বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যারা লেখাপড়া করেছেন তাদের মধ্যে খুব কমজনই পাওয়া যাবে যিনি কোন না কোন বন্ধুগ্রুপের সদস্য ছিলেন না। এই অঘোষিত সংগঠনগুলোর কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন, এই গ্রুপগুলো ছেলেমেয়েদের মিলিত গ্রুপ হয় যেখানে মেয়েদের সংখ্যা বোধগম্য কারণে কম হয়। গ্রুপে অন্ততঃ একজন বেশ মোটা ও একজন বেশ শুকনা সদস্য থাকে, অথবা একজন বেশ ঢ্যাঙ্গা আর একজন বেশ খাটো সদস্য থাকে। গ্রুপে অন্ততঃ একজন নেতাগোছের, একজন কবিগোছের, একজন গায়ক/বাদকগোছের, একজন প্লেবয়গোছের এবং একজন বেয়াক্কেলগোছের সদস্য থাকে। আজকাল অবশ্য গ্রুপে একজন হুজুর/নিনজাগোছের সদস্যও দেখা যায়। বন্ধুগ্রুপগুলোর প্রিয় বেড়াবার জায়গা, প্রিয় রেস্তোরাঁ, প্রিয় খাবার, প্রিয় আড্ডার প্রসঙ্গ, প্রিয় ঝগড়া, প্রিয় পঁচানোর মানুষ থাকে। আর থাকে তাদের নিজস্ব একটা গান (একটার বেশিও থাকতে পারে)। এই গানটা সুরো-বেসুরো গলায় আড্ডার সবাই গাইতে পারে। গায়ক/বাদকগোছের সদস্য গলা খুলে গাইতে শুরু করে আর বাকিরা ধুঁয়া ধরে। আড্ডার আনন্দে, আড্ডার কষ্টে, আড্ডার হতাশায় একই গান চলতে থাকে - আড্ডার জাতীয় সঙ্গীত। এই গান গাইতে আড্ডার কারো ক্লান্তি নেই, বিরক্তি নেই, লজ্জা নেই।
আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম (আন্ডারগ্রেডে) তখন আমিও অমন এক গ্রুপের সদস্য ছিলাম। আমাদের গ্রুপেও সাধারণ বৈশিষ্ট্যমত সবকিছুই ছিল, হুজুর/নিনজা সদস্য ছাড়া। আমরাও সেন্ট্রাল ক্যাফে বা বিগ বাইটে আড্ডা দিতে, নীরব-মিতালী-সোহাগ-স্টার-রাজ্জাকে খেতে, ঢাকা শহরের আজব জায়গায় ঘুরতে, হুট করে ময়মনসিংহ বা সাভার চলে যেতে, সম্মিলিতভাবে কাউকে পঁচাতে ভালোবাসতাম। আমাদের আড্ডা চলত অবিরাম আর দশটা আড্ডার মতই, তারসাথে প্রায়ই যুক্ত হত আমাদের স্বকন্ঠ সঙ্গীত। আমাদের আড্ডার জাতীয় সঙ্গীত ছিল জন ডেনভারের “For Baby”। আড্ডায় এর ইনট্রোডিউসার ছিলেন ইন্দ্রপুত্র তৃতীয় পাণ্ডব।
গিটারবাদক ইন্দ্রপুত্রর মনমেজাজ ভালো থাকলে গিটারে ঝংকার তুলে গেয়ে উঠতেন,
I’ll walk in the rain by your side
I’ll cling to the warmth of your hand
I’ll do anything to keep you satisfied
I’ll love you more than anybody can
আরো দরাজ গলায় ধর্ম্মপুত্র গাইতেন,
And the wind will whisper your name to me
Little birds will sing along in time
Leaves will bow down when you walk by
And morning bells will chime
গ্রুপের আমরা বাকি পাণ্ডব-অপাণ্ডব সদস্যরা ধুঁয়া ধরতাম। আমাদের কন্ঠ যেমনই হোক আমাদের চারপাশ ভরে উঠত সুরের ধারায়। শুধুমাত্র এই গানটাই নয়, জন ডেনভারের “Country Road” আর “Annie's Song”-ও আমাদের প্রিয়র তালিকায় ছিল। বস্তুতঃ জন ডেনভারের প্রায় সব গানই আমাদের পছন্দের ছিল, এখনো আছে।
************************************************
আমার জন ডেনভার শোনা শুরু আশির দশকের শেষভাগ থেকে। শুরুতে হাতে গোনা কয়েকটা গান ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শুনতাম। পরে নিউ এলিফ্যান্ট রোডের রেইনবোর কবীর ভাইয়ের কল্যানে জন ডেনভারের গানের ভাণ্ডার আবিষ্কার করি। তারপর নব্বইয়ের দশকের বড় অংশ জুড়ে কানে-মাথায়-গলায় জন ডেনভার বাজতে থাকে। জন ডেনভার এমন একজন শিল্পী যাকে পরিচয় করিয়ে দেবার চেষ্টা বাতুলতমাত্র। এই প্রায় অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে তাঁর সম্পর্কে অনেক তথ্যই এখন আমাদের জানা। খামাখা সেগুলো বলতে যাবোনা, শুধু এইটুকে ছাড়া যে, যিনি জন ডেনভার শোনেননি তিনি কান্ট্রি গানের একটা বড় দিক সম্পর্কে অজ্ঞ রয়ে গেছেন। আর জন ডেনভার শুধু একজন বড় গায়কই নন, একজন বড় মাপের মানুষও ছিলেন।
