পাণ্ডবের চীন দর্শন-০৮

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: মঙ্গল, ০৭/০৪/২০০৯ - ৩:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভিতরে-বাহিরে, অন্তরে-অন্তরে

২১শে মার্চে বৎসরের প্রথমবার সূর্য বিষুবরেখা পার হবার (Vernal Equinox) দু’সপ্তাহ পর, অর্থাৎ উত্তরায়ণের তৃতীয় সপ্তাহের শুরুর তিন দিন (৪, ৫, ৬ এপ্রিল) হচ্ছে “চিঙ মিঙ জায়ে” বাংলায় মোটামুটি বলা যেতে পারে “স্বচ্ছ উজ্জ্বলতার দিন”। এ’সময় চীনের বেশির ভাগ জায়গায় দিনগুলো যে স্বচ্ছ-উজ্জ্বল সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। প্রাচীন চীনে “চিঙ মিঙ জায়ে”-তে বনভোজন করা হত, ঘুড়ি ওড়ানো হত, গ...ভিতরে-বাহিরে, অন্তরে-অন্তরে

২১শে মার্চে বৎসরের প্রথমবার সূর্য বিষুবরেখা পার হবার (Vernal Equinox) দু’সপ্তাহ পর, অর্থাৎ উত্তরায়ণের তৃতীয় সপ্তাহের শুরুর তিন দিন (৪, ৫, ৬ এপ্রিল) হচ্ছে “চিঙ মিঙ জায়ে” বাংলায় মোটামুটি বলা যেতে পারে “স্বচ্ছ উজ্জ্বলতার দিন”। এ’সময় চীনের বেশির ভাগ জায়গায় দিনগুলো যে স্বচ্ছ-উজ্জ্বল সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। প্রাচীন চীনে “চিঙ মিঙ জায়ে”-তে বনভোজন করা হত, ঘুড়ি ওড়ানো হত, গাছের চারা লাগানো হত, ফসল বোনা হত, নাচ-গান-খাওয়া-দাওয়া তো ছিলই আর তার সাথে রঙিন ডিম ভেঙে নতুন জীবন শুরু করা হত। তাতো হবেই - এ যে বসন্ত কাল। প্রকৃতি নিজেই যে আজ নতুন জন্ম পাচ্ছে।

আজকের চীনে “চিঙ মিঙ জায়ে” আর আগের মত “স্বচ্ছ উজ্জ্বলতার দিন” হিসেবে পালিত হয় না, বরং পালিত হয় “সমাধি পরিষ্কার করার দিন” (Tomb Sweeping Day) হিসেবে। চীনাদের প্রচলিত বিশ্বাস এই দিনগুলোতে পূর্ব পুরুষদের আত্মা নিজের পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরে আসে। তাই এই দিনগুলোতে চীনারা পূর্ব পুরুষদের সমাধি পরিষ্কার করেন, শুকনো খাবার আর মদের অর্ঘ্য দেন, বাড়িতে পরিবারের সবাই মিলে ভোজের আয়োজন করেন যেখানে অবশ্যই মুরগীর ডিম থাকবে, আগরবাতি (ধূপকাঠি) জ্বালানো হয়, ঘুড়ি ওড়ানো হয়। চীনাদের প্রচলিত বিশ্বাস এতে সামনের বৎসর ভালো যাবে, ভালো ফসল হবে, মায়েদের কোল ভরে উঠবে নতুন শিশুতে।

“চিঙ মিঙ জায়ে”-তে পূর্ব পুরুষদের আত্মা সত্যি সত্যি অধস্থন পুরুষের কাছে ফিরে আসে না, অথবা নিয়মমত “চিঙ মিঙ জায়ে” পালন করলে সত্যি সত্যি এসব সমৃদ্ধি অর্জিত হয় না; কিন্তু সারা দুনিয়ায় কয়েক পুরুষ ধরে ছড়িয়ে থাকা চার কোটিরও বেশি চীনা তাদের পিতৃভূমির কাছে বার বার ঠিকই ফিরে যান - সশরীরে বা অন্য কোনভাবে, আর পিতৃভূমির সমৃদ্ধির জন্যও নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যান।

