Warning: Creating default object from empty value in theme_img_assist_inline() (line 1488 of /var/www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/img_assist/img_assist.module).

বিশ্ব মায়ের আঁচল পাতা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: শুক্র, ১৭/০৪/২০০৯ - ১:১০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বোনপোকে বুয়েটে পৌঁছে দিয়ে সন্ধ্যার পর বাসায় ফিরছিলাম - পলাশী থেকে ফুলার রোড ধরে। এই রাস্তাটা দিয়ে যখনই যাই আমার চোখ পড়ে উদয়ন স্কুলের সামনে্র সড়কদ্বীপের দিকে। আমার বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়। মনে পড়ে এইখানে এখন যে ভাস্কর্য আছে তা হবার কথা ছিলনা। অন্য কিছু হবার কথা ছিল। আমাদের একটা বিমূর্ত স্বপ্ন এখানে মূর্ত হবার কথা ছিল। এখানে শতাব্দী স্মারক ভাস্কর্য “বিশ্ব মায়ের আঁচল পাতা” হবার কথা ছিল।

**************************************

১৯৯৩ সালের শুরুর দিকের কথা। তখন বুয়েটের নিচের দিকের ক্লাসে পড়ি। সে বৎসর এপ্রিলে বাংলা ১৪০০ সাল শুরু হবে। এ’নিয়ে সবার মধ্যেই কম-বেশি উত্তেজনা। কী করা যায়, কীভাবে পয়লা বৈশাখ পালন করা যায়। যদিও নতুন শতাব্দী আসতে তখনও এক বৎসর দেরি। এমন সময় একদিন পলাশীর কাছে রাস্তার পাশে চা খেতে গিয়ে দেখি পবনপুত্র দ্বিতীয় পাণ্ডব আর আমদের এক জাহাজী বন্ধু চা খাচ্ছেন। পবনপুত্র হঠাৎ আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আচ্ছা, এমন একটা বালি ঘড়ি কি বানানো যায় যেটা একশ’ বৎসর চলবে? মানে একশ’ বৎসর পর সেটা উলটানো দরকার হবে”। আমি হিসেব কষে দেখালাম ব্যাপারটা মোটামুটি অসম্ভব। তা বালি যত মিহিই হোক, অথবা বালি চলার পথ যত সরুই হোক। জাহাজী জানালেন পবনপুত্র গত দু’দিন ধরে এ’নিয়ে নানা চিন্তা-ভাবনা, গবেষণা করছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করলাম, কিন্তু কেন? পবনপুত্রের উত্তর, এমন একটা বালি ঘড়ি বানালে, বাংলা ১৪০০ সালের পয়লা বৈশাখে তা চলা শুরু করলে ১৪৯৯ সালের চৈত্রের শেষদিন পর্যন্ত চলবে। ১৫০০ সালের পয়লা বৈশাখে তা আবার উলটে দেয়া হবে। আমরা কি এমন একটা বালি ঘড়ি বানাতে পারি না? আমি বললাম, দেখতেই তো পাচ্ছেন বালি ঘড়িটা বানানো সম্ভব না। এরচেয়ে এমন একটা স্তম্ভ টাইপ কিছু বানানো যায় না যেখানে প্রতি বৎসর একটা করে নতুন বাতি যোগ হবে? একশ’ বৎসরে মোট একশ’টা বাতি যোগ হবে। ১৫০০ সালের পয়লা বৈশাখ সকালে শেষ বাতিটা জ্বালিয়ে জিনিষটার পূর্ণতা দেয়া হবে। পবনপুত্র দোনোমনা করলেন, শেষে বালি ঘড়ির অসম্ভাব্যতা মেনে নিলেন।

