পকেট কাটার অর্থনীতি-১

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি
লিখেছেন ষষ্ঠ পাণ্ডব (তারিখ: রবি, ২৫/০৪/২০১০ - ৩:১৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

০১. ব্যাংক-ক্রেডিট কার্ড

ছোটবেলায় একবার টেলিভিশনে একটা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম। তাতে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ আমাকে তিনশ’ টাকার একটা চেক ধরিয়ে দেন। চেক পেয়ে আমি একই সাথে আনন্দিত এবং হতভম্ব। আনন্দিত এই জন্য যে, মোটামুটি কিছু না করে জীবনের প্রথম রোজগারটা করে ফেল্‌লাম (স্কলারশীপের টাকার বাইরে)। আর হতভম্ব এই জন্য যে, আমি এই চেক নিয়ে কী করব? আমার যে কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্টই নেই।...০১. ব্যাংক-ক্রেডিট কার্ড

[justify]ছোটবেলায় একবার টেলিভিশনে একটা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম। তাতে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ আমাকে তিনশ’ টাকার একটা চেক ধরিয়ে দেন। চেক পেয়ে আমি একই সাথে আনন্দিত এবং হতভম্ব। আনন্দিত এই জন্য যে, মোটামুটি কিছু না করে জীবনের প্রথম রোজগারটা করে ফেল্‌লাম (স্কলারশীপের টাকার বাইরে)। আর হতভম্ব এই জন্য যে, আমি এই চেক নিয়ে কী করব? আমার যে কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্টই নেই। যাই হোক, সেই টাকা ভাঙাতে অগ্রণী ব্যাংকে একটা অ্যাকাউন্ট খুললাম। তারপর কত চন্দ্রভূক অমাবস্যা গেল, সেই অ্যাকাউন্টে জমা দেবার মত আর কোন রোজগার করতে পারলামনা। বছর পাঁচেক পরে খোঁজ নিয়ে দেখলাম সেই তিনশ’ টাকা বেড়ে চারশ’ টাকার কিছু বেশি হয়েছে। বুঝলাম, লোকে ব্যাংকে টাকা রাখে কেন। কারণ, ব্যাংকে টাকার ছানাপোনা হয়। আমার এই জানাটা যে ঠিক ছিলনা সেটা বুঝলাম চাকুরীতে ঢোকার পর। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে আমার অ্যাকাউন্টে বেতনের টাকা জমা হত। তখনো একা মানুষ তাই প্রতি মাসে কিছু টাকা বাঁচত। বছরখানেক পরে খোঁজ নিতে গেলাম আমার টাকা জমে আর ছানাপোনা দিয়ে কত হল তা জানতে। দেখি ও হরি! আমার টাকা ছানাপোনা দেয়া দূরে থাক, জমানো টাকা থেকেই বেশ কিছু অঙ্ক এই চার্জ সেই চার্জের নামে কেটে নেয়া হয়েছে। কারণ, আমি নাকি তাদের বলা নূন্যতম অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স (সম্ভবতঃ এক লাখ টাকা) রক্ষা করিনি। এরপর থেকে দেখি টাকা কাটতে কাটতে এক একবার আমার অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স শূন্যে নেমে আসছে। আমি বুঝলাম ব্যাংকে টাকা রাখলে ছানাপোনা দেবার বিধান আর নেই - বরং ব্যালেন্সের বাড়তি মেদ কেটে তাকে স্লিম রাখার বিধান চালু হয়েছে।

আপনি যদি ব্যাংকে টাকা রাখেন বা ব্যাংকে সঞ্চয়ের নানা প্রকল্পে টাকা খাটান তাহলে আপনি বার্ষিক ৯% হারে সরল সুদও পাবেন কিনা সন্দেহ। তার উপর এই চার্জ সেই চার্জ কাটার ফলে আপনার প্রাপ্ত effective rate of interest বার্ষিক ৭% ও থাকবেনা। কিন্তু সেই আপনিই যদি ব্যাংক থেকে টাকা ধার করেন তাহলে আপনাকে বার্ষিক ১২% থেকে শুরু করে ১৮% হারে চক্রবৃদ্ধি সুদ পরিশোধ করতে হবে। এই চার্জ সেই চার্জ ধরে কখনো কখনো effective rate of interest বার্ষিক ২০% হারকেও ছাড়িয়ে যায়। তাহলে দেখা যাচ্ছে, ব্যাংক আপনার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আপনাকেই আবার ধার দিয়ে নেট ১০%-এর মত ব্যবসা করে নিচ্ছে। ব্যাংক ব্যবসা করবে তাতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু আপত্তিটা হচ্ছে সেই ব্যবসার মুনাফার হারটা বড্ড বেশি। তাছাড়া, নূন্যতম অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স রক্ষার নামে ক্ষুদ্র আমানতকারী বা সঞ্চয়কারীকে ব্যাংক প্রায় কিছুই দিচ্ছেনা, উলটো তাদের পকেট কাটছে। এই ব্যবস্থাতে স্বল্প আয়ের লোকজন সঞ্চয়ের ব্যাপারে উৎসাহ হারায় এবং সঞ্চিত অর্থ অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যয় করে ফেলে। পকেটকাটার অর্থনীতিতে ব্যাংক নিজে যেমন আমানতকারী বা সঞ্চয়কারীর পকেট কাটে, তেমন সে অন্য পকেটকাটাদের জন্যও পথ খুলে দেয়।

পত্রপত্রিকাতে হরহামেশা দেখবেন বড় বড় ব্যবসায়ী বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর ধরে ব্যাংক থেকে নেয়া অর্থ শোধ করছেননা। আবার একইসাথে দেখবেন ক্ষুদ্রঋণের কিস্তির টাকা আদায় করার জন্য দরিদ্র কৃষকের টিনের চাল বা কিষাণীর নাকের নথ খুলে নেয়া হচ্ছে অথবা অনাদায়ী কৃষিঋণের জন্য তাদের নামে সার্টিফিকেট মামলা করা হচ্ছে।এই অভিযোগগুলো মূলতঃ ক্ষুদ্রঋণ দেয় এমন এনজিওদের নামে থাকলেও মামলা করার ব্যাপারে ব্যাংকগুলো মোটেও পিছিয়ে নেই। ব্যাপারটা বোধগম্য যে, ব্যাংকগুলো ধনীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে নমনীয় হলেও গরিবের ক্ষেত্রে তারা বড়ই কঠোর। এই কঠোরতা টের পাবেন যদি আপনি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হন আর তার জন্য যদি আপনি ঋণ করতে ব্যাংকের দ্বারস্থ হন। ব্যাংক প্রথমে আপনার আবেদনের সাথে সাথে আপনার চৌদ্দগোষ্ঠীর নাড়িভুঁড়ির ঠিকুজী বের করবে। তার কিছুদিন পর আপনাকে জানাবে আপনার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ব্যাংক থেকে আপনি ঋণ পাবেননা এমন নয়। তবে ততদিনে নয়মণ তেল পুড়ে যাবে। পক্ষান্তরে বড় বড় ঋণখেলাপীরা দেখবেন যাদুমন্ত্র বলে নামে-বেনামে অনায়াসে ব্যাংকঋণ পেয়েই যাচ্ছেন।

এক কালে লোকে ব্যাংক দিয়ে সেখানে বউ-ছেলে-মেয়ে- ছেলেবউ-মেয়েজামাই-ভাই-বোন-শালা-শালীদের পরিচালক বানাতো। তারপর পরিচালক সাহেব/সাহেবানরা এই সেই ব্যবসার নামে কোল্যাটারাল ছাড়া ঐ ব্যাংক থেকেই ঋণ নিয়ে অগ্যস্ত যাত্রা করতেন। এভাবে এক কোটি টাকা দিয়ে পরিচালক হয়ে পঁচিশ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যাংকের আমানতকারীদের ফতুর করা যেত। এখন সেই দিন নেই। এখন পরিচালকরা নিজের ব্যাংক থেকে কোন ঋণ নিতে পারবেন না। কিন্তু তাতে যে আগের ব্যাপারটা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে তা নয়। এখন এক ব্যাংকের পরিচালককে অন্য ব্যাংক কোল্যাটারাল ছাড়া ঋণ দেয়। একটা ভাই-ভাই নেটওয়ার্ক আরকি। প্রখ্যাত ঋণখেলাপীদের প্রফাইল দেখলে বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা টের পাওয়া যায়।

ইদানিংকালে আপনি ফোনে বা সরাসরি কিছু মানুষের মুখোমুখি হবেন যারা আপনাকে পরিচয় দেবে সে অমুক ব্যাংকের লোক। আপনি যদি তাদের ব্যাংকে অত টাকা রাখেন এবং তা খরচ না করেন তাহলে আপনাকে আপনার জমা দেয়া অঙ্কের দ্বিগুণ পরিমান ঋণ দেয়া হবে। এই লোকগুলো কিন্তু ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী নয়। তারা কন্ট্রাকটর গোছের কিছু প্রতিষ্ঠানের ভাড়াটে কর্মী। অনেক সময় ঐসব কর্মীরাও এই ফাঁকিটা ধরতে পারেনা। যাই হোক, আপনি কষ্টেসৃষ্টে একটা ভালো অঙ্কের টাকা সেই ব্যাংকে জমা রেখে ঋণের জন্য আবেদন করলেন। দেখবেন আপনাকে “বাঙালকে হাইকোর্ট দেখানোর মত” ব্যবস্থায় ফেলা হচ্ছে। হাইকোর্ট দেখানোর পর আপনাকে জানানো হবে আপনার ঋণের আবেদন অগ্রাহ্য করা হয়েছে। কারণ, আপনার অমুক অমুক যোগ্যতা নেই। বলাইবাহুল্য তারা যেসব যোগ্যতা দাবী করে, সেগুলো আপনার থাকলে আপনার ঐ পরিমাণ টাকা ঋণ করার কোন দরকার হতনা। মাঝখানে তিন থেকে চারটা মাস কেটে যাবে। তিন/চার মাস পরে আপনার টাকা আপনি তুলে নেবেন (কিছু চার্জ কেটে রাখবে কিন্তু)। এরমধ্যে ঐ ব্যাংক ফাও ফাও আপনার টাকায় ব্যবসা করে নেবে।

গত দশ বছরে ব্যাংকগুলো আপনার পকেটকাটার আরেকটা পথ খুলেছে - সেটা ক্রেডিট কার্ড। আপনার পকেটে ক্রেডিট কার্ড থাকা মানে শপিং-এ গেলে আপনার হাত শুলশুল করতে থাকবে এবং আপনি যা দরকার নেই অথবা যা সামর্থ্যে কুলায়না অমন সব জিনিষ কিনতে থাকবেন। মাস শেষে অন্য বাজেট কেটে আপনাকে সেই টাকা শোধ করতে হবে অথবা সুদের বোঝা টেনে যেতে হবে। আমি বলছিনা যে, ক্রেডিট কার্ড কালচারটা একেবারেই খারাপ। বরং নগদ টাকা বহনের বিপদের কথা চিন্তা করলে ব্যাপারটা ঠিক আছে। আবার সীমার মধ্যে থেকে আগে ভোগ করে পরে শোধ করার চার্বাক দর্শনও সমর্থনযোগ্য। কিন্তু বিপদটা হচ্ছে বাংলাদেশে এই ক্রেডিট কার্ড দেবার কোন সীমা-পরিসীমা নেই (অন্য দেশের কথা জানিনা)। একই ব্যাংক একই ব্যক্তিকে একাধিক ক্রেডিট কার্ডও দেয় (আমার নিজেরই অমন আছে)। আবার বিভিন্ন ব্যাংকের একই ব্যক্তিকে দেয়া ক্রেডিট কার্ডগুলোর লিমিটও একপ্রকার নয় (আমি নিজেই তার উদাহরণ)। ফলে একই ব্যক্তি অনেকগুলো ক্রেডিট কার্ডের মালিক হয়ে নিজের সামর্থ্যের বাইরে ব্যয় করে ফেলছেন। অনেক সময় “হাঁসের ডিম মুরগীকে, আর মুরগীর ডিম হাঁসকে” দেবার মত একজনের কাছ থেকে করা ধার আরেকজনের কাছ থেকে ধার করে শোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে মোট টাকা খুব একটা শোধ হয়না, শুধু সুদ আর চার্জগুলো শোধ হয়। এতে ব্যাংকগুলো প্রায় বিনা আয়াসে আপনার পকেট কাটতে পারছে। নির্বিরোধী আপনি একসময় আবিষ্কার করবেন যে আপনি একজন ঋণদায়গ্রস্থ মানুষে পরিণত হয়েছেন। বলতে পারেন দোষটাতো ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর। কিন্তু আমার প্রশ্ন - ফাঁদটা পাতলো কে? আইন যতই বলুক “ক্রেতা সাবধান”, কিন্তু তাতে এই প্রলোভনের মায়াজালের ভূমিকাকে কি অস্বীকার করা যায়?