************************************************
সব গল্পেরই যেমন শেষ থাকে আমাদের আড্ডার গল্পেও তেমন শেষ আছে। ১৯৯৭ সালের ৯ই অক্টোবর রাতে আমাদের গায়ক সদস্য ইন্দ্রপুত্রের গায়ে হলুদে আমরা শেষবারের মত সবাই একসাথে কোরাস গাই। ইন্দ্রপুত্রের গিটারের ঝংকার আর আমাদের বেসুরো গলায় জুট রিসার্চ ক্যাম্পাসের বাতাস কেঁপে কেঁপে ওঠে। জন ডেনভার গাইতে গাইতে আমরা মধ্যরাতে রিকশা চেপে গাবতলী বাসস্ট্যাণ্ডে যাই, পরোটা-মাংস-চা খেয়ে ধোঁয়া টানতে টানতে ভোররাতে গন্তব্যে ফিরি। পরদিন ইন্দ্রপুত্রের জীবিত জীবনের শেষ হয়, বিবাহিত জীবন শুরু হয়। এরপর আর কখনো আমরা এভাবে রাতভর আড্ডা দিয়েছি, জন ডেনভার গেয়েছি বলে মনে পড়েনা। কি আশ্চর্য! তার মাত্র দুইদিন পর ১৯৯৭ সালের ১২ই অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়ার মন্টেরি পেনিনসুলা বিমানবন্দর থেকে দুই সীটের একটা Long-EZ বিমান নিয়ে একা ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যে জন ডেনভার বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধ্বসে পড়েন। সাতাশ হাজার ঘন্টার বেশি ওড়ার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিমানচালক জন জীবনের শেষ ফ্লাইটটাতে বার্ট রুটানের পাখিটাকে নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারায় তাঁর পরাণ পাখিই অসীমের পানে ডানা মেলে।
************************************************
এখন এমন মাসও চলে যায় যখন জন ডেনভার দূরে থাক, প্রাণভরে কোন গানই শোনা হয় না। আড্ডাতো আগের জন্মের বিষয় হয়ে গেছে। সুভদ্রার রাজত্বে ইন্দ্রপুত্রের কন্ঠ আর তারযন্ত্রের অবস্থান কোথায় তা আমার আর জানা হয়ে ওঠেনি। কালেভদ্রে ফোনে কয়েক মিনিট কন্ঠ শোনা ছাড়া আড্ডার সদস্যদের মুখগুলোও দেখতে পাইনা বছরের পর বছর। তবু কখনো পথে-ঘাটে, রেডিও-টিভিতে, মানুষের গুনগুনানিতে জন ডেনভারের কোন গানের অংশটুকু শুনলেও মনে পড়ে এক সময় আমাদেরও সঙ্ঘশক্তি ছিল, এক সময় আমাদের জীবনেও নিঃশ্বাসের মত গান ছিল।
************************************************
Now the time has come to leave you
One more time
Let me kiss you
Then close your eyes
I’ll be on my way
Dream about the days to come
When I won’t have to leave alone
About the times, I won’t have to say
………………………………………………..
………………………………………………..
I’m leaving on a jet plane
Don’t know when I’ll be back again
Oh babe, I hate to go
মন্তব্য
১.
এককালে "লিভিন' অন আ জেট প্লেইন" মানুষকে মুগ্ধ করার মতো করে গাইতে পারতাম। আফসোস!!!! সেই দিন আর নাই।
২.
আমাদের গ্রুপের পোলাপাইন ছিলো চরম ফাজিল ধরণের। আমাদের জাতীয় সংগীত ছিলো অপেক্ষাকৃত ভদ্রগোছের পোলাপাইন যারা বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে বান্ধবীদের ব্যাগ টানাটানি করাটাতে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য মনে করতো তাদের উদ্দেশ্য করে। গানটার শুরুটুকু এইরকম:-
ছাগলের মুড়া ছাও ভেটকি মাইরা এদিক চাও
ভেটকি মাইরা এদিক চাও॥
ছাগলের মুড়া ছাও ওই দিকেতে না তাকাও
ভেটকি মাইরা এদিক চাও॥
গানের বাকি অংশটুকু ভদ্র সমাজে অচল....
৩.
