্মী জিজ্ঞেস করল, “কী দেখছ অমন করে”? নিচু স্বরে আমি বললাম, “স্বর্গের ফুল”।


মন্তব্য

ইফতেখার এর ছবি

ভাই পান্ডব, শুধু লিখেই যাচ্ছেন, ছবি দিচ্ছেন না, আমরা আর কতকাল সহ্য করব।

যাউকগা, মজা পাচ্ছি আপনার লেখায় অনেক।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ছবির ব্যাপারে প্রথম কৈফিয়ত, আমার ক্যামেরা নাই আর আমি ছবি তুলতে জানি না। দ্বিতীয় কৈফিয়ত, গোড়ার দিকে ধার করা ক্যামেরা নিয়ে কয়েকবার গিয়েছিলাম। তখন শুধু এর-তার সাথে আমার ছবি তোলা হয়েছিল। ঐসব ছবি পোস্ট করে পাবলিকের মার খাবো নাকি?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রণদীপম বসু এর ছবি

পাণ্ডব দা, চলতে থাকুক... চলুক

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মুস্তাফিজ এর ছবি

চলতে থাকুক
চীনারা বাচ্চাদের অসম্ভব পছন্দ করে কথাটা সত্য, বেশী বাচ্চা নেয়ার নিষেধাজ্ঞার জন্যই কি?

...........................
Every Picture Tells a Story

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

সিঅআইএস-ভুক্ত দেশগুলোয় একটা ধারণা ব্যাপকভাবে প্রচারিত ও প্রচলিত যে, মেইড ইন চায়না মানেই বাজে মাল। অনেক কৌতুকও শুনেছি এই বিষয়ে। একটা মনে পড়ছে:
"ক'দিন আগে বিয়ে করলাম এক জাপানি মেয়েকে। বাসায় নিয়ে এসে ভালো করে দেখি - ভেজাল মাল। মেয়েটা চায়নিজ।"

এমন ধারণার ভিত্তি আছে কি? থাকলে কী সেটা?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চীনারা নিজেদের জন্য যখন কোন কিছু বানায় বা আমদানী করে তখন সেরা জিনিষটাই বানায়/আমদানী করে। রপ্তানীর জন্য যা কিছু বানায় সেখানে "যত গুড়, তত মিষ্টি" পদ্ধতি অনুসরণ করে। সিআইএস দেশের মানুষরা সম্ভবতঃ এই উপমহাদেশীয়দের মত বা আরবদের মত দাম নিয়ে বেশি ঝোলাঝুলি করে (আপনি ভাল বলতে পারবেন)। তাই চীনারা তাদের "অল্প তেলে মচমচে ভাজা" ধরণের জিনিষ গছিয়ে দেয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আমার বস (চাইনিজ) অসম্ভব ভাল একজন মানুষ। বিভিন্নজনের কাছে যখন বাজে বসের গল্প শুনি, তখন নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয়। আবার আমার টীমে যেসব চাইনিজ কাজ করে, ওরাও খুব ভাল। যেটা করতে বলা হয়, কিছু সীমাবদ্ধতার (মূলত ভাষাগত) ভেতরেও তা শেষ করে ওরা। তবে কিছু খারাপের দেখাও পেয়েছি, তবে সেটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ তো আপনিই বলে দিয়েছেন, ভাল-মন্দ মিলিয়েই মানুষ।

এক কথায়, অপূর্ব লেখা, পান্ডব'দা। আপনি এই সিরিজটা থামাবেন না, যতদূর সম্ভব চালিয়ে যান, এবং শেষ হলে অখন্ড আকারে আবার পড়তে চাই।

সর্বহারা [অতিথি] এর ছবি

"সোভিয়েত ইউনিয়নকে এক কালে বলা হত “সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ”, আর একে আমরা কী বলব? “নৃ-তাত্ত্বিক সাম্রাজ্যবাদ”! "