চীনের বাইরে আপনি যে দেশেই থাকুন অথবা বেড়াতে যান দেখতে পাবেন সেখানে বাসকারী বিদেশীদের একটা বড় অংশই চীনারা। কিছু ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র ছাড়া পৃথিবীর এমন কোন দেশ খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে চায়না টাউন বা চীনেপট্টি বা চীনেপাড়া বা নিদেনপক্ষে চায়না বিল্ডিং নেই। বিশ্বের সবচে’ বেশি জনসংখ্যার দেশের ক্ষেত্রে এমনটাই হয়তো হবার কথা। তবে দুনিয়া জোড়া অভিবাসী জনগোষ্ঠীদের মধ্যে চীনারা অনেকটাই ব্যতিক্রম। অভিবাসী চীনারা ঐ দেশের মূলস্রোতে মিশলেও তারা মূলতঃ চীনাই থেকে যান প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। মূল চীনের প্রতি তাদের টান শুধুমাত্র মনের ব্যাপার নয়। চীন থেকে আমদানী করা, চীনে বিনিয়োগ করা, দেশ থেকে আসা চীনা ভাইদের সেটেল হতে সাহায্য করা ইত্যাদি ব্যাপারে চীনাদের স্বদেশপ্রীতি অতুলনীয়। এসব ক্ষেত্রে কে কোন প্রদেশের, কোন জেলার বা কোন জাতির তা মূখ্য নয়। প্রবাসীদের মধ্যে দেশের ভাষা আর সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে তাদের প্রচেষ্টাও প্রশংসনীয়।

বিদেশে বাংলাদেশীদের নানা প্রকার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের অভাব নেই। এ’নিয়ে দলাদলি, মারামারির খবরও হর-হামেশা আমরা পেয়ে থাকি। প্রবাসী চীনাদের মধ্যে খেয়োখেয়ির এই সাধারণ চিত্রটি প্রায় অনুপস্থিত। অনাবাসী বাংলাদেশীদের কতজন বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানী করে থাকেন? অথচ অনাবাসী চীনারা আজ চীন থেকে আমদানী বন্ধ করে দিলে চীনের গোটা রপ্তানী বানিজ্যই বড়সড় ধাক্কা খাবে।

যে সমস্ত চীনা কোম্পানীর সাথে আমাকে কাজ করতে হয়েছে কম-বেশি তাদের সবারই দুনিয়া জোড়া ক্রেতা আছে। ঐসব ক্রেতাদের একটা বড় অংশই আবার অনাবাসী চীনারা। ক্রেতা যদি আসিয়ানভুক্ত কোন দেশের বা অস্ট্রেলিয়ার বা যুক্তরাষ্ট্রের হয় তাহলে সেও একজন চীনা হবার সম্ভাবনা প্রবল। আর যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বৎসর চীন থেকে কি পরিমান আমদানী করে সে খবর সবারই জানা আছে। ইদানিংকালে দেখা যায় মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা বা লাতিন আমেরিকার ক্রেতারাও চীনা। খোদ ঢাকা শহরে এমন সব চীনাদের দেখেছি যারা আমাকে বলেছে, “চীন থেকে তুমি কী কী আনতে চাও বল, আমি তোমাকে এনে দেব”। মহাখালী-বনানী-গুলশান-বারিধারা-উত্তরাতে এখন ডজন ডজন এমন চীনা কোম্পানী গড়ে উঠেছে।

অনাবাসী চীনারা দ্রুতই সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনীতির মূল কর্ম-কাণ্ডে ঢুকে পড়েন। যেহেতু হেন জিনিষ নেই তাদের দেশ বানায় না, তাই চীনা পণ্য আমদানী করে অচিরেই তারা সেই দেশে চীনা পণ্যের একটা বাজার তৈরি করে ফেলেন। অনাবাসী চীনাদের আয়ের একটা বড় অংশ কিন্তু খোদ চীনেই বিনিয়োগ হয়। গত কয়েক বৎসরে দেখা গেছে তাইওয়ানীরা মূল চীনে বিপুল বিনিয়োগ করছেন। শুধু তাই নয় শ্রমঘন সব শিল্পই তারা মূল চীনে স্থানান্তর করে ফেলছেন। চীনের এই দুই অংশে যতই রাজনৈতিক টানা-পোড়েন থাকুক না কেন বিনিয়োগ আর বানিজ্য সেখানে ঝামেলামুক্ত রয়ে গেছে। বাইরের চীনাদের এই বিনিয়োগের দরুন চীনের লাভ দুই দিক থেকে। এক, দেশে বিনিয়োগ বাড়ছে, শিল্প বাড়ছে, কর্মসংস্থান বাড়ছে, আয় বাড়ছে। দুই, অনাবাসী চীনারাই আবার সেসব আমদানী করায় দেশের রপ্তানী আয় বাড়ছে, চীনা পণ্যের বাজার আরো বিস্তৃত হচ্ছে।