আপনার লেখাটা ভালো লেগেছে।
১. "মানুষকে মুগ্ধ করার মতো করে গাইতে পারতাম" -এই মানুষটা কি এখন আপনার ঘরে থাকে? যদি থাকে তাহলে আফসোস করার কিছু নাই। আর যদি "মানুষগুলো" হয় তাহলে এখন আবার চেষ্টা করেন - সিডনী কাঁপায় ফেলেন।
২. "অপেক্ষাকৃত ভদ্রগোছের পোলাপাইন যারা বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে বান্ধবীদের ব্যাগ টানাটানি করাটাতে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য মনে করতো" -এই রামভক্ত লক্ষ্মণদের উদ্দেশ্যে যুগে যুগে এমনসব মহৎ গীত রচিত হয়েছে। বোঝা যাচ্ছে আড্ডায় আপনার অবস্থান কি ছিল। অবশ্য সচলে আপনার পোস্ট-মন্তব্য পড়েও তা আঁচ করা যায়।
৩. ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গ্রুপ থাকবেই। আর গ্রুপে নিজের অবস্থানটা আবারো হিসাব করে অফিসে বসেই হাসলাম কিছুক্ষণ
সব আড্ডাবাজি'র সমাপ্তির গল্প-ও হয়ত একই। তারপরেও আড্ডা পিটিয়ে যাচ্ছি এখনো, অন্যদের সাথে, অন্য জায়গায়।
জন ডেনভার অসাধারন এক গায়ক ছিলেন।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
সচলের যারা আপনাকে চেনেন তারা মোটামুটি ধারণা করতে পারবেন আপনাদের আড্ডায় আপনার অবস্থান কী ছিল।
এখনো যে নিয়মিত আড্ডা পিটাতে পারছেন তার জন্য কিঞ্চিত ঈর্ষান্বিত হলাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমাদের গ্রুপের সব অতিশয় ভদ্র ও বিনয়ীদের আমাদের গ্রুপটা পুরোপুরিই নষ্ট করার নীল নকশা নিয়া মাঠে নামছিলো। মনে হয় 'আব্বার' প্রভাবে পারে নাই। যাই হোক যদিও এখন সব নিজ নিজ ধান্দায় ( সত্যিকারের ধান্দা কিন্তু, রান্নাবাটি না) ব্যস্ত, তবুও আশা ছাড়ি নাই।
বস, "আব্বা" আমাদের সহপাঠী কেবল, আমাদের গ্রুপের কেউ না। আপনাদের গ্রুপ আমাদের আর কতটুকু নষ্ট করবে, আমরা আগে থেকেই "লাইনের" মানুষ ছিলাম। তবে আশা না ছাড়া ভালো, এতে গ্রুপে গ্রুপে ইন্টারঅ্যাকশন বাড়বে, এই বয়সেও "আব্বা"দের মত তুতুপুতুদের জান হালুয়া হয়ে যাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই ছিলো আপনার মনে লালন ফকির! তবেরে!
ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ।
দলছুট।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কী সুন্দর ক'রে টেনে নিয়ে কী সুন্দর ক'রে ছেড়েও দিলেন দাদা!
'জেট-প্লেন'-টা আমারও বেশি প্রিয়। ওহ্ জন ডেনভার! (আমার শোনা অনেক কম, তবু অনেকই ভালো লাগে)
আর, বন্ধুগ্রুপের ব্যাপারে আপনার পর্যবেক্ষণ এবং সূত্রায়ন এবং বিবরণে (উত্তম জাঝা!)
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
ধন্যবাদ। জনের এতো ভালো ভালো গান আছে যে তার থেকে দু-একটা কারো ভালো না লেগে পারে না (আমার অন্ততঃ তাই মনে হয়)।
বন্ধুগ্রুপের ব্যাপারে আরেকটু মনে করার চেষ্টা করুন দেখবেন আপনিও এমন কিছু "সাধারণ" ব্যাপার আবিষ্কার করে ফেলবেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঠিক তাই।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
ভাল্লাগলো।
আমরা গাইতাম এত রাইতে কেনে ডাক দিলি; শেষের অন্তরা ছিল:
"পশ্চিম পাড়ায় কী যে .... কইতে শরম লাগে", মেয়েদের হোস্টেল ছিল ক্যাম্পাসের পশ্চিম দিকটায়
ধন্যবাদ। এতো বৎসর পর অন্তরা নিয়ে শরম করার দরকার কী? খুলেই বলুন না, তাহলে আপনাদের আড্ডার গল্পটাও শোনা হবে।
১. অ্যানির গীত চাইকোভস্কীর পঞ্চম সিম্ফনীর উপর ভিত্তি করে করা।
২. জনের পুরো নাম Henry John Deutschendorf, Jr. জার্মান পূর্বপুরুষের কাছ থেকে প্রাপ্ত এই পদবীর সঠিক উচ্চারন করতে আমি অক্ষম। জার্মান ভাষা জানা সচলেরা ভালো বলতে পারবেন।
৩. জন ডেনভার পল সাইমনের বক্সার গেয়েছেন এই তথ্যটা জানতামনা। উইকিও বলতে পারলনা। আপনার কাছে কপি/লিঙ্ক থাকলে অবশ্যই দেবেন/জানাবেন। এই গান জনের কন্ঠে কেমন লাগবে চিন্তা করতেই রোমাঞ্চ হচ্ছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
১. দ্রোহীর মতো বলতে হয়, ভদ্র সমাজে অচল।
২. বিতর্ক হবে ভেবে মুছে ফেললাম, এখন দেখি আপনি উত্তর দিচ্ছেন!