বালি ঘড়ির চিন্তাটা আপাতভাবে গেলেও নতুন একটা চিন্তা কিন্তু আমাদের মাথায় ঢুকে গেল, নতুন শতাব্দীর আগমণ উপলক্ষ্যে বড়-সড় একটা কিছু করতে হবে, এবং তার মধ্যে বালি ঘড়ি হোক আর স্তম্ভই হোক, ভাস্কর্য জাতীয় একটা কিছু থাকবে। বিষয়টা অন্য পাণ্ডবদেরও জানানো হল। কম-বেশি সবাই এ’নিয়ে ভাবলেন, নানা রকম মত দিলেন। শেষ পর্যন্ত ঠিক হল একটা ভাস্কর্য তৈরি হবে বুয়েট, উদয়ন স্কুল আর এস এম হলের সংযোগস্থলের সড়কদ্বীপে অথবা ফুলার রোডের অপর প্রান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনের সড়কদ্বীপে। একটা স্মারক সংকলন বের করা হবে বাঙালী জীবনের একশ’টা দিক নিয়ে। লিখবেন সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষজ্ঞরা। একটা সপ্তাহব্যাপী বাঙালী সাংস্কৃতিক উৎসব করা হবে, যেখানে দেশের চার প্রান্ত থেকে শিল্পী-কলা-কুশলীরা একমাস ধরে লং মার্চ করে ঢাকার দিকে আগাতে থাকবেন। পথে তাঁরা অনুষ্ঠান করতে করতে আসবেন, তাঁদের সাথে যোগ দিতে থাকবেন মধ্যবর্তী স্থানের শিল্পীরা। প্রধান প্রকল্প এই তিনটি। এদের যাবতীয় খুঁটিনাটি দিক নিয়েও আমাদের বিস্তর গবেষণা-আলোচনা চলতে থাকল।

কাহিনীর এই পর্যায়ে এসে আমাকে একটি বিষয়ে পূর্বাহ্নেই পাঠকের ক্ষমা প্রার্থনা করতে হচ্ছে। এই বর্ণনায় আমি চেষ্টা করব ঘটনা সংশ্লিষ্ট জীবিত ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ না করতে। কারণ, ব্যক্তিগত পাপ ও দুঃখের কথা স্বীকার করার সময় অহেতুক বিতর্কে জড়াতে চাই না।

একটা সত্য আমরা টের পেলাম যে এই মাপের কাজ করার বয়স, অভিজ্ঞতা, অর্থ, জানা-শোনা কোনটাই আমাদের নেই। তাই আমরা শরণাপন্ন হলাম আমাদের এক প্রিয় শিক্ষকের। তাঁকে আমরা এরপর থেকে শিক্ষকই বলব। সবশুনে তিনি প্রথমে আমাদের এর অসম্ভাব্যতা বোঝালেন। পরে আমাদের পীড়াপীড়িতে এতে জড়িত হতে রাজী হলেন। এরপর যাবতীয় পরিকল্পনা, লোক নির্বাচন, কমিটি গঠণ, সভা আয়োজন, পরামর্শ দেয়া সব কিছুতেই শিক্ষক আমাদের সাথে ছিলেন। প্রায় প্রতিদিন রাত দশটার পর আমি আর দ্বিতীয় পাণ্ডব তাঁর বাসায় যেতাম। আলোচনা চলত মধ্যরাত পর্যন্ত। পরদিন সকালে আমরা কাজে নেমে পড়তাম।

মূল প্রকল্প ভাস্কর্য নির্মাণের জন্য যাজ্ঞসেনীর সহায়তায় আমাদের যোগাযোগ হল দেশের একজন প্রধাণ শিল্পীর সাথে। এরপর থেকে তাঁকে আমরা শিল্পী বলব। শিল্পী তাঁর এক অনুজপ্রতিম ভাস্করকে দ্বায়িত্ব দিলেন ভাস্কর্যটির পরিকল্পনা করার। শিল্পীর এই অনুজপ্রতিম ভাস্কর হচ্ছেন প্রয়াত ভাস্কর আনোয়ার জাহান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন শিক্ষক। আশির দশকে জ্যাভেলিনধারী এক ক্রীড়াবিদের বিশাল ভাস্কর্য নির্মাণ করেছিলেন তিনি। স্থাপণ করা হয়েছিল আজকের নূর হোসেন চত্বরে। ভাস্কর্যটি স্থাপণের একদিনের মাথায় তখনকার সামরিক জান্তা সেটি তুলে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল অজ্ঞাত স্থানে। আজো সেটির হদিস মেলেনি। অভিযোগ ভাস্কর্যটি নাকি জাতীয় মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট করছিল।

