০৬. বিকল্প শিক্ষা-উচ্চ শিক্ষা
এ’কথা আমরা সবাই জানি যে, বাংলাদেশে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পর্যায়ের সমাপনী পরীক্ষা পাশ করে তাদের সবাই উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ার সুযোগ পায়না। ২০১০ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাশ করা ৯,৬০,৯৪২ জন শিক্ষার্থীর জন্য সরকারী-বেসরকারী সব রকমের উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোর মোট সীটের সংখ্যা প্রায় ৪,৬৩,০০০। তার মানে মাধ্যমিক পাশ করেও প্রায় ...
০৬. বিকল্প শিক্ষা-উচ্চ শিক্ষা
[justify]এ’কথা আমরা সবাই জানি যে, বাংলাদেশে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পর্যায়ের সমাপনী পরীক্ষা পাশ করে তাদের সবাই উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ার সুযোগ পায়না। ২০১০ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাশ করা ৯,৬০,৯৪২ জন শিক্ষার্থীর জন্য সরকারী-বেসরকারী সব রকমের উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোর মোট সীটের সংখ্যা প্রায় ৪,৬৩,০০০। তার মানে মাধ্যমিক পাশ করেও প্রায় ৫,০০,০০০ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার সুযোগ পাবেনা, যা মোট পাশ করাদের ৫২%। এই পর্যায়ে ঝরে পড়ে বিরাট সংখ্যক শিক্ষার্থী।
ঝরে পড়া এবং অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে গড়ে উঠেছে বিকল্প শিক্ষা বাণিজ্য। এই ব্যবস্থায় সরাসরি বা একটু ঘুরিয়ে যে কথাগুলো বলা হয় সেগুলো হচ্ছে,
১. এই ব্যবস্থায় লেখাপড়া করতে হবে কম কিন্তু ফলাফল ভালো হবে।
২. এই ব্যবস্থায় ফেল করার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
৩. বিদেশে (কোন দেশ তা স্পষ্ট করে বলেনা) এই সার্টিফিকেটের মূল্য অনেক।
৪. এই ব্যবস্থায় সময় লাগবে কম।
৫. এই ব্যবস্থায় পাশ করে যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিশেষতঃ বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে) সহজে ভর্তি হওয়া যাবে, ভিসা পাওয়া সহজ হবে।
এভাবে প্রায় কোন ক্লাস না করিয়ে (অল্প কিছু কোচিং করানো হয়), ল্যাব না করিয়ে, মূল্যায়ন পরীক্ষা না নিয়ে সার্টিফিকেট প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের GED, IGSCE, GCE, CIE’র মত আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাতে বসিয়ে দেয়া হয়। কোথাও কোথাও ভারতের নানা শিক্ষা বোর্ডের নাম করে অজানা নামধারী সব পরীক্ষায়ও বসিয়ে দেয়া হয়। এই পরীক্ষা ব্যাপারটিতেও ব্যাপক ফাঁকি ও কারচুপির আশ্রয় নেয়া হয়। একজনের পরীক্ষা আরেকজনে দেয়া থেকে শুরু করে ভূয়া পরীক্ষা নেয়া ও ভূয়া গ্রেডশীট দেয়ার মত ব্যাপার আছে। যারা ঠিক পরীক্ষাটা দেবার সুযোগ পায় তাদের খুব কমজনই ভালো ফলাফল করতে পারে। আসলে এমনটাইতো হবার কথা। বিদ্যায়তনে না গিয়েই শিক্ষা যদি এভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হত তাহলে কলেজগুলোর দরকার হতনা।
পরীক্ষাটি বাংলাদেশে স্বীকৃত হলে এবং শিক্ষার্থীর ফলাফল ভালো হলে পরবর্তী পর্যায়ে তার পক্ষে বাংলাদেশে শিক্ষালাভের সুযোগ থাকে। কিন্তু অস্বীকৃত পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলেও বা স্বীকৃত পরীক্ষার সার্টিফিকেট ভূয়া হলে সেসব শিক্ষার্থীর আর কোন আশা থাকেনা। অস্বীকৃত পরীক্ষা বা ভূয়া সার্টিফিকেটের মত কাজগুলোই প্রতারককুল বেশি করে থাকে।
