কাক-কোকিল সমাচার

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: সোম, ১৫/০২/২০১০ - ১২:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

“বসন্তের কোকিল” বাগধারাটিতে কোকিলের প্রতি কোন সম্মান দেখানো না হলেও বাস্তবে আমরা কোকিলকে যথেষ্ঠ সম্মান দেই। মধুর কণ্ঠ মানে “কোকিলকণ্ঠ”, বসন্ত মানে কোকিলের মধুর ডাক, সুন্দর কালো রঙ মানে “কোকিল-কালো”, বসন্তের দূত মানে কোকিল। কোকিল না থাকলে কবি-সাহিত্যিকেরা বিশেষ বিপদে পড়ে যেতেন মনে হয়। ফাল্গুন মাসের প্রথমদিনে পত্রিকার প্রথম পাতায় শিমুল বা এই জাতীয় রঙিন ফুলওয়ালা কোন গাছে একটা কোকিল বসে আছে এমন ছবি দিয়ে লেখা হয় “আজ বসন্ত”। যেন কোকিল না থাকলে বসন্তকে সাজানোর জন্য গোটা প্রকৃতির প্রচেষ্টাটাই জলে যেত, বসন্ত আসতোই না।

আমাদের এমন পরাণের কোকিল আদতে পরিযায়ী পাখি। সারা বছর জুড়ে এনাদের দেখা মেলে না। গরম পড়তে থাকলে নিজভূমে যখন খাবারের ঘাটতি দেখা দেয়, তারচেয়ে বড় বংশ টেকানোর তাগিদে আমাদের দেশে এসে হাজির হন। সারা বছর যেখানে থাকেন, সেই উত্তরে তারা বাড়ি-ঘর বানান বা না বানান, এদেশে এসে উনারা কোন বাড়ি-ঘর বানানোর কথা ভাবেন না। বছরে একটা মাত্র ডিম-পাড়া এই মহাজন বেছে নেন কাক বা তার চেহারার কাছাকাছি অন্য কোন পাখির বাসা।

আদতে কাকের বাসা পক্ষীকূলের বাসার মধ্যে সবচে’ নিকৃষ্ট। বাবুইয়ের মত অমন শিল্পিত তো নয়ই টুনটুনির মত দক্ষতাও বাসা বানানোর ক্ষেত্রে কাক দেখাতে পারেনা। আর সেই বাসার workmanship এত বাজে, নির্মাণসামগ্রী এত নিকৃষ্ট যে নিতান্ত ঠেকায় না পড়লে “বসন্তের কোকিল” তাতে ডিম পাড়তোনা। আর কোকিলও বলিহারী যাই, ডিম পেড়েই ফুট্‌! ডিম ফুটে বাচ্চা বের হল কিনা, সেই বাচ্চার খাবার-দাবারের কী হবে, কাক আর তার বাচ্চারা কোকিলের বাচ্চার সাথে কী ব্যবহার করবে তার কোন তোয়াক্কাই নেই। এই দিক দিয়ে কোকিল মোটামুটি মেনকা-বিশ্বামিত্রের গোত্রের। শকুন্তলাকে শকুনে খেল নাকি বাঘে খেল তাতে উনাদের পরোয়া নেই। একজন চল্‌লেন স্বর্গে আর আরেকজন চল্‌লেন তপস্যায়।

কোকিলের মত এই স্বার্থপর, চালবাজ, ভিনদেশী পাখিটার প্রতি আমাদের এত দরদ কেন? লোকে বলে,

কাকের কঠোর স্বর বিষ ঢালে কানে,
কোকিল অখিলপ্রিয় সুমধুর তানে।

তা কাকের গলাটা এমন কী খারাপ? রোদজ্বলা দুপুরে অথবা খুব ভোরে একা একা ডাকা কাকের স্বর আমাদের মন কি উদাস করে দেয় না? কাক পরিবেশ রক্ষায়, খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষায় যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তার কোন কাজটা কোকিলকে দিয়ে হয়? আমার দেশের খেয়ে, আমার দেশের পাখির বাসায় ডিম পেড়ে যে ভেগে গেল তার দাম বেশি! আর যে বাচ্চা ফুটানো, বাচ্চা পালা, আশ্রয়-খাদ্য দেবার ত্যাগস্বীকারটা করল তার কোন দাম নেই? স্বদেশী ঠাকুরকে ফেলে বিদেশী কুকুরকে কেন আমরা পূজি? বলতে পারেন কাক ব্যাটা একটা গাধা তাই সে পরের বোঝা টানে। আমরা কাকের বোকামীটা দেখলাম, কোকিলের শয়তানীটা দেখলামনা। আমরা কাকের সরলতা আর মায়াকে মূল্যায়ণ করলামনা, কোকিলের চালাকী আর মনভুলানো ডাকে ভুললাম।