০২. বহুতল মার্কেট-দোকান

বাংলাদেশের যেকোন শহরে যান, দেখবেন সেখানে রাস্তার পাশের বাড়ি ভেঙে বহুতল মার্কেট করা হচ্ছে। আগে মার্কেট থেকে থাকলে সেখানে ভাঙচুর করে আরো নতুন নতুন দোকান তৈরি করা হচ্ছে। দেখলে মনে হবে যেন আমারা আস্তে আস্তে দোকানদারের জাতিতে পরিণত হচ্ছি। এইসব মার্কেটের বেশিরভাগ তৈরি-পোশাক, ষ্টেশনারী, মোবাইল ফোন, ইলেক্‌ট্রনিক্‌স, ফাস্টফুড ইত্যাদির দোকানে ভর্তি। মার্কেটগুলো দেখলে আপনার মনে হবে রাতারাতি দেশের মানুষের ‘ক্রয়ক্ষমতা’ বেড়ে গেছে তাই বাড়তি চাহিদা মেটানোর জন্য অতগুলো মার্কেট-দোকান দরকার। বাস্তবে ব্যাপারটা মোটেও অমন কিছুনা। নতুন ক্রেতাশ্রেণী কিছুটা তৈরি হয়ে থাকলেও তাদের চাহিদার তুলনায় মার্কেট বা দোকানের সংখ্যা বহুগুণ বেশি। একবার ঈদুল ফিতর্‌ ও দুর্গাপূজার মত দুটো বড় উৎসবের আগে ঢাকার নিউ মার্কেট থেকে শুরু করে শ্যমলী পর্যন্ত মিরপউর রোডের দুই পাশের মার্কেটগুলো সারা বিকেল-সন্ধ্যা লক্ষ করেছিলাম। দেখতে পেলাম হাতেগোনা কিছু মার্কেট ছাড়া বাকি বেশিরভাগ মার্কেটে জনসমাগম খুবই কম। কিছু কিছু মার্কেট প্রায় জনশূন্য। দুটো বড় উৎসবের আগে মার্কেটগুলোর যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে সারা বছর এদের বেচা বিক্রি কেমন? খোঁজ নিলে দেখবেন খুবই কম। বড় বড় শপিং মলে দেখবেন অনেক দোকান বছর ঘুরলেও চালুই করতে পারেনি।

আসলে এই মার্কেট-দোকান কালচার মধ্যবিত্তের পকেট কাটার একটা উপায়। কোটি টাকা দিয়ে একটা দোকান নিতে পারলে একজন মধ্যবিত্ত মনে করেন যে তার আয়ের একটা ভালো ব্যবস্থা হল। আরো কোটি টাকা দিয়ে ডেকোরেশন করে, পণ্য তুলে দোকান চালু করতে উদ্যোক্তার সঞ্চয় সব শেষ হয়ে বড় অঙ্কের ধার-দেনা হয়ে যায়। কেউ কেউ আবার দোকানটা চালুই করতে পারেননা। এভাবে চালু করা দোকান কত বছরে break even point-এ পৌঁছায়? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যত দিন যায় break even point তত দূরে যেতে থাকে। কারণ, দোকানে নতুন নতুন সব বিনিয়োগ করতে হয়। অনেকেই লাভের ঘরে পৌঁছানোর আগে কমদামে দোকান বেচে দিয়ে এর হাত থেকে মুক্তি পাবার চেষ্টা করেন। মাঝখান থেকে তার একটা বড় অঙ্ক গচ্চা যায়। এভাবে বিপুল পরিমাণ সচল টাকা দোকান আর তার পণ্যসামগ্রীতে আটকা পড়ে থাকে। আর টাকা অচল হলে সেখান থেকে আয়ও বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তার টাকা বড় উদ্যোক্তাদের (যারা মার্কেট দেন) পকেটে চলে যায়। একটু স্বচ্ছলতার আশায় ব্যবসা করতে চাওয়া ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তারা এভাবে নিঃশেষিত হন।

বাংলাদেশের অধিকাংশ শহরে ঘোরার মত জায়গা না থাকায় বা বিনোদনের ভালো ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় সবাই ঘোরার জন্য বা সময় কাটাতে মার্কেটগুলোতে ঘোরেন। এই ঘোরাঘুরির সময় বেশিরভাগ সময় অদরকারী সব জিনিষ কেনা হয় বা আজেবাজে জিনিষ খাওয়া হয়। এতে দোকানদারদের পকেটে কিছু টাকা যায় বটে, তবে সেই টাকা আসে বিনোদনপিয়াসী দরিদ্র বা মধ্যবিত্তের পকেট কেটে।

০৩. ফ্ল্যাট-জমি

বাংলাদেশে আপনি চাকুরী বা ব্যবসা করে যতই উন্নতি করুন না কেন, আপনাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সফল মানুষ হিসাবে চিহ্নিত করা হবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনার নিজের জমি বা বাড়ি বা ফ্ল্যাট হয়। কিন্তু জমি কেনা বা ফ্ল্যাট কেনা সহজ কথা নয়। এক ঢাকা শহরে গত এক দশকে জমির দাম যে কতগুণ বেড়েছে তা হিসাবের বাইরে। ফ্ল্যাটের দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। ঢাকার উপকণ্ঠে বা ঢাকা থেকে ত্রিশ-চল্লিশ কিলোমিটার দূরেও অবস্থা একই প্রকার। ভূমিদস্যুরা ফসলের মাঠ, বাগান, জলাভূমি, নদী-খাল হেন জায়গা নেই যা দখল করেনি। এই দখলকরা বা কিনে নেয়া জমিতে গড়ে উঠছে একের পর এক আবাসিক প্রকল্পের নামে ঘিঞ্জি বস্তি। ঢাকার কেন্দ্রস্থলে যা হচ্ছে সেগুলো হাইরাইজ বস্তি ছাড়া কিছু নয়।

ফ্ল্যাট-জমি এখন আর নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই। জমিও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে অচিরেই। ফ্ল্যাটগুলো যা তৈরি হচ্ছে সেখানে মাননিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। রাজউকের আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঠাসাঠাসি বাক্সবাড়ি উঠছে। একটা ফ্ল্যাট কিনতে যত টাকা ব্যয় হয় তা ঐ ফ্ল্যাটের ভাড়ার টাকায় কখনোই আদায় হওয়া সম্ভব না। কাগজে-কলমে যত বছরে ঐ টাকা আদায় হবে (সুদ হিসাব না করেই), তাতে ততদিনে ঐ ফ্ল্যাটের আয়ুষ্কাল শেষ হয়ে যাবে। তাই ফ্ল্যাট কিনে তাতে বাস করলে মনে শান্তি হয়তো পাওয়া সম্ভব, কিন্তু ওখান থেকে আয়ের আশা সুদূরপরাহত। ফ্ল্যাট কেনার জন্য যদি ঋণ করতে হয় তাহলে সেই ঋণের সুদের অঙ্ক দেখলে মাথা ঘুরে যাবে। আর কোন কারণে ঋণ পরিশোধের কিস্তি বাদ পড়লে বা ঋণ যথাসময়ে শোধ করতে না পারলে আম-ছালা সবই যাবে।

আপনি যদি ঢাকার উপকণ্ঠের কোন হাউজিং প্রকল্পে জমি কেনার কথা ভাবেন তাহলে খোঁজ নিলে দেখবেন বেশিরভাগ জমি বিশ বাঁও জলের নিচে। রিয়েল এস্টেট কোম্পানীগুলো সেই জমি সাত-আট বছর সময় নিয়ে কোন রকমে ভরাট করে আপনাকে যখন হস্তান্তর করবে তখন দেখবেন বাড়ি করার জন্য আপনাকে আরো ভূমি উন্নয়ন করতে হবে। তাছাড়া দেখা যায় গোটা প্রকল্প কাগজে-কলমে যা দেখানো হয়েছিল তার কিছুই সেই মত নেই। এরচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হচ্ছে অনেক প্রকল্পের কোন অনুমোদনই থাকেনা বা অনেক প্রকল্পের জমির মালিক ঐসব রিয়েল এস্টেট কোম্পানী নয়। সরকারের তরফ থেকে মাঝে মাঝে এমন ভুয়া প্রকল্পগুলো তালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে দেয়া হলেও নানা প্রচার মাধ্যমে ঐ দুর্বৃত্তদের বিজ্ঞাপণ বন্ধ থাকেনা। সরকারী বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়েনি এমন অনেকেই ঐসব প্রতারকদের ফাঁদে পা দেন। সিএস, আরএস, এসএ জরীপের পার্থক্যর জটিলতা, শত্রু সম্পত্তি আইন-অর্পিত সম্পত্তি আইনের ফাঁক-ফোকড়, ওয়াকফ এস্টেট বা দেবোত্তর সম্পত্তির নানা প্যাঁচ, মিউটেশন আর নামজারীর গোলকধাঁধায় একই জমি একাধিকজনের কাছে বেচা একটা সাধারণ ঘটনা। এই চোরাবালিতে যারা পরেন তারা আর বাঁচতে পারেন না।

জমির মূল্য শোধ করতে করতে মধ্যবিত্ত বাড়ি বানাবার টাকাটা আর যোগাড় করতে পারেন না, অথবা বৃদ্ধ হয়ে যান। একজন মানুষের যৌবনের আয় এভাবে এক প্রকল্পে নিঃশেষিত হয়। বলতে পারেন, ফ্ল্যাট বা জমি কেনার দরকার কী? এই দরকারটা কেন সেটা জীবনের অধিকাংশ সময় যাদের ভাড়া-বাসায় কেটেছে তারা জানেন। ভাড়া-বাসার সীমাবদ্ধতা, অনিশ্চয়তা থেকে বাঁচার জন্যই মানুষকে এই ধরণের উদ্যোগ নিতে হয়। এই চাওয়াটা অন্যায় নয়, অন্যায্যও নয়। কিন্তু জমি-ফ্ল্যাটের ব্যবসার একটা বড় অংশ অসৎ লোকদের হাতে থাকায় প্রতারিত হবার সম্ভাবনা যেমন প্রবল, তেমন ঠিকমত জমি-ফ্ল্যাট বুঝে পাবার পরও সর্বস্বান্ত হবার সম্ভাবনাও প্রবল। জমি-ফ্ল্যাট বুঝে পেয়ে সর্বস্বান্ত হয় কিভাবে? কারণ, এই ধরণের বিনিয়োগ থেকে আয় হবার সুযোগ কম। আর যা আয় হয় তা পরিমাণে এত কম যে তা কোন value add করেনা। জমি-ফ্ল্যাট বিক্রি না করলে মূল্যবৃদ্ধির লাভটা পকেটে আসেনা। আর মধ্যবিত্ত জান গেলেও জমি-ফ্ল্যাট বিক্রি করবেনা। তাই জমি বা ফ্ল্যাটের খাতে সচল টাকা শেষ পর্যন্ত ঐ রাঘব-বোয়ালদের পকেটেই যায়।