কেউ কেউ তাদের প্রতিষ্ঠান অমুক দেশের তমুক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংযুক্ত বলে প্রচার করে। তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, ভিসা ইত্যাদির কথা বলে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেয়। তারপর একটা ভিসিট ভিসা বা ট্যুরিস্ট ভিসা ধরনের ভিসা দিয়ে ঐ দেশে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে পৌঁছে প্রতারিত শিক্ষার্থীরা দেখতে পায় অমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই বা থাকলেও যা আছে তার সাথে তাদেরকে দেয়া ধারনার কোন মিল নেই। তারচেয়ে বড় কথা তাদের বৈধভাবে সেই দেশে থাকার উপায় নেই। এ’ভাবে তারা এক প্রতারকচক্রের হাত থেকে আরেক প্রতারকচক্রের হাতে পড়ে - তাদের আরো টাকা খসার রাস্তা খোলা হয়।
যারা এই বাণিজ্যের সাথে জড়িত তাদের খুব কমজনেরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন আছে। কোচিং সেন্টারের মত এই প্রতিষ্ঠানগুলো “এই আছে, এই নাই”। ফলে প্রতারিত শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রতারকদের ধরার উপায় থাকেনা। এই পর্যায়ে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের অজ্ঞতা বা লোভ বা পরিশ্রমবিমূখতাকে দায়ী করা যায়, কিন্তু তাতে প্রতারকদের দোষস্খালন হয়না। কোন অদৃশ্য শক্তিবলে এদের বিরূদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়না। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোও এই ব্যাপারে মাথা ঘামায় বলে মনে হয়না। নয়তো দিনে দিনে এদের সংখ্যা এত বাড়ে কী করে? রাস্তা-ঘাটে, পত্রপত্রিকায় এত বিজ্ঞাপনইবা দেয় কী করে? মাঝখান থেকে অভিভাবকদের পকেট কাটা যায় আর শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনটাই নষ্ট হয়ে যায়।
উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পরের পর্ব আরো হতাশাজনক। ২০০৯ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাশ করে ৩,৯৪,১১১ জন। ৩০ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ) স্নাতক পর্যায়ে মোট আসনসংখ্যা প্রায় ১,৮৩,০০০। অর্থাৎ প্রায় ৫৪% শিক্ষার্থী পাশ করেও পরবর্তী পর্যায়ে পড়ার সুযোগ না পাবার কথা। এই অর্ধেকের বেশি পাশ করা শিক্ষার্থীদের জন্য ওঁত পেতে বসে আছে স্বীকৃত-অস্বীকৃত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিকল্প শিক্ষার ফেরিওয়ালারা।
গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের দ্বিতীয় ভাগে পত্রপত্রিকা আর রাস্তা-ঘাটে বিজ্ঞাপন দেখতাম “......, alternative to engineering and medicine”। এই বিজ্ঞাপনগুলো যে সব প্রতিষ্ঠানের ছিল তারা মূলতঃ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শেখাত। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কিভাবে প্রকৌশল বা চিকিৎসাবিদ্যাকে প্রতিস্থাপন করতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়। আপনাদের বোধেও আসবে বলে মনে হয়না। সে সময় কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শেখানোর জোয়ার বয়ে গিয়েছিল। নানা রঙবেরঙের নামে, কম্পিউটারভিত্তিক আন্তর্জাতিক কোম্পানীগুলোর নামে (বিশ্ববিদ্যালয় নয়) প্রোগ্রামিং শেখানোর ব্যবসা গড়ে উঠেছিল। জোয়ারটা আগের মত না থাকলেও এখনো আছে। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত বিকল্প ডিগ্রীওয়ালারা কিন্তু দেশে বা দেশের বাইরে ঠাঁই পায়নি। বস্তুতঃ যাদের স্বীকৃত ও প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল তারা ঐসমস্ত ট্রেনিংগুলোকে কিছুটা কাজে লাগাতে পেরেছিল। যারা শুধুমাত্র ঐসমস্ত ট্রেনিং-এর জোরে প্রচলিত শিক্ষাকে উপেক্ষা করতে চেয়েছিল, তারা ভেসে গেছে। আজকাল ঐসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ উঠে গেছে। যারা এখনো টিকে আছে তাদের রমরমা বাণিজ্য আর নেই। নতুন নতুন রঙের শিক্ষাবাণিজ্য তাদেরকে প্রতিস্থাপন করেছে। এই সারিতে এগিয়ে আছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
বাংলাদেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাপারটি বাস্তবতা ও আবশ্যকীয়। স্বীকৃত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, তাদের মান ও কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনার জন্য এই পোস্ট নয়। এখানে বিপুল সংখ্যক অস্বীকৃত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, নাম না জানা সব বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের এ’দেশীয় ক্যাম্পাস (!)-এর নামে প্রতারণার কথা বলবো।
কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন হতে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় “দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়”-এ ভর্তিচ্ছুদের ও তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে জানা যায় দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান মালিক বলে দাবিদারের সংখ্যা চার। তারা নানা জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়টির নানা ক্যাম্পাসের নামে শিক্ষাবাণিজ্য চালাচ্ছে। আইনত যেখানে একটি ছাড়া বাকিসব অবৈধ হবার কথা। বিষয়টির আদালতে মিমাংসা সম্পন্ন না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ভর্তিচ্ছুদের ও তাদের অভিভাবকদের দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার ব্যাপারে সতর্ক হতে বলেছেন। একটি দৈনিকের ভেতরের দিকের একটি পাতায় প্রকাশিত এই বিজ্ঞপ্তিটি খুব কমজনেরই চোখে পড়বে। অথচ, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় গোটা ঢাকা জুড়ে দাপটের সাথে শিক্ষাবাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। খোদ সরকার যাকে বৈধ বলে স্বীকার করেনা সেই অস্বীকৃত শিক্ষাবানিজ্য প্রতিদিন হাজার হাজার তরুণ-তরুণীর জীবন ধ্বংস করছে আর তাদের অভিভাবকের পকেট উজাড় করছে।
এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পঞ্চাশটিরও বেশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কে অবৈধ ঘোষনা করেছিল। কিন্তু ঐসমস্ত ভূয়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধের জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ফলে তাদের প্রতারণা অব্যাহত রয়ে গেছে।
কর্মক্ষেত্রে যারা চাকুরী প্রদান করে থাকেন তারা আজকাল চাকুরীপ্রার্থীদের ডিগ্রীর বৈধতা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। কারণ, তাদের পক্ষে বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ডিগ্রীর বৈধতা যাচাইয়ের কোন উপায় নেই, সেটা সম্ভবও না। তাছাড়া স্বীকৃত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই ডিগ্রীর ক্ষেত্রে কোর্স কারিকুলাম, কোর্স কনটেন্ট, শিক্ষাদান পদ্ধতি, ল্যাব সুবিধা, শিক্ষকের মান ইত্যাদিতে এত হেরফের থাকে যে তাতে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা ও নিয়োগপ্রাপ্ত উভয়েই বিপদে পড়েন।