ভুল বলেছি, জন ডেনভার না, বক্সারের ইঙ্গিত ছিল বব ডিলানের প্রতি। উইকি বলে:
"It is sometimes suggested that the lyrics represent a "sustained attack on Bob Dylan".[1] Bob Dylan in turn covered the song on his Self Portrait album, replacing the word "glove" with "blow." Paul Simon himself has suggested that the lyrics are largely autobiographical, written during a time when he felt he was being unfairly criticized:"
ব্যাখ্যার জন্য ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্য সম্পাদনা না করলেও চলতো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
জন ডেনভারের গানের সাথে প্রথম পরিচয় কান্ট্রি রোড-এ। আমার প্রথম কম্পিউটারের সাথে আসে আমার বাসায়, হার্ডডিস্কে চড়ে। অনেক অনেক বার গেয়েছি চিৎকার করে। এর পরে ভালো লেগে যায় অ্যানি'স সং। হাজারবারের উপরে শোনা। অর্থহীনের সুমনের কল্যাণে ডেনভারের গানগুলোর বাংলা রিমেক শুনতে পাই, আবার আগ্রহ জাগে গানগুলো সংগ্রহের। তখন পরিচয় হলো আরেক বহু প্রিয় গান পোয়েমস প্রেয়ারস এন্ড প্রমিজেস এর সাথে। লিভিং অন আ জেটপ্লেনও অনেক অনেক প্রিয়। তবে সবচে পছন্দের কথা যদি বলতে হয়... তাহলে কেবল একটা গানের কথাই মনে আসে... ড্রিমল্যান্ড এক্সপ্রেস... শৈশবের খেলনা সেই ট্রেনের কথা মনে পড়ে যায় বারবার। সহজ কথা এবং সুরে মনের গভীর কথাগুলো... ডেনভারই পারতেন বলতে...
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
জনের গানের সাথে যার যে সময়ে, যে বয়সেই পরিচয় হোকনা কেন ভালো লাগার মত গান সে পাবেই।
জনকে "সহজ কথা এবং সুরে মনের গভীর কথাগুলো" বলার একক কৃতিত্ব দিতে আমি অবশ্য নারাজ। গানের জগতে এমন আরো অনেক গুরু শ্রেণীর মানুষ আছেন যাঁদের কথা আপনিও জানেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সহমত। আমার মন্তব্যটা পড়ে দেখলাম, ই প্রত্যয়ে ডেনভারকে একক কৃতিত্ব দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বলতে চেয়েছিলাম "কী দারুণ ভাবেই না ডেনভার বলতে পারতেন"।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
একদম ঠিক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কী চমৎকার একটা লেখা! পড়ার পর একটা দীর্ঘশ্বাস চলে আসলো, একটানে পাঁচ বছর আগে চলে গেলাম। সবারই এরকম গান থাকে? আশ্চর্য! আমরা ভাবতাম শুধু আমাদেরই আছে...
আবু অভ্র, মানুষের জীবন তো কম-বেশি একই প্রকার, একই ধাঁচের - তবুও অনন্য। পাঁচ বছর আগের গান এখন আবার শুনুন মনে হবে সব কিছু এখনো পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
নাহ, আমাদের সময় এরকম একাট্টা গ্রুপ ছিলো না।
ডিপার্টমেন্টের মাঠে এক গ্রুপ, টিএসসিতে এক গ্রুপ আর ক্রিকেট খেলার মাঠে অন্যগ্রুপ আবার বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াবার জন্য অন্যরকম এক গ্রুপ।
কোনো বিশেষ গান... নাহ্ তাও ছিলো না।
তবে গ্রুপে একসাথে বসলে একটা এরকম অপ্রচলিত/নিজস্ব গান গাওয়ার একটা রীতি বোধহয় তখনই শুরু হয়েছিল।
নাটকের কোনো এক গ্রুপ থেকে (হয়তো ঢাকা পদাতিক) একটা গান আমাদের গ্রুপে চলে এসেছিল। একসাথে আমরা গেয়েছি কখনও কখনও। এর লেখক কে জানি না তবে পরে এরকম একটা গান (একটু ভদ্রস্থ) ক্যাসেটজাত হয়ে বাজারে আসতে দেখেছি। গানটি ছিল...
বাসো কি না বাসো সখী, টেরাই করো আমারে...কত্তো ভালবাসি তোমারে....
মাঝে এরকম একটা লাইনও ছিল...
গাঞ্জা দিলা, ছিলিম দিলা, ....দিলা, ..., ধরাইয়া তো দিলা না....
জন ডেনভার! এ নিয়ে আলাদা পোস্ট দিতে হবে। আহা!
