যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম
আমার চীন ভ্রমণগুলো কর্মোপলক্ষ্যে বলে চীনের বড় বড় উৎসবগুলোর সময় চীন যাওয়া হয়নি। তবে কিছু স্থানীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ হয়েছে। এর মধ্যে সবচে’ বেশি যা দেখা হয়েছে তা হচ্ছে বিয়ে আর অন্ত্যষ্টি। একটা দেশের সংস্কৃতিকে ভালোভাবে বোঝার জন্য সেদেশের শিশুর নামকরণ বা জন্মোৎসব, বিয়ে আর অন্ত্যেষ্টি দেখা নাকি আবশ্যক। চীনের ক্ষেত্রে আমার প্রথমটি ছা...যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম
আমার চীন ভ্রমণগুলো কর্মোপলক্ষ্যে বলে চীনের বড় বড় উৎসবগুলোর সময় চীন যাওয়া হয়নি। তবে কিছু স্থানীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ হয়েছে। এর মধ্যে সবচে’ বেশি যা দেখা হয়েছে তা হচ্ছে বিয়ে আর অন্ত্যষ্টি। একটা দেশের সংস্কৃতিকে ভালোভাবে বোঝার জন্য সেদেশের শিশুর নামকরণ বা জন্মোৎসব, বিয়ে আর অন্ত্যেষ্টি দেখা নাকি আবশ্যক। চীনের ক্ষেত্রে আমার প্রথমটি ছাড়া বাকি দুটি দেখার সুযোগ হওয়ায় আশা করি চীনা সংস্কৃতির ব্যাপারে আমার সামান্য ধারণা তৈরি হয়েছে। নিঃসন্দেহে চীনের সব জায়গায় এই সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোর চেহারা এবং মাত্রা একপ্রকার নয়। আবার আর্থিক-সামাজিক শ্রেণীভেদেও অনুষ্ঠানগুলোর রূপ আর জৌলুস পালটে যায়। আমার দেখা সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো চীনের পূর্বাঞ্চলের। তাই আমার বর্ণনার সাথে চীনের অন্য অঞ্চলের ঘটনার সাথে মিল নাও থাকতে পারে।
অ্যারেঞ্জড বা সেটেল্ড ম্যারেজ নামক ব্যবস্থাটি চীনে একসময় নিশ্চয়ই ছিল। কারণ, দীর্ঘদিন সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় থাকা কোন সমাজে সন্তানদের বিয়ে সামাজিক মর্যাদা, প্রতিপত্তি, ক্ষমতা ইত্যাদির সাথে নিবিড় ভাবে সম্পর্কিত হওয়ার কথা। তাছাড়া বর-কনের কোষ্ঠী মিলানো, শুভ দিন-লগ্ন মেনে বিয়ে করার রীতি যেখানে কম-বেশি এখনো আছে, সেখানে এককালে বিয়ে ব্যাপারটা যে ঘোরতর পারিবারিক ব্যবস্থায় হত তা বোঝা যায়। তবে আজকাল পরস্পর জানা-শোনা বা পূর্বরাগই বৈবাহিক সম্পর্কের প্রধাণ উপায়। পরিবারের খবরদারী কমে যাওয়া, পূর্বরাগ নির্ভরতা, আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন, সামাজিক পূনর্বিন্যাস আর বাইরের হাওয়া গায়ে লাগায় এখন বিয়ে ব্যাপারটা অনেকটাই সহজ-সরল হয়ে গেছে।
ফুজিয়ানের এক ছোট্ট পাহাড়ী শহরে গেছি। সন্ধ্যায় চীনা সহকর্মীদের সাথে একটা রেস্টুরেন্টে খেতে গেছি। রেস্টুরেন্টের আঙ্গিনা আর ভিতরের সাজ-সজ্জা দেখতে একটু অন্য রকম লাগলো। বাইরে সারি বেঁধে সাজগোজ করা তরুণ-তরুণীর দল। জিজ্ঞেস করলাম, ব্যাপার কী? এক সহকর্মী বললেন, “আমাদের কারখানারই দুই কর্মীর বিয়ে”। শুনে আমার আগ্রহ বাড়ল। বললাম, “বিয়ে দেখতে পারি”? উত্তর দিলেন, “নিশ্চয়ই, তবে একটু দূর থেকে দেখতে হবে, বিয়েতে আমরা আমন্ত্রিত না তো তাই”। বললাম, “কোন অসুবিধা নেই, বিয়ে দেখতে পেলেই হল”।