এই পর্যন্ত যে ব্যবস্থাগুলোর কথা বললাম তার সবগুলোর টার্গেট মধ্যবিত্ত বা তদূর্ধ্ব শ্রেণী। এর বাইরেও আরেক প্রকার বিকল্প শিক্ষার বানিজ্য আছে, তার নাম কওমী মাদ্রাসা - এদের টার্গেট দরিদ্র শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশে বিদ্যমান মাদ্রাসা ব্যবস্থা দুই প্রকার। একটি আলিয়া মাদ্রাসা যা মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন ও সরকারী স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। অন্যটি কওমী মাদ্রাসা যা অনেকগুলো বোর্ডের অধীন - যেগুলোর একটিও সরকারী স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নয়। কিছুদিন পূর্বে কওমী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদীস-কে মাস্টার্স ডিগ্রীর সমান মর্যাদা দেবার কথা উঠেছিল। বস্তুতঃ এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল যা কওমী মাদ্রাসা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ না নিয়ে করা।
দেশে বিদ্যমান হাজার হাজার কওমী মাদ্রাসাগুলোর জন্য না আছে সুগঠিত সিলেবাস, না আছে সুনির্দিষ্ট পাঠ্যপুস্তক, না আছে সুনির্দিষ্ট শিক্ষা কাঠামো, না আছে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ বা মূল্যায়নের ব্যবস্থা। ফলে কোথাও দুইটি বই পড়িয়ে, কোথাও বিশটি বই পড়িয়ে; কোথাও পাঁচ বছরে, আবার কোথাও ষোল বছরে শিক্ষা সম্পন্ন করা হচ্ছে। এই মাদ্রাসাগুলোর সবগুলোই যে বিশেষ বিশেষ মহলের বানানো, তাদের অর্থে পরিচালিত তা নয়। বরং এই মাদ্রাসাগুলোর একটি বিরাট অংশ স্থানীয় শিক্ষাবণিকদের উদ্যোগ। দরিদ্র, হতদরিদ্র পরিবারের সন্তানরা এখানে টার্গেট। শিক্ষার নামে তাদের অশিক্ষা, কুশিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, কেড়ে নেয়া হচ্ছে তাদের শেষ কড়ি। সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও দরিদ্রের প্রতি সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে চাঁদা তোলা, যাকাত-ফেতরা আদায়, কোরবানীর পশুর চামড়া আদায় করা হচ্ছে ঐ মাদ্রাসার ছাত্রদের দিয়েই - যার বড় অংশ ঐসব শিক্ষাবণিকদের পকেটে যায়।
এসব মাদ্রাসা থেকে ডিগ্রীপ্রাপ্তরা বাংলাদেশের সরকারী-বেসরকারী কোন প্রতিষ্ঠানেই চাকুরী পাবেনা। তাদের ঐসব ডিগ্রী দিয়ে দেশে বা বিদেশে অন্য কোন শিক্ষায়তনে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনও করতে পারবেনা। এই সত্য সবাই জানেন - সরকারও। তবু এই শিক্ষাবাণিজ্য চলছে। এতে গরীব ছেলের জীবন নষ্ট করা হচ্ছে, আর তার অভিভাবকদের পকেট কাটা চলছে।
(চলবে)
মন্তব্য
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
শিক্ষাবাণিজ্য দেশে খুব বাজে আকার নিয়েছে। এটা নিয়ে লেখা জরুরি ছিল।
মাদ্রাসা্র শিক্ষা নিয়ে ছফার ১/২ টা প্রবন্ধ আছে।
-------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
পরের পর্ব আসতে যথারীতি সময় লাগবে।
সম্ভব হলে "ছফাগিরি"র পরের পর্বতে মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে ছফার পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ আসুক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দেখি বস্।
------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
আমি হাড়ে হাড়ে টের পাইতেছি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ক্যান আপনি কওমি মাদ্রাসার নাকি?
আপনার কথাবার্তা সন্দেহজনক। একটু ঝেড়ে কাশুন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কর্মক্ষেত্রে যারা দক্ষতার পরীক্ষা না করে সার্টিফিকেট আর জিপিএ দেখে চাকুরি দেয়, তাদের কিছুটা ভোগান্তি পোহানোই দরকার।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