ষষ্ঠ পান্ডবের লেখাটা খুব ভালো লাগলো। শুভেচ্ছা।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
ডিপার্টমেন্টের মাঠে এক গ্রুপ, টিএসসিতে এক গ্রুপ আর ক্রিকেট খেলার মাঠে অন্যগ্রুপ আবার বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াবার জন্য অন্যরকম এক গ্রুপ
ঠিক বলেছেন। এমনটা এখনো অনেকটা আছে। তবে কিছু মানুষ আছে যারা অনেকগুলো গ্রুপে কমন থাকে। এই কমন মেম্বারগুলোকে যদি একসাথ করে ভাবেন তাহলে কিন্তু অমন একটা মিক্সড গ্রুপ তৈরি হয়ে যায়। এমন মিক্সড গ্রুপ আমাদের সময়ে কিছু কিছু ছিল, আপনাদের সময়েও কিছুতথাকার কথা।
সব আমলে সব গ্রুপে যে সব গান প্রচলিত ছিল সেগুলোকে অজু-গোসল না করালে মনে হয় ভদ্র সমাজের সামনে আনা যায়না। মানুষের মনের এই দিকটা আমার কাছে বেশ ইন্টারেষ্টিং লাগে।
জন ডেনভার নিয়ে আপনার পোস্টের অপেক্ষায় থাকলাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কিছু লেখা পড়ার পর লগ ইন করতেই হয়। এখনও আড্ডার মানুষ তাই হয়ত অনুভব করতে পারি না কিন্তু একটা সময় সবার মত আড্ডার শূণ্যতা অনুভব করতে হবেই
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
একটা সময় জীবনটাকে "live on" আর "live for" আড্ডা বলে মনে হত। এখন কোন এক "full blue moon"-এর দিনে আড্ডা হয়। তাও সেখানে গেলে সবারই কোন না কোন কাজের কথা মনে হয়ে যায় আর সবাই তাড়াহুড়ো করে কেটে পড়তে চায়। তারপরও কারো কারো বুকের ভেতর আড্ডার শূন্যতাটা থেকেই যায়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এতো সু্ন্দর একটা লেখা পড়ার পর
কেন যেন খুব বিষন্ন লাগছে
বন্ধুদের কথা ভেবে
আড্ডার কথা ভেবে
আমাদের স্কুলে একটা গ্রুপ গান ছিল
শ্রাবনের মেঘগুলো জড়ো হলো আকাশে
আরেকটা ছিল
ছাইড়া গেলাম মাটির পৃথিবী
স্কুলের পর বোধহয় আর কোন গানই ছিলনা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
মন খারাপ করিয়ে দেবার জন্য দুঃখিত।
"স্কুলের পর বোধহয় আর কোন গানই ছিলনা"
স্কুলের পর কোন তালেবান মাদ্রাসায় পড়েছিলেন যে গান নির্বাসিত হল? নাকি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আঁতেল হয়ে টীচার ফাইটে নেমেছিলেন?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এত সুন্দর একটা লেখা...কিন্তু মনটা পুরাই উদাস গেল রে ভাই...বন্ধুদের সব সময়ই মনে পড়ে, ক'দিন ধরে আরো বেশি বেশি হচ্ছে, এর মাঝে এই লেখা...ধূর, আপনি লোক ভালো না
জন ডেনভার তো বস, সত্যি, শুনেছে কিন্তু ভালো লাগে নি এরকম কেউ নেই মনে হয়। "এনি'স সং"টা মারাত্বক ভালো লাগে, খুব ভালো লাগে "লিভিং অন আ জেট প্লেইন"। আর মনটা নির্ভার হালকা করে দেয় "কান্ট্রি রোড"।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
মন খারাপ হয়ে গেল? মাফ চাই। একটা কাজ করুন, জন ডেনভার ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ গান শুনুন আপনার ভাষ্যমতই মনটা নির্ভার হালকা হয়ে যাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বস লেখা ভাই
না পাঁচিয়ে উপায় রইলো না...
খেয়াল করে দেখলাম, আসলেই সব আড্ডায় আপনার বর্ণিত চরিত্রগুলো থাকে... আমাদের গ্রুপে আমি বোধহয় শুকনাতম সদস্যের ভূমিকা পালন করি...
আমাদের গান আবার আজকাল সেমিস্টার বেসড হয়ে গেসে- এক এক সেমিস্টার একটা নতুন গান দিয়ে চালাই- সদ্য সমাপ্ত সেমিস্টারে গানটা ছিলো "বোরখা পড়া মেয়ে পাগল করেছে..." !!!
... জন ডেনভার আমার সবচেয়ে প্রিয় গায়কদের একজন,আর জেটপ্লেন তাঁর গাওয়া আমার সবচে প্রিয় গান (দীর্ঘদিন গানটা আমার রিংব্যাক টোন হিসেবেও ব্যবহার করেছিলুম...)
আবারো বলি, বস লেখা- বেশি ভাল্লাগসে...
---------------------------------------------------------------------------
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
ধন্যবাদ।
আট সেমিস্টারে আটটা গানতো দারুন ব্যাপার! আচ্ছা সুহান, বোরখা পড়া মেয়ে কীভাবে পাগল করে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা। আমার জীবনের গতিপথের সাইডলাইনেও কখনো কোন নিনজা ছিলনা তো তাই ব্যাপারটা বোধগম্য হচ্ছে না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ধর্মপুত্রের গান শুনবার মন চায়...