সঙ্কলনের সম্পাদনার ভার দেবার কথা ভাবা হল এক বিতর্ক সংগঠককে। সাথে তাঁর সংগঠনের সক্রিয় সহযোগিতা নেবার কথাও সাব্যস্ত হল। এরপর থেকে আমরা তাঁকে বিতার্কিক বলব। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ভাবা হল দেশের এক বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে। এরপর থেকে তাঁকে আমরা গায়ক বলব। কমিটির প্রধান করা হল প্রয়াত সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনকে। সাথে থাকলেন বুয়েট আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদ্বয়, জনাব শিক্ষক, জনাব শিল্পী, জনাব বিতার্কিক, জনাব গায়ক। যাবতীয় কামলা খাটার জন্য প্রধান কাণ্ডারী পবনপুত্র, সাথে বাকি পাণ্ডবেরা, পাণ্ডবদের বন্ধুদের একাংশ, জনাব বিতার্কিকের অল্প-স্বল্প লোকজন।

প্রথম দিকে কাজ এগিয়ে গেল তরতর করে। ভাস্কর আনোয়ার জাহান ভাস্কর্যের মডেল নির্মান করে ফেললেন। ভাস্কর্যের নাম দিলেন তিনি “বিশ্ব মায়ের আঁচল পাতা”। ভাস্কর্যটির মডেলের ছবি দেখুন। শিক্ষকের সহায়তায় সঙ্কলনের জন্য বিষয় আর লেখকদের নাম ঠিক করে ফেললাম আমি আর পবনপুত্র। লেখকদের সম্মানীর বিনিময়ে লেখা দেবার অনুরোধপত্রও হাতে হাতে পৌঁছে দেয়া হল। কমিটির সভা চলতে থাকল নিয়মিত ভাবে বুয়েটে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হোম এণ্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে। পরিকল্পিত স্থান দুটোরই সার্ভে করে ফেললাম আমরা নিজেরাই। কর্তৃপক্ষের অনুমতিও মিলল উদয়ন স্কুলের সামনের সড়কদ্বীপের জন্য।

শিক্ষক পরামর্শ দিলেন ভাস্কর্যটি নির্মাণের ক্ষেত্রে ফেরোসিমেন্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য। বিষয়টির যথার্থতা যাচাই করার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু খোঁজাখুঁজির দরকার হল। এরজন্য পুরকৌশলের একজন প্রবীন শিক্ষকের শরণাপন্ন হলাম। তিনি তাঁর বিভাগের লাইব্রেরীতে নিয়ে জার্ণাল রাখার শেলফের দিকে নির্দেশ করে বললেন, “এখান থেকে খুঁজে নিয়ে জেরোক্স সেকশনে দিয়ে যাবে, সাতদিন পর জেরোক্স সেকশন থেকে কপি নিয়ে যাবে”। ডাক্তারী পড়ুয়া আমাদের এক বন্ধুকে নিয়ে আমি নামলাম এই সাগর সেঁচার কাজে। বন্ধুটিকে বললাম, “যেখানেই ফেরোসিমেন্ট কথাটা দেখবেন সেটিই আলাদা করে রাখবেন, আমি আবার দেখে ঠিক জিনিষটা বেছে নেব”। দিন শেষে একটা গন্ধমাদন দাঁড় করানো গেল। সাতদিন পর জেরোক্স সেকশনে গেলে আমাদের একটা জেরোক্স করা বই দিয়ে বলা হল, “এইটা নিয়ে বাইরে থেকে ফটোকপি করে ফেরত দিয়ে যাবেন”। বইটা খুলে দেখি আমাদের খুঁজে বের করা গন্ধমাদনেরই জেরোক্স কপি বাঁধানো হয়েছে যার প্রথম পৃষ্ঠায় লেখা আছে “Use of ferrocement in open air sculpture – a collection of articles” by Professor ……(বলাই বাহুল্য নামটি সেই প্রবীন শিক্ষকের)। তখন অল্প বয়স ছিল তাই একটা ছোট-খাট ধাক্কা খেলাম। আমাদের জানা ছিলনা আমাদের জন্য তখনও অনেক বড় বড় ধাক্কা খাওয়া বাকি আছে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের যোগাড়-যন্ত্রের জন্য গায়কের বাসায় বার দুই বসলাম। দেখলাম কাজের জন্য তিনি আমাদেরকে আস্তে আস্তে ক্ষমতাসীন দলের চাঁইদের দিকে ঠেলছেন। তাঁর ভাষ্য, সরকার আর তার দলের সহযোগিতা ছাড়া এমন কাজ নামানো সম্ভব না। আমরা সমূহ বিপদ আঁচ করে গায়কের সংস্পর্শ থেকে বের হবার কথা ভাবলাম।