কাককে আমরা চোর বলি, বোকা বলি। গল্পের চোর কাক ছেলের হাত থেকে মিঠাই কেড়ে নিয়ে বনে গেলে ধূর্ত শেয়ালের স্তোকবাক্যে ভুলে সেই খাবার হারায়। কাকের বোকামীতে আমরা হেসে উঠি, ভাবি চোর ব্যাটার আচ্ছা শিক্ষা হয়েছে। এভাবে কাক একইসাথে চোর আর বোকা হয়। বলি, ক্ষেতের মাঝে কাকতাড়ুয়া লাগিয়ে, ক্যানেস্ত্রা পিটিয়ে কাককে ভাতে মারার ব্যবস্থা কে করেছিল? খেতে দেবনা অথচ ছেলের হাত থেকে কেড়ে খেলেই দোষ। এদিকে বাটপার শেয়ালকে আমরা “শেয়াল পণ্ডিত” আখ্যা দেই।

ব্যক্তিজীবনে আমার মত অনেকেই আছেন যারা কাকের সাথে তুলনীয়। আমার না আছে রূপ, না আছে বিশেষ কোন গুণ। টিকে থাকার গুণটুকু শুধু আছে তাই ধ্বংস হয়ে যাইনা। বিশেষ কোন দক্ষতা অর্জন করতে পারিনি যার জন্য লোকে আমাকে পুঁছবে। অবশ্য লোকের বিশেষ ক্ষতিও করিনা, বিরক্তি উৎপাদন ছাড়া। ঠোঁটকাটারা বলেন মুরোদের অভাবে ভদ্দরলোক, তা তারা ভুল কিছু বলেননা। চালাকী করতে পারিনা, আসলে সেই বুদ্ধিও নেই। প্রায়ই নিজের অজান্তে অন্যের বোঝা বয়ে বেড়াই। আবার বোঝাটা ঠিকমত বইতে না পারার জন্য গালমন্দও শুনি। যদিও টের পাই ঝোলার মাল আমার ভোগে লাগবেনা কখনো। একটু সম্মান দিলে বলা যায় অবস্থা ঋষি কাহ্নর মত। গৃধিনীদের হাত থেকে বাঁচিয়ে, লালন-পালন করে শকুন্তলাকে যৌবনবতী করাই তার দ্বায়িত্ব। যৌবনা শকুন্তলার পরিচয় আমাদের কাছে আশ্রয়দাতার নামে নয়, তার দয়িত দুষ্মন্তর নামে, পুরুরবা বংশের নামে, বড়জোর তার বায়োলজিক্যাল বাবা-মা বিশ্বামিত্র-মেনকার নামে। আমার ভাবনা যদি অন্যের অভিসন্দর্ভের রসদ হয়, অথবা আমার পরিকল্পনা যদি অন্যের বাণিজ্যকে প্রসারিত করে তখন আমার জানা উচিত তাতে কামলা খাটাই আমার নির্বন্ধ। এই বিধিলিপি সেই বৈদিক যুগ থেকেই নির্ধারিত।

মাঝে মাঝে মনে হয় এই কাক-জীবনটা মন্দ নয়। বেঁচে তো আছি, নাইবা জুটল সম্মান বা স্বীকৃতি। অবশ্য এমন কোন বৃহৎ কর্মও করিনি যার জন্য স্বীকৃতি দাবী করতে পারি। ফল বইতে পারি, ভোগ করতে পারিনা নিজের দোষে। কবি তো বলেই গেছেন,

ফল বহিয়াছো পাওনিকো স্বাদ হায়রে ফলের ঝুড়ি!
লক্ষ বছর ঝরণায় ডুবে রস পায়নাকো নুড়ি।

যুথবদ্ধ জীবনে কখনো কখনো আমাদের চিৎকারে সবাই চমকে ওঠে, বিরক্ত হয়, একটু ভয়ও হয়তো পায়। একা ডাকলে কণ্ঠের হাহাকারটা ঠিকই ধরা পড়ে। তখন সহৃদয় কারো মনটা বুঝি উদাসও হয়।


মন্তব্য

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

মাঝে মাঝে মনে হয় এই কাক-জীবনটা মন্দ নয়। বেঁচে তো আছি, নাইবা জুটল সম্মান বা স্বীকৃতি। অবশ্য এমন কোন বৃহৎ কর্মও করিনি যার জন্য স্বীকৃতি দাবী করতে পারি। ফল বইতে পারি, ভোগ করতে পারিনা নিজের দোষে।

বড়ই মনে ধরছে লাইন্টা!! ইস্ট্যাটাস দিলাম বস দেঁতো হাসি
---------------------
আমার ফ্লিকার