রেস্টুরেন্টের যে হলে বিয়ে হচ্ছে সেখানে গিয়ে দেখি সাধারণ স্যুট পরা বর তার বন্ধু-বান্ধবের সাথে বসে গল্প-হাসি-তামাশা করছেন, কনের দেখা মিলল না। এমন সময় বাইরে হল্লার আওয়াজ শুনে বাইরে এসে দেখি আট-দশটা মোটর সাইকেলের এক বহর। সামনের বাইকের পিছনের সীটে লাল রঙের বিয়ের পোশাক পরা কনে, হাতে ফুলের তোড়া। বাকি বাইকগুলোতে কনের বন্ধু-বান্ধব। শুনলাম ম্যারেজ রেজিস্টারের অফিসে বিয়ের আইনগত ব্যাপারটি দুপুরেই সেরে রাখা হয়েছে। এখন শুধু বন্ধুদের সাথে মিলে পান-ভোজন। পাত্র-পাত্রীর সামর্থ্য কম, তাই আয়োজনও কম। খাবারের টেবিল দেখে তিন থাকের বিয়ের কেক ছাড়া “বিয়ে স্পেশাল” ধরণের অন্য কোন খাবার বা পানিয় চিনতে পারলাম না। বোধহয় এখানেও সামর্থ্যই বাধা। বর-কনে একসাথে বসার পর খাওয়া-দাওয়া শুরু হয়ে গেল। তখন আমরাও খাওয়ার জন্য মূল রেস্টুরেন্টে ঢুকে পড়লাম।
আমাদের খাওয়া-আলাপ শেষ হতেই দেখি বিয়ের পার্টি শেষ। বর-কনে এবার বরের বাইকে উঠলেন। অন্য বাইকগুলোতে বন্ধুদের দল টুকিটাকি জিনিষ নিয়ে উঠে পড়লেন। এমন সময় শুরু হল প্রচণ্ড শব্দে পটকা ফোটানো। একটু থেমে থেমে প্রায় দশ মিনিট ধরে ছাদ থেকে, বারান্দায়, আঙ্গিনায়, আঙ্গিনার গাছে পটকা আর আতশবাজী ফোটানো হল। এরপর গোটা বহর সশব্দে রওয়ানা দিলেন বর-কনের নতুন আবাসস্থলের দিকে। আমাদের দেশে আনন্দ-উৎসবে পটকা-আতশবাজী ফোটানোর রেওয়াজ থাকলেও চীনে সব সামাজিক কর্মেই পটকা ফোটাতে দেখেছি। এমনকি অন্ত্যেষ্টিযাত্রায়ও। পটকার এহেন সামাজিক মর্যাদার কারণ জানতে পারিনি।
এখানে যে বিয়েটার কথা বললাম সেটা নিতান্তই দরিদ্রদের বিয়ে। পাঁচতারা হোটেলে ধণীদের বিয়েও দেখেছি। সেখানে জৌলুসটা বেশি, তবে বাকি কর্ম-কাণ্ড মোটামুটি একরকম। সেসব বিয়ের অনুষ্ঠানের সাথে দুনিয়ার আর দশটা জায়গার সাধারণ সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোর কোন পার্থক্য নেই। স্যুট-কোট পরা পুরুষের দল, পশ্চিমা পার্টি ড্রেস পরা মেয়েরা, প্রবেশ পথে জমকালো পোশাক পরা বর-কনে অভ্যাগতদের হাসিমুখে সম্ভাষন জানাচ্ছেন। পার্টিহলের টেবিল ভর্তি দামী খাবার আর মদের ফোয়ারা, একপাশে ভাড়া করা গায়ক-বাদকের দল। অতিথীদের মাপা হাসি আর চাপা কথা বার্তা, প্রাণের কোন ছোঁয়া নেই, সবই অতিরিক্ত সাজানো-গোছানো, সবই মেকি। অমন শ্রেণীর মানুষরা এখন বিয়ের অনুষ্ঠান করে দেবার জন্য ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানীর শরণাপন্ন হন। সেসব কোম্পানী আবার এক আয়োজনে পাঁচ-সাতটা বিয়েও সেরে দেয়। নিঙবোতে একবার এক হোটেলে একসাথে অমন সাতটি বিয়ে হতে দেখেছি। তবে চীনের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের আয়োজন একেবারেই ভিন্ন ধরণের। চীনে অমন ধরণের বিয়ের উৎসব এখন নিতান্ত ধণী না হলে আয়োজন করা সম্ভব নয়।