চাহিদার তুলনায় বাসস্থানের ব্যাপারগুলোতে সরকারী উদ্যোগ খুবই কম। সরকারী উদ্যোগের বেশিরভাগ আবার সরকারী চাকুরীরতদের জন্য বা সরকারী দলের মানুষদের জন্য হয়। জনসাধারণের জন্য উন্মূক্ত প্রকল্পের সংখ্যা হয় খুবই কম। যাও হয় সেগুলো এই কোটা সেই কোটাতে ভাগ করে সাধারণ মানুষের জন্য প্রায় কিছুই থাকেনা। সরকারী উদ্যোগের অভাব এই ব্যবসার রাঘব-বোয়ালদের যা-ইচ্ছা-তাই দামে জমি-ফ্ল্যাট বিক্রির সুযোগ করে দিয়েছে। ফলে জমি-ফ্ল্যাটের অন্যায্য মূল্য পরিশোধ করতে গিয়ে মধ্যবিত্তের টাকা উচ্চবিত্তের পকেটে চলে যায়।

(চলবে)


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

এরপর থেকে দেখি টাকা কাটতে কাটতে এক একবার আমার অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স শূন্যে নেমে আসছে।

এইটা কি মাইনাস হতে পারে ? আমি দেশে এইচএসবিসিতে একটা এ্যাকাউন্ট রেখে এসেছিলাম ।

কিন্তু আপত্তিটা হচ্ছে সেই ব্যবসার মুনাফার হারটা বড্ড বেশি।

মুনাফার হার বেশী এটা বলা তখনই যৌক্তিক যখন অন্য ইন্ডাস্ট্রির সাকে ব্যাংকিং সেক্টরের তুলনা করতে পারা যাবে । এরকম কি কোন ড্যাটা আছে অন্য ইন্ডাস্ট্রি কতোটা মুনাফা করে এবিষয়ে ?তিন/চার মাস পরে আপনার টাকা আপনি তুলে নেবেন (কিছু চার্জ কেটে রাখবে কিন্তু)। এরমধ্যে ঐ ব্যাংক ফাও ফাও আপনার টাকায় ব্যবসা করে নেবে।

তিন/চার মাস পরে আপনার টাকা আপনি তুলে নেবেন (কিছু চার্জ কেটে রাখবে কিন্তু)। এরমধ্যে ঐ ব্যাংক ফাও ফাও আপনার টাকায় ব্যবসা করে নেবে।

এই প্র্যাকটিস উন্নত ফিন্যান্সিয়াল মার্কেটেও আছে । আমার দৃষ্টিতে এটা অনৈতিক কাজ ।

বাংলাদেশে এই ক্রেডিট কার্ড দেবার কোন সীমা-পরিসীমা নেই (অন্য দেশের কথা জানিনা)। একই ব্যাংক একই ব্যক্তিকে একাধিক ক্রেডিট কার্ডও দেয় ........ কিন্তু আমার প্রশ্ন - ফাঁদটা পাতলো কে?

জার্মানির কথা জানি । এখানে ক্রেডিট ইনফরমেশনের একটা ড্যাটাবেইজ আছে - শুফা নাম । এখানে এরকম ওভারল্যাপিং হবার সুযোগ নেই । এরকম কিছু করলে হয়তো যত্রতত্র ক্রেডিট কার্ড ব্যবসাটা নিয়ন্ত্রন করা যাবে ।
পরের অংশটা নিয়ে আমি একমত নই । খুঁজলে অনেক ব্যবসার ক্ষেত্র বের করা যাবে যেটার মাধ্যমে অনুচিত কাজ হওয়া সম্ভব । এর জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে দায়ি করলে কিভাবে হবে! সজ্বি কাটার ছুরি দিয়ে মানুষ খুন করলে ছুরি কোম্পানিকে ছুরি বানানোর জন্য দুষতে পারি না আমরা ।

আসলে এই মার্কেট-দোকান কালচার মধ্যবিত্তের পকেট কাটার একটা উপায়।

পুঁজি কিন্তু শুধু মার্কেট দোকানের মালিকের পকেটেই যায় না । পুঁজি মার্কেট দোকানের কর্মচারি, দারোয়ান, পিওন সবার পকেটেই সার্কুলেট হতে থাকে । বিষয়টা খিয়াল কৈরা । যেই মধ্যবিত্তের পকেট কাটা হচ্ছে সেই একই মধ্যবিত্তের পকেটটা কিন্তু ঐ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই ভরে দেয় পরের বার কেনাকাটার জন্য । আর দোকানদার দেশ হওয়াতে খারাপ কিছু নাই । এটা সার্ভিস সেক্টর । যদ্দুর জানি সার্ভিস সেক্টরের ওপর পুরো বিশ্ব অর্থনীতি দাড়িয়ে আছে । পোস্টের দোকান মার্কেট সম্পর্কিত অংশে একমত হতে পারলাম না ।

তাই জমি বা ফ্ল্যাটের খাতে সচল টাকা শেষ পর্যন্ত ঐ রাঘব-বোয়ালদের পকেটেই যায়।

এখানেও আগের কথাই বলি । ব্যবসার লাগামটা যার হাতে থাকবে তার হাতে শেষ বিচার লাভের গুড়ের সিংহভাগটা থাকবে । আর রিয়েল স্টেট সেক্টরে আর যেসব সমস্যার কথা বললেন ওটা রেগুলেশনের সমস্যা । এই সমস্যাটাই খেলো আমাদের সবাইকে ।

পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স নেগেটিভ হবার আগেই অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেবার কথা। ব্যালেন্স শূন্য হলেই চিঠি দিয়ে, ফোন করে আপনাকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলবে।

২. বাংলাদেশের ব্যাংকের মুনাফার হার বেশি বলেছি অন্য অনেক দেশের তুলনায়। আমার জানা মতে থাইল্যান্ডে আমানত আর ঋণের সুদের হারের পার্থক্য ৫%-এর কম। বাংলাদেশ ব্যাংক আর সরকার বহুদিন ধরে ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামাতে বলছে। কিন্তু দেশের বানিজ্যিক ব্যাংকগুলো তা পাত্তাই দিচ্ছেনা। সরকারও এই ব্যাপারে এখনো কোন কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি।

৩. আপনার টাকায় ফাও ব্যবসা যে দেশেই করে থাকুক তা সমর্থণযোগ্য নয়। এই অনৈতিক ব্যাপারটা নিয়ে নীতিনির্ধারকরা কিছু বলেন না।

৪. প্রত্যেকটা নাগরিকের আয়-ব্যয়, জমা-খরচ, সঞ্চয়-ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ডাটাবেস থাকা উচিত ছিল। তাহলে এ’সব সমস্যা হতনা। কে জানে ডিজিটাল বাংলাদেশে অমন হবে কিনা।

৫. আমি কিন্তু ঠিক ব্যবসাগুলোকে দায়ী করছিনা। আমার অভিযোগ বিদ্যমান ব্যবস্থার ব্যাপারে। তবে আমার ভাষার সীমাবদ্ধতার জন্য ভুল বুঝতে পারার অবকাশ থাকতে পারে।

৬. আপনি যেরকম বললেন সেরকমভাবে দোকানগুলো যদি চলত তাহলে মানি সার্কুলেট হত। বাস্তবে তা হয়না। দোকানের সংখ্যা অতিরিক্ত হওয়ায় কেনা-বেচা হচ্ছে কম। ফলে কর্মচারীদের বেতন, ইউটিলিটি বিল হরহামেশা বাকি পড়ছে। দোকান মালিকেরাও লাভের মুখ দেখছেন না। উদ্যোক্তার বিনিয়োগ ব্রেক ইভেনে পৌঁছাতে পারছেনা। এমন অবস্থাতে আরো দোকান-মার্কেট দেবার পিছনে দোকান কিনতে ইচ্ছুকদের কাছ থেকে এক কালীন টাকা হাতিয়ে নেবার ব্যাপারটিই সত্য হচ্ছে। আর দোকানদারী খারাপ হতে যাবে কেন। যেকোন সৎ ব্যবসাই সমর্থণযোগ্য।

৭. রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় রেগুলেশনের সমস্যা (কিছু ক্ষেত্রে প্রনয়ণ, কিছু ক্ষেত্রে যথাযথ প্রয়োগ) বলে যা বলছেন তার ফাঁক গলেই এই প্রতারণাগুলো চলছে। এখানেও ব্যবসাটার দোষ নেই। তবে ব্যবসাটা পকেটকাটার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

মনোযোগ দিয়ে পড়া ও বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য ধন্যবাদ।




তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

এর জন্যি আমি ধার করে বাটার বন খাই না দেঁতো হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

হ্যাঁ, আপনি ধার করেননা, তবে বাটার বন ঠিকই খান। তা কারটা খান সেটা সচলের সবাই জানেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হিমু এর ছবি

এই সিরিজটা খুবই আগ্রহ দিয়ে পড়ার জন্যে মাদুর পেতে বসলাম। চলুক। এই পর্বে আমার বলার তেমন কিছু নেই, তাই শোনার জন্যে কান খুলে আছি।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একটু ভয় পেলাম। পাঠকের প্রত্যাশা বাড়লে যা হয় আরকি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্পর্শ এর ছবি

অসাধারণ একটা সিরিজ শুরু হলো। আগ্রহ নিয়ে পড়ছি।
দ্রুতলয়ে চলুক। চলুক


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। চালানোর চেষ্টা করছি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নৈষাদ এর ছবি

চমৎকার লেখা। পরের পর্ব গুলির অপেক্ষায় রইলাম। কিছু প্যাঁচাল।

ব্যাংকের আমানত আর ঋণের সুদের হারের বড় পার্থক্যের (স্প্রেড) যে কথাটার উল্লেখ আপনি করেছেন, প্রয়াত সাইফুর রহমান সাহেব এটা নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। উনার যুক্তি ছিল বাংলাদেশে এই স্প্রেডের হার বেশ বেশি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। ভোগবাদের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যাংকগুলি আরেকটা জিনিসে সাফল্য পেয়েছে - ‘কনজ্যুমার ক্রেডিট’। এট দ্য কস্ট অভ ইন্ডাস্ট্রিয়্যাল লোন। চাকুরীজীবিরা ব্যাপক ভাবে এই কনজ্যুমার ক্রেডিটে আসক্ত এবং এর রিকভারি রেট খুবই ভাল। চাকুরী সূত্রে জানি কারা কারা এই লোন নিচ্ছে – শতকরা হার কিন্তু অবাক করার মত।

এখন তেমন ভাবে খেয়াল করে দেখিনা, কিন্তু চাকুরীর প্রথম দিকে একাধিক ঘটনায় ব্যাংকের ব্যাখ্যাহীন চার্জ কাটার পর চ্যালঞ্জের মুখে অ্যাড-ব্যাক করেছে। কথা না রাখারও নমুনা পেয়েছি। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রথম যখন হিসাব খুলি, তখন ‘মানি বিল্ডার’ বলে একটা স্কিম ছিল। কথা দিয়েছিল - মানি বিল্ডার থাকলে মিনিমাম ব্যালেন্সের দরকার নেই – কথা রাখেনি।

ফ্ল্যাট-জমি এখন আর নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই। জমিও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে অচিরেই।
- কী বলেন? মধ্যবিত্তের সংজ্ঞা কী? সাপ্তাহিকে কিংবা ২০০০ এ কাল শেলটেকের বিজ্ঞাপণ দেখলাম ধানমন্ডিতে প্রতি স্কোয়ার-ফিট ফ্ল্যাটের বিক্রয় মূল্য ১২,৫০০ টাকার কাছাকাছি, তারমানে ১২০০ স্কোয়ার ফিটের ফ্ল্যাটের দাম হচ্ছে ১.৫ কোটি। ধরলাম পনেরো বছরে কেউ পুরোটা টাকা দিবে, আরও ধরলাম ভোগবাদের এই বাজারে মাসিক আয়ের ২০% সে এই আবাসনের জন্য খরচ করবে। সরল হিসাবের স্বার্থে বার্ষিক আয়বৃদ্ধি এবং টাকার ইন্টারেস্ট পরস্পরকে অফসেট করলে, তাঁর বর্তমান মাসিক আয় হওয়া উচিত ৪,১৭,০০০ টাকার মত!