পাঁচটি পোস্টের জন্য যখন পাঁচ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়ে তখন নিয়োগকর্তাকে একটা প্রাথমিক বাছাই করতেই হয়। তখন (বিশেষতঃ ফ্রেশ গ্রাজুয়েটদের ক্ষেত্রে) সার্টিফিকেট আর জিপিএ কি বিবেচ্য হবেনা? এই পর্যায়ে ভূয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো গ্রেড পাওয়া বা সার্টিফিকেট কেনা প্রার্থী প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যাবার কথা।
এভাবে বাছাই না করে লিখিত পরীক্ষা নেয়া যেত, তাতে অনেক সত্য বের হয়ে আসত। কিন্তু এতজনের লিখিত পরীক্ষা নেয়া, খাতা দেখা বড্ড ঝামেলার। এর চেয়ে সাক্ষাতকার নেয়া যেতে পারে, তাতে আরো ভালো বোঝা যায়। কিন্তু একদিনে কতজনের সাক্ষাতকার ঠিকভাবে নেয়া সম্ভব? এভাবে নানা কায়দার পরীক্ষা নিতে গেলে নিজের কাজের সময়টা পাওয়া যাবে কোথায়?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সবগুলো পর্বই পড়ছি।
কওমি মাদ্রাসা নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষেণের সাথে আমার পর্যবেক্ষণ মিলে না। সবচে গরীব ছেলেটা কওমি মাদ্রাসায় যায় যেখানে থাকা, খাওয়া, বই, এবং ক্ষেত্র বিশেষে পরার কাপড়টাও মাগনা পায়। এ মাদ্রাসাগুলো সাধারণত কোন সরকারি দাক্ষিণ্য পায় না, বা অনেকে নেয় না। এদের আর্থিক উৎস স্থানীয় বিত্তবানদের সাহায্য। এ সাহায্যের বিনিময়ে তারা কোন আর্থিক সুবিধা পায় না, বড় বেশী হলে পরিচালনা কমিটিতে একটা পদ পায়। গ্রামে ধানের মৌসুমে এরা ধান তোলে, কোরবানির সময় যাকাতের টাকা সংগ্রহ করে, এমনকি পশুর চামড়াও সংগ্রহ করে। সংগ্রাহক কর্মী সেসব গরীব ছেলেপেলে।
ব্যবসায়িক কওমি মাদ্রাসা বড় শহর, যেমন ঢাকায় থাকতে পারে, তবে বড় বড় কওমি মাদ্রাসা বড় শহরে থাকে না, ব্যবসায়িক লক্ষ্যে চলে না।
১. কওমী মাদ্রাসার লিল্লাহ্ বোর্ডিং-এ (যদি থেকে থাকে) থাকা শিক্ষার্থীরা বিনি পয়সায় থাকা, খাওয়া, পড়া-শোনার সুযোগটা পায়। তবে ব্যাপারটা ঠিক বিনি পয়সায়ও নয়। লিল্লাহ্ বোর্ডিং-এর শিক্ষার্থীদের দিয়ে দান-চাঁদা-যাকাত-ফেতরা-সদ্কা-কোরবানীর চামড়া তোলানো হয়, মাদ্রাসার রক্ষনাবেক্ষণের যাবতীয় কাজ করানো হয়, শিক্ষক ও উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত কাজও করানো হয়।
২. কওমী মাদ্রাসার জন্য সরকারী কোন বরাদ্দ আছে বলে শুনিনি। বাইরের কিছু কিছু সাহায্য পাওয়া যাওয়ার কথা শুনেছি। এদের আয়ের মূল উৎস পুরোপুরি স্থানীয় দান-ধ্যান।
৩. কওমী মাদ্রাসাতে যারা নিয়মিত দান করেন তারা "আখেরাতের" কথা বিবেচনা করে তা করেন। তাই এর বিনিময়ে তারা কিছু নেন না। তাদের মধ্যে যাদের কিছুটা রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা থাকে বা যারা সামাজিক প্রতিপত্তির আশা করেন তারা পরিচালনা পর্ষদে পদ চান।
৪. কওমী মাদ্রাসা থেকে টাকা কামায় উদ্যোক্তারা। তারা দান করেননা, তারা মাদ্রাসার নামে দান নেন, বৈদেশিক সাহায্যও নেন। একপ্রকারে তারা মাদ্রাসার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শোষণও করেন।
৫. অর্থনীতির হিসাবে যদি দেখেন, এখানে শ্রম দেয়া হল, অর্থ ব্যয় করা হল কিন্তু আউটপুট যেটা আসলো সেটা কোন কাজে লাগলনা (ইমামতি করা, মুয়াজ্জিন-খাদেম হওয়া, ওয়াজ নসিহত করা ছাড়া)। এই শ্রম নেয়া হল সাধারণ মানুষের কাছ থেকে, এই টাকাও নেয়া হল সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বা প্রাপ্ত বৈদেশিক সাহায্য হতে। জাতীয় উৎপাদন কর্মকাণ্ডের ইনপুটে ভাগ বসিয়ে উদ্যোক্তাদের একাংশ তা গ্রাস করে আর বাকিটা দিয়ে যে শিক্ষা দেয়া হয় তাতে জনসংখ্যা জনশক্তিতে রূপান্তরিত হয়না। এতে পকেট কাটা যায় বৈকি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পাণ্ডবদা
ব্যপারটা কি এভাবে দেখা যায়?