অনাবাসী চীনাদের একটা বড় কৃতিত্ব হচ্ছে অন্য দেশের কোন বিশেষ একটা শিল্পকে টার্গেট করা। বিশেষতঃ ঐ বিশেষ শিল্পে যে দেশ বিশ্ব বাজারে মার্কেট লিডার। একটা উদাহরণ দেই। একসময় পিতল আর দস্তার তৈরি বিশেষ একধরণের শিল্পে ইটালী সারা দুনিয়ায় মার্কেট লিডার ছিল। তাদের এই মোড়লী পঞ্চাশ বৎসরেরও বেশি সময় ধরে ছিল। গত দশ বৎসরে চীনারা আস্তে আস্তে শিল্পটিকে আত্মস্থ করেছেন। প্রথমে ইটালীর পণ্যের হুবহু নকল করা শুরু করেন। পরে একটু একটু করে স্বকীয়তা অর্জন করেছেন। আজ খোদ ইতালীয়রা চীন থেকে ঐ পণ্যটি আমদানী করে থাকেন।

একবার তাইওয়ানের একটা কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ করেছিলাম তাদের উৎপাদিত একটা পণ্য কেনার জন্য। কোম্পানীর কর্ণধার জেমসকে বললাম, “আমি তোমার ফ্যাক্টরী দেখতে চাই, যাতে তোমাদের পণ্যের মান ও মান নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারে নিঃসন্দেহ হতে পারি”। জেমস আমাকে বলল, “তাহলে তোমাকে সাঙহাই আসতে হবে”। আমার প্রশ্ন, সাঙহাই কেন? উত্তর হল, আমাদের কোম্পানী তাইওয়ানের হলেও ফ্যাক্টরীগুলোর প্রায় সবই মূল ভূখণ্ডে। তুমি ইচ্ছে করলে টাকা পয়সার লেন-দেন তাইওয়ানের সাথে অথবা মূল ভূখণ্ডের সাথে করতে পার। নিরূপায় আমি তাই তাইপের বদলে সাঙহাই রওয়ানা হলাম। সাঙহাই গিয়ে দেখি জেমস সেখানে জমিয়ে বসেছে। সাঙহাই-এর উপকন্ঠে, নানজিঙ আর কুয়াঙচৌতে ফ্যাক্টরী, সাঙহাইয়ের অভিজাত এলাকায় বিশাল অ্যাপার্টমেন্ট, দামী লিঙ্কন গাড়ি, সাঙহাই-এর গলফ ক্লাবের মেম্বারশীপ, নানজিঙ-এর গার্লফ্রেণ্ড সবই আছে। মূল ভূখণ্ডে বিপুল বিনিয়োগ করায় জেমস অন্য তাইওয়ানীদের চেয়ে সুবিধাও বেশি পায়।

দেশে থাকা চীনা তরুন-তরুনীদের একটা অংশের স্বপ্ন বিদেশে পাড়ি জমানো। ইদানিং চীনাদের মধ্যে তাই বিদেশী ভাষা শেখার প্রবনতা ব্যাপক। আমাদের মত সবার মধ্যে ইংরেজী শেখার চেষ্টা থাকলেও ফরাসী, জার্মান, স্পেনিশ, আরবী, ইতালীয়, পর্তুগীজ, রুশ ভাষা জানা চীনাদের সংখ্যা প্রচুর। চীনের বড় যে কোন শহরে গেলে দুনিয়ার প্রধান কোন ভাষা জানা দোভাষী পেতে বেগ পেতে হয় না। ২০০৮-এর অলিম্পিক চীনাদের ইংরেজীর বাইরে অন্য কোন বিদেশী ভাষা শেখার ব্যাপারে ব্যাপক অবদান রেখেছে। দুনিয়ার প্রধান ভাষাগুলো আয়ত্বে আনার ফলে চীনাদের জন্য গোটা দুনিয়া আরো সহজ বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এতে চীনাদের বৈদেশিক আয়ও বেড়েছে। ফলে, আমাদের একশত জন আদম ভাই যে পরিমান রেমিট্যান্স দেশে পাঠাতে পারেন, ব্যবসা করে একজন মাত্র চীনাই তার দেশে তারচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন। এর মানে এই না যে, অনাবাসী চীনারা খেয়ে-না খেয়ে সব টাকা দেশে পাঠিয়ে দেন। বরং তারা ঐসব দেশে আরো জাঁকিয়ে বসার চেষ্টা করেন যেন ভবিষ্যতে তার মাধ্যমে চীনের বৈদেশিক আয় আরো বাড়াতে পারেন।