ঐতিহ্যবাহী চীনা বিয়ের উৎসবের সাথে বাঙালী হিন্দুর বিয়ের বরং অনেক মিল আছে। আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবের জন্য কনের বাড়িতে ঘটক পাঠানো হয়। সম্পর্ক চূড়ান্ত করার সময় বরপণ-কন্যাপণ ঠিক করা হয়। বর-কনের কোষ্ঠী মিলানোর কথা আগেই বলেছি। চীনা সপ্তম চান্দ্রমাসের শেষ পনের দিন বিয়ের জন্য অশুভ বলে গন্য করা হয়। বিয়ের লগ্ন ঠিক করা হয় ঘন্টার দ্বিতীয়ার্ধে। যেমন, ১২টা ৩১ মিনিট বা ৩টা ৪৫ মিনিট। কারণ কী? কারণ এই সময় ঘড়ির কাঁটা উপরের দিকে উঠতে থাকে। মিনিটের কাঁটার ঊর্ধ্বযাত্রা শুভ ও উন্নতির লক্ষণ। যেহেতু বর-কনে একটা নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছেন তাই ঘন্টার শুভ-অর্ধ্বে বিয়ের লগ্ন হতে হবে। বিয়ের তিন দিন আগে থেকে প্রথমে বরের বাড়ি থেকে তারপর কনের বাড়ি থেকে মেয়েরা উপহারসামগ্রী নিয়ে একে অন্যের বাড়ি যান। অনেকটা আমাদের গায়ে-হলুদের মত ব্যাপার। একসময় চীনের পশ্চিমাঞ্চলে সাদা ঘোড়ায় চড়ে বর/কনের মামার অন্যের বাড়িতে উপহার নিয়ে যাবার রেওয়াজ ছিল। বিয়ের দিন সকালে কনের বাবা-মা কনেকে নতুন পোশাক পরান। এরপর কনে আত্মীয়া-বান্ধবীদের নিয়ে এক রুমে চলে যান। তখন সেখানে অন্য কেউ যেতে পারবেন না। এটা কনের পিত্রালয় ত্যাগের জন্য শোক প্রকাশের সময়। এ’সময় কনের বান্ধবী আর আত্মীয়ারা দুঃখের গীতও গান।
ঐতিহ্যবাহী চীনা বিয়েতে কনের পোশাক হয় লাল রঙের। এমন কি বরের পোশাকও লাল রঙের হয়। লাল রঙ হচ্ছে ভালোবাসা, আনন্দ আর সমৃদ্ধির প্রতীক। এখন অবশ্য পশ্চিমা রীতি অনুসরণ করে কনের পোষাক হয় সাদা রঙের, মাথায় হুড আর পিছনে লম্বা ঝুলওয়ালা। পশ্চিমা রীতির বিয়ের পোশাক আর অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে এখনকার চীনে রীতিমত একটা “বিয়ে ইণ্ডাষ্ট্রি” গড়ে উঠেছে। বিয়ের পোশাকের দোকান, বিয়ের কেকের দোকান, গাড়ি আর বাসর সাজানোর দোকান, হোটেলে বাসর করার ব্যবস্থা, হানিমুন প্যাকেজ আরো কত কী! এমন কি এসব পণ্যের জন্য চীনে নিয়মিত আন্তর্জাতিক মেলাও বসে। পশ্চিমা সংস্কৃতি চীনের অন্দরমহলে কতদূর প্রবেশ করেছে সে কথা আরেক পর্বে বলব।
কনেকে সাজানোর দ্বায়িত্ব পরে কনের ভাবি (বৌদি) শ্রেণীর কারো ওপর। পোশাক, জুতা, মুকুটের পর ঝালরের নেকাব পরানো হয়, সাথে অলঙ্কারতো আছেই। কনের চুল বাঁধা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। যখন চুল বাঁধা হয় তখন তা দেখার মত একটা দৃশ্য হয়। চীনের পশ্চিমাঞ্চলের মেয়েদের মাথা জুড়ে অনেকগুলো বেনী বেঁধে চুল সাজানো হয়। বিয়ের আসরে কনে সাধারণতঃ এক পোশাকেই পুরোটা সময় থাকেন না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কনে তিনবার পোশাক পালাটান।