ফ্ল্যাট-জমির ব্যাপারটা বাংলাদেশের আরও কয়েকটা জিনিসের মত ‘ওভার চার্জড’ হয়ে বসে আছে। ‘এতটুকু বাসা, করেছিনু আশা’ থিওরীতে গিয়ে মানুষজনই বাড়িয়ে দিচ্ছে ফ্ল্যাটের দাম। তারপর আছে সরকার সমর্থিত কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ, প্রবাসীদের কষ্টার্জিত আয়ের প্রভাব, জমির অভাব, জমির তুলনায় অনেক বেশি ডেভেলপার। সব কিছু মিলিয়ে হজপজ অবস্থা। আর মানুষ পাগলের মত ছুটছে। ২০০৮ সালে এডিনবরা শহরের আশপাশে বাগান সহ ছবির মত বাড়ির দাম সেখানকার পত্রিকার মূল্য অনুয়াযী আমার হিসাবে ঢাকার সমতুল্য ছিল। কিন্তু পারচেজ-প্যারিটির হিসাবে? কোথাও জানি ঘাপলা আছে। বড় ঘাপলা...।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. আমানত আর ঋণের সুদের হারের পার্থক্য নিয়ে কথা বলাটা এখন অরণ্যে রোদন। ব্যাংকগুলো কারো মতামতের তোয়াক্কা করেনা।

২. কনজ্যুমার ক্রেডিটের ব্যাপারে আপনার পর্যবেক্ষণ সঠিক। এই প্রকল্প অর্থনৈতিক উন্নয়নের সহায়ক নয়। কেন নয় সেটা আপনি এক কথায় বলে দিয়েছেন - at the cost of industrial loan। সেই অর্থে এটাও পকেট কাটার অর্থনীতি।

৩. Hidden cost এখন ব্যাংকগুলোর আয়ের অন্যতম উৎস হয়ে গেছে। ব্যাংকের operational expenditure-এর একটা বড় অংশ এখন এখান থেকে পাওয়া যায়।

৪. সাড়ে বারো হাজার টাকা কেন, ঢাকা শহরে ত্রিশ হাজার টাকা প্রতি বর্গফুট দামের ফ্ল্যাটও আছে। আবার তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা প্রতি বর্গফুটের ফ্ল্যাটও আছে। আমি শেষের ভাগের ক্রেতাদের মধ্যবিত্ত বলেছি।

৫. মানুষজন ফ্ল্যাটের দাম বাড়াচ্ছেনা, বরং ডেভলাপাররা নানা রকম গুজব ছড়িয়ে, নানা রকম কথা বলে দাম বাড়ায়। সাধারণ মানুষের পক্ষে সেসব তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ থাকেনা বলে তাদের কথায় বিশ্বাস করে বেশি দাম দেয়। একই বিল্ডিং-এর একেক ফ্ল্যাট একেক দামে বিক্রি হবার উদাহরণ প্রচুর। কালো টাকার মালিকেরা ফ্ল্যাট দিয়ে টাকা হালাল করে কম। কারণে সেখানে বেশি টাকা সাদা হবার উপায় নেই। প্রবাসীদের দেশে জমি-ফ্ল্যাট কেনা একটা ফ্যাক্টর তবে সেটা ঋণাত্বক ফ্যাক্টর নয়, বরং ইন্ডাস্ট্রিটার জন্য ভালো। ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা, এই বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞানহীন ডেভলাপাররা একটা বিরাট সমস্যা।

৬. পারচেজ-প্যারিটির হিসাবের ঘাপলাতো আছেই। এই ঘাপলা কোন টোটকা দাওয়াই দিয়ে মেটানো যাবে বলে মনে হয়না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

স্বপ্নদ্রোহ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একটু সময় দিন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দ্রোহী এর ছবি

দারুন লেখা! আগ্রহী পাঠকদের দলে যোগ দিলাম।

দেশে কোনদিন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার কথা চিন্তা করিনি। বিদেশে পড়তে গিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে জীবনে প্রথম ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলাম। কালক্রমে হাতে এসেছে নানা ধরণের ক্রেডিট কার্ড! আর আমি পরিণত হয়েছি ঋণগ্রস্ত মানুষে। মিনিমাম পেমেন্ট দিয়ে যেতে থাকলে আরো বছর দশেক লাগবে দেনা শোধ হতে। যা ঋণ করেছিলাম তার কয়েকগুণ বেশি ফেরত দিতে হবে ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। সোনালী/অগ্রণী/জনতা ব্যাংকে কোন অ্যাকাউন্ট না খুলে ঢাবি'র কাল পার করলেন কিভাবে?

ক্রেডিট কার্ড নিয়ে একেক জনের কাছ থেকে যা শোনা যাচ্ছে, তাতে এটা নিয়ে (সবাই মিলে) একটা ই-বুক হয়ে যাবে মনে হচ্ছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রাহিন হায়দার এর ছবি

অনেক কিছু জানা গেল পোস্ট ও আলোচনা পড়ে। পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি। চলুক
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। একটু সময় দিন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

-----------------------------------------------------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার প্রাণের কাছে চলে আসি, বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একটু সময় লাগবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাবিহ ওমর এর ছবি

আচ্ছা, আমাদের দেশের ইসলামি ব্যাংকের ব্যাপারটা কী? এদের তো ভালই ব্যবসা মনে হয়...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই ব্যাপারে অধমের এই পোস্টটি পড়ুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পড়ে জ্ঞান অর্জন করে রাখলাম
যদি কোনোদিন ওই পথে পা বাড়াই তবে জ্ঞানটা কাজে লাগাব

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ওই যে কী একটা কথা আছে না - গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন। তাই এইসব জ্ঞান আপনার কোন কাজে লাগবেনা। আর আপনিতো আড়াই বছর পর রিটায়ার করবেন। সুতরাং এসব চিন্তা বউ-ম্যাডামকে করতে দিন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমার মত অর্থনীতি কানা কিছু বলতে পারবো না, কেবল এই সিরিজ পড়ে যাবো...

_________________________________________

সেরিওজা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অর্থনীতি কানা বলে কিছু নেই। তুমি কম্বলকে ছাড়লেও কম্বল তোমাকে ছাড়বেনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নিবিড় এর ছবি

পাঠক হিসেবে এই সিরিজের সাথে রইলাম পান্ডবদা চলুক
পাঠক হিসেবে আপনার কাছে একটা প্রশ্ন আছে। প্রথমত, আমাদের দেশে উদ্যোক্তা শ্রেণীর কি সঠিক ভাবে বিকাশ হচ্ছে? অর্থাৎ, নতুন একটা উদ্যোক্তা শ্রেণী কি তৈরি হচ্ছে যারা নতুন নতুন বিনোয়গের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে পারছে আর যদি না পারে তবে এই জায়গায় আমাদের ব্যর্থতা টা কোথায়? আশা করি সিরিজে পরের পর্বে গুলোর কোথাও এই প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর পাব।


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

উদ্যোক্তাদের সমস্যা-স্বপ্ন-সম্ভাবনা নিয়ে এই সিরিজ না। তবে প্রাসঙ্গিকভাবে এখানে কিছু কথা এসেছে, সামনে আরো আসবে। উদ্যোক্তাদের নিয়ে লেখার কথা এর আগে আরো একজন বলেছিলেন। নিশ্চিত না সেটা লিখে উঠতে পারবো কিনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

খুবই সময়োপযোগী পোস্ট। মধ্যবিত্তের পকেটে যত পয়সা বাড়বে (disposable income), তত বেশী খরচ করার প্রবণতা বাড়বে। এইভাবে ভোগবাদী সমাজ ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। এই ডেভেলপমেন্ট ভালো কি মন্দ, সেই আলোচনায় এখানে যাচ্ছিনা। তবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে অনভ্যস্ত গ্রাহকদের জন্যে এটা যে একটা মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়াতে পারে, পশ্চিমা বিশ্বের কিছু দেশ তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে, এমন পরিবারগুলো এখন গড়ে ১৬,০০০ ডলারের ঋণের বোঝা নিয়ে চলছে। জনপ্রতি তিন থেকে চারটি কার্ড পকেট নিয়ে ঘুরছেন গ্রাহকরা। যুক্তরাজ্যের ক্রেডিট কার্ড সমস্যাও খুবই সিরিয়াস আকার ধারণ করেছে। ব্যক্তি বা পরিবারের দেউলিয়াপনা বা ব্যাংকরাপ্টসির হার বেড়েছে বহুগুণ, বিশেষ করে বর্তমানের ক্রেডিট ক্রাঞ্চ/রিসেশনে আরো বেশী।

তাই এই বিষয়ে গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরী কাজ। আমি যদ্দুর বুঝি, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কলেমাগুলো খুবই অল্পসংখ্যক, খুবই সোজা।

- কার্ড দিয়ে যাই খরচ করো, মাস শেষে পুরো ব্যালেন্স পরিশোধ করে দেও। এক
পয়সার ব্যালেন্সও ক্যারিওভার করা উচিত না।

- কক্ষনো, কোনদিনও মাস শেষে মিনিমাম ব্যালেন্স পরিশোধের ফাঁদে পা দিও না। বাকি জীবন ঋণগ্রস্ত থাকার জন্যে এর চেয়ে মোক্ষম আর কোন উপায় আবিষ্কার হয়নি। যে কোন মূল্যে তাই মিনিমাম ব্যালেন্স পরিহার করা উচিত।

- যদি সম্ভব হয়, ক্রেডিট কার্ড না নিয়ে ডেবিট কার্ড নেয়া উচিত। ডেবিট কার্ড আর ক্যাশ ব্যবহারের মধ্যে তফাত শুধু প্লাস্টিক আর কাগজের তফাত। যেই টাকা তোমার নেই, সেটা তুমি খরচ করতে পারছো না।

মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ কম, এটাই ক্রেডিট কার্ডওয়ালাদের মারণাস্ত্র। এবং কার্ড ব্যবহার উৎসাহিত করার জন্যে হাজার হাজার ফন্দি ফিকির তারা উদ্ভাবন করেছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে সাবপ্রাইম লেন্ডিং-এর যেই কুৎসিত বাণিজ্য যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয় ব্যক্তিগত ঋণ বা ক্রেডিট কার্ড ক্ষেত্রে, সেই বাণিজ্যের হোতা ছিলেন এক ইন্ডিয়ান লোক, প্রভিডিয়ান নামে কার্ড কম্পানীর পুরোধা। সেই শৈলেশ মেহতা আর হারামখোর ক্রেডিট কার্ড বাণিজ্য নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি দেখুন এখানে। The Card Game (PBS Frontline)

আমি গত সাত বছরে কোন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করিনি, শুধুই ডেবিট কার্ড। কপাল ভালো যে রিসেশন উপলক্ষ্যে কার্ড মার্কেটিং কম্পানীদের উৎপাত অনেক কমেছে ইদানীং।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. বাংলাদেশে নিম্নবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্তদের মধ্যে এখন এই বেশি বা বাজে খরচ করার প্রবনতা বেড়ে গেছে। কেন জানেন? কারণ, আগে টাকা-পয়সা জমিয়ে বড় কিছু করা বা কেনা যেত। এখন আর তা করা যায় না। অনেকটা সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ঐ ভিখারীর গল্পটার মত। সেখানে ভিখারীটা এক কেজি মাংস কেনার জন্য টাকা জমায়। কিন্তু টাকা জমে সেটা আগে জানা মাংসের দরের সমান হলে দেখা যায় মাংসের দাম দেড়গুণ বেড়ে গেছে। তাই তার আর মাংস কেনা হয়ে ওঠেনা। সেজন্য এই শ্রেণীরা এখন যা রোজগার করে তা consumable বা perishable জিনিষে ব্যয় করে ফেলে। এতে বাজারেও ভিন্ন প্রকার প্রভাব পড়ছে।

২. ক্রেডিট কার্ড বিষয়ক আপনার কলেমা বাঁধিয়ে রাখার মত। আমিও এভাবেই চলার চেষ্টা করি, তবে সব সময় পেরে উঠিনা। আর ডেবিট কার্ড ব্যবহার করবো কিভাবে? অ্যাকাউন্টে কিছু থাকতে হবে তো!