--"সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ" কথাটার অর্থ বুঝলাম না।
আমার জানামতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিলো তৎকালীন বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শিবিরের বিপরীতে স্বাধীনতাকামী পরাধীন রাষ্ট্রগুলোর আশ্রয়স্থল।
ষাটের দশকের পরবর্তী প্রেক্ষাপট অবশ্য ভিন্ন। ততোদিনে সোভিয়েত ইউনিয়ন শোধনবাদী নীতির পথে ধাবিত হয়। তবে "সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ"-কথাটি কি অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে বা হয়ে থাকে ব্যপারটা বুঝিয়ে বললে খুশি হতাম।

পান্ডবদা, বুয়েটের সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ব্যপারটি (Evening Program ও শিক্ষক পোষ্য কোটা) নিয়ে আপনার লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এবং আন্দোলনের সফলতার পিছনে ছাত্রদের মাঝে সচেতনতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আপনার লেখাটির কাছে আমরা ঋণী।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

“সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ”-এর বিষয়টি এই পোস্টটির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে এখানে আলোচনা করছি না। সময় করতে পারলে আপনাকে মেইল করে বিষয়টি জানাবো। তবে আপনি চাইলে স্তালিন পরবর্তী সোভিয়েত আমল নিয়ে বাংলাদেশ বা ভারতের পিউরিটান মার্কসীয় ধারার বিশ্লেষকদের লেখা পড়তে পারেন। আশা করি তাতে বিষয়টি আপনার কাছে পরিষ্কার হবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

দারুণ হচ্ছে।

সহকর্মী হিসেবে, সাব-অর্ডিনেট হিসেবে চীনারা অসাধারণ। উপরওয়ালা চীনা হলে কেমন হবে সে অভিজ্ঞতা অবশ্য আমার নেই।

চীনা সহকর্মী বা সাব-অর্ডিনেটদের নিয়ে আমার মিশ্র অভিজ্ঞতা আছে। আমি যাদের সাথে কাজ করেছি তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ভীষণ ফাঁকিবাজ ছিলো, আর টীমওয়ার্কে এদের একেবারেই উৎসাহ ছিলো না! উপরওয়ালা হিসেবে আমি পাইনি, তবে আমার ভারতীয় বন্ধুর সে ব্যাপারে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা আছে।

মানুষদের নিয়ে লেখা পেয়ে গেলাম চাইতে না চাইতেই! এর পরের অনুরোধ অবশ্যই সঙ্গীত নিয়ে। দেঁতো হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাঙালী বসতে দিলে খাইতে চায়, খাইতে দিলে শুইতে চায়। চীনা মানুষ দেখেছি তাই মানুষের কথা লিখতে পেরেছি। চীনা গান আর কতটুকু শুনেছি। আমার শোনা বেশিরভাগ চীনা গান কোকো লী-র। আর কোকো লী-র গান সারা দুনিয়ায় পাওয়া যায়। পুরো পোস্ট সম্ভব নয়, পরবর্তী কোন পোস্টে আংশিক ভাবে গানের কথা লেখার চেষ্টা করব।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

s-s এর ছবি

বাহ্! খুব ঝরঝরে বর্ণনা, একেবারে চীনে রেস্তঁরার ফ্রাইড নুড্যলসের মতো! চলুক

জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা

সিরাত এর ছবি

কি বিশাল, বৈচিত্র্যময় এই পৃথিবী!

অতিথি লেখক এর ছবি

চীনাদের নিয়ে এত অসাধারণ বিশ্লেষণধর্মী লেখা আমি আর কোথাও পড়িনি। পান্ডব'দা কে অনেক ধন্যবাদ এরকম একটা চমৎকার লেখা উপহার দেওয়ার জন্য।
এই সিরিজের প্রথম পর্ব থেকে এই পঞ্চম পর্ব পর্যন্ত এক বসায় পড়ে ফেললাম। এখন একটু ক্ষান্ত দিচ্ছি। পরবর্তী বৈঠকে এই সিরিজের বাকি লেখাগুলো পড়ে শেষ করব বলে আশা রাখি। দেঁতো হাসি

রেজওয়ান২২

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।