গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি যুক্তরাজ্য আর ইসরায়েলের মিডিয়ায় একটা খবর নিয়ে একটু তোলপাড় হয়। খবরটা হচ্ছে, ফিলিস্তিনীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ই ডিসেম্বর, ২০০৯ লন্ডনের একটি আদালত ইসরায়েলের বর্তমান বিরোধী দলীয় নেত্রী (কাদিমা পার্টির) ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিভনির বিরূদ্ধে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারী করেন। ২০০৮-২০০৯ সালে গাজা উপত্যকায় Operation Cast Lead চলাকালে লিভনি কর্তৃক যুদ্ধাপরাধ ঘটানোর অভিযোগে এই গ্রেফতারী পরওয়ানা জারী করা হয়। সেই সময় লিভনির যুক্তরাজ্য সফরের কথা ছিল। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই লিভনি তার সফর বাতিল করেন। লিভনি যুক্তরাজ্যে না থাকায় লন্ডনের আদালত ১৪ই ডিসেম্বর, ২০০৯ গ্রেফতারী পরওয়ানাটি বাতিল করেন। অবশ্য এর মধ্যে ইসরায়েল আর যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া, ব্রিটিশ সরকারের বিব্রত হওয়া আর দুঃখ প্রকাশ করা, আদালতের আদেশের বিরূদ্ধে ব্রিটিশ মিডিয়ার আস্ফালন সবই যথারীতি ঘটেছে। সবশেষে যা হবার তাই হয়েছে, লিভনির কিছু হয়নি, ভবিষ্যতে তিনি নির্বিঘ্নেই বিলেত সফর করতে পারবেন।
লিভনির ঘটনায় ফিলিস্তিন, ইসরায়েল বা লিভনিকে নিয়ে আমাদের ভাবনা কম হলেও এই ঘটনার অন্য ধরণের গুরুত্ব আছে। যতদূর জানি, জোর আলোচনা দূরে থাক এই গোটা ঘটনাটি আমাদের দেশের কোন মিডিয়ায় আসেনি। হয়তো আমাদের দেশের মিডিয়াসংশ্লিষ্টদের কাছে সংবাদটির কোন গুরুত্ব নেই, অথবা ব্রিটিশ সরকার বিব্রত হয় এমন কোন সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে তাদের বিধিনিষেধ আছে। সেটা যাই হোক, তা জানার বোধহয় কোন উপায় নেই।
আমাদের মিডিয়া কিছু বলুক আর নাই বলুক, ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী সশস্ত্রবাহিনী ও তাদের সহযোগী শান্তি কমিটি, রাজাকার, আল-বদর, আস-শামসদের দ্বারা সংগঠিত যুদ্ধাপরাধের বিচারের পরিপ্রেক্ষিতে লিভনির ঘটনাটির গুরুত্ব অপরিসীম। বস্তুতঃ শুধু যুক্তরাজ্যই নয়, ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশনের আওতায় ফ্রান্স, বেলজিয়াম, কানাডা, জার্মানী, ইসরায়েল, স্পেন ও অস্ট্রেলিয়ায় যুদ্ধাপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের জন্য অন্য যে কোন দেশের নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা করা ও বিচার চাওয়ার সুযোগ আছে। এক্ষেত্রে অপরাধ যখন বা যেখানেই সংঘটিত হোক না কেন, তা বিবেচ্য হবার কথা নয়।
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যেসব কথা বলছে তাতে বিশেষ কিছু আশা করার নেই। বাংলাদেশ সরকার এই ব্যাপারে যা করতে চাচ্ছে তা করতে থাকুক, কিন্তু এই ব্যাপারে আমাদের আরো কিছু করার আছে বলে মনে হয়। লক্ষ করে দেখুন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী বাস করেন। ফ্রান্স বা জার্মানীতে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের সংখ্যাও কম নয়। এই সব প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা আইনের ছাত্র অথবা আইনজীবি। তারা একটু কষ্ট করলেই সংশ্লিষ্ট দেশের এ’সংক্রান্ত আইনগুলো সংগ্রহ ও পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখতে পারেন যে ঐসব আইনে ১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিরূদ্ধে মামলা করা যায় কিনা। এমনকি যারা আইনের ছাত্র বা আইনজীবি নন্ তারাও কোনভাবে সংশ্লিষ্ট দেশের এ’সংক্রান্ত আইনের ধারাগুলো যোগাড় করে বাংলা বা ইংরেজীতে অনুবাদ করে দিতে পারেন। তাতে দেশে থাকা আইন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ওগুলো পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখা যেতে পারে।
ঐদেশগুলোর কোন একটার আইনেও যদি নূন্যতম সুযোগ থাকে তাহলে আমাদের উচিত এ’ব্যাপারে মামলা দায়ের করার সুযোগ গ্রহন করা। যতদূর বুঝি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে পাকিস্তানী সশস্ত্রবাহিনীর কোন সদস্য বা কোন আমলার বিরূদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনার পরিকল্পনা নেই। মূল রেখে ডগা নিয়ে মাতলে মূল বিচার কাজ অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। সেক্ষেত্রে ঐসব দেশে যুদ্ধাপরাধের দোষে দোষী পাকিস্তানী সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য বা আমলাদের বিরূদ্ধেও মামলা করার সুযোগ থাকছে। পাকিস্তান ইসরায়েল নয়, তাই তার হুমকি-ধমকি ঐসমস্ত দেশে খুব একটা কাজে লাগার কথা না।
আমরা জানি শীতকালে পীর-ফকিরেরা বার্ষিক ভ্রমণে বের হন, মাওলানাদের ওয়াজ মাহফিলের পরিমাণও বেড়ে যায়। মূলতঃ তাদের বাড়তি আয়ের মৌসুমই এটা। আমরা এও জানি বৎসরের বিশেষ বিশেষ সময়ে বিদেশে বাঙালী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বাংলাদেশী ধর্মব্যবসায়ীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। ঐসব জায়গা থেকে সেসময় তারা বিপুল অঙ্কের অর্থ আয় করে থাকে। মামলা-মোকদ্দমা হলে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তরা আর সেসব দেশে যেতে পারবেনা, তাতে তাদের আয়-রোজগারেও ভাঁটা পড়বে। দেশে সরকারের আইনী তৎপরতা জোরদার হলে ঐসব দেশে গা ঢাকা দেওয়াও তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।
আমরা জানি মামলা করা খুব সহজ কাজ না। আরো কঠিন মামলা চালানো। এখানে টাকা-পয়সা খরচের ব্যাপার আছে, সাক্ষ্য-প্রমাণ যোগাড় আর হাজির করার ব্যাপার আছে, রায় টেকানো ব্যাপার আছে। তবে সবাই আন্তরিক হলে, সঠিক উদ্যোগ নিলে এর সবই সম্ভব। ঠিকানাহীন মানুষের দেশ ফিলিস্তীনিরা যে মামলা করে রায় করাতে পারে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের মানুষ হয়ে আমরা সে কাজ করতে পারবো না?
মন্তব্য
অস্ট্রেলিয়ায় সম্ভবত যুদ্ধাপরাধের দায়ে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিলো। পরে কোনো এক রহস্যময় কারণে বাদী মামলাটি তুলে নেন।
তবে এই কাজ করতে হবে। বরাহদের আনাগোনা যাতে তাদের বাপের দেশ পাকিস্তান আর সৌদি আরবে সীমাবদ্ধ থাকে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বরাহশিকার জারী থাকুক।
সহমত। দরকারি পোস্ট।
পাকিস্তানী নাগরিক বা সৈনিকদের বিচারের কথা ভেবে একটু গুগল গুতিয়ে জানলাম যে হেগ এর আন্তর্জাতিক আদালতের প্রসিকিউটর শুধু ২০০২ সালের পরে ঘটিত মামলা নিয়ে নাড়াচাড়া করে, কারন এর আগে রোম স্ট্যাটিউট ছিল না। তারওপর এই আদালতে মামলা তখনই উঠবে যখন ভুক্তভোগী দেশে যুদ্ধপরাধ বিচারের ইচ্ছা বা সামর্থ নেই।
আমি কি ভুল বুঝলাম?