৩. ঢাকায় বসে এই ৫৫ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের ভিডিও দেখা সম্ভব না। তাই The Card Game আর দেখা হলনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

চোখ খোলার মত একটা সিরিজ হবে মনে হচ্ছে। পাটি পেতে বসলাম।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সিরিজটা কী যে হবে তা ভবিষ্যতই জানে। চেষ্টা করব আপনাদের আশাহত না করতে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দিগন্ত এর ছবি

ক্রেডিট কার্ড ব্যাপারটা লোভ দেখিয়ে জিনিস কেনাবার মতই। আর লোভ দেখিয়ে জিনিস কেনানো মানবসভ্যতার (হয়ত বা অন্য ভাবে বললে জীবজগতে বিবর্তনের ইতিহাসেও) ইতিহাসে আদি-অনন্তকাল ধরেই চলে আসছে। এক্ষেত্রে ক্রেতাদের বিষয়ে জ্ঞান বাড়ানো ছাড়া আর কোনো গতি নেই। সময় যত যাবে, সব ব্যবস্থাই অনেক জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকবে আর ক্রেতাকেও পাল্লা দিয়ে জ্ঞান বাড়াতে হবে বাজারে ফতুর না হয়ে ফেরার জন্য। অনেকে বলেন বিংশ শতকে মানুষে মানুষে অর্থনৈতিক অবস্থার যে অসাম্য তৈরী হয়েছে, তার থেকেও ভয়ানক জ্ঞান-বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। ক্রেডিট কার্ড একটা উদাহরণ, দোকানে সেল দেওয়া, ইন্স্যুরেন্স আর বেসরকারী কোম্পানীর মাইনে - এগুলোও একইরকম জটিল হিসাবনিকাশের ব্যাপার - আপনি ঠকেও যেতে পারেন, জিততেও পারেন। মনস্তত্ত্ব ও লাভ-লোকসানের জটিল হিসাবনিকাশের খেলা চলে এগুলোতে।

আমি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করি বটে, তবে একটাই, আর সেটাও মাস গেলে দিনের দিনে ধার শোধ করে দিই। কিছু কিছু বিষয়ে আমি মাথাব্যাথা নিতে চাই না, এটা সেরকমই একটা উদাহরণ।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বিংশ শতকে মানুষে মানুষে অর্থনৈতিক অবস্থার যে অসাম্য তৈরী হয়েছে, তার থেকেও ভয়ানক জ্ঞান-বৈষম্যের সৃষ্টি হবে

শতভাগ একমত। চারদিকে এখন এই দেখছি। শুধুমাত্র জ্ঞান-বৈষম্যকে কাজে লাগিয়ে বহু সেক্টরে ব্যবসা চলছে।

মানুষের জটিল মনস্তত্বকে কাজে লাগিয়ে বা লোভ দেখিয়ে এইসব ব্যবসা চলতে থাকবে - এ'সব বন্ধ হবেনা। কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন জাগে - তাহলে নৈতিকতার সীমারেখাটা আমরা কোন জায়গা পর্যন্ত টানবো?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হাসিব এর ছবি

অনেকে বলেন বিংশ শতকে মানুষে মানুষে অর্থনৈতিক অবস্থার যে অসাম্য তৈরী হয়েছে, তার থেকেও ভয়ানক জ্ঞান-বৈষম্যের সৃষ্টি হবে।

বিংশ শতকে উনবিংশ বা তারো আগের শতক থেকে বৈষম্যের বিষয়ে আরো ভালো অবস্থায় আছে । নাগরিক লেভেলে সুযোগ সুবিধা নেমে এসেছে । এটাকে আমি ইতিবাচকই বলবো । আর ইনফরমেশন এ্যাসাইমেট্রি আগেও ছিলো । এখন সেই ইনফরমেশন এ্যাসাইমেট্রি কমিয়ে আনার সুযোগও কিন্তু আগের থেকে অনেক বেশী এবং সহজলভ্য ।

দিগন্ত এর ছবি

ইনফরমেশন অনেক কম ছিল আগের শতকগুলোতে, তাই ইনফরমেশন এ্যাসাইমেট্রি হবার স্কোপ অনেক কম ছিল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

হাসিব এর ছবি

সত্য । তবে এই ইনফরমেশন পাবার সহজলভ্য উপায় এখন আছে । এবং সেই ইনফরমেশন প্রসেস করার মতো কারিগরি দক্ষতা অর্জনও এখন হাতের নাগালে পাওয়া সম্ভব ।

দিগন্ত এর ছবি

আপনার কি মনে হয় যে হারে ইনফরমেশন বেড়েছে সেই হারে প্রসেস করার মত গণচেতনা বা শিক্ষা বেড়েছে? দক্ষিণ এশিয়ায় এখনো অর্ধেক লোক পড়তে-লিখতে পারে না, তারা কিভাবে ক্রেডিট কার্ডের অর্থনীতি বুঝবে?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে তাহলে, এই ধরণের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সুফল মাইক্রো লেভেলে যতটা পৌঁছায় ম্যাক্রো লেভেলে ততটা পৌঁছায়না। কারণ, ম্যাক্রো লেভেলে পৌঁছাতে যতটা সময় লাগে ততক্ষণে টেকনোলজিটা obsolete হয়ে যায়। তবে ক্রমাগত একই ধরণের প্রযুক্তির প্রবেশ ম্যাক্রো লেভেলে একটা ছাপ ফেলবেই। কিন্তু মাঝখানে যে সময়ের পার্থক্যটা থাকে তাতে শোষণ বলুন, আর পকেট কাটাই বলুন সেটা কিন্তু চলতেই থাকবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

বোহেমিয়ান এর ছবি

জটিল পোস্ট !
চলুক ।
নিজের একখান ক্রেডিট কার্ড করতে পারলাম না এই টাকা কেটে নেবার কারণে!

টাকার ফ্লো দেখানোটা বেশি ভালো লেগেছে ।
_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ। ক্রেডিট কার্ড ছাড়া যতদিন চলতে পারেন চলুন, নিজের টাকা নিজের পকেটেই রাখুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সবজান্তা এর ছবি

গত কয়েকদিন ধরে অফিসে জনৈক ক্রেডিট কার্ড ফেরিওয়ালা পিছু পিছু ঘুরছে।

শুরুতে কড়াভাবে জানিয়ে দিলাম, নিবো না। সেই লোক শুরু করলো প্যান প্যান ঘ্যান ঘ্যান। আমাদের কার্ড নিলে এই সুবিধা-সেই সুবিধা... ব্লাহ ব্লাহ।

আস্তে আস্তে মন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে মন খারাপ

ফাঁদে পা দিয়ে ফেলবো নাকি বুঝতে পারতেসি না মন খারাপ


অলমিতি বিস্তারেণ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনার ক্রেডিট কার্ড নেয়াটা জরুরী হয়ে পড়েছে। সামনে আরো বড় বড় ধার-দেনা করতে হবে। সুতরাং এখন থেকে অল্প-স্বল্প ধার-দেনা করে অভ্যাসটি গড়ে তুলুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

গৌতম এর ছবি

১. সেইরকম লেখা। পাঁচ তারা।

২. ক্রেডিট কার্ড এখন পর্যন্ত নিই নি, অদূর ভবিষ্যতে নেয়ার সম্ভাবনাও দেখছি না- যদিও মাসে অন্তত দুটো অফার আসে। মানুষ কেনাকাটা থেকে নিজেকে সামলাতে পারে খুব কম- আমি সেই দলে নই।

৩. সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি হলো ক্রেডিট কার্ড নিয়ে অন্যকে উপহার দেয়া। আপনি যদি একটা ক্রেডিট কার্ড আমাকে উপহার দেন, তাহলে সেটা একদিকে যেমন মানুষের উপকার হয়; তেমনি ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিওয়ালারাও বেঁচে যায়। আপনিও চামে চামে মানুষজনকে বলতে পারবেন- আমার নামেও একটা ক্রেডিট কার্ড আছে! তো, কবে পাচ্ছি কার্ডটা? চোখ টিপি

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. ধন্যবাদ।

২. কেনা কাটা থেকে নিজেকে সামলানো কোন ক্রেডিট না। আপনার বামপাশের জনকে কেনাকাটা থেকে সামলাতে পারলে সেটা ক্রেডিট হবে।

৩. মিসেস রায়কে ক্রেডিট কার্ড নিতে বলুন। তাহলে একটা সাপ্লিমেন্টারি কার্ড আপনা আপনি চলে আসবে। মাস শেষে পেমেন্টটা ডানদিক থেকে যাবে নাকি বামদিক থেকে যাবে সেটা অবশ্য চিন্তার বিষয়। তখন বলবেন ছাত্রজীবন থেকে আপনি বামপন্থী রাজনীতি করেন সুতরাং ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব বাম দিকেই যাবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শেখ নজরুল এর ছবি

খুব ভালো লিখেছেন। ভালো লাগলো তারও বেশি
শেখ নজরুল

শেখ নজরুল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ কবি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মামুন হক এর ছবি

সাইন্স ফিকশনে প্রায়ই পড়ি, মানবসৃষ্ট রোবট এক সময়ে সমস্ত সবকিছুর দখল নিয়ে নিচ্ছে। আধুনিককালের ব্যাংক, ফিনানশিয়াল কর্পোরেশন, মানি মার্কেট সেই মানবসৃষ্ট ফ্রাংকেনস্টাইন, মানুষকে চুষে-পিষে ছিবড়ে বানানোর আখ মাড়াই কল। ব্যাংক, পুঁজিবাজার না থাকলে আমরা হয়তো আজকে টোস্টারে ফ্রোজেন ব্রেড না সেঁকে আটার গুল্লি দিয়ে রুটি বেলতাম, কাশি দিয়ে টিস্যুতে মুখ না মুছে জামার হাতায় মুছতাম, সভ্যতাও হয়তো বৈষয়িক উন্নতির মাপকাঠিতে অনেক পেছনে থাকতো, কিন্তু আমাদের অন্তত এভাবে ঝাঁজরা হতে হতোনা ব্যাংক নামের শাখের করাতে। তাতে লাভ হতো না ক্ষতি, তা বলার মতো এলেম আমার নাই।