তখনো কারণে অকারণে যেখানে সেখানে স্পনসর হবার জন্য একপায়ে খাড়া মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলোর আবির্ভাব হয়নি। তাই যাবতীয় কাজের অর্থায়ণের জন্য কমিটির কর্তাব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট থেকে কিছু করা যায় কিনা ভাবছিলেন। ছোট ছোট স্পনসর নেবার কথাও হচ্ছিল। প্রাথমিক কাজগুলো করার জন্য বুয়েট সামান্য কিছু টাকাও দিয়েছিল। তবে পবনপুত্র এই প্রাথমিক কাজগুলো করতে গিয়ে নিজের স্কলারশীপের টাকা, টিউশনীর উপার্জন সব ব্যয় করে ফেললেন। সম্ভবতঃ তার জমানো অল্প টাকাও ছিল যা ব্যয় হল একই কাজে। আমরা বাকি পাণ্ডবেরা বা আমাদের নিকট বন্ধুরা পবনপুত্রের এই all-out প্রচেষ্টার ব্যাপারটা বুঝতে পারছিলাম। তাই কিছুটা শংকিতও ছিলাম তাকে নিয়ে। সংশ্লিষ্ট বাকি কামলাদের উজাড় করে দেবার ব্যাপারটি পবনপুত্রের সাথে তুলনীয় নয় বলে উহ্য রাখলাম।

তারপর হঠাৎ কতগুলো ঘটনায় সব কাজেই কেমন যেন ধাক্কা লাগল। প্রথমে মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন তার পর ভাস্কর আনোয়ার জাহান চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। এই দুই মৃত্যু আমাদের হতবল করে দিল। এরপর জনাব শিক্ষক তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। তিনি অন্যদিকে ব্যস্ত হয়ে পড়লন। ফলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের যোগাযোগে ব্যাঘাত ঘটল। রাজনৈতিক টানা-পোড়েনে দুই উপাচার্যই নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অসুবিধায় পড়ে গেলেন। ভাস্করের মৃত্যুতে শিল্পী মুষড়ে পড়লেন। ফলে আমাদের আর কাজ আগালো না। এদিকে ১৪০১ সালও কাছিয়ে আসতে থাকল। পবনপুত্র কিন্তু হাল ছাড়লেন না। তিনি কিন্তু বিষয়টিতে লেগেই থাকলেন। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উদ্যোগে একটা স্থাপণা সহজ ব্যাপার নয়। বিশেষতঃ রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্তারা যখন সেখানে নিজের ক্ষমতাকালে লাভের আশা দেখতে পান না। ফলে কর্তৃপক্ষের অসন্তোষের মুখে তাঁদেরই আঙ্গিনাতে ভাস্কর্যটি নির্মাণের আশা আর থকল না। ভাস্কর্যটিই মূল ব্যাপার থাকায়, আর তার আশা নিরাশায় পরিণত হওয়ায় সঙ্কলন আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যাপারগুলোও মুখ থুবড়ে পরল। অর্থায়ণের জন্য যাঁরা আগে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন তারাও মুখ ফিরিয়ে নিলেন।