যে ছেলেগুলো কওমিতে যাচ্ছে তারা অন্য কোথাও যাওয়ার সাধ্য রাখে না। কওমি পাশ শেষে সবাই যে সরকারি চাকুরি করবে তা কেউ আশা করে না, কিন্তু মসজিদের ইমামতি, মাদ্রাসার শিক্ষক হওয়া ছাড়াও তারা ব্যবসা-বাণিজ্য করে চলতে পারে। সাধারণ শিক্ষার ধারাটা তাদের জন্য একেবারেই বন্ধ। নাইমামা কানামামা কোনটা ভাল?
কওমি মাদ্রাসার উদ্যোক্তা বলতে আপনি কাদের বোঝাচ্ছেন আমি ঠিক পরিচিত না। চট্টগ্রামের হাটহাজারি এদেশে সবচে বড় কওমি মাদ্রাসা, এরা অন্তত শ'দেড়-দু্ই বছর আগে প্রতিষ্ঠিত। ময়মনসিংহে ফুলপুর মাদ্রাসা আরেকটা প্রায় ৬০/৭০ বছরের পুরনো হবে। এরা বিদেশি টাকা পাচ্ছে এমন খবর কখনও শুনিনি। আমার নিজের জেলায় সবচে বড় মাদ্রাসাও কওমি; এরা টাকা পেলে অন্তত আমি জানতাম। আপনি কি ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা বেসরকারি/ক্যাডেট মাদ্রাসার কথা বলছেন নাকি?
প্রিয় আলমগীর
কওমী মাদ্রাসার ব্যাপারটিকে আপনি যে দরদের সাথে দেখেছেন তার জন্য ধন্যবাদ। যে শিক্ষার্থীরা সেখানে পড়ে তারা আপনার আমার মত পরিশ্রম করেই পড়ে। অত পরিশ্রমের পর যদি তাদের সামনে দুনিয়া দরজা বন্ধ করে দেয় তাহলে কেমন লাগে বলুন! এর জন্য কোনভাবেই ঐসব শিক্ষার্থীদের দায়ী করা যায়না। আপনিই বলুন সেখানে আমাদের কানামামার সান্ত্বনা নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়া কি উচিত?
প্রথাবিরোধীতা ও ঔপনিবেশিকতার বিরূদ্ধে একরকম জেহাদের ডাক দিয়ে যে দেওবন্দী ঘরাণার সূচনা হয়েছিল তার আজকের এই হতশ্রী দশার জন্য যারা দায়ী তাদেরকে জবাবদিহীতার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো দরকার। দরকার ঐসব দরিদ্র শিক্ষার্থীদের যারা বিনি পয়সার কামলা হিসেবে খাটায়। এই বিশাল অপচয় জাতীয় সম্পদেরই অপচয় - শুধু টাকা-পয়সা নয়, জনশক্তি, আশা আর স্বপ্নেরও অপচয়। বিদ্যমান ব্যবস্থা এই ক্ষয় এই ব্যয়কে টিকিয়ে রেখেছে। আমার আপত্তি সেখানে। এই অপচয়, এই শোষণ বন্ধ হোক।
দেশের সব শহরে আর প্রত্যন্ত গ্রামেও এখন শত শত কওমী মাদ্রাসা গড়ে উঠেছে। এদের মধ্যে সুস্পষ্ট শ্রেণী বিভাজন আছে। শহরের ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসা, ক্যাডেট মাদ্রাসা, নুরানী মাদ্রাসা, মহিলা মাদ্রাসা, রেসিডেন্সিয়াল মাদ্রাসার নামে যা আছে সেগুলো আসলে কী তা আপনি অবগত আছেন বলে বোঝা যাচ্ছে। দুঃখের বিষয় পকেট কাটা শুধু সেখানেই নয়, গ্রামের গরীব মাদ্রাসাগুলোর একাংশেও আছে। কওমী মাদ্রাসা যে এখন একটা ব্যবসা হতে পারে সেটা এক শ্রেণীর মানুষ বুঝে গেছে। কওমী মাদ্রাসার নেতা বলে পরিচিতদের রমরমা দেখে আপনি তার কিছুটা আঁচ করতে পারবেন। সবচে' আশ্চর্য লাগে এই বিপুল আকৃতির শিক্ষা ব্যবস্থাটার ব্যাপারে সরকারী উদ্যোগ প্রায় শূন্যের কোঠায়। এই সুযোগেই কিছু মানুষ এখান থেকে টাকা কামানোর চেষ্টা করছে। কিছু দুর্বৃত্তের দায়ভার গোটা কওমী মাদ্রাসা ব্যবস্থা উপর চাপানো যায়না কথাটা যেমন সত্য, কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় ঠকানো বা শোষণটাও যে আছে সেটাও সত্য।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দেখলেন তো, একটু সহজ করে, খোলাসা করে বললেই বুঝি