ভুল বুঝেছেন বলেতো মনে হচ্ছে না। তবে ভেজালটা লেগেছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা ভারত কেউই আইসিসির সদস্য না। এতে কাজটা জটিল ও কঠিন হয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ইউরোপীয়, কানাডিয় বা অস্ট্রেলীয় নাগরিকরা মনে হয় একটু বেশি সুবিধা করতে পারবেন। তারপরও বাংলাদেশ সরকার যদি এতে বলেন, "আমরাতো বিচার করছিই", তাহলে আরো ভেজাল। তবে আইসিসির দ্বারস্থ না হয়েও ঐদেশগুলোর স্থানীয় আইনেও মনে হয় মামলা করা যায়। এবার বলুন, আমি কি ভুল বুঝলাম?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
শুধু তাই না। যদ্দূর জানি আইসিসির রায় ননবাইন্ডিং। হোস্ট দেশের (যাদের নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা) আইন আইসিসির আইনের উপরে। মূলত আইসিসি একটা ব্লাফ। যে সময় এটা হয়, হাওয়ার্ড আর বুশ বহু ক্যাও ক্যাও করছে।
আপনার লেখা পড়ে ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশনের উইকিভুক্তিটা দেখলাম। আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু মনে হলো না।
যেখবরের সূত্র ধরে এই লেখা, তা যখন পড়েছিলাম তখন আমিও কাছাকাছি চিন্তা করেছিলাম। বিষয়টা সবার সামনে আনার জন্য ধন্যবাদ।
এই ব্যাপারটা ভাবনায়-ও আসে নি! অন্য একটা দৃষ্টি! ধন্যবাদ জানাই।
==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
পোষ্টটিতে কমেন্টের ঘরে যতটা আলোচনা আশা করেছিলাম ততটা হচ্ছে না। এর কারন বোধকরি অনেকেই বিদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়ার ব্যাপারটাকে কঠিন ভাবছেন কিংবা কীভাবে কি করা যেতে পারে সে ব্যাপারে তেমন স্বচ্ছ ধারণা করতে পারছেন না। আইনে অভিজ্ঞ সচলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আলোচনা না হবার কতগুলো কারণ হতে পারে এমনঃ
১. আমি তো বাংলাদেশে থাকি, আমার এখানে করার বা বলার কী আছে?
: আছে, আপনি বাংলাদেশে এর পক্ষে জনমত গড়তে পারেন, অর্থ যোগাড় করতে পারেন (ঠিক এখনই না), বিদেশে থাকা আপনার পরিবারের সদস্যটিকে এই ব্যাপারে সম্পৃক্ত করতে পারেন, তাদের মাধ্যমে আইনের ধারাগুলো যোগাড় করে সেগুলো বাংলায় অনুবাদ করে ফেলতে পারেন।
২. আমি তো আইনজীবি না, আইনের ছাত্রও না। তাহলে আমি কী করতে পারি?
: উপরে বলা কাজগুলোতো করতেই পারেন সাথে আপনার আত্মীয়-বন্ধু-পরিচিতদের মধ্যে যারা আইনজীবি বা আইনের ছাত্র তাদের সাথে আইনগুলোর কপি নিয়ে কথা বলে পারেন, তাদের সক্রিয় সাহায্য চাইতে পারেন।
৩. আমি বিদেশ থাকি ঠিকই কিন্তু ঐসব দেশে না, সেক্ষেত্রে আমি কী করতে পারি?
: উপরের দুই পয়েন্টে বলা কাজগুলোতো করতেই পারেন।
৪. আমি ঐসব দেশগুলোর একটায় থাকি ঠিকই, কিন্তু এখানে আছি দৌড়ের উপর, এর মধ্যে এইসব আইন-আদালতে জড়াই কেমনে?
: দৌড়ের উপর সবাই কম-বেশি আছেন, তবে প্রথম দুই পয়েন্টে বলা কাজগুলো করতে মনে হয় সদিচ্ছা যথেষ্ঠ।
৫. আমি ঐসব দেশগুলোর একটায় থাকি ঠিকই, কিন্তু এখানে যে বাংলাদেশী সবগুলো রাজনৈতিক দলই আছে। সেক্ষেত্রে খামাখা একটা গিয়ানজাম হবে না?
: গিয়ানজাম তো করতে চাইই তবে সেটা ঐসব রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে না, করতে চাই বরাহ আর তাদের ছানা-পোনাদের সাথে - এই কথাটা একটু কষ্ট করে তাদের বুঝিয়ে দিন। তাদের এটাও বোঝান, তারা যদি সাথে থাকেন তো ভাল, আর সাথে না থাকলেও ক্ষতি নেই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
প্যালেস্টাইনের ঘটনাটি সাম্প্রতিক, ১৯৭১ পুরানো বলে মনে হয় কিছুটা অসুবিধা হতে পারে। তাছাড়া, প্যালেস্টাইন নিয়ে দুনিয়াজুড়ে ৬০ বছর ব্যাপক হাউকাউ চলছে, হয়তো সেটাও একটা কারণ।
আমার মনে হয়, এটা করলে আমেরিকার ইরাক বা ভিয়েতনাম, বা ব্রিটেন-ফ্রান্সের সুয়েজ ইত্যাদি নিয়ে ভয় বেড়ে যাবে। তারা যেহেতু জানে প্যালেস্টাইন নিয়ে কেউ তেমন কিছু করবে না, হয়তো সেটা হতে দিয়েছে। স্বাধীন-সার্বভৌম হওয়াটাই কি আমাদের *এক্ষেত্রে* হ্যান্ডিক্যাপ না?