ষষ্ঠ পাণ্ডব অতিশয় ভদ্র ও বিনয়ী মানুষ, তাই ধর্মপুত্রের গলা বাজখাঁই লিখতে না পেরে দরাজ লিখেছেন। তিনি "তালকানা" বিশেষণটিও সযত্নে পরিহার করেছেন। তাই ধর্মপুত্রের গান শোনার পর ধর্মীয় গান "দে পানাহ দে" তারস্বরে গাওয়াটাই একমাত্র পরিনতি। ভেবে দ্যাখেন এখনো মঞ্চায় কি না।
বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, ধর্ম্মপুত্র আসলেই ভালো "আড্ডা সিঙ্গার"। আর তার কন্ঠে "দে পানাহ দে" ওসমান খানের কন্ঠের (যেটা আমরা বিটিভিতে শুনতে পেতাম) চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আরিফ ভাই আবারো নস্টালজিক করে দিলেন। আসলে এখন আড্ডার কথা মনে হলেই কফি হাউজ বা ব্রায়ান এডামসের সামার অফ ৬৯ গানগুলি মনে পড়ে আর দীর্ঘশ্বাষ ফেলি।
----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
তোমার আড্ডা দেয়া এখনো শেষ হয়েছে বলেতো মনে হয় না। রূপটা একটু পাল্টেছে হয়তো। আর গানতো তোমার জীবনজুড়েই থাকার কথা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
গানগুলা অসম্ভব পছন্দের, লেখাটাও চমৎকার লাগলো।
-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কি সুন্দর করে কথা গুলো বলে ফেললেন। খুব ভালো লাগলো লেখাটি।
আর জন এর গান নিয়ে কি বলব...আমার অন্যতম প্রিয়।
পুরোন দিনের কথা অনেক মনে পরছে। আহারে,সেই দিন গুলো
----------------------------------------------------------------------------
ডানা ভাঙ্গা একলা কাক, পথ শেষে থাক...একলাটি থাক
ধন্যবাদ। পুরোনো দিনের কথা মনে হলে আমাদের জন্য লিখে ফেলুন না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এক-
কাণ্ট্রি রোড টেক মী হোম গানটা যখন আমরা শুনি, তখন চোখের সামনে আমাদের দেশের পাহাড়, নদী, মেঠো পথ, কলস কাঁখে গাঁয়ের মেয়ে, শিশির ভেজা জ্যোৎস্না - এগুলো ভেবে নিয়ে গানের রসাস্বাদনে কখনো কোন সমস্যা হয়নি। একটা কালজয়ী গানের সার্বজনীনতার মজাই অন্যরকম। গানটা শোনার অনেক বছর পরে ব্লু রিজ পার্কওয়ে দিয়ে ড্রাইভ করে যাবার সময় গানটা গায়কের চোখ দিয়ে দেখার কাছাকাছি এটা অনুভূতি হয়েছিলো। শেনানডোয়ার হিমশীতল নীল জল, দিগন্তে কুয়াশাঢাকা ব্লু রিজ পর্বতমালা, "মাউনটেইন মামা", থমকে থাকা জীবন - এগুলো দেখতে দেখতেই হঠাৎ খেয়াল করি বিনা কারণেই "টিয়ারড্রপস ইন মাই আইজ"। যারা জন ডেনভারের গান ভালোবেসেছেন - তাদের জন্য এই রুট দিয়ে একবার যাওয়াটা অতি অতি জরুরী।
দুই-
কয়েক বছর আগে জন ডেনভারকে নিয়ে ভি এইচ ওয়ান-এ একটা ডকুমেণ্টারীতে দেখাচ্ছিলো যে ইনি ব্যক্তিগত জীবনে বেশ অসুখী একটা অধ্যায় পার করছিলেন, একটা দীর্ঘ সময় ধরে। তিনি নাকি মানবসেবা ধরণের কাজ করতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের দরকারী সময়টা দিচ্ছিলেন না, বা দিতে পারছিলেন না - যেটা তার পরিবার(গুলো) মেনে নিতে পারছিলো না। প্রিয় শিল্পীর জীবনের এই দিকটা জেনে খারাপ লেগেছিলো।
তিন-
অ্যানিস সং-এর মত অসাধারণ একটা গান লেখার মত প্রেম থাকার পর ডিভোর্স হয় কিভাবে এটা একটা চিন্তার বিষয়
চার-
ষষ্ঠ পাণ্ডবের মনে আছে নিশ্চয়ই, প্রথম যে রাতে আমরা ইন্দ্রপুত্রের সাথে ক্যাম্পাসে সারারাত কাটিয়ে দেই ক্যাফের সামনে ফর বেবী গানটা গাইতে গাইতে, সেই রাতটা শেষ হয়েছিলো একজন অপাণ্ডব বন্ধুর একটা পারিবারিক দু:সংবাদে।
পাঁচ-
আচ্ছা, এইগুলা তো আমারও কাহিনী, আমি এমন্সুন্দর্করে লিক্তে পার্লাম্না কেনু?
এক, আপনার এই ভ্রমণটার ব্যাপার নিয়ে আমি আগেই লিখতে অনুরোধ করেছিলাম। আপনি এখনো পোস্টখেলাপী হয়ে আছেন। তাড়াতাড়ি বদনাম ঘুচান।
দুই, "দরকারী সময়টা দিচ্ছিলেন না, বা দিতে পারছিলেন না - যেটা তার পরিবার(গুলো) মেনে নিতে পারছিলো না" - এখানে সমস্যা দুইটা - ১. তিনি কি সময় দিচ্ছিলেন না, নাকি দিতে পারছিলেন না। ২. বিষয়টা যখন "পরিবারগুলো" হয় তখন সমস্যাতো জটিল আকার ধারণ করবেই। দুই পা একসাথে কত নৌকায় দেয়া যায়?