এরপরও অনেকদিন দ্বিতীয় পাণ্ডব তার পিঠে ঝোলানো জলপাই রঙা ব্যাগে প্রকল্পের প্যাড, পরিকল্পনার নানা খসড়া, নানা রকম চিঠি নিয়ে ঘুরতেন। তখনকার তার কথা মনে করলে আমার এখনো উইলিয়াম ওয়ালেসের কথা মনে হয়। যাই হোক শেষ পর্যন্ত কিছুই আর হলনা। ১৪০১ সাল যখন সত্যি সত্যি কাছে চলে আসল আমাদের কাছে তখন ঢাকা শহরটিকে অসহ্য মনে হল। ২৯শে চৈত্র সাংগ্রাইং উৎসব দেখার জন্য আমরা সবাই বান্দরবানের চিম্বুক ছাড়িয়ে এম্পুপাড়া চলে গেলাম। এক সময় আমাদের বয়স আরো বাড়লো, আমরা একটা বড় স্বপ্নের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে বুয়েট ছেড়ে চলে আসলাম।

মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা হেরে গেলাম কেন? ভাবলে অভিজ্ঞতার অভাব আর মানুষকে নির্বিচারে আস্থায় আনা ছাড়া আমাদের আর কোন ত্রুটি চোখে পড়ে না। এই পণ্ডশ্রম আমাদের অবশ্য জীবন চলার পথে অনেকগুলো দরকারী শিক্ষা দিয়েছিল। ঐ শিক্ষাগুলোর জন্য আজ আমাদের সোনালী সময়গুলোকে নিছক তামার দামে বিক্রয় বলে মনে হয় না। যেমন, এই সময় ক্ষমতাবান, প্রথিতযশা, সর্বজন শ্রদ্ধেয় অনেক মানুষের এমন স্বার্থান্ধ, আত্মকেন্দ্রিক রূপ দেখেছি যা আমাদের ধারণায় ছিল না। ব্যক্তিগতভাবে আমি তখন থেকে মানুষের যশের ছটায় দিশেহারা হই না, এবং নামজাদা মানুষদের সঙ্গ সযত্নে এড়িয়ে চলি। গ্ল্যামারের প্রতি অহেতুক মোহও তখন থেকে সারাজীবনের জন্য দূর হয়ে গেছে।

**************************************

ত্রিভুজাকার সড়কদ্বীপের একবাহুর পাশ ঘেঁষে আমার রিকশা নিরবে চলে যায়। আমি ফিরে ফিরে বর্তমান ভাস্কর্যটিকে দেখি। তাল তাল মাংসস্তুপের মত গঠণ, সাদা প্লাস্টার অভ প্যারিসের ওপর হোলির রঙের মত রঙের ছাপ। মনে হয় যেন কেউ গতকাল এখানে রঙ খেলে গেছে। এখান দিয়ে ওখান দিয়ে আলো বেরুচ্ছে, পানি পড়ছে, ক্যারক্যারে শব্দ হচ্ছে। মনে হল রাজনীতি যখন শিল্পকেও গ্রাস করে তখন নান্দনিকতা দূরের বস্তু হয়ে যায়। শিল্পতো ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক নয়, শিল্প ক্যানভাসারের একঘেঁয়ে বর্ণনাও নয়। ইতিহাসই বরং শিল্পকে অধ্যয়ন করে নিজেকে নির্মাণ করে, পরিমিতি বোধই বরং রাজনৈতিক বানিজ্যবোধ থেকে শিল্পকে নিরাপদ দূরত্বে রাখে। থাক এসব, ছোট মুখে বড় বড় কথা আর নাই বা বললাম। ব্যক্তিগত পাপ আর দুঃখের গল্প এখানেই শেষ করি। নটে গাছটি মুড়ালো।


মন্তব্য

মূলত পাঠক এর ছবি

বর্তমানে যে ভাস্কর্যটি আছে তার ছবি দেখতে পাওয়া যায় কোথাও?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

রণদা' মাঝখানে ঢাকার আইল্যাণ্ডগুলোর ছবি নিয়ে একটা সিরিজ শুরু করেছিলেন। তাঁকে অনুরোধ করছি সময় করে আলোচ্য আইল্যাণ্ডের ছবি তুলে সিরিজটা আবার শুরু করতে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রণদীপম বসু এর ছবি