একটা বই বা মুভি দুনিয়া জোড়া নাম করলে তা যে ভাষারই হোক তার চীনা সংস্করণ বের হতে এক মাসও লাগে না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সর্বশেষ আবিষ্কার, উত্পাদনকৌশল, ব্যবস্থাপনাকৌশল, নতুন ধরণের পণ্য, এমনকি চলতি ফ্যাশনেরও চীনা সংস্করণ হয়ে যায় অল্প দিনেই। দেশে থাকা অগ্রসর চিন্তার মানুষদের সাথে মিলে মূলতঃ অনাবাসী চীনারা এভাবে বাইরের দুনিয়ার সব পণ্য আর কৌশলকে চীনের কাছে পৌঁছে দেয়।

রয় মালয়েশীয় চীনা। তার সাথে দেখা এক বানিজ্যমেলায়। রয় আর তার বাবা-মার জন্ম মালয়েশিয়াতেই। বাবার ঠাকুরদা’ অল্প বয়সে দেশ ছেড়ে মালয়েশিয়ায় ঠাঁই গেড়েছিলেন। রয়ের আকার-আকৃতিতে, চেহারায় মালয়ান ছাপ অস্পষ্ট। ম্যাণ্ডারিনে কথা বলতে পারে অক্লেশে, যদিও পড়তে বা লিখতে পারে না। বাড়ির কথা জিজ্ঞেস করতে জানা গেল বাড়িতে সবাই ম্যাণ্ডারিনেই কথা বলে, বাইরে মালয়ান। তার মূল চীনা নামটি আজ আর মনে নেই, তবে বাইরের দুনিয়ায় তার নাম রয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে মালয়েশিয়ার বাজারে তার একটা মুসলিম নামও আছে। রয়ের লক্ষ্য চীন থেকে পণ্য কিনে মালয়েশিয়ার বাজারে বিক্রি করা। প্রথম দেখার প্রায় দুই বৎসর পর যোগাযোগ হলে দেখা গেল রয় পূর্ব চীনে অংশীদারীতে ফ্যাক্টরী দিয়েছে। উৎপাদিত পণ্যের গন্তব্য মালয়েশিয়া আর মধ্যপ্রাচ্য। অনাবাসী চীনাদের বোঝার জন্য রয় একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রায় খালি হাতে দেশ ছেড়ে আসা পূর্ব পুরুষের দেশের কাছে যে ঋণ ছিল অধস্থন পুরুষ “রয়”রা এভাবে তা সুদে-আসলে শোধ দেবার চেষ্টা করে এমন কি চার প্রজন্ম পরেও।

তিন-চার প্রজন্ম ধরে নিজের দেশকে মন-মগজে টিকিয়ে রাখা, লালন করা সহজ ব্যাপার নয়। বাংলাদেশে থেকেই শুদ্ধ করে বাংলা বলতে বা লিখতে পারে না এমন শিক্ষিত বাঙালীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অথচ চীনারা দেশে তো বটেই বিদেশেও নিজেদের ভাষাকে, সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রেখেছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে। পৃথিবীর বহু দেশে আজ তাই চীনা নববর্ষ একটা বড় উৎসব। আর চীনা খাবারের বিশ্বজয়ের কথা কে না জানে!

চীনারা জানেন কোন জিনিষ শরীরে ধারণ করতে হয় আর কোন জিনিষ মগজে ধারণ করতে হয়। তাই দেশের বাইরে থাকলেও অনাবাসী চীনাদের অন্তরে পিতৃভূমিই থাকে। চীন তাদের মনে, চিন্তায় এবং কাজে থাকে। তাই বাইরের পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলা চীনাদের পক্ষে দেশে না থেকেও দেশের জন্য অবদান রাখতে অসুবিধা হয় না।