---------------------
আমার ফ্লিকার

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তোমার জীবনতো সবে শুরু, চেষ্টা কর, কে জানে হয়তো কোকিল বা দূর্দান্ত ঈগলের জীবনটাও অর্জন করে ফেলতে পারবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্নিগ্ধা এর ছবি

কী ব্যাপার, হঠাৎ এই টোনে লেখা?!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কাকের কি মন খারাপ হয় না? কাক বলে কি মানুষ না!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

বুয়েটে সিভিল বিল্ডিঙের পেছনে একটা গাছে একটা রেসিডেন্ট কোকিল ছিলো। সারা বছরই সেটা ডাকতো। পরীক্ষা দিতে সিভিল বিল্ডিঙে গেলে কান পঁচে যেতো সেটার ডাকে। অবশ্য আমি পক্ষীমূর্খ, কোকিলের কাছাকাছি ডাকের অন্য কোনো পাখি কি না, বলতে পারি না।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

যে কোকিলগুলো নিতান্ত অপদার্থ সেগুলোই রেসিডেন্ট কোকিল হয়। অমন কোকিল আমিও পেয়েছি মিন্টো রোড, রমনা এলাকায়। মেটিং সিজনে কোন সঙ্গিনী জোটাতে পারেনি তাই গড় সিজনে কুহু-কুহু করে বেড়ায়। ঐ অপদার্থর আরো দশমাস অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। অবশ্য মে-জুলাইয়ের গরম আর অগাস্ট-সেপ্টেম্বরের ঝড়-জল সহ্য করে টিকে থাকতে পারলে হয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অ মর কাক-জীবন!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কাক-জীবন কী আর অমর হয়? শেষমেষ সেই কাকের মতই মরতে হয়। হয় হাই ভোল্টেজ তারে লেগে, অথবা শখের শিকারীর এয়ারগানের গুলিতে, অথবা স্রেফ না খেতে পেয়ে। প্রতিতুলনাগুলো আর দিলামনা। সেগুলো সবার জানা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পথে হারানো মেয়ে এর ছবি

মাঝে মাঝে মনে হয় এই কাক-জীবনটা মন্দ নয়।

সেই আর কী! ফেইসবুক স্টাইলে একটা লাইকস্‌ দিলাম।
বেশ যেন নিজের নিজের লাগলো লেখাটা যদিও মাথায় বোমা মারলেও এভাবে কখন নিজে থেকে ভাবতে/প্রকাশ করতে পারতাম না।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মাথায় বোমা না মেরে কী-বোর্ডের সামনে বসে পড়ুন। এবার হাতদুটোকে নিশ্চল না রেখে লেখার চেষ্টা করে যান। দেখবেন ঠিকই হবে। সবাইকে এভাবেই শুরু করতে হয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

… শালিকের সঙ্গে আমার যে একটি গোপন বন্দোবস্ত হয়েছে, দুটো পাতিকাক কী করে সেই জিনিসটি টের পেয়ে গেছে, আমার খাঁচায় কিছুদিন কারাবাস করেছিলো বলেই পেনশন স্বরূপ সব খাবার একা একা খেয়ে যাবে, কাকেরা তা মোটেই মানতে রাজি নয়। আমি খাবার দেয়ার পরেই তিন চারটি কাক শুন্য থেকে আমার ছাদে এসে নামে এবং নির্লজ্জের মতো শালিকের বরাদ্দ খাবার খেয়ে ফেলতে থাকে। শালিকটি কাছাকাছি এলে তাড়িয়ে একেবারে পগার পার করে দিয়ে আসে। আমি পড়ে গেলাম মহামুশকিলে। কাকদের তাড়িয়ে কুল পাওয়া যায় না। তিনটা কাক তাড়ালে পাঁচটা কাক আসে। পাঁচটা তাড়ালে দশটা আসে। প্রতিদিন ভোরবেলা কাকদের সঙ্গে আমার একটা লড়াই শুরু হয়ে যায়। আমি যখন কাক তাড়াতে থাকি, ভয় পেয়ে শালিকের বেটাও পালিয়ে যায়। আমাকে ভয় পাওয়ার অভ্যাস তার কাটেনি। কাকদের যদি না তাড়াই, কাকরাই শালিকের বাচ্চাটিকে ঢাকা শহরের অপর প্রান্ত অবধি ছুটিয়ে নিয়ে যায়। কাকের মতো অমন ত্যাঁদর পাখি আর হয় না। তারা সকলে-দুপুরে-সাঁজে কা কা করে আমার জীবন অতিষ্ঠ করে ফেললো। এই কাকদের নিয়ে কী করবো আমি ভেবে ঠিক করতে পারলাম না। একটা যদি বন্দুক থাকতো কাকদের উচিত শাস্তি দিতে পারতাম। সেটা যখন নেই দৌরাত্ম্য সহ্য করা ছাড়া উপায় কী। একদিন দুপুরবেলা দেখলাম, আমার ছাদের দেয়ালের ওপর বসে আছে একটা কাক। কাকের একটি পা মোচড়ানো, সে জন্য বেচারিকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতে হয়। আমার মায়া লেগে গেলো। কিছু ভাত তার জন্য ছাদে ছড়িয়ে দিলাম। সে নিচে নেমে এলো এবং সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের কাক এসে চীৎকারে আমার ছাদ মাথায় করে তুললো। কাকেরা আজব জাতের পাখি। আরেকজনকে ঠকিয়ে খেতে কাকের জুড়ি নেই, তেমনি তাদের সামাজিক ঐক্যের বন্ধনটিও অত্যন্ত জীবন্ত। একটি কাক যখন ফাঁদে ধরা পড়ে কিংবা বৈদ্যুতিক তারে আটকে যায়, তামাম দুনিয়ার যতো কাক আছে, চীৎকার করে বন্দীর প্রতি সহমর্মীতা প্রকাশ করতে থাকে।