দরদ একটু আছে, তবে কওমি বলে না, গরীব বলে। গরীবদের নিয়া খেলা করা, ব্যবসা করা এমনকি মশকরা করাও সহজ। দেখবেন কতজন কওমি নিয়ে কত কথা বলে, আপাতদৃষ্টিতে বিশেষ ধারণা ছাড়াই।
দেখা হয়ে যেতে পারে সামনে।
অপেক্ষায় নাজির!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কওমী মাদ্রাসা নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণের সাথে আমিও দ্বিমত পোষন করি। আমার ধারণা আপনি হয়তো কোন কওমী মাদ্রাসায় ব্যক্তিগতভাবে তত্ত্ব-তালাশ করেননি। অধিকাংশ কওমী মাদ্রাসাই অবৈতনিক। তবে ইদানীং বিভিন্ন শহরে মহিলা মাদ্রাসা নামের যে প্রতিষ্ঠানগুলো দেখা যায় সেগুলো প্রায় সবই বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত। যাতে আমি দোষের কিছু দেখি না যদিও।
আমি ব্যক্তিগতভাবে কওমী মাদ্রাসাকে আলিয়া মাদ্রাসার তুলনায় ফেরেশতাতুল্য মনে করি। এদের সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো, এরা রাজাকার-আলবদর-মওদুদীবাদ-জামাতে ইসলামীকে আপনি আমি যতটা ঘৃণা করি তারাও ততটাই করেন। মূলত কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষিত আলেম-ওলামার জন্যই বাংলাদেশের প্রতিটি মসজিদ জামাত-শিবিরের আখড়া হয়ে উঠতে পারেনি, আগামীতেও পারবে বলে মনে হয় না।
তবে ভয় হয় এদের একটা ফ্র্যাকশনকে নিয়ে যারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে জেহাদ ছাড়া পৃথিবীতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার বা টিকিয়ে রাখার আর কোনো উপায় নেই। এরাই ৭০ এর দশকে প্যালেস্টাইনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম, ৮০'র দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েট বিরোধী লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। আশার কথা হলো বছর দুয়েক আগে পৃথিবীর সমস্ত কওমী মাদ্রাসার হেড কোয়ার্টার দালুম উলুম দেওবন্দে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ হতে মুসলমানদের দূরে থাকতে ফতোয়া জারী করা হয়েছে। আশাকরি বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসাগুলো পথচ্যুত হয়ে সন্ত্রাসবাদের দিকে পা বাড়াবে না।
পোস্টের অন্য সব বিষয়ের সাথে সহমত পোষন করছি।
১. কওমী মাদ্রাসার ব্যাপারে আমি কিছু খোঁজ-খবর নিয়েই লিখেছি, যার কিছুটা পোস্টে, কিছুটা উপরে আলমগীরের মন্তব্যর উত্তরে বলেছি।
২. কওমী মাদ্রসার আয়ের ও পরিচালনার ব্যাপারে আমি বলেছি। সেখানে পকেট কাটাটা ঠিক কোথায় হয় তাও বলেছি। নিঃসন্দেহে আমি সব মাদ্রাসাকে এই দোষে দুষ্ট দাবি করিনি। আমার এই ব্যাখায় দ্বিমত পোষণ করলে বা আমি এই ব্যাখ্যায় ভুল কিছু বলে থাকলে জানান।
৩. বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানো দুষনীয় নয়। দোষ হয় সেখানে ঠকানো হলে।
৪. কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা শেষে একজন শিক্ষার্থীর ঠাঁই কোথায় হয় সেটা ভেবে দেখেছেন কি?