বরযাত্রীরা আসেন পটকা ফাটাতে ফাটাতে, ঘন্টা আর ড্রাম বাজাতে বাজাতে। এখনকার বরেরা অবশ্য কালো রঙের গাড়ির বহর নিয়ে আসেন, এবং গাড়িগুলো আমাদের বরের গাড়ির মতই ফুল, লেস, ঝালর আর বেলুন দিয়ে সাজানো থাকে। ডিসেম্বরের হাড় কাঁপানো শীতে একবার ইয়ঙকাঙ গেছি। শূন্যের কাছাকাছি তাপমাত্রার একদিন রোদ উঠল। রোদের সাথে অমন হি হি করা শীতের অভিজ্ঞতা আমার জন্য নতুন। বাসস্থান থেকে প্রায় পনের কিলোমিটার দূরে অফিসে যাচ্ছি। রাস্তায় দেখি কালো রঙের অডি গাড়ির বহর। সব গাড়িই ফুল আর লেস দিয়ে সাজানো। সহযাত্রী বললেন, “বরযাত্রীর দল”। কিছুদূর যেতে দেখি আরেকটি বহর, এভাবে এক এক করে মোট চারটি বহর চোখে পড়ল। সহযাত্রী মন্তব্য করলেন, “আজকের দিনটা স্পেশাল মনে হচ্ছে, নয়তো এত লোক একসাথে বিয়ে করে”!
একসময় বরের সাথে একটা বাচ্চাকে নিতবর হিসেবে আনা হত। বরযাত্রী কনের বাড়িতে আসলে কনের বান্ধবীরা অনেকটা আমাদের “গেট ধরা”র মত করে তাদের আটকায়। যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্ধবীর দলকে লাল থলেতে বাঁধা টাকা দিয়ে সন্তুষ্ট না করা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত বরযাত্রীকে বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এরপর বরকে কনের বাড়ি থেকে উপহার দেয়া হয় দুটো পানপাত্র আর একজোড়া চপস্টিক। বরকে শুরুতে খেতে দেয়া হয় লঙ্গানের চা, সিরাপে ভিজানো দুটো সিদ্ধ ডিম, স্বচ্ছ নুডুলস আর নরম সিদ্ধ ডিম দেয়া স্যুপ। বর-কনেকে বসানো হয় মাথার কাছে আয়না লাগানো কারুকাজ করা জমকালো কাঠের চেয়ারে। কনেকে অন্দরমহল থেকে আনার জন্য কোথাও কোথাও কাঠের পাল্কীও ব্যবহৃত হত। বর-কনেকে ঘিরে থাকা মেয়েদের নির্বাচন করা হয় তাদের জন্মবর্ষের প্রাণীর সাথে বরের জন্মবর্ষের প্রাণীর জোড় হবার যোগ্যতা (compatibility) অনুযায়ী। প্রসঙ্গতঃ চীনা রাশি অনুযায়ী আমার জন্মবর্ষ প্রাণী কুকুর আর দিশার হছে খরগোশ। চীনা শাস্ত্রানুসারে পুরুষ কুকুর আর নারী খরগোশ বিয়ের জন্য compatible কিনা তা অপ্রাসঙ্গিক বিধায় উহ্য রাখলাম। বর-কনের ধারে কাছে কোন বিধবা মহিলা বা বিড়ালকে ঘেঁষতে দেয়া হয় না। এই লক্ষণ-অলক্ষণ বিচারগুলো সব দেশেই মনে হয় অর্থহীন ও নিষ্ঠুর।