এই কাকেরা আমার একটি দুর্বলতার বিষয় জেনে গেছে। খোঁড়া কাকটির প্রতি আমার বিশেষ ধরনের টান রয়েছে। তাই আর কাকেরা খোঁড়াকে তাদের পক্ষ থেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দেয়। খোঁড়া ছাদের দেয়ালে বসে অবিরাম ডেকে যাবে। একবারে তিতিবিরক্ত হয়ে কিছু খাবার যখন ছুঁড়ে দেই তার স্ত্রী-পুত্র-ভাই-বেরাদর-বন্ধু-বান্ধব সব এসে আমার ছাদে জুটে যাবে। এই সময়ের মধ্যে খোঁড়া আমার কাছ থেকে খাবার আদায় করার অনেকগুলো কৌশল শিখে ফেলেছে। প্রথমে সে চীৎকার করে জানায় তার পেটে ক্ষিধের সঞ্চার হয়েছে। আমি যদি তার চীৎকারে কান না দেই কাচের জানালায় এসে ঠোকরাতে থাকবে। এই খোঁড়া কাকটির পাল্লায় পড়ে আমি বুঝতে পারছি, গাঁও-গেরামে কানা খোঁড়া ওদের রসুলের দুশমন মনে করা হয় কেন। আমার ঘরে যখন অতিথি-মেহমান থাকে, খোঁড়া দেয়ালে বারবার ঠোঁট ঘষতে থাকে। বাইরের লোকদের কাছে আমাকে অপদস্ত করার জন্যই খোঁড়া এই কাজটি করে। অর্থাৎ সে জানায় তার খুব ক্ষিধে হয়েছে, আমি তাকে খেতে না দিয়ে খুব অন্যায়কর্ম করছি। বাইরের লোকদের কাছে আমার কৃপণ পরিচয়টি প্রকাশ করার জন্যই খোঁড়া এই টেকনিকটা প্রয়োগ করে। বাইরের লোকদের কাছে মুখ রক্ষার জন্য হোক, কিংবা তার ত্যাঁদরামিতে বিরক্ত হয়ে হোক কিছু খাবার যখন ছুঁড়ে দেই, সে তার কাকের ভাষায় গেয়াত-গোষ্ঠি সবাইকে ডাকতে থাকে। অবশ্য খোঁড়ার একটা ভালো গুণের কথা আমার কবুল করতে হবে। সন্ধ্যেবেলা আমি বাইরে থেকে না আসা পর্যন্ত সে দেয়ালের ওপর বসে থাকে। এই কাজটি যে সে আমার প্রতি মমতাবশতঃ করে সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নিঃসন্দেহ হতে পারিনি।