তিন, প্রেম ডিভোর্স ঠেকানোর জন্য একটা দুর্বল ফ্যাক্টর হয়তো, তবে ডিভোর্স হবার জন্য প্রেম থাকা বা না থাকা মনে হয় খুব জরুরী ফ্যাক্টর নয়।
চার, হ্যাঁ মনে আছে সেই সকালের কথা। তার আগের রাতের কথাও মনে আছে।
পাঁচ, আপনার আমার কমন কাহিনী আপনি লিখতে পারলেন না কারণ আপনি অলস। আপনি অলসতা কাটালে কলির মহাভারতটা লেখার জন্য ব্যাসদেবের বা গণপতির সাহায্য লাগতো না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আফসোস, ডেনভারের এত এত গানের মধ্যে সবাই খালি ঘুরে ফিরে ৪-৫ গানের নামই বলে
কয়েকটা গানের নাম দিয়া গেলাম, পারলে শুইনেন সবাই যদি এখনও না শুনে থাকেন
I Guess He’d Rather be In Colorado, All Of My Memories, Rocky Mountain High, Rocky Mountain Suite, Farewell Andromeda, Sweet Surrender, Looking for Space, You’re So Beautiful, Garden Song, Autograph, Some Days Are Diamonds (আসলে শেষ করা সম্ভব না)
অফ টপিক: রেইনবোর কবির ভাইয়ের খবর কেউ জানেন ? আমি শুনেছিলাম উনি এখন অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। বাংলাদেশের রক মিউজিকের ভিত্তির পেছনে এই লোকটার অবদান অনেক।
১. লিস্টের জন্য ধন্যবাদ। আসলে জনের ভালো গান বা প্রিয় গানের লিস্ট দিতে গেলে তার পুরো discography-ই তুলে দিতে হবে।
২. কবীর ভাই অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন বলেই জানি। বাংলাদেশে তাঁর পুরোনো ভক্তদের কারো সাথে যোগাযোগ আছে বলে শুনিনি। এই মানুষটাকে নিয়ে সচলের অনেকেই কিছু না কিছু লিখতে পারবেন। আমার মনে হয় আমরা চেষ্টা করলে উনাকে নিয়ে একটা সম্মিলিত পোস্ট দিতে পারি। মানে ধরুন, আপনি উনাকে নিয়ে পোস্ট লিখলেন বাকিরা তাতে মন্তব্য আকারে নিজেদের জানা-অভিজ্ঞতাগুলো যোগ করল।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কবির ভাইয়ের সাথে আমার প্রথম দেখা হয় যখন আমি ক্লাশ সেভেনে পড়ি - তিরানব্বইতে। সেইখানে যাওয়া সব বড়ভাইদের মাঝে আমি ছিলাম সবচে' পিচ্চি- তাই মনে হয় একটু বেশিই পছন্দ করতেন। খুব অল্পদিনই মেশার সৌভাগ্য হয়েছিলো তার সাথে। কিন্তু সেই অল্পকয়দিনের মধ্যেই আমার গান শোনার ওপর বিরাট প্রভাব ফেলতে পেরেছিলেন তিনি। একদম শিক্ষকের মতো। বলতেন- এইটা শোনো, ওইটা শুইনো না, আর এইটা কক্ষনো শুনবা না। সবচে মজার ব্যপার হলো আমার অর্ডার দেয়া ক্যাসেটের মধ্যে উনি আমাকে প্রায়ই কিছু সারপ্রাইজ ফিলার দিয়ে দিতেন, এখনো মনে আছে নিল ইয়ং এর রাস্ট নেভার স্লিপ'স এর ক্যাসেটে উনি আমাকে 'হেল্পলেস' দিয়ে দিয়েছিলেন। এখনো আমার অন্যতম প্রিয় গানগুলোর মধ্যে একটা।
এখনো যাই রেইনবোতে। অনেক কিছুই আগের মতো নেই- কিন্তু দোকানটা এখনো টিকে আছে।
প্লিজ লিখুন না কেউ তাকে নিয়ে।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
কোনদিন স্কুল কলেজে গেছি, বন্ধু ছিল, গ্রুপ ছিল সেই জিনিসটাই ভুলে গেছিলাম। আপনার লেখা পড়ে একটু একটু স্মৃতি যেনো ফিরে পাচ্ছি। স্কুলের গ্রুপে আমাদের গান ছিল,"আমার গুষ্টি আমার ছাও, আমারে কয় ম্যাও, কলিকালের রকম সকম বুঝি না।"। মানুষের পিত্তি জ্বালানোর জন্য এই গানটার জুড়ি ছিল না। ঠিক সময় বুঝে গাইতে পারলে.........।। কতোবার শাস্তি খেয়েছি, এই গান গাওয়ার জন্যে..................।।
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ধন্যবাদ। আপনার স্কুলের গানটার কথা আগেই জেনেছিলাম। এবার কলেজের গানের কথা বলুন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
লেখা ভালো লেগেছে। তবে অনেক চেষ্টা করেও আমাদের আড্ডার কোন ‘জাতীয় সঙ্গীত’ ছিল কিনা মনে করতে পারলাম না
‘লিভিং অন আ জেট প্লেন’- ‘আর্মাগেডন’ ছবির সাউন্ডট্র্যাক হিসেবে Chantal Kreviazuk –এর গাওয়া ভার্শনটাই আমার বেশি ভালো লাগে (ভিড্যুটাও ব্যাপক পছন্দ)। এক সময় এটাই দিনের পর দিন শুনতাম।
ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনার লেখা পড়ে সবাই স্মৃতিমেদুর হয়ে গেলাম। আমার নানা সময় নানা গ্রুপ হয়েছে গানের, আপনার লেখা পড়ে সেগুলো লিখে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে। লিখেও ফেলবো শিগগির।
অবশ্যই লিখবেন। তাতে এই ব্যাপারগুলোতে এইপাড়-ওইপাড়ে সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে কিনা বোঝা যাবে। আপনার পোস্টের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মনটা খারাপ হয়ে গেল। বন্ধুরা এক একজন এক এক দিকে ছড়িয়ে গেছে । সেই গ্রুপও আর নাই, আড্ডাও আর নাই। “Annie's Song” শুনে সবাই উদাস মুখে ব’সে থাকাও আর নাই। অথচ এই কিছুদিন আগেও সময় ক’রে ঠিকই কোথাও না কোথাও, যারা যারা পারি একসাথে হতাম। ধীরে ধীরে সেটাও প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে ব্যস্ততা ! এইই হয় ! এইটাই জীবন। আপনার লেখা খুব ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ। পরিনতি সবার জানা, তবু তা ঠেকাবার কোন উপায় নেই - দরকারও নেই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি যদিও PINK FLOYD খেয়ে পরেই বেঁচে আছি, কিন্তু ডেনভার এর একজন পাগল ভক্ত বলতে পারেন। আমাদের ৫ বন্ধুর এক্তা দল ছিলো - সবাই পঞ্চ পান্ডব বলে ডাকতো। আমাদের চিন্তা ভাবনা ছিলো - নারী, প্রেম, কবিতা আর গান। ৫ জনের মধ্যে ৩ জনি কাব্য করতাম, একটায় পড়তো আর একটায় বলত - এগুলা গু।
নাহ, গত ৪ বছরে এক-দুই জনের সাথে দেখা হলেও "কেমন আছিস" পর্যন্তই কথা শেষ।
ভালো লাগলো।
- অনুপম ত্রিবেদি।
ধন্যবাদ। আমাদের পিঙ্ক ফ্লয়েডের গল্পটা ধর্ম্মপুত্রের জন্য তুলে রাখলাম। আপনাদের পাণ্ডবকূলের গল্প শুনতে চাই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
জন ডেনভার আর তার গান নিয়ে চমৎকার একটি ব্লগ লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। যখন ঢাকায় ছিলাম তখন আমাদের আড্ডাতেও জন ডেনভারের গান নিয়মিত ছিল। আমাদের এক বন্ধু কান্ট্রি রোডের বাংলা অনুবাদও করেছিল ( বেস বাবা সুমনেরও অনেক আগে ) যা কিনা আড্ডাতে প্রায়ই গাইত। মজার কথা হলো কান্ট্রি রোডের সেই শ্যানন্দোয়া নদী দেখার এবং তাতে সাতার কাটার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। ছোট্ট একটা পাহাড়ী নদী, পানি থাকে না বললেই চলে। আক্ষরিক অর্থেই হাটু জল থাকে, কেবল বৃষ্টি নামলে পানির উচ্চতা একটু বাড়ে। নদী দেখা হলেও সেই জন ডেনভারকে মিস করি, তবে তার চেয়েও বেশি মিস করি সেই আড্ডা, ফেলে আসা দিন আর ফেলে আসা বন্ধুদের।
লিভিং অন আ জেট প্লেন গানটি জমিয়ে রেখেছিলাম। যেদিন প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দেশে ফিরে যাবো সেদিন ফেসবুকের স্ট্যাটাসে দেবো বলে ভেবেছিলাম। অনেক হাবিজাবি ব্যাক্তিগত অনুভূতির কথা বলে ফেললাম। যাক সে কথা। পুরোনো সুখ স্মৃতি মনে করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
কানা বাবা
আপনাকেও ধন্যবাদ। জন অনুবাদের চেষ্টা আমরাসহ আরো কাউকে করতে দেখেছি। ১৯৯৩ সালে জনের গানের অখাদ্য বাংলা অনুবাদ ক্যাসেটবন্দী করে কারা যেন বাজারেও ছেড়েছিল।
লিভিং অন আ জেট প্লেন নিয়ে আপনার পরিকল্পনা তাড়াতাড়ি সফল হোক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অন্তর ধইরা টান দেয়া লেখা।
এমন লেখা পড়ে মন খারাপ হওয়া এক হিসেবে মন ভালো হওয়ারই নামান্তর।
খুব ভাল লাগলো।
---------------------------------
তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুস্ পাটুস্ চাও?!
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
অনেক ধন্যবাদ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দারুণ লেখছেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আসলে গানগুলাই দারুন, আমার কথা হাবিজাবি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
চমৎকার স্বৃতিচারন। গাল গুলো অসাধারন !
চমৎকার স্বৃতিচারন। গাল গুলো অসাধারন !
দিশা___
নতুন মন্তব্য করুন