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

চীনারা জানেন কোন জিনিষ শরীরে ধারণ করতে হয় আর কোন জিনিষ মগজে ধারণ করতে হয়

ভালো কথা

...........................
Every Picture Tells a Story

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই। ফরবিডেন সিটি নিয়ে আপনার পোস্টটা কিন্তু বকেয়া রয়ে গেছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

দিবো, তাইমন দ্বীপ থেকে ঘুরে আসি তারপর, শুনেছি তাইমন নাকি একটা কুমারী ড্রাগন , চীন থেকে সিঙ্গাপুর যাচ্ছিলো রাজপুত্রের সাথে দেখা করার জন্য, তারপর মালয়েশিয়ার কাছে এসে সমুদ্রের এজায়গাটা ভালো লেগে যাওয়াতে সেখানেই দ্বীপ হয়ে থেকে যায়। আমি যাচ্ছি সেখানে।

আসলে ফরবিডেন সিটির তেমন ভালো ছবি নাই বলে লেখাটাও হয়ে উঠছেনা, আশা আছে সেখানেও আরেকবার যাবার।

...........................
Every Picture Tells a Story

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তাইমন দ্বীপের গল্পটা ইনটারেস্টিং তো! এ'যাত্রায়তো আপনি, অরূপ আর মাশীদ তিন বাঘা ফটোগ্রাফার আছেন। তিন জনের কাছ থেকেই স্বতন্ত্র সচিত্র পোস্ট আশা করছি।

মুস্তাফিজ ভাই, ফরবিডেন সিটির ছবির কোয়ালিটি নিয়ে ভাববেন না। আপনার তোলা খারাপ মানের ছবি আমার মত মানুষের জীবনে সবচে' ভালো তোলা ছবির চেয়ে ভালো। নিশ্চিন্তে পোস্ট দিয়ে ফেলুন। পরে আরেকবার গেলে না হয় আবার পোস্ট দেবেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নজমুল আলবাব এর ছবি

সিরিজটা একটানে চীনে নিয়ে যায়।

এদের কাজকাম সত্যিই চিন্তায় ফেলে দেয়। কবে যে এরা বাঙ্গাল বানায়া ফেলবে হুবহু সেইটা দেখার অপেক্ষায়।

----------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কারখানায় যেদিন একটা বাউল বানানো সম্ভব হবে সেদিন হয়তো এক চেহারার আরেকটা নজমুল আলবাব চীনারা বানিয়ে ফেলবে। কিন্তু সেই বাউল কি আমাদের বাউলের মত "সাদা সাদা আরো সাদা"র মত মাথা ঘুরানো পোস্ট দিতে পারবে? অথবা লিখতে পারবে আরেকটা "বউ, বাটা, বলসাবান"? মনে হয় না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নজমুল আলবাব এর ছবি

শরম পেলাম দাদা। বিয়াফক শরম।

----------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাউলকে শরম পেতে হয় না। বাউলতো জাগতিক সুখ-দুঃখ-লজ্জা-অপমান-কষ্ট-আনন্দের ঊর্ধ্বে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সিরাত এর ছবি

ভাল লাগলো।

চীনে সামনে ঘুরতে যাওয়ার বেশ ইচ্ছা আছে। ৪০-৫০,০০০ থাকায় ১০-১৫ দিনে ভাল ঘোরা যাবে না? চীন ঘুরে কেমন লাগলো তা নিয়ে আরো লেখেন!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পঞ্চাশ হাজার টাকা কি প্লেন ভাড়া বাদ দিয়ে বলছেন? আপনি যদি এ'ব্যাপারে সত্যি সত্যি সিরিয়াস হন তাহলে আপনার ট্যুর প্ল্যান আর কী মানের ট্যুর করতে চান তা জানিয়ে আমাকে মেইল করতে পারেন। আমার মেইল অ্যাড্ড্রেস আমার ব্লগে পাবেন।

চীন নিয়ে লেখা আগের সাতটি পর্ব আমার ব্লগে পাবেন। সময় করে পড়ে মন্তব্য করলে খুশি হব।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সিরাত এর ছবি

হ্যাঁ সিরিয়াস প্ল্যান আছে। কালকে ভারত যাওয়ার কথা, কলকাতা-দিল্লী-মুম্বাই, এসে তারপর চীন ধরব। ভাল হল আপনাকে পেয়ে, যোগাযোগ করবো প্রয়োজনে। প্লেন ভাড়াসহ ৬০,০০০ খরচ করতে রাজী আমি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রয়োজন মনে করলে যোগাযোগ করতে পারেন। যথাসাধ্য সাহায্য করার চেষ্টা করব।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্পর্শ এর ছবি