কাকেরা যেরকম বেকায়দায় ফেলে থাকে আমি তাদের সঙ্গে যে করেই হোক সম্পর্ক একেবারে চুকিয়ে ফেলার চিন্তা করেছি। আজকাল গলিতে গলিতে কাটা রাইফেল, পাইপগান এসব পাওয়া যাচ্ছে। কিছু টাকা ফেললেই তার একটা ভাড়া হিসেবে পাওয়া যায়। লাশ ফেলতে হবে না, দুয়েকটা আওয়াজ করলেই কাকেরা আর এ বছর এমুখো হবে না। কিন্তু গন্ডগোল ঠেকেছে গিয়ে এক জায়গায়। রাইফেলের আওয়াজ করে যদি কাকদের আসা বারণ করি, অন্য পাখিদের আসাও বন্ধ হয়ে যায়। আমি যদি চাই সকালে আমার শালিকটি আসবে, তাহলে আকাশের সব পাখি যারা এখানে আসতে চায় তাদের সকলকে আতিথেয়তা দেয়ার জন্য আমাকে রাজি থাকতে হবে। সব প্রজাতির পাখির মধ্যে যতো প্রজাতিগত বিরোধ থাকুক না কেন, সকলে একটা বিষয়ে একমত। এক প্রজাতির পাখি যেখানে নিরাপদ নয়, কোনো প্রজাতির পাখির জন্য সেটা আদর্শ বিচরণস্থল হতে পারে না। কাকদের অনেক দুর্নাম শুনেছি। কিন্তু অত্যন্ত কাছে থেকে ঘাটাপিটা করতে গিয়ে যেটুকু জেনেছি, এই পাখিটির আসল জীবন সম্পর্কে মানুষ খুব অল্পই জানে। লোকমুখে শুনে কিংবা বই পড়ে পাখিটিকে গালাগাল করে থাকে। গলার স্বরটা একটু কর্কশ বটে; কিন্তু একটু কানখাড়া করে শুনলেই তার ভেতর একটা চিকন রেশ পাওয়া যাবে। কেন যে পাখিটিকে নোংরা বলে আমি তো তার কোনো কারণ খুঁজে পাইনি। ভদ্রলোকের অনেক গুণই কাকের আছে, খেয়েই ঠোঁট মুছে ফেলবে। যখনই পানি পাওয়া যায়, চট করে গা ধুয়ে ফেলবে। গা ধোয়ার ব্যাপারে তার শীত-গ্রীষ্ম বাছ-বিচার নেই। পুরুষ কাক নিজের মুখের খাবারটা যেভাবে খেয়ে বান্ধবীর ঠোঁটে ঢুকিয়ে দেয় সেটা শুধু দেখবার নয়, অনুভব করার ও ব্যাপার।

কাকেরা আকাশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়। তাদের বাদ দিয়ে ছোটো ছোটো সম্প্রদায়গুলোর সঙ্গে পিরিত রাখার কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না। অন্য যতো পাখি আসুক আমি খাবার যোগাবো। কিন্তু একটা জায়গায় শক্ত অবস্থান গ্রহণ করলাম। সকালে প্রথম খাবার পাওয়ার অধিকার আমার শালিকের। এই সময়টিতে অন্য যে-কোন পাখি, সে যদি পাখিদের রাজাও হয় আমার কাছ থেকে ঢিল,লাঠি এবং গালাগাল ছাড়া কিছুই আদায় করতে পারবে না। অন্য পাখিদের বুঝিয়ে দেয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া শালিকের সুবাদেই তারা আমার কাছে এমন আদর-যত্ন আদায় করে নিতে পারছে। মানুষের নিয়ম কি পাখিদের সমাজে চালু করা যায়? কিন্তু আমি শক্ত হয়ে রইলাম। কাকদের প্রতি এমন নিষ্ঠুর হতে দেখে শালিকটিও পালালো।কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে এলো। না এসে উপায় কী, পেটে তো ক্ষিধে আছে। …

আমি যখন রুটি নিয়ে ছাদে এসে ‘কাকমন্ডলী’ শব্দটি উচ্চারণ করতাম, শব্দটা মন্ত্রের মতো কাজ করতো। দলে দলে কাক ছুটে এসে দেয়ালের ছাদে, নারকোল গাছের হেলানো শাখায় বসতো। টুকরা করে রুটি ছুঁড়ে দিতাম, কাকেরা লাফিয়ে লাফিয়ে ঠোঁটে ধরতো। পাড়া-পড়শি সকলে ঘুমভাঙা দৃষ্টির বিস্ময় নিয়ে কাকের রুটি খাওয়া দেখতো। আমার কাছে ছিলো এটা একটা প্রাত্যাহিক ব্যাপার। কিন্তু মানুষ প্রতিদিনই আগ্রহ সহকারে রুটি খাওয়ার উৎসবটি দেখতো। দুটি মাত্র রুটি আর কাক অতগুলো। সকলের ভাগে পড়ার কথা নয়, বঞ্চিত কাকেরা দেয়ালে ঠোঁট ঘষে প্রতিবাদ জানাতো, আমি গতরাতের বাসিভাত থাকলে ছড়িয়ে দিতাম, না থাকলে ঘন্টা বাজিয়ে দিতাম। এটা ফাইনাল ওয়ার্নিং, সুতরাং কাকদের চলে যেতে হবে।