অনেকটা বাধ্য হয়েই একটা ক্রেডিট কার্ড রাখি আর মাস শেষে বিল পাবার সাথে সাথেই দেনা শোধ করে দেই। ক্রেডিট কার্ডের চক্করে পড়ার কোন ইচ্ছা আগামীতেও নাই।

প্রোপার্টি মার্কেট নিয়ে দুনিয়াব্যাপী যে সার্কাস চলে, তা দেখে আসলেই মনে হয় এর চেয়ে কুড়েঘরেই থাকাই ভালো।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ব্যাংক-পুঁজিবাজার না থাকলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হয়তো একটু ধীর হত, তবে স্থবির হতনা কখনোই। প্রযুক্তির সুফল আরো একটু ধীরে মানুষের কাছে পৌঁছাতো। তবে জীবন যে এখনকার মত মসৃণ ও জটিল হতনা সে কথা ঠিক।

কোন দুঃখে যে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করি সেটা কেবল আমার অবস্থার মানুষই বুঝবে।

প্রপার্টি মার্কেটের সার্কাস আপনাকে কুঁড়েঘরে থাকতে দেবেনা। আপনাকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে তাদের বানানো ফ্ল্যাটে না তোলা পর্যন্ত তারা থামবেনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

লেখাটা আগেই পড়েছিলাম। কিন্তু কমেন্ট করা হয়নি। অর্থনীতি নিয়ে আমার ব্যাপক আগ্রহ আছে। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে কিছু পড়া হয়নি। রিকার্ডো, এডাম স্মিথ নিয়ে কিছুটা নাড়াচাড়া করেছিলাম অনেক আগে। ঠিকমত কিছুই বুঝতে পারি নি। এর অনেক পরে আকবর আলী খানের 'পরার্থপরতার অর্থনীতি' হাতে আসে। বইটা পড়ে কিছু ধারণা পরিষ্কার হয়।

মার্ক্সের 'ক্যাপিটাল' কিংবা রিকার্ডো, এডাম স্মিথ নিয়ে কেউ সিরিজ শুরু করলে ভীষণ ভাল হয়।

আপনার সিরিজটার জন্য আমি ও মাদুর পেতে বসলাম।

-----------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সচলের যারা অর্থনীতি জানেন-বোঝেন ভালো তারা লেখেন খুবই কম। তাই আমার মত হাতুড়েরা এমন সব পোস্ট দেয়।

অর্থনীতির পাঠ নিয়ে সিরিয়াস ও নিয়মিত-ধারাবাহিক হওয়া জরুরী। এই বিষয়টা অধিকাংশ ডিসিপ্লিনে পড়ানো হয়না বলে আমাদের মধ্যে কম জনই এটা ভালো জানেন। অথচ অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলো সবারই জানা থাকা উচিত।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দময়ন্তী এর ছবি

চমত্কার বিশ্লেষণ৷

ক্রেডিট কার্ড এমনিতে বুঝেশুনে খরচ করলে বেশ উপকারী জিনিষ৷ তবে ঐ 'বুঝেশুনে'৷ হাসি
কার্ড কোম্পানিদের সাথে শঠে শাঠ্যং নীতিতে চললে ওরাও সমঝে চলে৷ আমি ব্যবহার করি সেই ৯৮ সাল থেকে৷ তো, শুরুতে অনেক ব্যাঙ্কই একটা জিনিষ করত, মাসের স্টেটমেন্ট কক্ষণো ঠিক সময়ে পাঠাত না৷ এইবারে বিলিং সাইক্ল খেয়াল রেখে ঠিক সময়ে পেমেন্ট করতে অধিকাংশ লোকই ভূলে যায়৷ আমিও গেছি ২-১ বার৷ পরের মাসে যথারীতি লেট ফী, তার ওপরে ইন্টারেস্ট দিয়েটিয়ে বিল আসত৷ আমি একসময় ভিসা-উত্তর আমেরিকার প্রোডাকশান সাপোর্টে ও পরে অন্যান্য প্রোজেক্টেও কাজ করেছি৷ তখন দেখেছি ভিসার আয়ের সবচেয়ে বড় উত্সগুলোর একটা হল লেট ফী৷ তো, যা বলছিলাম, এই স্টেটমেন্ট না আসাটা আরও বেশী করে হোত কোনও মাসে বেশী খরচ করলে৷ তখন আমি মোটামুটি ঠিকঠাক সাইক্ল হিসেব রাখা শুরু করলাম ও লাস্ট পেমেন্ট ডেটের ২-৩ দিন আগে পুরোটা শোধ করে দিতাম৷ এইটা ৫-৬ মাস করার পরে দেখি কোনও মাসে আর স্টেটমেন্ট মিস হয় না, ঠিকঠাক ঠিকানা খুঁজে চলে আসে৷ হো হো হো এখন পুরোটা অনলাইন হয়ে যাওয়াতে শান্তি৷ এইসব ঝামেলা থেকে লোকে মুক্তি পেয়েছে৷

তখন শুরু করল, ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করে করে ক্রেডিট লিমিট বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া৷ ঐ ফাঁদেও পা দিই নি৷ আমার হিসেবমত একটা লিমিট সেট করিয়ে রেখেছি৷ বাড়িয়ে দিলেই ফোন করে ধমকে দিই৷

আরেকটা কাজ ব্যাঙ্কগুলো করত৷ লাস্ট ডেটে চেক দিলে, লেট ফী লাগিয়ে দিত পরের মাসে৷?যেহেতু চেক এনক্যাশ হতে অন্তত একটা ওয়ার্কিং ডে লাগে৷ এটা অনেকেই খেয়াল করে না৷ আমার মত প্রখর ঝগড়ুটে হলে ফোনে ঝগড়া করে করে সেটা ক্যানসেল করে, কিন্তু সেই বা আর প্রত্যেক মাসে কাঁহাতক পোষায়৷ শেষে আমি আর আমার বন্ধু গোপাল ঐ লাস্ট ডেটে ব্যাঙ্কে গিয়ে চেক দিয়ে টাকা তুলে, ক্যাশ জমা দিতাম কার্ডের জন্য৷ এখন অনলাইন হয়ে এই ঝামেলা থেকেও মুক্তি পেয়েছি৷

রিয়েল এস্টেট নিয়েও ২-১ কথা ছিল৷ পরে কখনও হবেখনে৷

সিরিজ চালিয়ে যান, পড়ছি, পড়ব৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মনোযোগ দিয়ে পড়া আর বিস্তারিত মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার দেয়া টোটকাগুলো অনেকেরই কাজে লাগবে। আমি অবশ্য অনেক ঠেকে আর দণ্ড দিয়ে সেগুলো শিখেছিলাম। একটা বিষয়ে পার্থক্য আছে। বাংলাদেশে ইদানিং কিছু জিজ্ঞেস না করেই ক্রেডিট লিমিট বাড়িয়ে দেয়। এ'নিয়ে হয়তো ঝগড়া করা যায়। তবে আমার আবার সেই গুণ নেই।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

এখন অনলাইন হয়ে এই ঝামেলা থেকেও মুক্তি পেয়েছি

তারপরেও সাবধানে থাকবেন। আমার এক মাসে বিভিন্ন কারনে অনেক বেশি বিল হয়েছিল। মাসিক বিল জারি হবার ২-৩ দিন আগেই অনলাইনে পেমেন্ট করে দিলাম। ব্যালান্স শূন্য হয়ে যাবার কথা। তা না করে ব্যাঙ্ক আমাকে আবার সেই বিল চার্জ করে বসলো এবং অটোমেটিক পেমেন্ট সেট-আপ থাকার কারনে জোর করে ব্যাংক একাউন্ট থেকে দ্বিতীয়বারের মত আবার টাকা নিয়ে গেল। তারপর দেখা গেলো ক্রেডিট-কার্ড ব্যালান্স হয়ে গেছে নেগেটিভ। অর্থাৎ কি না আমি এখন উলটো ক্রেডিট কার্ড অয়ালাদের কাছ থেকে টাকা পাই। ব্যাস, তাদের গেলো মাথা গরম হয়ে। এও কি সম্ভব!!
আমি গরীব মানুষ, ব্যাঙ্ক একাউন্টে অত টাকাও ছিল না, ফলে ক্রেডিট-কার্ড কোম্পানী যখন দুবার টাকা নিয়ে নিল, একাউন্ট ব্যালান্স শূন্য হয়ে যাওয়ায় ব্যাংক জরিমানা করে বসলো।

যাই হোক, ফোনে অনেক ঝগড়া ঝাটি করে ক্রেডিট কার্ড কম্পানীর কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করেছি। কিন্তু মাঝের ক্যাচালে বিনা দোষে ১০০ ডলারের মত জরিমানা দিতে হলো। সেটা নিয়েও ব্যাংক আর ক্রেডিট কার্ড দুই দলের সাথে বহুত ঝগড়া ঝাটি করে ক্ষ্যান্ত দিয়েছি। ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাচি।

শেষের কথা- অনলাইন ব্যাঙ্কিং ব্যাবস্থায় বিশ্বাস করবেন না। এর পিছনের সেটিংস এরা ইচ্ছেমত বদলায়। সব সময় কড়া নজর রাখবেন। সুযোগ পেলেই আপনার টাকা মেরে দিয়ে ভুজুং ভাজুং বুঝানোর চেষ্টা করবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

এখন অনলাইন হয়ে এই ঝামেলা থেকেও মুক্তি পেয়েছি

তারপরেও সাবধানে থাকবেন। আমার এক মাসে বিভিন্ন কারনে অনেক বেশি বিল হয়েছিল। মাসিক বিল জারি হবার ২-৩ দিন আগেই অনলাইনে পেমেন্ট করে দিলাম। ব্যালান্স শূন্য হয়ে যাবার কথা। তা না করে ব্যাঙ্ক আমাকে আবার সেই বিল চার্জ করে বসলো এবং অটোমেটিক পেমেন্ট সেট-আপ থাকার কারনে জোর করে ব্যাংক একাউন্ট থেকে দ্বিতীয়বারের মত আবার টাকা নিয়ে গেল। তারপর দেখা গেলো ক্রেডিট-কার্ড ব্যালান্স হয়ে গেছে নেগেটিভ। অর্থাৎ কি না আমি এখন উলটো ক্রেডিট কার্ড অয়ালাদের কাছ থেকে টাকা পাই। ব্যাস, তাদের গেলো মাথা গরম হয়ে। এও কি সম্ভব!!
আমি গরীব মানুষ, ব্যাঙ্ক একাউন্টে অত টাকাও ছিল না, ফলে ক্রেডিট-কার্ড কোম্পানী যখন দুবার টাকা নিয়ে নিল, একাউন্ট ব্যালান্স শূন্য হয়ে যাওয়ায় ব্যাংক জরিমানা করে বসলো।

যাই হোক, ফোনে অনেক ঝগড়া ঝাটি করে ক্রেডিট কার্ড কম্পানীর কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করেছি। কিন্তু মাঝের ক্যাচালে বিনা দোষে ১০০ ডলারের মত জরিমানা দিতে হলো। সেটা নিয়েও ব্যাংক আর ক্রেডিট কার্ড দুই দলের সাথে বহুত ঝগড়া ঝাটি করে ক্ষ্যান্ত দিয়েছি। ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাচি।

শেষের কথা- অনলাইন ব্যাঙ্কিং ব্যাবস্থায় বিশ্বাস করবেন না। এর পিছনের সেটিংস এরা ইচ্ছেমত বদলায়। সব সময় কড়া নজর রাখবেন। সুযোগ পেলেই আপনার টাকা মেরে দিয়ে ভুজুং ভাজুং বুঝানোর চেষ্টা করবে।