আপনার এই চীন দর্শন কি যে ত্ৃপ্তি করে পড়ি বলে বোঝানো যাবেনা। পুরো লেখাটা চীনে ঘুরিয়ে নিয়ে আসে যেন। অজানা অনেক কিছু জানিয়েও দেয়। লেখার আকার আক্ৃতি থেকে শুরু করে উপাদান, সবই উপাদেয়। হাসি
এই সিরিজটা একটা বই হতে পারে।
চলুক


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনাদের ভালো লাগা আমাকেও আনন্দ দেয়। বই করার চিন্তা এখনো নেই। আপাতত পরের পর্বগুলো নিয়ে চিন্তা আছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এনকিদু এর ছবি

দারুন লাগল । সবার থেকেই শেখার আছে অনেক কিছু । আমরা যে কবে এইসব শিখতে শিখব !


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

শেখার ব্যাপারে আপনার ধারণাটা মনে হয় ঠিক না। চারপাশ থেকে আমরা সবাই শিখি। তবে কেউ প্রয়োগ করি, কেউ করিনা। কেউ শিক্ষাটাকে গুরুত্ব দেই, কেউ দেই না। কেউ ভাবনাটা প্রকাশ করতে পারি, কেউ পারিনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রণদীপম বসু এর ছবি

চিনাদের এই প্রজন্মান্তরে জাতিসত্ত্বাকে লালন করে যাওয়ার বিষয়টা আসলে খুবই আকর্ষণীয় ব্যাপার ! দুঃখ হয় আমরা দেশে থেকেই এক প্রজন্মেই যখন এই বাঙাল মুলুককে তালেবান বানানোর পায়তারা করছি..!!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দাদা, চীনাদের ক্ষেত্রে এর উলটো ঘটনাও কিন্তু আছে। পরের কোন এক পোস্টে সেটা বলার চেষ্টা করব। তবে অন্যের দোষ না ধরে নিজের দোষ ধরাই উচিত। আত্মপরিচয় না জানা, নিজেদের দীর্ঘমেয়াদী-সুদূরপ্রসারী মঙ্গলটা না বোঝা নির্বোধেরাই নিজেদের তালিবান আর বাংলাকে আফগান বানানোর স্বপ্ন দেখে। নির্বোধেরা নিজেরা মরে সাথে চারপাশের সবাইকে মেরে রেখে যায়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মূলত পাঠক এর ছবি

খুব ভালো লেখা। সাদামাটা ভ্রমণ কাহিনী নয়, তার চেয়ে অনেক বেশী কিছু পেলাম প'ড়ে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। ট্যাগে "ভ্রমণকাহিনী" দেই অন্য কোন কিছু দেবার উপায় নেই বলে। আসলে এটি মোটেও ভ্রমণকাহিনী না। বার বার চীন ভ্রমণে চীন সম্পর্কে আমার যে ধারণাগুলো তৈরি হয়েছে সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করছি মাত্র।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মূলত পাঠক এর ছবি

শেয়ার করা চলতে থাকুক। বিনোদন আর জ্ঞানার্জন, দুই-ই হোক আমাদের।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

চলুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। চেষ্টা করছি চালানোর।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

সত্যিই দুর্দান্ত আপনার পর্যবেক্ষণ! আর এতো নির্ভার লেখা!
আপনার এই সিরিজের প্রবল ভক্ত হয়ে উঠেছি।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সন্ন্যাসী যখন পাণ্ডবের চোখ আর হাতের প্রশংসা করে লজ্জায় পাণ্ডবের তখন মুখ লুকানোর জায়গা থাকে না।

শুধু একা সন্ন্যাসী ভক্ত হলে চলবে না। সাথে কিছু সহ-সাধিকা ভক্তও লাগবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আকতার আহমেদ এর ছবি

সত্যিই দুর্দান্ত আপনার পর্যবেক্ষণ! আর এতো নির্ভার লেখা!

আমিও এটাই বলি...
এই সিরিজটা পড়তে গিয়ে একাত্ম হয়ে যাই অবচেতন মনেই!
দুর্ধর্ষ এই সিরিজটার জন্য আপনারে অভিনন্দন, পান্ডব দা!
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ প্রিয় ছড়াকার। চেষ্টা করছি শিঘ্রই পরের পর্ব নামাতে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।