পাণ্ডব দা', আপনি কি এই সড়ক-দ্বীপটার কথা বলছেন ?

auto

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঠিকই ধরেছেন দাদা। অসংখ্য ধন্যবাদ ছবিটা দেবার জন্য। আপনি একটু কষ্ট করে গোটা আইল্যাণ্ডটি জুড়ে যেসব আকন্ঠ, আবক্ষ আর পূর্ণাঙ্গ মূর্তি আছে সেগুলোর ছবিসহ একটা স্বতন্ত্র পোস্ট দিন। এক আইল্যাণ্ডে সারা দেশের হাজার বৎসরের ইতিহাস কিভাবে লেখা হয়েছে প্রবাসীরা তা একটু দেখুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ঠিক বুঝতে পারছি না কী লেখা উচিত...

রাজনীতি যখন শিল্পকেও গ্রাস করে তখন নান্দনিকতা দূরের বস্তু হয়ে যায়।

এ উক্তিটাই মনে হয় সবচেয়ে যথাযথ...।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। শিল্পীর প্রশ্রয় পেলেই রাজনীতি রাক্ষস হয়ে উঠতে পারে। দোষটা রাজনীতির নয়। রাক্ষস রাজনীতিকে পাত্তা না দিয়ে শিল্পচর্চা চালিয়ে যাবার দুনিয়াজোড়া ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সচল জাহিদ এর ছবি

আরিফ ভাই

বুয়েট ডিবেটিং ক্লাবের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকবার কারনে কিছু অসাধারন মানুষদের সাথে আমাদের সম্পর্ক তৈরী হয়েছিল যাকে আমি আমার সৌভাগ্য মনে করি সবসময়। আদিল এর কাছে এই কাহিনীর ভাসা ভাসা কিছু শুনেছিলাম, আজকে আসল ইতিহাসটা জেনে ভাল লাগছে। আপনার প্রতি, বাবর ভাই এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি রইল সশ্রদ্ধ স্যালুট। হয়তবা আপনাদের স্বপ্নটা বাস্তবের দেখা পায়নি, হয়ত এই ভাষ্কর্য্যের আর কখনই মডেল থেকে প্রোটোটাইপ হওয়া হবেনা, কিন্তু কি আসে যায় তাতে ? আমরাতো স্বপ্ন দেখি বলেই বেঁচে থাকি। যতদিন আমি, আমরা, এই সচলায়তনের মাধ্যমে অগনিত লেখক, পাঠক বেঁচে থাকবে ততদিন আপনাদের স্বপ্নও আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে, একসময় আমরা ছড়িয়ে দেব সেই স্বপ্ন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে। সুন্দর, প্রগতিশীল স্বপ্নের কখনো মৃত্যু ঘটেনা ভাইয়া বরং বেচে থাকে মানুষের মাঝে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রিয় রিপন, তোমাকে আমার ধন্যবাদ জানানোর কিছু নেই। প্রতিটি মানুষের নিজের স্বপ্ন থাকে। পূর্ব-পুরুষের কাছ থেকে পাওয়া স্বপ্নটিও মূলরূপ থেকে পরিবর্তিত হয়ে তার নিজের স্বপ্নের সাথে মিলে নতুন রূপ পায়। আমাদের স্বপ্নগুলো বাস্তবের রূপ না পেলেও আফসোস নেই। কারণ, নতুন রকমের স্বপ্ন দেখার মানুষ তৈরি হয়ে গেছে। তারাও আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। সত্য ও সুন্দরের মৃত্যু নেই। ভালো থেকো।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

এই লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে এই স্বপ্নের মৃত্যুর দর্শক আমিও ছিলাম। অর্থক্ষয়, মাতৃবিয়োগ, প্রেমনাশ ... সব কাটিয়ে ওঠা যায়, স্বপ্নঘাতের ছায়া থেকে বের হওয়া যায় না।