বিয়ে পড়ানো হয় কনের বাস্তুদেবতার সামনে। ব্যাপারটি আজকের চীনে অসম্ভব বলে মনে হলেও চীনাদের বাড়িতে, অফিসে, কারখানায় আমি অসংখ্য বাস্তুদেবতার প্রতিমা আর তার সামনে ভোগ দেয়া দেখেছি। লক্ষ্যনীয় যে বাস্তুদেবতাদের সবাই পুরুষ। চীনে কোন দেবীপ্রতিমা দেখিনি। এখনকার চীনে দেবতার সামনে পড়ানো হোক বা না হোক ম্যারেজ রেজিষ্টারের কাছ থেকে বিয়ের পূর্বানুমতি আর রেজিষ্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। বাস্তুদেবতা, পূর্ব-পুরুষ আর স্বগ-নরকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিয়ের মন্ত্রপাঠ শেষ করা হয়। সবশেষে বর-কনে পরস্পরের উদ্দেশ্যে মাথা নত করে প্রণাম করেন। এরপর অতিথিদের পদ্মবীজ আর খেজুর দেয়া চা খেতে দেয়া হয়। বর-কনে একপাত্র থেকে মদ্যপান করেন, চিনির মিষ্টি ভাগাভাগি করে খান।
এরপর শুরু হয় মূল ভোজসভা। ভোজে বর-কনে একসাথে বসেন। ভোজে কমপক্ষে দশ কোর্স খাবার দেয়া হয়। সামর্থ্য বেশি হলে কোর্সের সংখ্যাও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এক সময় বর আর কনের বাড়িতে আলাদা আলাদা দিনে তাদের নিজ নিজ বন্ধু-বান্ধব আর আত্মীয়-স্বজনদের জন্য আলাদা আলাদা ভোজ হত। অনেকটা আমাদের বিয়ের ভোজ আর বৌভাতের ভোজের মত। ভোজের সময় একজন মজার মজার কথা বলে, আবৃত্তি করে, গান গেয়ে আসরকে মাতিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। হাঙচৌ-এর এক বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখেছি স্থানীয় এক সেলিব্রেটিকে ভাড়া করা হয়েছে। সেই সেলিব্রেটি আবার আমাদের মিলা-তিশমা আর ফারজানা ব্রাউনিয়ার কম্বিনেশন। নিজে গান গায়, কৌতুক বলে, অন্যদের দিয়ে গান গাওয়ায়, বাচ্চাদের দিয়ে মজার প্রতিযোগিতা করায়, লটারী করে। অতিথিরা কনেকে নগদ অর্থ উপহার দেয়। আজকাল অন্য উপহার দেয়া কিছু কিছু জায়গায় চোখে পড়লেও চীনা বিয়েতে নগদ টাকাটাই অতীত থেকে এখন পর্যন্ত একমাত্র উপহার হিসেবে গন্য। ভোজ শেষে বরকে দেখেছি কনেকে কোলে নিয়ে সব অতিথিদের টেবিলের কাছে যেতে। বরের বাহুলগ্না কনে সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বর-কনে বরের বাড়িতে পৌঁছলে লাল কার্পেট বিছিয়ে দেয়া হয়। সেখানে ধান, অন্য শস্য আর পয়াসার মালা বিছিয়ে দেয়া হয়। একটা পাত্রে মধু আর একটা পাত্র মদ রেখে সে দুটো লালসূতা দিয়ে বাঁধা হয়। বরের হাতে থাকে একটিপাত্র আর কনের হাতে থাকে আরেকটি। উভয়ে নিজের পাত্র থেকে এক চুমুক করে খেয়ে পাত্র অদল-বদল করে আবার এক চুমুক খান।
আগে বাসর ঘর সাজানোর দ্বায়িত্ব পরত অনেক সন্তানের বাবা-মায়ের ওপর। অনেক দিন ধরে “এক সন্তান” নীতিতে চলা চীনে এখন অমন বাবা-মা খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। বাসর শয্যায় অনেকগুলো বাচ্চাকে বসানো হয়, যেন নবদম্পত্তির অনেক সন্তান হয়। শয্যায় ছড়িয়ে দেয়া হয় লাল খেজুর, কমলা, পদ্মবীজ, বাদাম, ডালিম ইত্যাদি ফল। বাচ্চারা সেসব কাড়াকাড়ি করে খায়। এর মানে হচ্ছে নবদম্পত্তির সন্তানেরা যেন সবসময় পর্যাপ্ত খাবার পায়।