আমার খোঁড়া কাকটিও আসতো। বেচারি লাফিয়ে খাবার ধরতে পারতো না। তার ভাগে যাতে কিছু পড়ে সে জন্য আমাকে আলাদা ব্যবস্থা নিতে হতো। কাকদের সমাজবোধ এবং সহমর্মীতার ভাবটি প্রবল, কিন্তু দুর্বলদের ঠকিয়ে খেতেও দেখি কাকদের জুড়ি নেই। এই সময়ে কাকদের কতিপয় মহৎ গুণের সঙ্গেও আমার পরিচয় হয়। পুরুষ কাকটি নিজের মুখের খাবার বান্ধবীর মুখে তুলে দিতে কুণ্ঠাবোধ করে না। মা কাক নিজে না খেয়েও বাচ্চা কাকের মুখে নিজের আহার তুলে দেয়। …

(পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গপুরাণ- আহমদ ছফা)

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কষ্ট করে এই বিশাল কোটেশন টাইপ করার জন্য ধন্যবাদ। তবে কোটেশনটা এখানে না এসে পূর্বকথন ও ব্যাখ্যাসহ একটা ভিন্ন পোস্ট হিসেবে আসলে ভাল হত। তাতে আরো বেশিসংখ্যক পাঠক এটা পড়তে পারতেন। বাংলা ভাষার পাঠকদের জন্য ছফাপাঠ জরুরী বিষয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মণিকা রশিদ এর ছবি

পাণ্ডবদার লেখাটি পড়তে পড়তে ' 'পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গপুরাণ' এর ঠিক
এই অংশটুকুই মনে পড়ে যাচ্ছিল...
একটা আলাদা পোস্ট দিতে পারেন কিন্তু শুভাশীষ!
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- লেখাটা পড়তে গিয়ে বেশ কতোগুলো "গিয়ানজাম" লক্ষ্য করলাম পাণ্ডব'দা।

গিয়ানজাম ১ : এখনকার কুকিল হলো বারোমাইসা কুকিল, সারাবছরই ডাকে। মাঝে মাঝে তো বর্ষার দিনেই আমি হেঁরে গলায় ধরে বসি, "আহা আজি এ বসন্তে..."

গিয়ানজাম ২ : এই যে এতো এতো কুকিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে চলে আসে, এরা কি ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়? চিন্তা করে দেখলাম, বাংলাদেশ কি বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে!

গিয়ানজাম ৩ : কুকিলের ডিম ভরণ-পোষণের বেতনও আমাদের কাক পায় না। ফাইজলামি নাকি? আজকের বাজারে, এই তেল-চাল-ডালের ঊর্ধগামী মূল্যের বাজারে একটা বাচ্চা পেলে বড় করা কি চাট্টিখানি কথা!

গিয়ানজাম ৪ : আমার মতে কাক পাখিকেই বাংলাদেশের জাতীয় পাখির মর্যাদা দেয়া উচিৎ। দোয়েলের হাদুম পাদুম বহুত দেখছি। হালায় এক নম্বরের ফাউল।

আরেকটা গিয়ানজাম আছে, সেইটা বলা যাবে না। বড় হুজুর নারাজ হৈতে পারেন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

নাশতারান এর ছবি

আমার মতে কাক পাখিকেই বাংলাদেশের জাতীয় পাখির মর্যাদা দেয়া উচিৎ।

সহমত। দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অ্যান্টি-গিয়ানজাম ১ : দুই মেরু আর মেরুবৃত্তীয় কিছু অঞ্চল ছাড়া কোকিল সব জায়গাতেই পাওয়া যায়। তবে মেটিং সিজনে বোকা কাকদের খোঁজে তাদেরকে মূলতঃ ক্রান্তীয় অঞ্চলে চলে আসতে হয়। তাই কোকিলের আসল বাস আপনার মঞ্জিলের ধারে-কাছেই থাকার কথা।

অ্যান্টি-গিয়ানজাম ২ : বাংলাদেশে ঢোকে, সেখানে খায়-দায়, সেখানকার পাখির বাসায় ডিম পাড়ে, তারপর সেই পাখির বাসাটাকে এতিমখানা মনে করে বাচ্চা না ফুটিয়েই ভাগে। এই বাবদে কোকিলকূলের কাছে বাংলাদেশের পাওনা বছরে কয় মিলিয়ন মার্কিন ডলার হয় একবার ভেবে দেখুন! তবে এটাতো জানেন, এই দলে শুধু কোকিলরাই না বহু বৈদেশী আশরাফুল মাখ্‌লুকাতও আছে। তাদের কাছ থেকে কি পাওনা আদায় করতে পারবেন?

অ্যান্টি-গিয়ানজাম ৩ : উপরে অ্যান্টি-গিয়ানজাম ২-তেই ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা আছে। যেখানে দেশের উপর সিনাজুরী করে যায় আর সেখানে আপনি কাকের বেতন-ভাতা দাবী করেন!