বড় বড় মানুষের ছায়ায় যে আশ্রয় নিতে হয় না, তা আমিও মূল্য দিয়ে শিখেছি। তারা হুটহাট করে নিজের ছায়া গুটিয়ে নিতে পারঙ্গম, এতে রোদের আঁচ যেমন হঠাৎ এসে গায়ে লাগে, তেমনি তাদের ছোট চেহারা দেখে শ্রদ্ধালুপ্তি ঘটে।

(প্রায়)অপ্রাসঙ্গিক সংযোজন, শতাব্দীর দশকগুলোর জন্যে দশ কলামের দশটা বালিঘড়ি নিয়ে স্টোনহেঞ্জের মতো করে কোন ভাস্কর্য হতে পারে কি? এক একটা ঘড়িতে এক এক রঙের দানা থাকবে। এটা একটা বিরাট আভ্যন্তরীণ ট্যুরিস্ট অ্যাট্রাকশনও হতে পারে, এক এক দশকের শুরুর সময় লোকে সেই বালিঘড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলবে, নাতিপুতির সাথে আরো চল্লিশ বছর পর আরেকটা বালিঘড়ির সামনে তুলবে হাসি । এই ভাস্কর্য হতে পারে ঢাকা থেকে দূরে কোথাও, বগুড়া বা চাঁপাইনবাবগঞ্জে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

স্বপ্নচারী মানুষই জানেন স্বপ্নাঘাতের কষ্ট কেমন। সারাটি জীবন পলে পলে ভোগ করতে হয়, কিন্তু কাউকে বোঝানো যায় না।

আমরা মনে হয় প্রতিভাবান বা সফল মানুষদেরকে বড় মানুষ বলে ভুল করে ফেলি। বড় মানুষেরা হয়তো তেমন সফল হন না। তবে এ'ধরণের আঘাত থেকে একটা বিষয় শিখেছি, মানুষের বয়স-অবস্থান-শিক্ষা যাই হোক না কেন, তাকে অশ্রদ্ধা করতে নেই। কারণ, আপাত অযোগ্য মানুষও মহৎ স্বপ্নকে ধারণ করতে পারেন।

প্রজন্মান্তরে স্বপ্নের রূপ কেমন পালটে যেতে পারে আপনার স্টোনহেঞ্জ ধাঁচের ভাস্কর্যের প্রস্তাব তার প্রমাণ। অবশ্যই এমন কিছু হতে পারে। রাজধানীর মোড়ে মোড়ে ভাস্কর্য না বানিয়ে শিল্পকে দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেয়াই শ্রেয়। একটা বড় শিল্পকর্ম দেখার জন্যও নূন্যতম স্পেস দরকার যা ঢাকাতে খুব কম আছে। বগুড়া বা চাঁপাইনবাবগঞ্জের খোলা প্রান্তরে অমন বিশাল শিল্পকর্ম থাকলে সেটা বেড়াবারও একটা জায়গা হতে পারে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এনকিদু এর ছবি

অনেক কিছু জানলাম । ধন্যবাদ পাণ্ডবদা ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সব প্রজন্মেই স্বপ্ন দেখা মানুষদের এমন কিছু গল্প থাকে। আপনাদের প্রজন্মের গল্পটা না হয় এই অবসরে আমাদের সাথে শেয়ার করলেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রণদীপম বসু এর ছবি

রাজনীতি যখন শিল্পকেও গ্রাস করে তখন নান্দনিকতা দূরের বস্তু হয়ে যায়। শিল্পতো ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক নয়, শিল্প ক্যানভাসারের একঘেঁয়ে বর্ণনাও নয়। ইতিহাসই বরং শিল্পকে অধ্যয়ন করে নিজেকে নির্মাণ করে, পরিমিতি বোধই বরং রাজনৈতিক বানিজ্যবোধ থেকে শিল্পকে নিরাপদ দূরত্বে রাখে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আবারো ধন্যবাদ দাদা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রানা মেহের এর ছবি

কী অসাধারণ একটা লেখা।

সেই স্বপ্নের নায়কদের জন্য কুর্ণিশ রইলো।
খলনায়কদের জন্য অনুকম্পা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ।