-শিশিরকণা--
(আগেরবার নিক উল্লেখ করতে ভুলে গেছিলাম।)

ফকির লালন এর ছবি

ক্রেডি্ট কার্ড বেশ উপকারী কিন্তু। মাসিক আয়ের উপর নির্ভর করলে মাস শেষে এর উপকার টের পাওয়া যায়। তবে সময়ের আগেই টাকা ফেরত না দিলে তার অপকারটাও টের পাওয়া যায়, তখন বিশাল গহবরের মতো এদের পাওনা আর শোধ দেবার পার্থক্যটা বাড়তে থাকে।

ভালো লাগলো, চলুক।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বস্‌ আপনি ভালো আছেন তো? অনেকদিন হয় আপনার কোন কবিতা পাচ্ছিনা। মাঝখানে তো নিয়মিত সপ্তাহে একটা করে কবিতা দিতেন। আবার অমন শুরু করুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

১ক. তথ্য-বৈষম্য আর অর্থ বৈষম্য নিয়ে দিগন্ত আর হাসিব যে আলোচনাটা করলেন, তার প্রসঙ্গে বলছি, তথ্যের সহজলভ্যতা যত বাড়ে, বা তথ্য বিশ্লেষণের ক্ষমতা যত সহজলভ্য হয়, ব্যাঙ্কগুলোও সেরকমই এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে পকেট কাটার নতুন উপায় বের করে ফেলে। তাই গুটিকয়েক সচেতন মানুষ ছাড়া বাকিরা তথ্যের এই অবাধ প্রবাহের যুগেও ঠকেই যেতে থাকবেন। ইদানিং আমেরিকাতে ওবামা সরকার এগুলো প্রতিরোধে কিছু আইন করেছেন। এখন ব্যাঙ্কগুলো চাইলেই কারো ক্রেডিট লিমিট বাড়াতে পারবে না, বা লিখিত অনুমতি ছাড়া ন্যুনতম পেমেণ্টের তারিখ বদলাতে পারবে না, এরকম আরও কিছু। আশা করা যাচ্ছে এতে কিছুটা হলেও অজ্ঞতাজনিত পকেট কাটার উপায়গুলো কিছুটা হলেও কমবে।

১খ. আমেরিকাতে মানুষের যে কোন লোন পাবার যোগ্যতা নির্ধারিত হয় ক্রেডিট স্কোর বা ফাইকো স্কোর দিয়ে। সেটি ভালো না হলে গাড়ি বা বাড়ি কেনা বা ছোট ব্যবসা শুরু করা বা অন্য কোন কিছুর জন্যই লোন পাওয়া যায় না, বা পাওয়া গেলেও সেটা অনেক চড়া সুদে পেতে হয়। এই স্কোরটা বাড়ানোর জন্য অনেকটা অন্যতম শর্ত হলো ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা, আর সময়মতো সমস্ত ব্যালান্সটুকু শোধ করে দেয়া। ছোট ছোট লোন আপনি কত সহজে শোধ করেছেন সেই রেকর্ডটা আপনার ভবিষ্যতের ক্রেডিট-যোগ্যতা নির্ণয়ে ব্যবহার করা হয়। তাই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার না করে আসলে যেমন থাকা যায় না, তেমনি ডেবিট কার্ড দিয়েও ক্রেডিট কার্ডকে ঠিক প্রতিস্থাপন করা যায় না - ভালোভাবে বেঁচে থাকতে গেলে।

১গ. এমন ঢালাওভাবে বলতে গেলে শুধু ব্যাঙ্ক কেনো, প্রতিটি ব্যবসাই কি কোন না কোন ভাবে ভোক্তার পকেট কাটার ব্যবস্থা না? কোন ব্যবসায় কম লাভের মার্জিন থাকে, কোনটাতে বেশি – এইতো পার্থক্য। লাভের সুবিধা করে দেয়ার বিনিময়ে আপনি তো সেবা পাচ্ছেনই। ছোট একটা ব্যাঙ্কে গেলে আপনার হয়তো সার্ভিস চার্জ বাবদ অতগুলো টাকা কাটা যেতো না, তাতে কিছুটা হলেও আপনার টাকা ছানাপোনার মুখ দেখতো। আপনি স্ট্যাণ্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কে গিয়েছেন কারণ সেখানে সেবার মান অনেক বেশি উন্নত, সহজলভ্য, আর আপনার আস্থাও সেখানে বেশি। ভোক্তাদের একটা ক্রিটিক্যাল ম্যাস এটাকে পকেট-কাটা মনে করছেন না বলেই সেই ব্যাঙ্ক সচ্ছন্দে বিশাল সার্ভিস চার্জ কেটে রাখছে। ক্রিটিক্যাল ম্যাস যদি তার বদলে পাড়ার সোনালী ব্যাঙ্কে যাওয়া শুরু করে, স্ট্যাণ্ডার্ড চার্টার্ড সেখানে সার্ভিস চার্জ কমাতে বাধ্য হবে। ক্রিটিক্যাল ম্যাসের এই আচরণটি তাদের নিজস্ব, সেটি তারা অজ্ঞতার শিকার হয়ে ব্যাঙ্কের কাছে ধরা দেন বলে মনে হয়না আমার।

১ঘ. লোন দেয়ার ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলোকে কোন কোন ভাবে কো-ল্যাটেরাল গ্যারাণ্টি নিতেই হবে। যেহেতু বাংলাদেশে ফাইকো-স্কোর জাতীয় কোন ব্যাপার নেই, তাই সেটি নিজের আত্মীয় হলে, বা অন্য ব্যাঙ্কের পরিচালক হলে বেশি গ্যারাণ্টি বহন করবে, তাই লোন পাবার ব্যাপারে তারা অগ্রাধিকার পাবেন, এতে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের ত্রুটি দেখি না আমি। আপনি নিজেও কাউকে টাকা ধার দিতে হলে যাকে বেশি চেনেন তাকেই দেবেন, সুযোগ থাকলে চেনা লোকের মধ্যেও যাদের কাছ থেকে টাকা ফেরৎ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাদের দেবেন। লোন নিয়ে শোধ না দেয়াটাতে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের বা লোন দেয়ার প্রক্রিয়ার কিছুটা অবদান থাকলেও, মূল ভূমিকা থাকে সরকারের আইন প্রয়োগে দুর্বলতার এবং অনিচ্ছার। সরকারই পারে ছোট বা মধ্য পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের লোনের গ্যারাণ্টি দিতে আর বড় খেলাপীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিতে।

২. বহুতল মার্কেট নির্মানের কালচারের কারণে ছোট বা মাঝারি উদ্যোক্তারা নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছেন – এ ব্যাপারটি একটু অবিশ্বাস্য শোনা গেলো। আমার কাছে তো মনে হয় লাগামহীন চোরাচালান, ট্যাক্স ফাঁকি, অনিয়ন্ত্রিত মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া আর তার সাথে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের চড়া দামে জিনিস কেনার সাধ্য আর শখ - এসব মিলিয়ে মার্কেটগুলোর লাভের গুড় ভালোই পিঁপড়ামুক্ত থাকে। হয়তো বহুদিন দেশের বাইরে থাকার কারনে প্রকৃত অবস্থাটা জানি না বলেই এরকম ভাবছি। পরের পর্বে এ ব্যাপারে একটু বিস্তারিত বুঝিয়ে লিখবেন আশা করছি।

৩. বাংলাদেশে জমি সংক্রান্ত ব্যবসাকে আমার কাছে সম্পূর্ণরূপে সরকার সমর্থিত দুর্নীতি প্রক্রিয়া বলেই মনে হয়। সরকারী যে পদগুলো ভূমি নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অফিসগুলো চালান, তাদের ঐশ্বরিক ক্ষমতা, ঘুষের সহজলভ্যতা আর মান্ধাতার আমলের রেকর্ড-কীপিং সিস্টেম, সব মিলে যাকে বলে দুর্নীতির ব্রীডিং গ্রাউণ্ড হলো জমি কেনা বেচা প্রক্রিয়া। স্বল্পজ্ঞান সম্পন্ন ক্রেতার এ পথে পা বাড়ানোই সবচেয়ে বড় অন্যায়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১ক. তথ্য-বৈষম্য আর অর্থ বৈষম্য নিয়ে দিগন্ত আর হাসিব যে আলোচনাটা করলেন, তার প্রসঙ্গে বলছি, তথ্যের সহজলভ্যতা যত বাড়ে, বা তথ্য বিশ্লেষণের ক্ষমতা যত সহজলভ্য হয়, ব্যাঙ্কগুলোও সেরকমই এই নতুন প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে পকেট কাটার নতুন উপায় বের করে ফেলে। তাই গুটিকয়েক সচেতন মানুষ ছাড়া বাকিরা তথ্যের এই অবাধ প্রবাহের যুগেও ঠকেই যেতে থাকবেন। ইদানিং আমেরিকাতে ওবামা সরকার এগুলো প্রতিরোধে কিছু আইন করেছেন। এখন ব্যাঙ্কগুলো চাইলেই কারো ক্রেডিট লিমিট বাড়াতে পারবে না, বা লিখিত অনুমতি ছাড়া ন্যুনতম পেমেণ্টের তারিখ বদলাতে পারবে না, এরকম আরও কিছু। আশা করা যাচ্ছে এতে কিছুটা হলেও অজ্ঞতাজনিত পকেট কাটার উপায়গুলো কিছুটা হলেও কমবে।

আইন যত কঠিন-কঠোর হোকনা কেন, তার কিছু ফাঁক-ফোকড় থাকবেই। আইন ব্যাপারটা চর্চারও, সংস্কৃতিরও। ব্যাংকের সংস্কৃতিতে যদি গ্রাহককে ঠকানোর ব্যাপার থাকে তাহলে কোন আইনই তা ঠেকাতে পারবেনা।

১খ. আমেরিকাতে মানুষের যে কোন লোন পাবার যোগ্যতা নির্ধারিত হয় ক্রেডিট স্কোর বা ফাইকো স্কোর দিয়ে। সেটি ভালো না হলে গাড়ি বা বাড়ি কেনা বা ছোট ব্যবসা শুরু করা বা অন্য কোন কিছুর জন্যই লোন পাওয়া যায় না, বা পাওয়া গেলেও সেটা অনেক চড়া সুদে পেতে হয়। এই স্কোরটা বাড়ানোর জন্য অনেকটা অন্যতম শর্ত হলো ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা, আর সময়মতো সমস্ত ব্যালান্সটুকু শোধ করে দেয়া। ছোট ছোট লোন আপনি কত সহজে শোধ করেছেন সেই রেকর্ডটা আপনার ভবিষ্যতের ক্রেডিট-যোগ্যতা নির্ণয়ে ব্যবহার করা হয়। তাই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার না করে আসলে যেমন থাকা যায় না, তেমনি ডেবিট কার্ড দিয়েও ক্রেডিট কার্ডকে ঠিক প্রতিস্থাপন করা যায় না - ভালোভাবে বেঁচে থাকতে গেলে।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা একটা বাস্তবতা। বর্তমান ব্যবস্থায় এর বিকল্প নেই সত্য, তবে ক্রেডিট কার্ডই শেষ কথা নয়। ক্রেডিট স্কোর হিসাব করার জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ইতিহাস আমলে আনা ঠিক আছে। তবে তা যদি পূর্বশর্ত হয় তাহলে দুইপক্ষের মধ্যে যে একটা যোগসাজস আছে সেটা বোঝা যায়।