অ্যান্টি-গিয়ানজাম ৪ : এই ব্যাপারগুলো আমার ঠিক বোধগম্য না। বাংলাদেশের যত্রতত্র গরু দেখতে পাওয়া যায়। তো গরুকে জাতীয় পশু না বানিয়ে এমন একটাকে জাতীয় পশু বানানো হল যার সংখ্যা এক হাজারও না। আর তাকে দেখতে হলে চিড়িয়াখানা যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।

তবে কোকিলের কুহু-কুহু'র চেয়ে আমার দোয়েলের সুই-ঈ-ঈ-ঈ চিই-ঈ-ঈপ চিপ্‌ চিপ্‌ ডাক অনেক ভালো লাগে। তবে ব্যাটার ডাঁট বেশি। দুই ঘন্টা তার পিছু ঘুরলে এক-আধবার ডাক শোনা যায়।

অ্যান্টি-গিয়ানজাম ৫ : আরে আমার কানে কানে কইয়া ফালান। যত মুশকিল, তত আসান।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- পুনঃ গিয়াজাম ১ : এই পোড়ার দেশে একটাও কুকিল দেখি নাই। তবে মাঝে মইধ্যে কাকের অস্তিত্ব টের পাই কা-কা শব্দে। এখন কথা হলো, এই কাক কি আসলেই ডাকে নাকি আমার মনের ভেতরে ডাকে, এইটা বুঝি নাই এখনো!

পুনঃ গিয়াজাম ২ : কুকিল ব্যাটা আরও অনেক বৈদেশিক আশরাফুল মখলুকাতের মতোন হেজিমোনি করে! এইটার একটা আপাত সমাধান খুঁজে পাইছি, দাঁড়ান ৩ -এ বয়ান করি। হাসি

পুনঃ গিয়ানজাম ৩ : কাকের বাসা পাহারা দেয়ার জন্য এখন থেকে ব্যাটা কাককে আশেপাশে ওৎ পেতে রাখা হবে। সাথে থাকবে একজন কাজী কাক। এই কাজী কাক, কাক সমাজে বিয়েশাদী পড়ায়! তো যেইনা কোনো কুকিল হেজিমোনি করার উদ্দেশ্যে কাকের বাসায় হানা দিবে তখনি কাজী সাহেব ব্যাটা কাকের সাথে কুকিলের বিয়ে দিয়ে দিবে। আর তখন কাক মনের আনন্দে আমার সেই বন্ধুটার মতোন "বিয়ের পর খারাপ কাম" করতে থাকবে। চান্দে চান্দে কয়েকবার এই থেরাপী প্রয়োগ করলে কুকিলের বংশও আর বাংলাদেশের কাকের বাসার দিকে কু-দৃষ্টি দিবো না। দেঁতো হাসি

পুনঃ গিয়ানজাম ৪ : গরুকে জাতীয় পশু করলে ভেজাল আছে। তখন আর্জেন্টাইনরা এসে বেঞ্চে বসতে চাইপে চেপেচুপে। তাদেরকে দেখে অশটোলিয়ানরাও বলবে, আমরা হাজির! সুতরাং গরু বাদ। বাঘ ঠিকাছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে একটা করে বাঘ রাখার অনুমতি দিতে হবে। বাংলার জনগণ জাতীয় পশু ঘরে পালবেন। মাছের ব্যাপারেও তাই। এমন একটা মাছ যেটা ধরার জন্য নদীতে যেতে হয়। অতো টাইম আছে? তার চেয়ে টাকি মাছ বা গুতুম মাছকে করা হোক জাতীয় মাছ। যাতে আমরা ইচ্চে করলেই ডোবা সেঁচে জাতীয় মাছ ধরে সেটা কড়কড়া ভাজি করে খেতে পারি!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হে সচল-হাচল-অচলগণ! আপনাদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ আপনারা আর দেরী না করে এই ছেলেটার বিয়ে দেবার ব্যবস্থা করেন। এর মাথার ভিতর কাক-কোকিল বাসা বানিয়ে ডাকাডাকি শুরু করেছে। কোকিলের বাটপারী বন্ধ করার জন্য কোকিলের বিয়ে দেবার কথা ভাবছে। আর তো সহ্য করা যায় না। এবার একটা হেস্ত-নেস্ত করে ফেলেন, এই চৈত্র মাস আসার আগেই।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
মূলত পাঠক এর ছবি

মজা পাইলাম। আচ্ছা, এই বিদেশি কোকিল আসলে কোন দেশের, সেইটা কৈতে পারেন?

আরেকটা কথা, "দায়িত্ব", দ্বায়িত্ব নয়। হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধু-গো কে বলা উত্তরে কিছুটা আভাস পাবেন। ভারতের হিসাবে কোকিল পুরোপুরি ভারতীয় পাখি। সারা বছর থাকে উত্তরের পাহাড়ি এলাকায় আর বসন্ত আসলে নেমে আসে ক্রান্তীয় অঞ্চলে।

দায় থেকে দায়িত্ব, এই কথাটা জেনেও এই টাইপোটা এড়াতে পারিনা। আমারই দায়িত্বহীনতা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

.