৫. আমি ব্যক্তিগতভাবে কওমী মাদ্রাসাকে আলিয়া মাদ্রাসার তুলনায় ফেরেশতাতুল্য মনে করি।
আপনার এই মন্তব্যর সাথে একমত হতে পারলাম না। তার মানে এই নয় যে আমি আলিয়া মাদ্রাসাকে ফেরেশতাদের আখড়া বলছি। ভালো-খারাপ দুই জায়গাতেই আছে। মাদ্রাসা শিক্ষার ভালো-খারাপ নিয়ে আলোচনার জন্য তো এই পোস্ট না।
৬. আমিও কামনা করি আপনার আশা সত্য হোক আর আশংকা আলোর মুখ না দেখুক। কিন্তু হায়! দেওবন্দের সেই শক্তি নেই। প্রলোভনের ফাঁদ পদে পদে পাতা আছে। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে জঙ্গীদের নিয়ে যখন ব্যাপক হৈচৈ শুরু হয়েছিল তখন দেখা গেছে বেনো জল কতদূর পর্যন্ত ঢুকে গেছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পড়াশোনা না করলে কী হয়?
আমি ঠিক কতোটা ঠকলাম সেটা বোঝা যায় না ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
তিনটি পর্বেই কমবেশি পড়লাম। কিছু কিছু আলোচনা-ও। অর্থনীতি বুঝি না, তবে আগ্রহ আছে- বেঁচে থাকার জন্যই। ভালো লাগছে সহজ ভাবে বিষয়টা তুলে ধরার প্রবণতা। আচ্ছা, যদি সম্ভব হয় মাঝে মাঝে তাত্ত্বিক অর্থনীতির সাথে যোগসূত্র নিয়ে আলোকপাত করা যায় না? যেমন- পার্থক্য, বাস্তবতা, অনুমিত ব্যাপারগুলো।
নিজের কিছু কথা বলি। যেহেতু দেশে থাকি না তাই অনেক কিছুর অভিজ্ঞতা হয় নি।
১। আমার ক্রেডিট কার্ড অনেকগুলো। রেটিং বেশ ভালো। কারণ কেনাকাটার কয়েকদিন পরে এসে টাকাটা শোধ করে দিই অনলাইনে ()। তবে ঝামেলায়-ও পড়া হয়। যত উন্নত ব্যবস্থা তার বাগ পাওয়ার সম্ভবনা বেশি, আমার মনে হয়। এজন্য দরকার নিজের সচেতনতা। আমি সেটার চেষ্টা করি।
২। এখানে একটা ব্যাপার আছে। ফিক্সড শেয়ারিং আরকি। একটা নির্দিষ্ট সুদে বা মুনাফায় শেয়ার ব্যবসা করা যাবে ব্যাংকের মাধ্যমে। আবার বেশি লাভ হলে আপনি লাভ্যাংশ পাবেন। আমার এইরকম আছে। যেমন ধরেন- ৫০০০ ডলার বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগের সময় ওরা সম্ভাব্য হিসেব করে একটা সুদ আপনাকে দিয়ে দিবে। এর মাঝে অর্থনীতি ভালো হলে আপনার লাভ বাড়বে আর খারাপ হলে সেই হিসেব করা টাকাই পাবেন।
৩। জমি বা বাড়ি নাই। বাবা-মার আছে। মর্টগেজ সুবিধা ভালো। এখানে-ও সচেতনতা দরকার। কোন ব্যাংক, কোন এলাকা, সুদের হার, মেয়াদ হেনতেন।
৪। আমি মাদ্রাসা-শিক্ষার পক্ষে না। হয় এগুলোর আধুনিকায়ন হোক (যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংমিশ্রণ, পুরো ব্যবস্থার সংস্কার ইত্যাদি) না হলে বন্ধ হয়ে যাক। সেইক্ষেত্রে "চলতি" শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ধর্ম-সম্পর্কিত বিষয়াবলিকে ঐচ্ছিকাকারে রাখা যেতে পারে, ইচ্ছে হলে নিলো- জোর নয়।
আমার কাছে সবচে' যে বিষয়টা বড় মনে হয় তা হলো সম্বন্বয়হীনতা আর যে কোন ব্যবস্থার অপব্যবস্থাপনা। ভাত আছে, তরকারী আছে সব আছে- তবুও খিচুড়ি না পাকালে শান্তি হয় না।
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
আলোকবাজি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
নতুন মন্তব্য করুন