বিয়ের পরদিন সকালে কনে বরের বাস্তুদেবতা আর পূর্ব-পুরুষদের প্রণাম জানিয়ে বাড়ির মুরুব্বীদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসেন। মুরুব্বীরা কনেকে উপহার দেন। বিয়ের তিন দিন পর বর-কনে কনের বাড়িতে বেড়াতে যান। এইদিন থেকে কনের বাড়িতে কনেকে অতিথি হিসেবে গন্য করা হয়।
বলাইবাহুল্য আজকের চীনে ঐতিহ্যবাহী চীনা রীতিতে বিয়ে দেখাই যায় না। কিছু কিছু রীতি হয়তো পালন করা হয়। কিছু কিছু রীতি হয়তো ইচ্ছে থাকলেও করা সম্ভব হয় না। শেষে একটা অন্য রকম বিয়ের কথা বলি। ছেন শি একটা কোম্পানীর রপ্তানী বিভাগের কর্মকর্তা। আমাদের দেশে অমন পদে কাজ করা মেয়েদের যথেষ্ঠ ঠাঁট-বাট থাকলেও ছেন শি নিতান্তই একটা সাধারণ মেয়ে। তার হবু স্বামী মা ফু একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার। দু’জনের আয় সীমিত, তাই এক বছর ধরে একটু একটু করে তারা নিজেদের সংসারের জন্য জিনিষপত্র কিনছেন। তাদের বিয়ে আমার দেখা হয়নি। তবে জানি তাদের বিয়েতে কোন জমকালো পার্টি হবে না। ঐতিহ্যবাহী রীতিগুলোও পালন করা সম্ভব হবেনা। হয়তো ম্যারেজ রেজিষ্টারের অফিসে কয়েকজন বন্ধুর উপস্থিতিতে বিয়ে হবে, সামান্য পান-ভোজন হবে। নাই বা হল বড়সড় বিয়ের অনুষ্ঠান, ছেন শি আর মা ফু’র হৃদয় পরস্পরে সমর্পিত। বিয়ের জন্য সেটাই যথেষ্ঠ। যদি ভালোবাসাই না থাকে তাহলে ঐতিহ্যবাহী বিয়ের অনুষ্ঠান, দামী পোশাক, হাজারো অতিথীর ভুড়িভোজ আর জমকালো পার্টি দিয়ে কী হবে?
মন্তব্য
"মিলা-তিশমা আর ফারজানা ব্রাউনিয়ার কম্বিনেশন"
অনেক কিছু ইন্টারেসটিং তো! তবে আমাদের বিয়ের সাথে অনেক মিল আছে, আমাদের বিয়েতেও তো বিয়ের কিছুদিন পর বেড়াতে যায় তাইনা?
তবে আরেকটা কথা ভাইয়া আপনি আপনার লেখার প্রথম লাইনের সবচেয়ে শেষের শব্দটায় দুটা রসোউকার দিতে ভুলে গেছেন
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
বানানের ব্যাপারে আপনার পরামর্শ দেখে প্রথমে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। এমন সিলি ভুল করেছি! পরে আবার পড়তেই আপনার পরামর্শটা বুঝতে পারলাম। তবে ব্যাপারটা হচ্ছে কি এটাতো হিন্দুদের বিয়ের মন্ত্র। এখানে বানান সংশোধনের রিস্ক নেয়াটা কি ঠিক হবে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ভাইয়া আমি তো জোক করে বললাম, আমাদের রিহার্সালে আমার এক ফ্রেন্ডের গানের স্ক্রিপটে গানের যত জায়গায় "মম" লেখা ছিল সব জায়গায় আমি দুইট করে রসোউকার দিয়ে দিয়েছিলাম, তাই আপনার লেখার প্রথম লাইনটা দেখে সেকথা মনে পড়ল বলে লিখলাম। এটা যে হিন্দুদের বিয়ের মন্ত্র তা জানতাম না। হিন্দু কেউ যদি এতে ওফেনডেড হয়ে থাকেন তাহলে আমি ক্ষমা চাইছি, সরি।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
হাঃ হাঃ হা
দারুণ কমেন্ট, এখন কোথাও "মম" পরতে গেলেই এইটা মনে হবে
...........................