লেখাটা ভাবাল ।

আপনার গল্প-প্রচেষ্টা আসছেনা কেন আর?
পড়তে চাই।

--------------------------------------------
আকাশে তোর তেমনি আছে ছুটি
অলস যেন না রয় ডানা দুটি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গল্প আর নাইগো দিদি, তাই কোন প্রচেষ্টাই কাজে আসছেনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

মজারু। কাক আর কোকিলকে নিয়ে লিখলেন, অন্য পক্ষীরা যে রাগ করবে!

==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অন্যরা রাগ করলেও উপায় নেই। অন্যদের নিয়ে লেখার ক্ষমতা নাই।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

চিন্তার খোরাক পাওয়া গেল দেঁতো হাসি
অফটপিক: One flew over the cuckoo's nest (1975) দেখেছেন? কোকিলের উপর লেখা পড়ে কেন যেন এই মুভির কথা মনে পড়ল হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কাক-কোকিল সমাচার চিন্তার বিষয় নয়, অনুভব করার চেষ্টা করুন প্লিজ।

অফটপিকঃ না, দেখা হয় নাই। বাসায় ২৫~৩০টার মত মুভি জমেছে, দেখার সুযোগ পাচ্ছিনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

পাণ্ডবদা,

অন্যগুলো আপাতত বাদ দেন। এটা দেখেন। একটা মাস্ট-সি।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

দরকার পড়লে আমার থেকে দুই ঘন্টা সময় ধার নিয়ে দেখে ফেলেন, এইটা না দেক্লে ক্যাম্নে কী...

_________________________________________

সেরিওজা

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

কাক
তার কথা থাক
সে উড়ে যাক
যেদিকে যাচ্ছিল ...


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কথাতো শেষ, আর নাই।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

কাক বাংলাদেশের জাতীয় পাখি না কারণ কাকের গুণগুলি জাতি হিসেবে আমরা আত্মস্থ করতে অক্ষম।

কাককে খাওয়ানোর বিপদ হচ্ছে কাক ঐ জায়গা হেগে বিনাশ করে ফেলবে। শুধু কাক না, সব পাখিই। কাককে টয়লেট ট্রেনিং করাতে না পারলে কাকের প্রতি সোহাগ দেখানো চ্রম বোকামি।

বাংলাদেশের জাতীয় পাখি হওয়া উচিত ছিলো চড়াই।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ধুসর গোধূলি এর ছবি
মণিকা রশিদ এর ছবি

চড়াইকে জাতীয় পাখি বানাতে চাওয়ার পেছনে মনে হয় কোনো হেজিমেনি আছে!
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমি এই পোস্ট অবলম্বনে "ওয়ান ফ্লিউ ওভার্দ্যা কাউয়া'স নেস্ট" নামে একটা ডকুমেন্টারি বানাতে চাই...

_________________________________________

সেরিওজা

ফকির লালন এর ছবি

কাক কিন্তু উপকারী পাখি। কাকও যে পাখি তা আমরা ভুলে থাকি বোধহয়। পড়ে মনে পড়লো - যে জীবন দোয়েলের, ফড়িঙ্গএর তার সাথে মানুষের দেখা হয়না। ঠিক লিখলাম?

এতো ভাবতে নেই; - যদি সে শুধু বিষ ক্ষতি নেই, আমি তাকে বানাবো অমৃত - এ বিশ্বাসে শান্তি অনেক।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বস্‌, কাকের অস্তিত্বটা আমাদের কাছে সকালের রোদ, রাস্তার রিক্‌শা বা মোড়ের চায়ের দোকানের মত। তাই থাকলে তার উপকারটা টের পাইনা।

না ভেবে কী করবো বলুন? বিষকে অমৃত বানানোর মুরোদতো নেই। তাই প্রতিদিন একটু একটু করে হলাহল পান করে যাই।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মণিকা রশিদ এর ছবি

প্রিয়তে রাখলাম পাণ্ডব দা! আরো অনেকবার পড়তে ইচ্ছে করবে বলে। লেখায় শকুন্তলার প্রসঙ্গটা খুবই উপোভোগ করেছি।
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মাথায় যদি শকুন্তলা ঘোরা-ফেরা করে তাহলে এ'নিয়ে একটা কবিতা লিখে ফেলুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

ইন্টারেস্টিং হাসি
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কানে কম শুনি তো তাই বুঝতে পারি নাই কী বললেন, ইন্টারেস্টিং নাকি ই-ন্টা-রে-স্টিং?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

না বস, ইন্টারেস্টিং-ই বলছি। হাসি

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।