স্বপ্নচারীরা স্বপ্ন দেখে যাবে। বাস্তবায়নের চেষ্টাও করে যাবে। কখনো হয়তো সফলতার মুখ দেখবে, কখনো সফলতা অধরা থেকে যাবে। তবু স্বপ্ন দেখা আরে চেষ্টা থেমে থাকবেনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

অপূর্ণ এক অপূর্ব পরিকল্পনার অসাধারণ বয়ান পড়ে স্তব্ধ হয়ে বসে রইলাম খানিকক্ষণ।

প্রকল্পটির উদ্যোক্তাদের জন্য অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা রইলো।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ।

আবার কখনো হয়তো আমরা নতুন কোন একটা স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কাজে নামতে পারবো। সেই আশা এখনো ছাড়িনি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি


রাজনীতি যখন শিল্পকেও গ্রাস করে তখন নান্দনিকতা দূরের বস্তু হয়ে যায়। শিল্পতো ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক নয়, শিল্প ক্যানভাসারের একঘেঁয়ে বর্ণনাও নয়। ইতিহাসই বরং শিল্পকে অধ্যয়ন করে নিজেকে নির্মাণ করে, পরিমিতি বোধই বরং রাজনৈতিক বানিজ্যবোধ থেকে শিল্পকে নিরাপদ দূরত্বে রাখে। থাক এসব, ছোট মুখে বড় বড় কথা আর নাই বা বললাম। ব্যক্তিগত পাপ আর দুঃখের গল্প এখানেই শেষ করি। নটে গাছটি মুড়ালো।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ, মানিক ভাই।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অর্জুন মান্না [অতিথি] এর ছবি

পড়ে মনে হচ্ছে কোথায় যেন আমি্ও ছিলাম। এমন সবকিছু ব্যর্থ হয়ে যায় কিছু লোকের জন্য। আর তারাই সবসময় টিকে থাকে। কী করে কে জানে!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

না, মান্না, যাদের জন্য অনেক কিছু ব্যর্থ হয়ে যায় তারাই শুধু টিকে থাকে না। আমরাও সাথে সাথে টিকে থাকি। নতুন কিছু করার জন্যই আমরা বেঁচে থাকি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

যেদিন থেকে হাতে কলম / কিবোর্ড ধরেছেন সেদিন থেকেই ভয় পাচ্ছিলাম, একদিন এই লেখাটা পড়তে হবে। রাজ্যের বিষাদ আর হতাশায় মনটা ভরে যায় এই অধ্যায়টা মনে হলে। আমিও ভণ্ড অনেকের মত... কিন্তু জীবনের ক্ষত ঢাকার মত গান-টানও নেই।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধর্ম্মপুত্র, যেদিন কলম/কী-বোর্ড হাত থেকে দূরে ছিল সেদিনও মাথায় এই গল্প ছিল। গত পনের বৎসর ধরে মনে-মাথায় এই পাপ আর দুঃখের গল্প বয়ে বেড়াচ্ছি। অসংখ্যবার অসংখ্যভাবে গল্পটাকে ভেবেছি। তারপর যা লিখেছি তাতো দেখতেই পাচ্ছেন। এরপরও মানুষ যখন এই গল্প পড়ে একাত্মতা বোধ করে, আবেগাক্রান্ত হয়, নির্লজ্জ আমিও তখন মরমে মরে যাই। আপনি জানেন, একটা দিনের দূরে থাক, সেসময়ের একটা ঘন্টার অনুভূতির কথাও লিখতে পারিনি। পারবোও না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্যাম এর ছবি

ধন্যবাদ পাণ্ডবদা - অনেক কিছু জানলাম - আর আপনার লেখা সবসময়ই সুখপাঠ্য সে যদি বিষাদও ছড়ায়।

ভাস্কর্যটির মডেলের ছবি দেখুন।

ছবি ছিল নাকি কো্নো? এখন দেখাচ্ছেনা - মন্তব্যে রণদা'র ছবিও দেখাচ্ছেনা মন খারাপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।