Every Picture Tells a Story
মনে হয় আপনি দীর্ঘকাল চীনে ছিলেন। সেখানের জীবনের নানা দিকগুলো যেভাবে তুলে এনেছেন তা সত্যিই একটা ভালো রিসোর্স হবে।
দুঃখিত, আমি অনেকবার চীনে গেছি সত্য তবে কখনোই দীর্ঘকাল চীনে থাকিনি। আমার লেখা রিসোর্স বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার না করাই ভাল। লেখাগুলো আমার স্বল্পকালীন চীন বাসের সময়ে দেখা-জানা বিষয় নিয়ে আর নিজের দৃষ্টিভঙ্গীতে বর্ণনা-ব্যাখ্যা করা। লেখাগুলো আপনাদের ভালো লাগলেই আমি খুশি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমার জন্মবর্ষ প্রাণী বাঘ।
আমি যতটুকু শুনেছি বিয়েতে বা অন্য যেসব ব্যাপারে চীনারা এস্ট্রোলজির উপর বিশ্বাস রাখে সেখানে জন্মবর্ষ প্রাণীর জোড় মেলানোর চাইতে অন্য পাঁচটি গ্রহ বিভাজন যেমন বৃহস্পতি-কাঠ, মঙ্গল-আগুন, শনি-মাটি, শুক্র-ধাতু আর বুধ-পানি এই বিভাজনের উপর আস্থা রাখে। এই গ্রহ আবার Yin এবং Yangএই দুই প্রকারেই হতে পারে, যেমন Yin Wood বা YingWood. ওদের ধারনানুযায়ী সমস্ত সফলতার পেছনে Ying আর Yin এর সম্মিলনের ভুমিকা সবচাইতে বেশী। তাই জোড় মেলানোর সময় সবাই চায় একজন Yin হলে অন্যজন যেন Ying হয়। জন্মবর্ষ প্রানী বা গ্রহের ভুমিকা পরে আসে।
...........................
Every Picture Tells a Story
তথ্য জানানোর জন্য ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রহ-ধাতুর ব্যাপারটি এড়িয়ে গেছি। আমার এই লেখাটিকে তথ্যভারাক্রান্ত করার ইচ্ছে নেই। যেহেতু আপনিও চীনের উপর (সচিত্র) পোস্ট দিয়ে থাকেন তাই আপনার ভাণ্ডারে চীনা জ্যোতিষীর ছবি, হরস্কোপ থাকলে দয়া করে একটা বিস্তারিত পোস্ট দিয়ে ফেলুন না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নাই বা হল বড়সড় বিয়ের অনুষ্ঠান, ছেন শি আর মা ফু’র হৃদয় পরস্পরে সমর্পিত। বিয়ের জন্য সেটাই যথেষ্ঠ। যদি ভালোবাসাই না থাকে তাহলে ঐতিহ্যবাহী বিয়ের অনুষ্ঠান, দামী পোশাক, হাজারো অতিথীর ভুড়িভোজ আর জমকালো পার্টি দিয়ে কী হবে?
এটাই আসল কথা, পান্ডব'দা।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
এই সত্য জানে সবাই, তবুও লোক দেখানো ঠাঁট-বাটের জন্য মানুষের সেকি আপ্রাণ চেষ্টা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
চায়না কাজী হিসেবেও আপনি দুর্দান্ত
০২
মুমু বোধহয় অনুমান করতে পারেনি শ্লোকটার মম শব্দটাকে মুমু বানিয়ে দিলে সে কী বিপদেই না পড়বে
এখনও এই মন্ত্র পড়ে লাখে লাখে লোক বিয়ে করে
এখন বানান সংশোধনের পরে যদি সবাই মন্ত্রের মধ্যেই মুমুর নাম স্মরণ করা শুরু করে তবে আপনার মতো চায়না কাজীও তাকে রক্ষা করতে পারবে না
আমি আবার কাজী হলাম কীভাবে? বাংলাদেশে থাকি আর চীনেই যাই সব জায়গাতেই আমার ভূমিকা মিস্ত্রীর।
০২
মুমুর বিপদ মুমু নিজে সেধে এনেছে। আমি তাকে কিঞ্চিত হুঁশিয়ার করার চেষ্টা করেছি মাত্র। আমার কী ক্ষ্যামতা আছে তাকে রক্ষা করার!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এটার মানে জানিনা আর এটা যে হিন্দুদের বিয়ের মন্ত্র তাও জানতাম না, আমি এমনি জোক করে বলেছিলাম তো
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
বরাবরের মতোই
এই অঞ্চলে উপরোক্ত সব অনুষ্ঠানেই মদ্যপান অবধারিত। একটা কৌতুক মনে পড়লো এ-প্রসঙ্গে:
– জন্মোত্সব আর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের ভেতরে পার্থক্য কী?