১গ. এমন ঢালাওভাবে বলতে গেলে শুধু ব্যাঙ্ক কেনো, প্রতিটি ব্যবসাই কি কোন না কোন ভাবে ভোক্তার পকেট কাটার ব্যবস্থা না? কোন ব্যবসায় কম লাভের মার্জিন থাকে, কোনটাতে বেশি – এইতো পার্থক্য। লাভের সুবিধা করে দেয়ার বিনিময়ে আপনি তো সেবা পাচ্ছেনই। ছোট একটা ব্যাঙ্কে গেলে আপনার হয়তো সার্ভিস চার্জ বাবদ অতগুলো টাকা কাটা যেতো না, তাতে কিছুটা হলেও আপনার টাকা ছানাপোনার মুখ দেখতো। আপনি স্ট্যাণ্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কে গিয়েছেন কারণ সেখানে সেবার মান অনেক বেশি উন্নত, সহজলভ্য, আর আপনার আস্থাও সেখানে বেশি। ভোক্তাদের একটা ক্রিটিক্যাল ম্যাস এটাকে পকেট-কাটা মনে করছেন না বলেই সেই ব্যাঙ্ক সচ্ছন্দে বিশাল সার্ভিস চার্জ কেটে রাখছে। ক্রিটিক্যাল ম্যাস যদি তার বদলে পাড়ার সোনালী ব্যাঙ্কে যাওয়া শুরু করে, স্ট্যাণ্ডার্ড চার্টার্ড সেখানে সার্ভিস চার্জ কমাতে বাধ্য হবে। ক্রিটিক্যাল ম্যাসের এই আচরণটি তাদের নিজস্ব, সেটি তারা অজ্ঞতার শিকার হয়ে ব্যাঙ্কের কাছে ধরা দেন বলে মনে হয়না আমার।

ব্যবসায় মুনাফা করা আর পকেট কাটা এক ব্যাপার নয়। মুনাফার ব্যাপারে আমি আপত্তি করিনি। আমার আপত্তি অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে, ইচ্ছেকৃতভাবে না জানিয়ে, বিপদে ফেলে, অসত্য তথ্য দিয়ে বা এই জাতীয় অন্যায় কোন কাজ করে সাধারণ মুনাফার বাইরে বাড়তি কামিয়ে নেয়ার বিরূদ্ধে।

১ঘ. লোন দেয়ার ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলোকে কোন কোন ভাবে কো-ল্যাটেরাল গ্যারাণ্টি নিতেই হবে। যেহেতু বাংলাদেশে ফাইকো-স্কোর জাতীয় কোন ব্যাপার নেই, তাই সেটি নিজের আত্মীয় হলে, বা অন্য ব্যাঙ্কের পরিচালক হলে বেশি গ্যারাণ্টি বহন করবে, তাই লোন পাবার ব্যাপারে তারা অগ্রাধিকার পাবেন, এতে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের ত্রুটি দেখি না আমি। আপনি নিজেও কাউকে টাকা ধার দিতে হলে যাকে বেশি চেনেন তাকেই দেবেন, সুযোগ থাকলে চেনা লোকের মধ্যেও যাদের কাছ থেকে টাকা ফেরৎ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাদের দেবেন। লোন নিয়ে শোধ না দেয়াটাতে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের বা লোন দেয়ার প্রক্রিয়ার কিছুটা অবদান থাকলেও, মূল ভূমিকা থাকে সরকারের আইন প্রয়োগে দুর্বলতার এবং অনিচ্ছার। সরকারই পারে ছোট বা মধ্য পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের লোনের গ্যারাণ্টি দিতে আর বড় খেলাপীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিতে।

জাতীয় পর্যায়ে কাজ করা একটা ব্যাংক আর মহল্লার ‘ঋণদান সমিতি’র কার্যক্রমের মধ্যে পার্থক্য আছে। মহল্লার ‘ঋণদান সমিতি’ পরিচালকের ভাই-ভাতিজা বা ইয়ার-দোস্তদের বিনা কোল্যাটারালে বা অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঋণ দিতে পারেন। আমাদের ব্যাংকিং সিস্টেমে বিনা কোল্যাটারালে ঋণ বা শূন্য মার্জিনে ঋণপত্র খোলা ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে অমন ভাবনা থেকেই। এই ব্যাপারে সরকারকে যারা পরামর্শ দেন, যারা সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করেন আর যারা এই সুবিধা ভোগ করেন সবাই একই গোষ্ঠীর অথবা সিমবায়োটিক। একজনের প্রকৃত সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোন ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউট থেকে ঋণ পাবার অধিকারটি তার মৌলিক একটি অধিকার। এই অধিকারটি সংরক্ষণের দায়িত্ব অবশ্যই রাষ্ট্রের। কিন্তু রাষ্ট্র এই কাজটি কেন করতে পারছেনা সেটা আগেই ব্যাখ্যা করেছি।

২. বহুতল মার্কেট নির্মানের কালচারের কারণে ছোট বা মাঝারি উদ্যোক্তারা নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছেন – এ ব্যাপারটি একটু অবিশ্বাস্য শোনা গেলো। আমার কাছে তো মনে হয় লাগামহীন চোরাচালান, ট্যাক্স ফাঁকি, অনিয়ন্ত্রিত মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া আর তার সাথে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের চড়া দামে জিনিস কেনার সাধ্য আর শখ - এসব মিলিয়ে মার্কেটগুলোর লাভের গুড় ভালোই পিঁপড়ামুক্ত থাকে। হয়তো বহুদিন দেশের বাইরে থাকার কারনে প্রকৃত অবস্থাটা জানি না বলেই এরকম ভাবছি। পরের পর্বে এ ব্যাপারে একটু বিস্তারিত বুঝিয়ে লিখবেন আশা করছি।

লাগামহীন চোরাচালানের মধ্যে ভোগ্যপণ্য কতটুকু? আর তা বিক্রি করার জন্য কি বিলাসবহুল বহুতল শপিং মল্‌ লাগে? না। চোরাচালানের ভোগ্যপণ্য আপনার বাসায় বাসায় পৌঁছে দেবার জন্য বিস্তৃত নেটওয়ার্ক আছে। ট্যাক্স ফাঁকি যারা দেন তারা মার্কেটে দোকান কেনেন না, আবার ঐ মার্কেট থেকে মূল বাজারটাও করেন না। তাদের বিনিয়োগ, সঞ্চয়, কেনা-কাটার জায়গা দেশের বাইরে। বেশি মার্কেট-দোকান থাকা মানে ক্রেতার অপশন বাড়া। তাতে চড়া দাম ধরে রাখা বিক্রেতা বিপদে পড়বে। অনিয়ন্ত্রিত মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ার দরুণ কারো কারো পণ্য অবিক্রীত থাকলে শেষমেশ তাকে ‘সেল’ দিতে হবে। কিছু মানুষ সবসময়ই থাকবে যারা চড়া দামে বা অদরকারী জিনিষ কিনবেন। কিন্তু এই ফ্যাক্টরগুলোর একটাও ছোট ও মাঝারী উদ্যোক্তা যারা দোকানগুলো কিনেছিলেন তাদের বিনিয়োগকে লাভজনক করতে পারেনা। ব্যবসাটা লাভজনক হবার জন্য এই মার্কেটগুলো জনসংখ্যার ঘনত্ব, বিস্তার ও ঐ এলাকার মানুষের ক্রয়ক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু এক জায়গায় ঘিঞ্জি করে বা আকাশের দিকে বাড়িয়ে মার্কেট তুললে তা হবেনা। এভাবে বেহিসেবী মার্কেট-দোকান বাড়ানোর পিছনে পকেট কাটার দুর্বুদ্ধিটাই কাজ করে।

৩. বাংলাদেশে জমি সংক্রান্ত ব্যবসাকে আমার কাছে সম্পূর্ণরূপে সরকার সমর্থিত দুর্নীতি প্রক্রিয়া বলেই মনে হয়। সরকারী যে পদগুলো ভূমি নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অফিসগুলো চালান, তাদের ঐশ্বরিক ক্ষমতা, ঘুষের সহজলভ্যতা আর মান্ধাতার আমলের রেকর্ড-কীপিং সিস্টেম, সব মিলে যাকে বলে দুর্নীতির ব্রীডিং গ্রাউণ্ড হলো জমি কেনা বেচা প্রক্রিয়া। স্বল্পজ্ঞান সম্পন্ন ক্রেতার এ পথে পা বাড়ানোই সবচেয়ে বড় অন্যায়।

এইখানে আপনার শেষ বাক্যটি ছাড়া আর সব ব্যাখ্যার সাথে একমত। ক্রেতার জ্ঞান স্বল্প হতেই পারে, কিন্তু সেটাকে পুঁজি করে আরেকজনের পকেট কাটা জায়েজ হয়না। সেটা জায়জ - আপনি সেটা বলেননি, কিন্তু ক্রেতার বিরূদ্ধেও অন্যায় করেছে বলে আঙুল তুলেছেন। পকেট কাটার ব্যাপারে রাষ্ট্রের ভূমিকা ও করণীয় নিয়ে উপসংহার পর্বে বলার আশা রাখি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

পত্রপত্রিকাতে হরহামেশা দেখবেন বড় বড় ব্যবসায়ী বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর ধরে ব্যাংক থেকে নেয়া অর্থ শোধ করছেননা। আবার একইসাথে দেখবেন ক্ষুদ্রঋণের কিস্তির টাকা আদায় করার জন্য দরিদ্র কৃষকের টিনের চাল বা কিষাণীর নাকের নথ খুলে নেয়া হচ্ছে অথবা অনাদায়ী কৃষিঋণের জন্য তাদের নামে সার্টিফিকেট মামলা করা হচ্ছে।এই অভিযোগগুলো মূলতঃ ক্ষুদ্রঋণ দেয় এমন এনজিওদের নামে থাকলেও মামলা করার ব্যাপারে ব্যাংকগুলো মোটেও পিছিয়ে নেই। ব্যাপারটা বোধগম্য যে, ব্যাংকগুলো ধনীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে নমনীয় হলেও গরিবের ক্ষেত্রে তারা বড়ই কঠোর। এই কঠোরতা টের পাবেন যদি আপনি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হন আর তার জন্য যদি আপনি ঋণ করতে ব্যাংকের দ্বারস্থ হন। ব্যাংক প্রথমে আপনার আবেদনের সাথে সাথে আপনার চৌদ্দগোষ্ঠীর নাড়িভুঁড়ির ঠিকুজী বের করবে। তার কিছুদিন পর আপনাকে জানাবে আপনার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ব্যাংক থেকে আপনি ঋণ পাবেননা এমন নয়। তবে ততদিনে নয়মণ তেল পুড়ে যাবে। পক্ষান্তরে বড় বড় ঋণখেলাপীরা দেখবেন যাদুমন্ত্র বলে নামে-বেনামে অনায়াসে ব্যাংকঋণ পেয়েই যাচ্ছেন।

আপনার এই সিরিজটি অসম্ভব ভালো লাগছে । খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছি । অর্থনীতির ছাত্রী হিসেবে এই রকম একটা সিরিজ লেখার কথা অনেক সময় ভেবেছি । আপনার মত এত ভাল হয়তো হোত না ।

লিখতে থাকুন । আমি আপনার এই সিরিজটির খব্র আমার পরিচিতদের (যারা অর্থনীতির সাদা কালো ও ধুসর সম্পর্কে অনেক সময় প্রশ্ন করেন ।) দেব ।

.......................................
তোমারই ইচ্ছা কর হে পূর্ণ ....

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনার মত যারা অর্থনীতি জানেন-বোঝেন তারা অর্থনীতি নিয়ে না লিখলে কিভাবে হয় বলুন?

আপানার মন্তব্যর শেষ বাক্যে ভয় পেলাম।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অগ্নিবীণা এর ছবি

একে বারে মুগ্ধ মনে এক নিশ্বাসে পড়লাম! ব্রেভো...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।