এখানে পাকিস্তানের ক্লাউটেরও একটা ব্যাপার আছে। ওয়ার অন টেররের যুগ, তারপর আছে চীন-রাশিয়া।
লেখাটা ভাল লাগলো।
১৯৭১ একটু পুরনো বলে অসুবিধা হবে বলে আমার মনে হয় না। আইনগুলো খুঁটিয়ে দেখা জরুরী। ৬০ কেন ১০০ বৎসর ধরে দুনিয়াজোড়া হাউকাউ হলেও আইন যদি সাপোর্ট না করে তাহলে আদালত গলবেনা। ফিলিস্তীনিরা আইনটা বের করে আনতে পেরেছে - সময়কাল বা জনমত এখানে ধর্তব্য নয়।
শুধু ভিয়েতনাম, ইরাক, আফগানিস্তান, সুয়েজ কেন, চেষ্টা করলে দুনিয়ার প্রায় সব দেশের বিরূদ্ধেই এমন মামলা করা সম্ভব। হাত শুঁকলে রক্তের গন্ধ পাওয়া যাবে না ক্ষমতায় বসা এমন হাত পাওয়া কঠিন। তবে তাতে এইসব আইন প্রনয়ণ, প্রয়োগ, আইসিসি ধরণের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম কিছুই ঠেকে থাকেনা। কেন কার্যক্রম ঠেকেনা বা গণহারে মামলা হয় না সেটার কারণ ভিন্ন। সেখানে আরো অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর আছে যা এই আলোচনায় টানার দরকার নেই।
পাকিস্তানের ক্লাউটের ব্যাপারটা খুলে বললে বুঝতে পারতাম। চীন-রাশিয়া বিপদের কালে কারো দোস্ত না। বিশ্বাস না হয় গত পঞ্চাশ বৎসরের ইতিহাস আবার একটু পর্যালোচনা করুন। পাকিস্তান থেকে এই দুই দেশের পাবার হিসেবটাও খুব আশাব্যঞ্জক না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই কাজটা নিয়ে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিবর্গ গবেষণা করতে পারবেন হয়তো, কিন্তু মামলা দায়ের ও পরিচালনার জন্যে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন।
আমি যতদূর জানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বেলজিয়াম-হল্যান্ডে ৭১ এর গণহত্যা নিয়ে গবেষণার জন্যে দু'টি পৃথক সংগঠনের অস্তিত্ব রয়েছে। এঁদের জুড়ে একটি বৃহত্তর ফোরাম গঠনের কথা ভাবা যেতে পারে।
তবে আরেকটি ব্যাপার স্মর্তব্য। এই উদ্যোগ কাজে পরিণত হতে হতে প্রত্যক্ষ যুদ্ধাপরাধীরা এই প্রবাসসফর থেকে অবসর নেবে। ইতোমধ্যে তারা এই কাজের জন্যে নতুন প্রজন্ম দাঁড় করিয়ে ফেলেছে। ফলে সাপের ছেড়ে যাওয়া খোলসটাকে শুধু বন্দী করা যাবে, সাপ ঠিকই চরে বেড়াবে।
তারপরও মনে করি এমন উদ্যোগ হওয়া উচিত। শুনেছিলাম বৃটেনের আইনেই নাকি চৌধুরী মঈনুদ্দিনের মতো খুনীদের বিচার হওয়া সম্ভব, সরকার যদি যথাযথ যোগাযোগ করে। কোনো সরকারই এই যোগাযোগের উদ্যোগ নেয়নি।
বিষয়টি খুবই দরকারি । আর কিছু না হোক সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে বাস করা পাকিস্তানী বদমায়েশগুলোর মুখে ঝামা ঘষা তো হবে। হারামিগুলো ৭১-এ পাকিস্তানী বাহিনীর অত্যাচার সম্পর্কে কিছু তো জানেই না উল্টো বাঙালিদের সাথে এখনও প্রভুর মত আচরণ করে। ৭১'এর প্রসঙ্গ তাদের সামনে তুলে দেখেছেন কেউ ? আমাদের ঘরের শত্রুদের বিচারের জন্য তো সরকারের ওপর চাপ আছে , লন্ডনে বা অন্যান্য দেশে যেসব মার্কামারা রাজাকারগুলো নাকে তেল দিয়ে ঘুমুচ্ছে তাদের সুখবাস নরকাগ্নিতে পরিণত করতে পারলে মন্দ হয় না।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে লিখি কথা
আমি তো বেকার পেয়েছি লেখার স্বাধীনতা
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
আমাদের যে যতটুকু পারি বরাহশিকার এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে একটা কাজের মতন কাজ কিন্তু হয়!
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
নতুন মন্তব্য করুন