– কোনও পার্থক্য নেই। শুধু অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে মাতালের সংখ্যা থাকে একজন কম।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
চীনে এই তিনটার মধ্যে পার্থক্য আরো কম। সেখানে শুধু মদ্যপানই না সাথে আতশবাজী আর পটকা ফোটানোও চলে। চীনে অন্তেষ্ট্যিক্রিয়ায় পটকা ফোটানোর বহর দেখে মনে হয়েছিল লোকটা মারা যাওয়ায় সবাই বুঝি খুব খুশি হয়েছে।
------------
জন্মোৎসবেও মনে হয় একজন মাতাল কম থাকে। কারণ যার জন্য অনুষ্ঠান সেতো তখনো গিলতে অপারগ। তবে বিয়েতে যেহেতু দুইজনই প্রাপ্তবয়স্ক তাই তখন দুইজন মাতাল বেশি হয়। এই বাড়তি মাতাল দু'জন তাহলে জন্মোৎসব আর অন্তেষ্ট্যিক্রিয়ায় কমতি পড়া দু'জন মাতালের ঘাটতি পূরণ করে হিসেব মিলিয়ে দিল। কী বলেন, ঠিক বলেছি না?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্রিয় মুমু, আপনার দুঃখিত হবার কিছু নেই। আমরা সবাই বুঝেছি যে আপনি মজা করে এটা বলেছেন। এর উত্তরে আমি যা বলেছি, মুস্তাফিজ ভাই আর লীলেনদা' যা বলেছেন সেগুলোও মজা করেই বলা। লিলেনদা'র মন্তব্য আরো গভীর মজা করে বলা। সেটা না বুঝে থাকলে তাকেই জিজ্ঞেস করুন না।
আপনার মন্তব্য নিয়ে ঘাবড়াবার কিছু নেই। এটা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিয়ের মন্ত্র হলেও আপনি অবমাননাকর কিছু বলেন নি। তাই কারো অফেনডেড হবার কিছু নেই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
চীনাদের বিয়ে তে একটা অদ্ভুত মিষ্টি খেয়েছিলাম সেটা হলো দেখতে রসগোল্লার মত কিন্তু গ্রিন টি ফ্লেভারের, এখানের দু'টি চীনা বিয়েতেই ঐ জিনিস খেয়েছি, নাম জানিনা, কিন্তু এটুকু বলতে পারি গ্রিন টি ফ্লেভারের রসগোল্লা অতি কুতসিত একটি জিনিস । আর ওরা লাল খামে করে নববর্ষের সময় বন্ধু টন্ধুদেরও টাকা ফাকা দেয়, এটা খুবই ভালু, এই প্র্যাকটিস বাঙালি মহলে অতি সত্বর চালু করা উচিত।
আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ?ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??
কথাটা আপনাদের কাছে কেমন মনে হবে জানিনা, তবে আমার মনে হয় এই উপমহাদেশের বাইরে, আরো ভালোভাবে বললে বাংলার বাইরে কেউ মিষ্টি বানাতে পারে বলে মনে হয় না। মিষ্টি জাতীয় জিনিষ নামে বাকি দুনিয়ায় (যেটুকু দেখেছি) যা খেয়েছি তাকে অখাদ্য বললে কম বলা হয়। ধর্ম্মপুত্রকে দেখেছি তুরস্কের মিষ্টির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে। আমার কাছে অবশ্য সেখানে মিষ্টির চেয়ে মিষ্টির পিছনের মানুষের ভূমিকা বেশি বলে মনে হয়েছে। ঝাল-ঝোলের জন্য চীনাদের খাবার খাওয়াই উত্তম, বিনি পয়সাও ওদের মিষ্টি খাওয়া ঠিক না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমার এক চীনা ছাত্রী তার বিয়ে উপলক্ষে রেস্তোঁরায় ভোজ খাইয়েছিল। বললাম বিয়ের ছবি দেখাও। তাতে সে প্রায় শ'খানেক ছবি ফরওয়ার্ড করে দিল। এই বালিকাটি বেশ অবস্ছথাপন্ব পরিবারের মেয়ে, তার মা-বাপযথাসাধ্য খরচ করেছে। দেখেশুনে যা বুঝলাম তা হল এইঃ
১। আচার সামান্যই, যা আছে তা হল লোকাচার বা স্ত্রীয়াচার, তাই কিছু বিদেশী/পাশ্চাত্য রীতির আমদানী হয়েছে যেমন কেক কাটা, শ্যাম্পেন পান ও পাশ্চাত্য পো্শাক পরা।
২। বিয়েতে ভোজই হল আসল ব্যাপার।
৩। আচার সামান্য বলেই হয়তো বর-কনেরা আজকাল অসংখ্য ছবি তোলে আধুনিক পোষাক এবং চীনের নানান ঐতিহাসিক সাম্রাজ্যের পোষাক পরে!
নতুন মন্তব্য করুন